LightBlog
West Bengal Class 9 Bengali Suggestion 2023 | নবম শ্রেণীর বাংলা সাজেশন ২০২৩ | রাধারানী | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
Type Here to Get Search Results !

West Bengal Class 9 Bengali Suggestion 2023 | নবম শ্রেণীর বাংলা সাজেশন ২০২৩ | রাধারানী | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

রাধারানী
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

West Bengal Class 9 Bengali Suggestion 2023 | নবম শ্রেণীর বাংলা সাজেশন ২০২৩ | রাধারানী | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
West Bengal Class 9 Bengali Suggestion 2023 | নবম শ্রেণীর বাংলা সাজেশন ২০২৩ | রাধারানী | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :


প্রশ্ন:'তাহাদিগের অবস্থা পূর্বে ভালো ছিল'।_____ অবস্থা ভাল ছিল।

(ক) রুক্মিনীকুমারের

(খ) পদ্মলোচনের

(গ) রাধারানীর

(ঘ) এদের কারোর নয়

উত্তর: (গ) রাধারানী


প্রশ্ন: রাধারানীর বাড়ি ছিল -

(ক) শ্রীরামপুরে

(খ) নদিয়ায়

(গ) মাহেশে

(ঘ) শান্তিপুরে

উত্তর: (ক) শ্রীরামপুরে


প্রশ্ন:'কাজেই একটু বিলম্ব হইল'-বিলম্ব হল কেন?

(ক) ভিজে কাপড় ছাড়তে দেরি হল

(খ) বৃষ্টি পড়ছিল বলে দেরি হল

(গ) ঘরে তেল ছিল না বলে আলো জ্বালাতে দেরি হল

(ঘ) অসুস্থ মাকে রেখে আসতে হল তাই

উত্তর: (গ) ঘরে তেল ছিল না বলে আলো জ্বালাতে দেরি হল


প্রশ্ন: 'এর জন্য নাম লিখিয়া দিয়া গেছেন'-নাম লিখে দিয়েছেন কারণ -

(ক) যদি কেউ চোরা নোট বলে তাই

(খ) রাধারানী পড়ে দেখবে বলে

(গ) নিজের পরিচয় জানবার জন্য

(ঘ) কেউ যদি নোটটি নিয়ে নেয়

উত্তর: (ক) যদি কেউ চোরা নোট বলে তাই


প্রশ্ন: 'আমার ব্যামো হয় না' - একথা বলেছিল -

(ক) রাধারানীর মা

(খ) রুক্মিণীকুমার

(গ) পদ্মলোচন সাহা

(ঘ) রাধারানী

উত্তর: (ঘ) রাধারানী


প্রশ্ন:রাধারানীদের সম্পত্তির অর্থমূল্য ছিল -

(ক) আট লক্ষ টাকা

(খ) কুড়ি লক্ষ টাকা

(গ) দশ লক্ষ টাকা

(ঘ) তিরিশ লক্ষ টাকা

উত্তর: (গ) দশ লক্ষ টাকা


প্রশ্ন: রাধারানী রথের হাটে গিয়েছিল -

(ক) বনফুলের মালা বিক্রি করে অসুস্থ মায়ের জন্য খাবার আনবে বলে।

(খ) বোন ফুলের মালা বিক্রি করবে বলে।

(গ) বেড়াতে।

(ঘ) রথ দেখতে।

উত্তর: (ক) বনফুলের মালা বিক্রি করে অসুস্থ মায়ের জন্য খাবার আনবে বলে।


প্রশ্ন: রাধারানী উপবাস করেছিল কেন?

(ক) অন্নের সংস্থান ছিল না বলে

(খ) অন্য জোটেনি তাই

(গ) তার খাবার ইচ্ছা ছিল না

(ঘ) শরীর অসুস্থ ছিল তাই

উত্তর: (ক) অন্নের সংস্থান ছিল না বলে


প্রশ্ন: রতের হাটে লোক ভেঙ্গে গিয়েছিল কেন?

(ক) জিনিসপত্র ছিল না তাই

(খ) প্রচন্ড ঝড় উঠেছিল

(গ) প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল তাই

(ঘ) এদের কোনোটিই নয়

উত্তর: (গ) প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল তাই


প্রশ্ন:'আমি বাহিরে দাঁড়াইয়া আছি'-একথা বলেছিল-

(ক) বসন্ত রায়

(খ) পদ্মলোচন সাহা

(গ) রাধারানী

(ঘ) রুক্মিণীকুমার

উত্তর: (ঘ) রুক্মিণীকুমার


প্রশ্ন:'নোট খানি তারা ভাঙ্গাইল না' - কারণ -

(ক) তাতে নাম লেখা ছিল

(খ) তারা দরিদ্র কিন্তু লোভী নয়

(গ) নিজের টাকা নয় বলে ভাঙ্গলো না

(ঘ) তাদের দরকার ছিল না

উত্তর: (খ) তারা দরিদ্র কিন্তু লোভী নয়


প্রশ্ন:'তিনি কেন? পোড়ামুখো কাপুড়ে মিনসে!'-কাপুড়ে মিনসেরন নাম -

(ক) পদ্মলোচন সাহা

(খ) বসন্ত রায়

(গ) রুক্মিণী কুমার রায়

(ঘ) কোনটাই নয়

উত্তর: (গ) রুক্মিণী কুমার রায়


প্রশ্ন:'প্রসন্ন মনে দোকানে ফিরিয়া গেলেন'-প্রসন্ন মনে দোকানে ফিরে গেলেন কেন?

(ক) কাপড় বিক্রি করে সে খুশি তাই।

(খ) তারা বড়ো ঘরের মেয়ে তাই।

(গ) চার টাকার কাপড় আট টাকা সাড়ে চোদ্দো আনায় বিক্রি করেছে বলে।

(ঘ) অনেক বারই সে তাদের ঠকিয়েছে

উত্তর: (গ) চার টাকার কাপড় আট টাকা সাড়ে চোদ্দো আনায় বিক্রি করেছে বলে।


প্রশ্ন: রাধারানী রথ দেখতে গিয়েছিল -

(ক) মাহেশে

(খ) মায়াপুরে

(গ) শ্রীরামপুরে

(ঘ) শান্তিপুরে

উত্তর: (ক) মাহেশে


প্রশ্ন: রাধারানীর মা পীড়িতা হয়েছিলেন -

(ক) রথের দিন

(খ) রথের পরে

(গ) রথের 15 দিন আগে

(ঘ) রথের পূর্বে

উত্তর: (ক) রথের দিন


নিচের অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :


প্রশ্ন: রাধারানী কোথায় গিয়েছিল?

উত্তর: রাধারানী মাহেশে রথ দেখতে গিয়েছিল।


প্রশ্ন: রাধারানী মায়ের পথ্যের জন্য কি করেছিল?

উত্তর: মায়ের পথ্য সংগ্রহের জন্য রাধারানী বোন ফুল তুলে মালা গেঁথে রথের হাটে বিক্রি করার পরিকল্পনা করে।


প্রশ্ন:"... বিধবা হাইকোর্টে হারিল।"-এখানে কোন মামলার কথা বলা হয়েছে।

উত্তর: জ্ঞাতির সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে রাধারানীর মায়ের যে মামলা হয়েছিল এখানে তার কথাই বলা হয়েছে।


প্রশ্ন:"মালা কেহ কিনিল না।"-মালা না কেনার কারণ কি ছিল?

উত্তর: রথের টান অর্ধেক হতে না হতেই প্রবল বৃষ্টিতে মেলা ভেঙে গেলে মালা কেনার লোক থাকে না।


প্রশ্ন: হাইকোর্টে মামলায় হেরে যাওয়ার ফলে রাধারাণীদের কি অবস্থা হয়েছিল?

উত্তর: হাইকোর্টে হেরে যাওয়ার ফলে ডিক্রি জারি করে রাজা-রাণীদের ভদ্রাসন থেকে উৎখাত করা হয়।


প্রশ্ন: সুতরাং আর আহার চলে না।"-এই না চলার কারণ কি বলে তোমার মনে হয়?

উত্তর: রাধারানীর মা খুব অসুস্থ হয়ে পড়লে, তার উপার্জন বন্ধ হয়ে যায়, ফলে আহার আর চলে না।


প্রশ্ন: হাইকোর্টে হেরে যাওয়ার পরে রাধারানীদের দিন কিভাবে কাটত?

উত্তর: হাইকোর্টে হেরে গিয়ে বাড়ি থেকে উৎখাত হয়ে রাধারানীর মা কুটির বাসিনি হন এবং কায়িক পরিশ্রমই কোনরকমে তাদের দিন কাটে।


প্রশ্ন:"তদপেক্ষাও রাধারানীর চক্ষু বারিবর্ষণ করিতেছিল।"-কি সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: শ্রাবণের মুষলধারে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে তুলনা করে রাধারানীর চোখের জল ঝরার কথা বলা হয়েছে।


প্রশ্ন:"তুমি আমার হাত ধরো"-একথা বলার কারণ কি?

উত্তর: বক্তা এ কথা বলেছিল কারণ, হাত না ধরলে কিছু অল পথে রাধারানীর পড়ে যাবার সম্ভাবনা ছিল।


প্রশ্ন:"এতক্ষণে উচ্চৈঃস্বরে কাঁদিল।"-কোন সময়ের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: অন্ধকারে বাড়ি ফেরার সময় কোন একজন রাধারানীর ঘাড়ের ওপরে পড়ায় রাধারানীর উচ্চৈঃস্বরে কেঁদে ওঠে।


প্রশ্ন:"রাধারানী বড় বালিকা।"-কিভাবে এই ধারণা হয়েছিল?

উত্তর: পথিক প্রথমে রাধারানীর গলার স্বরে এবং পড়ে তার হাতের স্পর্শে বুঝতে পারেন রাধারানী নিতান্ত বালিকা।


প্রশ্ন:"কিন্তু কণ্ঠস্বর শুনিয়া রাধারানীর রোদন বন্ধন  হইল।"-কেন এমন হয়েছিল?

উত্তর: রাধারানী সেই অপরিচিত কণ্ঠস্বরের মধ্যে একজন দয়ালু মানুষ কে আবিষ্কার করেছিল বলে তার কান্না বন্ধ হয়েছিল।


প্রশ্ন: পথিক চরিত্রটি মালার সন্ধান করছি  কেন?

উত্তর: পথিক চরিত্রটি তার গৃহদেবতাকে পড়ানোর জন্য মালার সন্ধান করছিল।


প্রশ্ন:"রাধারানী রোদন বন্ধ করিয়া বলিল..."-রাধারানী কি বলেছিল?

উত্তর: রাধারানী কান্না বন্ধ করে বলেছিল সে দুঃখী লোকের মেয়ে এবং তার মা ছাড়া কেউ নেই।


প্রশ্ন:"আমি ভিজা কাপড়ে সর্বদা থাকি।"-কেন বক্তা সর্বদা ভিজে কাপড়ে থাকে?

উত্তর: বক্তা রাধারানী ভিজে কাপড়ে সর্বদা থাকে কারণ তার মাত্র দুটি কাপড় ছিল।


প্রশ্ন: পথিক চরিত্রটি তার মালা চিনতে না পারার পক্ষে যুক্তি দিয়েছিল?

উত্তর: পথিক চরিত্রটি বলেছিল যে রথেরহাট তাড়াতাড়ি ভেঙে যাওয়ায় সে মালা কিনতে পারেনি।


প্রশ্ন: "... তাই চকচক করছে।"-বক্তা এই চকচক করার কি কারণ বলেছিল?

উত্তর: বক্তা পথিক চরিত্রটি বলেছিল যে নতুন কলের পয়সা হওয়ায় মুদ্রার দুটি চকচক করছে।


প্রশ্ন: এ যে বড় বড় ঠকেছে।"-কিসের সম্পর্কে কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: রাধারাণী কে মালার দাম হিসেবে প্রতি চার পয়সা দিলে তা অন্ধকারে তার কাছে অনেক বড় মনে হয়।


প্রশ্ন:"... তখন ফিরাইয়াদিব‌।"-কখন ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: ঘরের আলোয় ভালোভাবে দেখে পথিকের দেওয়া মুদ্রাটি টাকা হলে তা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।


প্রশ্ন:"তুমি ভুলে টাকা দাও নাইতো?"-কেন একথা বলেছে?

উত্তর: মালার দান হিসেবে দেওয়া পয়সার আকৃতি এবং অন্ধকারেও ঔজ্জ্বল্য দেখতে বক্তার রাধারানীর প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করে।


প্রশ্ন: "তারপর প্রদীপ জ্বালিয়ো।"-'তারপর' বলতে বক্তা কিসের পর প্রদীপ জ্বালাতে বলেছেন?

উত্তর: এখানে বক্তা 'তারপর' বলতে হলে গিয়ে রাধারানীর ভেজা কাপড় ছাড়ার পর বুঝিয়েছেন।


প্রশ্ন:"আমার ব্যামো হয় না।"-কোন প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: মাত্র দুটি কাপড় থাকায় রাধারাণীকে সর্বদা ভিজে কাপড়ে থাকতে হয়। এই প্রসঙ্গে কথাটি বলা হয়েছে।


প্রশ্ন:"... তিনিই বুঝি আবার ফিরিয়া আসিয়াছেন।"-কার কথা এখানে বলা হয়েছে?

উত্তর: বোন ফুলের মালার দাম হিসেবে রাধারাণীকে পয়সার বদলে টাকা দিয়েছেন যিনি সেই পথিকের কথা এখানে বলা হয়েছে।


প্রশ্ন:"আগুন জ্বালিতে কাজে কাজেই একটু বিলম্ব হইল।"-এই বিলম্ব হওয়ার কারণ কি?

উত্তর: ঘরে তেল না থাকায় চালের ঘর ফেরে চকমকি ঢুকে আগুন জ্বালাতে গিয়ে রাধারানী বিলম্ব হয়।


প্রশ্ন: পদ্মলোচনকে পথিক কি বলেছিল?

উত্তর: পদ্মলোচন কে পথিক দুটি কাপড়ের দাম নগদে মিটিয়ে দিয়ে সেগুলি তিনি রাধারাণীকে পৌঁছে দিতে বলেছিলেন।


প্রশ্ন:"তখন রাধারানী বাহিরে আসিয়া তল্লাশ করিয়া দেখিল যে..."-রাধারানী কি দেখেছিল?

উত্তর: রাধারানী দেখেছিল যে তাকে যে ব্যক্তি টাকা দিয়েছিলেন তিনি আর দরজার বাইরে নেই, চলে গেছেন।


প্রশ্ন: রাধারানীর পরিবারের সঙ্গে পদ্মলোচনের পরিচয় কবে থেকে?

উত্তর: রাধারানীর পরিবারের সঙ্গে পদ্মলোচন এর পরিচয় রাধারানীর বাবার আমল থেকে।


প্রশ্ন:"বড় শোরগোল উপস্থিত করিল।"-এই শোরগোলের কারণ কি?

উত্তর: রাজা-রাণীদের কুটিরে আগড় ঠেলে 'কাপুড়ে মিনসে' পদ্মলোচন এর আগমনের ফলে এই শোরগোল হয়েছিল।


প্রশ্ন:"... প্রসন্ন মনে দোকানে ফিরিয়া গেলেন।"-এই প্রসন্নতার কারণ কি?

উত্তর: পদ্মলোচন রুক্মিণীকুমারের কাছ থেকে চার টাকার কাপড়ের দাম আট টাকা সাড়ে চোদ্দো আনা আদায় করে প্রসন্ন হয়েছিল।


প্রশ্ন: রাধারানী ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে কে পেয়েছিল?

উত্তর: রাধারানী ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে একটি কাগজ, যা আসলে একটি নোট (টাকা), তা কুড়িয়ে পেয়েছিল।


প্রশ্ন: রাধারানী প্রাপ্ত টাকা ভাঙ্গিয়ে কি করেছিল?

উত্তর: রাধারানী বাজারে গিয়ে প্রাপ্ত টাকা ভাঙ্গিয়ে মায়ের পথ্য তৈরি জিনিসপত্র ও প্রদীপের তেল কিনেছিল।


প্রশ্ন: রুক্মিণীকুমার নিজের নাম নোটে লিখেছিল কেন?

উত্তর: যাতে লোকটিকে কেউ চোরা নোট না বলে, সেজন্য রুক্মিণী কুমার তাতে নিজের নাম লিখেছিলেন।


প্রশ্ন: রাধারানী ঘর পরিস্কার করছিল কেন?

উত্তর: রাধারানী মাকে খেতে দেবার জন্য তাদের ঘর পরিস্কার করছিল।


প্রশ্ন:"তাহারা দরিদ্র, কিন্তু লোভী নহে।"-এই লোভহীন তার কোন পরিচয় গল্পে পাওয়া যায়?

উত্তর: রাধারানী এবং তার মা লোভী নয় বলেই রুক্মিণী কুমার রায়ের রেখে যাওয়া নোট না ভাঙ্গিয়ে তুলে রেখেছিল।


প্রশ্ন: রাধারানীর কুড়িয়ে পাওয়া নোটে কি লেখা ছিল?

উত্তর: রাধারানীর কুড়িয়ে পাওয়া নোটে রাধারানীর এবং দাতা রুক্মিণী কুমার রায়ের নাম লেখা ছিল।


(৩) নিচের ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ


প্রশ্নঃ "কিন্তু আর আহারের সংস্থান রহিল না।" – এই সংস্থান না থাকার কারণ আলোচনা করো।

উত্তরঃ একজন জ্ঞাতির সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে মামলায় রাধারাণীর বিধবা মা হাইকোর্টে হেরে যায়। জ্ঞাতি ডিক্রি জারি করে তাদের পিতৃপুরুষের ভিটে থেকে উচ্ছেদ করে দশ লক্ষ টাকার সম্পত্তির দখল নেয়। খরচ এবং পাওনা শোধ করতে বাকি সব অর্থ চলে যায়। গয়না ইত্যাদি বিক্রি করে রাধারাণীর মা প্রিভি কাউন্সিলে আপিল করলেও খাবার জোগাড়ের অবস্থা তাদের আর থাকে না।


প্রশ্নঃ "তাহারা দরিদ্র, কিন্তু লোভী নহে।" - মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ রথের মেলা থেকে ফেরার পথে রাধারাণীর সঙ্গে একজনের পরিচয় হয় রাধারাণীকে সাহায্যের জন্য সে তার কাছ থেকে মালা কেনে, তার জন্য কাপড় পাঠানোর ব্যবস্থা করে, এমনকি নিজের ও রাধারাণীর নাম লেখা একটি নোটও তাদের ঘরে রেখে যায়। কিন্তু রাধারাণীরা দরিদ্র হলেও লোভ নয়। সেই ব্যক্তি তাদের জন্য যা দিয়েছিল, তাই যথেষ্ট ছিল। এই উপকারীর উপকারের চিহস্বরূপ সেই নোটটি তারা খরচ করেনি।


প্রশ্নঃ "রাধারাণীর বিবাহ দিতে পারিল না!" - রাধারাণীর বিবাহ দিতে না পারার কারণ আলোচনা করো।

উত্তরঃ সম্পত্তির অধিকার নিয়ে এক জ্ঞাতির সঙ্গে মামলায় হেরে যাওয়ায় রাধারাণীর বিধবা মার প্রায় দশ লক্ষ টাকার সম্পত্তি হাতছাড়া হয়। নগদ টাকা যেটুকু ছিল তা পাওনা শোধ ইত্যাদিতে ব্যয় হয়ে যায়। গয়নাগাটি বিক্কি করে রাধারাণীর মা প্রিভি কাউন্সিলে আপিল করায় তারা আর্থিকভাবে নিঃস্ব হয়ে যায়। এই দারিদ্র্যের কারণেই দৈহিক পরিশ্রম করে কোনো রকমে বেঁচে থাকা রাধারাণীর মার পক্ষে রাধারাণীর বিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি।


প্রশ্নঃ "নোটখানি তাহারা ভাঙাইল না।" - নোটখানি কারা কেন ভাঙাল না?

উত্তরঃ 'রাধারাণী' গল্পাংশে রাধারাণী আর তার মা পথিকের ফেলে যাওয়া নোটটি ভাঙাল না।

     রাধারাণী এবং তার মা পথিক রুক্মিণীকুমার রায়ের ফেলে যাওয়া নোটটি ভাঙায়নি তার কারণ এর আগে মালার দাম হিসেবে তিনি যে টাকা দিয়েছিলেন তাতেই তাদের প্রয়োজন মিটে গিয়েছিল। নোটটি তাদের প্রয়োজন ছিল না। বরং নোটটি নিলে তাদের অসততাই প্রতিষ্ঠিত হত। তাই তারা নোটটি তুলে রাখল। কেননা তারা দরিদ্র হলেও লোভী নয়।


প্রশ্নঃ "...তাহাতেই যার পৃথ্য হইবে।" - এই ভাবনাসূত্রটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ জ্ঞাতির সঙ্গে মোকদ্দমায় সর্বস্ব হারিয়ে রাধারাণীর বিধবা মা একটি কুটিরে থাকতে করতে শুরু করেন এবং দৈহিক শ্রমের দ্বারা দিন কাটান। কিন্তু গভীর অসুখে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি পরিশ্রমের ক্ষমতা হারান। রথের দিনে মায়ের শারীরিক অবস্থার পরিবর্তনের কারণে তার জন্য পথ্যের প্রয়োজন হয়। রাধারাণী বন থেকে কিছু ফুল তুলে এনে মালা গেঁথে ভাবে রথের হাটে সেটি বিক্রি করেই মায়ের পথ্য জোগাড় করবে।


প্রশ্নঃ "কণ্ঠস্বর শুনিয়া রাধারাণীর রোদন বন্ধ হইল।" - কীর কণ্ঠস্বর শুনে কেন রাধারাণীর রোদন বন্ধ হয়েছিল?

উত্তরঃ 'রাধারাণী' গল্পাংশের উল্লিখিত অংশে পথিকের গলার আওয়াজ শুনে রাধারাণীর কান্না বন্ধ হয়েছিল।

     রথের মেলায় বৃষ্টিতে মেলা ভেঙে যাওয়ার কারণে মালা বিক্রি না হওয়ায় রাধারাণী যখন কাঁদছে, অন্ধকারে কেউ তার ঘাড়ের উপরে এসে পড়ে। ভয়ে রাধারাণী উচ্চৈঃস্বরে কেঁদে ওঠে। তখন সেই অপরিচিত ব্যক্তি প্রশ্ন করেন—"কে গা তুমি কাদ?" চেনা লোক না হলেও গলার আওয়াজে রাধারাণী দয়ালু মানুষের উপস্থিতিই যেন বুঝতে পেরেছিল। তাই তার কান্না বন্ধ হয়েছিল।


প্রশ্নঃ "অগত্যা রাধারাণী কাদিতে কাঁদিতে ফিরিল।" - রাধারাণীর কেঁদে কেঁদে ফেরার কারণ ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ রাধারাণী বুনোফুলের মালা গেঁথে রথের মেলায় গিয়েছিল, তা বিক্রি করে মার পথ্য সংগ্রহ করতে। কিন্তু রথ অর্ধেক টানা হওয়ার পরেই প্রবল বৃষ্টিতে মেলা ভেঙে যায়। রাধারাণী তবুও মেলায় ভিড় আরও জমবে এবং তার মালাও বিক্রি হবে এই আশায় বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে। কিন্তু রাত হওয়ার পরেও বৃষ্টি না থামায় তার আশা ভেঙে যায়। মালা বিক্রি না হওয়ায় রাধারাণী অন্ধকারে কাদতে কাদতে বাড়ির পথ ধরল।


প্রশ্নঃ "রাধারাণীর ক্ষুদ্র বুদ্ধিটুকুতে ইহা বুঝিতে পারিল।" - কার বুদ্ধিকে ক্ষুদ্রবুদ্ধি বলা হয়েছে এবং কেন?

উত্তরঃ রাধারাণীর বুদ্ধিকে ক্ষুদ্র বুদ্ধি বলা হয়েছে। এগারো বছরও পূর্ণ না হওয়া মেয়েটির বুদ্ধি এমনিতেই অপরিণত। দ্বিতীয়ত বনফুলের মালা বিক্রি করতে গিয়ে সে যে অবস্থায় পড়েছে তা-ও তার পক্ষে যথেষ্ট বিড়ম্বনার। অন্ধকার পথে দুর্যোগের মধ্যে একা রাধারাণী যে পরিণত মানুষের মতো অভিজ্ঞতার কারণে বুদ্ধিপ্রয়োগ করতে পারবে না, তা বলাই বাহুল্য। পরিস্থিতির সাপেক্ষে রাধারাণী তাই অতি ক্ষুদ্রবুদ্ধি।


প্রশ্নঃ "মা! এখন কী হবে?" - এ কথা বলার কারণ কী?

উত্তরঃ 'রাধারাণী' গল্পাংশে মালার দাম হিসেবে পথিক রাধারাণীকে চার পয়সা দেওয়ার পরেও রাধারাণীর সন্দেহ হয় পয়সাটি বড়ো বড়ো ঠেকচে। পথিক পয়সার বদলে টাকা দিয়েছে কিনা এমন সন্দেহ রাধারাণীর মনে আসে। পথিক অস্বীকার করলেও রাধারাণী বাড়িতে গিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে সেটি দেখার কথা বলে এবং পথিককে ততক্ষণ অপেক্ষা করতে বলে। রাধারাণী চকমকি ঠুকে আগুন জ্বেলে দেখে তার অনুমান ঠিক। পথিক তাকে টাকাই দিয়েছে| কিন্তু বাইরে এসে দেখে যে পথিক চলে গিয়েছে। এই অবস্থাতে রাধারাণী অসহায় হয়ে মায়ের কাছে জানতে চায় যে সেই পরিস্থিতিতে কী করা উচিত।


প্রশ্নঃ "সেই এক পয়সার বনফুলের মালার সকল কথাই বাহির করিয়া লইল।" - মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ প্রবল বৃষ্টিতে রথের মেলা ভেঙে যাওয়ায় মালা বিক্রি হয় না। এর ফলে মনের কষ্টে রাধারাণী বাড়ির পথ ধরলে এক পথিকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পথিক রাধারাণীকে পিছল পথে হাত ধরে বাড়ি পৌঁছোতেও সাহায্য করে। কিন্তু এই যাত্রাপথে পথিক রাধারাণীর পরিচয়, অল্পবয়সি রাধারাণীর একলা রথ দেখতে যাওয়া, তার কান্নার কারণ ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্ন করে 'এক পয়সার বনফুলের মালা' সম্বন্ধে যাবতীয় তথ্যই জেনে নেয়।


প্রশ্নঃ "তুমি দাঁড়াও, আমি আলো জ্বালি" - এই আলো জ্বালার কারণ আলোচনা করো।

উত্তরঃ প্রবল বৃষ্টিতে রথের মেলা ভেঙে যাওয়ায় রাধারাণীর মালা বিক্রি হয়নি। এর ফলে রাধারাণী মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। অন্ধকার পথে এক পথিকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সে রাধারাণীর মালাটি চার পয়সা দিয়ে কিনে নেয়। কিন্তু রাধারাণীর সন্দেহ হয় যে তাকে দেওয়া মুদ্রাগুলি বড়ো এবং চকচক করছে। পথিক 'ডবল পয়সা', 'নূতন কলের পয়সা' ইত্যাদি বললেও নির্লোভ রাধারাণী বাড়িতে গিয়ে তা আলোয় পরীক্ষা করে নেওয়ার কথা জানায়।

(৪) নিচের রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ


প্রশ্নঃ "রাধারাণী নামে এক বালিকা মাহেশে রথ দেখিতে গিয়াছিল।"-  রিধারাপীর মাহেশে রথ দেখতে যাওয়ার কারণ কী ছিল? সেখানে তার কী অভিজ্ঞতা হয়েছিল?

উত্তরঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'রাধারাণী' গল্পাংশের প্রধান চরিত্র রাধারাণী ছিল এগারো বছরেরও কমবয়সি একটি মেয়ে। জ্ঞাতির সঙ্গে মোকদ্দমায় বিপুল সম্পত্তি বেহাত হওয়ার পরে রাধারাণীর বিধবা মা একটা কুটিরে আশ্রয় নিয়ে শারীরিক পরিশ্রম করে পেটের ভাত জোগাড় করতেন। কিন্তু হঠাৎ তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় রাধারাণীদের দিন চলা দায় হয়। রাধারাণীকে উপোস করতে হয়। কিন্তু রথের দিন তার মায়ের অসুখ বেড়ে গেলে পথ্যের প্রয়োজন হয়। এই পথ্য জোগাড়ের জন্য রাধারাণী বন থেকে ফুল তুলে এনে একটি মালা গাঁথে। মালাটি বিক্রি করে মায়ের পথ্য জোগাড় করার জন্যই রাধারাণী মাহেশে রথের মেলায় যায়। প্রবল বৃষ্টির কারণে মেলা অসময়ে ভেঙে যাওয়ায় রাধারাণীর মালা বিক্রি হয় না। রাধারাণী যখন কাঁদতে কাদতে বাড়ি ফিরছে তখনই অন্ধকার পথে তার ঘাড়ের উপরে একটি লোক এসে পড়ে। সে রাধারাণীর কান্নার কারণ জানতে চায়। লোকটির গলার আওয়াজেই তার দয়ালু স্বভাব উপলদ্ধি করে রাধারাণী। এরপরে রাধারাণীর হাত ধরে সেই অন্ধকার পিছল পথে লোকটি তাকে বাড়ি পৌঁছোতে সাহায্য করে এবং তার রথের মেলায় যাওয়ার কারণনে মালাটি কিনে নেয়।


প্রশ্নঃ 'রাধারাণী' রচনাংশ অবলম্বনে সেকালের সমাজজীবনের পরিচয় দাও।

উত্তরঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'রাধারাণী' রচনাংশটি কোনো সামাজিক সমস্যা ও সংকটকে অবলম্বন করে রচিত না হলেও কাহিনির প্রেক্ষাপটে সমাজ উঁকি দিয়েছে বারেবারেই রাধারাণীর মার নিঃস্ব হওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ কিংবা মামলা-মোকদ্দমা তখন যথেষ্টই ছিল। রথের মেলা উপলক্ষ্যে লোকের ভিড় গ্রামবাংলারই জীবন্ত ছবি। দারিদ্র্য কত কষ্টকর হতে পারে তার পরিচয় পাওয়া যায় যখন রাধারাণীদের খাবার জোটে না, কিংবা রাধারাণী জানায় তার দুটি ভিন্ন কাপড় নেই—ভিজে কাপড়ে থাকতেই সে অভ্যস্ত। কাপড়ের ব্যবসায়ী পদ্মলোচন সাহা অসৎ ব্যাবসাবৃত্তির প্রতীক হয়ে থাকে, যে চার টাকার কাপড় আট টাকা সাড়ে চোদ্দো আনায় বিক্রি করে। মেয়েদের মধ্যে শিক্ষার যে চল ছিল তা বোঝা যায় যখন রাধারাণী সম্পর্কে লেখক বলেন—"রাধারাণী বড়োঘরের মেয়ে, একটু অক্ষরপরিচয় ছিল।" রাধারাণী এবং তার মায়ের রুক্মিণীকুমার রায়ের রেখে যাওয়া নোট তুলে রাখার মধ্য দিয়ে বোঝা যায় পদ্মলোচনের মতো অসৎ চরিত্রের বিপরীতে সৎ এবং আদর্শবাদী মানুষও তখন সমাজে যথেষ্ট ছিল।


প্রশ্নঃ "মোকদ্দমাটি বিধবা হাইকোর্টে হারিল।" - এই বিধবার পরিচয় দিয়ে পরিণতি কী হল সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ 'রাধারাণী' গল্পে রাধারাণীর মা ছিলেন এক অবস্থাপন্ন পরিবারের বউ। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পরে একজন জ্ঞাতির সঙ্গে তার মোকদ্দমা হয়। হাইকোর্টে হেরে যাওয়ার পরে রাধারাণীর মা-কে সর্বস্ব হারাতে হয়। ডিক্রিদার সেই জ্ঞাতি ডিক্রি জারি করে তাকে ভিটে থেকেও উচ্ছেদ করে দেন। প্রায় দশ লক্ষ টাকার সম্পত্তি বেহাত হয়ে যায়। নগদ যা ছিল তা-ও ব্যয় হয়ে যায় মামলার খরচ জোগাতে। অলংকার ইত্যাদি বিক্রি করে রাধারাণীর মা প্রিভি কাউন্সিলে আপিল করে। এইসব মামলা-মোকদ্দমার কারণে রাধারাণীর মা নিঃস্ব হয়ে পড়ে। তার খাবার জোগারের ব্যবস্থা থাকে না। বিধবা একটা কুটিরে আশ্রয় নিয়ে কোনো রকমে শারীরিক পরিশ্রম করে দিন কাটাতে থাকে। দারিদ্র্যের কারণে রাধারাণীর বিয়ে দিতে পারে না। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রথের আগে রাধারাণীর মা ঘোরতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফলে শারীরিক পরিশ্রম করার ক্ষমতাও হারায়। খাবার জোগারের ব্যবস্থা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। আর রাধারাণীকে ভাবতে হয় মার পথ্যের জোগাড় হবে কোথা থেকে।


প্রশ্নঃ রাধারাণীর মা কেন তার বিবাহ দিতে পারেনি?

উত্তরঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'রাধারাণী' রচনাংশে রাধারাণী ছিল। একটি মেয়ে, যার বয়স এগারো বছরও পূর্ণ হয়নি। বড়োলোকের মেয়ে হলেও তাদের অবস্থা ভালো ছিল না। সর্বোপরি রাধারাণীর বাবাও বেঁচে ছিল না। রাধারাণীর মা রাধারাণীর বিয়ে দিতে পারেননি। এককালে অবস্থাপন্ন হলেও রাধারাণীর পরিবার কুমশ নিঃস্ব হয়ে পড়েছিল। একজন জাতির সঙ্গে সম্পত্তির অধিকার নিয়ে রাধারাণীর মার মোকদ্দমা হয়, এবং হাইকোর্টে তিনি হেরে যান। তার ফলে তাদের বাস্তুভিটে থেকে উচ্ছেদ করা হয় এবং দশ লক্ষ টাকার সম্পত্তি বেহাত হয়ে যায়। নগদ যেটুকু ছিল সেটুকুও খরচা ও ওয়াশিলাত অর্থাৎ ক্ষতিপূরণ দিতে চলে যায়। রাধারাণীর মা অলংকার ইত্যাদি বিক্রি করে প্রিভি কাউন্সিলে আপিল করেন। কিন্তু সর্বস্ব হারিয়ে তাদের খাবার জোগাড়ের অবস্থাও থাকে না। রাধারাণীর বিধবা মা একটি কুটিরে আশ্রয় নিয়ে শারীরিক পরিশ্রমের দ্বারা দিন কাটাতে থাকেন। কিন্তু এই তীব্র দারিদ্র্যের কারণে রাধারাণীর মা রাধারাণীর বিয়ে দিতে পারেন না।


প্রশ্নঃ তুমি ঘরে আসিয়া দাড়াও, আমরা আলো জ্বালিয়া দেখি, টাকা কী পয়সা। - বক্তা কখন এই মন্তব্য করেছে? আলো জ্বালার পরের ঘটনা। উল্লেখ করো।

উত্তরঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'রাধারাণী' গল্পাংশে রাধারাণীর কাছে তার ফুলের মালার যাবতীয় কথা শুনে সঙ্গী ভদ্রলোকটি সদয় হয় এবং বাড়ির বিগ্রহকে পরানোর জন্য মালাটি কিনে নিতে চায়৷ রাধারাণী দ্বিধা সত্ত্বেও শেষপর্যন্ত মালাটি বিক্রি করে পথিক ভদ্রলোকটি মালার দাম হিসেবে চার পয়সা দেয়। সেই পয়সা হাতে নিয়ে রাধারাণীর বেশ বড়ো লাগে টাকা বলে মনে হয়। কিন্তু পথিক 'ডবল পয়সা' বলে রাধারাণীকে আশ্বস্ত করে। কিন্তু রাধারাণী এতে সম্পূর্ণ ভরসা করতে পারে না। তাই সে নিজের কুটিরের দরজায় উপস্থিত হয়ে পথিককে অপেক্ষা করতে বলে। উদ্দেশ্য ছিল, প্রদীপের আলো জ্বেলে মুদ্রাগুলি পরীক্ষা করা। ঘরে তেল না থাকায় রাধারাণী চালের খড় টেনে তাতে চকমকি ঠুকে আগুন জ্বালায় এবং দেখে যে তার অনুমানই ঠিক। মালার মূল্য হিসেবে তাকে টাকা দেওয়া হয়েছে, পয়সা নয়। রাধারাণী বাইরে এসে পথিকের খোঁজ করে। কিন্তু দেখে যে, সেই ব্যক্তি চলে গিয়েছে। মায়ের কাছে রাধারাণী তার কী করা উচিত জানতে চাইলে রাধারাণীর মা বলেন যে, দাতা ব্যক্তি তাদের দুঃখ শুনে দান করেছে, তাই তারা সেটা গ্রহণ করবে।


প্রশ্নঃ নোটখানি তাহারা ভাঙাইল না—তুলিয়া রাখিল—তাহারা দরিদ্র, কিন্তু লোভী নহে।” - মন্তব্যটির তাৎপর্য গল্পাংশ অবলম্বনে আলোচনা করো।

উত্তরঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'রাধারাণী' গল্পাংশে রাধারাণীর মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় এগারো বছরেরও কমবয়সি পিতৃহীন রাধারাণীকে মায়ের পথ্য সংগ্রহের জন্য ফুলের মালা গেঁথে তা রথের হাটে বিক্রির জন্য যেতে হয়। কিন্তু প্রবল বৃষ্টির কারণে মালা বিক্রি না হলে এক পথিক তার সাহায্যকারীর ভূমিকায় উপস্থিত হন। তিনি যে শুধু মালাটি কিনে নেন তাই নয়, চার পয়সা দাম ঠিক হলেও তার বদলে দুটি টাকা দেন। এই ঘটনাটি রাধারাণী মেনে নিতে না পারলেও মায়ের কথায় তা গ্রহণ করে। এরপরে কাপড় ব্যবসায়ী পদ্মলোচনের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির পাঠানো দুটি কাপড়ও রাধারাণী বিস্ময়ের সঙ্গে গ্রহণ করে। কিন্তু ঘর ঝাট দিতে গিয়ে পাওয়া নোটটি সে বা তার মা গ্রহণ করতে পারেনি। কারণ তা ছিল তাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত। তাই নোটটি পাওয়ার পরদিন সেটি ফেরত দেওয়ার জন্য তারা সেই পথিক রুক্মিণীকুমার রায়ের অনেক খোঁজ করেছিল। তাকে খুঁজে না পেয়ে নোটটি না ভাঙিয়ে তারা তুলে রাখে। এই ঘটনা প্রমাণ করে দারিদ্র্য রাধারাণীর পরিবারের সততা ও নির্লোভ মানসিকতা কেড়ে নিতে পারেনি, বরং লোভকে জয় করার মধ্য দিয়ে তারা মহান হয়ে উঠেছে।


প্রশ্নঃ "আমরাও ভিখারি হইয়াছি, দান গ্রহণ করিয়া খরচ করি।" - বক্তার এই মন্তব্যের প্রেক্ষাপট গল্পাংশ অবলম্বনে আলোচনা করো।

উত্তরঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'রাধারাণী' গল্পাংশে রাধারাণীর মা এই উক্তিটি করেছেন। রাধারাণীর পরিবার একসময় খুবই সম্পন্ন ছিল। কিন্তু রাধারাণীর বাবার মৃত্যুর পরে এক জ্ঞাতির সঙ্গে সম্পত্তি সম্পর্কিত বিবাদে জড়িয়ে গিয়ে, হাইকোর্টে হেরে মামলার খরচ ও ওয়াশিলাত অর্থাৎ ক্ষতিপূরণ দিতে, প্রিভি কাউন্সিলে আবেদন করতে রাধারাণীর মা নিঃস্ব হয়ে যান। রাধারাণীর মা একটা কুটিরে আশ্রয় নিয়ে শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে দিন কাটাতে থাকেন। মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের অবস্থা আরও খারাপ হয়। উপোস করে দিন কাটানো শুরু হয়। অসুস্থ মায়ের পথ্য সংগ্রহের উদ্দেশে রাধারাণী বনফুলের মালা গেঁথে রথের মেলায় বিক্রি করতে গেলেও বৃষ্টিতে মেলা ভেঙে যাওয়ায় তার মালা বিক্রি হয় না। ফেরার পথে এক পথিক সব শুনে চার পয়সায় মালাটি কিনে নেয়। কিন্তু বাড়ি ফিরে পথিককে বাইরে দাড়াতে বলে সে আগুন জ্বালিয়ে যখন দেখে তাকে পয়সার বদলে টাকা দেওয়া হয়েছে, তখন বাইরে বেরিয়ে সে পথিককে খুঁজে পায় না। বিভ্রান্ত হয়ে রাধারাণী তার মায়ের কাছে পরামর্শ চাইলে মা বলেন যে, দাতা অর্থ দিয়েছেন এবং দরিদ্র বলেই তাদের তা গ্রহণ করে খরচ করা ছাড়া অন্য উপায় নেই।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

3 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

LightBlog

AdsG

close