ন্যায়সম্মত প্রত্যক্ষের লক্ষণ - WB Class 11 New Syllabus Philosophy Suggestion 2025 - Chapter 5
ন্যায়সম্মত প্রত্যক্ষের লক্ষণ
"নিয়তি অনেন ইতি ন্যায়া" - অর্থাৎ ন্যায়। যার দ্বারা বুদ্ধি মীমাংসায় উপনীত হয় তাকে বলে ন্যায় দর্শন। এই দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা হলেন মহর্ষি গৌতম। অন্বিক্ষা বা অনুমানকে ভিত্তি করে এই দর্শন গড়ে উঠেছে বলে একে অন্বিশিক্ষি দর্শনও বলা হয়। ন্যায় দার্শনিকরা প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শব্দকে প্রমাণ স্বীকার করে।
প্রত্যক্ষ
"ইন্দ্রিয়ার্থে সন্নিকর্ষ জন্যম, জ্ঞানম্ প্রত্যক্ষণ" অর্থাৎ ইন্ডিয়ার সাথে বিষয়ের সন্নিকর্ষ এর ফলে আমাদের যে জ্ঞান হয় তাকে বলে প্রত্যক্ষ। সন্নিকর্ষ কয় প্রকার, যথা -
সংযোগ সন্নিকর্ষ : - দ্রব্য - দ্রব্য
সমবায় সন্নিকর্ষ : - দ্রব্য - দ্রব্যের গুণ
সংযুক্ত সমবায় সন্নিকর্ষ : - দ্রব্য - দ্রব্য - দ্রব্যের গুন
সমবেত সমবায় সন্নিকর্ষ : - দ্রব্য - দ্রব্যের গুন - গুণের ভাব
সংযুক্ত সমবেত সমবায় সন্নিকর্ষ : - দ্রব্য - দ্রব্য - দ্রব্যের গুন - গুণের ভাব
বিশেষ্য বিশেষণ ভাব সন্নিকর্ষ : - ভূতলে ঘটের অভাব
প্রত্যক্ষকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা - লৌকিক প্রত্যক্ষ ও অলৌকিক প্রত্যক্ষ। ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে সরাসরি যে প্রত্যক্ষ করা হয় তাকে বলে লৌকিক প্রত্যক্ষ। ইন্দ্রিয়ের সাহায্য ছাড়াই যে প্রত্যক্ষ করা হয় তাকে বলে অলৌকিক প্রত্যক্ষ। লৌকিক প্রত্যক্ষকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা - বাহ্য লৌকিক প্রত্যক্ষ ও মানস লৌকিক প্রত্যক্ষ। বাহ্য ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে প্রত্যক্ষ করা হয় তাকে বাহ্য লৌকিক প্রত্যক্ষ বলে। আর মানস ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে যে প্রত্যক্ষ করা হয় তাকে মানস লৌকিক প্রত্যক্ষ বলে। বাহ্য প্রত্যক্ষ আবার পাঁচ প্রকার। যথা - চাক্ষুষ, শ্রোবণ, নাসিক্ব, রাসন, এবং স্পর্শন।
অলৌকিক প্রত্যক্ষ তিন প্রকার। যথা -
সামান্য লক্ষণ প্রত্যক্ষ : প্রতিটি বস্তুর একটি সামান্য লক্ষণ বা সাধারণ বৈশিষ্ট্য থাকে। এই সামান্য লক্ষণ এর সাহায্যে যখন বস্তুকে জানা যায় তখন তাকে সামান্য লক্ষণ প্রত্যক্ষ বলে। যেমন - গোত্ব দেখে গরুকে চেনা।
জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ : বস্তুর নির্দিষ্ট ইন্দ্রিয়ের সাহায্য ছাড়াই অন্য কোন ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে বস্তুর গুণকে প্রত্যক্ষ করা হলে তাকে জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। যেমন - দূরে থেকে বরফের কাঠিন্যতাকে প্রত্যক্ষ করা।
যোগজ প্রত্যক্ষ : যোগের মাধ্যমে যে প্রত্যক্ষ করা হয় তাকে যোগস প্রত্যক্ষ বলে। যেমন - যোগীদের অতীত ভবিষ্যৎ ও সূক্ষ্ম পদার্থের প্রত্যক্ষ হল যোগস প্রত্যক্ষ। যোগীরা যোগ অভ্যাস করেন। এর ফলে তারা অলৌকিক শক্তির অধিকারী হন।
** বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
(১) ভূতলে ঘটাভাব প্রত্যক্ষ কোন্ ধরনের সন্নিকর্ষ?
(ক) বিশেষ্য-বিশেষণ ভাব সন্নিকর্ষ
(খ) সংযুক্ত - সমবায় সন্নিকর্ষ
(গ) সংযোগ সন্নিকর্ষ
(ঘ) সমবায় সন্নিকর্ষ
(২) মহর্ষি গৌতমের অপর নাম কী?
(ক) বেদব্যাস
(খ) অক্ষপাদ
(গ) ঔসুক্য
(ঘ) জৈমিনি
(৩) ন্যায় মতে যথার্থ অনুভবকে কী বলা হয়?
(ক) অপ্রমা
(খ) স্মৃতি
(গ) অনুভব
(ঘ) প্রমা
(৪) ন্যায় মতে সন্নিকর্ষ কয়প্রকার?
(ক) দুই
(খ) তিন
(গ) চার
(ঘ) ছয়
(৫) মহর্ষি বাৎস্যায়নের ভাষ্যগ্রন্থটি হল -
(ক) বেদান্তভাষ্য
(খ) মীমাংসাভাষ্য
(গ) ন্যায়ভাষ্য
(ঘ) যোগভাষ্য
(৬) অন্বীক্ষিকী দর্শন বলা হয় -
(ক) ন্যায়দর্শনকে
(খ) বেদান্তদর্শনকে
(গ) বৈশেষিকদর্শনকে
(ঘ) মীমাংসাদর্শনকে
(৭) মানুষ দেখে মনুষ্যত্বের প্রত্যক্ষকে বলা হয় -
(ক) সামান্য লক্ষণ প্রত্যক্ষ
(খ) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ
(গ) যোগজ লক্ষণ প্রত্যক্ষ
(ঘ) লৌকিক প্রত্যক্ষ
(৮) বরফ দেখে ঠান্ডার অনুভূতিকে বলা হয় -
(ক) সামান্য লক্ষণ
(খ) জ্ঞান লক্ষণ
(গ) যোগজ লক্ষণ
(ঘ) সাধারণ লক্ষণ
(৯) যে প্রত্যক্ষ সরাসরি সন্নিকর্ষের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, তাকে বলে -
(ক) লৌকিক প্রত্যক্ষ
(খ) অলৌকিক প্রত্যক্ষ
(গ) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ
(ঘ) যোগজ প্রত্যক্ষ
(১০) যে প্রত্যক্ষ পরোক্ষ সন্নিকর্ষের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, তা হল -
(ক) লৌকিক প্রত্যক্ষ
(খ) সবিকল্পক প্রত্যক্ষ
(গ) নির্বিকল্পক প্রত্যক্ষ
(ঘ) অলৌকিক প্রত্যক্ষ
(১১) জ্ঞানলক্ষণ সন্নিকর্ষ যার প্রকার তা হল -
(ক) লৌকিক প্রত্যক্ষ
(খ) অলৌকিক প্রত্যক্ষ
(গ) সবিকল্পক প্রত্যক্ষ
(ঘ) নির্বিকল্পক প্রত্যক্ষ
(১২) একই সঙ্গে প্রমা ও প্রমাণ কারণ হল -
(ক) প্রত্যক্ষ
(খ) অনুমান
(গ) শব্দ
(ঘ) উপমান
(১৩) ভারতীয় দর্শনে মিতি শব্দের অর্থ হল -
(ক) জ্ঞান
(খ) জ্ঞানের কর্তা
(গ) জ্ঞানের বিষয়
(ঘ) জ্ঞানের উদ্দেশ্য
(১৪) চক্ষু-ইন্দ্রিয়ের দ্বারা ঘটের লাল রঙ প্রত্যক্ষের কোন্ সন্নিকর্ষ হয়?
(ক) সংযোগ-সন্নিকর্ষ
(খ) সমবায়-সন্নিকর্ষ
(গ) সংযুক্ত-সমবায় সন্নিকর্ষ
(ঘ) সমবেত-সমবায় সন্নিকর্ষ
(১৫) ন্যায় মতে অলৌকিক সন্নিকর্ষ হল -
(ক) পাঁচটি
(খ) তিনটি
(গ) দুটি
(ঘ) ছয়টি
(১৬) ন্যায়দর্শনের ভাষ্যকার হলেন মহর্ষি -
(ক) গৌতম
(খ) বাৎস্যায়ন
(গ) কপিল
(ঘ) গঙ্গেশ
(১৭) ন্যায়দর্শনে সন্নিকর্ষ শব্দের অর্থ হল -
(ক) সংযোগ
(খ) বিযোগ
(গ) অনুমান
(ঘ) শব্দ
(১৮) লোহাকে দেখে তার কাঠিন্য প্রত্যক্ষ করাকে বলা হয় -
(ক) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ
(খ) সামান্য প্রত্যক্ষ
(গ) যোগজ প্রত্যক্ষ
(ঘ) এদের কোনোটিই নয়
(১৯) গুণযুক্ত বস্তুর প্রত্যক্ষকে বলা হয় -
(ক) প্রত্যক্ষ
(খ) নির্বিকল্পক প্রত্যক্ষ
(গ) সবিকল্পক প্রত্যক্ষ
(ঘ) শব্দ প্রত্যক্ষ
(২০) যোগজ প্রত্যক্ষের বিষয়টি হল -
(ক) সাধারণ লোকের
(খ) যোগীদের
(গ) যুজ্ঞানদের
(ঘ) যোগী ও যুজ্ঞানদের
(২১) শব্দত্ব জাতি প্রত্যক্ষে যে ধরনের সন্নিকর্ষ হয় তা হল -
(ক) সংযোগ
(খ) সমবায়
(গ) সনবেত সমবায়
(ঘ) সংযুক্ত সমবায়
(২২) সংযোগ সন্নিকর্ষ যার প্রকার তা হল -
(ক) লৌকিক প্রত্যক্ষ
(খ) অলৌকিক প্রত্যক্ষ
(গ) সামান্য লক্ষণ প্রত্যক্ষ
(ঘ) যোগজ লক্ষণ প্রত্যক্ষ
উত্তরসহ পিডিএফ (PDF) পেতে এইখানে ক্লিক করুন ঃ ন্যায়সম্মত প্রত্যক্ষের লক্ষণ
অন্যান্য অধ্যায় একত্রে দেখতে ঃ Click Here...
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ