বাড়ির কাছে আরশীনগর
লালন ফকির
(১) নিচের বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
১.১ পড়শিকে কবি যতদিন দেখেছেন - কোনোদিন দেখেননি
১.২ "আমার বাড়ির কাছে আরশিনগর" - এখানে বাড়ি বলতে বোঝানো হয়েছে - কবির দেহভান্ড
১.৩ "গ্রাম বেড়িয়ে অগাধ পানি" - এখানে বেড়িয়ে শব্দের অর্থ - বেষ্টন করে
১.৪ "ও তার নাই কিনারা" - এই কিনারা না থাকা যার ইঙ্গিত দেয়, তা হল - সীমানাহীন বিষয়বাসনা
১.৫ "ও সে ক্ষণেক থাকে শূন্যের উপর" - এই শূন্য যার ইঙ্গিত দেয়, তা হল - দারিদ্র্য
১.৬ "যম-যাতনা সকল যেত দূরে" - যম-যাতনা হল - পার্থিব দুঃখ-শোক
১.৭ "সে আর লালন একখানে রয়" - এই সে হল - কবির পড়শি
১.৮ বাড়ির কাছে আরশীনগর কবিতাটির উৎস হল - লালন গীতিকা
১.৯ 'পড়শি' শব্দের অর্থ হল - প্রতিবেশী
(২) নিচের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
২.১ "ক্ষণেক থাকে শূন্যের উপর" - এই শূন্য আসলে কী?
উত্তরঃ লালন ফকির রচিত রাড়ির কাছে আরশীনগর নামক কবিতায় "ক্ষণেক থাকে শূন্যের উপর" - এই উদ্ধৃতাংশের শূন্য হল বস্তুজাগতিক চাহিদামুক্ত অবস্থা।
২.২ "আমার যম-যাতনা যেত দূরে" - যম-যাতনা শব্দবন্ধটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ যম-যাতনা শব্দবন্ধটির দ্বারা কবি মৃত্যুকালীন যন্ত্রণাকে বুঝিয়েছেন।
২.৩ "তবু লক্ষ যোজন ফাঁক রে" - এই লক্ষ যোজন ফাঁক-এর অর্থ কী?
উত্তরঃ এই লক্ষ যোজন ফাঁক-এর অর্থ হল গুরু বা ঈশ্বর কিংবা মনের মানুষের সঙ্গে মিলনের সীমাবদ্ধতা। অনুভূতির গভীরবস্তুরে বিষয়বাসনা বিসর্জন না দিলে তাঁকে ছোঁয়া যায় না।
২.৪ কবি এই অগাধ পানি পার করতে পারছেন না কেন?
উত্তরঃ কবি এই অগাধ পানি পার করতে পারছেন না কারণ পার করার মাধ্যম ও পন্থা কবির জানা নেই।
২.৫ কবির মনের মানুষের হাত-পা-মাথা নেই কেন?
উত্তরঃ কবির মনের মানুষের হাত-পা-মাথা নেই কারণ তিনি পরমাত্মা বা প্রকৃত ঈশ্বর। অন্তরের অধিবাসী ঈশ্বরের কোনো আকার-আকৃতি হয় না।
২.৬ "আবার সে তার লালন একখানে রয়" - একখানে বলতে কোন্খানের কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ লালন ফকির রচিত বাড়ির কাছে আরশীনগর নামক কবিতা বা বাউল গান থেকে উদ্ধৃত অংশে একখানে বলতে কবি একই দেহাবয়ব বা শরীরের মধ্যে বাস করাকে বুঝিয়েছেন।
২.৭ "ক্ষণেক ভাসে নীরে" - নীরে ভাসার কারণ কী?
উত্তরঃ লালন ফকির রচিত বাড়ির কাছে আরশীনগর নামক কবিতা বা বাউল গানে নীরে বা জলে ভাসার তাৎপর্য হল বিষয়বাসনায় মানুষের সাময়িক কাতর হয়ে পড়া।
See More : Full Class 11 Bengali Suggestion 2023
(৩) নিচের রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
প্রশ্নঃ "তবু লক্ষ যোজন ফাঁক রে" - লক্ষ যোজন ফাঁক বলতে কবি কি বুঝিয়েছেন?
উত্তরঃ ললন ফকিরের বাড়ির কাছে আড়শিনগর কবিতা অনুযায়ী মনের ভিতরে যে ঈশ্বরের অবস্থান, তাঁকে খুঁজে পাওয়াই হল আত্মতত্ত্ব। এই আত্মতত্ত্বের সন্ধান পাওয়া বা আত্মদর্শন হওয়া খুব সহজসাধ্য নয়, কেবল মনে নিষ্ঠা হলে শুধুমাত্র সত্যের মাধ্যমে তাঁর ঠিকানা মিলবে। কিন্তু মানুষ ধর্মগ্রন্থের মধ্যেই কেবল ঈশ্বরকে খোঁজে, নিজেকে যথার্থরূপে চেনা তার আর হয়ে ওঠে না। আপন ঘর না বুঝে বাইরে খুঁজে তারা আসলে ধাঁধায় পড়ে যায়, তাদের সত্যদৃষ্টি আচ্ছন্ন হয়ে যায়। সম্পদবাসনা বা স্বার্থপরতা ত্যাগ না করলে মনের মানুষ বা পরমপুরুষের সন্ধান পাওয়া যায় না। আত্মনিবেদন আর আত্মুনুসন্ধানের ব্যর্থতায় মনের মানুষের খোঁজ পাওয়া যায় না। কবির কথায় মন রূপ গ্রামকে বেষ্টন করে আছে বিষয়বাসনারূপ অগাধ পানি - যা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সঙ্গে সাধকের মিলনের পথে প্রবল বাঁধা হয়ে দাঁড়াই।
লালন আর তাঁর পড়শীর মধ্যে তৈরি হয় লক্ষ যোজন দূরত্ব। ঈশ্বর চিরকাল ধরেই বিশ্বব্যাপী, আমাদের অত্যন্ত নিকটে, আমাদের হৃদয়েই তাঁর অবস্থান, তা সত্ত্বেও তিনি বিষয়ী মানুষের পার্থিববাসনার পর্দার আড়ালেই চিরকাল ঢাকা পড়ে যায়। তাই একই জায়গায়, বসবাস করলেও উভয়ের মধ্যে রয়ে যায় লক্ষ যোজন দূর।
প্রশ্নঃ বাড়ির কাছে আড়শীনগর বলতে কবি কি বুঝিয়েছেন?
উত্তরঃ আরশি শব্দের অর্থ আয়না। কিন্তু লালন তাঁর গানে আরশীনগর বলতে মনকে বুঝিয়েছেন। কারণ, মনের মধ্যেই চারপাশের জগৎ প্রতিফলিত হয়। সেখানে এক পড়শির অস্তিত্বকে খুঁজে পেয়েছেন কবি। এই পড়শিই হল বাউল সাধনার ঈশ্বর, যাঁকে তাঁরা মনের মানুষ বলে মনে করেন। কিন্তু বাউল সাধনায় এই পড়শির সন্ধান পাওয়া বা তাঁকে লাভ করা খুব সহজ নয়। যেখানে তিন আছেন, তার চারপাশে আছে অতি গভীর জলরাশি। মানুষের জাগতিক আশা-আকাঙ্ক্ষা ও বিষয়বাসনা ইত্যাদিকে এই এই জলরাশির প্রতীকে কবি বোঝাতে চেয়েছেন। সেই পড়শির কাছে যাওয়ার উপযুক্ত তরণি বা উপায় নেই। তার থেকেও বড়ো কথা, এই পড়শি বা আত্মতত্ত্ব-এর কোনো স্পষ্ট চেহারা হয় না, কারণ পড়শির হাত-পা-কাঁধ-মাথা কিছুই হয় না। অর্থাৎ বাউলদের ঈশ্বর যে নিরাকার এ কথার মধ্যদিয়েই লালন তাই বোঝাতে চেয়েছেন। অতএব সেই পড়শী শুধুই উপলব্ধির জগতে অবথান করেন। তাঁকে কখনও বোঝা যায়, কখনও বোঝা যায় না। অথচ তাঁর সন্ধান পেলেই মানুষের সব জীবনযন্ত্রণার অবসান ঘটত। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যে দূরত্ব তা ঘোচার নয়, কবির কথায় সে লক্ষ যোজনের দূরত্ব।
প্রশ্নঃ "আমি বাঞ্ছা করি দেখব তারি" - বক্তা কাকে দেখতে চান। কিভাবে তার দর্শন পাওয়া যাবে?
উত্তরঃ আরশি শব্দের অর্থ আয়না। কিন্তু লালন তাঁর গানে আরশীনগর বলতে মনকে বুঝিয়েছেন। কারণ, মনের মধ্যেই চারপাশের জগৎ প্রতিফলিত হয়। সেখানে এক পড়শির অস্তিত্বকে খুঁজে পেয়েছেন কবি। এই পড়শিই হল বাউল সাধনার ঈশ্বর, যাঁকে তাঁরা মনের মানুষ বলে মনে করেন। কিন্তু বাউল সাধনায় এই পড়শির সন্ধান পাওয়া বা তাঁকে লাভ করা খুব সহজ নয়। যেখানে তিন আছেন, তার চারপাশে আছে অতি গভীর জলরাশি। মানুষের জাগতিক আশা-আকাঙ্ক্ষা ও বিষয়বাসনা ইত্যাদিকে এই এই জলরাশির প্রতীকে কবি বোঝাতে চেয়েছেন। সেই পড়শির কাছে যাওয়ার উপযুক্ত তরণি বা উপায় নেই। তার থেকেও বড়ো কথা, এই পড়শি বা আত্মতত্ত্ব-এর কোনো স্পষ্ট চেহারা হয় না, কারণ পড়শির হাত-পা-কাঁধ-মাথা কিছুই হয় না। অর্থাৎ বাউলদের ঈশ্বর যে নিরাকার এ কথার মধ্যদিয়েই লালন তাই বোঝাতে চেয়েছেন। অতএব সেই পড়শী শুধুই উপলব্ধির জগতে অবথান করেন। তাঁকে কখনও বোঝা যায়, কখনও বোঝা যায় না। অথচ তাঁর সন্ধান পেলেই মানুষের সব জীবনযন্ত্রণার অবসান ঘটত। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যে দূরত্ব তা ঘোচার নয়, কবির কথায় সে লক্ষ যোজনের দূরত্ব।
See More : Full Class 11 Bengali Suggestion 2023
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ