বাংলা
ষষ্ঠ শ্রেণি
পূর্ণমান - ৫০
১. ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো :
১.১ 'ভবঘুরে' কবিতায় 'শুকনো খড়ের আঁটি' রয়েছে -
(ক) অশ্বত্থ গাছের নীচে
(খ) মাঠে
(গ) গোলাঘরে
(ঘ) নৌকোর খোলে
উত্তরঃ (ঘ) নৌকোর খোলে
১.২ 'তাকে আসতে বসবে কাল।' - আসতে বলা হয়েছে -
(ক) শংকর সেনাপতিকে
(খ) অভিমন্যু সেনাপতি
(গ) বিভীষণ দাশকে
(ঘ) পঞ্চানন অপেরার মালিককে
উত্তরঃ (খ) অভিমন্যু সেনাপতি
১.৩ "আকাশে নয়ন তুলে" দাঁড়িয়ে রয়েছে -
(ক) বুনো পাহাড়
(খ) মরুভূমি
(গ) প্রভাত সূর্য
(ঘ) পাইন গাছ
উত্তরঃ (ঘ) পাইন গাছ
১.৪ "যেতে পারি কিন্তু কেন যাব" - কাব্যগ্রন্থটির রচয়িতা -
(ক) নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
(খ) অরুণ মিত্র
(গ) শক্তি চট্টোপাধ্যায়
(ঘ) অমিয় চক্রবর্তী
উত্তরঃ (গ) শক্তি চট্টোপাধ্যায়
১.৫ পুর্ববঙ্গের মাহুতের ভাষায় 'মাইল' শব্দের অর্থ -
(ক) পিছনে যাও
(খ) সাবধান
(গ) বস
(ঘ) কাত হও
উত্তরঃ (খ) সাবধান
২. খুব সংক্ষেপে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
২.১ 'ও তো পথিকজনের ছাতা' - পথিকজনের ছাতা কোন্টি?
উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশটি কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী রচিত ভরদুপুরে কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।
পথিক জনের ছাতা বলতে অশত্থ গাছটিকে বোঝানো হয়েছে।
২.২ 'এখানে বাতাসের ভিতর সবসময় ভিজে জলের ঝাপটা থাকে।' - কেন এমনটি হয়?
উত্তরঃ উদ্ধৃত লাইনটির লেখক শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় রচিত শংকর সেনাপতি গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যে রয়েছে বঙ্গোপসাগর এবং বাতাসে তার ঢেউয়ের গুরু সব সময় উড়ে আসছে তাই এখানে বাতাসের ভিতর সব সময় ভিজিয়ে জলের ঝাপটা থাকে।
২.৩ 'মন-ভালো-কার' কবিতায় কবি রোদ্দুরকে কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?
উত্তরঃ মন ভালো করা কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় রোদ্দুরকে মাছরাঙ্গা পাখির গায়ের রং এর সঙ্গে তুলনা করেছেন।
২.৪ 'আমি কথা দিয়ে এসেছি' - কথক কোন্ কথা দিয়ে এসেছেন?
উত্তরঃ উদ্ভিদও নাইনটি কবি অরুণ মিত্র রচিত ঘাসফড়িং কবিতার থেকে নেওয়া হয়েছে।
কবি সবুজ ঘাস গুলোকে কথা দিয়ে এসেছেন যে তিনি আবার ভিজে ঘাসের উপর দিয়েই ফিরে আসবেন।
২.৫ ‘ভাদুলি’ ব্রত কখন উদ্যাপিত হয়?
উত্তর: ভাদুলি ব্রত বর্ষাকালের শেষের দিকে মেয়েরা করে থাকে। বৃষ্টির পরে আত্মীয় স্বজনদের সমুদ্রযাত্রা থেকে স্থলপথে নিজেদের বাসায় ফিরে আসার কামনায় তারা এই ব্রত করে। নদীর পাড়ে নানা আলপনা এঁকে, গান গেয়ে নদী মাতা কে জানায় তাদের প্রার্থনা।
২.৬ সন্ধ্যায় হাটের চিত্রটি কেমন?
উত্তর: কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত তার ‘হাট’ কবিতায় সন্ধ্যাবেলার বাস্তব চিত্রটুকু তুলে ধরেছেন। দূরের গ্রামগুলিতে প্রদীপ জ্বললেও হাট অন্ধকারে থেকে যায়। ক্লান্ত কাকের পাখনায় ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নেমে আসে। হাটের দোচালা দোকানগুলি যেন চোখ বুজে বিশ্রাম নেয়, শুধু শোনা যায় জীর্ণ বাঁশের বুকে বাতাসের ফুঁ তে ওঠা বিদ্রূপের সুর।
২.৭ কোন্ তিথিতে রাঢ়বঙ্গের কৃষিজীবী সমাজের প্রাচীন উৎসব গো-বন্দনা, অলক্ষ্মী বিদায়, কাঁড়াখুঁটা, গোৱুখুঁটা প্রভৃতি পালিত হয়?
উত্তর: কালীপূজা অর্থাৎ কার্তিকের অমাবস্যা তিথিতে রাঢ়বঙ্গের কৃষিজীবী সমাজের প্রাচীন উৎসব গো- বন্দনা,অলক্ষী বিদায়, কাঁড়াখুটা, গরুখুঁটা প্রভৃতি পালিত হয়। এই উৎসবের সময় সমস্ত ঘরদোর পরিষ্কার করে আলপনা দিয়ে সাজানো হতো।
২.৮ কেমন যেন চেনা লাগে ব্যস্ত মধুর চলা– কবি কার চলার কথা বলেছেন?
উত্তর: কবি অমিয় চক্রবর্তী তাঁর ‘পিঁপড়ে’ কবিতায় ছোট ছোট পিঁপড়েদের চলার কথা বলেছেন। পিঁপড়ে গুলোর নিজেদের মধ্যে কথা না বলে, ব্যস্ত ভাবে সারি দিয়ে চলা- কবির মনে মুগ্ধতার সৃষ্টি করে।
২.৯ ‘সে বাড়ির নিশানা হয়েছে আমগাছটি’ ‘‘ফাকি’ গল্পে গোপালবাবু কীভাবে তাঁর বাড়ির ঠিকানা জানাতেন?
উত্তর: ‘ফাঁকি’ গল্পে আমরা দেখতে পাই গোপাল বাবুকে কেউ তার বাড়ির ঠিকানা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলতেন- কাঠজোড়ি নদীর ধার বরাবর পুরীঘাট পুলিশের ফাঁড়ির পশ্চিমদিকে যেখানে পাঁচিলের মধ্যে আমগাছ দেখবেন- সেইখানে আমাদের বাড়ি। এভাবেই আমগাছটি তাদের বাড়ির নিশানা বা ল্যান্ডমার্ক হয়ে উঠেছিল।
২.১০ তুমি যে কাজের লোক ভাই! ওইটেই আসল’ কে, কাকে, কখন একথা বলেছিল?
উত্তর: ‘তুমি যে কাজের লোক ভাই! ওই টেই আসল’- এই কথাটি ঘাসের পাতা- পিঁপড়ে কে বলেছিল।বৃষ্টি কমে এলে, পিঁপড়েটি তার প্রাণ বাঁচানোর জন্য ঘাসের পাতাটিকে ধন্যবাদ জানালে সেই সময় ঘাসের পাতা কথাটি বলেছিল।
৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
৩.১ 'দাঁড়ায়ে রয়েছে পামগাছ মরুতটে।' - কে এমন স্বপ্ন দেখে? কেন সে এমন স্বপ্ন দেখে?
উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশটি কবি হাইনরিখ হাইনে রচিত পাইন দাঁড়িয়ে আকাশে নয়ন তুলি কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।
উত্তরে মগ্ন পাহাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা পাইন গাছ টিমর উঠে দাঁড়িয়ে থাকা পাম গাছটির স্বপ্ন দেখে।
পাইন গাছ সারাবছর পাহাড়ের ঠান্ডা মেজাজে থাকে। সেখানে সব সময় বরফ ঢাকা থাকে। কিন্তু পাইন গাছের ইচ্ছে সে মরুভূমির উপরে দাঁড়িয়ে থাকবে। তাই সে এমন স্বপ্ন দেখে।
৩.২ '...তাই তারা স্বভাবতই নীরব।' - কাদের কথা বলা হয়েছে? তারা নীরব কেন?
উত্তরঃ প্রশ্নে উল্লেখিত লাইনটি সুবিনয় রায়চৌধুরী রচিত পশু পাখির ভাষা প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে।
জঙ্গলের পশুরা সাধারণতঃ নীরব তাই তাদেরকে এখানে উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্যাস্টিং সাহেব প্রায় 40 বছর বন্য জন্তুর সঙ্গে থেকেছেন। খাঁচার এবং জঙ্গলের অর্থাৎ পোশাক এবং বুনো এই দুই অবস্থার জন্তুদের সঙ্গে তার আলাপ-পরিচয়ের নানা সুযোগ ঘটেছিল। পোষা জন্তু রানা কি জঙ্গলের পশুদের থেকে অনেক বেশি চেঁচামেচি করে। তাছাড়া জঙ্গলের পশু সর্বদায় প্রাণ বাঁচিয়ে চলতে হয় তাই জঙ্গলের পশুরা স্বভাবতই নীরব থাকতে পছন্দ করে।
৩.৩ 'এরা বাসা তৈরি করবার জন্য উপযুক্ত স্থান খুঁজতে বের হয়।' - উপযুক্ত স্থান খুঁজে নেওয়ার কৌশলটি 'কুমোরে-পোকার বাসাবাড়ি' রচনাংশ অনুসরণে লেখো।
উত্তরঃ উর্দিতে অংশটি লেখক গোপাল চন্দ্র ভট্টাচার্য রচিত কুমোরে পোকার বাসাবাড়ি গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
ডিম পাড়ার সময় হলেই এরা বাসা তৈরি করার জন্য উপযুক্ত স্থান খুঁজতে বের হয়। 2- 4 দিন ঘুরে ফিরে মন মত কোন স্থান দেখতে পেলেই তার আশেপাশে বারবার ঘুরে বিশেষভাবে পরীক্ষা করে দেখে। তারপর খানিক দূরে গিয়ে আবার ফিরে আসে এবং স্থানটিকে বারবার দেখে নেয়। দুই-তিনবার এরূপভাবে এদিক ওদিক করে অবশেষে কাদামাটির সন্ধানে বের হয়।
৩.৪ 'ধানকাটার পর একেবারে আলাদা দৃশ্য।' - 'মরশুমের দিনে' গদ্যাংশ অনুসরণে সেই দৃশ্য বর্ণনা করো।
উত্তরঃ ধান কাটার পাওয়ার মাঠের যতদূর দৃষ্টি যায়, চোখে পড়ে রুক্ষ মাটির শুকনো ও কঙ্কালসার চেহারা। আলগুলি বুকের পাঁজরের মত। রোদের দিকে তাকানো যায়না। গরুর গাড়ির চাকায়, মানুষের পায়ে মাটির ডেলা গুঁড়ো হয়ে রাস্তায় হয়েছে আর সেই গুলো কখনো ঘূর্ণিঝড়ে বা দমকা হাওয়ায় উড়ে এসে চোখে মুখে ভরে যায়। বেলা বাড়তেই মাটি গরম হয়ে ওঠে। যারা মাঠে যায়, তারা তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরে। পুকুর, নদী, খাল, বিল শুকিয়ে যায়। রাখালেরা ছড়ি-পাঁচন হাতে বট-অশ্বখ, আম-কাঁঠালের ছায়ায় ঘোরে, যেখানে হাতের কাছে একটু জল পাওয়া যায়।
৩.৫ দিন ও রাতের পটভূমিতে হাটের চিত্র 'হাট' কবিতায় কীভাবে বিবৃত হয়েছে তা আলোচনা করো।
উত্তরঃ কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের 'হাট' কবিতায় হাটের দিন ও রাতের চিত্র তুলে ধরেছেন। হাট বসার আগে সেখানে কোনো লোকজন থাকে না। সকালে সেখানে ঝাঁটও দেয় না। দিনের বেলায় সেখানে চেনা-অচেনা কত মানুষের ভিড়। জিনিসপত্র পছন্দ করা, দরদাম করা, কানা কড়ি নিয়ে কত টানাটানি। অবশেষে বিকেল বেলায় অবিক্রিত পসরা অল্প দামে বিক্রি হয়ে যায়। তারপর কেউ লাভ করে ঘরে ফেরে কেউ বা লোকসান করে খালি হাতে ঘরে ফিরে আসে। হাত ভাঙ্গার পর সবাই একে একে ঘরে ফেরে। সন্ধ্যা সময় ওখানে কেউ প্রদীপ জ্বালাই না। হাটখানি অন্ধকারে পড়ে থাকে। একটি কাকের কা-কা ডাকে নির্জন হাটের বুকে রাত্রি নামে। রাত্রিতে সেখানে নীরবতা।
৩.৬ 'মাটির ঘরে দেয়ালচিত্র' রচনায় সাঁওতালি দেয়ালচিত্রের বিশিষ্টতা কীভাবে ফুটে উঠেছে?
উত্তরঃ মূলত আদিবাসী সমাজের চিত্র অঙ্কনের চল আছে। দেওয়াল চিত্রের বৈশিষ্ট্য গুলি নিম্নরূপ-
(১) মেয়েরা এই চিত্র অঙ্কন করে। (২) বিষয়বস্তু নির্বাচন ও উপাদান সংগ্রহ তারাই করে। (৩) দেওয়াল চিত্র গুলি অস্থায়ী। (৪) আশ্বিনের দুর্গাপূজা ও কার্তিকের অমাবস্যায় উপলক্ষ করে দেয়াল চিত্র আঁকা হয়।(৫) লালচে গিরিমাটি বা কখনো দুধে মাটি উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। (৬) বিচিত্র বর্ণের সমাবেশ লক্ষ্য করা যায়।(৭) সচিত্র সর্বদা প্রকাশ্য স্থানে অঙ্কন করা হয়। (৮) লতাপাতা, ফুল, পাখি এসব দেয়ালচিত্রে উপস্থাপিত হয়।
৩.৭ 'পিঁপড়ে' কবিতায় পতঙ্গটির প্রতি কবির গভীর ভালোবাসার প্রকাশ ঘটেছে। - আলোচনা করো।
উত্তরঃ 'পিঁপড়ে' কবিতায় পিঁপড়ের প্রতি কবির গভীর ভালবাসার প্রকাশ ঘটেছে। সারিবদ্ধ ছোট পিঁপড়ের চলাফেরার কবি গভীর আন্তরিকতার সঙ্গে লক্ষ্য করেছেন। আমাদের পরিবেশের চারিদিকে জাতীয় পিঁপড়ের সারি দেখা যায়। কবি তাদের লক্ষ্য করলেও তাদের চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করতে চাননি। কারণ তাদের কাউকে বিচ্ছিন্ন করে দিলে তারা কষ্ট পাবে। তাদের চলাফেরার মধ্যে কবির প্রাণের সদাচঞ্চল স্পন্দন অনুভব করেছেন। অল ভেবেছেন বড় বড় পশু পাখির মতো একটি প্রিয় মাত্র দুদিনের জন্য এই পৃথিবীকে ভালোবেসে, ভালোবাসা দিয়ে তাদের ভুবন গড়ে তোল।
৩.৮ 'ফাঁকি' গল্পের অন্যতম প্রধান চরিত্র একটি নিরীহ, নিরপরাধ আমগাছ।' - উদ্ধৃতিটি কতদূর সমর্থনযোগ্য?
উত্তরঃ লেখক রাজকিশোর পট্টনায়কের লেখা 'ফাঁকি' গল্পের কেন্দ্রবিন্দু এটি আম গাছ। গোপালের বাবার তৈরি একটি কমলে আম গাছের চারা গাছ বসানোর পর ধীরে ধীরে নিজের চেষ্টায় তা বেড়ে উঠেছিল এবং বিশাল জায়গা জুড়ে তার আভিজাত্য বিস্তার করেছিল। বাড়ির লোকজন যেমন প্রতি মুহূর্তে তার দেখাশোনা করত যেমন পাড়ার লোক বা ছেলেরাও তার নিচে খেলাধুলা, বই পড়া, গল্প করা, দোল খাওয়া আরম্ভ করেছিল। গাছের পাতা, ডান বৃত্তকার কাজের জিনিস হয়ে উঠেছিল। এইভাবে বিরাট আকারের এই গাছটি গোপালের বাড়ি নিশানায় পরিণত হয়। বাড়ির হাঁদা ছেলেকে যেমন সবাই আদর করে গায়ে হাত বোলায়, কেমন হয় গাছটির ফল ও গাছের পাতায় হাত বুলিয়ে বাড়ির অন্যরা যেন তার সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছিল।
একদিন আষাঢ়ের ঝরে গাছটি মারা গেলে শুধু গোপাল ভাঁড় বাড়ির লোকই নয়, পাড়ার সব লোক দুঃখ প্রকাশ করে পরে সবাই অবাক বিস্ময়ে দেখে গাছের একধার উইয়ে খেয়ে নিয়েছিল। গাছ এত করা সত্বেও তার একধার উইয়ে খেয়ে নিয়েছিল তার কারো নজরে পড়েনি যদি পরতো তাহলে গাছটি এই ভাবে মারা যেত না আমগাছটিকে নিরীহ, নিরপরাধ সমর্থনযোগ্য।
৩.৯ 'পৃথিবী সবারই হোক।' - এই আশীর্বাদ 'আশীর্বাদ' গল্পে কীভাবে ধ্বনিত হয়েছে?
উত্তরঃ দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের লেখা আশীর্বাদ গল্পে বক্তা হলো গাছের পাতা। গল্পে অনুযায়ী দিনের শেষে পিঁপড়েকে মাটির নিচে আশ্রয় নিতে হয় বলে উপরে বলেছিল সে মাটি শুধু তাদের কিন্তু পাপীকে বুঝিয়ে দিয়েছিল যে মাটি শুধু তার নয় সবার জন্যই। পাতার এই কথার মধ্যে দিয়ে এই পৃথিবীতে জীব জগতের প্রতিটি প্রাণীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই পৃথিবীর আলো-বাতাস, জল, মাটির ভোগ করার অধিকার সবার সমান।
৩.১০ '...... এমন অভূতপূর্ব অবস্থায় আমায় পড়তে হবে ভাবিনি’। – গল্পকথক কোন অবস্থায় পড়েছিলেন?
উত্তর: লেখক শিবরাম চক্রবর্তী রাঁচিতে হুড্রুর দিকে সাইকেল নিয়ে যাচ্ছিলেন কিন্তু পথে সাইকেলের টায়ার খারাপ হয়ে যাওয়ায় বাকি পাঁচ মাইল পথ অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর অবশেষে অন্ধকার সন্ধ্যায় ছোট্ট একটি বেবি অস্টিন গাড়ি দেখে তাড়াতাড়ি সেটাতে চেপে বসেন। গাড়িটি ধীরে ধীরে চলতে শুরু করে। লেখক গন্তব্যস্থল বলতে বলতে চমকে উঠেন– ড্রাইভার এর জায়গায় কেউ নেই! নিশ্চিত হন তিনি ভূতের পাল্লায় পড়েছেন। শীতেও তার ঘাম দেখা গেল। লেখক এই অবস্থার কথাই বর্ণনা করেছেন তাঁর গল্পে।
৪. নির্দেশ অনুসারে উত্তর দাও :
৪.১ বিসর্গসন্ধিতে বিসর্গ রূপান্তরিত হয়ে 'র' হচ্ছে - এমন দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ অহঃ + আহঃ = অহরহ
নিঃ + আকার = নিরাকার
৪.২ বিসর্গসন্ধিতে বিসর্গ লুপ্ত হয়ে আগের স্বরধ্বনিকে দীর্ঘ করেছে - এমন দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ চক্ষু + রত্ন = চক্ষূরত্ন
স্বঃ + রাজ্য = স্বারাজ্য
৪.৩ উদাহরণ দাও - জোড়বাঁধা সাধিত শব্দ, শব্দখন্ড বা শব্দাংশ জুড়ে সাধিত শব্দ।
উত্তরঃ
জোড়বাঁধা সাধিত শব্দ - পিতামাতা
শব্দখন্ড বা শব্দাংশ জুড়ে সাধিত শব্দ - ক্ষুদ্রতম
৪.৪ সংখ্যাবাচক ও পূরণবাচক শব্দের পার্থক্য কোথায়?
উত্তরঃ সংখ্যাবাচক ও পূরণবাচক শব্দের প্রধান পার্থক্যগুলি হলো -
প্রথমত, সংখ্যাবাচক শব্দ বিশেষ্য বা সর্বনামের সংখ্যা প্রকাশ করে ; এবং পূরণবাচক শব্দ শুধুমাত্র সংখ্যাগত ক্রমিক অবস্থান প্রকাশ করে।
দ্বিতীয়ত, সংখ্যাবাচক শব্দগুলি হলো মূল শব্দ ; আর পূরনবাচক শব্দগুলি সংখ্যাবাচক শব্দ থেকে সৃষ্টি হয়েছে।
৫. নীচের অনুসারে উত্তর দাও :
৫.১ শব্দজাত, অনুসর্গগুলিকে বাংলায় কয়টি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় এবং কী কী?
উত্তর: শব্দজাত অনুসর্গগুলি নাম অনুসর্গ ও বিশেষ্য অনুসর্গ – নামেও পরিচিত। এই অনুসর্গ গুলিকে বাংলায় তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়। সেগুলি হল—-
(1)সংস্কৃত বা তৎসম অনুসর্গ
(2)বিবর্তিত, রুপান্তরিত বা তদ্ভব অনুসর্গ
(3)বিদেশি অনুসর্গ
৫.২ উপসর্গের আরেক নাম ‘আদ্যপ্রত্যয়’ কেন?
উত্তর: আদ্য শব্দের অর্থ হলো– আদিতে বা প্রথমে। প্রত্যয় কথার অর্থ হল– মূল শব্দের সঙ্গে যে শব্দাংশ যুক্ত হয়ে নতুন নামপদ তৈরি করে। মূল শব্দের আদিতে বা প্রথমে বসে যে প্রত্যয় শব্দটির অর্থ বদলে দেয় তাকে আদ্যপ্রত্যয় বলে। উপসর্গের কাজটিও সেই রকম। — তাই উপসর্গের আরেক নাম আদ্যপ্রত্যয়।
৫.৩ ‘ধাতুবিভক্তি’ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: ক্রিয়াপদের মূল অংশকে ধাতু বলে। এই ধাতুর সঙ্গে বিভক্তি যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গড়ে তুললে সেটিকে আমরা ধাতুবিভক্তি বলি। যেমন : ‘কর’ ধাতুর সঙ্গে ‘এ’ বিভক্তি যুক্ত হয়ে— ‘করে’ ধাতু বিভক্তির সৃষ্টি করেছে।
৫.৪ শব্দযুগলের অর্থপার্থক্য দেখাও : আশা / আসা, সর্গ/ স্বর্গ
উত্তর: আশা শব্দের অর্থ : ভরসা, আকাঙ্ক্ষা
আসা শব্দের অর্থ: আগমন করা
সর্গ শব্দের অর্থ: অধ্যায়, গ্রন্থের পরিচ্ছেদ
স্বর্গ শব্দের অর্থ: দেবলোক
৫.৫ পদান্তর করো: জগৎ, জটিল
উত্তর: জগৎ:- জাগতিক
জটিল:- জটা
৬. অনধিক ১০০ শব্দে অনুচ্ছেদ রচনা করো :
বাংলার উৎসব
ভূমিকাঃ
উৎসব মানবজীবনে প্রাণচঞ্চল আনন্দময়তার অভিব্যক্তি। কেবল অন্ন-বস্ত্র সংস্থানেই মানবজীবনে সার্থকতা আসে না। তার জীবনে চাই অবাধ মুক্তির আনন্দ। সে আনন্দ লাভের একটি উপায় উৎসব ও মানব সম্মিলন।
বাংলার সামাজিক উৎসবঃ
বাঙালিরা সামাজিক উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে মিলন ও আদান প্রদানের ভূমিকাকে গড়ে তোলে। বাঙালিরা যে সমস্ত সামাজিক উৎসব পালন করে তা হল বিবাহ অন্নপ্রাশন, জন্মদিন পালন, জামাইষষ্ঠী, ভাইফোঁটা ইত্যাদি।
বাংলার ধর্মীয় উৎসবঃ
হিন্দু বাঙালি , বাঙালি মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, শিক প্রভৃতি ধর্মালম্বী মানুষদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান বিভিন্ন রকমের। বাঙালি মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব গুলি হল যেমন ঈদ উল ফিতর, ঈদ উল আযহা, মহররম ইত্যাদি। বাঙালি হিন্দুরা যে সমস্ত ধর্মীয় উৎসব পালন করে তার মধ্যে হল দুর্গা পূজা, সরস্বতী পুজো, বাসন্তী পুজো, জন্মাষ্টমী, কালীপুজো, বিশ্বকর্মা পুজো, শিবের গাজন ইত্যাদি। খ্রিষ্টানরা বড়দিন ও গুড ফ্রাই ডে পালন করে বৌদ্ধরা বুদ্ধ পূর্ণিমা ও শিকদের গুরু নানকের জন্মদিন।
বাংলার লোক উৎসবঃ
বাঙালির জীবন ধারার সঙ্গে অনেক রকমের লোক উৎসব এর প্রচলন আছে। বাঙালিরা অজ্ঞান মাসে ধান উঠার সময় নবান্ন উৎসব খুব আনন্দের সহিত পালন করে। এছাড়া বাঙালিরা যে সমস্ত লোক উৎসব পালন করে সেগুলি হল ভাদু, টুসু ইত্যাদি।
উপসংহারঃ
যতই কৃত্রিমতা চেপে বসুক না কেন বাঙালি আজও উৎসব মুখর থাকতেই ভালোবাসে। তাই আজও নতুন প্রজন্ম অনেক হারিয়ে যাওয়া উৎসব নতুন করে পালন করছে। লাইট,প্যান্ডেল,প্রতিমা নির্মাণ প্রতিযোগিতা চলে তার মধ্যেও বাঙালির শিল্প ভান্ডারের পরিচয় পাওয়া যায়।কর্মব্যস্ত মানুষ | আজকাল উৎসবের দিনগুলোতে কাছ থেকে দূরে থাকতে চাই। আর ফিরে আস্তে চাই নিজ ভুমিতে ।
Pdf dile vlo hoy
উত্তরমুছুনJol for kothar arto ki
উত্তরমুছুন