Higher Secondary Bengali Suggestion 2023
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস
চিত্রকলা
প্রশ্নঃ- ভারতীয় চিত্রকলার ইতিহাসে নন্দলাল বসুর অবদান আলোচনা কর।
উত্তরঃ-
ভারতীয় চিত্রকলার ইতিহাস খুঁজলে যে সকল ব্যক্তিবর্গের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিত
পাওয়া যায় নন্দলাল বসু তাদের মধ্যে অন্যতম একজন। গ্রামীন প্রকৃতি থেকে শুরু করে সাধারণ
মানুষ ও দরিদ্র মানুষের জীবন ছিল তার ছবির মূল বিষয়। তিনি বিহারের মুঙ্গের জেলার
হাভেলি খড়গপুরে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে কুমোরদের দেখে তিনি মূর্তি গড়ার চেষ্টা
করতেন। তার শিল্পী জীবনে প্রবেশের পথে সবথেকে বড় অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন তার পিসতুতাে
ভাই অতুল মিত্র যিনি আর্ট কলেজের ছাত্র ছিলেন। তাঁরই পরামর্শমত তিনি আর্ট কলেজে
অবনীন্দ্রনাথ ও হ্যাভেল সাহেবের সাথে দেখা করেন ও সেখানে ভর্তি হন।
**অঙ্কিত চিত্রাবলীঃ- 1906-15 সালের মধ্যে তাঁর অঙ্কিত বিখ্যাত ছবিগুলো হল - সিদ্ধিদাতা
গণেশ, শোকার্ত সিদ্ধার্থ, সতী, কর্ণ, নটরাজের তাণ্ডব, জতুগৃহদাহ, প্রত্যাবর্তন
প্রভৃতি। পৌরাণিক কাহিনী নির্ভর ছবিগুলোতে তার রূপনির্মাণের বিশেষ ভঙ্গি পরিলক্ষিত
হয়।
**অন্যান্য বিশিষ্ট শিল্পকর্মঃ- 1911 সালে পাঠ সমাপনান্তে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে জোড়াসাঁকোয়
শিল্পচর্চা নন্দলাল বসুর মুকুটে এক নতুন পালক যোগ করেছিল। ভগিনী নিবেদিতার নই এর
চিত্রসজ্জা ছাড়াও রবীন্দ্রনাথ ও অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বহু বই এর অলংকরণও তিনি
করেন। লেডি হেরিংহ্যামের সহকারী হিসাবে তিনি অজন্তা গুহাচিত্রের নকল করার কাজ
করেন। তার এহেন কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল - বসু বিজ্ঞান মন্দির অলংকরণ, জোড়াসাঁকোর বাড়ীতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত ক্লাবে
শিল্প শিক্ষকতা, হরিপুরাপট অঙ্কন ইত্যাদি।
1920 সালে নন্দলাল বসু শান্তিনিকেতনের কলাভবনে স্থায়ীভাবে যোগদানের পর থেকেই শিল্পকলার এক বিশিষ্ট পদ্ধতি এই প্রতিষ্ঠানকে আরও সমৃদ্ধশালী করে তোলে। 1930 সালে গান্ধীজির ডান্ডি অভিযানে গ্রেপ্তারের পর সাদা কালোয় চলমান লাঠি হাতে গান্ধীজিকে আঁকা তাঁর ছবি অহিংস আন্দোলনের প্রায় প্রতীকে পরিণত হয়েছে। তার লেখা দুটি বিখ্যাত শিল্পসংক্রান্ত গ্রন্থ হল "শিল্পচর্চা" ও "রূপাবলী"।ভারতীয় সংবিধান তাঁরই আঁকা চিত্রে ও নির্দেশে অলংকৃত।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ