Higher Secondary Bengali Suggestion 2023
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস
চলচ্চিত্র
প্রশ্নঃ- বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সত্যজিৎ রায়ের অবদান আলোচনা কর।
উত্তরঃ-
বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সত্যজিৎ রায় একজন উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক রূপে
চিরদূত্যিতে ভাস্বর। তবে চলচ্চিত্র জগতে তার আগমন ঠিক যেন এক অন্ধকার যুগের অবসান
ঘটিয়েছিল। স্বাধীনতা ও দেশভাগের উত্তরকালে তিনি একের পর এক আন্তর্জাতিক খ্যাতি
সম্পন্ন ছবি উপহার দিয়ে চলচ্চিত্র জগতের বাণিজ্যিক দুঃসময় কাটাতে অগ্রণী ভূমিকা
পালন করেন।
তাঁর সবথেকে বড় কৃতিত্ব ছিল -
চলচ্চিত্রের জগতে শিল্প, সাহিত্য, সংগীত ও যন্ত্রের মেলবন্ধন ঘটানো। আর তাই তো তিনি বাংলা
চলচ্চিত্র জগতের সব্যসাচী নামে খ্যাত।
তার প্রথম প্রয়াস কালজয়ী
কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে "পথের
পাঁচালী" 1955 সালের 26 শে আগস্ট মুক্তি পায় ও প্রথম নিউ ইয়ার্কের মিউজিয়াম অফ
মডার্ন আর্টসে প্রদর্শিত হয়। প্রবল জনপ্রিয় সিনেমাটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত
হয়। এনে দেয় অস্কার মত কালজয়ী পুরস্কার। এরপরে "অপরাজিত" (1956) ও "অপুর সংসার" (1959) নির্মানের মাধ্যমে অপু ট্রিলজি শেষ করেন। "অপরাজিত" সিনেমাটি ভেনিস
চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়। আর "অপুর সংসার" সিনেমাতে অভিনয় সূত্রেই
বাংলা সিনেমায় আবির্ভাব ঘটে অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের। তবে এই দুই সিনেমার
মাঝে আরও দুটি চলচ্চিত্র তিনি নির্মাণ করেন - "জলসাঘর" ও
"পরশপাথর"। রবী ঠাকুরের তিনটি ছোটগল্প অবলম্বনে "তিনকন্যা", নষ্টনীড়" উপন্যাসটি অবলম্বনে "চারুলতা", "ঘরে বাইরে", ব্যোমকেশ
কাহিনী অবলম্বনে "চিড়িয়াখানা", সুনীল
গঙ্গোপাধ্যায়ের কাহিনী নিয়ে "অরণ্যের দিনরাত্রি" ও
"প্রতিদ্বন্দ্বী" তৈরী করেন।এরপর একে একে নিজের কাহিনী নিয়ে
"কাঞ্চনজঙ্ঘা", "আগন্তুক", ফেলুদার কাহিনী "সোনার কেল্লা", এছাড়াও "গুপী গাইন ও বাঘা বাইন" ও "হীরক
রাজার দেশে" তাকে চরম খ্যাতি এনে দেয়।
কেবল পরিচালক ও স্ক্রিপ্ট
রাইটার হিসাবেই নয়, সংগীত পরিচালক
হিসাবেই কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। "তিনকন্যা", নায়ক", "হীরক রাজার দেশে" ইত্যাদি
ছবিতে তিনি সংগীত পরিচালনা করেন।
তার বিখ্যাত কয়েকটা তথ্যচিত্র হল - "রবীন্দ্রনাথ", "ইনার আই", "সিকিম" ইত্যাদি। তিনি ফ্রান্সের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান "লিজিয়ন অফ অনার" লাভ করেন। এছাড়াও তাকে "ভারতরত্ন" সহ একাধিক পুরস্কার ও সম্মান পান।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ