Higher Secondary Sanskrit Suggestion 2023
উচ্চমাধ্যমিক সংস্কৃত পদ্য
কর্মযোগঃ
প্রশ্ন:- “কর্মযোগঃ” কর্মযোগ অংশটির সারমর্ম লেখ।
উত্তর:-
মহাভারত মহাকাব্যের ভীষ্মপর্বে যখন তৃতীয় পাণ্ডব ধনুর্ধর অর্জুন কুরুক্ষেত্রের
যুদ্ধে প্রতিপক্ষ হিসাবে আপনজনদের দেখে আপন গাণ্ডীব ত্যাগ করে হতাশায় মুহ্যমান হয়ে
ভেঙে পড়ে তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাকে বিবিধ উপদেশ প্রদান করেন। আঠারোটি অধ্যায়ে
বিভক্ত সেই উপদেশাবলি "শ্রীমদ্ভাগবদ্গীতা" নামে বিশ্ববিদিত। এর তৃতীয়
অধ্যায় "কর্মযোগঃ" তে বাসুদেব সখা অর্জুনকে নিষ্কাম কর্মযোগের যে শিক্ষা
দেন তার মাত্র ১১ টি শ্লোক আমাদের পাঠ্য।
"কর্মণ্যোবাধিকারস্তে মা ফলেষু
কদাচন। "অর্থাৎ কর্ম আমাদের অধিকার, কর্ম ত্যাগ
করে মুহুর্তকালও থাকা সম্ভব নয়। মানব প্রকৃতিজ সত্ত্ব, রজঃ ও তমো গুণের প্রভাবে মানুষ কর্ম করতে বাধ্য। কিন্তু সেই
নিষ্কাম কর্মে কোনরূপ ফলের আশা করা যাবেনা। পুরুষ কর্ম না করলে জ্ঞান লাভ হয়না আর
জ্ঞানলাভ ব্যতীত কেবল সন্ন্যাস দ্বারা সিদ্ধিলাভ কখনও সম্ভবপর নয়। চিত্তশুদ্ধি
এক্ষেত্রে আবশ্যক। অনিচ্ছা সত্ত্বেও পুরুষের স্বাভাবিক গুণসমুদয় তাকে প্রবৃত্ত হতে
বাধ্য করে।কিন্তু যে ব্যক্তি কর্মেন্দ্রিয়সমূহকে সংযত করে মনে মনে
ইন্দ্রিয়বিষয়ীভূত ভোগ্য বিষয়গুলোকে স্মরণ করে সে "কপটচারী"। অপরপক্ষে
যদি কোন ব্যক্তি বুদ্ধিযুক্ত মনের দ্বারা ইন্দ্রিয়সমূহকে সংযত করে অনাসক্তভাবে
কর্ম করতে পারে তবে সে তিনিই শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি বলে বিবেচিত হন।কর্ম পরিত্যাগ করলে
শরীর যাত্রা নির্বাহ হয়না। যে কর্ম ঈশ্বরের উদ্দ্যেশ্যে অনুষ্ঠিত হয় না মানুষ সেই
কর্মদ্বারা বদ্ধ হয়ে থাকে। ফলের আশা পরিত্যাগ পূর্বক তাই শাস্ত্রবিহিত স্বধর্মাচরণই
নিষ্কাম কর্মের তত্ত্ব।কর্মি দ্বিবিধ - আত্মপ্রীতির জন্য কর্ম এবং ঈশ্বর প্রীতির
জন্য কর্ম। আত্মপ্রীতির জন্য যে কর্ম করা হয় তা ভোগার্থ কর্ম, কিন্তু ঈশ্বর প্রীতির জন্য কৃত কর্মই প্রকৃত কর্ম। তাই
জ্ঞানী ব্যক্তির কর্মবন্ধনের কারণ না হয়ে তার মুক্তির পথকে সুগম করে, আর অজ্ঞানীর কর্ম তার বন্ধনদশার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
কর্ম না করার থেকে কর্ম করা
অনেক শ্রেয়। জনক প্রমূখ ঋষিগণ নিষ্কাম কর্মের দ্বারাই সিদ্ধিলাভ করেছেন। এমনকি যার
কোন কিছু চাওয়াপাওয়া কিছুই নেই সেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণও সদা কর্মে প্রবৃত্ত থাকেন।তাই
বলেছেন-"যদ্ যদাচরতি শ্রেষ্ঠস্তত্তেদেবেতরো জনঃ। "অর্থাৎ,সমাজে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির মত আচরণ সাধারণ লোকও অনুসরণ করে।
তাঁর মতে-"স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ,পরধর্মো ভয়াবহঃ। "অর্থাৎ পরধর্ম অপেক্ষা স্বধর্মে নিধনও
অনেক ভালো। গীতায় শ্রীকৃষ্ণ মানুষের এই স্বকীয় সামর্থ্য এবং তদানুসারে কর্মানুষ্ঠানকেই
বুঝিয়েছেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ