ষষ্ঠ অধ্যায়
দুর্যোগ ও বিপর্যয়
(১) বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-
(১.১) নিম্নলিখিত ভারতের কোন্ রাজ্যটি সর্বাধিক বন্যাপ্রবণ –
(ক) আসাম
(খ) মেঘালয়
(গ) ঝাড়খন্ড
(ঘ) মধ্যপ্রদেশ
উত্তরঃ- (ক) আসাম
(১.২) ভৌমজলের ভাণ্ডার কমে কোন্ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে –
(ক) বন্যা
(খ) খরা
(গ) ঘূর্ণিঝড়
(ঘ) দাবানল
উত্তরঃ- (খ) খরা
(১.৩) ভারতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে –
(ক) উপকূলীয় অঞ্চলে
(খ) হিমালয় অঞ্চলে
(গ) মরুভূমি অঞ্চলে
(ঘ) মালভূমি অঞ্চলে
উত্তরঃ- (ক) উপকূলীয় অঞ্চলে
(১.৪) কোন্ দেশটিকে ‘ভূমিকম্পের দেশ’ বলা হয় –
(ক) ইংল্যান্ড
(খ) চীন
(গ) অস্ট্রেলিয়া
(ঘ) জাপান
উত্তরঃ- (ঘ) জাপান
(১.৫) চীন সাগরে ঘূর্ণিঝড়টির নাম হল –
(ক) টর্নেডো
(খ) টাইফুন
(গ) উইলি-উইলি
(ঘ) হ্যারিকেন
উত্তরঃ- (ক) টাইফুন
(১.৬) পর্বত থেকে বিশালাকার বরফের স্তুপ নেমে আসা হলো –
(ক) তুষারঝড়
(খ) তুষারপাত
(গ) হিমানী সম্প্রপাত
(ঘ) বরফপাত
উত্তরঃ- হিমানী সম্প্রপাত
(১.৭) একটি মনুষ্যসৃষ্ট চরম বিপর্যয়ের উদাহরণ হল –
(ক) ভূমিকম্প
(খ) অগ্নুৎপাত
(গ) পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ
(ঘ) খরা
উত্তরঃ- (গ) পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ
(১.৮) ভারতে ফোণি ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ রাজ্যটি হল –
(ক) পশ্চিমবঙ্গ
(খ) উড়িষ্যা
(গ) রাজস্থান
(ঘ) উত্তরপ্রদেশ
উত্তরঃ- (খ) উড়িষ্যা
(২) অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-
(২.১) বনভূমি ছাড়া যে দুর্যোগ ঘটে না তার নাম কি?
উত্তরঃ- দাবানল
(২.২) দার্জিলিং জেলার প্রধান দুর্যোগ কি?
উত্তরঃ- ধস
(২.৩) পশ্চিমবঙ্গের পার্বত্য এলাকায় প্রধান ভূতাত্ত্বিক দুর্যোগ কি?
উত্তরঃ- ভূমিকম্প
(২.৪) গাঙ্গেয় সমভূমির প্রধান দুর্যোগ কি?
উত্তরঃ- বন্যা
(২.৫) ক্যারিবিয়ান সাগরে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়কে কি বলে?
উত্তরঃ- হ্যারিকেন
(২.৬) বঙ্গোপসাগরে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়কে কি বলে?
উত্তরঃ- সাইক্লোন
(২.৭) সুনামি কথাটির অর্থ কি?
উত্তরঃ- বন্দরের শক্তিশালী ঢেউ
(২.৮) পর্বতারোহীরা ধস ছাড়াও যে ভূমিধসজনিত দুর্যোগের সম্মুখীন হয় তার নাম কি?
উত্তরঃ- হিমানী সম্প্রপাত
(৩) নীচের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-
(৩.১) ঘূর্ণিঝড় বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ- ঘূর্ণিঝড় হলো গ্রীষ্মমন্ডলী ঝড় বা বায়ুমন্ডলীয় একটি উত্তাল অবস্থা যা বাতাসের প্রচন্ড ঘূর্ণায়মান গতির ফলে সংঘটিত হয়। এটি সাধারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগসমূহের একটি।
(৩.২) ভূমিকম্প কাকে বলে?
উত্তরঃ- ভূ-অভ্যন্তরে শিলায় পীড়নের জন্য যে শক্তির সঞ্চয় ঘটে, সেই শক্তির হঠাৎ মুক্তি ঘটলে ভূ-পৃষ্ঠ ক্ষণিকের জন্য কেঁপে ওঠে এবং ভূ-ত্বকের কিছু অংশ আন্দোলিত হয়। এই রূপ আকস্মিক ও ক্ষণস্থায়ী কম্পনকে ভূমিকম্প বলে।কম্পন-তরঙ্গ থেকে যে শক্তির সৃষ্টি হয়, তা ভূমিকম্পের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। এই তরঙ্গ ভূ-গর্ভের কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চলে উৎপন্ন হয় এবং উৎসস্থল থেকে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ভূমিকম্প সাধারণত কয়েক সেকেণ্ড থেকে এক/দু-মিনিট স্থায়ী হয়। মাঝে মাঝে কম্পন এত দুর্বল হয় যে, তা অনুভব করা যায় না। কিন্তু শক্তিশালী ও বিধ্বংসী ভূমিকম্পে ঘর-বাড়ি ও ধন-সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং অসংখ্য প্রাণহানি ঘটে।
(৩.৩) সুনামি কি?
উত্তরঃ- জাপানি শব্দ সু কথার অর্থ পোতাশ্রয় বা বন্দর এবং নামি শব্দের অর্থ তরঙ্গ বা ঢেউ। অর্থাৎ সুনামি শব্দের অর্থ হলো বন্দরের তরঙ্গ। সমুদ্র তলদেশে ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট বিশালাকৃতি সামুদ্রিক ঢেউ অথবা জলোচ্ছ্বাসকে সুনামি বলে।
(৩.৪) অগ্নুৎপাত বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ- ভূ-অভ্যন্তরের গলিত পদার্থ অর্থাৎ ম্যাগমা এবং এর সাথে ভূগর্ভের গ্যাস, বাষ্প, ছাই যখন ভূপৃষ্ঠের কোন দুর্বল স্থান দিয়ে বা ফাটল পথে বাইরে বেরিয়ে আসে তখন তাকে অগ্নুৎপাত বলে।
(৩.৫) হিমানী সম্প্রপাত কি?
উত্তরঃ- পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পার্বত্য অঞ্চলে হিমরেখার উপরে অর্থাৎ তুষারক্ষেত্রের জমাট বাঁধা বরফ অত্যন্ত ধীরগতিতে পর্বতের ঢাল বেয়ে নীচের দিকে নেমে আসতে থাকে । কখনো কখনো পাহাড়ের ঢালে চলমান এইরকম হিমবাহ থেকে বিশাল বরফের স্তূপ ভেঙে প্রচন্ড বেগে নীচের দিকে পড়তে দেখা যায় । একে হিমানী সম্প্রপাত বলে ।
(৪) নীচের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-
(৪.১) দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের তিনটি পার্থক্য লিখো।
উত্তরঃ- দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের প্রধান তিনটি পার্থক্য হলো -
প্রথমত, দুর্যোগ হলো বিপর্যয়ের পূর্ববর্তী রূপ আর বিপর্যয় হলো দুর্যোগের পরবর্তী রূপ।
দ্বিতীয়ত, দুর্যোগ প্রবাহিত এলাকার আয়তন কম এবং এটি ছোট মাপের বিপদজনক ঘটনা কিন্তু বিপর্যয়গ্রস্থ এলাকার আয়তন বেশি এবং এটি বড় মাপের চরম ক্ষতিকারক অবস্থা।
তৃতীয়ত, দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রভাবিত এলাকার বাইরের মানুষের সাহায্যের প্রয়োজন হয় না কিন্তু বিপর্যয় সামাল দেবার বা পুনর্নির্মাণের কাজের জন্য বাইরের মানুষের প্রয়োজন হয়।
(৪.২) বন্যা কাকে বলে? বন্যার দুটি কারণ লেখ।
উত্তরঃ- একটানা কয়েকদিন ধরে চলা অতিরিক্ত বৃষ্টি কিংবা অন্য কোনো কারণে নদীর জসটর বিপদ সীমা ছাড়িয়ে প্রভাবিত হলে এবং তারা বিস্তৃর্ণ অববাহিকা কে জলমগ্ন করলে, সেই পরিস্থিতিকে বন্যা বলে।
বন্যার কারণঃ-
বন্যার বিভিন্ন কারণের মধ্যে প্রধান দুটি কারণ হলো-
দীর্ঘস্থায়ী অধিক বৃষ্টিঃ-
কোন অঞ্চলে দীর্ঘ সময় ধরে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর জলাধারণ ক্ষমতা অতিক্রান্ত হলে বন্যার সৃষ্টি হয়। অতীতে বর্ষাকালে দামোদর নদীতে এই কারণে প্রায় প্রতি বছরই বন্যা হত।
বৃক্ষচ্ছেদনঃ-
গাছ যেমন মাটি ক্ষয় প্রতিরোধ করে, তেমনি বৃষ্টির পরিমাণ কেও নিয়ন্ত্রণ করে। মানুষের অবিবেচনাপ্রসূত গাছ কাটার ফলে মৃত্তিকা ক্ষয় বৃদ্ধি পায় এবং ক্ষয়প্রাপ্ত মৃত্তিকা নদীগর্ভে সঞ্চিত হয়ে নদীর জল ধারণ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় ফলে বন্যার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
(৪.৩) খরা কাকে বলে? খরা সৃষ্টির একটি প্রাকৃতিক ও একটি মনুষ্য সৃষ্টি কারণ লেখ।
উত্তরঃ- কোন অঞ্চলে দীর্ঘকাল বৃষ্টির অভাবে অথবা পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টির অভাবে যে শুষ্ক অবস্থার সৃষ্টি হয় তাকে খরা বলে।
খরার কারণঃ-
খরার বিভিন্ন কারণের মধ্যে প্রধান দুটি কারণ হলো -
মৌসুমী বায়ুর প্রভাবঃ-
দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু ভারতে স্বাভাবিক সময়ের থেকে দেরিতে প্রবেশ করলে অথবা বর্ষাকাল চলাকালীন অনেক দিন বৃষ্টি না হলে অথবা সময়ের আগে মৌসুমী বায়ু প্রত্যাবর্তন করলে খরার সৃষ্টি হয়।
বৃক্ষচ্ছেদনঃ-
অতিরিক্ত মাত্রায় গাছ কাটার ফলে বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ কমে যায় যার ফলস্বরূপ খরার সৃষ্টি হয়।
(৪.৪) ধসের একটি প্রাকৃতিক ও একটি মানুষ্য সৃষ্টি কারণ লেখ।
উত্তরঃ-
প্রাকৃতিক কারণটি হলোঃ-
অধিক ঢাল যুক্ত ভূমি ভাগ প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটলে শীলা স্তরে জল প্রবেশ করে তা ভূমিভাগকে আলগা বা শিথিল করে দেয় ফলে ধ্বসে সম্ভাবনা তৈরি হয়।
মনুষ্য সৃষ্টি করণ হলোঃ-
গাছের শিকড় মাটিকে শক্ত করে আঁকড়ে রাখে ফলে মাটির গঠন দৃঢ় হয়। তবে মানুষের নির্বিচারে বৃক্ষ ছেদন এর ফলে মাটি আলগা হয়ে পড়লে ধসের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
celauds bust
উত্তরমুছুনGood
উত্তরমুছুন