পঞ্চম অধ্যায়
আবহবিকার
(১) বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-
(১.১) শিলা আবহবিকারগ্রস্ত হলে পদার্থের –
(ক) অপসারণ ঘটে
(খ) একই স্থানে থাকে
(গ) নেমে আসে
(ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তরঃ- (খ) একই স্থানে থাকে
(১.২) সকল যান্ত্রিক আবহবিকারে নিম্নলিখিত কোন্ বিষয়টির ভূমিকা সর্বাধিক –
(ক) আদ্রতা
(খ) জল
(গ) উষ্ণতা
(ঘ) বায়ুর চাপ
উত্তরঃ- (গ) উষ্ণতা
(১.৩) পিঁয়াজের খোলার মত শিলা স্তর খুলে যাওয়াকে –
(ক) ক্ষুদ্রকণা বিশরণ
(খ) শল্কমোচন
(গ) পিণ্ডবিশরন
(ঘ) জলযোজন
উত্তরঃ- (খ) শল্কমোচন
(১.৪) নিম্নলিখিত কোন্ জলবায়ু অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকার সর্বাধিক ঘটে –
(ক) নিরক্ষীয়
(খ) ক্রান্তীয় মৌসুমী
(গ) সাভানা
(ঘ) ক্রান্তীয় মরু অঞ্চলে
উত্তরঃ- (ঘ) ক্রান্তীয় মরু অঞ্চলে
(১.৫) নিম্নলিখিত কোন্ জলবায়ু অঞ্চলে রাসায়নিক আবহবিকার সর্বাধিক ঘটে –
(ক) নিরক্ষীয়
(খ) ক্রান্তীয় মৌসুমী
(গ) সাভানা
(ঘ) ক্রান্তীয় মরু অঞ্চলে
উত্তরঃ- (ক) নিরক্ষীয় অঞ্চলে
(১.৬) আবহবিকারের মাধ্যমে সৃষ্ট শিলাস্তরের উপরে গঠিত শিথিল শিলাচূর্ণ হলো –
(ক) রেগোলিথ
(খ) সোলাম
(গ) মৃত্তিকা
(ঘ) স্ট্যালাকটাইট
উত্তরঃ- (ক) রেগোলিথ
(১.৭) বন্দুকের গুলি ছোঁড়ার মত আওয়াজ শোনা যায় -
(ক) শল্কমোচন প্রক্রিয়ায়
(খ) খন্ডীকরণ প্রক্রিয়ায়
(গ) ক্ষুদ্রকণা বিশরন প্রক্রিয়ায়
(ঘ) প্রস্তরচাঁই বিচ্ছিন্নকরন প্রক্রিয়ায়
উত্তরঃ- (গ) ক্ষুদ্রকণা বিশরন প্রক্রিয়ায়
(২) অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-
(২.১) আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানের প্রভাবে শিলার ভাঙ্গনকে কি বলে?
উত্তরঃ- আবহবিকার
(২.২) আবহাওয়ার উপাদানের প্রভাবে শিলার ভৌত পরিবর্তনকে কী বলে?
উত্তরঃ- যান্ত্রিক আবহবিকার
(২.৩) আবহাওয়ার উপাদানের প্রভাবে শিলার রাসায়নিক পরিবর্তনকে কি বলে?
উত্তরঃ- রাসায়নিক আবহবিকার
(২.৪) আবহবিকারজনিত পদার্থ অপসারিত হলে তাকে কি বলে?
উত্তরঃ- ক্ষয়ীভবন
(২.৫) আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবনকে একত্রে কি বলে?
উত্তরঃ- নগ্নীভবন
(২.৬) রাসায়নিক আবহবিকারের আবহাওয়ার কোন্ উপাদানের ভূমিকা সব থেকে বেশি?
উত্তরঃ- আদ্রতা
(২.৭) জৈব রাসায়নিক আবহবিকার ঘটায় এমন একটি বুদ্ধিমান প্রাণীর নাম লেখ।
উত্তরঃ- মানুষ
(২.8) ক্রান্তীয় অরণ্য অঞ্চলে কোন্ প্রকার মৃত্তিকা সৃষ্টি হয়?
উত্তরঃ- ল্যাটেরাইট
(২.৯) শিলার কোন ধর্ম যান্ত্রিক আবহবিকারের জন্য দায়ী?
উত্তরঃ- স্থিতিস্থাপকতা
(২.১০) চারনোজেম মৃত্তিকা কোন্ পদ্ধতিতে সৃষ্টি হয়?
উত্তরঃ- ক্যালসিফিকেশন
(৩) নীচের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-
(৩.১) আবহবিকার বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ- আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান যেমন উষ্ণতা বৃষ্টিপাত বায়ুপ্রবাহ তুষারপাত প্রভৃতি দ্বারা শিলার নিজ স্থানে বিয়োজন ঘটার প্রক্রিয়াকে আবহবিকার বলে।
(৩.২) ক্ষয়ীভবন কাকে বলে?
উত্তরঃ- যে ক্রিয়ায় বিভিন্ন গতিশীল প্রাকৃতিক শক্তির সাহায্যে চূর্ণ-বিচূর্ণ শিলা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অপসারিত হয় সেই প্রক্রিয়াটি হলো ক্ষয়ীভবন।
(৩.৩) প্রস্তর চাঁই খন্ডিকরণ কাকে বলে?
উত্তরঃ- সমান্তরাল বা সমকোণী ফাটল এর সাহায্যে একটি বড় শিলাখণ্ড বা শিলাস্তর বিভিন্ন খন্ডে পরিণত হলে সে প্রক্রিয়াকে প্রস্তর চাঁই খন্ড বলে।
(৩.৪) জারণ বা অক্সিডেশন বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ- লোহার সঙ্গে মিশে থাকা খনিজের সঙ্গে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের রাসায়নিক বিক্রিয়াকে অক্সিডেশন বা জারণ বলে।
(৩.৫) জলযোজন বা হাইড্রেশন কাকে বলে?
উত্তরঃ- শিলার মধ্যে থাকা খনিজ পদার্থের সঙ্গে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জল যুক্ত হলে যে রাসায়নিক আবহবিকার ঘটে শিলাটির পরিবর্তন ঘটায় সেই প্রক্রিয়াকে হাইড্রেশন বা জলযোজন বলে।
(৪) নীচের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-
(৪.১) আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবন এর প্রধান তিনটি পার্থক্য লেখ।
উত্তরঃ- আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবন এর প্রধান তিনটি পার্থক্য হল -
প্রথমত, আবহবিকার হলো আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান যেমন উষ্ণতা বৃষ্টিপাত প্রভৃতি দ্বারা শিলার নিজ স্থানে বিচূর্ণীভবন ও বিয়োজন ঘটার প্রক্রিয়া আর ক্ষয়ীভবন হলো প্রাকৃতিক শক্তির যেমন নদী হিমবাহ প্রভৃতি দ্বারা আবহবিকারপ্রাপ্ত অপসারণ হওয়ার প্রক্রিয়া।
দ্বিতীয়ত, আবহবিকার ক্ষয়ীভবনের উপর নির্ভর করে না কিন্তু ক্ষয়ীভবন আবহবিকার এর উপর নির্ভরশীল।
তৃতীয়ত, আবহবিকার অত্যন্ত ধীর গতি সম্পন্ন ও স্থৈতিক প্রক্রিয়া আর ক্ষয়ীভবন দ্রুতগতিসম্পন্ন গতিশীল প্রক্রিয়া।
(৪.২) শল্কমোচন বলতে কি বোঝ?
উত্তরঃ- উষ্ণতার প্রসর বেশি হলে শিলাস্তরের বাইরের ও ভেতরের অংশের মধ্যে সংকোচন ও প্রসারণের তারতম্য ঘটে এবং শিলাই পিড়নের ফলে ফাটলের সৃষ্টি হয়। ফলে শিলার উপরের স্তর নিচের স্তর থেকে পেঁয়াজের খোসার মতো খুলে আসে, প্রাকৃতিক এই ঘটনাটিকেই শল্কমোচন বলে।
(৪.৩) ক্ষুদ্র কণা বিশরণ কাকে বলে?
উত্তরঃ- মরুভূমি অঞ্চলে উষ্ণতার প্রবল তারতম্যের ফলে বিষম গুণসম্পন্ন শিলা গঠনকারী বিভিন্ন খনিজের সংশোধনকারী পদার্থের মধ্য দিয়ে ফাটল সৃষ্টি হয়ায় শিলা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাওয়াকে ক্ষুদ্র কণা বিশরণ বলে।
(৪.৪) অঙ্কারযোজন বা কার্বনেশন কি?
উত্তরঃ- ক্যালসিয়াম কার্বনেট ঘটিত শিলার খনিজের সাথে কার্বন-ডাই-অক্সাইড মিশ্রিত জলের রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ক্যালসিয়াম বাই কার্বনেট উৎপন্ন হয়ার প্রক্রিয়াকে অঙ্গারযোজন বা কার্বনেশন বলে।
(৪.৫) হিউমাস কাকে বলে?
উত্তরঃ- উদ্ভিদ এবং প্রাণীর মৃত দেহ অবশেষ জৈব পদার্থ হিসেবে শিলা বা মৃত্তিকার উপরিভাগে সঞ্চিত হয়। ঐ সকল পদার্থ অতি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম জিব দ্বারা পচন এবং বিয়োজনের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে গারো বাদামি বা কালচে বর্ণের জটিল পদার্থের সৃষ্টি করে, একেই হিউমাস বলে।
(৫) নীচের রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-
(৫.১) যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতিগুলি সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ- উষ্ণতা, বৃষ্টিপাত, তুষার, অভিকর্ষ, নদী, বায়ু, জীবজন্তু বা উদ্ভিদ প্রভৃতি নানা প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে শিলাস্তর যখন ছোটো ছোটো খন্ড বা চূর্ণে পরিণত হয়ে মূল শিলার ওপর অবস্থান করে, এবং তার মধ্যে যখন কোনোরকম রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে না, তখন তাকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলা হয়।
তাপমাত্রার পরিবর্তনের জন্য ঘটা যান্ত্রিক আবহবিকারগুলি হলঃ- পিন্ড বিশরন, শল্কমোচন, ক্ষুদ্রকণা বিশরণ; তুষারের দ্বারা তুহিন খন্ডীকরণ প্রভৃতি । এছাড়া জল এবং চাপ হ্রাসের ফলেও যান্ত্রিক আবহবিকার ঘটে থাকে ।
যান্ত্রিক আবহবিকারের পদ্ধতি:- যান্ত্রিক আবহবিকার ঘটাতে সূর্যের তাপ, বায়ুপ্রবাহ, তুষার প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তি খুব সক্রিয় । বৃষ্টির জল যান্ত্রিকভাবে কিছু শিলা ক্ষয় করে । তবে রাসায়নিক আবহবিকারে বৃষ্টির জল মূখ্য ভুমিকা গ্রহন করে ।
সুর্যতাপের প্রধান কাজ শিলা চূর্ণবিচূর্ণ করা । এর প্রভাবে প্রধানত তিনভাবে শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়, যথা- (ক) খন্ডবিখন্ডিকরণ বা পিন্ড বিশরণ, (খ) গোলাকৃতি বিচূর্ণীভবন বা শল্কমোচন , (গ) ক্ষুদ্রকণা বিশরণ
(ক) খন্ডবিখন্ডিকরণ বা পিন্ড বিশরণ :- যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতি গুলোর মধ্যে খন্ডবিখন্ডিকরণ বা পিন্ড বিশরণ হল অন্যতম একটি পদ্ধতি । শিলা তাপের সুপরিবাহী নয়। এই জন্য মরু অঞ্চলের গাছপালা হীন উন্মুক্ত প্রান্তরে দিনে এবং রাত্রে শিলার ভিতরের ও বাইরের অংশের উষ্ণতার মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য ঘটে । ক্রমাগত উত্তাপে প্রসারিত ও ঠান্ডায় সংকুচিত হতে হতে শিলার সন্ধিস্থল গুলো আলগা হয়ে যায় এবং শিলাগাত্রে ফাটলের সৃষ্টি হয়। এই ফাটলগুলি কালক্রমে পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভগ্ন স্তূপে পরিণত হয় । এই ভেঙে যাওয়া শিলার আকৃতি অনেকটা বর্গক্ষেত্র বা আয়তক্ষেত্রের মতো হয় বলে আবহবিকারের এই বিশেষ প্রক্রিয়াটিকে খন্ডবিখন্ডিকরণ বা পিন্ড-বিশরণ বলে।
(খ) গোলাকৃতি বিচূর্ণীভবন বা শল্কমোচন:- যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতি গুলোর মধ্যে গোলাকৃতি বিচূর্ণীভবন বা শল্কমোচন হল অন্যতম একটি পদ্ধতি । শিলাস্তর তাপের সুপরিবাহী না হওয়ার ফলে দিন ও রাতে শিলার ভিতরের ও বাইরের অংশের মধ্যে উষ্ণতার যথেষ্ট পার্থক্য ঘটে । উষ্ণতার এই তারতম্যের ফলে শিলাস্তরে ক্রমাগত প্রসারণ ও সংকোচন ঘটে । দীর্ঘদিন ধরে সংকোচন ও প্রসারণের ফলে শিলার ওপরের স্তর ওপরের দিকে প্রসারিত হয় । তখন ওপরের স্তর নীচের অপেক্ষাকৃত শীতল স্তর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পেঁয়াজের খোলার মতো খসে পড়ে। শিলার বাইরের অংশ এই ভাবে পেঁয়াজের খোসার মতো খুলে গেলে ভিতরের অংশটি কিছুটা গোলাকার ও মসৃণ শিলাখন্ডে পরিণত হয়। এইভাবে সৃষ্টি হওয়া প্রধান গোলাকার শিলাটিকে ‘অবশিষ্ট গণ্ড-শিলা’ বলে। শল্কমোচনের ফলে শিলাখন্ড গুলো অনেকটা গোলাকার হয়ে যায়, তাই বিচূর্ণীভবনের এই বিশেষ প্রক্রিয়াকে গোলাকৃতি বিচূর্ণীভবন বা শল্কমোচন বলে। একই জাতীয় খনিজ পদার্থে গঠিত সমপ্রকৃতির শিলায় শল্কমোচন বেশি হয়।
(গ) ক্ষুদ্রকণা বিশরণ:- যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতি গুলোর মধ্যে ক্ষুদ্রকণা বিশরণ হল অন্যতম একটি পদ্ধতি । যেসব শিলা বিভিন্ন রকমের খনিজ পদার্থে গঠিত, সেই সব বিষম গুণ সম্পন্ন ও বড় দানা যুক্ত শিলা গুলো ঠান্ডায় বা গরমে সমান ভাবে সংকুচিত বা প্রসারিত হতে পারে না। এরফলে শিলাস্তরের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন টানের সৃষ্টি হয় এবং তাতে শিলা সশব্দে ফেটে চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যায়। উষ্ণতার তারতম্যের ফলে এইভাবে বিষম গুণসম্পন্ন শিলার চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাওয়াকে ক্ষুদ্রকণা বিশরণ বলে।
(৫.২) রাসায়নিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতি গুলি আলোচনা করো।
উত্তরঃ- যে আবহবিকারের মাধ্যমে শিলা গঠনকারী বিভিন্ন খনিজ পদার্থগুলির ওপর বায়ুমন্ডলের প্রধান উপাদান সমূহ বিশেষ করে অক্সিজেন (O2), কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2), জ্বলীয় বাষ্প প্রভৃতির বিক্রিয়ার ফলে কঠিন শিলা বিয়োজিত হয় এবং মূল খনিজ পদার্থগুলো নতুন গৌণ খনিজে পরিণত হয়ে মূল শিলা শিথিল হয়ে পড়ে, তাকে রাসায়নিক আবহবিকার বলে। বৃষ্টিবহুল উষ্ণ অঞ্চলে রাসায়নিক আবহবিকারের প্রাধান্য বেশি পরিলক্ষিত হয়।
রাসায়নিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতি গুলোর মধ্যে প্রধানত তিনটি যথা- (ক) অঙ্গারযোজন বা কার্বনিকরণ, (খ) জারণ, (গ) জলযোজন বা আর্দ্রকরণ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া রাসায়নিক আবহবিকারের অন্যান্য পদ্ধতি গুলোর মধ্যে দ্রবণ এবং আদ্র বিশ্লেষণ উল্লেখযোগ্য।
(ক) কার্বনিকরণ :- রাসায়নিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতি গুলোর মধ্যে অঙ্গারযোজন বা কার্বনিকরণ হল অন্যতম একটি পদ্ধতি ।বিভিন্ন খনিজের সঙ্গে প্রাকৃতিক কার্বন ডাই-অক্সাইড(CO2) -এর রাসায়নিক সংযোগের ফলে যে বিক্রিয়া ঘটে তাতে শিলা বিয়োজিত হয় এবং মূল খনিজগুলো নতুন খনিজে পরিণত হয়ে সহজেই ক্ষয়প্রাপ্ত হয় । এই প্রক্রিয়াকে অঙ্গারযোজন বা কার্বনিকরণ বলে। চুনাপাথর যুক্ত অঞ্চলে চুনাপাথর এই প্রক্রিয়ায় বিয়োজিত এবং ক্রমাগত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে বিভিন্ন ভূমিরূপ গঠন করে।
(খ) জলযোজন বা আর্দ্রকরণ :- রাসায়নিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতি গুলোর মধ্যে জলযোজন বা আদ্রকরণ অন্যতম একটি পদ্ধতি। শিলাস্তরের মধ্যে অবস্থিত কোনো খনিজ পদার্থের সঙ্গে জল যুক্ত হলে যে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে তার ফলে খনিজ পদার্থটির আয়তন বৃদ্ধি পায় এবং রাসায়নিক ধর্মের পরিবর্তন হয়ে খনিজটি বিয়োজিত হয় । এই প্রক্রিয়াকে জলযোজন বা আর্দ্রকরণ বলে। উৎকৃষ্ট লৌহ আকরিক ‘হেমাটাইট' পাথরের সঙ্গে জলযুক্ত হলে যে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে, তার ফলে ‘লিমোনাইট’ নামে নিকৃষ্ট লোহার সৃষ্টি হয়, যা অতি সহজেই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
(গ) জারণ :- রাসায়নিক আবহবিকারের বিভিন্ন পদ্ধতি গুলোর মধ্যে জারণ হল অন্যতম একটি পদ্ধতি। খনিজের সঙ্গে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় অক্সিজেন (O2) মিশলে তাকে জারণ বলে। লোহা যখন ফেরাস অক্সাইড রূপে অবস্থান করে তা সহজে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না, কিন্তু লোহার সঙ্গে বাতাসের অক্সিজেন যুক্ত হলে লোহার উপরিভাগে হলুদ বা বাদামি রঙের একটি নতুন যৌগ পদার্থ তৈরি হয় এবং লোহা খুব সহজেই ক্ষয় পায়।
P প্রশ্ন ভালো কিন্তু পড়ার টাইম নেই
উত্তরমুছুন