পঞ্চম অধ্যায়
বিংশ শতকে ইউরোপ
১। বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-
(১.১) রক্তাক্ত রবিবার কবে ঘটেছিল –
(ক) ১৯০৩ সালে
(খ) ১৯০৪ সালে
(গ) ১৯০৫ সালে
(ঘ) ১৯০৬ সালে
উত্তরঃ- (গ) ১৯০৫ সালে
(১.২) ‘নতুন অর্থনৈতিক নীতি’ প্রবর্তিত হয় –
(ক) ১৯২৪ সালে
(খ) ১৯২৩ সালে
(গ) ১৯২২ সালে
(ঘ) ১৯২১ সালে
উত্তরঃ- (ঘ) ১৯২১ সালে
(১.৩) উড্রো উইলসন চোদ্দো দফা নীতি ঘোষণা করেছিলেন –
(ক) ১৯১৬ সালে
(খ) ১৯১৭ সালে
(গ) ১৯১৮ সালে
(ঘ) ১৯১৯ সালে
উত্তরঃ- (গ) ১৯১৮ সালে
(১.৪) ভার্সাই সন্ধির শর্তানুযায়ী জার্মানির উপর যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ রূপে যে পরিমান অর্থের বোঝা চাপানো হয় তা হল –
(ক) ৩৬০ কোটি পাউন্ড
(খ) ৪৬০ কোটি পাউন্ড
(গ) ৫৬০ কোটি পাউন্ড
(ঘ) ৬৬০ কোটি পাউন্ড
উত্তরঃ- (ঘ) ৬৬০ কোটি পাউন্ড
(১.৫) জার্মানির যে শহরে প্রজাতন্ত্র গঠিত হয় তা হল –
(ক) ন্যুরেমবার্গ
(খ) বার্লিন
(গ) ভাইমার
(ঘ) মিউনিখ
উত্তরঃ- (গ) ভাইমার
(১.৬) ইউরোপে ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মহড়া’ নামে পরিচিত হল –
(ক) মাঞ্চুরিয়া অভিযান
(খ) পোল্যান্ড আক্রমণ
(গ) স্পেনের গৃহযুদ্ধ
(ঘ) আবিসিনিয়া দখল
উত্তরঃ- (গ) স্পেনের গৃহযুদ্ধ
২। অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-
(২.১) সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার আগে রাশিয়ায় কোন্ বংশের শাসন প্রতিষ্ঠা ছিল?
উত্তরঃ- রোমানভ বংশ
(২.২) রাশিয়ায় সাম্যবাদী সরকারের প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তরঃ- লেনিন
(২.৩) কত খ্রিস্টাব্দে রুশ বিপ্লব হয়েছিল?
উত্তরঃ- 1917 খ্রিস্টাব্দে
(২.৪) মুসোলিনির উপাধি কি ছিল?
উত্তরঃ- ইলদ্যুচে
(২.৫) মেঁই ক্যাম্প গ্রন্থটির রচয়িতা কে?
উত্তরঃ- হিটলার
(২.৬) ইতালিতে ফ্যাসিস্টদলের একনায়কতন্ত্র কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তরঃ- মুসোলিনি
(২.৭) জার্মানিতে নাৎসি দলের একনায়কতন্ত্র কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তরঃ- হিটলার
(২.৮) স্পেনে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা কে করেছিলেন?
উত্তরঃ- জেনারেল ফ্রাঙ্কো
(২.৯) জাতিসংঘ কত খ্রিস্টাব্দে গঠিত হয়েছিল?
উত্তরঃ- 1919 খ্রিস্টাব্দে
(২.১০) স্পেনের গৃহযুদ্ধ কত সালে হয়েছিল?
উত্তরঃ- 1939 খ্রিস্টাব্দে
(২.১১) বলশেভিক দলের নেতা কে ছিলেন?
উত্তরঃ- লেনিন
(২.১২) দুজন রুশ সাহিত্যিকের নাম লেখ।
উত্তরঃ- গোর্গি ও তলস্তই
(২.১৩) এপ্রিল থিসিস কে ঘোষণা করেন?
উত্তরঃ- লেনিন (1917 খ্রিস্টাব্দে)
(২.১৪) হিটলারের উপাধি কি ছিল?
উত্তরঃ- ফ্যুয়েরার
৩। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-
(৩.১) এপ্রিল থিসিস বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ- রাশিয়ায় বলশেভিক দলের নেতা লেনিন স্বদেশের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এক নতুন মতবাদ ব্যক্ত করেন যা এপ্রিল থিসিস নামে পরিচিত। এই মতবাদে বলা হয় যে জারতন্ত্রের পতনের পর বুর্জোয়া প্রজাতন্ত্রী সরকারের পতন ঘটিয়ে সোভিয়েত গুলির হাতে ক্ষমতা তুলে দেয়া হবে। দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা, উৎপাদিত দ্রব্যের সুষম বন্টন, ক্ষতিপূরণ ছাড়ায় কৃষকদের মধ্যে জমি বন্টন ও শিল্প ব্যাংক ইত্যাদি জাতীয়করণ করে সর্বহারা একনায়কতন্ত্র গড়ে তোলা হবে।
(৩.২) নব অর্থনৈতিক নীতি বা New Economic Policy কি?
উত্তরঃ- বলশেভিক বিপ্লবের পর রাশিয়ায় কৃষি ও শিল্প ক্ষেত্রে বিপর্যয় দেখা দিলে বাস্তববাদী প্রেসিডেন্ট বিশুদ্ধ সমাজতন্ত্রের পথ থেকে সরে এসে এক নতুন অর্থনৈতিক পদক্ষেপ ঘোষণা করেন। এটি নব অর্থনৈতিক নীতি বা New Economic Policy নামে পরিচিত।
(৩.৩) উড্রো উইলসনের চোদ্দো দফা নীতি বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ- বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র রক্ষা, ইউরোপের পুনর্গঠন প্রভৃতি উদ্দেশ্যে মার্কিন রাষ্ট্রপতি উইলসন 1918 খ্রিস্টাব্দের 8 জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেসে তার বিখ্যাত চোদ্দো দফা নীতি ঘোষণা করেন।
(৩.৪) পোলিশ করিডোর কি?
উত্তরঃ- পোল্যান্ড যাতে সমুদ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারে সে উদ্দেশ্যে ভার্সাই সন্ধি দ্বারা পোল্যান্ডকে জার্মানির মধ্য দিয়ে একটি রাস্তা দেয়া হয়। এটি পোলিশ করিডোর নামে পরিচিত।
(৩.৫) ভার্সাই সন্ধির প্রধান দুটি শর্ত উল্লেখ কর?
উত্তরঃ- ভার্সাই সন্ধির দুটি উল্লেখযোগ্য শর্ত হলো - (১) ভার্সাই সন্ধির দ্বারা জার্মানির উপর 660 কোটি পাউন্ড আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয় (২) জার্মানির সামরিক শক্তি অত্যন্ত দুর্বল করা হয়।
(৩.৬) ফ্যাসিবাদ বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ- ফ্যাসিবাদ প্রকৃতপক্ষে ইতালিতে বেনিতো মুসোলিনির নেতৃত্বে গঠিত এবং ফ্যাসিস্ট দল পরিচালিত একটি বিশেষ রাজনৈতিক মতবাদ। রাষ্ট্র বিজ্ঞানীদের মতে উগ্র জাতীয়তাবাদী ও আগ্রাসী সাম্রাজ্যবাদী মতবাদটি হলো ফ্যাসিবাদ।
(৩.৭) নাৎসিবাদ বলতে কি বোঝ?
উত্তরঃ- নাৎসিবাদ বলতে জার্মানির একনায়কতান্ত্রিক শাসক হিটলার ও তার দল কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত স্বৈরাচারী, স্বেচ্ছাচারী ও অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে বোঝায়।
(৩.৮) কবে ও কাদের মধ্যে রোম বার্লিন টোকিও অক্ষ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়?
উত্তরঃ- 1932 খ্রিস্টাব্দে ইতালি জার্মানি ও জাপানের মধ্যে রোম বার্লিন টোকিও অক্ষ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
(৩.৯) ভাইমার প্রজাতন্ত্র বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ- প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের পরাজয়ের পর জার্মানির আন্তর্জাতিক মর্যাদা নষ্ট হয় এবং জার্মান সম্রাট কাইজার দ্বিতীয় উইলিয়াম এর জনপ্রিয়তা হ্রাস পেতে থাকে। ক্ষতিপূরণ, খাদ্যাভাব ও নিদারুণ অর্থ কষ্টে জর্জরিত জার্মান জাতি রুশ বিপ্লবের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে একটি অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করেন। রাজতন্ত্রের পতন অবসন্ন এ কথা উপলব্ধি করে কাইজার দ্বিতীয় উইলিয়াম সিংহাসন ত্যাগ করে হল্যান্ডে আশ্রয় গ্রহণ করেন। 1919 খ্রিস্টাব্দে জার্মানি সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক দলের নেতা ফ্রিডারিক ইবার্ট প্রজাতান্ত্রিক সরকার গঠন করেন। 1919 খ্রিস্টাব্দে 6 ফেব্রুয়ারি ভাইমার শহরে নব নির্বাচিত জাতীয় প্রজাতন্ত্রী আইনসভার অধিবেশন বসে। ভাইমার শহরে অধিবেশন হয়েছিল বলে এই প্রজাতন্ত্র ভাইমার প্রজাতন্ত্র নামে পরিচিত।
(৩.১০) রক্তাক্ত রবিবার বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ- 1905 খ্রিস্টাব্দে 9 জানুয়ারি রবিবার রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে প্রায় ছয় হাজার শ্রমিক শান্তিপূর্ণ মিছিল করেন। শ্রমিকদের দাবি ছিল - রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দান, সংবিধান সভা প্রতিষ্ঠিত এবং শ্রমিকদের কাজের সময় আট ঘন্টা নির্ধারণ করা। এই মিছিলে জারের পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে এক হাজারেরও বেশি শ্রমিক নিহত ও দুই হাজারেরও বেশি শ্রমিক আহত হয়। ইতিহাসের এই ঘটনা রক্তাক্ত রবিবার নামে পরিচিত।
৪। রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-
(৪.১) বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারন গুলি লেখ।
উত্তরঃ- প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বিশাল সৈন্য বাহিনী, সেনাপতিদের দক্ষতা ও যোগ্যতা এবং উন্নত সমরশাস্ত্র থাকা সত্ত্বেও জার্মানি পরাজিত হয়। জার্মানির পরাজয়ের পাশ্চাত্যে কারণগুলি হল -
প্রথমত, যুদ্ধ হয়েছিল দুটি জোটের মধ্যে, শুধু জার্মানি সঙ্গে অন্য কোন একটি রাষ্ট্রের নয়। জার্মানির জোটভুক্ত অন্যান্য দেশগুলো তুলনায় দুর্বল হওয়ায় অধিকাংশ দায়িত্ব ছিল জার্মানির, ফলে তাদের পক্ষে মিত্রশক্তির মোকাবেলা করা বেশিদিন সম্ভব হয়নি।
দ্বিতীয়ত, জার্মানির পর্যাপ্ত আধুনিক সমরাস্ত্র থাকলেও ইঙ্গ-ফরাসি জোটে তুলনায় তা ছিল অনেক কম।
তৃতীয়ত, ইঙ্গ-ফরাসি জোটের বিশ্বব্যাপী উপনিবেশ থাকায় সেখান থেকে অর্থ, সৈন ও অন্যান্য উপকরণ সংগ্রহ করে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ করার ক্ষমতা তাদের ছিল। অন্যদিকে অস্ট্রো জার্মানি জোটের উপনিবেশ থাকলেও তা থেকে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের উপর জনি উপকরণ সংগ্রহ করা সম্ভব ছিল না।
চতুর্থত, জার্মানির আত্মরক্ষার জন্য যথেষ্ট জায়গা ছিল না। রাশিয়ার মতো বিশাল ভূমি ভাগ না থাকায় জার্মানির পক্ষে পাশ্চাত্য মুখী যুদ্ধ করা সম্ভব ছিল না।
পঞ্চমত, কূটনৈতিক ব্যর্থতা ও জার্মানির পরাজয়ের অন্যতম কারণ। জার্মানি কূটনীতির দ্বারা মিত্রশক্তির মধ্যে ভাঙন ধরাতে পারেনি, কিন্তু মিত্রশক্তির কূটনীতি ফলে যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিন পরে ইতালি ইঙ্গ-ফরাসি পক্ষে যোগদান করে।
(৪.২) জার্মানিতে হিটলারের নেতৃত্বে নাৎসি দলের উত্থানের পটভূমি আলোচনা করো।
উত্তরঃ- প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত জার্মানিতে রাজনৈতিক অস্থিরতায় ও অর্থনৈতিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। যার ফলস্বরূপ ভাইমার প্রজাতন্ত্রের পতন ঘটে এবং নাৎসি নেতা এডলফ হিটলার জার্মানির ক্ষমতা দখল করেন।
জার্মানিতে হিটলার ও নাৎসি দলের ক্ষমতা লাভ কোন চমকপ্রদ, আকস্মিক বৈপ্লবিক ঘটনা ছিল না। হিটলারের নেতৃত্বে নাৎসি দলের ক্ষমতা দখলের প্রেক্ষাপট ছিল -
(১) ভার্সাই সন্ধির ভূমিকাঃ-
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর মিত্র শক্তি জার্মানির উপর অন্যায় ও বৈষম্যমূলক শাসন চাপিয়ে দিলে জার্মানবাসী ক্ষুব্ধ হয়।
(২) অর্থনৈতিক সংকটঃ-
যুদ্ধপরবর্তী জার্মানিতে প্রবল অর্থনৈতিক সংকট, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, খাদ্যাভাব প্রকৃতির জটিল আকার ধারণ করে। এই অবস্থায় হিটলার জার্মান বাসীকে সুদিনের স্বপ্ন দেখে প্রচার চালানো।
(৩) ইহুদি বিদ্বেষঃ-
জার্মানির সংখ্যালঘু ইহুদিরা ছিল ধনী, উচ্চ শিক্ষিত ও উচ্চ পদে চাকরি করায় যার মানে সাধারন মানুষ ইহুদিদের হিংসা করত। এই সুযোগে হিটলার ইহুদীদের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে ইহুদীবাসীর মন জয় করেন।
(৪) হিটলারের ব্যক্তিত্বঃ-
হিটলারের চমকপ্রদ ব্যক্তিত্ব, অসাধারণ কর্মদক্ষতা ও সাংগঠনিক শক্তি, আবেগপ্রবণ বক্তৃতা নাৎসি দলের ক্ষমতা দখলের সহায়তা করে।
(৫) রাজনৈতিক অস্থিরতাঃ-
ভার্সাই সন্ধির পরবর্তীকালে জার্মানিতে প্রবল রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা যায়। 1919 - 1933 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সে দেশে 21 টি মন্ত্রিসভা ক্ষমতা দখল করে।
(৪.৩) ইতালিতে ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থান কিভাবে হয়েছিল?
উত্তরঃ- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ইতালিতে অর্থনৈতিক সংকট তীব্র হয়ে উঠলে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ে। ফলস্বরূপ দেশের সংকটজনক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে মুসোলিনি নেতৃত্বে ফ্যাসিস্ট দল 1922 খ্রিস্টাব্দে ইতালির শাসন ক্ষমতা দখল করে।
যে ইতালিতে মুসোলিনির নেতৃত্বে ফ্যাসিস্ট দলের ক্ষমতা দখলের প্রেক্ষাপট গুলি হল -
(১) অর্থনৈতিক দুর্দশাঃ-
যুদ্ধের পর ইতালি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, খাদ্যাভাব, বেকারত্ব, বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি প্রতিরোধে সরকার ব্যর্থ হলে ইতালিবাসীদের ক্ষোভ চরমে উঠে।
(২) ভার্সাই সন্ধির ত্রুটিঃ-
মিত্রপক্ষের সঙ্গে যুদ্ধে যোগদান কারী ইতালি যুদ্ধের পর ভার্সাই সন্ধির দ্বারা আলবেনিয়া, ফউম বন্দর, আফ্রিকার উপনিবেশ প্রভৃতি লাভে ব্যর্থ হয়। ফলে ক্ষুব্ধ ইতালি বাসি সে দেশের প্রচলিত সরকারের যোগ্যতা সম্পর্কে প্রশ্ন তোলে।
(৩) ফ্যাসিস্ট দল গঠনঃ-
মুসোলিনি ইতালীর মিলান শহরে 1919 খ্রিস্টাব্দে বেকার সৈনিক ও দেশপ্রেমিকদের এক সমাবেশে মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট দল প্রতিষ্ঠা করেন।
(৪) মুসোলিনির প্রচারঃ-
মুসোলিনি প্রচার করেন যে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ইতালি মিত্রপক্ষের সঙ্গে যুদ্ধ করা সত্ত্বেও যুদ্ধের পর ভার্সাই সন্ধি তে ইতালিকে তার প্রাপ্য স্থানগুলি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তার প্রচার ইতালির সেনা অফিসার ও বেকার যুবকদের উদ্দীপ্ত করে।
(৫) ক্ষমতা দখলঃ-
মুসোলিনির রোম অভিযানের ফলে রোমের ফ্যাক্টা মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করেন। রাজা তৃতীয় ভিক্টর ইমানুয়েল তাকে মন্ত্রিসভা গঠনের আহ্বান জানালে তার নেতৃত্বে ফ্যাসিস্ট দল ইতালির ক্ষমতা দখল করে।
(৪.৪) স্পেনের গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষাপট ও ফলাফল আলোচনা করো।
উত্তরঃ- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে স্পেনে চরম রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়। এই অবস্থায় সামরিক শাসন প্রায়মো ডি রিভেরা দেশে একনায়কতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর 1936 খ্রিস্টাব্দে স্পেনে পপুলার ফ্রন্ট নামে একটি জোট সরকার গঠিত হয়। কিন্তু এই সরকারের বিরুদ্ধে দক্ষিণপন্থীরা দেশের নানা স্থানে দাঙ্গা-হাঙ্গামা বাধায়। স্পেন সরকারের বিরুদ্ধে এই বিদ্রোহে প্রজাতন্ত্রী, সমাজতান্ত্রিক ও কমিউনিস্টরা সরকার পক্ষকে সমর্থন করেন। অন্যদিকে ফ্যালানজিস্ট, নেশনালজিস্ট, কার্লিস্ট প্রভৃতি দক্ষিণপন্থী দল, শিল্পপতি, ভূস্বামী ও যাজকরা জেনারেল ফ্রাঙ্কোকে সমর্থন করেন। ফলে স্পেনে উভয়পক্ষের মধ্যে স্পেনে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।
স্পেনে জেনারেল ফ্রাঙ্কো নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী পক্ষ এবং প্রজাতন্ত্রী সরকারের মধ্যে দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের পর সে দেশের শাসন ক্ষমতা দখল করেন এবং একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন।
স্পেনের গৃহযুদ্ধের ফলাফল গুলো নিয়ে আলোচনা করা হল –
(১) বিশ্বযুদ্ধের মহড়াঃ-
স্পেনের গৃহযুদ্ধে জেনারেল ফ্রাঙ্কো এর পক্ষে অংশ নিয়ে জার্মানির হিটলার আসন্ন বিশ্বযুদ্ধের আগে তার অস্ত্রশস্ত্র ও বিমান বাহিনীর শক্তি পরীক্ষার সুযোগ পান। তাই এই গৃহযুদ্ধকে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের মহড়া বলা হয়।
(২) হিটলার-মুসোলিনির সুবিধাঃ-
একনায়ক ফ্রাঙ্কো, জার্মানির একনায়ক হিটলার এবং ইতালির একনায়ক মুসোলিনির পক্ষ গ্রহণ করলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে হিটলার-মুসোলিনির শক্তি যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়।
(৩) ইঙ্গ-ফরাসি শক্তিঃ-
স্পেনের গৃহযুদ্ধে নিরপেক্ষ থেকে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের কূটনৈতিক পরাজয় ঘটে। কারণ জার্মানি ও ইতালি এই যুদ্ধে অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজেদের শক্তি যথেষ্ট বৃদ্ধি করেন।
(৪) জাতিসংঘের ব্যর্থতাঃ-
স্পেনের গৃহযুদ্ধে জাতিসংঘ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। ফলে জাতিসঙ্ঘের দুর্বলতা ও ব্যর্থতা প্রকট হয়ে ওঠে।
আর্য সামাজিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দেশ কোনটি ?
উত্তরমুছুনUttam
উত্তরমুছুনThank you
উত্তরমুছুন