LightBlog
"ভাত" গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার কর। HS Bengali Suggestion 2023 WBCHSE
Type Here to Get Search Results !

"ভাত" গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার কর। HS Bengali Suggestion 2023 WBCHSE

 Higher Secondary Bengali Suggestion 2023

HS Bengali Suggestion 2023 WBCHSE

গল্প - ভাত


প্রশ্ন- "ভাত" গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার কর।

উত্তরঃ- নামকরণ হল সাহিত্যের জগতে কোন সাহিত্যকীর্তির জন্য একটি অন্যতম বিষয়। সাহিত্যে নামকরণ মূলতঃ তিনটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে হয় - বিষয়বস্তুপ্রধান চরিত্র ও ব্যঞ্জনা।দলিত সমাজের বলিষ্ঠ কথাকার অভিধায় ভূষিত প্রখ্যাত সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী রচিত "ভাত" গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রটি হল উৎসবযাকে সকলে উচ্ছব নাইয়া বলেই ডাকে। গল্পে তাকে আমরা প্রথমে বুনো বুনো স্বভাবউগ্র চাহনি ইত্যাদি বিশেষণে দেখি। পরনে তার খাটো ময়লা লুঙ্গি। সে মূলতঃ বাদা অঞ্চলের মানুষ হলেও আজ কপাল দোষে প্রকৃতির অভিশাপে সর্বস্বান্ত। মাতলা নদীর বন্যায় তার পরিবার ও সন্তান সকলকেই সে চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলেছে। তাই আজ সে নিঃস্ব,আপন ও স্বজন বলতে কেউ নেউ,কিছুই নেই।

     কিন্তু পেটের জ্বালা বড় জ্বালা। জীবনধারণ হেতু পরিচিতা গ্রাম সম্পর্কিত বোন বাসিনীর সাহায্য তার আশ্রয় জোটে কোলকাতার একটি ধনী গৃহে। সে শুনেছে কোলকাতায় ভাতের ছড়াছড়ি। বাসিনীর "কত্তাবাবু" তথা মালিকের বাড়ীতে সে এসেছে দুদিন ফেলেছেড়ে ভাত খেতে। সেখানে তার কাজ কাঠ কাটাবিনিময়ে সে ভাত খেতে পারবে। কিন্তু কত্তাবাবুর মারণ রোগতাই তাকে বাঁচানোর জন্য বাড়ীতে চলছে হোমযজ্ঞ। সকলেই সংস্কারের বেড়াজাল পেরিয়ে নিয়েছে কুসংস্কারের আশ্রয়এক তান্ত্রিকের সাহায্যে হচ্ছে এই হোমযজ্ঞ। সারাদিন কাঠ কাঠে দুটো ভাতের আশায়কিন্তু ভাত তার কপালে জোটে না। সকলে হোমযজ্ঞ নিয়ে ব্যস্ত। দিনান্তে সে ক্লান্ত শরীরে মন্দিরের চাতালে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুম ভাঙে কারও ধাক্কায় আর সে জানতে পারে কত্তাবাবু গত হয়েছেন। তাই বাড়ীর সব খাবার ফেলে দেওয়া হবে। বাসিনী উচ্ছবকে জানায় যেবাদায় বাবুদের প্রচুর জমিবাড়ীতে তারা করেছে চালের পাহাড়। তখন উচ্ছব এক মুঠো চাল চায় তার কাছেমুখে দিয়ে জল খাবার আর্জি জানায়। কাতরোক্তি করে ওঠে - "সেই কদ্দিন ঘরে আঁদা ভাত খাই না। দে বাসিনী বাগ্যতা করি তোয়"।

     বাসিনী কিন্তু উচ্ছবের আবেদনে সাড়া না দিয়েই চলে যায়। ইতিমধ্যে কত্তাবাবু মারা গেলে বাড়ীর ভাত ফেলে দেবার দায়িত্ব দেওয়া হয় উচ্ছবকে। সে ভাতের হাড়িটি নিয়ে নেয় নিজের জিম্মায়। ছুটে চলে যায় স্টেশনে। সেখানে বসে পাগলের মত দুহাতে ভাত খেতে থাকে সেমনে মনে খাইয়ে দেয় তার মৃতা স্ত্রী ও সন্তানদের বলতে থাকে - "চুন্নুরী রে!তুইও খাচুন্নুরীর মা খাওছোটো খোকা খাআমার মধ্যে বসে তোরাও খা! আঃ"। তারপর হাড়ির উপর মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে সে। পরদিন সকালে হাঁড়ি চুরির অপরাধে তাকে থানায় টেনে নিয়ে যাওয়া হয়।

     সবমিলে গল্পটি প্রকৃতির রোষে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া বাংলার জনৈক প্রান্তিক চাষীর হাহাকারের চিত্র অঙ্কন করেছে।ভাতের স্বপ্ন দিয়েই ঘটেছে এই কাহিনীর পরিসমাপ্তি। ভাতকে কেন্দ্র করেই মূল কাহিনী বিধৃত। গল্পের শেষে ভাত খাওয়ার এই আনন্দঘন অনুভূতি গল্পের সন্দর্ভস্থল হওয়ায় গল্পের নামকরণ সার্থক ও সুসংগত হয়েছে বলা যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

LightBlog

AdsG

close