LightBlog
সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার | স্বামী বিবেকানন্দ | একাদশ শ্রেণীর বাংলা সাজেশন ২০২৩ | WB Class 11 Bengali Suggestion 2023 WBCHSE
Type Here to Get Search Results !

সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার | স্বামী বিবেকানন্দ | একাদশ শ্রেণীর বাংলা সাজেশন ২০২৩ | WB Class 11 Bengali Suggestion 2023 WBCHSE

সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার

স্বামী বিবেকানন্দ

সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার | স্বামী বিবেকানন্দ | একাদশ শ্রেণীর বাংলা সাজেশন ২০২৩ | WB Class 11 Bengali Suggestion 2023 WBCHSE


(১) নিচের বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ

১.১ 'সুয়েজখালে ঃ হাঙ্গর শিকার' রচনায় রেড সি পার হয়ে স্বামীজিদের জাহাজ ভিড়েছিল যে বন্দরে, তা - সুয়েজ

১.২ 'জাহাজের পেছনে বড়ো বড়ো হাঙর ভেসে বেড়াচ্ছে' - এ খবর লেখক শুনলেন - সকালবেলায়

১.৩ "ওর মাংস লাল ও বড়ো সুস্বাদু" - মাছটির নাম - বনিটো

১.৪ 'সুয়েজখালেঃ হাঙ্গর শিকার' রচনায় প্রথম হাঙরটার নাম লেখক দিয়েছিলেন - বাঘা

১.৫ "আর কতগুলো ছোটো মাছ তার পিঠে, পায়ে, পেটে খেলে বেড়াচ্ছে।" - কোন্‌ মাছের কথা বলা হয়েছে? - হাঙর-চোষক

১.৬ "তার তো উৎসাহের সীমা নেই" - কার কথা বলা হয়েছে? - দ্বিতীয় শ্রেণির ফৌজি যাত্রীর কথা

১.৭ সুয়েজ বন্দরের প্রায় তিনদিকে রয়েছে - বালির ঢিপি আর পাহাড়

১.৮ 'সুয়েজখালে ঃ হাঙ্গর শিকার' রচনায় 'বিভীষণ মাছ' কাকে বলা হয়েছে? - হাঙরকে

১.৯ "কোথা থেকে জাহাজ খুঁজে একটি ভীষণ বড়শির জোগাড় করলে," কারণ - সে হাঙর শিকার করতে উৎসাহী

১.১০ "সকালবেলা খাবার-দাবার আগেই শোনা গেল।" - কী শোনা গেল? - জাহাজের পেছনে বড়ো বড়ো হাঙর ভেসে বেড়াচ্ছে

১.১১ "জাহজের পেছনে বড়ো বড়ো হাঙর ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছে।" - এ খবর লেখক কখন পান? - সকালে প্রাতরাশ করার আগেই

১.১২ কোন্‌ মাছ দেখে লেখকের হাঙরের বাচ্চা মনে হয়েছিল? - বনিটো

১.১৩ "হাঁকাহাঁকির চোটে আরব মিঞা চোখ মুছতে মুছতে উঠে দাঁড়ালেন।" - হাঁকাহাঁকির কারণ কী? - হাঙর ধরবার বৃহদাকৃতি কাঠের ফাতনাকে দূরে সরিয়ে দেবার অনুরোধের জন্য

১.১৪ সুয়েজ প্রাকৃতিক বন্দরটি কেমন ছিল? - তিনদিকে বালির ঢিপি আর পাহাড়

১.১৫ "এমন আর দুনিয়ায় কোথাও নাই" - কীসের কথা বলা হয়েছে? - সুয়েজ বন্দর আর সিডনির মতো হাঙ্গর

১.১৬ বনিটোর সঙ্গে হাঙরের কী পার্থক্য লেখক দেখেছিলেন?  - বনিটোর মতো দ্রুতগতি নয়, হাঙরের গদাইলশকরি চাল

১.১৭ "গতস্য শোচনা নাস্তি" - কথাটি কখন বলা হয়েছিল? - হাঙরের দেখা না পেলে

১.১৮ 'বাঘা' কার নাম ছিল? - বাঘের মতো কালো কালো ডোরাকাটা হাঙরের

১.১৯ "কিন্তু নেহাত হতাশ হবার প্রয়োজন নেই।" - কেন এ কথা বলা হয়েছে? - একটি হাঙর পালানোর পরে নতুন হাঙর আসছিল বলে

১.২০ "আগে যান ভগীরথ শঙ্খ বাজাইয়ে, পাছু যান গঙ্গা" - কোন্‌ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে? - থ্যাবড়ামুখো হাঙরের আগে বনিটোর চলাফেরা সম্পর্কে


(২) নিচের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ

২.১ "কাজেই দো-তরফা ছোঁয়াছুঁইয়ির ভয়।" - দুই তরফার কে কে?

উত্তরঃ উল্লিখিত দুই তরফের মধ্যে জাহাজের কর্মী-যাত্রী একতরফ আর বন্দরের মানুষজন আর-এক তরফ।

২.২ "ওঠাবার হুকুম নেই" - কার, কোথায় ওঠবার হুকুম নেই?

উত্তরঃ কোম্পানির এজেন্টের জাহাজে ওঠবার হুকুম নেই।

২.৩ "কিন্তু মিসরি আদমিকে ছুঁলেই আবার দশদিন আটক" - দশদিনই কেন?

উত্তরঃ প্লেগ-জীবানু শরীরে প্রবেশ করার খুব বেশি হলে দশম দিনে সে-রোগের উপসর্গ পুরোপুরি প্রকাশিত হয় বলেই 'দশ দিন' আটক থাকার কথা বলা হয়েছে।

২.৪ "কাজেই ধীরে ধীরে মাল নাবাতে সারাদিন লাগবে।" - কোথা থেকে কোথায় মাল নামানো হচ্ছিল?

উত্তরঃ জাহাজ থেকে সুয়েজ বন্দরে মাল নামানো হচ্ছিল।

২.৫ "কিন্তু সে আলো পরাতে গেলে," - কোন্‌ আলো, কোথায় পরানোর কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ জাহাজের সামনে বৈদ্যুতিক আলো পরানোর কথা বলা হয়েছে।

২.৬ "কাজেই রাতেও যাওয়া হবে না," - কেন রাতেও যাওয়া হবে না?

উত্তরঃ জাহাজকে রাতে চালাতে গেলে জাহাজের সামনে বৈদ্যুতিক আলো লাগানোর প্রয়োজন হলেও যেহেতু তা লাগাবে সুয়েজ-বন্দরে লোকজন। তাই প্লেগের ভয়ে রাতে জাহাজ চালানোর ব্যবস্থা করতে পারে না জাহাজ কর্তৃপক্ষ।

২.৭ "এটি বড়ো সুন্দর প্রাকৃতিক বন্দর" - কোন্‌টি?

উত্তরঃ সুয়েজ বন্দর খুবই সুন্দর একটি প্রাকৃতিক বন্দর।

২.৮ "সকালবেলা খাবার-দাবার আগেই শোনা গেল" - কী শোনা গেল?

উত্তরঃ সকালবেলায়, খাবার-দাবার আগেই শোনা গেল যে, জাহাজের পেছনে বড়ো বড়ো হাঙর ভেসে বেড়াচ্ছে।

২.৯ "মাঝে মাঝে এক একটা বড়ো মাছ..." - সেই মাছের চেহারা কেমন ছিল?

উত্তরঃ অনেকটা ইলিশ মাছের মতো চেহারা ছিল সেই বড়ো মাছটির।

২.১০ "মনে হল বুঝি উনি হাঙরের বাচ্চা।" - কার কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ বনিটো মাছকে হাঙরের বাচ্চা বলে মনে হল।

২.১১ "পূর্বে ওঁর বিষয় পড়া গেছলো বটে" - কার বিষয়ে?

উত্তরঃ লেখক স্বামী বিবেকান্দ বনিটো মাছের বিষয়ে পড়েছিলেন।

২.১২ "তার প্রত্যকে অঙ্গভঙ্গি দেখা যাচ্ছে।" - কেন সেটা সম্ভব হয়েছিল?

উত্তরঃ লোহিত সাগরের জল কাচের মতো স্বচ্ছ ছিল বলেই সেই জলে ঘুরে বেড়ানো বনিটো মাছের প্রত্যেকটি অঙ্গভঙ্গি প্রত্যক্ষ করতে পেরেছিলেন সুয়েজখাল হাঙ্গর শিকার রচনার লেখক স্বামী বিবেকানন্দ।

২.১৩ "ক্রমে তিতিবিরকক্ত হয়ে আসছি" - কতক্ষণ পর তিতিবিরক্ত হলেন স্বামী বিবেকানন্দ?

উত্তরঃ তিন কোয়ার্টার অর্থাৎ ঘন্টার সিকিভাগের তিনগুণ সময় পরে অর্থাৎ ৪৫ মিনিট পরে তিতিবিরক্ত হলেন সুয়েজখালে হাঙর শিকার রচনার লেখক স্বামী বিবেকানন্দ।

২.১৪ "দশ-বারোজন বলে উঠল" - কী বলে উঠল?

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দ রচিত সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার রচনায় আলোচ্য অংশে দশ-বারোজন বলে উঠেছিল, "এই আসছে ওই আসছে!"

২.১৫ "আর কতকগুলো ছোটো মাছ তার পিঠে গায়ে পেটে খেলে বেড়াচ্ছে" - কোন্‌ মাছ?

উত্তরঃ প্রশ্নে উল্লিখিত অংশে হাঙর-চোষক মাছের কথা বলা হয়েছে।

২.১৬ "তা বোধ হয় না।" - কী বোধ হয় না লেখকের?

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দ রচিত সুয়েজখাল হাঙ্গর শিকার রচনায় উল্লিখিত পাইলট ফিস বা আড়কাটি মাছ যে হাঙরের প্রসাদ নিতে বা পেতে বেশি সফল হয়, তা লেখকের বোধ হয় না।

২.১৭ "সেই জায়গাটা ওই মাছ, হাঙ্গরের গায়ে দিয়ে চিপসে ধরে" - কোন্‌ জায়গাটা?

উত্তরঃ চার ইঞ্চি লম্বা ও দুই ইঞ্চি চওড়া চ্যাপটা, গোল, জুলি-কাটা যে জায়গাটা হাঙর-চোষক মাছের বুকের কাছে থাকে, সেই জায়গার কথাই প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে বলা হয়েছে।

২.১৮ "এই মাছ একটা ছোটো হাতসুতোয় ধরা পড়ল।" - কোন্‌ মাছ?

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দ রচিত সুয়েজখাল হাঙর শিকার রচনায় উল্লিখিত হাঙর-চোষক মাছ ছোটো হাতসুতোয় ধরা পড়েছিল।

২.১৯ "তার তো উৎসাহের সীমা নেই।" - কার?

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দ রচিত সুয়েজখাল হাঙ্গর শিকার রচনাটিতে উল্লিখিত জাহাজের সেকেন্ড ক্লাসের যাত্রীদের মধ্যে যিনি ছিলেন ফৌজি লোক তাঁরই উৎসাহের সীমা ছিল না।

২.২০ "সে কুয়োর ঘটি তোলার ঠাকুরদাদা।" - সে বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দ রচিত সুয়েজখাল হাঙর শিকার রচনায় দ্বিতীয় শ্রেণির ফৌজি যাত্রীটি হাঙ্গর শিকারের উদ্দেশ্যে সারা জাহাজে খুঁজে যে ভীষণ আকৃতির বড়শি জোগাড় করেছিলেন "সে হল সেই বড়শিটিই।"

২.২১ "আমরা আসা পর্যন্ত চৌকি দিচ্ছিল," - আমরা বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ সুয়েজখাল হাঙর শিকার রচনায় সুয়েজ বন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা জাহাজের যাত্রী অর্থাৎ উল্লিখিত রচনাটির লেখক স্বামী বিবেকানন্দ ও তাঁর সহযাত্রীদের কথা এখানে বলা হয়েছে।

২.২২ "এক্ষণে তারা বড়ো বন্ধু হয়ে উঠল।" - কারা?

উত্তরঃ সুয়েজখাল হাঙর শিকার রচনায় সুয়েজ বন্দরে দাঁয়িয়ে থাকা জাহাজটিকে চৌকি দিতে জল-পুলিশের যে নৌকা জাহাজের নীচে দাঁড়িয়েছিল, সেই নৌকোর ওপর যে দুজন দিব্যি ঘুমোচ্ছিলেন, তাঁদের কথাই উদ্ধৃত অংশে বলা হয়েছে।

২.২৩ "ফাতনাটাকে তো দূর ফেললেন;" - কীভাবে?

উত্তরঃ সুয়েজখালে হাঙর শিকার রচনায় উল্লিখিত জনৈক আরবি পুলিশ নিশ্বাস ছেড়ে, প্রাণখোলা হাসি হেসে তারপর একটা বড়ো লতাডালের আগা দিয়ে ঠেলে ফাতনাটাকে দূরে ফেললেন।

২.২৪ "হাঙ্গরটা যে ভড়কে যাবে" - হাঙ্গরটা যাতে না ভড়কায় সেজন্য বক্তা কী করতে বলেছিলনে?

উত্তরঃ হাঙরটা যাতে না ভড়কায় সেজন্য বক্তা সাদা টুপিওয়ালা যাত্রীদের টুপিগুলো নামাতে বলেছিলেন।

২.২৫ "সোঁ করে সামনে এসে পড়লেন।" - এই আগমনের সঙ্গে লেখক কার তুলনা দিয়েছেন?

উত্তরঃ লেখক স্বামী বিবেকানন্দ হাঙরের সোঁ করে সামনে এসে পড়াকে পালতোলা নৌকার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

২.২৬ "কিন্তু নেহাত হতাশ হবার প্রয়োজন নেই" - হতাশ হবার কারণটা কী ছিল?

উত্তরঃ সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার রচনায় বাঘা নামক হাঙরটি টোপ গিলেও টানাটানি টোপটাকে উপরে দিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় জাহাজযাত্রীরা হতাশ হয়েছিলেন।

২.২৭ "সেও প্রাচীনবয়সসুলভ অভিজ্ঞতা সহকারে" - সে কে?

উত্তরঃ এখানে সে হল থ্যাবড়ামুখো দ্বিতীয় হাঙরটি সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার রচনায় লেখক স্বামী বিবেকানন্দ যার নাম দিয়েছেন থ্যাবড়া।

২.২৮ "কিন্তু যখন ওসব কিছুই হল না" - ওসব কিছু না হওয়ার সম্ভাব্য কারণ দুটি কী?

উত্তরঃ প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে বলা হয়েছে, যে দুটি হাঙ্গরের দেখা হয়েছিল, তাদের মধ্যে কথা হয়নি, কারণ - হয় হাঙরের ভাষা নেই, নতুবা থাকলেও জলের মধ্যে সে কথা বলা সম্ভব ছিল না।

২.২৯ "অথবা বাঘা মানুষ-ঘেঁষা হয়ে মানুষের ধাত পেয়েছে," - মানুষের ধাত পেলে বাঘা কী করত?

উত্তরঃ মানুষের ধাত পেলে বাঘা আমি একাই ঠকবো? ভেবে আসল খবর থ্যাবড়াকে কিছুই বলত না এবং মুচকি হেসে থ্যাবড়ার কুশল সংবাদ নিয়ে সরে পড়ত।

২.৩০ "মোদ্দা - কাছির কাছে কাছে থেকো।" - লেখক কী কারণে একথা বলেছেন?

উত্তরঃ যাতে হাঙর টোপ গিললে তাকে সবাই মিলে টেনে তুলতে পারে, সেজন্য সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার রচনার লেখক স্বামী বিবেকানন্দ একথা বলেছেন।

২.৩১ "মেয়েরা - আহা কী নিষ্ঠুর! মেরো না ইত্যাদি চিৎকার করতে লাগল" - কখন?

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দ রচিত সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার পাঠ্যাংশে হাঙ্গরকে জাহাজে তোলা হলে সাবধানী ফৌজি লোকটিকে কড়িকাঠ দিয়ে হাঙরের মাথায় আঘাত করতে অনুরোধ করলে তিনি প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিটি করেন।

২.৩২ "কেমন রক্তের নদী বইতে লাগল" - কখন?

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দ রচিত সুয়েজখালে হাঙ্গর শিকার রচনায় শিকার করা হাঙরটার পেট চেরা হলে রঙের নদী বইতে লাগল।

See More : Full Class 11 Bengali Suggestion 2023

(৩) নিচের বিশ্লেষণধর্মী উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলির উত্তর দাওঃ

৩.১ "যাঃ টোপ খুলে গেল! হাঙ্গর পালালো।" - টোপ খুলে হাঙর কীভাবে পালিয়েছিল তা রচনা অবলম্বনে লেখো।

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দের 'সুয়েজখালে : হাঙর শিকার' রচনায় আমরা দেখি যে, সেরখানকে শুকোরের মাংসের টোপসহ প্রকান্ড বড়শি ফাতনাসহ জলে ফেলার অনেকক্ষণ পর হাঙর টোপ গিলতে এগিয়ে আসে। কিন্তু এগিয়ে এসেও দু-দুইবার হাঙরটি টোপ না গিলে ল্যাজ নাড়িয়ে, শরীর ঘুরিয়ে চলে যায়। তৃতীয়বার ল্যাজ বাঁকিয়ে একটা পাক দিয়ে ঘুরে এসে শেষমেষ হাঁ করে টোপ মুখে দেয় হাঙর এবং তারপরই চিৎ হয়ে পড়ে থাকে। এটা দেখে সবাই চিৎকার করতে থাকে - 'টোপ খেয়েছে - টান্‌ টান্‌ টান্‌।' চল্লিশ-পঞ্চাশ জন লোক তখন বড়শির দড়ি ধরে প্রাণপণে টানতে থাকে। কিন্তু হাঙরটির ছিল যেমন শক্তি, তেমন ছিল তার ল্যাজ-ঝাপটানো আর রাক্ষুসে হাঁ। সুতরাং হাঙরে-মানুষে টানাটানি চলতে থাকে। এই টানাটানিতে কখনও হাঙরটি জলের ওপর উঠল, কখনও আবার জলমধ্যেই ঘুরতে লাগল, কখনও বা নিস্তেজ হয়ে রইল। কিন্তু মাংসসহ বড়শিটি হাঙরের পেটে যাওয়ার হয়ে রইল। কিন্তু মাংসসহ বড়শিটি হাঙরের পেটে যাওয়ার বা মুখের ভিতরে বিঁধে যাওয়ার আগেই যেহেতু যাত্রীরা তাড়াহুড়ো করে টানাটানি শুরু করেছিল, তাই একসময় হঠাৎই বড়শিসহ টোপ খুলে পড়ে হাঙরের মুখ থেকে। ফলে হাঙরটি যাত্রীদের হতাশ করে পালিয়ে যায়।

৩.২ "কাজেই রাতের যাওয়া হবে না, চব্বিশ ঘন্টা এইখানে পড়ে থাকো" - রাতে না গিয়ে চব্বিশ ঘন্টা পড়ে থাকার কারণ বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দের 'সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার' রচনাটিতে দেখা যায়, লেখকের জাহাজ ইউরোপ যাওয়ার পথে লোহিত সাগর পার করে ১৪ই জুলাই মিশরের সুয়েজ বন্দরে থামে মাল নামাবার জন্য। মাল নামানোর পর রাত্রিতে জাহাজ অনায়াসেই সুয়েজ বন্দর পার হয়ে যেতে পারত। তার জন্য প্রয়োজন হল জাহাজের সামনে বিজলি আলো লাগানো। এই বিজলি আলো লাগানোর জন্য সুয়েজ বন্দরের মিশরীয় লোকেদের সাহায্য নেওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিল না।

     অথচ প্লেগ রোগের সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচার জন্য মিশরের লোকেদের স্পর্শের হাত থেকে জাহাজকে রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি ছিল। স্বর্গরূপী ইউরোপে যাতে প্লেগ রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে না পারে, তাই ইউরোপের প্রবেশদ্বার সুয়েজ বন্দরে সতর্কতামূলক নজরদারি ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত কড়া। কারণ, সেই সময় সমগ্র মিশর রীতিমতো প্লেগ রোগে আক্রান্ত ছিল।

     আর জাহাজের যাত্রীরাপ সম্ভবত প্লেগ রোগের বাহক - এই আশঙ্কার ফলে দু-তরফেই রয়েছে পরস্পরের ছোঁয়াছুঁইয়ি বাঁচিয়ে চলার চেষ্টা। মিশরের লোকেদের তাই লেখকের জাহাজ স্পর্শ করা ছিল একেবারে নিষিদ্ধ। ফলে, কিছুতেই আর জাহাজের সামনে আলো লাগানো সম্ভব হয় না। কারণ, একবার ছোঁইয়াছুঁয়ি হলেই তো আবার দশদিক আটক থাকতে হবে, যেহেতু প্লেগ রোগের জীবাণু শরীরে প্রবেশ করলে দিন দশেকের মধ্যেই তার উপসর্গ ফুটে বেরোতে শুরু করে। এই কারণেই জাহাজের যাত্রীদের চব্বিশ ঘন্টা সুয়েজ বন্দরে পড়ে থাকতে হয়েছিল। ভোরে সূরযের আলোতেই তাঁদের ইউরোপের পথে যাত্রা শুরু করা ছাড়া উপায় ছিল না।

৩.৩ 'সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার' রচনাটিতে হাঙরটিকে জাহাজের উপরে তোলার দৃশ্যটি বর্ণনা করো।

উত্তরঃ মহামানব স্বামী বিবেকানন্দের 'সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার' রচনায় দেখা যায়, থ্যাবড়ামুখো হাঙ্গরটি বড়শিতে বিদ্ধ হলে জাহাজের উপরে থাকা ছেলে, বুড়ো,জোয়ান অর্থাৎ সব বয়সের লোকেরাই কাছি ধরে জোরে টানতে থাকে। হাঙরের মাথা জল থেকে উঠতেই তাদের উৎসাহ আরও বেড়ে যায়। এরপর হাঙরের ভয়ংকর মুখ দেখে সবাই শিউরে ওঠে। দেখা যায় যে, হাঙ্গরের ঠোঁট এফোঁড় ওফোঁড় করে বড়শি বিঁধেছে। জাহাজটির নীচে অপেক্ষারত পাহারাদার আরব পুলিশদের যাত্রীদের তরফ থেকে অনুরোধ করা হয়, তারা যেন হাঙরের ল্যাজের ঝাপটা থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে হাঙরের ল্যাজের দিকে একটা দড়ি বেঁধে দেয়। 

     অন্যথায়, বিশাল ওজনের হাঙরের একটি দড়ির সাহায্যে টেনে তোলা রীতিমতো অসম্ভব। পুনরায় টানা শুরু হলে দেখা যায়, হাঙরের পেটের নীচে থেকে নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে আসছে। একজন যাত্রীর নির্দেশ সেটা কেটে জলে ফেলে দেওয়া হয় ভার কমানোর জন্য। এর ফলে সৃষ্টি হয় রক্তের ফোয়ারা। কাপড়ের মায়া ছেড়ে রক্তমাখা অবস্থাতেই হাঙ্গরটিকে অতঃপর জাহাজের ওপরে তোলার কথা বলা হয়। সঙ্গে সর্তক থাকতে বলা হয়, হাঙরের কামড় আর ল্যাজের ঝাপটা থেকে। এরপরই জাহাজের উপরে 'ধপাৎ' করে ফেলা হয় হাঙরটিকে।

৩.৪ "আমাদের কিন্তু দশদিন হয়ে গেছে - ফাঁড়া কেটে গেছে।" - মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ স্বামী বিবেকানন্দের 'পরিব্রাজক' গ্রন্থের অন্তর্গত 'সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার' রচনায় লেখকদের জাহাজ সুয়েজ বন্দরে পৌঁছোনোর পরে এক অদ্ভুত অবস্থার সৃষ্টি হয়। সেই সময় সারা বিশ্বজুড়ে ছিল প্লেগ রোধের আতঙ্ক। মিশরেও ছিল প্লেগের প্রকোপ। এর ওপরে এশিয়া থেকে জাহাজে আগত যাত্রীরা পাছে প্লেগ রোগের জীবাণু বহন করে আনে - এই আশঙ্কায় জাহাজের কর্মী-যাত্রী এবং সুয়েজ বন্দরের মিশরীয় কর্মীদের মধ্যে ছোঁয়াছুঁয়ির ভয় জাঁকিয়ে বসেছিল। সুয়েজ বন্দরে নামানোর মতো মাল যাত্রীবাহী জাহাজে থাকলেও সুয়েজের কুলি সেই জাহাজ ছুঁতে পারবে না - এই ছিল ফরমান। এই অবস্থায় জাহাজের খালাসিকেই নিতান্ত বাধ্য হয়ে কুলির কাজ করতে হচ্ছিল। তারা নীচে দাঁড়িয়ে থাকা সুয়েজি নৌকোয় আলগোছে মালপত্র ফেলতে বাধ্য হয়েছিল। 

     কোম্পানির এজেন্ট জাহাজের কাছে ছোটো লঞ্চে করে এলেও তার জাহাজে ওঠার হুকুম ছিল না। নৌকায় পাহারাদার হিসেবে রাখা হয়েছিল, যাতে জাহাজে-ডাঙায় বিন্দুমাত্র ছোঁয়াছুঁয়ি লাগতে না পারে। যেহেতু সুয়েজ বন্দরই স্বর্গতুল্য ইউরোপের প্রবেশদ্বার, তাই ইউরোপকে প্লেগ রোগের জীবাণু থেকে মুক্ত রাখার জন্য জাহাজে এইরকম সর্তকতামূলক নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল। প্লেগের জীবাণু শরীরে প্রবেশ করার দশদিনের মধ্যেই সেই রোগের উপসর্গ ফুটে বেরোয়। এ কারণে মিশরীয় লোকেদের সঙ্গে জাহাজের কর্মী বা যাত্রীদের ছোঁয়াছুঁয়ি হলেই জাহাজকে আবার দশদিনের জন্য বন্দরে আটকে থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে কিছুতেই নেপলস বা মার্সাই বন্দরে লোক নামানো যাবে না। লেখকদের যেহেতু দশদিন অতিক্রান্ত হবার পরেও প্লেগ রোগের কোনো উপসর্গ দেখা দেয়নি, তাই তাঁদের বিপদ বা ফাঁড়াও কেটে গেছে। এই প্রসঙ্গেই আলোচ্য মন্তব্যটির অবতারণা।

৩.৫ 'জাহাজের পেছনে বড়ো বড়ো হাঙ্গর ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছে।' - লেখক অনুসরণে হাঙরের সেই ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য নিজের ভাষায় বর্ণনা করো।

উত্তরঃ 'সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার' রচনার লেখক স্বামী বিবেকানন্দের জাহাজে সুয়েজ বন্দরে দাঁড়ানোর পর সকালেই লেখক শুনতে পান যে, 'জাহাজের পেছনে বড়ো বড়ো হাঙর ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছে'। হাঙরের কথা শুনে লেখক সঙ্গীসাথী-সহ খুব দ্রুত জাহাজের পেছনদিকে পৌঁছান। সেখানে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ছাদ থেকে বারান্দার রেলিং ধরে দলে দলে নারী-পুরুষ-শিশু সামনে ঝুঁকে, মুখ বাড়িয়ে হাঙর দেখছিল। লেখকরা যখন সেখানে পৌঁছলেন, তখন হাঙররা আর সেখানে ছিল না। মনমরা হয়ে লেখক তাই হাঙরের আশায় জলের দিকে তাকিয়ে থাকেন। 

     লক্ষ করেন যে, গাঙ ধারার মতো দেখতে এক ধরনের মাছ জলে ভেসে বেড়াচ্ছে এবং খুব ছোটো আর একজাতীয় মাছ জলে কিলবিল করছে। এদের মধ্যে একটা-দুটো বনিটো মাছ তিরবেগে ছুটে বেড়াচ্ছে। প্রায় ৪৫ মিনিট পর এক যাত্রীর চিৎকার শুনে লেখক দেখেন যে, পাঁচ-সাত ইঞ্চি জলের ভিতরে থাকা অবস্থায় বিরাট বড়ো আকারের একটি কালো বস্তু খানিকটা দূর থেকে জাহাজের দিকেই আসছে। কাছে এলে দেখা যায় যে, একটা প্রকান্ড চ্যাপটা মাথা নিয়ে কেতাদুরস্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে আসছে হাঙর নামধারী এমন এক বিরাটকার দৈত্য। তার একবার ঘাড় ঘোরানোর বিরাট আবর্ত তৈরি হচ্ছিল। নানাপ্রকার ছোটোবড়ো মাছকে সঙ্গে নিয়ে হাঙরটি গম্ভীর চালে জাহাজের দিকে এগিয়ে আসছিল।

৩.৬ "সেদিন আমার খাওয়া-দাওয়ার দফা মাটি হয়ে গিয়েছিল।" - লেখকের 'খাওয়া-দাওয়ার দফা মাটি হয়ে গিয়েছিল' কেন? ঘটনার বর্ণনা দিয়ে লেখো।

উত্তরঃ প্রশ্নে উল্লিখিত কথাটি 'সুয়েজখালে : হাঙ্গার শিকার' প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে।

     এই রচনায় লেখক স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন যে, শিকার-করা হাঙরটিকে দড়ি ধরে টেনে তোলার সময় বিকট এক 'ধপাৎ' শব্দে সেটি জাহাজের ওপর আছড়ে পড়েছিল। এরপর একজন সাবধানী যাত্রী হাঙরটির মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ফাতনা হিসেবে ব্যবহার করা কড়িকাঠখানা দিয়ে হাঙ্গরটির মাথায় আঘাত করতে অনুরোধ করলেন জাহাজের অপর এক যাত্রী ফৌজি ভদ্রলোককে। যাইহোক, গায়ে-কাপড়ে রক্তমাখা ফৌজি লোকটি তখন প্রবল উৎসাহের সঙ্গে হাঙরের মাথায় আঘাত করতে থাকেন। মহিলা যাত্রীরা এই নিষ্টুর দৃশ্য দেখে আর্তনাদ করতে শুরু করলেও সেই স্থানেই দাঁড়িয়ে থাকেন। পরবর্তী বীভৎস কান্ডকারখানার বিবরণ সহৃদয় লেখক আর বিস্তৃতভাবে প্রকাশ না করে নিছক তথ্যের আকারে জানিয়ে দেন যে, হাঙরের পেট চেরা হলে চারিদিকে রক্তের নদী বয়ে যেতে থাকে। হাঙরটি খন্ড-বিখন্ড দেহ, ছিন্ন-অন্ত্র এবং ছিন্ন-হৃৎপিন্ড হয়েও দীর্ঘক্ষণ কাঁপতে থাকে। এরপর তাঁর পেট থেকে হাড়, পেশি, চামড়া,আ মাংস, কাঠের টুকরো ইত্যাদি রাশি রাশি বেরোতে থাকে। এসব বীভৎস দৃশ্য দেখার জন্যই লেখকের সেদিনের খাওয়ার ইচ্ছে একেবারেই চলে গিয়েছিল। সারাদিন ধরে সব জিনিসের মধ্যেই তিনি হাঙরের গন্ধ পাচ্ছিলেন। এভাবেই হাঙর-শিকারের ঘটনাটি সম্পূর্ণ হয়েছিল।

See More : Full Class 11 Bengali Suggestion 2023

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

LightBlog

AdsG

close