LightBlog
West Bengal Class 9 History Suggestion 2023 | নবম শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন ২০২৩ | চতুর্থ অধ্যায় | শিল্প বিপ্লব, উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ
Type Here to Get Search Results !

West Bengal Class 9 History Suggestion 2023 | নবম শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন ২০২৩ | চতুর্থ অধ্যায় | শিল্প বিপ্লব, উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ

চতুর্থ অধ্যায়

শিল্প বিপ্লব, উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ

West Bengal Class 9 History Suggestion 2023 | নবম শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন ২০২৩ | চতুর্থ অধ্যায় | শিল্প বিপ্লব, উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ
West Bengal Class 9 History Suggestion 2023 | নবম শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন ২০২৩ | চতুর্থ অধ্যায় | শিল্প বিপ্লব, উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ

১। বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-

(১.১) ‘সেফ্‌টি ল্যাম্প’ আবিষ্কার করেন – 

(ক) জন কে 

(খ) হামফ্রি ডেভি 

(গ) জেমস ওয়াট 

(ঘ) হারগ্রিভস

উত্তরঃ-  (খ) হামফ্রি ডেভি

(১.২) সমাজতন্ত্রবাদ কথাটি প্রথম প্রয়োগ করেন – 

(ক) প্রুধোঁ 

(খ) কার্ল মার্কস 

(গ) সাঁ সিমোঁ 

(ঘ) রবার্ট আওয়েন

উত্তরঃ- (ঘ) রবার্ট আওয়েন

(১.৩) ‘কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো’ প্রকাশিত হয়েছিল – 

(ক) ১৮৪৪ সালে 

(খ) ১৮৪৬ সালে 

(গ) ১৮৪৮ সালে 

(ঘ) ১৮৫০ সালে

উত্তরঃ- (গ) ১৮৪৮ সালে

(১.৪) নৈরাজ্যবাদের জনক নামে পরিচিত – 

(ক) জোসেফ প্রুধোঁ 

(খ) সাঁ সিমোঁ 

(গ) অগাস্ত ব্লাঙ্কি 

(ঘ) চার্লস ফুরিয়ার 

উত্তরঃ- (ক) জোসেফ প্রুধোঁ

(১.৫) ইংল্যান্ডের শ্রেষ্ঠ উপনিবেশ ছিল – 

(ক) অস্ট্রেলিয়া 

(খ) চিন 

(গ) ভারত 

(ঘ) নিউজিল্যান্ড

উত্তরঃ- (গ) ভারত

(১.৬) দ্বিতীয় বল্কান যুদ্ধ হয়েছিল – 

(ক) ১৯১১ সালে 

(খ) ১৯১২ সালে 

(গ) ১৯১৩ সালে 

(ঘ) ১৯১৪ সালে

উত্তরঃ- (খ) ১৯১২ সালে

২। অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-

(২.১) ওয়াটার ফ্রেম কে আবিষ্কার করেছিলেন?

উত্তরঃ- আর্করাইট

(২.২) কে উড়ন্ত মাকু আবিষ্কার করেছিলেন? 

উত্তরঃ- জন কে

(২.৩) কোন্‌ সন্ধির দ্বারা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটে? 

উত্তরঃ- ভার্সাই সন্ধির দ্বারা

(২.৪) কাকে অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশ বলে? 

উত্তরঃ- আফ্রিকাকে

(২.৫) বাষ্পীয় ইঞ্জিন কে আবিষ্কার করেছিলেন?

উত্তরঃ- জেমস ওয়াট

(২.৬) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণটি কি? 

উত্তরঃ- সেরাজেভো হত্যাকাণ্ড

(২.৭) ভারতবর্ষ কাদের উপনিবেশ ছিল? 

উত্তরঃ- ইংল্যান্ড

(২.৮) কে স্পিনিং জেনি আবিষ্কার করেছিলেন? 

উত্তরঃ- হারগ্রিভস

(২.৯) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনা কবে হয়েছিল?

উত্তরঃ- 1914 খ্রিস্টাব্দে

(২.১০) সুয়েজ খাল কবে চালু হয়েছিল?

উত্তরঃ- 1869 সালে

(২.১১) দাস ক্যাপিটাল গ্রন্থটি কার রচনা?

উত্তরঃ- কাল মার্কস (1867)

(২.১২) ইংল্যান্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প শহরের নাম লেখ। 

উত্তরঃ- হ্যাম্পশায়ার

৩। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-

(৩.১) ইংল্যান্ডকে কেন ‘বিশ্বের কারখানা’ বলা হয়?

উত্তরঃ- অষ্টাদশ শতকের বিশ্বে প্রথম ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লবের সূচনা ও প্রসার ঘটে। তখন থেকেই সে দেশে প্রচুর শিল্প কারখানা স্থাপিত হয় এবং প্রচুর শিল্পসামগ্রী উৎপাদিত হতে থাকে যেগুলি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাজারে বিক্রির জন্য যায়। শিল্প উৎপাদনে ইংল্যান্ড হয়ে ওঠে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দেশ। এইজন্য ইংল্যান্ডকে ‘বিশ্বের কারখানা’ বলা হত।

(৩.২) ফ্যাক্টরি প্রথা বলতে কি বোঝো?

উত্তরঃ- শিল্প কল-কারখানাগুলি মূলত ছিল মালিক শ্রেণীর অধীনে। তারা মজুরির বিনিময়ে শ্রমিকদের বিনিয়োগ করত। কাজের সন্ধানে দলবেঁধে লোকজন কারখানা ব্যবস্থায় যোগদান করতে থাকে। মালিক শ্রেণীও সুযোগ বুঝে এই সকল শ্রমিকদের ফ্যাক্টরি প্রথা অন্তর্ভুক্ত করে নেয়। এই প্রথা অনুযায়ী শ্রমিকরা তাদের মালিক এর মত অনুযায়ী শিল্প কল কারখানায় কাজ করতো। মালিকদের অনুমতি ছাড়া তারা শিল্পাঞ্চলের বাইরে বেরোতে পারত না। ফ্যাক্টরি প্রথাটি গড়ে উঠেছিল মালিক শ্রেণীর মুনাফার দিকে লক্ষ্য রেখে।

(৩.৩) ঘেটো কি?

উত্তরঃ- ঘেটো হল শহরের কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলে যেখানে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু কিছু মানুষ বসবাস করে। ভেনিস শহরে ইহুদিদের বসবাসের এলাকা নির্দিষ্ট করতে গিয়ে 'ঘেটো' শব্দটি ব্যবহার করা হয়। পরে বহিরাগত মানুষের বসবাসের নির্দিষ্ট অঞ্চলকে ঘেটো নামে চিহ্নিত করা হয়।

(৩.৪) প্যারি কমিউন বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ- 1870 খ্রিস্টাব্দ থেকে 1871 খ্রিস্টাব্দের ফ্রাঙ্কো - প্রাশিয়ান যুদ্ধে ফরাসি সম্রাট তৃতীয় নেপোলিয়ন পরাজিত ও বন্দী হওয়ার পর রাজতন্ত্রী ফ্রান্সের প্রাচীন রাজধানী ভার্সাইতে একটি প্রজাতান্ত্রিক সরকার  প্রতিষ্ঠিত হয়। এর ফলস্বরূপ বিপ্লবীরা ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে সমাজতান্ত্রী, মার্কসবাদী এবং পুরনো জ্যাকোবিন নেতাদের উদ্যোগে একটি সমাজতন্ত্রী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করে। একেই প্যারি কমিউন বলা হত।

(৩.৫) সেরাজেভো হত্যাকাণ্ড বলতে কি বোঝা?

উত্তরঃ- 1914 খ্রিস্টাব্দের 28 শে জুন অস্ট্রিয়ার যুবরাজ ফার্দিনান্দ ও তার পত্নী সোফিয়া বসনিয়ার রাজধানী শহরে ভ্রমন করতে এসে ব্লাক হ্যান্ড নামক সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হন। এই ঘটনা সেরাজেভো হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত। এই ঘটনার পর অস্ট্রিয়া সার্বিয়ার উপরে হামলা করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করে। এজন্য সেরাজেভো হত্যাকাণ্ড কে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ বলা হয়ে থাকে।

(৩.৬) মুক্তদ্বার নীতি ঘোষণায় কি বলা হয়?

উত্তরঃ- মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব স্যার জন হে কর্তৃক ঘোষিত মুক্তদ্বার নীতি তে বলা হয় যে - (১) চীন সব দেশের কাছে সমান। (২) বিভিন্ন শক্তির দখলে থাকা চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে আমেরিকাকে বাণিজ্যের সমান সুযোগ দিতে হবে।

(৩.৭) সুয়েজ খাল খননের উদ্দেশ্য কি ছিল?

উত্তরঃ- ইউরোপে শিল্পোন্নত দেশগুলি জলপথে আফ্রিকা মহাদেশের চারপাশের সুদীর্ঘ পথ অতিক্রম করে পূর্বের দেশ গুলির সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ রক্ষা করত। এর ফলে তাদের প্রচুর সময় ও অর্থ ব্যয় হতো। পাশ্চাত্যের সঙ্গে প্রাচ্যের যোগাযোগ সহজ করার উদ্দেশ্যে মিশরের ভূখন্ডের মধ্যে সুয়েজ খালের খনন করা হয়।

(৩.৮) ত্রিশক্তি চুক্তি কবে ও কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল?

উত্তরঃ- 1882 খ্রিস্টাব্দে ইতালি, জার্মানি ও অষ্ট্রিয়ার সঙ্গে ত্রিশক্তি মৈত্রী স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

(৩.৯) ত্রিশক্তি আঁতাত কবে ও কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল?

উত্তরঃ- 1907 খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও রাশিয়ার মধ্যে ত্রিশক্তি আঁতাত স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

(৩.১০) মার্কসবাদের প্রধান নীতি গুলি কি ছিল?

উত্তরঃ- কার্ল মার্কস এর বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের মতাদর্শ মার্কসবাদ নামে পরিচিত। মার্কসবাদের প্রধান নীতি গুলি ছিল - (১) দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ (২) ঐতিহাসিক বস্তুবাদ (৩) উদ্বৃত্ত মূল্য তত্ত্ব (৪) শ্রেণী সংগ্রাম এবং (৫) বিপ্লব।

৪। রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-

(৪.১) ইংল্যান্ডে সর্বপ্রথম শিল্প বিপ্লব হয়েছিল কেন?

উত্তরঃ- ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব সংগঠিত হওয়ার নানারকম কারণের মধ্যে একটি বড়ো কারণ ছিল পুঁজির জোগান। এই পুঁজির অনেকটাই এসেছিল ঔপনিবেশিক ব্যাবসাবাণিজ্য থেকে। ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লবের ফলে দুটি সমস্যা দেখা দেয়। কাঁচামালের অভাব এবং উদ্বৃত্ত দ্রব্যসামগ্রী বিক্রয়ের জন্যে বাজার। এই দুটি সমস্যা সমাধানের একটি উপায় হল উপনিবেশ স্থাপন। খনিজ ও বাণিজ্যিক কৃষিতে সমৃদ্ধ উপনিবেশ থেকে একদিকে যেমন কাঁচামাল সংগ্রহ করা সম্ভব, তেমনই অন্যদিকে সেখানেই উদ্বৃত্ত দ্রব্যসামগ্রীর বিক্রয়েরও সুযোগ ছিল। একাজ অবশ্যই সহজসাধ্য ছিলনা।   

   উপনিবেশগুলির পক্ষে এই ব্যবস্থা মেনে নেওয়া সম্ভব ছিলনা। ইংল্যান্ড আমেরিকায় তার এই নীতি অনুসরণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। ১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকা স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। কিন্তু ভারতসহ এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ইংরেজরা বাহুবলে তাদের উপনিবেশ ও সাম্রাজ্য স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছিল। সাধারণভাবে উপনিবেশবাদ বলতে বোঝায় এমন এক ব্যবস্থা যাতে মাতৃভূমির স্বার্থে বাহুবলে অধিকৃত এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলিকে শোষণ করা হয়। 

   ঔপনিবেশিক অর্থনীতিতে স্থানীয় শিল্পের যাতে কোনো বিকাশ না-হয়, অথবা যেখানে উন্নত হস্ত বা কুটির শিল্প আছে, তার যাতে পতন বা ধবংস অনিবার্য হয়, সেদিকে লক্ষ রাখা হয়। অর্থাৎ, উপনিবেশগুলির স্বাধীনভাবে অর্থনীতি নির্ধারণ করবার কোন সুযোগ ও স্বাধীনতা থাকে না। ইংল্যান্ডে প্রথম শিল্প বিপ্লব হওয়ায় উপনিবেশ স্থাপনে ইংল্যান্ড ছিল সবচেয়ে অগ্রণী। তার সাম্রাজ্য ছিল বিশ্বজুড়ে। কথাই ছিল, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে কখনও সূর্য অস্ত যায়না। তারপরেই ছিল ফ্রান্সের স্থান, যদিও ফ্রান্সে শিল্প বিপ্লব হয়েছিল বেশ কিছুটা দেরিতে। 

   জার্মানি, রাশিয়া ও ইতালিতে আরও পরে শিল্প বিপ্লব হয়েছিল বলে উপনিবেশ স্থাপনের প্রতিযোগিতায় তারা অনেক পিছিয়ে ছিল। যাই হোক, উনিশ শতকের শেষ পর্বে আফ্রিকার প্রায় সর্বত্র এবং এশিয়ার এক বৃহৎ অংশ জুড়ে উপনিবেশ স্থাপিত হয়েছিল।

(৪.২) ঔপনিবেশিক শক্তি কর্তৃক আফ্রিকার ব্যবচ্ছেদ উল্লেখ কর।

উত্তরঃ- আফ্রিকা দখলের জন্য উপনিবেশিক দেশ গুলির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। এই প্রতিদ্বন্ধিতার নিয়ম-কানুন ঠিক করে নেয়া হয়েছিল 1884 থেকে 1885 খ্রিস্টাব্দ বার্লিন কনফারেন্সে। এই সভায় দাস ব্যবসার নিন্দা করে প্রস্তাব নেওয়ার পাশাপাশি স্থির হয় যে, কঙ্গো নদীর অববাহিকা বরাবর বেলজিয়ামের অংশ দ্বিতীয় লিওপোন্ড এর অধীনে থাকবে। কোন রাষ্ট্র অপরকে না জানিয়ে আফ্রিকার কোন অংশের দাবি জানাবে না এবং আফ্রিকার কোন অংশে দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রথমে ওই অঞ্চলকে আগে অধিকার করতে হবে।

   কিন্তু এই সমস্ত নিয়মকানুন মেনে বা না মেনে আফ্রিকার বিভিন্ন অংশে ইউরোপীয় আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। বৃটেনের দখলে যাই সুদান, নাইজেরিয়া, কেনিয়া, উগান্ডা এবং কেপ কলোনি। দক্ষিণ আফ্রিকার দখল নিয়ে ব্রিটেনে লড়াই বুয়োরদের সঙ্গে। ফরাসিরা পশ্চিম দিক থেকে আফ্রিকার দখল নেয়। সেনেগাল, মালি, নাইজের, আলজিরিয়া প্রভৃতি অঞ্চল তাদের অধিকার ছিল। জার্মানি দখল করে আফ্রিকার পূর্ব এবং দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ। বড় মাপের শিল্পোন্নত দেশ না হওয়া সত্ত্বেও ইতালি কিন্তু অন্যদের মতোই ও উপনিবেশ তৈরি করতে চেয়েছিল। ইতালি সোমালিল্যান্ড বা ইরিট্রিয়ার বেশ কিছু অঞ্চলে তার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে। প্রাথমিকভাবে নাটাল, ট্রান্সভাল এবং অরেঞ্জ নদী উপত্যকা অঞ্চলে উপনিবেশ স্থাপন করে ওলন্দাজরা। পরবর্তী সময়ে ওই অঞ্চল গুলিকে ব্রিটেন ঐক্যবদ্ধ করে 1910 খ্রিস্টাব্দে এর নামকরণ করে 'ইউনিয়ন অব সাউথ আফ্রিকা'। এই সময় যে সমস্ত অঞ্চল গুলো কে কেন্দ্র করে ব্রিটেন, জার্মানি এবং ফ্রান্স পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হয়ে পড়েছিল তারমধ্যে আফ্রিকার সুদান, মরক্কো এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ছিল উল্লেখযোগ্য।

(৪.৩) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণগুলি বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ- 1871 থেকে 1914 খ্রিস্টাব্দে পর্যন্ত সময়কালে ইউরোপে বড় ধরনের কোনো যুদ্ধ না হলেও আপাত শক্তির আড়ালের বাতাসে বারুদের গন্ধ পাওয়া যায়। শক্তির আড়ালে যুদ্ধের এই পরিস্থিতি সশস্ত্র শান্তির যুদ্ধ নামে পরিচিত। উনিশো চোদ্দো খ্রিস্টাব্দে ইউরোপে শান্তি ভঙ্গ হয় এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে উঠে।

-:প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণ:-

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও মহাযুদ্ধের বিভিন্ন কারণ ছিল। যেমন -

(1) উগ্র জাতীয়তাবাদ :-

  বিশ শতকের শুরুতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অগ্র ও সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদের দ্রুত প্রসার ঘটতে থাকে। এই সময় ইউরোপের বিভিন্ন উগ্র জাতীয়তাবাদী মতবাদের উন্মেষ ঘটে এবং ইউরোপের প্রতিটি জাতি নিজের জাতির শ্রেষ্ঠ এবং অন্য জাতিকে নিকৃষ্ট বলে মনে করতে থাকেন। রাশিয়া ফ্রান্স জাপান প্রভৃতি দেশে ও জাতীয়তাবাদের ব্যাপক প্রসার ঘটে।

(2) জার্মানির আগ্রাসী নীতি :-

  কাইজার - (১) বিসমার্কের স্থিতিবস্তার নীতি ত্যাগ করে রুশ-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি বাতিল করেন। (২) রাশিয়ার বিরুদ্ধে অস্ট্রিয়ার আগ্রাসনের উৎসাহ দেয়। (৩) ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আফ্রিকায় বিরোধী বোয়ার এর প্রেসিডেন্ট ক্লুগারকে সমর্থন করেন। (৪) বার্লিন বাগদাদ রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা করেন।

(3) ফ্রান্সের ক্ষোভ :-

  ফ্রান্স সিডনির যুদ্ধে রাশিয়ার কাছে পরাজিত হলে কয়লা খনি সমৃদ্ধ আহসান ও লোরেইন নামক স্থানে দুটিকে জার্মানিকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। এই যুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহণ এবং আলসাস ও লোরেইন পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে ফ্রান্স জঙ্গি মনোভাব নিয়ে জার্মান বিরোধী জোট তৈরি করে এবং ইউরোপে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করে।

(4) মরক্কো সংকট :-

  ফ্রান্স আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপনের চেষ্টা করলে জার্মান কাইজার দ্বিতীয় উইলিয়াম ফ্রান্সের বিরুদ্ধে মরক্কো সুলতানের পাশে দাঁড়ান এবং প‍্যান্থার নামে একটি যুদ্ধজাহাজ কে মরক্কোর আগাদির বন্দরে ঢুকিয়ে দেন। ফলে ফ্রান্স এবং জার্মানি সম্পর্কে অবনতি ঘটে।

(5) সেরাজেভো হত্যাকাণ্ড :- 

   অস্ট্রিয়ার যুবরাজ ফার্দিনান্দ ও তার স্ত্রী সুফিয়া সার্বিক জাতি অধ্যুষিত বসনিয়া সফরে এলে তারা সেরাজেভো শহরে এক বসনীয়  ছাত্রের হাতে নিহত হন। অস্ট্রিয়া এ হত্যাকাণ্ডের জন্য প্রতিবেশী রাষ্ট্র সার্বিয়া কে দায়ী করে বিভিন্ন কঠোর শর্তাদি একটি চরমপত্র পাঠায়।

     অস্ট্রিয়ার চরমপত্রের কিছু শর্ত মানলে ও অবশিষ্ট শর্তগুলি বিষয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে একটি আন্তর্জাতিক বৈঠক ডাকার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু অস্ট্রিয়া এই প্রস্তাব অগ্রাহ্য করে সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেড আক্রমণ করে। কিছুদিনের মধ্যে ইউরোপ ও ইউরোপের বাইরের বিভিন্ন রাষ্ট্র  ভিন্ন ভিন্ন বিবদমান পক্ষ যোগ দিলে তা বিশ্বযুদ্ধে পরিণত হয়।

(৪.৪) বলকান সংকট বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ- ইউরোপের পূর্বদিকে ইজিয়ান সাগর ও ড‍্যানিয়ুব নদীর মধ্যবর্তী পার্বত্য অঞ্চল বলকান অঞ্চল নামে পরিচিত।

-:বলকান সংকট:-

(১) বলকান সমস্যা :-

  পঞ্চদশ থেকে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত বলকান অঞ্চলে তুর্কি মুসলিমদের প্রাধান্য ছিল। কিন্তু অষ্টাদশ শতক থেকে তুরস্কের দ্রুত পতন শুরু হলে এই অঞ্চলে রাজনৈতিক শূন্যতা দেখা দেয় এবং এই শূন্যতা পূরণে বিভিন্ন ইউরোপীয় শক্তি ছুটে এলে জটিল সমস্যা সৃষ্টি হয়। 

(২) অস্ট্রো - রুশ বিরোধ :- 

  তুরস্ক দুর্বল হয়ে পড়লে বলকান অঞ্চলে রাশিয়া আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু পরবর্তীকালে এই অঞ্চলে অস্ট্রিয়া ঢুকে পরলে  অস্ট্রো - রুশ বিরোধ শুরু হয়।

(৩) অস্ট্রো সার্ব বিরোধ :- 

  অস্ট্রিয়া বলকান অঞ্চলে স্লাভ জাতি অধ্যুষিত বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা রাজ্য দখল করলে স্লাভ জাতি অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। স্লাভ জাতির আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয় সার্বিয়া। ফলে সার্বিয়া অস্ট্রিয়ার বিরোধ বাধে।

(৪) বলকান লীগ :- 

  এদিকে তুরস্কের হাত থেকে মুক্তি লাভের উদ্দেশ্যে বলকানের স্লাভ জাতি সার্বিয়ার নেতৃত্বে বলকান লীগ গঠন করে। তারা গুপ্ত সমিতি গঠন ও গুপ্তহত্যার দ্বারা স্বাধীনতা লাভের পথে পা বাড়ায়। এভাবে বলকান অঞ্চলকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। যেমন - উত্তাল বলকান জাতীয়তাবাদ, অস্ট্রো - রুশ বিরোধ, অস্ট্রো - সার্ব বিরোধ প্রভৃতি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

5 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

LightBlog

AdsG

close