LightBlog
মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন ২০২৪ - পঞ্চম অধ্যায় – ভারত
Type Here to Get Search Results !

মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন ২০২৪ - পঞ্চম অধ্যায় – ভারত

ভারত

পঞ্চম অধ্যায়

মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন ২০২৪ - পঞ্চম অধ্যায় – ভারত

বিভাগ 'ক'

১) বিকল্প গুলির থেকে সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখঃ- 

১.১) আয়তন অনুসারে ভারতের সর্ববৃহৎ রাজ্য হল -

(ক) মধ্যপ্রদেশ 

(খ) রাজস্থান 

(গ) মহারাষ্ট্র 

(ঘ) জম্মু ও কাশ্মীর

উত্তরঃ (খ) রাজস্থান

১.২) ভারতের নবীনতম রাজ্য টি হল -

(ক) উত্তরাখন্ড 

(খ) ঝাড়খণ্ড 

(গ) ছত্রিশগড় 

(ঘ) তেলেঙ্গানা

উত্তরঃ (ঘ) তেলেঙ্গানা

১.৩) ভারতের মধ্যে সবচেয়ে অল্প জনবসতি বিশিষ্ট  রাজ্য হল -

(ক) জম্মু ও কাশ্মীর 

(খ) অরুণাচল প্রদেশ 

(গ) সিকিম 

(ঘ) নাগাল্যন্ড

উত্তরঃ (গ) সিকিম

১.৪) বর্তমানে ভারতে অঙ্গরাজ্যের সংখ্যা -

(ক) 27 টি 

(খ) 28 টি 

(গ) 29 টি 

(ঘ) 30 টি

উত্তরঃ (গ) 29 টি

১.৫) ভারতের ক্ষুদ্রতম অঙ্গরাজ্যের নাম হলো -

(ক) সিকিম 

(খ) ত্রিপুরা 

(গ) গোয়া 

(ঘ) মিজোরাম 

উত্তরঃ (গ) গোয়া

১.৬) প্রাচ্যের নন্দনকানন বলা হয় -

(ক) ইম্ফল ভূত্বকে 

(খ) কাশ্মীর উপত্যকা 

(গ) সুন্দরবনকে 

(ঘ) কোনোটিই নয়

উত্তরঃ (খ) কাশ্মীর উপত্যকা

১.৭) ভারতের উচ্চতম মালভূমি -

(ক) ছোটনাগপুর 

(খ) দাক্ষিণাত্য মালভূমি 

(গ) লাদাখ মালভূমি 

(ঘ) মেঘালয় মালভূমি

উত্তরঃ (গ) লাদাখ মালভূমি

১.৮) বিন্ধ পর্বত একটি -

(ক) আগ্নেয় 

(খ) ভঙ্গিল 

(গ) স্তুপ 

(ঘ) ক্ষয়জাত পর্বত

উত্তরঃ (গ) স্তুপ

১.৯) লাক্ষাদ্বীপ একধরনের -

(ক) প্রবাল দ্বীপ 

(খ) আগ্নেয় দ্বীপ 

(গ) মহাদেশীয় দ্বীপ 

(ঘ) উপমহাদেশীয় দ্বীপ

উত্তরঃ (ক) প্রবাল দ্বীপ

১.১০) শিবালিকহিমালয়ের পাদদেশীয় অঞ্চলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিলাখণ্ড সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমি গঠিত হয়েছে কাকে বলে -

(ক) খাদার 

(খ) ভাবর 

(গ) ভাঙর 

(ঘ) বেট

উত্তরঃ (খ) ভাবর

১.১১) সিন্ধুর উৎপত্তি কোন্‌ হিমবাহ থেকে -

(ক) সেঙ্গে খাবাব 

(খ) মানস সরোবর 

(গ) চেমায়ুং দং 

(ঘ) সিন্ধুশ্রী

উত্তরঃ (ক) সেঙ্গে খাবাব

১.১২) একটি মিষ্টি জলের হ্রদ -

(ক) পুষ্কর 

(খ) উলার 

(গ) সম্বর 

(ঘ) চিলকা

উত্তরঃ (খ) উলার

১.১৩) ভারত এ সর্বাধিক জল সেচ করা হয় যে পদ্ধতিতে সেটি হল -

(ক) কূপ ও নলকূপ 

(খ) জলাশয় 

(গ) খাল 

(ঘ) ফোয়ারা

উত্তরঃ (গ) খাল

১.১৪) গোদাবরী কে দক্ষিণ ভারতের গঙ্গা বলে কারণ এটি দক্ষিণ ভারতের -

(ক) দীর্ঘতম নদী 

(খ) গুরুত্বপূর্ণ নদী

(গ) পবিত্র নদী 

(ঘ) বৃহৎ অববাহিকার নদী

উত্তরঃ (ক) দীর্ঘতম নদী

১.১৫) নলকূপের মাধ্যমে অতিরিক্ত ভৌম জল তুলে নিলে হতে পারে -

(ক) মাটি দূষণ 

(খ) আর্সেনিক দূষণ 

(গ) বায়ু দূষণ 

(ঘ) শব্দ দূষণ

উত্তরঃ (খ) আর্সেনিক দূষণ

১.১৬) মৌসুমি কথার অর্থ -

(ক) ঋতু 

(খ) বৃষ্টি 

(গ) বায়ু 

(ঘ) তুষারপাত

উত্তরঃ (ক) ঋতু

১.১৭) ভারতের একটি বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল হলো -

(ক) ছোটনাগপুর মালভূমি 

(খ) পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম তীর 

(গ) শিলং মলভূমি 

(ঘ) তামিলনাড়ুর দক্ষিন পূর্ব উপকূল

উত্তরঃ (গ) শিলং মলভূমি

১.১৮) ভারতের জলবায়ুর উপর যে পর্বতের প্রভাব সবচেয়ে বেশি -

(ক) আরাবল্লী 

(খ) হিমালয় 

(গ) পশ্চিমঘাট 

(ঘ) গারো

উত্তরঃ (খ) হিমালয়

১.১৯) পশ্চিমী ঝঞ্জা সৃষ্টি হয় -

(ক) আরব সাগরে 

(খ) লোহিত সাগরে 

(গ) ভূমধ্যসাগরে 

(ঘ) বঙ্গোপসাগরে

উত্তরঃ (গ) ভূমধ্যসাগরে

১.২০) 2014 সালে ভারতে খরার জন্য দায়ী ছিল - 

(ক) এল নিনো 

(খ) লা নিনো 

(গ) পশ্চিমী ঝঞ্জা 

(ঘ) কোনোটিই নয়

উত্তরঃ (ক) এল নিনো

১.২১) ভারতীয় কৃষিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাটি -

(ক) পলি মাটি 

(খ) লালমাটি 

(গ) কালো মাটি 

(ঘ) বেলে মাটি

উত্তরঃ (ক) পলি মাটি

১.২২) পডসল মাটি দেখা যায় -

(ক) সরলবর্গীয় অরণ্য অঞ্চলে 

(খ) মালভূমি 

(গ) সমভূমি 

(ঘ) মেরু অঞ্চলে

উত্তরঃ (ক) সরলবর্গীয় অরণ্য অঞ্চলে 

১.২৩) ভারতের অন্যতম মাটি সংক্রান্ত গবেষণাগারটি -

(ক) কলকাতায় 

(খ) জয়পুর 

(গ) কোচিতে 

(ঘ) দেরাদুনে

উত্তরঃ (খ) জয়পুর

১.২৪) যে মাটিতে কাদা পলি বালির পরিমান প্রায় সমান তা হল -

(ক) দোঁয়াশ মাটি 

(খ) কালো মাটি 

(গ) পডজল মাটি 

(ঘ) ল্যাটেরাইট মাটি

উত্তরঃ (ক) দোঁয়াশ মাটি 

১.২৫) পশ্চিমবঙ্গে ল্যাটেরাইট মাটি দেখা যায় -

(ক) দার্জিলিঙে 

(খ) নদীয়ায় 

(গ) পুরুলিয়ায় 

(ঘ) হাওড়ায়

উত্তরঃ (গ) পুরুলিয়ায়

১.২৬) ম্যানগ্রোভ অরণ্য দেখা যায় -

(ক) বদ্বীপ অঞ্চলে 

(খ) মরুভূমিতে 

(গ) পার্বত্য ভূমিতে 

(ঘ) সমভূমিতে

উত্তরঃ (ক) বদ্বীপ অঞ্চলে

১.২৭) একটি মরু জাতীয় উদ্ভিদের উদাহরণ হলো -

(ক) রডোডেনড্রন 

(খ) ফনিমনসা 

(গ) শিশু 

(ঘ) আম

উত্তরঃ (খ) ফনিমনসা

১.২৮) হিমালয়ের পাদদেশে যে উদ্ভিদের প্রাধান্য সর্বাধিক -

(ক) পর্ণমোচী 

(খ) চিরহরিৎ 

(গ) কাঁটাঝোপ 

(ঘ) সরলবর্গীয়

উত্তরঃ (খ) চিরহরিৎ

১.২৯) জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম দেখা যায় -

(ক) সরলবর্গীয় অরণ্যে 

(খ) মরু উদ্ভিদের 

(গ) ম্যানগ্রোভ অরণ্য 

(ঘ) পর্ণমোচী অরণ্যে

উত্তরঃ (ঘ) ম্যানগ্রোভ অরণ্য

১.৩০) চন্দন গাছ জন্মায় -

(ক) চিরহরিৎ অরণ্যে 

(খ) সরলবর্গীয় অরণ্যে 

(গ) পর্ণমোচী অরণ্যে 

(ঘ) ম্যানগ্রোভ অরণ্য

উত্তরঃ (গ) পর্ণমোচী অরণ্যে

১.৩১) একটি রবিশস্যের উদাহরণ হল -

(ক) ধান 

(খ) গম 

(গ) পাট 

(ঘ) তুলা

উত্তরঃ (খ) গম

১.৩২) সবুজ বিপ্লব কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন -

(ক) ড. নরম্যান বারলো (খ) ড. সাহা (গ) ডঃ হাসান (ঘ) ডঃ মুখোপাধ্যায়

উত্তরঃ (ক) ড. নরম্যান বারলো

১.৩৩) একটি খারিফ শস্য উদাহরন হল - 

(ক) গম 

(খ) তুলা 

(গ) সরষে 

(ঘ) বারলি

উত্তরঃ (খ) তুলা

১.৩৪) তুলা যে প্রকার ফসল সেটি হল -

(ক) খাদ্য 

(খ) পানীয় 

(গ) বাগিচা 

(ঘ) তন্তু

উত্তরঃ (ঘ) তন্তু

১.৩৫) ভারতে কৃষি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত উচ্চ ফলনশীল ধান বীজ -

(ক) সোনালিকা 

(খ) কল্যানসোনা 

(গ) আই আর এইট 

(ঘ) সফেদ লারমা

উত্তরঃ (গ) আই আর এইট

১.৩৬) পেট্রোরসায়ন শিল্প গড়ে উঠেছে -

(ক) তারাপুরে 

(খ) থানেতে 

(গ) ট্রামবেতে 

(ঘ) কানপুরে

উত্তরঃ (গ) ট্রামবেতে

১.৩৭) ভারতের প্রথম সুতাকল স্থাপিত হয় -

(ক) মহারাষ্ট্রে 

(খ) পশ্চিমবঙ্গে 

(গ) গুজরাটে 

(ঘ) তামিলনাড়ুতে

উত্তরঃ (খ) পশ্চিমবঙ্গে

১.৩৮) ভারতের ম্যানচেস্টার হল -

(ক) মুম্বাই 

(খ) ভাবনগর 

(গ) আমদাবাদ 

(ঘ) পুনে

উত্তরঃ (গ) আমদাবাদ

১.৩৯) ভারতের রূঢ় বলা হয় -

(ক) দুর্গাপুরকে 

(খ) জামশেদপুরকে 

(গ) রানীগঞ্জকে 

(ঘ) বোকারোকে

উত্তরঃ (ক) দুর্গাপুরকে

১.৪০) যে শিল্পকে উদীয়মান শিল্প বলা হয় সেটি হল -

(ক) তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প 

(খ) পেট্রোরসায়ন শিল্প 

(গ) পাটশিল্প 

(ঘ) লোহা ও ইস্পাত শিল্প

উত্তরঃ (খ) পেট্রোরসায়ন শিল্প

১.৪১) ভারতের সবচেয়ে জনবিরল কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল -

(ক) দিল্লি 

(খ) লাক্ষাদ্বীপ 

(গ) আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ 

(ঘ) পুদুচের্রী

উত্তরঃ (খ) লাক্ষাদ্বীপ

১.৪২) ভারতে আবার জনোসংখ্যা গণনা করা হবে - 

(ক) 2010 সালে 

(খ) 2011 সালে 

(গ) 2021 সালে 

(ঘ) 2024 সালে

উত্তরঃ (গ) 2021 সালে

১.৪৩) সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী ভারতের সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য হল -

(ক) মহারাষ্ট্র 

(খ) মধ্য প্রদেশ 

(গ) উত্তর প্রদেশ 

(ঘ) অন্ধ্রপ্রদেশ

উত্তরঃ (গ) উত্তর প্রদেশ 

১.৪৪) ভারতের প্রতি হাজার পুরুষ জনসংখ্যার মহিলার সংখ্যা -

(ক) 900 জন 

(খ) 930 জন 

(গ) 940 জন 

(ঘ) 950 জন

উত্তরঃ (গ) 940 জন

১.৪৫) 2011 সালের আদমশুমারি অনুসারে ভারতের সর্বাধিক জনঘনত্ব পূর্ণ রাজ্যটি হল -

(ক) কেরল 

(খ) বিহার 

(গ) পশ্চিমবঙ্গ 

(ঘ) উত্তর প্রদেশ

উত্তরঃ (খ) বিহার

১.৪৬) ভারতে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের সংখ্যা -

(ক) দশটি 

(খ) বারোটি 

(গ) কুড়িটি 

(ঘ) 28 টি

উত্তরঃ (ঘ) 28 টি

১.৪৭) ভারতের প্রথম পাতাল রেল চালু হয় -

(ক) দিল্লিতে 

(খ) মুম্বাই 

(গ) চেন্নাই 

(ঘ) কলকাতায়

উত্তরঃ (ঘ) কলকাতায়

১.৪৮) কত সালে ভারতে প্রথম রেলপথ চালু হয় -

(ক) 1853 খ্রিস্টাব্দে 

(খ) 1855 খ্রিস্টাব্দে 

(গ) 1901 খ্রিস্টাব্দের 

(ঘ) 1910 খ্রিস্টাব্দে

উত্তরঃ (ক) 1853 খ্রিস্টাব্দে

১.৪৯) ভারতের গভীরতম বন্দর -

(ক) মুম্বাই 

(খ) কলকাতা 

(গ) কান্ডালা 

(ঘ) বিশাখাপত্তনম

উত্তরঃ (ঘ) বিশাখাপত্তনম

১.৫০) ভারতের দীর্ঘতম জাতীয় সড়ক -

(ক) NH2 

(খ) NH7 

(গ) NH34 

(ঘ) NH1

উত্তরঃ (খ) NH7 

বিভাগ 'খ' 

২) ২.১) নিন্মলিখিত বাক্যগুলো শুদ্ধ হলে পাশে 'শু' এবং অশুদ্ধ হলে পাশে 'অ' লেখঃ- 

২.১.১) ভারত পৃথিবীর বৃহত্তম উপদ্বীপ।

উত্তরঃ শু 

২.১.২) মেঘালয় রাজ্য টি নামকরণ করেন s p chatterjee।

উত্তরঃ শু 

২.১.৩) মিনিকয় দ্বীপগুলি লাক্ষাদ্বীপের অন্তর্গত।

উত্তরঃ শু 

২.১.৪) পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাংশে তরাই ভূমিকে ডুয়ার্স বলে।

উত্তরঃ শু 

২.১.৫) ভারতের সবচেয়ে উচু পর্বত শ্রেণীটির নাম কারাকোরাম। 

উত্তরঃ শু 

২.১.৬) বুজিলা জেলেপ লা নাথুলা প্রভৃতি গিরিপথ গুলি হিমাদ্রি হিমালয়ে অবস্থিত।

উত্তরঃ শু  

২.১.৭) হাদ্রাবাদ শহরটি কৃষ্ণা নদীর উপনদী মুসির তীরে অবস্থিত।

উত্তরঃ শু 

২.১.৮) হরিদ্বার থেকে রাজমহল পাহাড় পর্যন্ত গঙ্গার মধ্যগতি।

উত্তরঃ শু 

২.১.৯) চিলকা ভারতের পূর্ব উপকূলের একটি উপহ্রদ।

উত্তরঃ শু 

২.১.১০) শিলং বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল এর অন্তর্গত।

উত্তরঃ শু  

২.১.১১) পাহাড় সহ মেঘালয় মালভূমি উত্তরাংশ।

উত্তরঃ শু 

২.১.১২) বৃষ্টির ছাই অঞ্চলকে ভারতের দুর্ভিক্ষ অঞ্চল বলে।

উত্তরঃ শু 

২.১.১৩) লোহার পরিমাণ বেশি থাকলে মাটির রং লাল হয়।

উত্তরঃ শু 

২.১.১৪) মরু প্রায় অঞ্চলে মাটি বালুকা প্রধান।

উত্তরঃ শু 

২.১.১৫) শস‍্যাবর্তন প্রক্রিয়ায় মাটির  উর্বরতা বাড়ানো যায়।

উত্তরঃ শু 

২.১.১৬) ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য হল ভিতরকণিকা।

উত্তরঃ শু 

২.১.১৭) জোয়ার ভাটার জন্যই ম্যানগ্রোভ অরণ্য চিরসবুজ।

উত্তরঃ শু 

২.১.১৮) বনভূমি মরুভূমির প্রসারকে ঠেকিয়ে রাখে।

উত্তরঃ শু 

২.১.১৯) কফি চাষের জন্য লাল দো-আঁশ মাটি আদর্শ।

উত্তরঃ শু  

২.১.২০) ধান চাষের জন্য নদী উপত্যকার পলিমাটি বিশেষ উপযোগী।

উত্তরঃ শু 

২.১.২১) প্রধানত অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে কৃষকেরা যেসব ফসল চাষ করে তাদের অর্থকারী ফসল।

উত্তরঃ শু 

২.১.২২) পেট্রোরসায়ন শিল্পের প্রধান কাঁচামাল হল ন‍্যাপথা।

উত্তরঃ শু 

২.১.২৩) মোটর গাড়ি নির্মাণ শিল্পকে সংযোজনকারী শিল্প বলে।

উত্তরঃ শু

২.১.২৪) অসমের ডিগবৈ পেট্রোরসায়ন শিল্পকেন্দ্র গড়ে উঠেছে।

উত্তরঃ শু

২.১.২৫) 2011 সালের জনগণনা অনুসারে ভারতের জনঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে 382 জন।

উত্তরঃ শু 

২.১.২৬) 1872 সালে ভারতের প্রথম জনগননা হয়।

উত্তরঃ শু 

২.১.২৭) প্রতি হাজার পুরুষ ও নারীর সংখ্যা বিচারে সবচেয়ে কম দমন দিউ এ।

উত্তরঃ শু 

২.১.২৮) মেট্রো রেলের সদর দপ্তর কলকাতায় অবস্থিত।

উত্তরঃ শু 

২.১.২৯) ভারতের দীর্ঘতম সড়ক পরিবহন পথ সোনালি চতুর্ভূজ।

উত্তরঃ শু 

২.১.৩০) মোবাইল ফোন ব্যবহারে ভারতের স্থান বিশ্বে দ্বিতীয়।

উত্তরঃ শু 

২.২) উপযুক্ত শব্দ বসিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করঃ- 

২.২.১) বর্তমানে ভারতে রয়েছে ________ টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। 

উত্তরঃ 7

২.২.২) ভারতের প্রমান দ্রাঘিমা হল ________।

উত্তরঃ 82 ড্রিগ্রী 30 মিনিট পূর্ব

২.২.৩) তেলেঙ্গানার প্রধান ভাষা ______ এবং _______। 

উত্তরঃ তেলুগু , উর্দু

২.২.৪) মরুস্থলির একমাত্র নদী ________। 

উত্তরঃ লুনি

২.২.৫) শিবালিক এবং হিমাচল হিমালয়ের মধ্যবর্তী অংশকে_______ বলে। 

উত্তরঃ দুন

২.২.৬) থর মরুভূমির চলাচল বালিয়াড়ি গুলিকে _____বলে। 

উত্তরঃ ধ্রিয়ান

২.২.৭) যে খালের মাধ্যমে কেবলমাত্র নদীর প্লাবনের জল সেচের কাজে ব্যবহৃত হয় তাকে বলে ______ খাল। 

উত্তরঃ প্লাবন

২.২.৮) জলবিভাজিকা উন্নয়নে জলরাশি ________ থেকে সংগ্রহ করা হয়। 

উত্তরঃ পাহাড়ের পাদদেশ

২.২.৯) পাঞ্জাবের ওপর দিয়ে প্রবাহিত সিন্ধুর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপনদী ______। 

উত্তরঃ শতদ্রু

২.২.১০) রাজস্থানের ধুলি ঝড় ________ নামে পরিচিত। 

উত্তরঃ আঁধি

২.২.১১) দক্ষিণ ভারতে গ্রীষ্মকালে বজ্রবিদ্যুৎ সহ যে বৃষ্টি  হয় তাকে ________ বলে। 

উত্তরঃ আম্র বৃষ্টি

২.২.১২) উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে কালবৈশাখী আসে বলে একে _______ বলে। 

উত্তরঃ nor'wester

২.২.১৩) উত্তর ভারতের নতুন পলিমাটিকে ______ বলে। 

উত্তরঃ খাদার

২.২.১৪) কালো মাটি তৈরি হয় ______ শিলার আবহবিকারে। 

উত্তরঃ ব্যাসল্ট

২.২.১৫) সুন্দরবন অঞ্চলের মাটি ______। 

উত্তরঃ লবণাক্ত

২.২.১৬) ভারতের কেন্দ্রীয় অরণ্য গবেষণাগার _________ এ অবস্থিত। 

উত্তরঃ দেরাদুন

২.২.১৭) ভারতের বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল এ _______ উদ্ভিদ জন্মায়।  

উত্তরঃ সাভানা

২.২.১৮) ঠেস মূল দেখা যায় ________। 

উত্তরঃ ম্যানগ্রোভ অরণ্য

২.২.১৯) গম উৎপাদনে ভারতের _______ রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করে।

উত্তরঃ উত্তর প্রদেশ 

২.২.২০) দাক্ষিণাত্যের কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চলে _____ চাষ খুব ভালো হয়।

উত্তরঃ তুলো 

২.২.২১) _______ কে ভারতের কমলালেবু শহর বলে।

উত্তরঃ নাগপুর 

২.২.২২) পূর্ব ভারতের বৃহত্তম পেট্রোরসায়ন কারখানাটি _____ অবস্থিত।

উত্তরঃ হলদিয়ায় 

২.২.২৩) ইস্পাত দৃঢ় করার জন্য ব্যবহৃত হয় ______।

উত্তরঃ ম্যাঙ্গানিজ 

২.২.২৪) ভারতের বৃহত্তম লৌহ ও ইস্পাত কেন্দ্র হল ______।

উত্তরঃ ভিলাই 

২.২.২৫) পৃথিবীর যে দেশে জনঘনত্ব সবচেয়ে কম ______ ।

উত্তরঃ অস্ট্রেলিয়া

২.২.২৬) আদমশুমারি শব্দের অর্থ _______ । 

উত্তরঃ জনগননা

২.২.২৭) বিশ্বের মোট জনসংখ্যার _________ শতাংশেরও বেশি ভারতীয়। 

উত্তরঃ 17.5

২.২.২৮) দ্রব্য সামগ্রী ও যাত্রী এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া কে _______ বলে।

উত্তরঃ পরিবহন

২.২.২৯) সোনালী চতুর্ভুজের লেন সংখ্যা ______ টি।

উত্তরঃ 6

২.২.৩০) মুম্বাই বন্দরকে ভারতের ______ বলে।

উত্তরঃ প্রবেশদ্বার

২.৩) একটি বা দুটি শব্দ উত্তর দাওঃ- 

২.৩.১) ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে বড় কোন্‌টি? 

উত্তরঃ চীন

২.৩.২) তেলেঙ্গানা রাজ্য টি কবে গঠিত হয়? 

উত্তরঃ 2014 সালের 2 রা জুন।

২.৩.৩) ভারতের বৃহত্তম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নাম কি? 

উত্তরঃ লাক্ষাদ্বীপ

২.৩.৪) 'লা' শব্দের অর্থ কি?

উত্তরঃ গিরিপথ 

২.৩.৫) ভারতের মধ্যে অবস্থিত হিমালয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোনটি? 

উত্তরঃ কাঞ্চনজঙ্ঘা

২.৩.৬) ভারতের বিখ্যাত চারধাম (গঙ্গোত্রী, যমুনোত্র, কেদারনাথ, বদ্রিনাথ) রয়েছে কোন রাজ্যে? 

উত্তরঃ উত্তরাখণ্ডে

২.৩.৭) একটি স্বাদু জলের হ্রদের নাম লেখ। 

উত্তরঃ ডাল হ্রদ

২.৩.৮) নর্মদা নদী তে সৃষ্ট উল্লেখযোগ্য জলপ্রপাতটির নাম কি?

উত্তরঃ ধুঁয়াধার

২.৩.৯) গঙ্গা কোথায় পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছে? 

উত্তরঃ রাজমহল পাহাড় এর কাছে

২.৩.১০) কোন্‌ অঞ্চলে ভারতে বছরে  দুবার বৃষ্টিপাত হয়? 

উত্তরঃ করমন্ডল উপকূলে

২.৩.১১) ভারতের দুটি চরমভাবাপন্ন শহরের নাম লেখা। 

উত্তরঃ দিল্লি, চন্ডিগড় 

২.৩.১২) প্রধানত কোন বায়ুপ্রবাহ ভারতের জলবায়ু কে নিয়ন্ত্রণ করে? 

উত্তরঃ মৌসুমী বায়ু প্রবাহ

২.৩.১৩) কোন্‌ মাটিতে জৈব পদার্থ খুব কম থাকে? 

উত্তরঃ মরু মাটিতে

২.৩.১৪) কাশ্মীর উপত্যকায় পলিমাটিকে কি বলে?

উত্তরঃ কারেওয়া

২.৩.১৫) কোন্‌ মাটি শুকিয়ে গেলে ইটের মতন শক্ত হয়?

উত্তরঃ ল্যাটেরাইট মাটি

২.৩.১৬) একটি জেরোফাইট উদ্ভিদের উদাহরণ দাও। 

উত্তরঃ বাবলা

২.৩.১৭) সরকারি আয়ের কত অংশ অরণ্য থেকে পাওয়া যায়?  

উত্তরঃ 2 শতাংশ

২.৩.১৮) ফনিমনসা কি জাতীয় উদ্ভিদ?

উত্তরঃ মরু উদ্ভিদ

২.৩.১৯) মিলেট বলতে কি বুঝ?

উত্তরঃ  জোয়ার,বাজরা ও রাগি এই তিনটি খাদ্যকে একসঙ্গে মিলেট বলে।

২.৩.২০) ভারতে হেক্টরপ্রতি ধানের উৎপাদন কত?

উত্তরঃ  2462 কেজি/হেক্টর 

২.৩.২১) রাগী উৎপাদনে কোন্‌ রাজ্য ভারতে প্রথম স্থান অধিকার করে?

উত্তরঃ   কর্ণাটক 

২.৩.২২) কোন্‌ শিল্পকে সব শিল্পের মূল বলে?

উত্তরঃ লোহা ও ইস্পাত 

২.৩.২৩) কোন শিল্পকে সূর্যোদয় শিল্প বলে?

উত্তরঃ পেট্রোরসায়ন 

২.৩.২৪) কয়েকটি ভারী ইনজিনিয়ারিং শিল্পের নাম লেখ। 

উত্তরঃ মোটরগাড়ি, বৃহদায়তন যন্ত্রপাতি 

২.৩.২৫) ভারতে কত বছর অন্তর জনগননা করা হয়? 

উত্তরঃ দশ বছর অন্তর

২.৩.২৬) জনসংখ্যা মানচিত্র কিসের ওপর নির্ভর করে? 

উত্তরঃ বৃষ্টিপাতের মানচিত্রের ওপর

২.৩.২৭) ভারতের সবচেয়ে কম জনঘনত্ব যুক্ত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কোন্‌টি? 

উত্তরঃ আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ

২.৩.২৮) ভারতের একটি শুল্কমুক্ত বন্দর এর নাম কি?

উত্তরঃ গুজরাটের কান্দালা

২.৩.২৯) কোন্‌ দেশের ডাকব্যবস্থা পৃথিবীর মধ্যে সর্ববৃহৎ? 

উত্তরঃ ভারতের

২.৩.৩০) দেশের মধ্যে টেলিযোগাযোগ সরকারি পরিসেবা কোন্‌ সংস্থার মাধ্যমে ঘটে? 

উত্তরঃ BSNL

২.৪.১) বাম দিকের সাথে ডানদিকের গুলি মিলিয়ে লেখঃ- 

      বাম দিক                         ডান দিক

২.৪.১) তেলেঙ্গানা                 (ক) kohima

২.৪.২) ঝাড়খন্ড                   (খ) রাঁচি

২.৪.৩) uttarakhand             (গ) দেরাদুন    

২.৪.৪) নাগাল্যান্ড                 (ঘ) হায়দ্রাবাদ 

উত্তরঃ ২.৪.১) তেলেঙ্গানা - (ঘ) হায়দ্রাবাদ ২.৪.২) ঝাড়খন্ড - (খ) রাঁচি ২.৪.৩) uttarakhand - (গ) দেরাদুন ২.৪.৪) নাগাল্যান্ড - (ক) kohima

২.৪.২) বাম দিকের সাথে ডানদিকের গুলি মিলিয়ে লেখঃ- 

       বাম দিক                          ডান দিক

২.৪.১) মালাবার উপকূল          (ক) পুলিকট উপহ্রদ

২.৪.২) করমন্ডল উপকূল         (খ) ভেম্বনাদ কয়াল

২.৪.৩) কোঙ্কন উপকূল           (গ) কোলেরু হ্রদ

২.৪.৪) অন্ধ্র উপকূল               (ঘ) সিন্ধুদুর্গ দ্বীপ

উত্তরঃ ২.৪.১) মালাবার উপকূল - (খ) ভেম্বনাদ কয়াল ২.৪.২) করমন্ডল উপকূল - (ক) পুলিকট উপহ্রদ ২.৪.৩) কোঙ্কন উপকূল - (ঘ) সিন্ধুদুর্গ দ্বীপ ২.৪.৪) অন্ধ্র উপকূল - (গ) কোলেরু হ্রদ

২.৪.৩) বাম দিকের সাথে ডানদিকের গুলি মিলিয়ে লেখঃ- 

      বাম দিক                     ডান দিক

২.৪.১) গঙ্গা                   (ক) অন্তরবাহি নদি

২.৪.২) ব্রহ্মপুত্র               (খ) ভাগীরথী হুগলী

২.৪.৩) সরাবতী              (গ) চেমায়ুং দং হিমবাহ

২.৪.৪) লুনি                   (ঘ) গেরসোপ্পা জলপ্রপাত

উত্তরঃ ২.৪.১) গঙ্গা - (খ) ভাগীরথী হুগলী ২.৪.২) ব্রহ্মপুত্র - (গ) চেমায়ুং দং হিমবাহ ২.৪.৩) সরাবতী - (ঘ) গেরসোপ্পা জলপ্রপাত ২.৪.৪) লুনি - (ক) অন্তরবাহি নদি

২.৪.৪) বাম দিকের সাথে ডানদিকের গুলি মিলিয়ে লেখঃ- 

      বাম দিক                     ডান দিক

২.৪.১) আঁধি                (ক) উত্তর পশ্চিম ভারত

২.৪.২) বরদৈছিলা          (খ) ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা

২.৪.৩) আম্র বৃষ্টি           (গ) odisha ও দক্ষিণবঙ্গের উপকূল

২.৪.৪) আশ্বিনের ঝড়      (ঘ) কেরল

উত্তরঃ ২.৪.১) আঁধি - (ক) উত্তর পশ্চিম ভারত ২.৪.২) বরদৈছিলা - (খ) ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা ২.৪.৩) আম্র বৃষ্টি - (ঘ) কেরল ২.৪.৪) আশ্বিনের ঝড় - (গ) odisha ও দক্ষিণবঙ্গের উপকূল

২.৪.৫) ডান দিকের সাথে বাম দিকের গুলি মিলিয়ে লেখঃ- 

       বাম দিক                         ডান দিক

২.৪.১) পলি মাটি              (ক) ব্যাসল্ট শিলা থেকে তৈরি

২.৪.২) কালো মাটি           (খ) কৃষিকাজ ভাল হয়

২.৪.৩) লালমাটি              (গ) গ্রানাইট থেকে তৈরি

২.৪.৪) নবীন পলি মাটি      (ঘ) খাদার

উত্তরঃ ২.৪.১) পলি মাটি - (খ) কৃষিকাজ ভাল হয় ২.৪.২) কালো মাটি - (ক) ব্যাসল্ট শিলা থেকে তৈরি 

২.৪.৩) লালমাটি - (গ) গ্রানাইট থেকে তৈরি ২.৪.৪) নবীন পলি মাটি - (ঘ) খাদার

২.৪.৬) বাম দিকের সাথে ডানদিকের গুলি মিলিয়ে লেখঃ- 

    বাম দিক                   ডান দিক

২.৪.১) সুন্দরী            (ক) সরলবর্গীয় উদ্ভিদ

২.৪.২) বাবলা            (খ) আর্দ্র পর্ণমোচী উদ্ভিদ

২.৪.৩) সেগুন            (গ) মরু প্রায় অঞ্চলের উদ্ভিদ

২.৪.৪) পাইন            (ঘ) ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ

উত্তরঃ ২.৪.১) সুন্দরী - (ঘ) ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ ২.৪.২) বাবলা - (গ) মরু প্রায় অঞ্চলের উদ্ভিদ ২.৪.৩) সেগুন - (খ) আর্দ্র পর্ণমোচী উদ্ভিদ ২.৪.৪) পাইন - (ক) সরলবর্গীয় উদ্ভিদ

২.৪.৭) বাম দিকের সাথে  ডানদিকের গুলি মিলিয়ে লেখঃ- 

    বাম দিক                  ডানদিক

২.৪.১) কটক         (ক) আখ গবেষনাগার

২.৪.২) পুসা           (খ) তুলা চাষ গবেষণাগার

২.৪.৩) লখনউ       (গ) গম গবেষণাগার

২.৪.৪) নাগপুর       (ঘ) ধান গবেষণাগার

উত্তরঃ ২.৪.১) কটক - (ঘ) ধান গবেষণাগার ২.৪.২) পুসা - (গ) গম গবেষণাগার ২.৪.৩) লখনউ - (ক) আখ গবেষনাগার ২.৪.৪) নাগপুর - (খ) তুলা চাষ গবেষণাগার

২.৪.৮) বাম দিকের সাথে ডানদিকের গুলি মিলিয়ে লেখঃ- 

       বাম দিক                       ডান দিক

২.৪.১) নাগাল্যান্ড            (ক) সবচেয়ে কম জনসংখ্যা

২.৪.২) সিকিম                (খ) সবচেয়ে কম জনঘনত্ব

২.৪.৩) অরুনাচল প্রদেশ     (গ) সবচেয়ে কম সাক্ষরতার হার

২.৪.৪) bihar                 (ঘ) সবচেয়ে কম জনসংখ্যা বৃদ্ধি

উত্তরঃ ২.৪.১) নাগাল্যান্ড - (ঘ) সবচেয়ে কম জনসংখ্যা বৃদ্ধি ২.৪.২) সিকিম - (ক) সবচেয়ে কম জনসংখ্যা ২.৪.৩) অরুনাচল প্রদেশ - (খ) সবচেয়ে কম জনঘনত্ব ২.৪.৪) bihar - (গ) সবচেয়ে কম সাক্ষরতার হার

২.৪.৯) বাম দিকের সাথে ডানদিকের গুলি মিলিয়ে লেখ

      বাম দিক                         ডান দিক

২.৪.১) কলকাতা ঢাকা           (ক) এক্সপ্রেস ওয়ে

২.৪.২) জি টি রোড               (খ) আন্তর্জাতিক রাজপথ

২.৪.৩) মানালি থেকে লেহ       (গ) জাতীয় সড়ক

২.৪.৪) কলকাতা দুর্গাপুর        (ঘ)সীমান্ত পথ

উত্তরঃ ২.৪.১) কলকাতা ঢাকা - (খ) আন্তর্জাতিক রাজপথ ২.৪.২) জি টি রোড - (গ) জাতীয় সড়ক ২.৪.৩) মানালি থেকে লেহ  (ঘ)সীমান্ত পথ ২.৪.৪) কলকাতা দুর্গাপুর - (ক) এক্সপ্রেস ওয়ে

বিভাগ 'গ' 

৩) নিজের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাওঃ- 

প্রশ্নঃ ভারতের মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণতম বিন্দু এবং ভারতের দক্ষিণতম স্থলবিন্দু কোন্‌টি?

উত্তরঃ ভারতের মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণতম বিন্দু হল কন্যাকুমারিকা অন্তরীপ এবং ভারতের দক্ষিণতম স্থলবিন্দু হল আন্দামান – নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণে অবস্থিত ইন্দিরা পয়েন্ট।

প্রশ্নঃ ভারতের বৃহত্তম ও ক্ষুদ্রতম রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নাম লেখো।

উত্তরঃ ভারতের বৃহত্তম রাজ্য - রাজস্থান। বৃহত্তম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল - আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপ। ক্ষুদ্রতম রাজ্য - গোয়া। ক্ষুদ্রতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল - লাক্ষাদ্বীপ। 

প্রশ্নঃ ভারতের কোন রাজ্যের জেলার সংখ্যা সর্বাধিক এবং কোন্ রাজ্যের জেলার সংখ্যা সর্বনিম্ন?

উত্তরঃ ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের জেলার সংখ্যা সর্বাধিক - ৭২টি এবং ত্রিপুরা ও সিকিম জেলার সংখ্যা সর্বনিম্ন - ৪টি করে।

প্রশ্নঃ ভারতের দাক্ষিণাত্যকে উপদ্বীপ বলা হয় কেন?

উত্তরঃ তিনদিক জলভাগ দ্বারা বেষ্টিত কোনো স্থলভাগকে উপদ্বীপ বলে। ভারতের দক্ষিণ ভাগ অর্থাৎ দাক্ষিণাত্যকে উপদ্বীপ বলা হয় কারণ এর পূর্বে বঙ্গোপসার, পশ্চিমে আরব সাগর ও দক্ষিণে ভারতমহাসাগর অর্থাৎ তিনদিকে জলভাগ অবস্থান করছে।

প্রশ্নঃ দুন উপত্যকা কাকে বলে?

উত্তরঃ উত্তরাখণ্ডে শিবালিক ও হিমাচল হিমালয়ের মাঝে যে গঠনগত উপত্যকা রয়েছে তা হল ন উপত্যকা। যেমন - দেরাদুন, চৌখাম্বা। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের উত্তর – পূর্ব ভাগের নাম আকসাই চিন, যা প্রকৃতপক্ষে একটি পর্বতবেষ্টিত উচ্চ মালভূমি। এখানকার গড় উচ্চতা ৪৫০০ মিটার। এখানে কতকগুলি হ্রদ রয়েছে, যার মধ্যে লিংজি টাং একটি লবণাক্ত হ্রদ।

প্রশ্নঃ তাল কী? উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ কুমায়ুন হিমালয়ে হিমবাহ ক্ষয়কার্যের মাধ্যমে সৃষ্ট অবনমিত অংশগুলিতে জল জমে যে হ্রদের সৃষ্টি হয়। সেই হ্রদগুলিকে স্থানীয় ভাষায় তাল বলে। যেমন - সাততাল, ভীমতাল, নৈনিতাল।

প্রশ্নঃ ধ্রিয়ন কাকে বলে?

উত্তরঃ এককথায় ভারতীয় মরুভূমির অঞ্চলের চলমান বালিয়াড়িকে থ্রিয়ান বলে।

প্রশ্নঃ ধান্দ কাকে বলে?

উত্তরঃ থর মরুভূমির লবণাক্ত জলের অস্থায়ী হ্রদ হল ধান্দ। বছরের বেশিরভাগ সময় এগুলি শুষ্ক থাকে।

প্রশ্নঃ দোয়াব কাকে বলে?

উত্তরঃ সঞ্জয়কার্যের ফলে সৃষ্ট দুটি নদীর মধ্যবর্তী সমভূমি অঞ্চল দোয়ার নামে পরিচিত। যেমন - উচ্চগঙ্গা সমভূমির গঙ্গা ও যমুনার মধ্যবর্তী সমভূমি ভারতের বৃহত্তম দোয়াব।

প্রশ্নঃ খাদার কাকে বলে?

উত্তরঃ উচ্চগঙ্গা সমভূমির নদী তীরবর্তী যে সমস্ত অঞ্চল নবীন পলিমাটি দিয়ে গঠিত, সেই সমস্ত অঞ্চলকে খাদার বলে। এটি উর্বর সমভূমি।

প্রশ্নঃ ভাঙ্গার কাকে বলে? 

উত্তরঃ উচ্চগঙ্গা সমভূমির নদীর অববাহিকা থেকে দূরবর্তী প্রাচীন পলিমাটি দিয়ে গঠিত অঞ্চলকে ভাঙ্গার বলে। এই অঞ্চলটি প্রাচীন পলিমাটি দিয়ে গঠিত বলে সামান্য উঁচু সমতলভূমি। এই অংশে বন্যার প্রকোপ কম তাই এই অঞ্চল কৃষির পক্ষে অনুপযোগী। পাঞ্জাবে এই অঞ্চল ধায়া নামে পরিচিত।

প্রশ্নঃ ভাবর কাকে বলে?

উত্তরঃ পশ্চিমে সিন্ধু থেকে পূর্বে তিস্তা পর্যন্ত শিবালিকের পাদদেশ বরাবর নুড়ি, পেবেল দ্বারা গঠিত অনুর্বর ভূমি ভাবর নামে পরিচিত। এর গড় বিস্তার ৮-১৬ কিমি। বালি ও পাথরের নুড়ি দ্বারা গঠিত এই অঞ্চলের মৃত্তিকা হল ছিদ্রযুক্ত। এই কারণে হিমালয় পর্বত থেকে উৎপন্ন ছোটো ছোটো নদীগুলি এই অঞ্চলে প্রবাহিত হয়ে আসার পর ভূগর্ভস্থ হয়ে ফল্গুধারার সৃষ্টি হয়েছে। কৃষিকাজের পক্ষে এই অঞ্চল অনুপযুক্ত।

প্রশ্নঃ তরাই বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ ভাবর অঞ্চলের দক্ষিণ প্রান্তে ভূগর্ভস্থ নদীগুলি যেখানে আত্মপ্রকাশ করেছে, সেখানকার ১৫ থেকে ৩০ কিমি প্রশস্ত স্যাঁতসেঁতে জলাভূমিকে সাধারণভাবে তরাই বলা হয়। প্রধানত বালি ও পলি দ্বারা গঠিত তাই এই অঞ্চল কৃষিকাজের পক্ষে মোটামুটি উপযুক্ত।

প্রশ্নঃ অন্তর্বাহিনী নদী কাকে বলে? 

উত্তরঃ যে সমস্ত নদীর প্রবাহপথ কোনো দেশ বা মহাদেশে মধ্যেই সীমাবদ্ধ অর্থাৎ যেসব নদী স্থলভাগের বাইরে কোনে সাগর বা জলভাগে না পড়ে স্থলভাগের মধ্যেই কোনো হ্রদ বা জলাশয়ে পতিত হয় কিংবা স্থলভাগেই বিলীন হয়ে যায়, সেইস নদীকে অন্তর্বাহিনী নদী বলে। উদাহরণ - লুনি, ইম্ফল, ঘাঘর ইত্যাদি।

প্রশ্নঃ উত্তর ভারতের এবং দক্ষিণ ভারতের তিনটি করে নদীর নাম করো।

উত্তরঃ উত্তর ভারতের তিনটি উল্লেখযোগ্য নদী হল - গঙ্গা, সিন্ধু এবং ব্রহ্মপুত্র। দক্ষিণ ভারতের তিনটি উল্লেখযোগ্য তা হল - গোদাবরী, কৃষ্ণা ও কাবেরী।

প্রশ্নঃ ভারতের ২টি পশ্চিমবাহিনী ও ২টি পূর্ববাহিনী নদীর নাম লেখো।

উত্তরঃ ভারতের ২টি পশ্চিমবাহিনী নদী হল - নর্মদা/তাপ্তি, সবরমতী/মাহী এবং ২টি পূর্ববাহিনী নদী হল - মহানদী/গোদাবরী, কৃষ্ণা/কাবেরী।

প্রশ্নঃ ভারতের অধিকাংশ পূর্ববাহিনী নদী বন্দ্বীপ সৃষ্টি করেছে কেন?

উত্তরঃ ভারতের অধিকাংশ পূর্ববাহিনী নদী বদ্বীপ সৃষ্টি করেছে, কারণ হল - 

(১) পূর্ববাহিনী নদীগুলোর মোহানায় স্রোতের বেগ কম, তাই পলিসঞ্চয়ের পরিমাণ বেশি হয়। 

(২) পূর্ববাহিনী নদীগুলির উপনদীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এই সমস্ত নদীর জলে অবক্ষেপণযোগ্য পলির পরিমাণ বেশি। 

(৩) পূর্ববাহিনী নদীগুলির মোহানার গভীরতা কম হওয়ায় তুলনামূলকভাবে অগভীর বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন নদীর প্রচুর পলিসঞ্জয়ের ফলে, বঙ্গোপসাগরে পতিত হওয়া ভারতের পূর্ববাহিনী নদীগুলি নিজেদের মোহানায় বদ্বীপ সৃষ্টি করেছে।

প্রশ্নঃ দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি খরস্রোতা কেন?

উত্তরঃ দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি কঠিন আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলাস্তর দ্বারা গঠিত প্রাচীন ও বন্ধুর মালভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত। উঁচুনীচু বন্ধুর ভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ও নদীর ঢাল অত্যন্ত বেশি হওয়ায় এই দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি খরস্রোতা।

প্রশ্নঃ দক্ষিণ ভারতের নদীগুলিকে অনুগামী নদী বলা হয় কেন?

উত্তরঃ দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি ভূমির প্রাথমিক ঢাল অনুযায়ী প্রবাহিত হয় বলে, এই নদীগুলিকে অনুগামী নদী বলে।

প্রশ্নঃ ভারতের কয়েকটি লবণাক্ত হ্রদের নাম লেখো।

উত্তরঃ ভারতের কয়েকটি লবণাক্ত জলের হ্রদ হল - রাজস্থানের সম্বর, পাচভদ্র, দিদওয়ানা এবং জম্মু ও কাশ্মীরের লাদাক অঞ্চলের ও প্যাংগং ও সোমোরারি। 

প্রশ্নঃ আম্রবৃষ্টি কাকে বলে?

উত্তরঃ গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্ণাটক রাজ্যে ঘূর্ণিবায়ুর প্রভাবে বজ্রবিদ্যুৎসহ যে-বৃষ্টিপাত হয়, তাকে আম্রবৃষ্টি বলে।

প্রশ্নঃ আঁধি কাকে বলে?

উত্তরঃ রাজস্থান মরুভূমি অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে যে ধূলিঝড় হয়, স্থানীয় ভাষায় তাকে আঁধি বলে। এই ঝড়ে বৃষ্টি হয় না বলে প্রচুর ধুলো-বালি ওড়ে।

প্রশ্নঃ মৌসুমি বিস্ফোরণ বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ গ্রীষ্মকালের শেষের দিকে উত্তর-পশ্চিম ভারতে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হলে আরব সাগর থেকে আসা জলীয় বাষ্পপূর্ণ আর্দ্র দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু আকস্মিকভাবে পশ্চিম ভারতে প্রবেশ করে। জলীয় বাষ্পপূর্ণ এই বায়ুপ্রবাহ পশ্চিমঘাট পর্বতে বৃষ্টিপাতের মধ্য দিয়ে ভারতে বর্ষাকালের সূচনা করে, তাই একে মৌসুমি বিস্ফোরণ বলা হয়।

প্রশ্নঃ পশ্চিমি ঝঞ্ঝা কাকে বলে?

উত্তরঃ শীতকালে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প বহন করে নিয়ে আসা দুর্বল নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতের প্রভাবে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতের জন্মু-কাশ্মীর, রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখন্ড রাজ্যের শীতকালীন রোদ ঝলমলে আবহাওয়া বিঘ্নিত হয় এবং মাঝে মাঝে এই অঞ্চলে হালকা বৃষ্টিপাত ও পার্বত্য অঞ্চলে তুষারপাত হয়। ২৫ ডিগ্রী - ৩৫ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ধেয়ে আসা এই ঘূর্ণবাতকেই পশ্চিমি ঝঞ্ঝা বলা হয়। এই ঘূর্ণবাতের প্রভাব কখনো-কখনো গাঙ্গেয় উপত্যকা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত আসে। শীতকালীন রবিশস্য চাষের পক্ষে এই বৃষ্টি খুব উপযোগী।

প্রশ্নঃ বৃষ্টিপাতের ছেদ বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ বর্ষাকালে হিমালয় পর্বতের পাদদেশে মৌসুমি অক্ষ অবস্থান করায় হিমালয়ের পাদদেশ বরাবর প্রবল বৃষ্টি হলেও বাকি ভারতের বিভিন্ন অংশ মেঘ-বৃষ্টিহীন থাকে। একেই বৃষ্টিপাতের ছেদ বলে। 

প্রশ্নঃ লোহিত মৃত্তিকায় কোন্ কোন্ ফসল ভালো জন্মায়? 

উত্তরঃ লোহিত মৃত্তিকা অনুর্বর হলেও মিলেট, বাদাম, ভুট্টা, সোয়াবিন, আঙুর ও কফি উৎপাদনের পক্ষে বিশেষ উপযোগী। জলসেচ ও সার প্রয়োগের মাধ্যমে এই মাটিতে ধান, তৈলবীজ, ডাল প্রভৃতির চাষ করা হয়।

প্রশ্নঃ রেগুর মৃত্তিকার রং কালো হয় কেন?

উত্তরঃ ব্যাসল্ট শিলায় আবহবিকারের ফলে সৃষ্ট রেগুর মৃত্তিকায় টাইটানিয়াম অক্সাইডের পরিমাণ খুব বেশি থাকে। এই কারণে রেগুর মৃত্তিকার রং হয় কালো।

প্রশ্নঃ ভুর কাকে বলে?

উত্তরঃ উচ্চ গাঙ্গেয় সমভূমির নিম্ন অঞ্চলে বালি মিশ্রিত অতি সূক্ষ্ম মৃত্তিকা গঠিত তরঙ্গায়িত উচ্চভূমি দেখা যায়, যা ভুর নামে পরিচিত।

প্রশ্নঃ ম্যানগ্রোভ অঞ্চলে ঠেসমূল দেখা যায় কেন?

উত্তরঃ ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ নরম কাদামাটিতে জন্মায়। উপকূল অঞ্চলে প্রবাহিত প্রবল হাওয়ার বেগে গাছগুলি যাতে পড়ে না যায়, তার জন্য কাণ্ডের গোড়ার দিক থেকে এক রকমের অস্থানিক মূল বেরিয়ে মাটিতে প্রবেশ ঠেসমূল করে গাছগুলিকে ধরে রাখে, একেই ঠেসমূল বলা হয়। 

প্রশ্নঃ কোন্ বনভূমিকে 'চিরগোধূলি অঞ্চল' বলা হয় এবং কেন?

উত্তরঃ চিরহরিৎ অরণ্যে অসংখ্য শাখাপ্রশাখা যুক্ত গাছগুলি এত ঘনভাবে জন্মায় যে, সূর্যালোক মাটিতে পৌছোতে পারে না। ফলে বনভূমির তলদেশ অন্ধকারাচ্ছন্ন, আর্দ্র ও স্যাঁতসেঁতে হয়, তাই একে চিরগোধূলি অঞ্চল বলে।

প্রশ্নঃ জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম কাকে বলে?

উত্তরঃ জলময় পরিবেশে জন্মানো গাছের ফল বা বীজগুলি জলে পড়ে যাতে নষ্ট না হয় বা ভেসে না যায়, তার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ঝুলন্ত অবস্থায় বীজ থেকেই অঙ্কুরোদগমের মাধ্যমে নতুন উদ্ভিদের জন্ম হয়। একে বলে জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম। 

প্রশ্নঃ সামাজিক বনসৃজন কী?

উত্তরঃ সামাজিক বনসৃজন হল জনগণের সহায়তায় গ্রামাঞ্চলের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশের উন্নতির উদ্দেশ্যে বনভূমির সংরক্ষণ ও নতুন বনভূমি স্থাপন।

প্রশ্নঃ ক্রান্তীয় পর্ণমোচী উদ্ভিদ কাকে বলে?

উত্তরঃ যেসকল অঞ্চলের উদ্ভিদের অধিকাংশই নির্দিষ্ট ঋতুতে সমস্ত পাতা ঝরে যায়, তাকে পর্ণমোচী শ্রেণির উদ্ভিদ বলে। 

প্রশ্নঃ জেরোফাইট বা জাঙ্গল উদ্ভিদ কাকে বলে? 

উত্তরঃ ভারতের মরু অঞ্চলে অধিক উষ্ণতা ও শুষ্কতার জন্য ক্যাকটাস বা ফণীমনসা, কাঁটাগাছ বা বাবলা জাতীয় উদ্ভিদ জন্মায়, এই ধরনের উদ্ভিদকে জেরোফাইট বলা হয়।

প্রশ্নঃ কৃষিকাজ কাকে বলে? 

উত্তরঃ যখন স্থায়ীভাবে বসবাসকারী মানুষ নিজেদের চাহিদা মেটানোর জন্য উদ্ভিদ ও প্রাণীজ দ্রব্য উৎপাদন করে, তাকে কৃষিকাজ বলে।

প্রশ্নঃ রবি শস্য ও খরিফ শস্য বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ 

রবি শস্যঃ এককথায় রবিশস্যের অর্থ হল 'শীতকালীন ফসল'। প্রধানত জলসেচের ওপর নির্ভর করে শীতকালে যেসব ফসলের চাষ করা হয় সেইসব ফসলকে রবি ফসল বলে। গম, যব, আলু, বিভিন্ন রকমের তৈলবীজ ও ডাল রবি ফসলের উদাহরণ।

খরিফ শস্যঃ এককথায় খরিফ ফসলের অর্থ হল 'বর্ষাকালীন ফসল'। বর্ষাকালে বৃষ্টির জলের ওপর নির্ভর করে। যেসব ফসলের চাষ করা হয়, সেইসব ফসলকে খরিফ শস্য বলে। ধান, পাট, ভুট্টা, আখ, জোয়ার, বাজরা, কার্পাস প্রভৃতি খারিফ ফসলের উদাহরণ।

প্রশ্নঃ অর্থকরী ফসল বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ প্রধানত অর্থ উপার্জনের জন্য বা বাজারে বিক্রির জন্য যেসব ফসল চাষ বা উৎপাদন করা হয় সেইসব ফসলকে অর্থকরী ফসল বলে। যেমন - ভারতে আখ, পাট, কার্পাস তুলা, ডাল, তামাক প্রভৃতি। অবশ্য খাদ্যশস্য বা বাগিচা ফসল বিক্রি করেও অর্থাগম হয়।

প্রশ্নঃ বাগিচা ফসল কাকে বলে?

উত্তরঃ অনুকুল ভৌগোলিক সুবিধাযুক্ত কোনো বৃহদায়তন খামারে সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বিদেশি মূলধনের সহায়তায় যেসব ফসলের চাষ শুরু হয়, তাদের বাগিচা ফসল বলে। যেমন - চা, কফি।

প্রশ্নঃ ঝুম চাষ কাকে বলে?

উত্তরঃ ভারতের উত্তর–পূর্ব পার্বত্য অঞ্চলের অধিবাসী। সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ বন কেটে ও পুড়িয়ে জমি তৈরি করে চাষ করে। কিছু বছর বাদে মাটির উর্বরতা কমে গেলে ওই জমি পরিত্যাগ করে অন্য একটি জমি তৈরি করে চাষ করে, একে ঝুম চাষ বলে। এটি একপ্রকার স্থানান্তর কৃষির উদাহরণ। 

প্রশ্নঃ জীবিকাসত্তাভিত্তিক কৃষি কাকে বলে?

উত্তরঃ কেবলমাত্র জীবনধারণের জন্য কৃষিজ ফসল উৎপাদন করাকে জীবিকাসত্তাভিত্তিক কৃষি বলে। যেমন - ভারতে ধান চাষ হলে জীবিকাসত্তাভিত্তিক কৃষি।

প্রশ্নঃ বিশুদ্ধ কাঁচামাল কাকে বলে? 

উত্তরঃ যেসকল কাঁচামাল শিল্পজাত পণ্যে রূপান্তরিত হলেও তার ওজন কমে না, অর্থাৎ কাঁচামালের ওজন ও সেই থেকে উৎপাদিত দ্রব্যের ওজন একই থাকে, সেই সকল কাঁচামালকে বিশুদ্ধ কাঁচামাল বলে। যেমন - কার্পাস বস্ত্র বয়ন শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল তুলো এবং তুলো থেকে উৎপন্ন বস্ত্রের ওজন মোটামুটি একই থাকে, তাই তুলো হল বিশুদ্ধ কাঁচামাল।

প্রশ্নঃ SAIL সম্পর্কে কী জান?

উত্তরঃ লৌহ–ইস্পাত শিল্পের সুষ্ঠু উৎপাদন, বণ্টন ও পরিচালনার জন্য ১৯৭৩ সালে ভারত সরকার SAIL বা Steel Authority of India Limited সংস্থাটি গঠন করেন। এর মুখ্য কার্যালয় নিউদিল্লিতে অবস্থিত। SAIL-এর অন্তর্গত ইস্পাত কারখানাগুলি হল ভিলাই, দুর্গাপুর, রাউরকেলা, বোকারো, বার্ণপুর, সালেম, বিশাখাপত্তনম, ভদ্রাবতী।

প্রশ্নঃ শিকড় আলগা শিল্প কাকে বলে?

উত্তরঃ যে শিল্পে কাঁচামাল ও শিল্পজাত দ্রব্যের ওজন একই থাকে এবং শিল্প যে-কোনো জায়গাতেগড়ে উঠতে পারে, তাকে শিকড় আলগা শিল্প বলে। 

প্রশ্নঃ অটোমোবাইল শিল্প কাকে বলে?

উত্তরঃ ছোটো–বড়ো যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য উপকরণ, যথা - টায়ার, টিউব, প্লাস্টিক, ফোম, রঙ ইত্যাদি-এর সাহায্যে বিভিন্ন প্রকার নির্মাণকেই যানবাহন অটোমোবাইল শিল্প বলা হয়। যেমন - বাস, লরি, মোটরগাড়ি, মপেড, স্কুটার, মোটরসাইকেল, অটো ইত্যাদি অটোমোবাইল শিল্পের অন্তর্গত। তবে বৃহদায়তন রেলইঞ্জিন, জাহাজ, এরোপ্লেন, হেলিকপ্টার নির্মাণ এই শিল্পের অন্তর্গত নয়।

প্রশ্নঃ অনুসারী শিল্প কাকে বলে?

উত্তরঃ বৃহদায়তন মূল শিল্পের প্রয়োজনে মূল শিল্পের পাশে গড়ে ওঠা অসংখ্য ছোটো ছোটো শিল্পকে অনুসারী শিল্প বলা হয়। যেমন - মোটরগাড়ি নির্মাণ শিল্পের পাশে গড়ে ওঠা ব্যাটারি, কাচ, প্লাস্টিক, ফোম প্রভৃতি শিল্পকে অনুসারী শিল্প বলা হয়।

প্রশ্নঃ পেট্রোরসায়ন শিল্পকে উদীয়মান শিল্প বলে কেন? 

উত্তরঃ গুরুত্ব ও চাহিদার বিচারে পেট্রোরসায়ন শিল্পের স্থান একেবারে উঁচু সারিতে। বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানেই অসংখ্য পেট্রোরসায়ন শিল্পকেন্দ্র বা পেট্রোকেমিক্যাল হাব গড়ে উঠছে। বৈচিত্র্য, গুরুত্ব ও চাহিদার বিচারে এই শিল্পের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল এবং এই শিল্প দ্রুত হারে বেড়ে চলছে বলে একে 'উদীয়মান শিল্প' বলা হয়।

প্রশ্নঃ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প কাকে বলে?

উত্তরঃ মানবসম্পদ অর্থাৎ মানুষের মেধার ওপর ভিত্তি করে যেসব শিল্প গড়ে উঠেছে তার মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প হল অন্যতম। কম্পিউটার ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার সাহায্যে বিভিন্ন প্রকার তথ্য সংগ্রহ, সঞ্চয়, বিশ্লেষণ, পরিমার্জন প্রভৃতি কাজ যখন শিক্ষা, ব্যবসায়িক প্রয়োজনে, জলবায়ু বিশ্লেষণে ব্যবহার করা হয় তখন তাকে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প বলে।

প্রশ্নঃ জনসংখ্যা কাকে বলে?

উত্তরঃ বিজ্ঞানের পরিভাষায় কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানে একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত সমস্ত জীবকে একত্রিতভাবে জনসংখ্যা বলে। জনসংখ্যা বলতে কোনো স্থানে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যাকেই বোঝায়। 

প্রশ্নঃ জনবিস্ফোরণ কাকে বলে? 

উত্তরঃ যখন কোনো দেশে অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে জনসংখ্যা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়, তখন তাকে জনবিস্ফোরণ বলে। এই অবস্থা তখনই সৃষ্টি হয়, যখন বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে জন্মহারের তুলনায় মৃত্যুহার কমে যায়।

প্রশ্নঃ জনঘনত্ব কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো অঞ্চলে মানুষের নন্টনগত তারতম্যের সূচক হল জনসংখ্যার ঘনত্ব বা জনঘনত্ব। অর্থাৎ কোনো স্থানের বা দেশের প্রতি বর্গকিলোমিটার ক্ষেত্রফলে যত জন লোক বাস করে তাকেই জনঘনত্ব বলে।

প্রশ্নঃ ধারণযোগ্য উন্নয়ন কাকে বলে?

উত্তরঃ যে উন্নয়ন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রয়োজন মেটানোর জন্য সম্পদের ভাণ্ডারকে অটুট রেখে, বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা মেটায়, তাকেই ধারণযোগ্য উন্নয়ন বলা হয়।

প্রশ্নঃ নগরায়ণ কাকে বলে?

উত্তরঃ নগরায়ণ হল এমন এক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে গ্রামাঞ্চল ধীরে ধীরে শহরে পরিণত হয় এবং যেখানে আধুনিক জীবনযাত্রা জটিল ও সরল উভয়ভাবেই জীবনে চলার পথ সৃষ্টি করে।

প্রশ্নঃ নারী-পুরুষ-অনুপাত বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ প্রতি হাজার জন পুরুষে নারীর সংখ্যাকে নারী-পুরুষ অনুপাত বলে। যেমন - ২০১১ খ্রিঃ ভারতে নারী-পুরুষের অনুপাত, প্রতি ১০০০ জন পুরুষ জনসংখ্যায় নারীর সংখ্যা হল ৯৪৩ জন।

প্রশ্নঃ মহানগর কাকে বলে?

উত্তরঃ যেসব নগরের জনসংখ্যা ১০ লক্ষ বা তার বেশি, সেই নগরগুলিকে মহানগর বলে। গ্রিক শব্দ 'Metropolis' কথার অর্থ 'মূলনগরী' বা 'Mother city'। উদাহরণ দিল্লি, মুম্বাই ইত্যাদি।

প্রশ্নঃ জলপথকে 'উন্নয়নের জীবনরেখা' বলা হয় কেন? 

উত্তরঃ জলপথ পরিবহণ পদ্ধতি সহজসরল ও কম বায়বহুল, একসাথে প্রচুর পণ্যসামগ্রী বহন করা যায় এবং শিল্প বাণিজ্যের প্রসার ঘটে বলে জলপথ পরিবহণকে 'উন্নয়নের জীবনরেখা' বলা হয়।

প্রশ্নঃ পাইপলাইন পরিবহণ কাকে বলে?

উত্তরঃ যে পরিবহণ পদ্ধতির মাধ্যমে প্রধানত দ্রব্যসামগ্রী পরিবহণ করা হয়, যথা - ক্রুড ওয়েল, রিফাইন্ড অয়েল, প্রাকৃতিক গ্যাস, পানীয় জল ইত্যাদি। তাকেই বলে পাইপলাইন পরিবহণ ব্যবস্থা।

প্রশ্নঃ যোগাযোগ কাকে বলে?

উত্তরঃ বিভিন্ন প্রকার সংবাদ বা তথ্য ও ভাবের আদানপ্রদানকে বলা হয় যোগাযোগ এবং একটি সম্পূর্ণ ও সুগঠিত সংবাদ ও তথ্য আদান প্রদানের ব্যবস্থাকে বলে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

প্রশ্নঃ রজ্জুপথ পরিবহণ ব্যবস্থা বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ রজ্জুপথ বা Ropeway হল এক ধরনের পরিবহণের মাধ্যম যার সাহায্য দ্রব্যাদি বা মানুষজন খনিসমৃদ্ধ বা পাহাড়ি অঞ্চলে, মোটরচালিত তারের মাধ্যমে যাতায়াত করে।

প্রশ্নঃ পুনঃরপ্তানি বন্দর কাকে বলে?

উত্তরঃ যেসকল বন্দরে পন্য আমদানির পর পুনরায় সেই দ্রব্য অন্য স্থানে রপ্তানি হয়, তা হল পুনঃরপ্তানি বন্দর। লন্ডন পৃথিবী বিখ্যাত পুনঃরপ্তানি বন্দর।

বিভাগ 'ঘ' 

৪) সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক উত্তর দাওঃ- 

প্রশ্নঃ ভারতকে 'বৈচিত্র্যময় দেশ' বলা হয় কেন?

উত্তরঃ ভারতে প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে বহু বৈচিত্র্য পরিলক্ষিত হয়। ভারতের অবস্থান ও আয়তনগত বিশালতার জন্য সারা দেশজুড়ে মানুষের ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতি, জীবনধারণের ধরন, পোশাক–পরিচ্ছদ, খাদ্যাভ্যাস সবই ভিন্ন। এমনকি প্রাকৃতিক দিক দিয়েও ভারতের কোথাও সুউচ্চ পার্বত্য অঞ্চল, পাহাড়ি অঞ্চল, কোথাও বন্ধুর মালভূমি আর কোথাও বা নদী অধ্যুষিত সমভূমি অবস্থান করছে। ভারতের এই সর্বাঙ্গীন বৈচিত্র্যময়তার জন্য ভারতকে 'বৈচিত্র্যময় দেশ' বলা হয়। বৈচিত্র্যতার কারণেই ভারতকে 'পৃথিবীর ক্ষুদ্র সংস্করণ'।

প্রশ্নঃ ভারতের রাজ্য পুনর্গঠনে ভাষার ভূমিকা লেখো।

উত্তরঃ ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে রাজ্য পুনর্গঠনের জন্য ভাষার ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশি। ভারতের কোনো বিস্তীর্ণ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ যে যে ভাষায় কথা বলেন, সেই সেই অঞ্চলগুলিকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়। যেমন - ওড়িয়া ভাষা প্রধান অঞ্চলকে ওড়িশা, বাংলা ভাষা প্রধান অঞ্চলকে পশ্চিমবঙ্গ বা অসমীয়া ভাষা প্রধান অঞ্চলকে অসম রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এই হিসেবেই তেলুগু, পাঞ্জাবি, তামিল, কাশ্মীরি ভাষা প্রধান অঞ্চলগুলি হল যথাক্রমে অন্ধ্রপ্রদেশ, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, জম্মু ও কাশ্মীর প্রভৃতি। 

প্রশ্নঃ ভারতবর্ষকে উপমহাদেশ বলার কারণ কী?

উত্তরঃ ভারতবর্ষকে উপমহাদেশ বলার কারণ হল - 

     এশিয়া মহাদেশের সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত ভারত এবং ভারতের অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলি যেমন - পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ এত নিবিড় যে, এই ছয়টি দেশকে একসঙ্গে ভারতীয় উপমহাদেশ বলা হয়। ভারতের মতো এইসব দেশগুলিও এককালে কেন্দ্রীভূত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অঙ্গ হিসেবে বহুদিনই একসঙ্গে অবস্থান করেছে, আবার ভারতের কিছু আগে পরে স্বাধীনতাও লাভ করেছে। এইসব দেশের মূল আইন এবং বৈদেশিক নীতিও অনেকটা একই রকমের। বিশেষ ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য ভারত এইসব দেশের মধ্যমণি হিসেবে অবস্থান করছে বলে মনে করা হয়। তাই এইসব দেশকে একসঙ্গে ভারতীয় উপমহাদেশ বলা হয়। 

প্রশ্নঃ ছোটোনাগপুর মালভূমি কী?

উত্তরঃ রাঁচী মালভূমি, হাজারিবাগ মালভূমি, কোডারমা মালভূমি, বাঘেলখণ্ড মালভূমি এবং রাজমহল পাহাড় নিয়ে গঠিত মালভূমিকে ছোটোনাগপুরের মালভূমি বলা হয়। এই মালভূমির গড় উচ্চতা ৪০০ থেকে ১০০০ মিটার। পশ্চিমদিকে এই মালভূমির উচ্চতা অপেক্ষাকৃত বেশি। ছোটোনাগপুরের মালভূমি পূর্বদিকে ক্রমাগত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সমপ্রায়ভূমিতে পরিণত হয়েছে। পূর্বের এই সমপ্ৰায়ভূমিতে অনেক ছোটো ছোটো টিলা দেখা যায়। ছোটোনাগপুর মালভূমির পূর্ব–পশ্চিমে বিস্তৃত দামোদর গ্রস্ত উপত্যকার দক্ষিণে মানভূম, রাঁচী, পালামৌ নেতারহাট অঞ্চল এবং উত্তরে সাঁওতাল পরগনা ও হাজারিবাগ মালভূমি অবস্থিত। মালভূমিগুলির প্রান্তদেশ হঠাৎ খাড়াভাবে নেমে যাওয়ায় অনেকগুলি জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে জোনা, দশম ও রাজরাগ্রা জলপ্রপাত উল্লেখযোগ্য। 

প্রশ্নঃ ডেকেনট্র্যাপ সম্পর্কে লেখে।

উত্তরঃ ভূবিজ্ঞানীদের মতে, আজ থেকে প্রায় ১৩-১৪ কোটি বছর আগে ভূগর্ভের গুরুমণ্ডল বা ম্যান্টল অঞ্চল থেকে অভি উত্তপ্ত তরল নাভাস্রোতে কোনো রকম বিস্ফোরণ ছাড়াই ভূগর্ভের অসংখ্য ফাটল পথে বাইরে বেরিয়ে এসে ভারতের দাক্ষিণাত্য মালভূমির উত্তর–পশ্চিমভাগের প্রায় ৫ লক্ষ কিলোমিটার অঞ্চলকে লাভায় ঢেকে ফেলেছিল, কালক্রমে যা জমাট বেঁধে দাক্ষিণাত্য মালভূমি গঠন করেছে। এটি পৃথিবীর সুপ্রাচীন ভূখণ্ড গণ্ডোয়ানাল্যান্ডের অন্তর্গত। ভারতের দাক্ষিণাত্যের এই লাভা মালভূমি অঞ্চলটি ডেকানট্র্যাপ নামে পরিচিত। এই বিস্তীর্ণ মালভূমির উপরের অংশ টেবিলের মতো সমতল এবং পরবর্তীকালে বৃষ্টি, বায়ু প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্ষয়িত লাভা স্তরের পার্শ্বদেশ সিঁড়ির মতো ধাপে ধাপে নীচে নেমে গেছে। এই বিশেষ আকৃতির জন্যই দাক্ষিণাত্য মালভূমির উত্তর পশ্চিম অংশকে ডেকানট্র্যাপ বলে। তরল লাভা জমাট বেঁধে তৈরি হয়েছে বলে এই অঞ্চলটি সাধারণভাবে সমতল এবং পর্বতের চূড়া বা মাথাগুলি চ্যাপটা। সমগ্র মালভূমিটি পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে ধাপে ধাপে নেমে গেছে। দীর্ঘকাল ধরে এখানকার কালো ব্যাসল্ট শিলা ক্ষয় হয়ে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে কালো মাটি বা কৃয় মৃত্তিকা সৃষ্টি হয়েছে।

প্রশ্নঃ প্রবাল কী? প্রবাল দ্বীপ কীভাবে গঠিত হয়?

উত্তরঃ প্রবাল হল একপ্রকার ছোটো সামুদ্রিক কীট। সাধারণত ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের সমুদ্রের ৬০ মিটার গভীরতায় প্রবাল জন্মায়। এদের দেহে ক্যালশিয়াম কার্বনেটের শক্ত আবরণ থাকে। কোটি কোটি প্রবাল কীটের দেহাবশেষ জমাট বেঁধে প্রবাল দ্বীপ গঠিত হয়। আরবসাগরের ২৫ টি ছোটো বড়ো দ্বীপ নিয়ে গঠিত লাক্ষাদ্বীপ প্রবাল দ্বীপের উদাহরণ। 

প্রশ্নঃ গঙ্গানদী সম্পর্কে লেখো।

উত্তরঃ 

উৎস ও প্রবাহপথঃ ভারতের 'জাতীয় নদী' পুণ্যতোয়া গঙ্গা হল এই দেশের শ্রেষ্ঠ নদী। গঙ্গা কুমায়ুন হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ নামে তুষার গুহা থেকে ভাগীরথী নামে উৎপন্ন হয়ে সংকীর্ণ গিরিখাতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দেবপ্রয়াগে অলকানন্দার সঙ্গে মিলিত হয়েছে এবং এই দুই মিলিত স্রোত গঙ্গা নামে পরিচিত হয়েছে। গঙ্গা পরে শিবালিক পর্বত অতিক্রম করে হরিদ্বারের কাছে সমভূমিতে অবতরণ করেছে। পরে বিহারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রাজমহল পাহাড়ের কাছে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করে কিছু দূর প্রবাহিত হয়ে মুরশিদাবাদ জেলার মিঠিপুরের কাছে ভাগীরথী ও পদ্মা নামে দুটি শাখায় বিচ্ছিন্ন হয়েছে। গঙ্গার একটি শাখা ভাগীরথী–হুগলি নামে দক্ষিণ দিকে পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।

উপনদীঃ গঙ্গার প্রধান উপনদী যমুনা যমুনোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হয়ে এলাহাবাদ বা প্রয়াগে এসে ডান দিক থেকে গঙ্গায় পতিত হয়েছে, তাই এটি গঙ্গার ডানতীরের উপনদী। চম্বল, বেতোয়া, কেন প্রভৃতি যমুনার উল্লেখযোগ্য উপনদী। এরা দাক্ষিণাত্য মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়েছে। গঙ্গার ডান তীরের উপনদীগুলির মধ্যে শোন নদীটি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, এটিও দাক্ষিণাত্য মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়েছে। ব্রাহ্মণী, ময়ূরাক্ষী, অজয়, দামোদর, রূপনারায়ণ, কাঁসাই প্রভৃতি উপনদীগুলি ভাগীরথী–হুগলি নদীর দক্ষিণ তীরে মিলিত হয়েছে। গঙ্গার বাম তীরের উপনদীগুলির মধ্যে রামগঙ্গা, গোমতী, ঘর্ঘরা, গণ্ডক, মহানন্দা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। গঙ্গা–ব্রহ্মপুত্র–মেঘনার বদ্বীপটি পৃথিবীর মধ্যে বৃহত্তম। 

তীরবর্তী শহরঃ গঙ্গার তীরে কলকাতা, পাটনা, বারাণসী, এলাহাবাদ, কানপুর, হরিদ্বার প্রভৃতি বিখ্যাত শহর ও তীর্থকেন্দ্রগুলি গড়ে উঠেছে। 

বৈশিষ্ট্যঃ গঙ্গানদীর গতিপথে উচ্চগতি, মধ্যগতি ও নিম্নগতি স্পষ্ট বোঝা যায় বলে গঙ্গাকে আদর্শ নদী বলে।

প্রশ্নঃ ভারতকে নদীমাতৃক দেশ বলা হয় কেন?

উত্তরঃ ভারতের বিভিন্ন অংশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, সিন্ধু, গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী, নর্মদা, তাপ্তি, মহানদী, সুবর্ণরেখা, লুনি ইত্যাদি বড়ো এবং অসংখ্য মাঝারি ছোটো ছোটো নদী। এই নদীগুলির উৎপত্তি, প্রবাহপথ এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য বৈচিত্র্যে ভরপুর। সুদূর অতীত কাল থেকেই এই নদনদীগুলি ভারতের জনজীবনের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। এই নদীগুলির তীরেই গড়ে উঠেছে অসংখ্য ছোটো–বড়ো শহর, নগর এমনকি সভ্যতা। উর্বর এই নদী অববাহিকাগুলি কৃষিতে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। নদীগুলির পরিবহণযোগ্যতা, জলের জোগান, জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে, নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকাতে বহু শিল্পকলকারখানাও গড়ে উঠেছে। এছাড়াও দেশের জলসেচ ব্যবস্থা, অভ্যন্তরীণ জলপথে পরিবহণ ব্যবস্থা, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, পানীয় জলের জোগান ইত্যাদি নানান ক্ষেত্রেও নদনদীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এইসকল কারণেই ভারতকে 'নদীমাতৃক দেশ' বলা হয়। 

প্রশ্নঃ ব্রহ্মপুত্র নদে প্রতি বছর বন্যা হয় কেন?

উত্তরঃ ব্রহ্মপুত্র নদ বন্যাপ্রবণ হওয়ার কারণ হল - 

(১) ব্রহ্মপুত্র নদ তিব্বতের মানস সরোবরের নিকটবর্তী চেমায়ুং দুং হিমবাহ থেকে সাংপো নামে উৎপন্ন হয়ে হিমালয়ের সমান্তরালে প্রায় ১,২০০ কিলোমিটার পূর্বে প্রবাহিত হয়ে দিহং নামে ভারতে প্রবেশ করেছে। 

(২) সাদিয়ার কাছে দিহং-দিবং ও লোহিতের সঙ্গে মিলিত হয়ে ব্রহ্মপুত্র নামে আসাম উপত্যকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। 

(৩) আসাম উপত্যকায় ব্রহ্মপুত্রের খাতের ঢাল অত্যন্ত কম হওয়ার ফলে যুগ যুগ ধরে বহু উপনদীর সঞ্চিত বিপুল পরিমাণ পলি বহন করতে করতে ব্রহ্মপুত্র নদীগর্ভ ক্রমশ ভরাট হয়ে অগভীর হয়ে গিয়েছে।

প্রশ্নঃ নর্মদা ও তাপ্তি নদীর মোহানায় বদ্বীপ গড়ে ওঠেনি কেন?

উত্তরঃ ভারতের পশ্চিমবাহিনী নদীর মোহানায় বদ্বীপ গড়ে ওঠেনি, কারণ - 

(১) বেশিরভাগ পশ্চিমবাহিনী নদীর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় এদের জলে পলি কম থাকে। তাপ্তি ও নর্মদা তুলনামূলকভাবে বড়ো নদী হলেও মোহানার কাছে এদের স্রোতের বেগ বেশি হওয়ায় এদের মোহানায় খুব বেশি পরিমাণ পলি সঞ্চিত হতে পারে না।

(২) পশ্চিমবাহিনী নদীগুলির উপনদীর সংখ্যা কম হওয়ায় মোট জলের পরিমাণ এবং সঞ্চয়যোগ্য পলির পরিমাণ কম হয়।

(৩) পশ্চিমবাহিনী নদীগুলির মোহানা অঞ্চলের গভীরতা বেশি হওয়ায় মোহানায় পলিসঞ্জয় তেমন হয় না।

প্রশ্নঃ বহুমুখী পরিকল্পনার উদ্দেশ্য কী?

উত্তরঃ বহুমুখী নদী পরিকল্পনার মাধ্যমে নিম্নলিখিত বিভিন্ন উদ্দেশ্যসাধন করা হয়। যেমন - 

(১) বর্ষাকালে নদীর অতিরিক্ত জলকে নদীসংলগ্ন বিশাল জলাধারে সঞ্চিত করে রাখা হয়। এতে একদিকে যেমন প্রবল বর্ষায় বন্যার নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

(২) জলাধারে সঞ্চিত জলকে ব্যবহার করে সংলগ্ন অঞ্চলে সারাবছর ব্যাপী খালের মাধ্যমে জলসেচ করা হয়।

(৩) জলাশয়গুলি থেকে সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে ছাড়া জলের প্রচণ্ড গতিবেগকে কাজে লাগিয়ে টারবাইন ঘুরিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।

প্রশ্নঃ ভৌমজল বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ সাধারণভাবে সকল প্রকার জল যা ভূঅভ্যন্তরে পাওয়া যায় তাকেই ভৌমজল বলে। ভৌমজল প্রধানত দূষণমুক্ত ও সেচের কাজে এটির উপযোগিতা অনস্বীকার্য। খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ ভৌমজল চাষবাস, শিল্প কারখানায়, শক্তি উৎপাদন ও পানীয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ভৌমজল গুরুত্বপূর্ণ মিষ্টিজলের উৎস। এই ভৌমজল দূষণমুক্ত এবং সেচের কাজে এই জলের উপযোগীতা অনস্বীকার্য। সময়ে ও স্বল্প ব্যয়ে এই ভৌমজল আহরণ করা যায়। শুষ্ক অঞ্চলে এই ভৌমজলের মাধ্যমে সেচকার্য করা হয়ে থাকে। অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের মতো এটি সীমাহীন নয়। তাই ক্রমাগত হারে এই ভৌমজল ব্যবহারের ফলে এর ভাণ্ডারটি ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। ভারতে ৭০% অঞ্চলেই ভৌমজল এখন সংকটময় এবং ৩০% অঞ্চলে এটি চরমসংকটে পৌঁছেছে।

প্রশ্নঃ জল সংরক্ষণ কী? জল সংরক্ষণের গুরুত্বগুলি লেখো। 

উত্তরঃ জল মানুষের জীবন। বর্তমানে মানুষ নানাভাবে জলের অপচয় করছে। এই অপচয় রোধ করতে না পারলে অদূর ভবিষ্যতে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। তাই নানাভাবে জল সংরক্ষণ করা অত্যন্ত দরকার হয়ে পড়েছে। জল সংরক্ষণের গুরুত্বগুলি হল -

(১) মিষ্টি জল ছাড়া অন্য কোনো জল মানুষের তেমন কোনো কাজে লাগে না। তাই মিষ্টি জলের সংরক্ষণ অত্যন্তই গুরুত্বপূর্ণ।

(২) প্রাকৃতিক উপায়ে জল সংরক্ষণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

(৩) প্রাকৃতিক উপায়ে জল সংরক্ষণ করলে খরচ কম হয়।

প্রশ্নঃ কালবৈশাখী কাকে বলে?

উত্তরঃ পূর্ব ভারতে পশ্চিমবঙ্গ ও তার আশপাশে গ্রীষ্মকালের বিকেলে মাঝে মাঝে বজ্রবিদ্যুৎ ও বৃষ্টিপাতের সঙ্গে এক ভীষণ ঝড়ের আগমন ঘটে - এই ঝড় কালবৈশাখী নামে পরিচিত। উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে এই ঝড়ের আগমন ঘটে বলে এর ইংরেজি নাম নর ওয়েস্টার। কালবৈশাখীর বায়ুপ্রবাহ খুবই ঠান্ডা, তাই এই বায়ুর প্রভাবে গ্রীষ্মকালীন উষ্ণতা একলাফে অনেকটা নেমে যায়। 

প্রশ্নঃ আশ্বিনের ঝড় বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ শরৎকালে প্রত্যাবর্তনকারী শুষ্ক মৌসুমি বায়ুর সঙ্গে সমুদ্রের অপেক্ষাকৃত উষ্ণ-আর্দ্র বায়ুর সংঘর্ষে মাঝে মাঝে এল নিনোর আগমন ঘটে। এল নিনোর বছরগুলিতে ভূপৃষ্ঠের কোথাও প্রচন্ড খরা আবার কোথাও বা ব্যাপক ঝড় তুফান সহ মুশলধারে বৃষ্টিপাত ঘটে।

প্রশ্নঃ করমন্ডল উপকূলে শীতকালে বৃষ্টিপাত হয়। - ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ বর্ষাকালে দক্ষিণ - পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এখানে বৃষ্টি পাত হয়। শরৎ ও শীতকালে উত্তরপূর্ব শুষ্ক মৌসুমি বায়ু বঙ্গোপসাগরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে এবং ফেরেল সূত্রানুসারে ডানদিকে বেঁকে করমন্ডল উপকূলে প্রবেশ করে - পূর্বঘাটে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়। তাই উপকূলে দুবার বর্ষাকাল দেখা যায়।

প্রশ্নঃ ভারতে মৌসুমি জলবায়ুর বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উত্তরঃ ভারতে মৌসুমি জলবায়ুর বৈশিষ্ট্যগুলি হল -

(১) মৌসুমি বায়ু গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ-পশ্চিম এবং শীতকালে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়।

(২) ভারতে গ্রীষ্মকাল আর্দ্র এবং শীতকাল শুকনো হয়।

(৩) দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বর্ষাকালে সর্বাধিক পরিমাণ বৃষ্টি হয়।

প্রশ্নঃ ল্যাটেরাইট মাটি অনুর্বর কেন?

উত্তরঃ প্রাচীনকালের আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলার ওপর গভীর আবহবিকারের প্রভাবে শিলাস্তরের উপরিভাগ থেকে সিলিকা ও অন্যান্য দ্রবণীয় খনিজ অপসারিত হয় এবং পড়ে থাকে লোহা ও অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড ও হাইড্রক্সাইড। বাদামি বর্ণের কাকর জাতীয় পদার্থ দিয়ে তৈরি এই মৃত্তিকায় জৈব পদার্থ চুন, ম্যাগনেশিয়াম, নাইট্রোজেন প্রভৃতির পরিমাণ খুবই কম। এই মাটির জলধারণ ক্ষমতাও খুব কম। তাই এই মাটি কৃষির পক্ষে একেবারে অনুর্বর।

প্রশ্নঃ প্রবহমান জলধারা কীভাবে মৃত্তিকাকে ক্ষয় করে?

উত্তরঃ প্রবহমান জলধারার দ্বারা মৃত্তিকা ক্ষরের প্রক্রিয়াসমূহ - 

বৃষ্টির আঘাতে ক্ষয়ঃ বৃষ্টির ফোঁটা সরাসরি মাটিকে আঘাত করলে মাটি আলগা হয় এবং জলের প্রবাহে তা সহজেই যায়।

শিট বা চাদর ক্ষয়ঃ ঢালু জমির ওপর প্রবাহিত জলধারার মাধ্যমে মাটির উপরিস্তরের অপসারণ হল শিট ক্ষয়।

জলনালিকা ক্ষয়ঃ জলপ্রবাহে ছোট্ট ছোট্ট নালি তৈরির মাধ্যমে মাটির অপসারণ হল জলনালিকা ক্ষয়।

প্রশ্নঃ আর্দ্র পর্ণমোচী ও শুষ্ক পর্ণমোচী উদ্ভিদ বলতে কি বোঝ? 

উত্তরঃ 

আর্দ্র পর্ণমোচীঃ ভারতের যেখানে গ্রীষ্মকালীন উষ্ণতা ২৭°–৩০° সেলসিয়াস এবং শীতকালীন উষ্ণতা ১৫°–২০° সেলসিয়াস সেখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১০০–২০০ সেমি এবং বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ৬০%, ৭৫% সে আর্দ্র পর্ণমোচী অরণ্য দেখা যায়। প্রয়োজনীয় উষ্ণতা ও আকার অভাবে এই অরণ্যের বৃক্ষগুলির পাতা শীতকালে করে যায় বলে একে পর্ণমোচী বা 'পাতাঝরা' উদ্ভিদ বলে।

শুদ্ধ পর্ণমোচীঃ সাধারণত ঘাস গুল্ম  জাতীয় ছোটো ছোটো পাতাঝরা গাছ। এইসবকে একসঙ্গে বলে শুষ্ক পর্ণমোচী উদ্ভিদ। ভারতের যেসব অঞ্চল শুষ্ক অর্থাৎ বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম, বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ৫০-১০০ সেমি এবং গড় উচ্চতা হল ২৫°–৩০° সেলসিয়াস সেখানে এই জাতীয় উদ্ভিদ জন্মায়।

প্রশ্নঃ সামাজিক বনসৃজনের তিনটি উদ্দেশ্য লেখো।

উত্তরঃ সামাজিক বনসৃজনের উদ্দেশ্য হল – 

(১) চাহিদা অনুযায়ী নতুন বনভূমি রোপণ ও আদি বনভূমির সংরক্ষণ।

(২) পতিত জমিতে গাছ লাগিয়ে জমি ব্যবহারের উন্নতি।

(৩) রোপণ করা গাছ থেকে ফল, কাঠ, জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ।

(৪) কাগজ, প্লাইউড শিল্পে কাঠের জোগান সুনিশ্চিত করা।

(৫) পশুখাদ্যের জোগান বৃদ্ধি।

(৬) গ্রামের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন।

প্রশ্নঃ অরণ্যসংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা কী?

উত্তরঃ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কোনো দেশে ৩৩.৩৩%। বনভূমি থাকা প্রয়োজন অথচ, বর্তমানে ভারতের বনভূমির পরিমাণ মাত্র ১৯.৪৫%। তাই বনভূমির সংরক্ষণ একান্ত প্রয়োজন। বনভূমি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাগুলি হল -

(১) মৃত্তিকা ক্ষয়রোধ উদ্ভিদের শিকড় মাটিকে ধরে রাখে। বনভূমি ধ্বংস হলে মৃত্তিকা বা ভূমিক্ষয় বাড়বে, যার প্রভাবে কৃষিকার্যের ক্ষতি হবে এবং সমভূমিতে বন্যা বাড়বে। 

(২) মরুভূমির সম্প্রসারণ রোধ বনভূমি ধ্বংসের প্রভাবে মরুভূমির সংলগ্ন অঞ্চলও মরুভূমিতে পরিণত হয়। উদ্ভিদ দ্বারা বাধার অভাবে বালি ক্রমাগত উড়ে গিয়ে অন্যস্থানে সঞ্চিত হয় এবং অঞ্চলটি মরুভূমিতে পরিণত হয়। 

(৩) পরিবেশের ভারসাম্য উদ্ভিদ দিনের বেলা কার্বণ-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে ও অক্সিজেন ছাড়ে। উদ্ভিদের সংখ্যা কমলে কার্বণ-ডাই-অক্সাইড এর পরিমাণ বাড়বে, ফলে পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হবে। 

প্রশ্নঃ শস্যাবর্তন কৃষি কী?

উত্তরঃ যে বহুফসলি কষিব্যবস্থায় বিশেষ কোনো অঞ্চলে জলবায়ুর পরিবর্তন, বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, জমির উর্বরতা, জলসেচ, সার দেওয়া, ফসলের চাহিদা প্রভৃতি বিষয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একই জমিতে বছরের এক এক সময়ে এক এক রকম ফসল উৎপাদন করা হয় তাকে শস্যাবর্তন কৃষি বলে। শস্যাবর্তন কৃষি উৎপাদন পদ্ধতিতে জমি চাষ করা হলে, বাজারের চাহিদা অনুসারে ফসল উৎপাদন করা হয় বলে ন্যায্য দাম পেয়ে একদিকে কৃষকরা উপকৃত হয়, অন্যদিকে জমির উর্বরতাও বজায় থাকে। 

প্রশ্নঃ মিলেট জাতীয় শস্য বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ শুষ্ক ও অনুর্বর অঞ্চলের ফসল হল মিলেট। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ হলেও স্বাদে নিম্নমানের বলে এর জনপ্রিয়তা কম। তবে আদিবাসী অঞ্চলের প্রধান খাদ্য হল মিলেট। জোয়ার, বাজরা, রাগি কোরা কোডন, কোটকি, হারাকা, রাজগিরা প্রভৃতি নিম্নশ্রেণির ফসলকে একসাথে মিলেট বলে।

প্রশ্নঃ ভারতকে কৃষিভিত্তিক দেশ বলা হয় কেন?

উত্তরঃ ভারতকে কৃষিভিত্তিক দেশ বলা হয়। কারণ - 

(১) দেশের প্রায় ৬৫% মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত।

(২) জাতীয় আয়ের প্রায় ১৬.৬% কৃষি ও কৃষি সংক্রান্ত সহযোগী ক্রিয়াকলাপ থেকে আসে।

(৩) কৃষিকাজ ভারতের অর্থনীতিকে নানাভাবে প্রভাবিত করে।

প্রশ্নঃ ভারতীয় কৃষির সমস্যা ও তার সমাধান সম্পর্কে লেখো।

উত্তরঃ যদিও ভারত কয়েকটি ফসল উৎপাদনে অন্যতম শীর্ষস্থানের অধিকারী এবং খাদ্য উৎপাদনে মোটামুটি স্বয়ম্ভর তবু এদেশে কৃষি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন।

(১) চাষিদের মাথা পিছু জমি উন্নত দেশগুলির তুলনায় খুবই কম। আবার জমিগুলি আয়তনে এতো ছোটো এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। যে তাতে উন্নত কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহার সম্ভব নয়।

(২) কয়েকটি রাজ্য বাদ দিলে এখনও পুরোপুরি জমিদারি প্রথা বিলোপ হয়নি।

(৩) কৃষি মৌসুমি নির্ভর এখানে ২/৩ ভাগ কৃষিজমি খামখেয়ালি মৌসুমি বায়ু নির্ভর। ওই জমিগুলিতে বছরে একবার ফসল ফলে এবং তাও অনিশ্চিত।

প্রশ্নঃ দার্জিলিং চা চাষে উন্নত কেন?

উত্তরঃ দার্জিলিং চা উৎপাদনে ভারতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। দার্জিলিং–এর পার্বত্য অঞ্চল ও তার সংলগ্ন তরাই ও ডুয়ার্স অঞ্চলে চা চাষ হয়। দার্জিলিং–এর চা স্বাদে–গন্ধে ও গুণমানে পৃথিবীতে সর্বশ্রেষ্ঠ। এখানে চা উৎপাদনের কারণগুলি হল – 

(১) দার্জিলিং এর ভূপ্রকৃতি পার্বত্যময়। অসমতল ভূপ্রকৃতি, খাড়া ঢাল চা চাষের বিশেষ উপযোগী। দার্জিলিং-এ অধিকাংশ চা বাগিচাগুলি ১০০০ – ২০০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। 

(২) জলবায়ু অঞ্চলের গড় উষ্ণতা ১০°–২০° সেলসিয়াস। বার্ষিক গড় বৃষ্টি ১৫০-২০০ সেমি। মাঝারি থেকে অধিক আর্দ্রতা, মৃদু কুয়াশা ও স্বল্প উন্নতা এখানে উন্নতমানের চা চাষে সহায়তা করেছে। 

(৩) দার্জিলিং–এ মৃত্তিকা অম্লধর্মী পডসল শ্রেণির। এই মাটি লৌহ ও ম্যাঙ্গানিজ সমৃদ্ধ যা চাষের অত্যন্ত উপযোগী। 

প্রশ্নঃ পশ্চিমবঙ্গে পেট্রোরসায়ন শিল্প কোথায় গড়ে উঠেছে? এই শিল্প কোথা থেকে কাঁচামাল পায়?

উত্তরঃ পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায় পেট্রোরসায়ন শিল্প গড়ে উঠেছে। কারণ হল - 

(১) হলদিয়া বন্দরের মাধ্যমে প্রধানত মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা অপরিশোধিত খনিজ তেল নিকটবর্তী হলদিয়া তৈলশোধনাগারে শোধন করার পর খনিজ তেলের বিভিন্ন উপজাত দ্রব্য থেকে পেট্রোরসায়ন শিল্পের কাঁচামাল পাওয়া যায় হলদিয়া তৈলশোধনাগারকে কেন্দ্র করে কাঁচামাল পাওয়ার সুবিধা হল হলদিয়ায় বৃহদায়তন পেট্রোরসায়ন প্রকল্প স্থাপনের প্রধান কারণ। 

(২) ব্যাপক চাহিদা পূর্ব ভারতের বারাউনি ও বঙ্গাইগাঁও ছাড়া অন্য কোনো পেট্রোরসায়ন কারখানা না থাকায় এখানে পেট্রোরসায়ন শিল্পজাত দ্রব্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে। 

(৩) নিকটবর্তী হলদিয়া বন্দরের মাধ্যমে আমদানি–রপ্তানির সুবিধা নিকটবর্তী হলদিয়া বন্দরের মাধ্যমে সহজেই পেট্রোরসায়ন শিল্পের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য উপকরণ আমদানি এবং এখানকার শিল্পজাত দ্রব্য রপ্তানি করা যায়। 

প্রশ্নঃ পেট্রোরসায়ন শিল্পগুচ্ছ বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ যে শিল্প প্রাকৃতিক গ্যাস ও অপরিশোধিত খনিজ তেল বা পেট্রোলিয়ামের বিভিন্ন উপজাত দ্রব্যকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে তা থেকে বিটুমেন ও অ্যাসফল্ট, প্যারাফিন, প্লাস্টিক, পলিয়েস্টার, নাইলন, পলিথিন, কৃত্রিম সুতো, কৃত্রিম রবার, রং, ওষুধ কীটনাশক এবং বহুমুখী নানান ধরনের ভোগ্যপণ্য ও শিল্পসামগ্রী তৈরি করা হয় তাকে 'পেট্রোরসায়ন শিল্পগুচ্ছ' বলে। সাধারণ বৃহদায়তন তৈলশোধনাগারের আশপাশে পেট্রোরাসায়নিক শিল্পের বিভিন্ন উপজাত দ্রব্যকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে মূল শিল্পের অসংখ্য অনুসারী শিল্প গড়ে ওঠে, যাদের একসঙ্গে পেট্রোরাসায়নিক শিল্পগুচ্ছ বলা হয়। যেমন - পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া তৈলশোধনাগারকে কেন্দ্র করে সন্নিহিত অঞ্চলে পেট্রোরাসায়নিক শিল্পগুচ্ছ গড়ে উঠেছে।

প্রশ্নঃ জনসংখ্যা ও জনঘনত্বের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উত্তরঃ জনসংখ্যা ও জনঘনত্বের মধ্যে পার্থক্য হল -

(১) কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানে একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত সমস্ত জীবকে একত্রিত ভাবে জনসংখ্যা বলে, আর কোনো স্থানের বা দেশের প্রতি বর্গকিলোমিটার ক্ষেত্রফলে যতজন লোক বাস করে তাকেই জনঘনত্ব বলে।

(২) কোনো স্থানে বসবাসকারী মানুষ – এর সংখ্যাকে গণনা করে নির্ণয় করা হয়, কিন্তু কোনো অঞ্চলের মোট ক্ষেত্রফল দিয়ে সেই অঞ্চলের মোট জনসংখ্যাকে ভাগ করে নির্ণয় করতে হয়।

প্রশ্নঃ কাম্য জনসংখ্যা বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ যখন দেশের জনসংখ্যা ও সম্পদের পরিমাণ সমান অর্থাৎ Optimum হয়, তখন তাকে কাম্য জনসংখ্যা বলে। অন্যভাবে বলা যায় যে, আদর্শ বা কাম্য জনসংখ্যা হল সেই জনসংখ্যা, যার বৃদ্ধির ফলে দেশে জনাধিক্য দেখা দেয় আবার যার হ্রাসের ফলে দেশে জনস্বল্পতা সৃষ্টি হয়।

     কোনো দেশে কাম্য জনসংখ্যা থাকলে মানব সম্পদের পূর্ণ বিকাশ ঘটে এবং দেশে মোট উৎপাদন ও মাথাপিছু উৎপাদন সর্বাধিক হয়। তবে যেহেতু কাম্য জনসংখ্যা একটি আদর্শ জনসংখ্যা, তাই এটি নির্ণয় করা সহজসাধ্য নয়।

     কাম্য জনসংখ্যা প্রধানত দেশের প্রাকৃতিক, মানবিক ও সাংস্কৃতিক উপাদানের ওপর নির্ভরশীল।

প্রশ্নঃ সোনালি চতুর্ভুজ কাকে বলে?

উত্তরঃ সোনালি চতুর্ভুজ প্রকল্পটি দেশের প্রধান প্রধান শিল্পকেন্দ্র, কৃষিকেন্দ্র ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রকে সংযুক্ত করে নির্মাণ করা হয়েছে। দেশের চারটি মেট্রোপলিটান শহর - দিল্লী, মুম্বাই, কলকাতা, চেন্নাই ৪ থেকে ৬ লেনের দ্রুতগামী সড়কব্যবস্থার মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে, একেই সোনালি চতুর্ভুজ বলে। এর মোট দৈর্ঘ্য হল ৫৮৪৬ কিলোমিটার।

প্রশ্নঃ জলপথ পরিবহনের গুরুত্ব আলোচনা করো।

উত্তরঃ জলপথ পরিবহনের গুরুত্বগুলি হল -

(১) জলপথ পরিবহনের ব্যয় অন্যান্য মাধ্যমের থেকে তুলনামূলকভাবে কম। এর নির্মাণ ও সংরক্ষণ বা দেখাশোনা করার জন্য কোনো খরচ হয় না।

(২) এই পরিবহণ ব্যবস্থায় অনেক বেশি পরিমান পন্যদ্রবাদি পরিবহণ করা যায়।

(৩) অন্যান্য পরিবহণ মাধ্যমের তুলনায় এই জলপথ পরিবহণের ক্ষেত্রে অনেক বেশি ভারী দ্রব্যাদি পরিবহণ করা যায়।

বিভাগ 'ঙ' 

৫) ৫.২) যেকোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাওঃ- 

প্রশ্নঃ পশ্চিম হিমালয়ের ভূপ্রকৃতির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।

উত্তরঃ পশ্চিম হিমালয় পশ্চিমে নাঙ্গা পর্বত থেকে পূর্বে নেপাল সীমান্তে অবস্থিত কালি নদী পর্যন্ত বিস্তৃত। আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে পশ্চিম হিমালয়কে মোটামুটি তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়, যথা -  ১) কাশ্মীর হিমালয়, (২) হিমাচল হিমালয় ও (৩) কুমায়ুন হিমালয়। 

(১) কাশ্মীর হিমালয়ঃ জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের প্রায় ৩,৫০,০০০ বর্গকিমি স্থান জুড়ে কাশ্মীর হিমালয় অবস্থিত। পাঞ্জাবের সমভূমি থেকে ক্রমশ উঁচু হয়ে এখানকার শিবালিক পর্বতমালা উত্তরে হিমাচলের উল্লেখযোগ্য পর্বতশ্রেণি পিরপাঞ্জাল-এ মিশেছে। শিবালিকের গড় উচ্চতা প্রায় ৩,০০০ মিটার। এই অঞ্চলের দক্ষিণ থেকে উত্তরে পর পর পাঁচটি পর্বতশ্রেণি পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে বিস্তৃত হয়েছে, এরা হল - (ক) শিবালিক পর্বতের জম্মু ও পুঞ্জ পাহাড়, (খ) পিরপাঞ্জাল, (গ) জাস্কার, (ঘ) লাডাক এবং (ঙ) কারাকোরাম পর্বত। পিরপাঞ্জাল ও উচ্চ হিমালয়ের মধ্যে রয়েছে ভূস্বর্গ কাশ্মীর উপত্যকা। শ্রীনগরের দক্ষিণে প্রায় ১০০ কিলোমিটার বিস্তৃত পিরপাঞ্জাল পর্বতশ্রেণি (৩,৫০০-৫০০০ মিটার) কাশ্মীর উপত্যকাকে ভারতের অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। কেবলমাত্র বানিহাল বা জওহর (উচ্চতা ২,৮৩২ মিটার), পিরপান্জাল (৩,৪৯৪ মিটার) ও বুলন্দপির (৪,২০০ মিটার) প্রভৃতি গিরিপথগুলি দিয়ে নিসর্গ সৌন্দর্যের জন্য পৃথিবীবিখ্যাত কাশ্মীর উপত্যকায় প্রবেশ করা যায়। কাশ্মীর উপত্যকা দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার এবং প্রস্থে প্রায় ৫০ কিলোমিটার বিস্তৃত। ভূ–বিজ্ঞানীদের মতে, প্রাচীন কোনো হ্রদ ভরাট হয়ে এই উপত্যকার সৃষ্টি হয়েছে। ডাল, উলার প্রভৃতি হ্রদগুলি এই প্রাচীন স্মৃতি আজও বহন করছে। 

(২) হিমাচল হিমালয়ঃ হিমাচল বা পাঞ্জাব হিমালয় পাঞ্জাব ও হিমাচল প্রদেশের প্রায় ৫৬,০০০ বর্গ কিলোমিটার স্থান জুড়ে অবস্থিত। দক্ষিণ থেকে উত্তরে এই অঞ্চলটির উচ্চতা ৬০০ মিটার থেকে ৬,০০০ মিটার। সর্বদক্ষিণে অবস্থিত শিবালিকের গড় উচ্চতা ৬০০-৭০০ মিটার। শিবালিকের উত্তরে রয়েছে ধওলাধর ও নাগটিব্বা পর্বতশ্রেণি। এর উচ্চতা ৩,৫০০-৪,৫০০ মিটার। এদের উত্তরে রয়েছে পিরপাঞ্জাল ও জাস্কর পর্বতশ্রেণি। এদের শৃঙ্গগুলি প্রায়ই তুষারাবৃত থাকে। শিবালিক ও ধওলাধরের মধ্যে কাংড়া, নাগটিব্বা ও ধাওলাধরের মধ্যে শতদ্রু, পিরপাঞ্জাল ও ধওলাধরের মধ্যে কুলু, উচ্চ হিমালয় ও জাস্করের মধ্যে স্পিটি এবং পিরপাঞ্জাল ও উচ্চ–হিমালয়ের মধ্যে লাহুল উপত্যকা অবস্থিত। এই সমস্ত উপত্যকাগুলির প্রাকৃতিক দৃশ্য মনোরম। পিরপাঞ্চালেরর মধ্যবর্তী রোটাং গিরিপথ দিয়ে লাহুল উপত্যকায় প্রবেশ করা যায়। 

(৩) কুমায়ূন হিমালয়ঃ প্রায় ৪৬,০০০ বর্গকিমি বিস্তৃত কুমায়ুন হিমালয় পুরোপুরিভাবে নবগঠিত উত্তরাখণ্ড রাজ্যের অন্তর্গত। শিবালিক, হিমাচল ও হিমাদ্রি এই তিনটি পর্বতশ্রেণি এখানে দেখতে পাওয়া যায়। সর্বদক্ষিণে অবস্থিত শিবালিক পর্বতশ্রেণি প্রায় ১,০০০ মিটার উঁচু। শিবালিক পর্বতশ্রেণি উত্তর দিকে ক্রমশ ঢালু হয়ে দুন উপত্যকায় মিশেছে। দুন উপত্যকাগুলি শিবালিক ও হিমালয়ের মধ্যবর্তী অংশে সমান্তরালভাবে বিস্তৃত। ৩৫ কিমি দীর্ঘ ও ২৫ কিমি বিস্তৃত দেরাদুন উপত্যকাটি সর্ববৃহৎ। দুন উপত্যকাগুলির উত্তরে রয়েছে হিমাচল পর্বতশ্রেণি, এর গড় উচ্চতা ১,৬০০ মিটার। এখানকার মুসৌরি পর্বতশ্রেণিতে মুসৌরি শৈলনগরী অবস্থিত। কুমায়ুন হিমালয়ের উচ্চ অংশে অনেকগুলি হ্রদ বা তাল আছে। এদের মধ্যে নৈনিতাল, ভীমতাল, সাততাল, পুনাতাল প্রভৃতি বিখ্যাত। এই অঞ্চলে 'তাল' বলতে হ্রদকে বোঝায়। হিমাচল হিমালয়ের উত্তরে হিমাদ্রি হিমালয় অবস্থিত। এর গড় উচ্চতা ৬,০০০ মিটারের বেশি। হিমাদ্রির উঁচু শৃঙ্গগুলির মধ্যে নন্দাদেবী (৭,৮১৭ মিটার), কামেট (৭,৭৫৬ মিটার), চৌখাম্বা (৭,১৩৮ মিটার), ত্রিশূল (৭, ১২০ মিটার), দুনগিরি (৭,০৬৬ মিটার), কেদারনাথ (৬,৯৪০ মিটার) নন্দাকোট (৬,৮৬১ মিটার), গঙ্গোত্রী (৬,৬১৪ মিটার), প্রভৃতি বিখ্যাত।

প্রশ্নঃ পূর্ব হিমালয়ের ভূপ্রকৃতির বর্ণনা দাও।

উত্তরঃ পশ্চিমে নেপালের সীমানায় অবস্থিত সিঙ্গালিলা পর্বতশ্রেণি থেকে পূর্বে অরুণাচল প্রদেশের নামচাবারওয়া পর্যন্ত বিস্তৃত হিমালয়ের অংশকে পূর্ব হিমালয় বলা হয়। গড়ে ১৫০০ মিটার উচ্চতাযুক্ত এই হিমালয় সমগ্র সিকিম, ভুটান, পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলা ও প্রায় সমগ্র অরুণাচল প্রদেশজুড়ে বিস্তৃত। আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে এই পূর্ব হিমালয়কে ৩ ভাগে যায়। যথা - (১) সিকিম – দার্জিলিং হিমালয়, (২) ভুটান হিমালয় (ভুটানে অবস্থিত), (৩) অরুণাচল হিমালয়। 

(১) সিকিম–দার্জিলিং হিমালয়ঃ সিকিমের পশ্চিমদিকে অবস্থিত সিঙ্গালিলা পর্বতশ্রেণি থেকে পূর্বদিকে ডানকিয়া পর্বতশ্রেণি পর্যন্ত বিস্তৃত এই সিকিম দার্জিলিং হিমালয়।

     এখানকার উল্লেখযোগ্য পর্বতশৃঙ্গ হল - কাঞ্চনজঙ্ঘা (৮৫৯৮ মিটার ভারতের দ্বিতীয় উচ্চতম ও পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ), সান্দাকফু (৩৬৩০ মিটার, পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ), ফালুট (৩৫৯৬ মিটার), সবরগ্রাম (৩৫৪৩ মিটার)।

     এখানকার উল্লেখযোগ্য গিরিপথগুলি হল - নাথুলা, বুমলা, জেলেপলা ইত্যাদি। নাথুলা ও জেলেপলা গিরিপথের সাহায্যে তিব্বতের চুম্বি উপত্যকার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়।

     দার্জিলিং হিমালয়ের "মিরিক" ও সিকিম হিমালয়ের "ছাঙ্গু" হল এখানের দুটি বিখ্যাত হ্রদ। 

     এখানের প্রধান হিমবাহ - জেমু, তালুং, পৌহুনরী।

প্রশ্নঃ ভারতের পশ্চিম উপকূলের সমভূমির পরিচয় দাও। 

উত্তরঃ ত্রিভুজাকৃতি দাক্ষিণাত্যের মালভূমি অঞ্চলের পূর্ব প্রান্তে বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিম প্রান্তে আরব সাগরের উপকূল বরাবর সংকীর্ণ সমভূমিকে ভারতের উপকূলীয় সমভূমি অঞ্চল বলা হয়, যা - (ক) পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি এবং (খ) পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি - এই দুই অংশে বিভক্ত।

(ক) পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমিঃ ভারতের দক্ষিণ–পশ্চিম প্রান্তে আরব সাগরের উপকূল বরাবর বিস্তৃত প্রায় ১,৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই অঞ্চলটি উত্তরে কচ্ছের রণ অঞ্চল থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত। পূর্ব উপকূলের সমভূমির তুলনায় এই সমভূমি অঞ্চলটি বেশ সংকীর্ণ ও বন্ধুর। 

     ভূপ্রকৃতির তারতম্য অনুসারে পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমিকে ৬ ভাগে ভাগ করা যায়, যথা - (১) কচ্ছের রণ, (২) কচ্ছ উপদ্বীপ, (৩) কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ, (৪) গুজরাট সমভূমি, (৫) কোঙ্কন উপকূলীয় সমভূমি, (৬) কর্ণাটক উপকূলীয় সমভূমি এবং (৭) মালাবার উপকূলীয় সমভূমি। 

(১) কচ্ছের রণঃ গুজরাট রাজ্যের উত্তরে এবং কচ্ছ উপদ্বীপের উত্তর ও পূর্বাংশে ৭৩,৬০০ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত অগভীর জলাভূমি রণ নামে পরিচিত। উত্তরের অংশ বৃহৎ রণ ও দক্ষিণের অংশ ক্ষুদ্র রণ নামে পরিচিত। বর্ষাকালে এই অঞ্চল সমুদ্র এবং লুনি , বানস প্রভৃতি নদনদীর দ্বারা প্লাবিত হয়। গ্রীষ্মকালে এই অঞ্চল সম্পূর্ণ শুষ্ক, উদ্ভিদহীন ও সাদা লবণে আচ্ছাদিত বালুকাময় প্রান্তরে (সমভূমি অঞ্চলে) রূপান্তরিত হয়। 

(২) কচ্ছ উপদ্বীপঃ রণের দক্ষিণে কচ্ছ উপদ্বীপ অবস্থিত। 'কচ্ছ' শব্দের অর্থ 'জলময় দেশ'। তিন দিকে জলবেষ্টিত কচ্ছ উপদ্বীপের উত্তর ও দক্ষিণে সমুদ্র সংলগ্ন অংশে পলিগঠিত সমভূমি এবং মধ্যভাগে ৩১৫-৩৮৫ মিটার উঁচু বেলেপাথরের পাহাড় দেখা যায়। 

(৩) কাথিয়াবাড় উপদ্বীপঃ কচ্ছ উপদ্বীপের কিছুটা দক্ষিণে অবস্থিত এবং তিনদিকে জলবেষ্টিত (আরব সাগর, কচ্ছ উপসাগর ও কাম্বে উপসাগর) কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ অঞ্চলটি সৌরাষ্ট্র নামেও পরিচিত। গিরণার হল এই অঞ্চলের একটি উল্লেখযোগ্য পাহাড়। গিরণার পাহাড়ের গোরখনাথ শৃঙ্খটি হল সৌরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অংশ (উচ্চতা ১,১১৭ মিটার)। 

(৪) গুজরাট সমভূমিঃ গুজরাট সমভূমি অঞ্চলটি উত্তরে কাথিয়াবাড় উপদ্বীপের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে দক্ষিণে মহারাষ্ট্রের উত্তর সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত। পশ্চিম উপকূলের সংকীর্ণ সমভূমিটি এই অঞ্চলে কিছুটা চওড়া হয়ে গিয়েছে। কচ্ছ উপসাগর ও কাম্বে উপসাগর নামে আরব সাগরের দুটি প্রসারিত অংশ এই অঞ্চলের দু’পাশ দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের কিছুটা ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। 

(৫) কোঙ্কন উপকূলীয় সমভূমিঃ প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সমভূমি অঞ্চলটি গুজরাট সমভূমির দক্ষিণ প্রান্ত থেকে গোয়া পর্যন্ত বিস্তৃত। 

(৬) কর্ণাটক উপকূলীয় সমভূমিঃ প্রায় ২২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সমভূমি অঞ্চলটি গোয়া থেকে ম্যাঙ্গালোর প্রান্ত থেকে গোয়া পর্যন্ত বিস্তৃত। 

(৭) মালাবার উপকূলীয় সমভূমিঃ প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সমভূমি ম্যাঙ্গালোর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত। অসংখ্য ছোটো–বড়ো হ্রদ এবং উপহ্রদ (লেগুন) বা কয়ালের উপস্থিতি হল। মালাবার উপকূলের ভূপ্রকৃতির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য।

(খ) পূর্ব উপকূলীয় সমভূমিঃ বঙ্গোপসাগরের উপকূলভাগে ভারতের ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু রাজ্যের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত পূর্ব উপকূলের সমভূমি অঞ্চলটি উত্তরে ওড়িশা থেকে দক্ষিণে তামিলনাড়ু রাজ্যের দক্ষিণ প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ১,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করছে। এই সমভূমির গড় বিস্তার বেশি ১০০ কিলোমিটার। বিশেষত মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা ও কাবেরী বদ্বীপ অঞ্চলে এই উপকূলভূমি পূর্ব–পশ্চিমে বহুদূর বিস্তৃত হয়েছে। পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি অঞ্চলটি প্রধানত দু’ভাগে বিভক্ত, যথা -

(১) উত্তর সরকার উপকূলঃ ওড়িশা সুবর্ণরেখা নদীর মোহানা থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের কৃয়া নদীর বদ্বীপের পূর্বভাগ পর্যন্ত বিস্তৃত উপকূল ভাগকে উত্তর সরকার উপকূল বলা হয়। উত্তর সরকার উপকূলটি (অ) ওড়িশা উপকূল এবং (আ) অন্ধ্ৰ উপকূল - এই দু’টি অংশে বিভক্ত। 

(অ) ওড়িশা উপকূলঃ উত্তর সরকার উপকূলের উত্তরভাগ অবস্থিত উপকুল বা ওড়িশা উপকূলীয় অংশটি প্রধানত মহান বৈতরণী এবং ব্রাহ্মণী নদী তিনটির বদ্বীপ নিয়ে গঠিত হয়েছে। ওড়িশ উপকূলকে মহানদী বদ্বীপ অঞ্চলও বলা হয়। প্রধানত পলিগঠিত নিম্নভূমি, জলাভূমি এবং ছোটো ছোটো বালিয়াড়ি নিয়ে ওড়িশ উপকূল অঞ্চলটি গঠিত। ভারতের বৃহত্তম উপহ্রদ চিল্কা এই অ্যা অবস্থিত। সমুদ্রের সঙ্গে (বঙ্গোপসাগর) যুক্ত থাকায় চিন্তার জল লবণাক্ত।

(আ) অন্ধ্ৰ উপকূলঃ উৎকল উপকুলের পশ্চিমে অবস্থিত অনু উপকূল অঞ্চলটি চিল্কা উপহ্রদ থেকে কৃয়া নদীর মোহানা পর্যন্ত বিস্তৃত। এই অঞ্চলটি প্রাচীন শিলা গঠিত উচ্চভূমি এবং কুমৃত্তিক গঠিত সমভূমি অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয়েছে। অন্ধ্র উপকূলের কয় ও গোদাবরী নদীর বদ্বীপ অঞ্চলে মোহানা থেকে পশ্চিম দিয়ে। স্থলভাগের মধ্য দিয়ে বহুদূর পর্যন্ত (২৮০ কিলোমিটার) প্রসারিত হয়েছে। গোদাবরী ও কৃয়া বদ্বীপের মধ্যে কোলেরু হ্রদ অবস্থিত। 

(২) করমণ্ডল উপকূলঃ কৃষ্ণা বদ্বীপের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত উপকূলভাগকে করমণ্ডল উপকূল বলে। এছাড়া পুলিকট উপহ্রদ থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত উপকূলকে তামিলনাড়ু উপকূলও বলা হয়। এই অংশের কাবেরী বদ্বীপ দক্ষিণ ভারতের শস্যভাণ্ডার। করমণ্ডল উপকূলের দক্ষিণাংশের মান্নার উপসাগর ও পকপ্রণালী অবস্থিত।

প্রশ্নঃ ভারতে জলসেচের যে–কোনো তিনটি প্রয়োজনীয়তা সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ ভারতের কৃষিতে জলসেচের প্রয়োজনীয়তাগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল -

(১) মৌসুমী বৃষ্টিপাতের খামখেয়ালি চরিত্রঃ যদিও ভারতের ৮০% বৃষ্টিপাত দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সম্পন্ন হয়, তবুও মৌসুমি বায়ুর আগমন ও প্রত্যাবর্তনের সময় অত্যন্ত অনিশ্চিত, কারণ কোনো বছর এই বায়ুপ্রবাহ নির্দিষ্ট সময়ের আগে আসে, আবার কোনো বছর নির্দিষ্ট সময়ের পরে আসে। অন্যদিকে মৌসুমি বায়ু কোনো বছর নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রত্যাবর্তন করে, কোনো বছর আবার বেশ পরে। ফলে কোনো কোনো বছর বেশি দিন ধরে বৃষ্টিপাত হয়, কোনো বছর অল্প দিন ধরে বৃষ্টিপাত হয়। মৌসুমি বায়ুর খামখেয়ালি চরিত্রের জন্য কৃষিজমিতে নিয়মিত এবং স্থায়ীভাবে জল সরবরাহের জন্য জলসেচের একান্ত প্রয়োজন।

(২) শীতকালীন বৃষ্টিপাতের অভাবঃ ভারতে শীতকাল শুষ্ক হওয়ায় তামিলনাড়ুর উপকূল এবং উত্তর–পশ্চিম ভারতের কিছু অংশ ছাড়া শীতকালে ভারতে বৃষ্টিপাত প্রায় হয় না বললেই চলে। সেইজন্য শীতকালীন রবিশস্য চাষের জন্য ভারতে জলসেচের প্রয়োজন হয়। 

(৩) বৃষ্টিপাতের অসম বণ্টন এবং আঞ্চলিক বৃষ্টিপাতের তারতম্যঃ মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে ভারতের প্রায় ৮০% বৃষ্টিপাত ঘটলেও ভারতের সর্বত্র একই পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয় না। বিশেষত ভারতের শুষ্ক ও অতিঅল্প বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চল (বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ২০ সেমির নীচে) ও 'অল্প বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চল' (বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২০-৬০ সেমি)-এর অন্তর্গত রাজস্থান, উত্তর–পশ্চিম কাশ্মীর, পূর্ব ও পশ্চিম হরিয়ানা, কচ্ছের রণ অঞ্চল, পূর্ব ও দক্ষিণ–পশ্চিম পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমাংশ ও দাক্ষিণাত্য মালভূমির মধ্যভাগে গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুবই কম। হওয়ায় এইসব অঞ্চলে কৃষিকাজের জন্য জলসেচ অবশ্য প্রয়োজনীয়।

(৪) উচ্চফলনশীল শস্যের চাষঃ আজকাল ভারতে নানারকম উচ্চফলনশীল শস্যের চাষ করা হচ্ছে। উচ্চফলনশীল শস্য চাষে প্রচুর জলের প্রয়োজন হওয়ায় বর্তমানে ভারতে ব্যাপক জলসেচের প্রয়োজন হয়। 

(৫) রবিশস্য চাষঃ প্রধানত জলসেচের ওপর নির্ভর করে শীতকালে যেসব ফসলের চাষ করা হয় সেইসব ফসলকে রবি ফসল বলে। গম, যব, আলু, বিভিন্ন রকমের তৈলবীজ ও ডাল রবি ফসলের উদাহরণ। শীতকালের শুষ্ক আবহাওয়ায় রবিশস্য চাষের জন্য জলসেচ একান্ত প্রয়োজন। 

(৬) অতিরিক্ত বাষ্পীভবনঃ ভারতের বেশিরভাগ অংশ ক্রান্তীয় মৌসুমী অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় এই অঞ্চলে বাষ্পীভবনের হার অত্যধিক। অতিরিক্ত বাষ্পীভবনের ফলে, বিশেষত দক্ষিণ ভারতের মালভূমি অঞ্চলের নদীগুলিতে সারাবছর জল থাকে না । এইসব অঞ্চলে কৃষিকাজের জন্য সারাবছর জলসেচের প্রয়োজন হয়। 

(৭) জমির ওপর কৃষির চাপ এবং একই জমিতে বহুবার ফলনের ক্ষেত্রে জলসেচের প্রয়োজনীয়তাঃ আজকাল বৈজ্ঞানিক কৃষিপদ্ধতিতে একই জমিতে বছরে ৩/৪ বার ফসল ফলানো যায়। এই কাজের জন্য কৃষিজমিতে সারাবছর ধরে জলসেচের জল জোগান থাকা প্রয়োজন। 

( ৮ ) বিভিন্ন শস্যের জলের চাহিদার বিভিন্নতা ও মাটির জলধারণ ক্ষমতার বিভিন্নতার জন্য জলসেচের প্রয়োজনীয়তাঃ ভারতে বিভিন্নরকম মৃত্তিকার জলধারণ ক্ষমতা একরকম নয়। এঁটেল মাটির জলধারণ ক্ষমতা বেশি, আবার দোআঁশ মাটির জলধারণ ক্ষমতা কম। যেসব অঞ্চলের মৃত্তিকার জলধারণ ক্ষমতা কম, সেইসব অঞ্চলে চাষাবাদের জন্য জলসেচের প্রয়োজন হয়। আবার, ধান, আখ, আলু, বাদাম, কার্পাস প্রভৃতি শস্যচাষে জলের চাহিদা বেশি হওয়ায় জলসেচের প্রয়োজন হয়।

প্রশ্নঃ ভারতে খরা ও বন্যার প্রাদুর্ভাব দেখা যায় কেন?

উত্তরঃ ভারতের মোট বৃষ্টিপাতের প্রায় ৯০% বৃষ্টিপাত দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে হয়ে থাকলেও বছর বছর মৌসুমি বায়ুর খামখেয়ালিপনার জন্য ভারতে মৌসুমি বৃষ্টিপাত অত্যন্ত অনিশ্চিত। মৌসুমি বৃষ্টিপাতের স্বল্পতা ভারতে খরার প্রধান কারণ এবং একটানা অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ভারতে বন্যার প্রধান কারণ। অর্থাৎ মৌসুমী বায়ুর খামখেয়ালিপনার জন্যই কোনো কোনো বছর ভারতে খরা ও বন্যার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। 

ভারতে খরার প্রধান কারণগুলি হল - 

(১) মৌসুমী বৃষ্টিপাতের স্বল্পতা ভারতে খরার প্রধান কারণ। 

(২) ভারতের কোন স্থানে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বর্ষা দেরিতে আসা সেই স্থানের খরার অন্যতম কারণ। 

(৩) স্বাভাবিক সময়ের আগে মৌসুমি বৃষ্টিপাত বন্ধ হয়ে যাওয়া হল খরা সৃষ্টির অন্যতম প্রধান কারণ। 

(৪) কোনো স্থান বর্ষাকালে বেশ কিছুদিন বৃষ্টিহীন অবস্থায় থাকলে খরা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। 

(৫) বনভূমির অভাবের জন্য সূর্যের প্রচণ্ড তাপে গ্রীষ্মকালে প্রচুর পরিমাণে ভৌমজল বাষ্পীভূত হয়ে যায় এবং মাটি ফেটে চৌচির হয়ে খরার সৃষ্টি করে।

ভারতে বন্যার প্রধান কারণগুলি হল - 

(১) কোনো স্থানে একটানা অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত সেই স্থানে বন্যার প্রধান কারণ হিসেবে দেখা দেয়। 

(২) মৌসুমি বৃষ্টিপাত দীর্ঘায়িত হলে অতিবৃষ্টির ফলেও বন্যার সৃষ্টি হয়। 

(৩) নদীর বহনক্ষমতা কমে এলে বা জলনিকাশী ব্যবস্থা (যেমন - খাল) বুজে গেলে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত না হলেও বন্যার সৃষ্টি হতে পারে। 

(৪) বর্ষাকালে বাঁধ বা জলাধার থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়লে বন্যার সৃষ্টি হয়। 

(৫) কখনো–কখনো ভূমিক্ষয়ও বন্যার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে দেখা দেয়।

প্রশ্নঃ ভারতের মৃত্তিকার শ্রেণিবিভাগ করে প্রধান একপ্রকার মৃত্তিকার অবস্থান, বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব লেখো।

উত্তরঃ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মৃত্তিকার উৎপত্তি, বৈশিষ্ট্য, উদ্ভিদের বিস্তার, শিলাস্তরের গঠন ও জলবায়ুর তারতম্য অনুসারে মৃত্তিকাকে প্রধান ছ–টি ভাগে ভাগ করা যায়। মৃত্তিকার প্রধান ভাগগুলি হল - (১) পলি মৃত্তিকা, (২) কৃষ্ণ মৃত্তিকা, (৩) লোহিত মৃত্তিকা, (৪) ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা, (৫) পার্বত্য মৃত্তিকা এবং (৬) মরু ও শুষ্ক অঞ্চলের মৃত্তিকা।

পলি বা পাললিক মৃত্তিকাঃ উত্তর ভারতে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও সিন্ধু সমভূমি, দক্ষিণ ভারতের মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা ও কাবেরী অববাহিকার কয়েকটি অংশে এবং উপকূল বরাবর নদী দ্বারা বাহিত পলি সজ্জিত হয়ে এই মৃত্তিকা গঠিত হয়েছে। 

বৈশিষ্ট্যঃ (১) অবস্থানের তারতম্য অনুসারে এক–একটি অঞ্চলের পলিমাটির রং এক এক রকমের হয়। কোনো অঞ্চলের পলিমাটিতে বালির ভাগ বেশি, কোথাও আবার কাদার ভাগ বেশি। (২) পলিমাটিতে জৈব পদার্থ, ফসফরাস পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি, কিন্তু এই মাটিতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ কম হলেও কৃষির পক্ষে অতি উর্বর।

গুরুত্বঃ পলি মাটি কৃষিকার্যের পক্ষে অত্যন্ত উর্বর বলে প্রায় সব ধরনের ফসলের চাষ এই মাটিতে করা হয়। যেমন - ধান, গম, ইক্ষু, তৈলবীজ, পাট আলু প্রভৃতি। ভারতের অধিকাংশ কৃষিজ ফসল এই মাটিতেই উৎপন্ন হয়ে থাকে।

প্রশ্নঃ মৃত্তিকা সংরক্ষণ কোন্ কোন্ পদ্ধতিতে করা হয়? 

উত্তরঃ যে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির মাধ্যমে মৃত্তিকাকে ক্ষয় ও অবনমনের হাত থেকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে রক্ষা করা যায়, তাকেই বলে মৃত্তিকা সংরক্ষণ। 

মৃত্তিকা সংরক্ষণের পদ্ধতিসমূহঃ

(১) বৃক্ষরোপণঃ মৃত্তিকা সংরক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হল বৃক্ষরোপণ। যেহেতু উদ্ভিদ তার শিকড়ের দ্বারা মৃত্তিকা কণাগুলিকে দৃঢ়ভাবে আটকে রাখে, সেই কারণে যদি নতুন বৃক্ষরোপণ করা যায় তাহলে মৃত্তিকা ক্ষয়ের পরিমাণ কমবে। 

(২) ধাপ চাষঃ ভারতে পাহাড়ি অঞ্চলে বিভিন্ন উচ্চতায় সিঁড়ির মতো ধাপ কেটে অর্ধচন্দ্রাকার সমতল জমি তৈরি করে সেখানে চাষ করা হয়। এই পদ্ধতিকে ধাপ চাষ বলা হয়। এর ফলে মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ পায়। 

(৩) সমোন্নতি রেখা চাষঃ পার্বত্য উপত্যকার ঢালু জমিতে সমান উচ্চতা বরাবর ঢালের আড়াআড়িভাবে জমি কর্ষণ, বপন ও রোপণ করা হয়। এখানে আবার সমোন্নতি রেখা বরাবর দীর্ঘাকার উঁচু বাঁধ তৈরি করে ঢালের দিকে ভূপৃষ্ঠীয় প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এতে মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ পায়। 

(8) ফালি চাষঃ এই পদ্ধতিতে উদ্ভিদহীন ঢালু জমিতে বৃষ্টির গতি ও মাটি ক্ষয় বেশি হওয়ায় ঢালের আড়াআড়ি দিকে চওড়া ফিতের মতো জমি তৈরি করে ক্ষয়রোধী শস্য চাষ করে মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ করা হয়। 

(৫) গালি চাষঃ গালি অঞ্চলে যেখানে জল প্রবাহিত হয় সেই প্রবাহপথে আড়াআড়িভাবে পাথর দিয়ে কৃত্রিমভাবে জল ধরে রেখে সেই জল দিয়ে চাষাবাদ করার ব্যবস্থা করা হয়। একে গালি চাষ বলে।  

(৬) ঝুম চায় রোধঃ ঝুম চাষের ফলে প্রধানত মৃত্তিকা ক্ষয় হয়। যদি অবৈজ্ঞানিক প্রথায় এই ঝুম চাষ বন্ধ করা হয়, তাহলে মৃত্তিকার ক্ষয় রোধ পাবে। 

(৭) মালচিংঃ জমি থেকে ফসল কেটে নেওয়ার পর যে অংশ মাটিতে পড়ে থাকে, তাকে মাটির আবরণ হিসেবে ব্যবহার করে পরবর্তী চাষ করা হয়। এই আবরণ একদিকে যেমন মৃত্তিকা ক্ষয় রোধ করে তেমনি মৃত্তিকায় জৈব পদার্থ সৃষ্টিতেও সাহায্য করে। 

(৮) শেল্টার বেল্টঃ কোনো স্থানে আবহাওয়া গত ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যখন জমির চারপাশে বড়ো বড়ো গাছ সারিবদ্ধভাবে লাগানো হয়, তখন তাকে শেল্টার বেল্ট বলে। 

(৯) শস্যাবর্তনঃ একই জমিতে সারা বছর ধরে বিভিন্ন ফসল শস্যাবর্তন প্রক্রিয়ায় চাষ করলে সহায়িকা, মৃত্তিকার উর্বরতা বজায় থাকে ও মাটি ক্ষয়ের হাত থেকেও রক্ষা পায় । 

(১০) নদীপাড়ে বাঁধ নির্মাণঃ নদীর পাড়ে বা সমুদ্র উপকূলে বাঁধ নির্মাণ করলে বা কংক্রিট দিয়ে নদীর পাড় বাঁধলে মৃত্তিকা ক্ষয় কম হয়।

প্রশ্নঃ ক্রান্তীয় চিরহরিৎ ও ক্রান্তীয় মরু উদ্ভিদের অবস্থান গড়ে ওঠার পরিবেশ, বৈশিষ্ট্য ও প্রধান বৃক্ষগুলির নাম লেখো। 

উত্তরঃ 

ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্যঃ ভারতের ১২% অঞ্চলজুড়ে রয়েছে এই অরণ্য। এটি দেখা যায়, পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢালে, পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশভূমি, উত্তর–পূর্বের পাহাড়ি অঞ্চল, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার ও ওড়িশার বৃষ্টিবহুল অংশ ও আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে এই উদ্ভিদ দেখা যায়। 

গড়ে ওঠার কারণঃ ভারতের যেসব অঞ্চলে বার্ষিক ২০০ সেমির বেশি বৃষ্টিপাত হয় এবং গড় উয়তা ২৫°–৩০° সেলসিয়াসের মধ্যে এবং বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ৮% এর বেশি সেখানে এই বৃক্ষের বনভূমি দেখা যায়। অত্যধিক বৃষ্টিপাতের জন্য মাটি সর্বদাই ভিজে থাকে, ফলে গাছে জলের অভাব হয় না। এই কারণে গাছগুলি সর্বদাই চিরহরিৎ থাকে। 

বৈশিষ্ট্যঃ ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্যের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল - 

(১) অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে গাছে জলের অভাব হয় না বলে এই গাছগুলি সারাবছর সবুজ পাতায় ঢাকা থাকে। এইজন্য একে চিরসবুজ অরণ্য বলে। 

(২) ঘন অরণ্যে বৃক্ষগুলি এমন সংঘবদ্ধভাবে অবস্থান করে যে, সূর্যালোক অরণ্যের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না, ফলে অরণ্যের মধ্যে এক অন্ধকারাচ্ছন্ন স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ বিরাজ করে। এই জন্য এই বনভূমিকে চির গোধূলি অঞ্চল বলে।

(৩) এই অরণ্যে বৃক্ষের বড়ো বড়ো পাতাগুলি একসঙ্গে মিশে বৃক্ষের উপর দিকে চাঁদোয়া সৃষ্টি করে।

(৪) গাছের বৃদ্ধি অত্যন্ত দ্রুত গঠিত হয়।

(৫) এই গাছ বহু শাখাপ্রশাখাযুক্ত হয়। 

প্রধান বৃক্ষঃ শিশু, গর্জন, রোজউড, মেহগনি, চাপলাস, নাহার, লোহাকাঠ, পুন, তুন ইত্যাদি হল প্রধান বৃক্ষ। এছাড়া রবার, বাঁশ ও আবলুসও চোখে পড়ে।

ক্রান্তীয় মরু উদ্ভিদঃ রাজস্থানের মরুপ্রান্তে এবং তার সংলগ্ন গুজরাটের কচ্ছ কাথিয়াবাড়, পাঞ্জাবের মরু অংশ এবং দাক্ষিণাত্য মালভূমির বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলে এই ধরনের উদ্ভিদ দেখা যায়। গড়ে ওঠার পরিবেশ যেখানে গড় বার্ষিক বৃষ্টি ২৫-৫০ সেমি এবং উষ্ণতা খুব বেশি এবং আর্দ্রতা খুবই কম। সেখানে এই ধরনের উদ্ভিদ দেখা যায়। 

বৈশিষ্ট্যঃ ক্রান্তীয় মরু উদ্ভিদের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল - 

(১) এই অঞ্চলের উদ্ভিদগুলি অতিক্ষুদ্র আকৃতির এবং এদের বৃদ্ধিও সীমিত।

(২) শুষ্ক অঞ্চলে জলের অভাবের জন্য গাছের শিকড়গুলি খুব দীর্ঘ হয় ফলে মাটির অনেক গভীরে প্রবেশ করে জল সংগ্রহ করে।

(৩) এইপ্রকার উদ্ভিদের কাণ্ড হয় খর্বকায় বা বেঁটে, শক্ত ও কাষ্ঠল।

(8) গাছে জল ধরে রাখার জন্য কোনো কোনো গাছের কাণ্ড হয় রসাল, চ্যাপটা ও ক্লোরোফিলযুক্ত এবং এদের রং হয় সবুজ। এইপ্রকার কান্ডকে বলে পর্ণকাণ্ড। যেমন - ফণীমনসা। 

(৫) গাছের জল যাতে পাতার মাধ্যমে বাষ্পমোচন হয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে, তার জন্য গাছের কাণ্ড মোম জাতীয় পুরু ত্বকে ঢাকা থাকে ও গাছের গায়ে প্রচুর লোম ও কাঁটা থাকে। এদের পত্রকণ্টক বলে।

প্রধান বৃক্ষঃ খয়ের, বাবলা, খেজুর, ক্যাকটাস, ফণীমনসা, বিভিন্ন ঘাস ও কাঁটাঝোপ এখানকার প্রধান উদ্ভিদ।

প্রশ্নঃ গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে ধানচাষের অনুকূল প্রাকৃতিক অবস্থাগুলি আলোচনা করো। 

উত্তরঃ ধান উৎপাদনের অনুকূল পরিবেশগুলি হল - 

(ক) প্রাকৃতিক পরিবেশঃ

(১) জলবায়ুঃ ভারতের ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ু ধান চাষের পক্ষে উপযুক্ত। 

(অ) প্রচুর বৃষ্টিপাতঃ ধান চাষের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত প্রয়োজন। ১০০ থেকে ২০০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত ধান চাষের পক্ষে আদর্শ। ধান গাছের গোড়ায় জমে থাকা জল ধান গাছের বৃদ্ধি ঘটাতে সহায়তা করে। কিন্তু ধান কাটার সময় বৃষ্টি হলে ধানের অত্যন্ত ক্ষতি হয়। এই সময় শুকনো জলবায়ুর প্রয়োজন। 

(আ) উষ্ণতাঃ ধান চাষের জন্য পর্যাপ্ত সূর্যের উত্তাপ (১৬°–৩০° সেলসিয়াস) প্রয়োজন । 

(ই) আর্দ্রতাঃ অধিক আর্দ্রতা (১৮%) ধান চাষের পক্ষে সহায়ক। 

(২) ভূপ্রকৃতিঃ গাছের গোড়ায় জমে থাকা জল ধান গাছের বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে বলে নদী অববাহিকা বা বদ্বীপ অঞ্চলের নীচু সমতলজমি (যাতে জল দাঁড়িয়ে থাকতে পারে) ধান চাষের পক্ষে একেবারে আদর্শ। এছাড়া পাহাড়ের গায়ে ধাপ কেটে সমতল ভূমি তৈরি করেও ধান চাষ করা হয়। 

(৩) মুক্তিকাঃ নদী উপত্যকা, বদ্বীপ এবং উপকূল অঞ্চলের নিম্ন সমভূমির পলিময় উর্বর দোআঁশ ও এঁটেল মাটি ধান চাষের পক্ষে আদর্শ। মাটিতে কাদার পরিমাণ কিছু বেশি থাকলে মাটির জলধারণ ক্ষমতা বাড়ে, যা ধান গাছের গোড়ায় জল জমিয়ে রাখতে সাহায্য করে। 

(খ) অপ্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশঃ 

(১) জলসেচঃ প্রয়োজনীয় জলের অভাব ঘটলে ধানের জমিতে জলসেচ দিতে হয়।

(২) সার প্রয়োগঃ উচ্চ ফলনশীল ধান চাষে গোবর, কম্পোস্ট, ইউরিয়া, সুপার ফসফেট, পটাশ প্রভৃতি সারের প্রয়োজন হয়।

(৩) কীটনাশক প্রয়োগঃ পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে ধানকে রক্ষা করার জন্য কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়।

(৪) আগাছা দমনঃ ধানের জমিতে আগাছা জন্মালে তা তুলে ফেলতে হয়।

(৫) সুলভ শ্রমিকঃ ধানখেতে লাঙল দেওয়া, বীজ ছড়ানো, রোপণ এবং ফসল কাটার বিভিন্ন পর্যায়ে প্রচুর পরিশ্রমী ও দক্ষ সুলভ শ্রমিক লাগে।

প্রশ্নঃ গম চাষের অনুকুল পরিবেশগুলি আলোচনা করো।

উত্তরঃ গম উৎপাদনের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশগুলি হল - 

(ক) প্রাকৃতিক পরিবেশঃ

(১) জলবায়ুঃ 

(ক) আর্দ্রতাঃ (১) পরিমাণ মতো আর্দ্রতার ওপর গম বীজের অঙ্কুরোদগমের সংখ্যা নির্ভর করে এই জন্য গম চাষের প্রথম অবস্থায় আর্দ্র জলবায়ুর প্রয়োজন হয়। কারণ যত বেশিসংখ্যক বীজ থেকে অঙ্কুর বের হবে, হেক্টরপ্রতি গম উৎপাদনও ততই বেশি হবে। (২) গম চাষের দ্বিতীয় অবস্থায় উষ্ণ ও শুকনো জলবায়ুর প্রয়োজন, কারণ এই সময় বৃষ্টি হলে গমের শীর্ষ পচে যেতে পারে বা শিষে পোকা লাগতে পারে। (৩) গম কেটে নেওয়ার কিছু দিন আগে অর্থাৎ গম চাষের তৃতীয় অবস্থায়, হালকা বৃষ্টিপাত হলে ভালো হয়, কারণ এই বৃষ্টিপাতের ফলে গমের শিষ পুষ্টিলাভ করে। (৪) গম উৎপাদনের চতুর্থ পর্যায়ে গম পাকার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে সূর্য তাপের প্রয়োজন হয়। 

(খ) উত্তাপঃ গম চাষের প্রথম অবস্থায় (গম বীজের অঙ্কুরোদগম এবং গম চারার বৃদ্ধির সময়) ১৫°–১৬° সেলসিয়াস উত্তাপ এবং গম চাষের দ্বিতীয়াবস্থায় (গম পাকার সময়) ১৮°–২০° সেলসিয়াস উত্তাপ প্রয়োজন। অধিক উষ্ণতায় গমচাষের ক্ষতি হয়। 

(গ) বৃষ্টিপাতঃ গম চাষের জন্য মাঝারি বৃষ্টিপাত (৫০–১০০ সেন্টিমিটার) প্রয়োজন হয়, এর বেশি বৃষ্টিপাতে গম চারার ক্ষতি হয়। ৫০ সেমির কম বৃষ্টি হলে জলসেচের মাধ্যমে চাষ করা হয়। 

(ঘ) তুষারপাতঃ গমচাষের ক্ষতি করে ফলে তুহিনমুক্ত প্রায় ১১০ দিন প্রয়োজন হয়।

(২) ভূপ্রকৃতিঃ গাছের গোড়ায় জল জমে থাকলে তা গমচাষের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর হয় বলে অতিরিক্ত জল জমি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য ভালো জলনিকাশি ব্যবস্থাযুক্ত প্রায় সমতল বা অল্প ঢালু জমি গমচাষের পক্ষে আদর্শ। 

(৩) মৃত্তিকাঃ নাইট্রোজেন, ফসফেট ও পটাশযুক্ত উর্বর ভারী দোআঁশ মাটি বা হালকা কাদা মাটি গম চাষের পক্ষে আদর্শ। পলিমাটি ও কৃষ্ট্ব মৃত্তিকাতেও গম চাষ ভালো হয়।

(খ) অপ্রাকৃতিক পরিবেশঃ (১) জলসেচঃ বৃষ্টিপাতের অভাব হলে গম খেতে জলসেচ দিতে হয় । 

(২) সারপ্রয়োগঃ গম চাষের ফলে জমির উর্বরতা দ্রুত কমে যায় বলে গমচাষের জমিতে বিশেষত নাইট্রোজেন, ফসফেট এবং পটাশ জাতীয় রাসায়নিক সার দেওয়া প্রয়োজন। 

(৩) কীটনাশক প্রয়োগঃ পোকামাকড়ের উপদ্রব হলে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। 

(৪) সুলভ শ্রমিকঃ ধান চাষের মতো গম চাষেও প্রচুর দক্ষ ও পরিশ্রমী শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। অবশ্য যান্ত্রিক উপায়ে গম চাষে অনেক কম শ্রমিক লাগে। 

(৫) যথেষ্ট মূলধন বিনিয়োগ ও আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহারঃ বর্তমানে একই জমিতে একাধিকবার ও বেশি পরিমাণে গম উৎপাদন করার জন্য বেশি মূলধন বিনিয়োগ করে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়। 

প্রশ্নঃ চা চাষের জন্য অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ সম্পর্কে আলোচনা করো। 

উত্তরঃ ভারতে চা উৎপাদনের অনুকূল ভৌগোলিক ক প্রাকৃতিক পরিবেশঃ

[ক] প্রাকৃতিক পরিবেশঃ 

(১) জলবায়ুঃ চা উপক্রান্তীয় মৌসুমি অঞ্চলের উচ্চভূমির ফসল। 

(অ) উত্তাপঃ চা চাষের জন্য আদর্শ তাপমাত্রা ২১°–২৯° সেলসিয়াস হলেও, ১৬° সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেও চা চাষ করা যেতে পারে; 

(আ) বৃষ্টিপাতঃ বছরে ২০০-২৫০ সেন্টিমিটার গড় বৃষ্টিপাত চা চাষের পক্ষে আদর্শ। তবে প্রতি মাসে নিয়মিত বৃষ্টিপাত চা গাছের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। 

(ই) তুষারপাতঃ চা গাছ একভাবে ১০/২০ দিন তুষারপাত সহ্য করতে পারলেও বেশি তুষারপাত চা গাছের ক্ষতি করে। 

(২) ভূপ্রকৃতিঃ পাহাড়ের জলনিকাশের সুবিধাযুক্ত ঢালু অংশ চা চাষের পক্ষে আদর্শ। তবে জলনিকাশি ব্যবস্থাযুক্ত ঈষৎ ঢালু সমভূমিতেও আজকাল চা বাগান করা হচ্ছে। 

(৩) মৃত্তিকাঃ লৌহ মিশ্রিত উর্বর দোআঁশ মাটি চা চাষের পক্ষে বিশেষ উপযোগী। তবে মাটিতে ফসফরাস ও পটাশের উপস্থিতি চাষের সুগন্ধ বাড়ায় (যেমন - দার্জিলিং–এর চা)। 

(8) ছায়াপ্রদানকারী বৃক্ষঃ প্রখর সূর্যতাপ থেকে চা গাছকে রক্ষা করার জন্য চা বাগানে মাঝে মাঝে ছায়াপ্রদানকারী গাছ লাগাতে হয়। 

[খ] অপ্রাকৃতিক পরিবেশঃ 

(১) সার প্রয়োগঃ চা চাষের জমির উর্বরতা নষ্ট হয় বলে চা বাগানে পরিমিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়। 

(২) সুলভ শ্রমিকঃ চা গাছের পরিচর্যা, আগাছা পরিষ্কার, নিড়ানো, নিয়মিত গাছ ছাঁটাই, গাছ থেকে পাতা তোলা, সায়, শুদ্ধকরণ প্রভৃতি কাজের জন্য প্রচুর দক্ষ ও অভিজ্ঞ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। চা গাছ থেকে চা পাতা তোলার জন্য সাধারণত নারী শ্রমিকদের কাজে লাগানো হয়। 

(৩) প্রচুর মূলধনঃ চা বাগানের জমি কেনা, চা গাছ লাগানো এবং রক্ষণাবেক্ষণের প্রতিটি পর্যায়ে প্রচুর মূলধনের প্রয়োজন হয়।

প্রশ্নঃ কফি উৎপাদনের অনুকুল পরিবেশ সম্পর্কে লেখো।

উত্তরঃ কফি চাষের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশ -

[ক] প্রাকৃতিক পরিবেশঃ

(১) জলবায়ুঃ উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু কফি চাষের পক্ষে বিশেষ উপযোগী। কফি চাষের জন্য সারাবছর ধরে উচ্চ উত্তাপ (২০°-৩০° সেলসিয়াস) এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত (১৫০-২৫০ সেমি) প্রয়োজন। 

(২) কুয়াশা ও সামুদ্রিক আর্দ্রতাঃ কফি গাছের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, তেমনি তুষারপাতও ঝড়ো কফি গাছের ক্ষতি করে। 

(৩) মৃত্তিকাঃ লোহা, পটাশ ও নাইট্রোজেনযুক্ত উর্বর লাল দোআঁশ মৃত্তিকা কফি চাষের পক্ষে বিশেষ উপযোগী।

(৪) জমির প্রকৃতিঃ জলনিকাশের সুবিধাযুক্ত পাহাড়ের ঢালু জমি কফি চাষের পক্ষে আদর্শ।

(৫) ছায়াপ্রদানকারী গাছঃ সরাসরি সূর্যকিরণ কফি গাছের ক্ষতি করে বলে কফি খেতে কলা ও ভুট্টা প্রভৃতি ছায়াপ্রদানকারী গাছ লাগানো হয়। 

[খ] অপ্রাকৃতিক পরিবেশঃ 

(১) জলসেচঃ প্রয়োজনে কফি গাছে জলসেচ দিতে হয়। 

(২) সার প্রয়োগঃ জমিতে সারের অভাব হলে সার প্রয়োগ করতে হয়।

(৩) কীটনাশক প্রয়োগঃ পোকামাকড়ের আক্রমণ হলে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। 

(৪) সুলভ শ্রমিকঃ কফি খেত তৈরি, চারা লাগানো, রক্ষণাবেক্ষণ, কফি ফল সংগ্রহ এবং গুঁড়ো কফি প্রস্তুতির বিভিন্ন পর্যায়ে, প্রচুর দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়।

(৫) মূলধনঃ কফি বাগান কেনা, কফি খেত তৈরি, চারা লাগানো, কফি গাছের রক্ষণাবেক্ষণ ও তৈরি কফি বিপণনের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রচুর মূলধনের প্রয়োজন হয়।

প্রশ্নঃ কার্পাস উৎপাদনের অনুকূল অবস্থা কী কী?

উত্তরঃ কার্পাস উৎপাদনের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশ -

[ক] প্রাকৃতিক অবস্থাঃ 

(১) জলবায়ুঃ 

(অ) উত্তাপঃ কার্পাস চাষের জন্য মাঝারি উত্তাপ (২০°-২৬° সেলসিয়াস) প্রয়োজন। কার্পাস চাষের প্রাথমিক অবস্থায় গাছে ফুল না ফোটা পর্যন্ত ২১০° সেলসিয়াস উষ্ণতা থাকা প্রয়োজন। 

(আ) বৃষ্টিপাতঃ ৬০–১০০ সেমি বার্ষিক বৃষ্টিপাত কার্পাস চাষের উপযোগী, তবে জলসেচের ব্যবস্থা থাকলে ৫০ সেন্টিমিটারের কম বৃষ্টিপাতেও উৎকৃষ্ট তুলা উৎপন্ন হতে পারে (যেমন - মিশরের নীলনদের উপত্যকা)। কার্পাস চাষের প্রাথমিক অবস্থায় আর্দ্র জলবায়ু এবং গুটি ফাটার সময় শুকনো বৃষ্টিহীন রৌদ্রকরোজ্জ্বল আবহাওয়ার প্রয়োজন। 

(ই) তুহিনমুক্ত অবস্থাঃ কার্পাস চাষে জলবায়ুর গুরুত্ব বেশি। কার্পাস চাষ করতে হলে বছরে অন্তত ২০০ দিন তুহিনমুক্ত থাকা প্রয়োজন, তা না হলে গাছ ও কার্পাস তুলোর গুটি দুই–ই নষ্ট হয়ে যায়।

(ঈ) আর্দ্রতাঃ আর্দ্র সমুদ্র বায়ু কার্পাস চাষের পক্ষে বিশেষ উপযোগী। 

(২) জমির প্রকৃতিঃ গাছের গোড়ায় জল জমলে কার্পাস গাছের ক্ষতি হয় বলে জল নিষ্কাশনের সুবিধাযুক্ত একটু ঢালু ও তরঙ্গায়িত জমি কার্পাস চাষের পক্ষে আদর্শ। 

(৩) মৃত্তিকাঃ কার্পাস উৎপাদনের জন্য চুন ও লবণ মেশানো হালকা দোআঁশ মাটি এবং জল ধরে রাখার ক্ষমতাসম্পন্ন কৃষ্ণমৃত্তিকা (যা কৃষ্ণ কাপার্স মৃত্তিকা নামে পরিচিত) অথবা চারনোজেম মৃত্তিকা বিশেষ উপযোগী। এইজন্য দাক্ষিণাত্যের কৃমৃত্তিকা অঞ্চলে ভারতের অধিকাংশ কার্পাস উৎপন্ন হয়। 

[খ] অপ্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থাঃ 

(১) জলসেচঃ বৃষ্টির অভাব হলে কার্পাস খেতে জলসেচ দিতে হয়। 

(২) সারঃ কার্পাস গাছ জমির উর্বরতা তাড়াতাড়ি নষ্ট করে দেয়, তাই কার্পাস চাষের জমিতে পরিমিত জৈব ও রাসায়নিক সার দিতে হয়। এ ছাড়া শস্যাবর্তন প্রথার দ্বারাও জমির উর্বরা শক্তি বাড়ানো হয়। 

(৩) কীটনাশক ওষুধঃ কার্পাস গাছে রোগপোকার (বিশেষত বল–উইভিল পোকার আক্রমণ খুব বেশি, এইজন্য কীটনাশক। ওষুধ ব্যবহার করা দরকার। 

(৪) আগাছা দমনঃ কার্পাস খেতে আগাছা জন্মালে, তা তুলে ফেলতে হবে।

(৫) সুলত শ্রমিকঃ কার্পাস গাছ থেকে গুটি তোলা এবং মুক্তি থেকে তুলা ছাড়ানোর জন্য প্রচুর দক্ষ ও পরিশ্রমী প্রয়োজন। 

(৬) মূলধনঃ আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি, জলসেচ ব্যবস্থা, সার ও কীটনাশকের প্রয়োগের জন্য এবং উন্নত প্রথায় তুলা চাষের জন্য প্রচুর মূলধনের প্রয়োজন হয়।

প্রশ্নঃ ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে কার্পাস বয়ন শিল্প বেশি গড়ে ওঠার কারণ কী কী? 

উত্তরঃ পশ্চিম ভারতের মহারাষ্ট্র ও গুজরাট রাজ্যে (মুম্বাই ও আমেদাবাদে) কার্পাস বয়ন শিল্পের বিকাশ, উন্নতি তথা একদেশীভবন উল্লেখযোগ্য কারণগুলি হল - 

(১) সুলভ কাঁচামালঃ (অ) নিকটবর্তী কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চল (শোলাপুর, নাগপুর, নাসিক ও ওয়ার্ধা) এবং (আ) গুজরাট সমভূমিতে বিপুল পরিমাণে কার্পাস তুলো উৎপন্ন হয় বলে এখানে সুলভে প্রাপ্ত কাঁচামালের সুবিধা রয়েছে। 

(২) উপযুক্ত আর্দ্র জলবায়ুঃ আরব সাগরের কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ায় এই অঞ্চলের আর্দ্র জলবায়ু সুতো তৈরি এবং কাপড় বোনার পক্ষে খুবই উপযোগী, কারণ আর্দ্র জলবায়ুতে সুতো সহজে ছিঁড়ে যায় না। 

(৩) বন্দরের সান্নিধ্যঃ নিকটবর্তী মুম্বাই, কাণ্ডালা, মার্মাগাঁও প্রভৃতি বন্দর মারফত মিশর, সুদান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি দেশ থেকে উন্নত মানের লম্বা আঁশযুক্ত কাঁচা তুলো এবং যন্ত্রপাতি আমদানি করার সুবিধা এবং তৈরি বস্ত্র ও পোশাক বিদেশে রপ্তানির সুবিধা রয়েছে। 

(৪) উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থাঃ জালের মতো বিছানো সড়ক, রেল ও বিমান পথের মাধ্যমে পশ্চিম ভারতের এই অঞ্চল (বিশেষত মুম্বাই ও আমেদাবাদ) অবশিষ্ট ভারতের সঙ্গে সুসংযুক্ত। 

(৫) মূলধন প্রাপ্তির সুবিধাঃ অভিজ্ঞ ও ধনী ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের (গুজরাটি, পারসি, ভাটিয়া প্রভৃতি) প্রচুর মূলধন বিনিয়োগ এই অঞ্চলে কার্পাস শিল্পের প্রসার ঘটাতে সাহায্য করেছে।

প্রশ্নঃ পূর্ব ও মধ্য ভারতে লৌহ – ইস্পাত শিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণ কী কী?

উত্তরঃ পূর্ব ও মধ্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গ (দুর্গাপুর), ঝাড়খণ্ড (জামসেদপুর ও বোকারো), ওড়িশা (রাউরকেলা) এবং মধ্যভারতের ছত্তিশগড় (ভিলাই) ৫টি বৃহদায়তন এবং একটি সংকর ইস্পাত কারখানা গড়ে উঠেছে। পূর্ব ও মধ্য ভারতে লৌহ–ইস্পাত শিল্পের কেন্দ্রীভবনের উল্লেখযোগ্য কারণগুলি হল -

(১) লৌহ খনির নৈকট্যঃ পূর্ব ভারতের (ক) ওড়িশা রাজ্যের; ময়ূরভঞ্জ জেলার বাদামপাহাড়, বোনাই, গরুমহিষানি, সুলাইপাত ও কেওনঝড় জেলার; ঠাকুরানি, বোলানি, বাঁশপানি, খুরবাঁধ, (খ) ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সিংভূম জেলার কিরিবুরু,  বুদাবুরু,  পানশিরাবুরু,  মেঘাহাতুরুর,  রাজোরিবুন্নু,  নুটুবুর, কোটামাটিবুরু,  নোয়াবুরু,  চিরিয়া, গুয়া,  বড় জামদা,  সাসংদা এবং (গ) মধ্যভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের দুর্গ,  ডালিরাজহারা,  বাস্তার ও বাইলাডিলায় ভারতের বিখ্যাত লৌহ খনিগুলি অবস্থান করছে।

(২) কয়লাখনির নৈকট্যঃ এই অঞ্চলের কাছেই অবস্থান করছে পূর্বভারতের (ক) দামোদর – উপত্যকার ভারতবিখ্যাত কয়লাখনি অঞ্চল (পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড রাজ্যে আসানসোল – রানিগঞ্জ এবং ধানবাদ – ঝরিয়া), (খ) ঝাড়খণ্ড রাজ্যের বোকারো,  গিরিডি, করণপুরা, রামগড়, রাজমহল ডালটনগঞ্জ, হুতার প্রভৃতি কয়লাখনি, (গ) মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের  উমারিয়া, সিংগ্রাউলি, সোহাগপু, কান্হা প্রভৃতি ভারতবিখ্যাত কয়লাখনি, (ঘ) ওড়িশা রাজ্যের তালচের, রামপুর, লাজকুরিয়া প্রভৃতি কয়লাখনি এবং (ঙ) ছত্তিশগড় রাজ্যের কোরবা, রামপুর, তাতাপানি, রামাকোলা, ঝিলিমিলি,  বিশ্রামপুর প্রভৃতি ভারতবিখ্যাত কয়লাখনি। এই অঞ্চল থেকে ভারতের মোট কয়লা উত্তোলনের প্রায় ৭০% কয়লা উত্তোলিত হয়। 'একইসঙ্গে লৌহ ও কয়লাখনিগুলির নৈকট্যই হল পূর্ব ও মধ্যভারতে-ইস্পাত শিল্পের কেন্দ্রীভবনের প্রধান কারণ। 

(৩) চুনাপাথর ও ডলোমাইট খনির নৈকট্যঃ (ক) ঝাড়খণ্ডের  ভবনাথপুর,  ডালটনগঞ্জ; (খ) ওড়িশার  গাংপুর, ৩২৫ বীরমিত্রপুর,  সুন্দরগড়, সম্বলপুর; (গ) ছত্তিশগড়ের বিলাসপুর, হিরি, বড়োদুয়ার; (ঘ) পশ্চিমবঙ্গের জয়ন্তী এবং (ঙ) মধ্যপ্রদেশের কাটনি অঞ্চলে এই শিল্পের প্রয়োজনীয় চুনাপাথর ও ডলোমাইট পাওয়া যায় । 

(৫) বন্দরের নৈকট্যঃ নিকটবর্তী কলকাতা, হলদিয়া এবং পারাদ্বীপ বন্দরের অবস্থান এই অঞ্চলে পণ্য আমদানি ও রপ্তানির সহায়ক হয়েছে। 

(৬) সুলভ জলভাণ্ডারঃ বিভিন্ন নদীর ও জলাধারের অফুরন্ত জলভাণ্ডার এই অঞ্চলে লৌহ–ইস্পাত শিল্পের অনুকূল ভৌগোলিক পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। 

প্রশ্নঃ ভারতের পেট্রোরসায়ন শিল্পকেন্দ্রগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উত্তরঃ ভারতের প্রধান প্রধান পেট্রোরসায়ন শিল্পকেন্দ্রগুলি -

ট্রাম্বে (ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া লিমিটেড) : এটি মহারাষ্ট্রে অবস্থিত ভারতের প্রথম পেট্রোরসায়ন শিল্পকেন্দ্র। এই কারখানায় উৎপাদিত দ্রব্যগুলি হল পলিথিলিন, বুটাইল স্পিরিট, অ্যাসেটিক অ্যাসিড ইত্যাদি। 

থানে বেলাপুর (ন্যাশনাল অরগ্যানিক কেমিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেড) : ১৯৬৮ সালে বেসরকারি সংস্থা মফতলাল গোষ্ঠীর উদ্যোগে এই কেন্দ্রটি মহারাষ্ট্রে স্থাপিত হয়। এটি একটি সর্বাধুনিক পেট্রোরসায়ন কেন্দ্র। এখানে উৎপাদিত দ্রব্যগুলি হল - ইথিলিন, প্রপিলিন, বেঞ্জিন, বুটাডিন ইত্যাদি। 

হাজিরা ও জামনগর ( রিলায়েন্স পেট্রোকেমিক্যালস ) : এটি রিলায়েন্স গোষ্ঠীর নিজস্ব শোধনাগারের ওপর ভিত্তি করে গুজরাটে নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে কৃত্রিম তন্তু, রবার, প্লাস্টিক, পলিথিন ইত্যাদি উৎপন্ন হয়। 

ভদোদ (ইন্ডিয়ান পেট্রোকেমিক্যাল কর্পোরেশন লিমিটেড) : এই কারখানাটি ১৯৭৩ সালে গুজরাটে স্থাপিত হয়। এখানে বুটাডিন, ইথিলিন, প্রপিলিন ইত্যাদি উৎপন্ন হয়। 

কয়ালি : বেসরকারি উদ্যোগে গুজরাটের কয়ালিতে এই কারখানাটি স্থাপিত হয়। এটি ন্যাপথা উপজাত দ্রব্যের জন্য বিখ্যাত। 

চেন্নাই ( হার্ডিলিয়া কেমিক্যালস লিমিটেড ) : ১৯৭০ সালে এই কারখানাটি চেন্নাইতে স্থাপিত হয়। এখানে উৎপন্ন দ্রব্যগুলি হল ফেনল, এসিটোন, কৃত্রিম তন্তু, প্লাস্টিক ইত্যাদি।

প্রশ্নঃ ভিলাই লৌহ–ইস্পাত শিল্প গড়ে ওঠার ভৌগোলিক কারণগুলি কী কী?

উত্তরঃ ছত্তিশগড় রাজ্যের দুর্গ জেলার ভিলাইতে ভারতের বৃহত্তম লৌহ–ইস্পাত কারখানাটি গড়ে উঠেছে। ভিলাই লৌহ–ইস্পাত কারখানায় প্রধানত ভারতীয় রেলপথের জন্য রেললাইন তৈরি করা হয়। রভিলায়ে লৌহ ও ইস্পাত কারখানা গড়ে ওঠার ভৌগোলিক কারণগুলি হল - 

(১) লৌহ খনির নৈকট্যঃ ভিলাই লৌহ–ইস্পাত কারখানার অদূরেই ছত্তিশগড় রাজ্যের দুর্গ, ডালিরাজহারা,  বাস্তার ও  বাইলাডিলায় ভারতের বিখ্যাত লৌহ খনিগুলো অবস্থান করছে। ছত্তিশগড় রাজ্যের ভারতবিখ্যাত লৌহ খনিগুলির নৈকট্যই হল ভিলায়ে লৌহ–ইস্পাত কারখানা স্থাপনের অন্যতম কারণ। 

(২) কয়লাখনির নৈকট্যঃ ছত্তিশগড়ের কোরবা এবং ঝাড়খণ্ডের ঝরিয়া ও বোকারো খনি থেকে ভিলাই লৌহ–ইস্পাত কারখানায় কয়লা সরবরাহ করা হয়। কোরবা খনির কয়লা নিম্নমানের হওয়ায় ঝরিয়া কয়লাখনি থেকে উৎকৃষ্টমানের কয়লা এনে মিশিয়ে নেওয়া হয়। একইসঙ্গে লৌহ খনি ও কয়লাখনির নৈকট্য হল ভিলাইতে লৌহ–ইস্পাত কারখানা গড়ে ওঠার প্রধান কারণ। 

(৩) চুনাপাথর ও ডলোমাইট খনির নৈকট্যঃ মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুর এবং ছত্তিশগড় রাজ্যের নন্দিনী ও পূর্ণপাণি খনি থেকে লৌহ–ইস্পাত শিল্পের একান্ত প্রয়োজনীয় চুনাপাথর পাওয়া যায়। এ ছাড়া ওড়িশা রাজ্যের সুন্দরগড় ও বীরমিত্রপুর খনি থেকে ডলোমাইট পাওয়া যায়। 

(৪) ম্যাঙ্গানিজ, টাংস্টেন ও নিকেল খনির নৈকট্যঃ মহারাষ্ট্রের ভাণ্ডারা, মধ্যপ্রদেশের বালাঘাট, ছিন্দওয়ারা, জব্বলপুর এবং ওড়িশার বোনাই, গাংপুর প্রভৃতি অঞ্চল থেকে প্রচুর পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ, টাংস্টেন ও নিকেল পাওয়া যায়। 

(৫) বিদ্যুৎঃ কোরবা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও ভিলাই ইস্পাত কারখানার নিজস্ব তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে এই কারখানার বিদ্যুতের জোগান পাওয়া যায়। 

প্রশ্নঃ ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ কী?

উত্তরঃ বিভিন্ন অর্থনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক কারণের জন্য ভারতের জনসংখ্যা দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে। ভারতের জনবৃদ্ধির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারণগুলি হল – 

(১) বেশি জন্মহারঃ ভারতে জন্মহার খুব বেশি। তাই ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার স্বাভাবিক ভাবেই বেশি। 

২) মৃত্যুর হার কমে যাওয়াঃ চিকিৎসাবিজ্ঞানে অভূতপূর্ব উন্নতির জন্য ভারতে মৃত্যুহার কম। প্রতি হাজার জনসংখ্যায় ভারতে মৃত্যুহার হল মাত্র ৯.৪ জন। জন্মহারের তুলনায় মৃত্যুহার কমে যাওয়া ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। 

(৩) অল্প বয়সে বিবাহঃ কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া ভারতের বেশিরভাগ গ্রামাঞ্চলে ছেলেমেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে হয়। অল্প বয়সে বিয়েও ভারতের জনসংখ্যার অতিরিক্ত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। 

(৪) স্বল্প শিক্ষার হারঃ ভারতের গ্রামগুলিতে বিশেষ করে নারীশিক্ষার হার এখনও বেশ কম (৩৯.২৯ শতাংশ) হওয়ায় নানান বিষয়ে অজ্ঞতা ও ধর্মীয় কুসংস্কার ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। 

(৫) দারিদ্র্যঃ ভারতের বেশিরভাগ অধিবাসীই দরিদ্র। তাই অর্থনৈতিক নিরাপত্তার আশায় দরিদ্র পরিবারগুলির জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

প্রশ্নঃ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে জনবণ্টনের তারতম্যের কারণ কী?

উত্তরঃ বিরাট আয়তনের দেশ ভারতের জনসংখ্যা বিশাল এবং জনঘনত্বও বেশি, কিন্তু এই সুবিশাল জনসংখ্যা, ভারতের সর্বত্র সমানভাবে ছড়িয়ে নেই। ভারতের অঞ্চল বিশেষে জনবণ্টনের এই তারতম্যের প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক কারণগুলি হল – 

ভূপ্রাকৃতিক অবস্থাঃ  উত্তরের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল, উত্তর–পূর্বের পাহাড়ি ও মালভূমি অঞ্চল এবং দক্ষিণ ভারতের বিস্তীর্ণ মালভূমি ও পাহাড়ি অঞ্চলের উঁচু–নীচু বন্ধুর ভূমি কৃষিকাজের অনুপযুক্ত ও কিছু কিছু অঞ্চল দুর্গম বলে এখানে জনসংখ্যা বেশ কম। অন্যদিকে উত্তরের সিন্ধু, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র সমভূমি অঞ্চল ও উপকূলের সমভূমি কৃষিকাজের ও বাসস্থান নির্মাণে, যোগাযোগ ব্যবস্থার পক্ষে ভালো বলে এখানে জনসংখ্যা অনেক বেশি। 

জলবায়ুর বৈচিত্র্যঃ সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে সমভাবাপন্ন জলবায়ুর উপস্থিতি, বৃষ্টিপাতের সমান বণ্টনের জন্য এখানে লোকবসতি ঘন। অপরদিকে, রাজস্থানের মরু অঞ্চল বা গুজরাটের কচ্ছ অঞ্চলে চরমভাবাপন্ন জলবায়ু ও বৃষ্টিপাতের অসম বণ্টনের জন্য জনসংখ্যা কম। 

(১) নদীঃ নদনদীর অবস্থানের জন্য যোগাযোগ ও পরিবহণ ব্যবস্থার সুবিধা ও নদীতীরবর্তী অঞ্চলের পলিসমৃদ্ধ উর্বর মৃত্তিকায় কৃষিকাজে সুবিধা জলবিদ্যুৎ উৎপাদন, জলসেচ ও জলনিকাশি ব্যবস্থার সুবিধা আছে বলে, উত্তর ভারতের গঙ্গা, সিন্ধু, ব্রহ্মপুত্র ও দক্ষিণ ভারতের মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী নদী উপত্যকায় লোকবসতি বেশি। 

(২) মৃত্তিকাঃ উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নদীতীরবর্তী উর্বর মৃত্তিকা ও দাক্ষিণাত্যের উর্বর কৃষ্ণ মৃত্তিকা কৃষিকাজের পক্ষে উপযুক্ত বলে এই সকল অঞ্চলে লোকবসতি ঘন। 

(৩) স্বাভাবিক উদ্ভিদঃ বৃক্ষহীন মরুভূমি (যেমন - রাজস্থানের মরু অঞ্চল) অথবা গভীর অরণ্য সংকুল অঞ্চল (যেমন সুন্দরবন, হিমালয় ও পশ্চিমঘাট পর্বতের পাদদেশ, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের বনভূমি অঞ্চল) মানুষের জীবিকানির্বাহের পক্ষে অসুবিধাজনক বলে এইসব অঞ্চল ঘনবসতিপূর্ণ নয়।

(৪) খনিজসম্পদঃ প্রতিকূল জলবায়ু ও অনুর্বর মৃত্তিকা থাকা সত্ত্বেও যেখানে খনিজসম্পদের প্রাচুর্য দেখা যায়, সেখানে ভূপ্রকৃতি দুর্গম হলেও জীবিকানির্বাহের সুবিধা থাকায় জনসংখ্যা বেশি হয়। ভারতের বিভিন্ন কয়লাখনি অঞ্চলে (রানিগঞ্জ ও ঝরিয়া) এইজন্য জনসংখ্যা বেশি। ছোটোনাগপুর ও ছত্তিশগড় মালভূমি অঞ্চলের বিভিন্ন খনি ও শিল্পাঞ্চলে এই একই কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

(৫) যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চলে সড়কপথ, রেলপথ, জলপথের সুবিধা উপকূলবর্তী বন্দর এলাকায় পরিবহণের সুবিধার জন্য জনবসতি বেশি।

প্রশ্নঃ ভারতের সড়কপথের প্রকারভেদগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো।

উত্তরঃ ভারতে সড়কপথকে প্রধানত ৬টি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা - (১) সোনালি চতুর্ভুজ (২) জাতীয় সড়কপথ, (৩) রাজ্য সড়কপথ, (৪) জেলা সড়কপথ, (৫) গ্রাম্য সড়কপথ, (৬) সীমান্তবর্তী সড়কপথ। 

(১) সোনালি চতুর্ভুজঃ ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দের ২ জানুয়ারি National Highways Authoritys of India (NHAI) এই সড়কপথ নির্মাণে বিশাল কর্মসূচি গ্রহণ করেন। এর প্রথম পর্যায়ে, সোনালি চতুর্ভুজ কর্মসূচি অনুযায়ী ভারতের চারটি বড়ো মেট্রোপলিটান শহর কলকাতা, দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই সড়কপথ দ্বারা যুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এই পথের মোট দৈর্ঘ্য ৫,৮৪৬ কিলোমিটার। দিল্লি থেকে মুম্বাইয়ের দুরত্ব ১৪১৯ কিমি, মুম্বাই থেকে চেন্নাইয়ের দূরত্ব ১২৯০ কিমি, চেন্নাই থেকে কলকাতার দূরত্ব ১৬৮৪ কিমি, কলকাতা থেকে দিল্লির দূরত্ব প্রায় ১৪৫৩ কিমি। 

(২) জাতীয় সড়কপথঃ যে–সড়কপথগুলির নির্মাণ কাজ ও সংরক্ষণ CPWD করে, সেই পথগুলিকেই জাতীয় সড়কপথ বা রাজপথ বলে। জাতীয় সড়কপথ যদিও মোট সড়কপথের মাত্র ২% অধিকার করে আছে, তবুও এটি মোট পরিবহণের প্রায় ৪৫% পণ্য ও যাত্রী পরিবহণ করে। NHAI বন্দর–সংযোজক পরিকল্পনার মাধ্যমে চার চ্যানেল বিশিষ্ট রাজপথ নির্মাণ ও ভারতের বিভিন্ন বন্দরগুলি সংযুক্ত করার কাজ গ্রহণ করেছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী হলদিয়া, পারাদ্বীপ, বিশাখাপত্তনম, চেন্নাই, এন্নোর, তিতুকোরিন রাজপথ দ্বারা সংযুক্ত করার কাজ চলছে। 

(৩) রাজ্য সড়কপথঃ যে সড়কপথগুলি রাজ্য সরকার নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করে সেই সড়কপথগুলিকে রাজ্য সড়কপথ বলে। এই সড়কপথগুলি সাধারণত রাজ্যের রাজধানী, জেলার সদর কার্যালয় বা গুরুত্বপূর্ণ শহর ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলিকে যুক্ত করে। এই সড়কপথগুলি জাতীয় সড়কপথের সঙ্গেও যুক্ত। দৈর্ঘ্য ১৩৭.৯ হাজার কিমি। ভারতের মোট রাজ্য সড়কপথের দৈর্ঘ্য ১৩৭.৯ হাজার কিমি। 

(৪) জেলা সড়কপথঃ এই সড়কপথ কেবলমাত্র জেলার সদর শহরের সঙ্গে জেলার অন্যান্য স্থানগুলিকে যুক্ত করে। এই পথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৬ লক্ষ কিমি। 

(৫) গ্রাম্য সড়কপথঃ গ্রাম্য পথগুলি নিকটবর্তী শহর ও নগরগুলির সাথে যুক্ত হয়। বর্তমানে বহু গ্রাম্য পথ পাকা হয়েছে কিন্তু এগুলি অধিকাংশ কাঁচা, মাটির।

প্রশ্নঃ আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পর্কে যা জান লেখো।

উত্তরঃ এককথায় যোগাযোগ বলতে বোঝায় মানুষের কথাবার্তার পারস্পরিক আদানপ্রদান। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিসেবামূলক কাজ, ইংরেজি শব্দ 'Communication'-এর উৎপত্তি হয় লাতিন শব্দ 'Communicare' যার অর্থ অংশীদার হওয়া বা করা এবং এই ধরনের একটি সংগঠিত আদানপ্রদানের ব্যবস্থাকে বলে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার প্রধান মাধ্যম হল তিনটি - ইনটারনেট, ই–মেল ও সেলফোন। 

কম্পিউটারের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ কম্পিউটার হল এক বিশেষ ধরনের বৈদ্যুতিন যন্ত্র যার সাহায্যে বর্তমান যুগে যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতিসাধন হয়েছে। ইলেকট্রনিক মেল বা ই–মেল এবং ইনটারনেট ইত্যাদি ব্যবস্থার মাধ্যমে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে যোগাযোগ স্থাপন করা যাচ্ছে। 

ইনটারনেট ও ই–মেলঃ সারাবিশ্বে কম্পিউটারকে মোডেমের মাধ্যমে টেলিফোন লাইনের সঙ্গে একসূত্রে যুক্ত করার নামই ইনটারনেট বা অন্তর্জাল। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যে Computer Network সৃষ্টি হয়, তারই সমন্বয়কে ইনটারনেট ওয়ার্ক বলে। ইনটারনেটে প্রবেশ করতে গেলে প্রয়োজন হয় মোডেমযুক্ত কম্পিউটার, উইন্ডোজ সফ্টওয়্যার এবং ব্যক্তিগত টেলিফোন লাইন। ইনটারনেট ব্যবস্থার মাধ্যমে কম্পিউটারের সাহায্যে ই–মেলের মাধ্যমে যে কোনো ব্যক্তি যে–কোনো স্থানে বার্তা, চিঠিপত্র, তথ্য ইত্যাদি প্রেরণ ও গ্রহণ করতে পারে। ইনটারনেট ব্যবস্থায় ই–মেল ছাড়াও ওয়েবসাইটের ব্যবস্থা আছে। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানের বিভিন্ন তথ্য ও পরিসংখ্যান বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ধরে রাখা হয় - যা আমাদের প্রয়োজনে আমরা ব্যবহার করতে বা দেখতে পারি। এই ব্যবস্থার দ্বারা শিক্ষা, সংস্কৃতি, চিকিৎসা, ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক জগৎ বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে মানুষ আজও ঘরে বসেই রেল, বিমান প্রভৃতির আসন সংরক্ষণ করতে পারে। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ই–মেল ব্যবস্থা চালু হয়। 

মোবাইল বা সেলুলার ফোনঃ এটি একটি তারবিহীন যোগাযোগ ব্যবস্থা। মোবাইল বা সেলুলার ফোন আবিষ্কৃত হওয়ার ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন আরও যেন এগিয়ে গেল। নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মোবাইলের সাহায্যে পৃথিবীর যে–কোনো প্রান্তে মানুষের সাথে যোগাযোগ করা যায়। প্রযুক্তি বিদ্যার উন্নতির ফলে সেলুলার ফোনে নিত্যনতুন পরিষেবা যুক্ত হয়েছে। ফোন— SMS , MMS, ইনটারনেট যোগাযোগ, ক্যামেরার সুবিধা, আবার GPS-এর সুবিধা থাকায় তথ্যের আদানপ্রদান ছাড়াও ভূপৃষ্ঠের কোনো স্থানের ভৌগোলিক অবস্থান, উচ্চতা জানা যায়। নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এছাড়া বর্তমানে নানাপ্রকার অ্যাপের সুবিধা আছে।

Madhyamik Geography Suggestion 2024

     মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024. Geography Suggestion 2024 Madhyamik. Class 10 geography suggestion 2024. Madhyamik Suggestion 2024 Bengali. 2024 Madhyamik Suggestion Life Science. Madhyamik Suggestion 2024 PDF. মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024. মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf. Madhyamik Geography Notes PDF. সংলাপ সাজেশন. Wbbse class 10 geography chapter 5 question answer in bengali. উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024. Class 10 geography suggestion 2024. ভূগোল সাজেশন 2024.


West Bengal Madhyamik Geography Suggestion 2024 Download

     WBBSE Madhyamik Geography short question suggestion 2024. পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক  ভূগোল পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্ন উত্তর ও শেষ মুহূর্তের সাজেশন ডাউনলোড. Madhyamik Geography Suggestion 2024  download. Madhyamik Question Paper Geography. মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন. WB Madhyamik 2024 Geography suggestion and important questions. Madhyamik Suggestion 2024 pdf.


মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন ২০২৪ পঞ্চম অধ্যায় ভারত

     উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024 PDF. বায়ুমন্ডল দশম শ্রেণী. মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন উত্তর. ভারতের আধুনিক প্রযুক্তির বন্দর কোনটি. ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ. দশম শ্রেণির ভূগোল. দশম শ্রেণীর ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর. ভারতের প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ প্রশ্ন উত্তর. রেলপথকে ভারতের জীবনরেখা বলা হয় কেন. অর্থনৈতিক ভূগোল mcq. ভারতের কৃষি mcq pdf. ভারতের কৃষি class 10. ভারতের আধুনিক প্রযুক্তির বন্দর কোনটি. ভারতের আখ রাজ্য কাকে বলে. ধানকে তৃষ্ণার্ত ফসল বলে কেন.


মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024 pdf

     উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024. মাধ্যমিক সাজেশন 2024. সংলাপ সাজেশন. মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান সাজেশন 2024 pdf download. ইতিহাস সাজেশন 2024 মাধ্যমিক. মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024 PDF. উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024. মাধ্যমিক সাজেশন 2024. মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান সাজেশন 2023 pdf download. মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন উত্তর. মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024.


Madhyamik Suggestion 2024 Geography

     West Bengal Madhyamik 2024 Geography Suggestion Download in Bengali version. WBBSE Madhyamik Geography suggestion 2024 pdf version as per New syllabus. মাধ্যমিক ২০২৪ ভূগোল সাজেশন. Get the complete Madhyamik Geography Suggestion 2024 with approx 90% Common in Examination. WBBSE Class 10th Geography exam notes and Important questions. Madhyamik 2024 Geography Suggestion pdf download. Madhyamik Scientific Suggestion in New Syllabus.


পঞ্চম অধ্যায় ভারত

     দশম শ্রেণীর ভূগোল পঞ্চম অধ্যায় pdf. ভারতের প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ. ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ প্রশ্ন উত্তর. ক্লাস 10 ভূগোল প্রশ্ন উত্তর পঞ্চম অধ্যায়. ভারতের আধুনিক প্রযুক্তির বন্দর কোনটি. ভারতের ভূপ্রকৃতি প্রশ্ন উত্তর pdf download. দশম শ্রেণির ভূগোল প্রশ্ন উত্তর 2024. ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ. দশম শ্রেণীর ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর. দশম শ্রেণীর ভূগোল চতুর্থ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর. দশম শ্রেণীর ভূগোল ষষ্ঠ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর. দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর. দশম শ্রেণীর ভূগোল এর উত্তর. দশম শ্রেণীর ভূগোল তৃতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর. দশম শ্রেণির ভূগোল প্রশ্ন উত্তর 2024. ভারতের প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ.


মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন উত্তর 2024

     ক্লাস 10 ভূগোল প্রশ্ন উত্তর. মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024 PDF. দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর pdf. দশম শ্রেণীর ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর. দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর 2024. মাধ্যমিক ভূগোল pdf. মাধ্যমিক সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ভূগোল বায়ুমণ্ডল. মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন 2024. ক্লাস 10 ভূগোল প্রশ্ন উত্তর. ভূগোল mcq প্রশ্ন উত্তর 2024. মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024 PDF. দশম শ্রেণীর ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর. মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন 2024 pdf. বারিমন্ডল প্রশ্ন উত্তর. দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর pdf.


Madhyamik Geography Notes PDF

     মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন উত্তর. মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024 PDF. Geography suggestion 2024 hs. Wbbse class 10 geography chapter 5 question answer in bengali. মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf. Madhyamik Geography Suggestion 2024 PDF free download. WBBSE Class 10 Geography Chapter 5 question Answer in English. WBBSE Class 10 Geography Chapter 1 question Answer in English.


মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন ২০২৪ পঞ্চম অধ্যায়

      উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024 PDF. দশম শ্রেণীর ভূগোল চতুর্থ অধ্যায়. দশম শ্রেণী ভূগোল. মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন উত্তর. দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় pdf. দশম শ্রেণির ভূগোল mcq. দশম শ্রেণীর ভূগোল ষষ্ঠ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর. মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024. উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান 2024 সাজেশন. মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান সাজেশন 2024 pdf download. ইতিহাস সাজেশন 2024 মাধ্যমিক. মাধ্যমিক সাজেশন 2024. চলতড়িৎ suggestion 2024.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

8 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
  1. আমার ঠিক ঠাক পড়াশোনা হচ্ছে না তো আমাকে কী করতে হবে স্যার

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. তোমার একটি টার্গেট নিয়ে তার উপর ফোকাস করো। আর টার্গেটগুলো অবশ্যই প্রথমে ছোটো থেকে বড়ো হবে। ভগবান তোমার সহায় হবেন।

      মুছুন
  2. উত্তরগুলি
    1. প্রযুক্তি গত উৎকর্ষতা কে কাজে লাগিয়ে কাঁচামালকে মানুষের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপজাত দ্রব্যে পরিণত করার প্রক্রিয়াকে শিল্প বলা হয়।

      মুছুন
  3. প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতাকে কাজে লাগিয়ে কাঁচামালকে মানুষের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপজাত দ্রব্যে পরিণত করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় শিল্প

    উত্তরমুছুন
  4. Hello sir thanks for the suggestions but I don't consented in my study please help me

    উত্তরমুছুন
  5. স্যার বলছি যে কিছু কোশ্চেন একটু বড় করে দেয়া আছে একটু শর্ট করে লিখলে হবে তো

    উত্তরমুছুন
  6. স্যার বলছি যে কিছু কোশ্চেন একটু বড় করে দেয়া আছে একটু শর্ট করে লিখলে হবে তো

    উত্তরমুছুন

Top Post Ad

Below Post Ad

LightBlog

AdsG

close