LightBlog
ধর্ম | সপ্তম অধ্যায় | একাদশ শ্রেণির ইতিহাস সাজেশন ২০২৩ | WB Class 11 History Suggestion 2023
Type Here to Get Search Results !

ধর্ম | সপ্তম অধ্যায় | একাদশ শ্রেণির ইতিহাস সাজেশন ২০২৩ | WB Class 11 History Suggestion 2023

ধর্ম

সপ্তম অধ্যায়

একাদশ শ্রেণির ইতিহাস সাজেশন ২০২৩

WB Class 11 History Suggestion 2023

ধর্ম | সপ্তম অধ্যায় | একাদশ শ্রেণির ইতিহাস সাজেশন ২০২৩
ধর্ম | সপ্তম অধ্যায় | একাদশ শ্রেণির ইতিহাস সাজেশন ২০২৩


(১) নিচের বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও : 


১.১ যে লিপিতে প্রথম ধম্ম শব্দটি ব্যবহৃত হয় তা হল - মাস্কিলিপি

১.২ অশোক সিংহলে ধর্ম প্রচারে পাঠিয়েছিলেন -  মহেন্দ্র ও সংঘমিত্রাকে

১.৩ অশোক তৃতীয় বৌদ্ধ সংগীতের আহ্বান করেন - পাটলিপুত্রে

১.৪ আলাউদ্দিন খলজির রাজত্বকাল স্থায়ী হয়েছিল - ২০ বছর

১.৫ ইবাদৎখানা কথাটির অর্থ হল- উপাসনা গৃহ

১.৬ শার্লামেন জাতিতে ছিলেন - ফ্রাঙ্ক

১.৭ প্রথম ক্রুসেড বা ধর্মযুদ্ধ শুরু হয়েছিল - ১০৯৫ খ্রিস্টাব্দে

১.৮ প্রথম খলিফা হলেন - আবু বকর

১.৯ স্পেনে মুসলিম শাসন বজায় ছিল- তিনশত বছর

১.১০ ঋকবেদে সংকলিত সূত্র সংখ্যা - ১০২৮টি

১.১১ অথর্ববেদে অধ্যায় সংখ্যা - ২০টি

১.১২ ঋকবেদের যম হলেন - পিতৃলোকের অধিকর্তা

১.১৩ বৈদিক যুগের ঝড়ের দেবতা ছিলেন - মরুর

১.১৪ বৈদিক যুগের বাতাসের দেবতা হলেন- বায়ু

১.১৫ বৈদিক যুগের মৃত্যুর দেবতা হলেন- যম

১.১৬ ঋকবেদের বহু দেবতার উল্লেখ মেনে ইরানীয় গ্রন্থ - আবেস্তায়

১.১৭ সিদ্ধার্থের বৌদ্ধ নাম হয় - বোধি লাভের কারণে

১.১৮ বুদ্ধদেবের কাছে সর্বশেষ দীক্ষিত শিষ্য ছিলেন - চুন্দ

১.১৯ 'সংগীতি' শব্দের অর্থ হলো - সম্মেলন

১.২০ জৈন ধর্ম কি কি ভাগে বিভক্ত হয়েছিল? - শ্বেতাম্বর -দিগম্বর

১.২১ জৈন ধর্মের শেষ প্রবর্তক ছিলেন - মহাবীর

১.২২ 'পার্শ্বনাথ চরিত' গ্রন্থটি রচনা করেন- ভবদেবসুরি

১.২৩ পার্শ্বনাথ দেহ ত্যাগ করেন - ১০০ বছর বয়সে

১.২৪ মানবতাবাদের রাজপুত্র ছিলেন - ইরাসমাস

১.২৫ ক্যালভিন ছিলেন - প্রোটেস্ট্যান্টপন্থী

১.২৬ অশোক বুদ্ধদেবের বাণী ও আদর্শ প্রচারের জন্য নিয়োজিত করেন - ধম্ম মহামাত্র নামে কর্মচারী

১.২৭ পাঁচটি গ্রিক শাসিত রাজ্যে অশোকের দূত পাঠানোর কথা জানা যায় - পালি ভাষায় লেখা বৌদ্ধ গ্রন্থ দীপ বংশ থেকে

১.২৮ 'পিটার দা হারমিট' হলেন একজন - পাদরি

১.২৯ প্রথম ক্রুসেড আহবান করেছিলেন - পোপ দ্বিতীয় আরবান

১.৩০ 'খলিফা' শব্দটির অর্থ হলো - খলিফার প্রতিনিধি বা উত্তরাধিকারী

১.৩১ দিল্লির কোন সুলতান সর্বপ্রথম বাগদাদের খলিফার বৌদ্ধ স্বীকৃতি পান? - ইলতুৎমিস

১.৩২ ইংল্যান্ডে ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের প্রথম উদ্যোগ নেন - অষ্টম হেনরি

See More : WB Class 11 History Full Suggestion 2023 WBCHSE

(৩) নিচের রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ

৩.১ ক্রুসেডের কারণগুলি আলোচনা করো।

উত্তরঃ খ্রিস্টধর্মের প্রবিত্র প্রতীক ক্রুশ থেকেই ক্রুসেড নামের উৎপত্তি হয়েছে। প্রাচ্যের মুসলিমধর্মাবলম্বী তুর্কি ও পশ্চিম ইউরোপীয় খ্রিস্টানদের মধ্যে প্রায় দুশো বছর যে যুদ্ধ হয় তা ক্রুসেড বা ধর্মযুদ্ধ নামে পরিচিত।

     ক্রুসেডের কারণ

ক্রুসেডের পশ্চাতে বিভিন্ন কারণ ছিল। তবে এর মূল কারণছিল জেরুজালেম অধিকার এবং তাঁর নিরাপত্তা।

ধর্মীয় কারণঃ রোমান চার্চের হৃতগৌরব পুণঃপ্রতিষ্ঠা করতে তিনি ভেবেছিলেন মুসলমানদের বিরুদ্ধে ক্রুসেড আন্দোলনে জয়ী হলে খ্রিস্টানদের ওপর নিজের আধিপাত্য প্রতিষ্ঠা অনেক সহজ হবে। তাছাড়া জেরুজালেম খ্রিস্টান ও মুসলিমদের কাছে একটি পবিত্র স্থান, তাই এর পবিত্রতা রক্ষা, অধিকার এবং নিরাপত্তার লক্ষ্যে উভয়ের মধ্যে লড়াই বা ক্রুসেড হয়েছিল।

রাজনৈতিক কারণঃ হজরত ওমরের আমল থেকে রাজ্যবিজয় ও ধর্মপ্রচারের মধ্য দিয়ে ইসলামের সম্প্রসারণ শুরু হয়। রোমান সাম্রাজ্যের অন্তর্গত মিশর, সিরিয়া, স্পেন, উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ ইতালি, সিসিলি-সহ সমগ্র পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল মুসলমানদের অধিকারে চলে আসে। সেই কারণেই খ্রিস্টানরা ইসলামের এই অগ্রগতি রোধে এবং জেরুজালেমের পবিত্রতা রক্ষা করতে ক্রুসেডে জড়িয়ে পড়েন।

অর্থনৈতিক কারণঃ পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর রোমানদের বিস্তীর্ণ অঞ্চল মুসলমানরা অধিকার করে নেয়। এর পরবর্তীতে একাদশ শতকে নর্ম্যানরা মুসলামনদের কাছ থেকে সিসিলি কেড়ে নিলে স্পেন আবার খ্রিস্টানদের অধিকারে চলে আসে। ইটালির বণিকরা পুনরায় পশ্চিম ভূমধ্যসাগরের ওপর কর্তৃত্ব স্থাপন করে। তারা প্রাচ্য দেশগুলির সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এই বাণিজ্যিক সম্পর্কের টানাপোড়েনে খ্রিস্টান ও মুসলমানদের মধ্যে ক্রুসেডের প্রক্ষাপট তৈরি হয়।

সামাজিক কারণঃ একাদশ শতকে জেরুজালেম সেলজুক তুর্কিদের অধিকৃত হওয়ার পরও বহু খ্রিস্টান তীর্থযাত্রী জেরুজেলেম ভ্রমণে আসতে থাকেন। তীর্থযাত্রাকালীন তাদের অনেকেই দস্যুদের কবলে পড়েন ও আক্রান্ত হন। ফরাসি যাজক পিটার দ্য হারমিট তাঁর সঙ্গী ওয়াল্টারকে সঙ্গে নিয়ে এই অত্যাচারের কাহিনী প্রচার করলে ইউরোপীয় খ্রিস্টানরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রবল ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে।  

৩.২ খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে ভারতে নতুন ধরনের ধর্মীয় আন্দোলনের উন্থানের পটভূমি লেখ।

উত্তরঃ খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক এক আলোড়নের যুগ বলে চিহ্নিত হয়েছে। এই যুগে বৈদিক ব্রাহ্মণ্যধর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয় এবং বেশকিছু নতুন ধর্মমতের উদ্ভব ঘটে। এই যুগে ভারতে প্রায় ৬৩টি নব্য ধর্মের উন্থান ঘতেছিল। অধ্যাপিকা রোমিলা থাপারের মতে, "নব্য ধর্ম শুধুমাত্র ব্রাহ্মণ্যধর্মের প্রতিক্রিয়া হিসেবে গড়ে ওঠেনি। আর্থসামাজিক কারণে বিবর্তন এর উন্থানে সাহায্য করেছিল।"

ধর্মীয় কারণ

(১) যাগযজ্ঞের জটিলতা বৃদ্ধিঃ বৈদিক যুগের শেষ দিকে ব্যয়বহুল ধর্মাচরণ পদ্ধতির ব্যয় বহন করা সাধারণ মানুষের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে।

(২) ধর্মাচরণের অধিকার হ্রাসঃ ব্রাহ্মণ্যধর্মে বৈশ্য ও শূদ্র শ্রেণির ধর্মাচরণের অধিকার বিশেষভাবে হ্রাস পায়। অথচ ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমস্ত ব্যয়ভার তাদেরই বহন করতে হত।

অর্থনৈতিক কারণ

(১) কৃষকদের অবস্থান পরিবর্তনঃ লৌহনির্মিত কৃষি-সরঞ্জামের ব্যবহার ও গো-সম্পদ ব্যবহারে কৃষি উৎপাদন অভূতপূর্বভাবে বৃদ্ধি পায়। এই সময় গৌতম বুদ্ধ ও মহাবীর অহিংসার বাণী প্রচার করলে কৃষকশ্রেণী তাঁদের প্রতি আকৃষ্ট হয়।

(২) ব্যবসায়ীশ্রেণির উচ্চাকাঙ্ক্ষাঃ ষষ্ঠ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে বাণিজ্যবৃদ্ধির ফলে বৈশ্য শ্রেণির আর্থিক সমৃদ্ধি ঘটে এবং তারা সামাজিক মর্যাদালাভের জন্য ব্রাহ্মণ্যদের অবসান কামনা করে।

রাজনৈতিক কারণ

(১) গণরাজ্য প্রতিষ্ঠাঃ খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে ভারতীয় রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বেশ কিছু গণরাজ্যের প্রতিষ্ঠা হলে উপজাতীয় রীতিনীতির অনুসরণে বর্ণাশ্রমবিহীন সমাজের প্রতিষ্ঠা নব্য ধর্ম আন্দোলনের রাজনৈতিক পটভূমি তৈরি করেচিল।

(২) নতুন সমাজ স্থাপনঃ নবগঠিত গণরাজ্যগুলিতে উপজাতীয় রীতিনীতি অনুযায়ী ব্রাহ্মণদের প্রতি বিশেষ সম্মান প্রদর্শন বা বৈদিক রীতি মান্য করা বাধ্যতামূলক ছিল না।

সামাজিক কারণ

(১) ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয় দ্বন্দ্বঃ বেশি দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও ক্ষত্রিয়দের সামাজিক মর্যাদা ব্রাহ্মনদের পরেই। তাই ক্রমে তা অসহনীয় হয়ে উঠলে তা ক্ষত্রিয়দের বহিঃপ্রকাশ ঘতে নব্য ধর্ম আন্দোলনে।

(২) বৈশ্য ও শূদ্রদের ক্ষোভঃ ব্রাহ্মণশাসিত সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে বৈশ্য ও শুদ্রদের ক্ষোভও নব্য ধর্ম আন্দোলনের প্রধান কারণ বলে মানা হয়।

৩.৩ ইউরোপে ধর্মসংস্কার আন্দোলনের কারণগুলি আলোচনা করো।

উত্তরঃ নবজাগরণের ফলে ইউরোপে যে যুক্তিবাদী চিন্তাধারার উদ্ভব ঘটেছিল তা থেকে ধর্ম বিচ্ছিন্ন থাকতে পারল না। ষোড়শ শতক থেকে ধর্মের ক্ষেত্রে যুক্তিবাদ কাজ করতে শুরু করে। চিরাচরিত খ্রিস্টীয় চার্চ কেন্দ্রিক ধর্মীয় রীতিনীতির প্রতি মানুষের মনে সংশয় ও প্রশ্ন দেখা দেয়। আর এই সূত্র ধরে শুরু হয় ধর্ম নিয়ে আন্দোলন। এই ঐতিহাসিক ঘটনা ধর্ম বিপ্লব নামে খ্যাত। ধর্ম বিপ্লবের পটভূমি হিসাবে একাধিক কারণ কাজ করেছিল।

চার্চের দুর্নীতিঃ ক্যাথলিক চার্চ সমাজ ও রাষ্ট্রে অপ্রতিহত ক্ষমতা ভোগ করার ফলে চার্চগুলি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। প্রধান ধর্মগুরু পোপ থেকে শুরু করে পদস্থ যাজকরা আধ্যাত্মিক বিষয় উপেক্ষা করে ভোগ লালসায় মেতে ওঠে। মানুষের ধর্মভীরুতার সুযোগ নিয়ে তারা জনগণের কাছ থেকে টাইথ, অ্যানেট, পিটারফেন্স প্রভৃতি অবৈধ কর আদায় করে উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতে থাকে। ফলে সাধারণ মানুষ চার্চের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে ওঠে।  

পোপতন্ত্রের ক্ষমতালিপ্সাঃ মধ্যযুগে সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় পোপের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব বজায় ছিল। ঈশ্বরের প্রতিনিধি রূপে দাবি করে পোপ রাজার ক্ষমতাকেও নিয়ন্ত্রণ করত। এক কথায় পোপ ‘রাজস্রষ্টা’-এ পরিণত হয়। কিন্তু মানবতাবাদের প্রভাবে যে স্বাধীন চেতনার জন্ম হয়, তার ফলে রাজা নিজের স্বাধীন অস্তিত্বের কথা ভেবে পোপের বিরুদ্ধাচারণ করতে শুরু করেন।

মুদ্রণ যন্ত্রের আবিষ্কারঃ নবজাগরণের ফসল হিসাবে আধুনিক ছাপাখানা আবিষ্কারের ফলে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করে বাইবেল ছাপা হতে থাকে। এর ফলে মানুষ বাইবেল পড়ে খ্রিস্টধর্মের আসল তত্ত্ব জানতে পারে। ধর্মের নামে যাজকদের ধাপ্পাবাজি তাদের কাছে দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এর ফলস্বরূপ ক্যাথলিক চার্চের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মনে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।

ইনডালজেন্সঃ চার্চের দুর্নীতির চরম পর্যায় ছিল ইনডালজেন্স বা পাপক্ষয় পত্র বিক্রি। যাজকরা প্রচার করতেন ইহজীবনে প্রতিমুহূর্তে মানুষ পাপ করে চলছে। পোপ ঘোষণা করেন, পাপ থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। যেহেতু পোপ ঈশ্বরের প্রতিনিধি, তাই পোপের কাছে অর্থের বিনিময়ে ‘পাপক্ষয় পত্র’ কিনলে পাপক্ষয় হবে। অর্থের বিনিময়ে এই পত্র কিনতে হত বলে একে 'ইনডালজেন্স' বলা হয়। এভাবে ধর্মের নামে ভাঁওতা দিয়ে পোপ ও তাঁর অনুগামীরা অর্থ উপার্জন করতেন।

৩.৪ আকবরের দীন-ই-ইলাহী সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করো।

উত্তরঃ আকবর বিভিন্ন ধর্মের সারবস্তুর সমন্বয়ে ১৫৮২ খ্রীস্টাব্দে (মতান্তরে ১৫৮১ খ্রীঃ) 'দীন-ই-ইলাহি' নামক একেশ্বরবাদী আদর্শের প্রবর্তন করেন। আবুল ফজল ও বদাউনি একে 'তৌহিদ-ই-ইলাহি' বলে অভিহিত করেছেন, যার অর্থ হল 'স্বর্গীয় একেশ্বরবাদ'। এই ধর্মে কোনো বিশেষ ঈশ্বরের কথা না বলে সকল ধর্মের মূল নীতিগুলির সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। তাই ইতিহাসবিদ ভন নোয়ার ''দীন-ই-ইলাহি'-কে একেশ্বরবাদের পরিবর্তে সর্বেশ্বরবাদী বলার পক্ষপাতি।

বৈশিষ্ট্যসমূহঃ বিভিন্ন ঐতিহাসিক আকবরের প্রচারিত ধর্মের কতকগুলি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন। যেমন –

(১) সম্পূর্ণ নতুন ধর্মমত এবং সমন্বয়ী ভাবনা প্রকাশিত হয়েছে।

(২) তাঁর প্রচারিত ধর্ম ছিল উদার ও সরল।

(৩) দেব-দেবীর পরিবর্তে সম্রাট নিজেই পীর বা ধর্মগুরু ছিলেন। 

(৪) আত্মত্যাগী, বৈশায়িক চিন্তাবর্জিত, নম্র স্বভাবের  মানুষই তাঁর প্রকৃত শিষ্য।

আকবরের 'দীন-ই-ইলাহি' ধর্মমত গ্রহনের কারন

(১) সমকালীন প্রেক্ষাপটঃ আকবরের সমসাময়িককালে সুফিবাদী ও ভক্তিবাদী সাধকদের আবির্ভাব ঘটেছিল। এঁদের প্রভাবে ধর্মীয় উদারতা ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতার পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। সুফি সাধক ও‌ ভক্তিবাদী সাধকদের দ্বারা যে উদার পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তার দ্বারা আকবর বিশেষভাবে আনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।

(২) পরিবারের প্রভাবঃ পারিবারিকভাবে আকবরের পিতা সুন্নি সম্প্রদায়ভূক্ত ও মাতা হামিদা বানু সিয়া সম্প্রদায়ভূক্ত ছিলেন। ফলে মিশ্র ভাবধারার উদ্ভব প্রথম থেকে বিরাজমান ছিল– যা তাঁর মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছিল। পিতা-মাতা ধর্মীয় গোঁড়ামিমুক্ত হওয়ায় আকবরও তার দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন।

(৩) গৃহশিক্ষকের প্রভাবঃ আকবরের জীবনে গৃহশিক্ষকের প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়। তাঁর শিক্ষাগুরু ছিলেন উদার ধর্মজ্ঞানী পন্ডিত আব্দুল লতিফ। আকবরকে তিঁনি সহিষ্ণুতার আদর্শে আদর্শায়িত করতে চেষ্টা করিলেন।

(৪) রাজপুত আদর্শের প্রভাবঃ আকবরের জীবনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রাজপুতদের বিশেষভাবে রাজপুত মহিষীদের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। রাজপুতদের আদর্শ, রীতিনীতি, চিন্তাধারা তাঁকে গোঁড়ামিমুক্ত ধর্মমত গ্রহন করতে বিশেষভাবে সাহায্য করেছিল। 

(৫) রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটঃ আকবরের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা প্রশ্নাতীত। তিঁনি বুঝেছিলেন যে, হিন্দুপ্রধান ভারতবর্ষে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে এবং শাসনব্যবস্থার অস্তিত্ব দীর্ঘস্থায়ী করতে সকল ধর্মের মানুষের সহযোগীতা প্রয়োজন।

(৬) অন্যান্য ব্যক্তিগণের প্রভাবঃ আকবর সম্রাট পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার আগেই একাধিক জ্ঞানী-পন্ডিতদের সহচার্য পেয়েছিলেন। বিভিন্ন যোগী, সাধুসন্তদের ও ফকিরদের সরল জীবনধারা এবং তাঁদের মতাদর্শ তাঁকে আকৃষ্ট করেছিল। তাঁর সভাসদ ও কবি আবুল ফজল, ফৈজির প্রভাবও অপরিসীম।

দীন-ই-ইলাহি-এর ফলাফল

     আকবর তাঁর নতুন ধর্মমত 'দীন-ই-ইলাহি' প্রবর্তনের মাধ্যমে সর্বধর্ম সমন্বয়ী ভাবধারা চারিদিকে ছড়িয়ে যেতে থাকে। তাঁর দীর্ঘ শাসনকালে এর প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়। এই ধর্মমত প্রচারের ফলে–

(১) ধর্মীয় উদারতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

(২) সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষিত হয়েছিল।

(৩) বিধর্মীদের আক্রমন হ্রাস ঘটেছিল।

(৪) গোঁড়া মুসলিানদের কাছে তিঁনি শত্রু হিসেবে প্রতিপন্ন হয়েছিলেন।

See More : WB Class 11 History Full Suggestion 2023 WBCHSE

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

LightBlog

AdsG

close