মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৪ – সিরাজদ্দৌলা (নাটক) শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
সিরাজদৌলাশচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত
(১) রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
প্রশ্নঃ 'আমি জানিলাম না আমাদের অপরাধ।' - 'আমি ' ও 'আমাদের' বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? এখানে কোন অপরাধের কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের 'সিরাজদ্দৌলা' নাট্যাংশে উদ্ধৃতিটির 'আমি' ও 'আমাদের' বক্তা হলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রতিনিধি ওয়াটস। সিরাজের অভিযোগ সন্ধির শর্ত উপেক্ষা করে ওয়াস তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। এর একমাত্র শাস্তি ওয়াটসের প্রাণদণ্ড। এই উক্তির প্রেক্ষিতেই ওয়াটসের এই মন্তব্য। এখানে বক্তা 'আমি' বলতে নিজেকে এবং 'আমাদের' বলতে কোম্পানিকে বোঝাতে চেয়েছেন।
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও নবাব সিরাজদ্দৌলার মধ্যে আলিনগরের সন্ধি স্থাপিত হয়েছিল। কোম্পানি যাতে সন্ধির সকল শর্ত পূরণ ও রক্ষা করে, তা দেখার জন্য কোম্পানির প্রতিনিধিরূপে ওয়াটসকে মুরশিদাবাদে রাখা হয়েছিল। ওয়াটসকে লেখা অ্যাডমিরাল প্রশ্নোস্তৃত যে অপরাধ ওয়াটসনের চিঠি নবাবের হস্তগত হওয়ায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যে নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তা প্রমাণিত হয়ে যায়। অন্যদিকে, ওয়াটসের লেখা একটি চিঠি নবাব পেয়েছিলেন যা থেকে ষড়যন্ত্রে ওয়াটসের ভূমিকাটিও স্পষ্ট হয়। এইভাবে নবাব যখন কোম্পানির যাবতীয় ষড়যন্ত্রের বিষয়টি দরবারে স্পষ্ট করে তুলেছিলেন তখন ওয়াটস না জানার ভান করে উক্তিটি করেছেন।
প্রশ্নঃ 'তুমি আমার প্রতি তোমার অন্তরের প্রীতিরই পরিচয় দিয়েচ।' - কে, কার প্রতি প্রীতির পরিচয় দিয়েছেন? কীভাবে তিনি প্রীতির পরিচয় দিয়েছেন?
উত্তরঃ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত 'সিরাজদ্দৌলা' নাটক থেকে উদ্ধৃতিটি গৃহীত। ফরাসি প্রতিনিধি মঁসিয়ে লা নবাবের প্রতি যে আন্তরিক প্রীতির পরিচয় দিয়েছেন। সে কথাই নবাব বলেছেন।
ফরাসি ও ইংরেজদের মধ্যেকার পুরোনো শত্রুতার জন্য সিরাজকে অন্ধকারে রেখে ইংরেজরা চন্দননগর আক্রমণ করে ও অধিকার নেয় এবং ফরাসিদের বাণিজ্যকুঠিগুলি অধিগ্রহণের দাবি তোলে। ইংরেজদের এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ফরাসিরা নবাবের দ্বারস্থ হন। কিন্তু কলকাতা জয় ও শওকত জঙ্গের সঙ্গে যুদ্ধে লোকবল, অর্থবল প্রীতির পরিচয় কমে যাওয়ায় নবাব আর নতুন করে ইংরেজদের বিস্তারিতভাবে সঙ্গে শত্রুতা না বাড়িয়ে নিরপেক্ষ থাকতে চান। তখন ফরাসি প্রতিনিধি মঁসিয়ে লা নবাবকে জানান বাধ্যত ভারতবর্ষ ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই তাদের কাছে। যাওয়ার আগে মঁসিয়ে লা সিরাজকে সাবধান করে বলেন যে, তারা ভারত ছাড়লেই ইংরেজরা সর্বশক্তি নিয়ে তাঁর সাম্রাজ্য ধ্বংস করতে ঝাঁপিয়ে পড়বে। মঁসিয়ে লা–র কথা আন্তরিক ও সত্যতাপূর্ণ ছিল, তাতে নবাবের মনে কোনো সন্দেহ ছিল না। তাই তিনি বন্ধুভাবাপন্ন ও শুভাকাঙ্ক্ষী মঁসিয়ে লা–র স্মৃতি মনের মণিকোঠায় চিরদিন উজ্জ্বল হয়ে থাকার কথা বলেন। উদ্ধৃত বক্তব্যে সিরাজের সেই মনোভাবই ব্যক্ত হয়েছে।
প্রশ্নঃ 'আমি আজ ধন্য। আমি ধন্য।' - আলোচ্য উক্তিটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ প্রখ্যাত নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত 'সিরাজদ্দৌলা' নাটক থেকে গৃহীত আলোচ্য উক্তিটির বস্তুা হলেন সিরাজদ্দৌলা। কোম্পানি সিরাজের অনুমতি ছাড়াই চন্দননগর আক্রমণ করে ফরাসি বাণিজ্যকুঠিগুলি অধিগ্রহণের প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল। এ সংবাদে বিচলিত নবাব বুঝতে পারছিলেন উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য যে, অচিরেই তাঁর ওপর ব্রিটিশের কোপ নেমে আসতে চলেছে। মীরজাফর, রাজবল্লভ, জগৎশেঠ প্রমুখ নবাবের ঘনিষ্ঠ সভাসদ একে একে নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছিলেন। প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও সিরাজ এঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ না করে বরং সৌহার্দ্য সহকারে কাছে টানার চেষ্টা করেছিলেন। বাংলা দেশের মানমর্যাদা ও স্বাধীনতা রক্ষার খাতিরে, তাঁরা যেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নবাবের সঙ্গ দেন, সিরাজ সেই আবেদন রেখেছিলেন। সভায় উপস্থিত সকলকে বৈরিতা ভুলে একত্রিত হতে বলেন। সকলের কাছে আন্তরিক অনুরোধ জানান, 'বাংলার এই দুর্দিনে আমাকে ত্যাগ করবেন না।' নবাবের এই অনুনয়ে মীরজাফর ও অন্যরা নবাবের সঙ্গে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। নবাবের অনুগত ও বিশ্বস্ত মোহনলাল এবং মীরমদনও সিপাহসালার মীরজাফরের নির্দেশ মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এই সহযোগিতাপূর্ণ পরিস্পির্তিতে আনন্দিত নবাব উক্তিটি করেছিলেন।
প্রশ্নঃ 'বাংলার এই দুর্দিনে আমাকে ত্যাগ করবেন না।' - কার কাছে, কার এই অনুরোধ? এই অনুরোধের কারণ কী?
উত্তরঃ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের 'সিরাজদ্দৌলা' নাট্যাংশে বল সিরাজদ্দৌলা তাঁর প্রধান সিপাহসালার মীরজাফরকে অনুরোধ অনুরোধের কারণ এই অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
আলিবর্দির মৃত্যুর পরে বাংলার মসনদে আরোহণ করেছিলেন সিরাজদ্দৌলা। কিন্তু ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে গোপনে বোঝাপড়া করে রায়দুর্লভ, জগৎশেঠ ও মীরজাফরেরা তাঁকে বাংলার মসনদ থেকে উৎখাত করতে চেয়েছিল। মীরজাফর যে নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এই তথ্যপ্রমাণও সিরাজের কাছে ছিল। কিন্তু পারস্পরিক দোষ–ত্রুটি ভুলে তিনি সকলকে একত্রিত করে বহিঃশত্রু ইংরেজকে পর্যুদস্ত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর মনে হয়েছিল অন্যায় উভয় পক্ষেরই হয়েছে, তবে এখন বিচারের পরিবর্তে অন্তরের সৌহার্দ্য স্থাপনই বেশি জরুরি। এই বিশ্বাস ও আবেগের বশবর্তী হয়েই নবাব সিরাজ সকলের কাছে উপরোক্ত অনুরোধ করেছিলেন।
প্রশ্নঃ 'তোমাকে আমরা তোপের মুখে উড়িয়ে দিতে পারি, জান?' - 'তোমাকে' ও 'আমরা' বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তির প্রতি এমন আচরণের কারণ কী?
উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশে 'তোমাকে' বলতে মুরশিদাবাদের রাজদরবারে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রেরিত প্রতিনিধি ওয়ার্টসের কথা বলা হয়েছে। অপরদিকে 'আমরা' বলতে বক্তা সিরাজদ্দৌলা স্বয়ং এবং তাঁর সৈন্যবাহিনীসহ অন্যান্য রাজকর্মচারীকে বুঝিয়েছেন।
মুর্শিদকুলি খাঁর মৃত্যুর পর বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলা বাংলার মসনদে বসেন। সিংহাসনে বসার পর থেকেই ইংরেজ কোম্পানি তাঁকে উপেক্ষা ও অসহযোগিতা করতে থাকেন। ফলস্বরূপ সিরাজ কলকাতা আক্রমণ করেন এবং কলকাতার নতুন নামকরণ করেন আলিনগর। অল্প সময়ের ব্যবধানে ওয়াটসন ও ক্লাইভ কলকাতাকে প্রশ্নোহ্ত যে অপরাধ পুনরুদ্ধার করে আলিনগরের সন্ধি স্বাক্ষর করেন। সন্ধির শর্ত সঠিকভাবে রূপায়ণের জন্য মুরশিদাবাদে রাজদরবারে ওয়ার্টস ইংরেজ প্রতিনিধি নিযুক্ত হন। ইংরেজ প্রতিনিধি ওয়াস যে নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তা প্রমাণিত হয় নৌসেনাপতি ওয়াটসনের ওয়াটসকে লেখা চিঠি থেকে। অন্যদিকে, ওয়াটসনকে লেখা ওয়াটসের চিঠি থেকে ষড়যন্ত্রে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা প্রমাণিত হয়। ষড়যন্ত্রকারীর একমাত্র শাস্তি যে মৃত্যু একথা বোঝাতেই নবাব এমন আচরণ করেছেন।
প্রশ্নঃ 'আজ পর্যন্ত কদিন তা ধারণ করেছেন, সিপাহসালার?' - কে, কার উদ্দেশ্যে এই উক্তিটি করেছে? প্রসঙ্গটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত 'সিরাজদ্দৌলা' নাট্যাংশ থেকে গৃহীত উক্তিটির বক্তা হল সিরাজদ্দৌলার সভাসদ মোহনলাল। মোহনলাল এ কথা বালেছে মীরজাফরকে উদ্দেশ্য করে। প্রন্মোশ্বত প্রসঙ্গের বিশ্লেষণ নবাব সিরাজদ্দৌলার সভাসদদের মধ্যে যে তিন জন সবচেয়ে বেশি ষড়যন্ত্রে নিযুক্ত ছিল, তারা হল রাজবল্লভ, জগৎশেঠ, মীরজাফর। এদের লক্ষ্য ছিল কোম্পানির সঙ্গে হাত মিলিয়ে যে কোনো ভাবে নবাবের পতন। তাই এরা নবাবের অপদার্থতা, অযোগ্যতা প্রমাণের জন্য নবাবের পক্ষে সম্মানহানিকর এমন বহু কাজে লিপ্ত হয়। কখনও তারা নবাবকে কটূক্তি করেছে আবার কখনও বা সভাসদের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে রাজকর্মচারী, আত্মীয়স্বজনদের তাঁর বিরুদ্ধে বিষিয়ে তুলেছে। ষড়যন্ত্রের আঁচ পেয়ে নবাব অনুসন্ধান করতে গিয়ে যখন দেখেন যে, সভাসদদের স্বার্থসিদ্ধিই এর মূল কারণ তখন তারা এর প্রতিবাদ করে। 'পাপ কখনও চাপা থাকে না' রাজবল্লভের এই কথার প্রেক্ষিতে নবাব হোসেনকুলীর প্রসঙ্গ আনতে সে চুপ হয়ে গেলেও পরম ষড়যন্ত্রকারী বন্ধু মীরজাফর তরবারি ধরে প্রতিজ্ঞা করে, মানী লোকের অপমান করলে সে নবাবের হয়ে অস্ত্র ধরবে না। এ প্রসঙ্গে নবাব অনুগত মোহনলাল উক্তিটি করেছিল, যাতে মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতক রূপটি ফুটে ওঠে।
প্রশ্নঃ 'বাংলার মান, বাংলার মর্যাদা, বাংলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়াসে আপনারা আপনাদের শক্তি দিয়ে বুদ্ধি দিয়ে, সর্বরকমে আমাকে সাহায্য করুন।' - সিরাজ কাদের কাছে এই সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন? কেন তিনি এই সাহায্যের প্রত্যাশী হয়েছেন?
উত্তরঃ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা আমাদের পাঠ্য 'সিরাজদ্দৌলা' সিরাজের আবেদন নাট্যাংশে নবাব সিরাজদ্দৌলা তাঁর সভাসদ ষড়যন্ত্রকারী রাজবল্লভ, রায়দুর্লভ, জগৎশেঠ, মীরজাফরদের কাছে এই সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিলেন।
আলিবর্দির মৃত্যুর পরে সিরাজের বাংলার মসনদে আরোহণ সিরাজের শত শত্রু ও ষড়যন্ত্রকারীর জন্ম দেয়। তাই তার পনেরো মাসের নবাবি জীবনে একটি দিনও সুখের ছিল না। পারিবারিক শত্রু তো ছিলই, তার সাহায্যের প্রত্যাশী সঙ্গে যুক্ত হন সভাসদরা। নানা ঘটনার প্রেক্ষিতে হওয়ার কারণ নবাব ক্ষতবিক্ষত ও অসহায় হয়ে পড়েন। একদিকে ইংরেজ কোম্পানি কলকাতায় সৈন্য সমাবেশ, দুর্গ নির্মাণ, চন্দননগর আক্রমণ, কাশিমবাজার অভিযান করে নবাবের রক্তচাপ বাড়াতে থাকে; অন্যদিকে, নবাবের কাছে অপমানিত ওয়াটসের ষড়যন্ত্রে সভাসদরা কোম্পানির সঙ্গে আপসে সমস্যার সমাধান করতে চাপ দিতে থাকেন এবং রাজসভা ত্যাগ করতে উদ্যত হন। এই অবস্থায় অসহায় নবাব বুঝেছিলেন, বাংলার এই দুর্দিনে সব জাতি, সব শক্তির মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন। তাই অকপটে নিজের ভুল ত্রুটি স্বীকার করে নিয়ে তিনি সাহায্যের প্রত্যাশী হয়েছিলেন।
প্রশ্নঃ 'নবাব যদি কলকাতা আক্রমণ না করতেন, তা হলে এসব কিছুই আজ হতো না' – 'নবাব' বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? কোন্ ঘটনার প্রতি নির্দেশ করা হয়েছে?
উত্তরঃ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের 'সিরাজদ্দৌলা' নাট্যাংশ থেকে গৃহীত 'নবাব'–এর পরিচয় উদ্ধৃতাংশে 'নবাব' বলতে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলার কথা বলা হয়েছে।
আলিবর্দি ছিলেন নিঃসন্তান। তাই তিনি ছোটো মেয়ের পুত্র সিরাজকে নিজের উত্তরাধিকারী হিসেবে নির্বাচিত করেছিলেন। ফলে আলিবর্দির মৃত্যুর পরে সিরাজদ্দৌলা বাংলার মসনদে বসেন। তিনি ছিলেন স্বাধীনচেতা। ঐতিহাসিক ঘটনার ক্ষমতাসীন হওয়ার পরেই তিনি ইংরেজদের প্রতি নির্দেশ চন্দননগর আক্রমণ, কলকাতা ও কাশিমবাজারে সৈন্য সমাবেশের সংবাদ পান। এক্ষেত্রে কোনো রকম আপসে না গিয়ে সিরাজ কাশিমবাজার কুঠি দখল করেন এবং কলকাতা আক্রমণ করে ইংরেজদের বিতাড়িত করেন। এখানে সেই ঐতিহাসিক ঘটনার প্রতিই নির্দেশ করা হয়েছে।
প্রশ্নঃ 'এই পত্র সম্বন্ধে তুমি কিছু জান?' – কে, কার উদ্দেশ্যে এই প্রশ্ন করেছেন? পত্রটি সম্বন্ধে যা জান লেখো।
উত্তরঃ রবীন্দ্র পরবর্তী যুগের অন্যতম নাট্যকার ও নাট্যসংস্কারক শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা 'সিরাজদ্দৌলা' নাট্যাংশে অ্যাডমিরাল ওয়ার্টসন সিরাজের উদ্দেশ্যে যে পত্র লিখেছিলেন, সেই পত্র কে, কাকে পত্রও দেখার পর 'স্বয়ং সিরাজ' তাঁর রাজদরবারে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রেরিত প্রতিনিধি ওয়ার্টসের উদ্দেশ্যে এই প্রশ্ন করেছেন।
শত্রু পরিবেষ্টিত হয়েই বাংলার শেষ স্বাধীন নবাবের সিংহাসন লাভ। সিংহাসন লাভের সময় থেকেই নবাবের চারপাশে একদিকে নিজ আত্মীয় ও রাজকর্মচারীরা আর অন্যদিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রতিনিয়ত স্বার্থসিদ্ধির জন্য চক্রান্তের জাল বুনে চলেছিল। আলিনগরের সন্ধির শর্ত রক্ষার্থে তাঁর দরবারে নিয়োজিত ওয়াটস ও কোম্পানির নৌসেনাপতি ওয়াটসনের মধ্যে চক্রান্তপূর্ণ যে দুটি চিঠির আদানপ্রদান হয়েছিল তা নবাবের হস্তগত হয়। উদ্ধৃত অংশে ওয়াটসনের চিঠিটির কথা বলা হয়েছে। সেখানে চিঠির শেষের দিকের কয়েকটি ছত্রে চক্রান্তের স্পষ্ট বার্তা পাওয়া যায়। নবাবের আদেশে মুনশি অনুবাদ করে যা শোনায় তার সারমর্ম হল, ক্লাইভের পাঠানো সৈন্য শীঘ্রই কলকাতায় পৌঁছোবে। সেনাপতি ওয়াটসন খুব শীঘ্রই মাদ্রাজে জাহাজ পাঠাবেন এবং কলকাতায় আরও সৈন্য ও জাহাজ পাঠানোর কথা জানাবেন। তাঁর উদ্যোগে বাংলায় আগুন জ্বলে উঠবে। অতএব এই চিঠির মূল উদ্দেশ্য সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়ে বাংলা দখল।
প্রশ্নঃ 'আমরা নবাবের নিমক বৃথাই খাই না, একথা তাদের মনে রাখা উঠিত।' - নিমক খাওয়ার তাৎপর্য কী? উক্তিটি থেকে বস্তার চরিত্রের কোন পরিচয় পাওয়া যায়?
উত্তরঃ নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের 'সিরাজদ্দৌলা' নাটকে উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা সিরাজের একান্ত অনুগত ও বিশ্বস্ত সহচর মীরমদন। নিমক খাওয়ার অর্থ হল কারও আর প্রতিপালিত হওয়া। তিনি সিরাজের বেতনভুক কর্মচারী। তাই তাঁর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনই যে যথার্থ সে কথা বোঝাতেই উক্তিটির অবতারণা।
মীরমদন তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হননি। তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি হল -
অনুগতঃ নবাবের প্রতি মীরমদনের আনুগত্য প্রশ্নাতীত। বীর মীরমদন নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন। তাই নবাবের অন্য সভাসদদের নবাবের প্রতি দুর্ব্যবহার ও স্পর্ধা লক্ষ করে, তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে রুখে দাঁড়ান। কৃতজ্ঞতা, ভালোবাসা ও আনুগত্য মীরমদনের চরিত্রে একইসঙ্গে এনে দিয়েছে নম্রতা, দৃঢ়তা এবং বিশ্বস্ততীবোধ।
সৎঃ তিনি সৎ ও চরিত্রবান সৈনিক। তাই রাজদরবারের সংখ্যাগরিষ্ঠের দুর্নীতি তাঁকে স্পর্শ করতে পারে না।
দৃঢ়চেতাঃ তিনি অত্যন্ত নম্র, ভদ্র ও পরিশীলিত হওয়া সত্ত্বেও স্থানবিশেষে কাঠিন্য প্রদর্শন করতেও পিছপা হন না। তাই সর্বসমক্ষে মীরজাফরকে অপ্রিয় সত্য কথাটি বলতে তিনি দ্বিধাবোধ করেননি। এ তাঁর চারিত্রিক দৃঢ়তার দৃষ্টান্ত।
প্রশ্নঃ 'আমার রাজ্য নাই। তাই আমার কাছে রাজনীতিও নাই, আছে শুধু প্রতিহিংসা' - কে, কার উদ্দেশ্যে এ কথা বলেছে? বক্তার প্রতিহিংসার কারণ কী?
উত্তরঃ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের 'সিরাজদ্দৌলা' নাট্যাংশে সিরাজের উক্তি ঘসেটি বেগম এই কথাগুলি নবাব সিরাজদ্দৌলার উদ্দেশ্যে বলেছেন।
আলিবর্দি, নিজের কোনো পুত্র না থাকায় তৃতীয় মেয়ের পুত্র সিরাজদ্দৌলাকে নিজের উত্তরাধিকারী মনোনীত করেছিলেন। সেইমতো আলিবর্দির মৃত্যুর পরে, সিরাজ বাংলার মসনদে বসেন। কিন্তু এই ঘটনায় সর্বাপেক্ষা বিরূপ হয়েছিলেন ঘসেটি বেগম। তিনি আর এক বোনের পুত্র পূর্ণিয়ার শাসনকর্তা শওকতজঙ্গকে বাংলার মসনদে বসাতে চেয়েছিলেন। এজন্যে তিনি সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেন। ফলে সিরাজ মাতৃম্বসা ঘসেটিকে নিজ প্রাসাদে বন্দি করেন। বন্দিনি ঘসেটির প্রতিহিংসার এই ছিল মূল কারণ।
প্রশ্নঃ 'সিরাজদ্দৌলা' নাট্যাংশ অবলম্বনে সিরাজদ্দৌলার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।
উত্তরঃ বিংশ শতাব্দীতে নাট্যকাররা ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বকে মুক্তি আকাঙ্ক্ষার প্রতীকরূপে ভেবে নাটক রচনায় ব্রতী হন। শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের 'সিরাজদ্দৌলা' নাটকের সিরাজ সেরকমই এক ব্যক্তিত্ব।
দুর্বল মানসিকতাঃ সিরাজ তাঁর শত্রুদের চক্রান্ত বুঝতে পারলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো কড়া ব্যবস্থা নিতে পারেননি। তেমনই ঘসেটি বেগমের অভিযোগেরও তিনি প্রতিবাদ করতে পারেন না বরং নিজের দুর্বলতা নিজে মুখেই স্বীকার করে নেন, 'পারি না শুধু আমি কঠোর নই বলে।' সব মিলিয়ে লেখক সিরাজকে সফল ট্র্যাজিক নায়কের রূপ দিতে সক্ষম হয়েছেন।
সাম্প্রদায়িকতাঃ মুক্ত মানসিকতা সিরাজ বুঝেছিলেন বাংলা শুধু হিন্দুর নয়, বাংলা শুধু মুসলমানের নয়, হিন্দু–মুসলমানের মিলিত প্রতিরোধই পারে বাংলাকে ব্রিটিশদের আগ্রাসন থেকে রক্ষা করতে। সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত এই জাতীয়তাবোধ সত্যিই বিরল দৃষ্টান্ত।
দেশাত্মবোধঃ সিরাজ তাঁর নিজের বিরুদ্ধে যাবতীয় ষড়যন্ত্রকে কখনোই ব্যক্তিগত আলোকে দেখেননি। বরং বাংলার বিপর্যয়ের দুশ্চিন্তাই তাঁর কাছে প্রধান হয়ে ওঠে। বাংলাকে বিদেশি শক্তির হাত থেকে বাঁচাতে তিনি অধস্তনের কাছে ক্ষমা চাইতে বা শত্রুর সঙ্গে সন্ধিতেও পিছপা হন না।
আত্মসমালোচনাঃ নবাব বুঝেছিলেন ষড়যন্ত্রীরা যেমন ভুল করেছে, তেমনি অনেক ত্রুটি আছে তাঁর নিজেরও। বাংলার বিপদের দিনে তাই তিনি নিজের ভুল স্বীকারে দ্বিধাগ্রস্ত হন না।
প্রশ্নঃ 'বুঝিয়ে আমি দিচ্ছি।' - কী বোঝানোর কথা বলা হয়েছে? কীভাবে বক্তা তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন?
উত্তরঃ নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত 'সিরাজদ্দৌলা' নাট্যাংশ থেকে গৃহীত উক্তিটির বক্তা হলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলা। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে নবাবের আলিনগরের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কোম্পানি যাতে সকল শর্ত পালন করে, তা দেখার জন্য মুরশিদাবাদে কোম্পানির প্রতিনিধিরূপে ওয়াটসকে রাখা হয়েছিল। কিন্তু গোপনে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। এই ষড়যন্ত্রের প্রমাণ হিসেবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অ্যাডমিরাল ওয়াটসনের একখানি চিঠি নবাব সিরাজদ্দৌলার হস্তগত হয়। যেখানে সিরাজের বিরুদ্ধে গোপনে সৈন্য সমাবেশ ঘটানোর প্রসঙ্গ আলোচিত হয়। এই চিঠি সম্পর্কে ওয়াটসকে প্রশ্ন করলে সে এ ব্যাপারে কোনো কিছু জানার কথা অস্বীকার করে। তখন নবাব উদ্ধৃত উক্তিটি করেন। বস্তা কীভাবে বুঝিয়েছেন নবাব সিরাজদ্দৌলা তাঁর বিরুদ্ধে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ষড়যন্ত্রে ওয়াটসের সক্রিয় ভূমিকার বিষয়টিকে প্রমাণ করার জন্য ওয়াটসের লেখা একখানি চিঠিও উপস্থিত করেন, যেখানে ওয়াটস জানিয়েছেন, নবাবের ওপর নির্ভর না করে চন্দননগর আক্রমণ করা উচিত। নবাব যে সবই জানেন, তা তিনি এইভাবে ওয়াটসকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন।
প্রশ্নঃ 'আপনি আমাদের কী করতে বলেন জাঁহাপনা!' - বস্তু ও জাঁহাপনা কে? জাঁহাপনার উত্তরে যা বলেছিলেন তার মর্মার্থ বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের 'সিরাজদ্দৌলা' নাটক থেকে সংকলিত বস্তা এবং তাঁহাপনার আমাদের পাঠ্য নাট্যাংশ 'সিরাজদ্দৌলা' থেকে পরিচয় গৃহীত অংশটিতে বক্তা হলেন নবাবের সভাসদ মীরজাফর আলি খান। আর 'জাঁহাপনা' হলেন নবাব সিরাজদ্দৌলা।
মীরজাফর আলি খানের প্রশ্নের উত্তরে জাঁহাপনা যা বলেছিলেন তাতে তাঁর অসহায়তার ছাপ ছিল স্পষ্ট। একদিকে কোম্পানির আগ্রাসন, অন্যদিকে রাজবল্লভ, জগৎশেঠ, রায়দুর্গভ, মীরজাফরের মতো সভাসদদের ষড়যন্ত্রে তাঁর সিংহাসন টলমল করছিল। তিনি বুঝেছিলেন তরবারির আঘাতে নয়; মানুষের দেশাত্মবোধ, সংহতি ও ভালোবাসাকে কাজে লাগিয়ে তাদের সংহত করে এই বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে। তাঁর কাছে তখন সিংহাসন নয়, বাংলার স্বাধীনতা রক্ষার প্রশ্নই বড়ো হয়ে দেখা দিয়েছিল। আত্মসমালোচনার সঙ্গে নিজের অপরাধ স্বীকার ও তার জন্য প্রাপ্য সাজা মাথা পেতে নেওয়ার অঙ্গীকার করেও দেশের শত্রুকে আগে প্রতিহত করার ডাক দেন তিনি। বাংলা হিন্দু–মুসলমান উভয়েরই মাতৃভূমি বলে শত্রু মোকাবিলায় সংহতিতে জোর দিয়েছিলেন। এককথায় জাঁহাপনার বক্তব্যে তাঁর স্বদেশপ্রেম, ধর্মনিরপেক্ষতা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও বিনয় প্রকাশ পেয়েছে।
প্রশ্নঃ 'এইবার হয়ত শেষ যুদ্ধ!' – কোন্ যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে? বস্তুা তাকে শেষ যুদ্ধ বলেছেন কেন?
উত্তরঃ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের 'সিরাজদ্দৌলা' নাট্যাংশে নবাব সিরাজ এখানে আসন্ন পলাশির যুদ্ধের কথা বলেছেন। সিরাজ বাংলার মসনদে আসীন হয়েই কাশিমবাজার কুঠি দখল করেন। শেষ যুদ্ধ বলার কারণ এবং কলকাতায় গিয়ে ইংরেজদের বিতাড়িত করেন। কিন্তু মাম্রাজ থেকে ক্লাইভ ফিরে কলকাতা ফের দখলে আনেন। এই সময় পরিস্থিতির চাপে উভয় পক্ষের মধ্যে আলিনগরের সন্ধির মাধ্যমে মীমাংসা হয়। কিন্তু এসবই ছিল সাময়িক যুদ্ধবিরতি মাত্র। ইংরেজরা বুঝতে পেরেছিল স্বাধীনচেতা সিরাজকে মসনদ থেকে না সরালে বাংলায় নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দখল সম্ভব নয়। তাই তারা মীরজাফরকে নবাব করার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়ে রাজবল্লভ, রায়দুর্লভ ও জগৎশেঠদের সঙ্গে সম্মিলিত ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এই লক্ষ্যেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনা পুনরায় কাশিমবাজার অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। আপসহীন সিরাজ হিন্দু–মুসলিম নির্বিশেষে সকল সভাসদদের একত্র করে বহিঃশত্রুকে পর্যুদস্ত করার চেষ্টা করেন। কারণ তিনি অনুধাবন করেছিলেন পলাশির যুদ্ধে পরাজয়ের অর্থই হল স্বাধীন বাংলার পতন। ঘরে – বাইরে ষড়যন্ত্রে, চক্রান্তে জর্জরিত সিরাজের কণ্ঠে সেই কথাই ধ্বনিত হয়েছে।
প্রশ্নঃ 'তাই আজও তার বুকে রক্তের তৃষা। জানি না, আজ কার রক্ত সে চায়। পলাশি , রাক্ষসী পলাশি।' - 'পলাশি' নামকরণের কারণ নির্দেশ করে উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ নদিয়া জেলার ভাগীরথীর পূর্বতীরে বাংলার ঐতিহাসিক স্থান পলাশি। লাল পলাশের রঙে রঙিন হয়ে থাকত বলেই জায়গাটির এমন নাম। বাংলার ইতিহাসে পলাশি সেই রঙ্গম, যেখানে এক লজ্জাজনক ও কলঙ্কময় অধ্যায় অভিনীত হয়েছিল। পলাশের 'পলাশি' নামকরণের কারণ নির্দেশসহ তাৎপর্য বিশ্লেষণ লাল রঙের সঙ্গে রক্তের রং একাত্ম হয়ে গিয়েছিল। শচীন্দ্রনাথের নাটকে পলাশির শেষ পরিণতি কী হবে তা না জেনেই আগে সিরাজ উদ্ভিটি করেছেন। সিরাজ জানতেন কোম্পানির সঙ্গে যুদ্ধে বিজয়ী হওয়া কঠিন। নবাব ঘরে–বাইরে শত্রুবেষ্টিত হয়ে অনেকটাই অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। ষড়যন্ত্রে সংশয়াচ্ছন্ন সিরাজ মানসিক দিক থেকে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছিলেন। ঘসেটি বেগমের অভিসম্পাত তাঁকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছিল। তাই নাট্যাংশের শেষ সংলাপে নবাবের দ্বন্দ্বদীর্ণ ক্ষতবিক্ষত মনের পরিচয় মেলে। মানসিক টানাপোড়েনে আহত নবাব আশঙ্কা প্রকাশ করেন। পলাশে রাঙা পলাশির লালের নেশা ঘোচেনি, তাই সে রক্তের পিয়াসি। কিন্তু কার রক্ত তা অজানা, কারণ যুদ্ধের পরিণতি সম্পর্কে তিনি ছিলেন অনিশ্চিত।
প্রশ্নঃ 'তোমাদের কাছে আমি লজ্জিত।' - কে, কাদের কাছে লজ্জিত? লজ্জা পাওয়ার কারণটি উল্লেখ করো।
উত্তরঃ আমাদের পাঠ্য শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের 'সিরাজদ্দৌলা' নাট্যাংশের দ্বিতীয় অঙ্কের প্রথম দৃশ্যে রাজদরবারে ফরাসি প্রতিনিধি মঁসিয়ে লা–সহ সমস্ত ফরাসিদের কাছে নিজের অক্ষমতার জন্য নবাব স্বয়ং লজ্জিত বলে জানিয়েছেন।
ইংরেজ, ডাচ, পোর্তুগিজদের মতো ফরাসিরাও দীর্ঘকাল বাংলা দেশে বাণিজ্য করেছে। ঔপনিবেশিক প্রতিযোগিতা থাকায় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ইঙ্গ–ফরাসি দ্বন্দ্ব সর্বজনবিদিত। বাংলাতেও সেই শত্রুতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু নবাবের সুনজরে থাকার জন্য ফরাসিরা নিরুপদ্রবেই ছিল। ঘরে–বাইরে নবাব নানান সমস্যায় জর্জরিত থাকার সুযোগে ইংরেজরা চন্দননগর আক্রমণ করে ফরাসিদের বাণিজ্যকুঠি নিজেদের অধিকারে আনে এবং গোটা চন্দননগরের অধিকার নবাবের কাছে দাবি করেন। ফরাসিরাও নবাবের সাহায্য প্রার্থনা করে আবেদন জানান। নবাবের কলকাতা জয় ও শওকতজঙ্গের সঙ্গে সংগ্রামে অর্থবল ও লোকবল কমে আসে। মন্ত্রীমণ্ডলও যুদ্ধের পক্ষপাতী ছিল না। সমস্যা জর্জরিত সম্রাট নতুন করে আর ইংরেজদের সঙ্গে বিবাদে জড়াতে চাননি। নবাবের এই অক্ষমতার জন্য ফরাসিদের কাছে তিনি লজ্জিত।
প্রশ্নঃ 'আপনার অভিযোগ বুঝিতে পারিলাম না।' - বক্তা কে? তার বা তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি কী ছিল?
উত্তরঃ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের 'সিরাজদ্দৌলা' নাট্যাংশ থেকে গৃহীত বক্তা নবাব সিরাজের রাজসভায় উপস্থিত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারী ও প্রতিনিধি ওয়াটস।
শত্রু পরিবেষ্টিত হয়েই বাংলার শেষ স্বাধীন নবাবের সিংহাসন লাভ। সিংহাসন লাভের সময় থেকেই নবাবের চারপাশে একদিকে নিজ আত্মীয় ও রাজকর্মচারীরা আর অন্যদিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রতিনিয়ত স্বার্থসিদ্ধির জন্য চক্রান্তের জাল বুনে চলেছিল। আলিনগরের সন্ধির শর্ত রক্ষার্থে তাঁর দরবারে নিয়োজিত ওয়াটস ও কোম্পানির নৌসেনাপতি ওয়াটসনের মধ্যে চক্রান্তপূর্ণ যে দুটি চিঠির অভিযোগ আদানপ্রদান হয়েছিল তা নবাবের হস্তগত হয়। উদ্ধৃত অংশে ওয়াটসনের চিঠিটির কথা বলা হয়েছে। সেখানে চিঠির শেষের দিকের কয়েকটি ছত্রে চক্রান্তের স্পষ্ট বার্তা পাওয়া যায়। নবাবের আদেশে মুনশি অনুবাদ করে যা শোনায় তার সারমর্ম হল, ক্লাইভের পাঠানো সৈন্য শীঘ্রই কলকাতায় পৌঁছোবে। সেনাপতি ওয়াটসন খুব শীঘ্রই মাদ্রাজে জাহাজ পাঠাবেন এবং কলকাতায় আরও সৈন্য ও জাহাজ পাঠানোর কথা জানাবেন। তাঁর উদ্যোগে বাংলায় আগুন জ্বলে উঠবে। অতএব এই চিঠির মূল উদ্দেশ্য সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়ে বাংলা দখল। এখানে এই অভিযোগের কথাই বলা হয়েছে।
প্রশ্নঃ 'বাংলার ভাগ্যাকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা' - বক্তা কে? বক্তার এমন উক্তির কারণ কী?
উত্তরঃ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত 'সিরাজদ্দৌলা' নাট্যাংশে যে 'জাতির' প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়েছে, তা বাঙালি জাতিকেই বুঝিয়েছে।
উদ্ধৃত উক্তিটি আমরা 'সিরাজদ্দৌলা' নাটকে সিরাজের কণ্ঠে পাই। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে বাণিজ্য করতে এসে ভারতীয়দের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে এবং পলাশির যুদ্ধে সিরাজকে পরাস্ত কারণ ব্যাখ্যা 'সৌভাগ্য–সূর্য' অস্তাচলগামী করে তারা বণিকের মানদণ্ডকে রাজদণ্ডে পরিণত করে। এই পরাজয়ের পিছনে কোম্পানির শক্তির চেয়ে নবাবের সভাসদদের সম্মিলিত অশুভ শক্তির অবদান বেশি ছিল, নবাব তা ভালোভাবেই অনুধাবন করেছিলেন। তাই মীরজাফর, জগৎশেঠ, রাজবল্লভ, রায়দুল্লভ প্রমুখের চক্রান্তের কাছে নবাবকে অসহায় লেগেছে। সব জেনেশুনেও নবাব তাদের শাস্তি দিতে পারেনি। নবাব জানতেন যে, এককভাবে নয় সম্মিলিতভাবেই কোম্পানির শক্তিকে পরাস্ত করতে হবে। বাংলার মানমর্যাদা স্বাধীনতা রক্ষার্থে নবাব হিন্দু–মুসলমানসহ বাংলার সমস্ত মানুষের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন। নবাব জানতেন পলাশির যুদ্ধে পরাজয় মানে বাংলার স্বাধীনতার অবসান। তাই স্বাধীন বঙ্গভূমির এমন ঘোরতর দুর্দিনে, তার সভাসদ ও সমগ্র বঙ্গাবাসীর কাছে বাঙালির সৌভাগ্য সূর্যের অস্তাচল রোধ করতে তিনি কাতর আবেদন জানিয়েছিলেন।
প্রশ্নঃ 'মনে হয়, ওর নিশ্বাসে বিষ, ওর দৃষ্টিতে আগুন, ওর অভা সম্মালনে ভূমিকম্প।' - 'ওর' বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? বক্তার উদ্দিষ্টের প্রতি এমন মন্তব্যের কারণ আলোচনা করো।
উতরঃ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের নাট্যাংশ 'সিরাজদ্দৌলা' থেকে উদ্ধৃতিটি গৃহীত। এখানে বক্তা হলেন সিরাজপত্নী লুৎফা আর 'ওর'–এর পরিচয় 'ওর' বলতে বোঝানো হয়েছে সিরাজের বিরুদ্ধে অন্যতম ষড়যন্ত্রকারিণী ঘসেটি বেগমকে, যিনি সম্পর্কে সিরাজের মাসি। নবাব আলিবর্দির তাঁর প্রিয় দৌহিত্র সিরাজকে সিংহাসনে বসানোর ব্যাপারটি ঘরে–বাইরে অনেকেই মেনে নেয়নি। এঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন আলিবর্দির কন্যা ঘসেটি বেগম। তিনি তাঁর অন্য এক বোনের পালিত পুত্র শওকতজাকে বাংলার মসনদে দেখতে মন্তব্যের কারণ চেয়েছিলেন। ঘসেটি বেগম নবাবের মাতৃসমা হলেও মাতৃত্বের লেশমাত্র তাঁর মধ্যে লক্ষ করা যায়নি। প্রতিহিংসাপ্রবণা ঘসেটি সিরাজের প্রতি বিষোদ্গার করেন এবং নবাবের সভাসদ ও কোম্পানির সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে নবাবকে উৎখাতের স্বপ্ন দেখতে থাকেন। সিরাজ তাঁর মতিঝিল প্রাসাদ অধিকার করে তাঁকে সম্মানের সঙ্গে নিজের প্রাসাদে স্থান দেন। না পাওয়ার যন্ত্রণায় ঘসেটির প্রতিনিয়ত অভিশাপবর্ষণ সিরাজকে ক্ষতবিক্ষত করে তোলে। স্ত্রী লুৎফার কাছে নবাব একান্ত আলাপচারিতায় জানতে চান ঘসেটি বেগম মানবী না দানবী। সিরাজের চোখের জল আর ঘসেটির ভয়ে বিচলিত লুৎফা নবাবের প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেছেন।
প্রশ্নঃ 'বাংলা শুধু হিন্দুর নয়, বাংলা শুধু মুসলমানের নয় - মিলিত হিন্দু – মুসলমানের মাতৃভূমি গুলবাগ এই বাংলা।' - কাদের উদ্দেশ্য করে একথা বলা হয়েছে? এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বক্তার কী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত হয়েছে?
উত্তরঃ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের 'সিরাজদ্দৌলা' নাট্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটির বক্তা নবাব সিরাজদ্দৌলা। তিনি রাজবল্লভ, জগৎশেঠ, রায়দুর্লভ প্রমুখকে উদ্দেশ্য করে একথা বলেছেন।
নাট্যাংশে যুদ্ধে–চক্রান্তে ও ষড়যন্ত্রে ক্ষতবিক্ষত এক রক্তমাংসের মানুষের দেখা মেলে। তিনি ঘরে–বাইরে নানা সমস্যায় জর্জরিত। কিন্তু এ সমস্যাকে তিনি কখনোই ব্যক্তিগত সমস্যা বলে মনে করেন না। কারণ এ বিপদ বস্তুবো প্রতিফলিত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য স্বদেশ ও স্বজাতির বিপদ। তাই বহিঃশত্রু ইংরেজের ক্ষমতা দখলের স্বপ্নকে ব্যর্থ করতে। তিনি সমস্ত ন্যায়–অন্যায় বিচার ও ভেদাভেদ ভুলে সকলকে একসঙ্গে নিয়ে চলার সংকল্প করেন। তাঁর কাছে এ লড়াই বাংলার মানমর্যাদা ও স্বাধীনতা রক্ষার লড়াই। তিনি জানেন লোভ কিংবা মোহের বশবর্তী হয়ে মানুষ অনেক সময় অন্যায় কাজে প্রবৃত্ত হয়। কিন্তু দেশের বিপদে সব ভুলে ঝাঁপিয়ে পড়াই হল প্রকৃত পৌরুষ ও দেশপ্রেমের লক্ষণ। তাই মীরজাফর, রাজবল্লভ, জগৎশেঠ বা রায়দুর্গভদের এই বাংলাকে হিন্দু কিংবা মুসলমানের বাংলা হিসেবে না দেখে; উভয়েরই প্রিয় মাতৃভূমি হিসেবে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ এক্ষেত্রে উভয়েই অন্যায় কিংবা আঘাতের সমান অংশীদার। এমনকি তিনি নিজেকেও মুসলমান হিসেবে প্রতিপন্ন না করে; উপস্থিত সভাসদদের আর একজন স্বজাতি হিসেবেই দেখতে চেয়েছেন। এভাবেই তিনি জন্মভূমিকে রক্ষা করতে ধর্মীয় বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠে, সম্প্রীতি ও দেশপ্রেমের চিরকালীন বার্তাকেই ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন।
প্রশ্নঃ 'আমার এই অক্ষমতার জন্যে তোমরা আমাকে ক্ষমা করো।' - বস্তুা কাদের কাছে কোন্ অক্ষমতা প্রকাশ করেছেন?
উত্তরঃ নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত 'সিরাজদ্দৌলা' নাট্যাংশটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে লিখিত। বাংলার নবাব সিরাজদ্দৌলার জীবনকাহিনি এবং নবাব তথা বাংলার ট্র্যাজিক পরিণতি এই নাটকের বিষয়বস্তু। উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা সিরাজদ্দৌলা, ফরাসি প্রতিনিধি মঁসিয়ে লাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন। দীর্ঘকাল ধরেই ইংরেজদের সঙ্গে ফরাসিদের বিবাদ। সেই বিবাদের সূত্রপাত সাগরপারে হলেও তার সূত্র ধরেই এদেশেও উভয়পক্ষের মধ্যে রেষারেধি ছিল অব্যাহত। ইংরেজরা সিরাজদ্দৌলার অনুমতি ব্যতীতই চন্দননগর আক্রমণ ও অধিকার করে। সেখানকার সবকটি ফরাসি বাণিজ্যকুঠি অধিগ্রহণের দাবি জানায়। এর সুবিচারের আশায় ফরাসিরা নবাবের শরণাপন্ন হলেও সিরাজদ্দৌলা তাদের সাহায্য করতে পারেননি। এখানে তিনি নিজের সেই অক্ষমতার কথাই বলেছেন।
বক্তা নবাব সিরাজদ্দৌলা ফরাসিদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। কারণ, ফরাসিরা তাঁর সঙ্গে কখনোই দুর্ব্যবহার করেনি। তাই তাদের প্রতি সম্পূর্ণ সহানুভূতি থাকলেও এবং তাদের অভিযোগ ন্যায়সংগত হওয়া সত্ত্বেও তিনি তাদের সাহায্য করতে অপারগ। নিজের অক্ষমতায় এবং নিষ্ক্রিয়তায় আন্তরিকভাবে লজ্জিত সিরাজ ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন।
প্রশ্নঃ 'আপনার চোখে জল যে আমি সইতে পারি না।' - বক্তা কে? এখানে উদ্দিষ্ট ব্যক্তির চোখে জল কেন বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘সিরাজদ্দৌলা' নাট্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটির বক্তা নবাব সিরাজের স্ত্রী লুৎফা–উল–নেসা তথা লুৎফা।
অপুত্রক নবাব আলিবর্দি তাঁর দৌহিত্র সিরাজদ্দৌলাকে আপন উত্তরাধিকারী হিসেবে মনোনীত করেছিলেন। সেইমতো আলিবর্দির মৃত্যুর পরে ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দে সিরাজ বাংলার মসনদে বসেন। কিন্তু তিনি নবাব হওয়ায় অনেকের আশাভঙ্গ হয় ও ঈর্ষাপরায়ণ বঞ্চিতরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। এদের মধ্যে প্রধান ছিলেন সিরাজের মাতৃম্বসা ঘসেটি বেগম। তিনি দেওয়ান রাজবল্লভের মাধ্যমে উদ্দিষ্ট ব্যক্তির চোখে সিরাজকে মসনদচ্যুত করার চক্রান্ত করেন। জলের কারণ পরবর্তীকালে মীরজাফর, ইয়ারলতিফ, জগৎশেঠ ও রায়দুর্লভরাও এই দলে যোগ দেন। সিরাজ বিদ্রোহিণী ঘসেটিকে জব্দ করতে নিজপ্রাসাদে নজরবন্দি করেন। কিন্তু বন্দিনি ও প্রতিহিংসাপরায়ণ ঘসেটির দীর্ঘশ্বাস আর অভিসম্পাতে সিরাজের হৃদয় বেদনা – যন্ত্রণায় প্রতিনিয়ত দগ্ধ হতে থাকে। তিনি নির্মম হতে পারেন না বলেই মাতৃসমা ঘসেটির কণ্ঠকে চিরতরে থামিয়ে দিতে পারেন না। বরং মানবীয় দুর্বলতায়, শত্রুর বেদনায় নিজেও কষ্ট পান। এই অন্তর্দ্বন্দ্বের জ্বালা–যন্ত্রণাতেই সিরাজের চোখে জল দেখা যায়।
Madhyamik Bengali Suggestion 2024
Madhyamik Bengali suggestion 2024 pdf. Madhyamik Bengali suggestion 2024 pdf download. Madhyamik Bengali question 2024. Madhyamik Bengali. Madhyamik Bengali meaning. Madhyamik Bengali syllabus 2024. Madhyamik Bengali syllabus 2024. Madhyamik Bengali syllabus. Madhyamik Bengali question 2024.
সিরাজদ্দৌলা শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন প্রশ্ন ও উত্তর
শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের সিরাজউদ্দৌলা নাটক pdf. সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সিরাজের চরিত্র. সিরাজউদ্দৌলা নাটকের ঘসেটি বেগমের চরিত্র. সিরাজউদ্দৌলা নাটকের বড় প্রশ্ন উত্তর. বাংলার এই দুর্দিনে আমাকে ত্যাগ করবেন না. সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব. বাংলার ভাগ্যাকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা. পলাশী রাক্ষসী পলাশী বক্তা কে.
Madhyamik Suggestion 2024 pdf Free download
মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf. উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024 PDF. বাংলা ব্যাকরণ সাজেশন. উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024. মাধ্যমিক বাংলা কারক. মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান সাজেশন 2024. পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্ন উত্তর ও শেষ মুহূর্তের সাজেশন ডাউনলোড. মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024 mcq. মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন 2024. মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্ন উত্তর 2024. 2024 এর মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্ন বাংলা.
সিরাজদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর pdf
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের বড় প্রশ্ন উত্তর. সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সিরাজের চরিত্র. শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের সিরাজউদ্দৌলা নাটক pdf. সিরাজউদ্দৌলা নাটকের ঘসেটি বেগমের চরিত্র. বাংলার এই দুর্দিনে আমাকে ত্যাগ করবেন না. সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব. বাংলার ভাগ্যাকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা. পলাশী রাক্ষসী পলাশী বক্তা কে.
মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf
Madhyamik suggestion 2024 pdf. Madhyamik suggestion 2024 pdf download. Madhyamik suggestion 2024 pdf free download. ক্লাস 10 বাংলা প্রশ্ন উত্তর 2024. ক্লাস টেনের বাংলা সাজেশন. মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক পরীক্ষার সাজেশন 2024 বাংলা. উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024 PDF. বাংলা ব্যাকরণ সাজেশন.
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর 2024
সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর. সিরাজউদ্দৌলা নাটক class 10 প্রশ্ন উত্তর mcq. সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সিরাজের চরিত্র. সিরাজউদ্দৌলা নাটকের বড় প্রশ্ন উত্তর. শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের সিরাজউদ্দৌলা নাটক pdf. সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব. সিরাজউদ্দৌলা নাটকের ঘসেটি বেগমের চরিত্র. সিরাজউদ্দৌলা নাটক দশম শ্রেণি.
WBBSE Madhyamik bengali suggestion 2024
WBBSE Madhyamik Bengali suggestion 2024 pdf download. Madhyamik Question Paper Bengali. WBBSE Madhyamik Bengali suggestion 2024 pdf download in Bengali. WBBSE Madhyamik Bengali suggestion 2024 download pdf. West Bengal Madhyamik Bengali Suggestion 2023 Download. WBBSE Madhyamik Bengali short question suggestion 2024. Madhyamik Bengali Suggestion 2024 download. WB Madhyamik 2024 Bengali suggestion and important questions. Madhyamik Suggestion 2024 pdf.
সিরাজউদ্দৌলা বড় প্রশ্ন উত্তর
বাংলার ভাগ্যাকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা. সিরাজউদ্দৌলা নাটকের চরিত্র কয়টি. সিরাজউদ্দৌলা নাটকের ঘসেটি বেগমের চরিত্র. পথের দাবী প্রশ্ন উত্তর. অভিষেক কবিতার প্রশ্ন উত্তর. শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের. সিরাজউদ্দৌলা নাটক pdf. সিরাজউদ্দৌলা নাটক class 10 প্রশ্ন উত্তর mcq. সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব.
Bohurupi
উত্তরমুছুনBesides all this anything will come madhyamik exam 2023 from sirijdolla ????
উত্তরমুছুন