LightBlog
West Bengal Class 9 Bengali Suggestion 2023 | নবম শ্রেণীর বাংলা সাজেশন ২০২৩ | নব নব সৃষ্টি | সৈয়দ মুজতবা আলী
Type Here to Get Search Results !

West Bengal Class 9 Bengali Suggestion 2023 | নবম শ্রেণীর বাংলা সাজেশন ২০২৩ | নব নব সৃষ্টি | সৈয়দ মুজতবা আলী

নব নব সৃষ্টি
সৈয়দ মুজতবা আলী

West Bengal Class 9 Bengali Suggestion 2023 | নবম শ্রেণীর বাংলা সাজেশন ২০২৩ | নব নব সৃষ্টি | সৈয়দ মুজতবা আলী
West Bengal Class 9 Bengali Suggestion 2023 | নবম শ্রেণীর বাংলা সাজেশন ২০২৩ | নব নব সৃষ্টি | সৈয়দ মুজতবা আলী

নিচের বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :


প্রশ্নঃ 'নব নব সৃষ্টি' কার লেখা?

(ক) মুজতবা  আলী

(খ) সৈয়দ মুজতবা আলী

(গ) সৈয়দ মুজতবা সিরাজ

(ঘ) আবুল বাশার

উত্তর: (খ) সৈয়দ মুজতবা আলী


প্রশ্নঃ নতুন শব্দ প্রয়োজন হলে সংস্কৃত ভাষা-

(ক) নিজের ভান্ডারে অনুসন্ধান করে

(খ) অন্য ভাষা থেকে শব্দ ধার করে

(গ) নতুন শব্দ তৈরী করে নেয়

(ঘ) অন্য ভাষা থেকে শব্দ নিয়ে তাকে বদলে নেয়

উত্তর: (ক) নিজের ভান্ডারে অনুসন্ধান করে


প্রশ্নঃ ঈষৎ পরবর্তী যুগের ভাষা কোনটি?

(ক) গ্রিক

(খ) আবেস্তা

(গ) হিব্রু

(ঘ) আরবি

উত্তর: (ঘ) আরবি


প্রশ্নঃ আত্মনির্ভরশীল নয় এমন ভাষা হল -

(ক) ইংরেজি

(খ) গ্রিক

(গ) হিব্রু

(ঘ) আরবি

উত্তর: (ক) ইংরেজি


প্রশ্নঃ শিক্ষার মধ্যম রূপে ইংরেজি কে বর্জন করে বাংলা নেওয়ার ফল কি হবে?

(ক) নতুন করে আর কোন ইংরেজি শব্দ বাংলায় ঢুকবে না

(খ) প্রচুর ইউরোপীয় শব্দ বাংলা ভাষায় ঢুকবে

(গ) বাংলা ভাষা আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠবে

(ঘ) সমস্ত ইংরেজি শব্দ বাংলা থেকে বেরিয়ে যাবে

উত্তর: (খ) প্রচুর ইউরোপীয় শব্দ বাংলা ভাষায় ঢুকবে


প্রশ্নঃ প্রাচীন যুগের ভাষা হল -

(ক) হিব্রু

(খ) ফরাসি

(গ) আরবি

(ঘ) ইংরেজি

উত্তর: (ক) হিব্রু


প্রশ্নঃ 'নতুন আমদানি ও বন্ধ করা যাবে না'-কি আমদানি বন্ধ করা যাবে না?

(ক) বিলিতি ওষুধ

(খ) নতুন সাহিত্য

(গ) আলু কপি

(ঘ) বিদেশি শব্দ

উত্তর: (ঘ) বিদেশি শব্দ


প্রশ্নঃ হিন্দির বঙ্কিম কে?

(ক) ভারতেন্দু

(খ) নিরালা

(গ) প্রেমচন্দ

(ঘ) ইকবাল

উত্তর: (গ) প্রেমচন্দ


প্রশ্নঃ উর্দু ভাষার একজন বিখ্যাত কবি হলেন -

(ক) প্রেমচন্দ্র

(খ) ইকবাল

(গ) নিরালা

(ঘ) নজরুল ইসলাম

উত্তর: (খ) ইকবাল


প্রশ্নঃ প্রেমচন্দ্র হিন্দিতে বিস্তর____ ব্যবহার করেছেন।

(ক) উর্দু

(খ) আরবি

(গ) ফরাসি

(ঘ) আরবি -ফরাসি

উত্তর: (ঘ) আরবি -ফরাসি


প্রশ্নঃ রচনা ভাষা কিসের উপর নির্ভর করে?

(ক) বিষয়বস্তুর উপর

(খ) ভাষার নিজস্ব শব্দ ভান্ডারের উপর

(গ) রচনাকালের উপর

(ঘ) রচিতার উপর

উত্তর: (ক) বিষয়বস্তুর উপর


প্রশ্নঃ বাংলায় যে বিদেশি ভাষাটি তুলনামূলকভাবে কম ঢুকেছে তা হল -

(ক) ইংরেজি

(খ) আরবি

(গ) ফরাসি

(ঘ) ফারসি

উত্তর: (গ) ফরাসি


প্রশ্নঃ আমরা সংস্কৃত চর্চা উঠিয়ে দিতে চাইনা তার অন্যতম প্রধান কারণ -

(ক) বাংলায় বহু সংস্কৃত শব্দের প্রয়োজন

(খ) প্রাচীন গ্রন্থ গুলি সংস্কৃত ভাষায় রচিত

(গ) বিদেশি ভাষার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ কম

(ঘ) সংস্কৃত বাংলা ভাষার জননী

উত্তর: (ক) বাংলায় বহু সংস্কৃত শব্দের প্রয়োজন


প্রশ্নঃ ভারতীয় মক্তব মাদ্রাসায় কোন ভাষা প্রচুর পরিমাণে পড়ানো হয়েছিল?

(ক) আরবি

(খ) উর্দু

(গ) ফরাসি

(ঘ) হিব্রু

উত্তর: (ক) আরবি


প্রশ্নঃ ইরানি আর্য সাহিত্য কোনটি?

(ক) উর্দু

(খ) ফারসি

(গ) আরবি

(ঘ) ফরাসি

উত্তর: (ঘ) ফারসি


প্রশ্নঃ উর্দু সাহিত্যের মূল সুর কিসের সঙ্গে বাঁধা?

(ক) হিন্দি সঙ্গে

(খ) সিন্ধির সঙ্গে

(গ) ফারসির সঙ্গে

(ঘ) আরবির সঙ্গে

উত্তর: (গ) ফারসির সঙ্গে


প্রশ্নঃ বাঙালির সর্বশেষ্ঠ সাহিত্য সৃষ্টি কোনটি?

(ক) ভাটিয়ালি

(খ) বাউল

(গ) অনুবাদ

(ঘ) পদাবলী কীর্তন

উত্তর: (ঘ) পদাবলী কীর্তন


প্রশ্নঃ হিন্দি পদ্যের উপর কার প্রভাব বেশি পড়েছিলো?

(ক) সিন্ধি

(খ) উর্দু

(গ) আরবি

(ঘ) ফারসি

উত্তর: (ঘ) ফারসি


প্রশ্নঃ ভারতীয় আর্যগণ কোন ভাষার সৌন্দর্য মুগ্ধ হয়েছিল?

(ক) আরবি

(খ) ফারসি

(গ) হিন্দি

(ঘ) উর্দু

উত্তর: (খ) ফারসি


প্রশ্নঃ উর্দু ভাষার কবি হিসাবে ইকবাল কেন স্মরণীয়?

(ক) উর্দুকে ফারসির অনুকরণ থেকে কিঞ্চিৎ নিষ্কৃতি দিতে সক্ষম হয়েছিল।

(খ) উর্দু ভাষাকে জনগণের ভাষায় রুপান্তরতি করার চেষ্টা করেছিল।

(গ) উর্দু ভাষাকে সাহিত্যের ভাষায় পরিণত করেছিলেন।

(ঘ) ফারসি ভাষার অনুকরণে আধুনিক উর্দু ভাষার জন্ম দিয়েছিলেন।

উত্তর: (ক) উর্দুকে ফারসির অনুকরণ থেকে কিঞ্চিৎ নিষ্কৃতি দিতে সক্ষম হয়েছিল।


অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর ধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :


প্রশ্নঃ লেখক সংস্কৃত ভাষাকে আত্মনির্ভরশীল ভাষা বলেছেন কেন?

উত্তর:নতুন কোনো চিন্তা অনুভূতি বা বস্তুর কথা বলতে গিয়ে নতুন শব্দের প্রয়োজন হলে সংস্কৃত ভাষা নিজের শব্দভাণ্ডারেই সেই শব্দকে খুঁজে পেতে পারে। তাই লেখক সংস্কৃতকে আত্মনির্ভরশীল ভাষা বলেছেন।


প্রশ্নঃ সংস্কৃতকে স্বয়ংসম্পূর্ণ ভাষা বলতে কারো আপত্তি থাকার কথা নয় কেন?

উত্তর: সংস্কৃত বিদেশী ভাষা থেকে খুব অল্প শব্দই গ্রহণ করেছে। তাই তাকে সম্পূর্ণ ভাষা বলতে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়।


প্রশ্নঃ প্রাচীন যুগের কয়েকটি আত্মনির্ভরশীল ভাষার নাম বল?

উত্তর: প্রাচীন যুগের কয়েকটি আত্মনির্ভরশীল ভাষা হল হিব্রু, গ্রিক, আবেস্তা।


প্রশ্নঃ বর্তমান যুগের কোন ভাষা আত্মনির্ভরশীল নয় বলে লেখক মনে করেন?

উত্তর: বর্তমান যুগের ইংরেজি ও বাংলা ভাষাকে লেখক অর্থ নির্ভরশীল ভাষা বলে মনে করেন।


প্রশ্নঃ আমরা কোন সময়ে আরবি ফারসি থেকে প্রচুর শব্দ গ্রহণ করেছি?

উত্তর: আমরা পাঠান মোগল যুগে আরবি-ফারসি থেকে প্রচুর শব্দ গ্রহণ করেছি।


প্রশ্নঃ 'নতুন আমদানি বন্ধ করা যাবে না'-কি আমদানি বন্ধ করা যাবে না?

উত্তর: বাংলা ভাষায় বিদেশি শব্দ আমদানি বন্ধ করা যাবে না।


প্রশ্নঃ 'বহু সাহিত্যিক উঠে পড়ে লেগেছেন'-বহু সাহিত্যিক কেন উঠে পড়ে লেগেছেন?

উত্তর: বহু সাহিত্যিক হিন্দি থেকে আরবি, ফারসি এবং ইংরেজি শব্দ তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন।


প্রশ্নঃ 'ইনকিলাব'শব্দটি বাংলায় কে এনেছেন?

উত্তর: ইনকিলাব শব্দটি বাংলায় কাজী নজরুল ইসলাম প্রথম ব্যবহার করেছেন।


প্রশ্নঃ বিদ্যাসাগর আরবি-ফারসি কোথায় ব্যবহার করতেন?

উত্তর: বিদ্যাসাগর বেনামিতে অসাধু রচনায় আরবি-ফারসি ব্যবহার করতেন।


প্রশ্নঃ আরবি ফারসি শব্দের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করাকে কে 'আহাম্মখী' বলে মনে করতেন?

উত্তর: পন্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী আরবি ফারসি শব্দের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা কে আহাম্মুখী মনে করতেন।


প্রশ্নঃ হিন্দির বঙ্কিম কাকে বলা হয়?

উত্তর: প্রেমচন্দ কে হিন্দি সাহিত্যের বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বলা হয়।


প্রশ্নঃ হিন্দিতে আরবি-ফারসি কে বিস্তর ব্যবহার করেছেন?

উত্তর: প্রেমচন্দ্র হিন্দিতে আরবি-ফারসি বিস্তর ব্যবহার করেছেন।


প্রশ্নঃ রচনায় ভাষা কিসের উপর নির্ভর করে?

উত্তর: রচনা আর ভাষা রচনা বিষয়বস্তুর উপর নির্ভর করে।


প্রশ্নঃ 'বসুমতি'-র সম্পাদাকীয় রচনার ভাষা কেমন ছিল?

উত্তর:'বসুমতি'-র সম্পাদাকীয় রচনা ভাষা ছিল গাম্ভীর্যপূর্ণ।


প্রশ্নঃ বাংলায় যেসব বিদেশি শব্দ ঢুকেছে তার মধ্যে প্রধান কোনগুলি?

উত্তর: বাংলায় যেসব বিদেশি শব্দ ঢুকেছে তার মধ্যে আরবি, ফারসি এবং ইংরেজিই প্রধান।


প্রশ্নঃ স্কুল কলেজ থেকে সংস্কৃত চর্চা আমরা উঠিয়ে দিতে চাই না কেন?

উত্তর:এখনো আমাদের বহু সমস্যার শব্দের প্রয়োজন আছে বলে ইস্কুল কলেজ থেকে আমরা সংস্কৃত চর্চা উঠিয়ে দিতে চায়না।


প্রশ্নঃ কোন দুই ভাষা থেকে বাংলায় আর নতুন কোন শব্দ ডুববে না বলে লেখক মনে করেছেন?

উত্তর:আরবি ও ফারসি ভাষা থেকে নতুন করে শব্দ আর বাংলা ভাষায় ঢুকবে না বলে লেখক মনে করেছেন।


প্রশ্নঃ 'সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই'-কোন বিষয়ে লেখোকের সন্দেহ নেই?

উত্তর: যেসব আরবি-ফারসি শব্দ বাংলায় ঢুকে গিয়েছে তার অনেকগুলো আরো বহুকাল ধরে বাংলায় চালু থাকবে বিষয়ে লেখককের সন্দেহ নেই।


প্রশ্নঃ ভারতীয় মক্তব মাদ্রাসায় কোন ভাষা বেশি করে পড়ানো হয়েছিল?

উত্তরঃ ভারতীয় মক্তব মাদ্রাসায় আরবি ভাষা বেশি করে পড়ানো হয়েছিল।


প্রশ্নঃ ভারতীয় আর্যরা কোন ভাষার সৌন্দর্যের মুগ্ধ হয়েছিল?

উত্তর: ভারতীয় আর্যরা ইরানি আর্য সাহিত্য অর্থাৎ ফারসি ভাষার সৌন্দর্য মুগ্ধ হয়েছিল।


(৩) নিচের ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ


প্রশ্নঃ "সংস্কৃত ভাষা আত্মনির্ভরশীল" - কেন সংস্কৃত ভাষা সম্পর্কে এ কথাবলা হয়েছে?

উত্তরঃ লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী সংস্কৃত ভাষাকে আত্মনির্ভরশীল ভাষা বলেছেন। তার মতে, কোনো নতুন চিন্তা, অনুভূতির প্রকাশের জন্য নতুন শব্দের প্রয়োজন হলে সংস্কৃত ভাষা তা অন্য ভাষা থেকে ধার করার কথা কখনোই ভাবে না। পরিবর্তে নিজের শব্দভাণ্ডারে তার খোঁজ করে। সেখানে খোজ করা হয় যে এমন কোনো ধাতু বা শব্দ আছে কিনা যার সামান্য অদলবদল করে কিংবা পুরোনো ধাতু দিয়েই নতুন শব্দটি তৈরি করা যেতে পারে। এই কারণেই সংস্কৃতকে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং আত্মনির্ভরশীল ভাষা বলা হয়েছে।


প্রশ্নঃ "প্রাচীন যুগের সব ভাষাই তাই" - কোন্ কোন্ ভাষার উল্লেখ করে লেখক কেন এরূপ বলেছেন? এ প্রসঙ্গে বর্তমান যুগের কোন্ দুটি ভাষা সম্পর্কে তিনি কী বলেছেন?

উত্তরঃ সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত 'নব নব সৃষ্টি' প্রবন্ধের আলোচ্য অংশে লেখক হিব্রু, গ্রিক, আবেস্তা এবং কিছুটা আধুনিক আরবি ভাষার কথা উল্লেখ করেছেন। প্রাচীন যুগের অধিকাংশ ভাষাই নতুন চিন্তা-ভাবনা, নতুন বস্তু বোঝাতে নতুন শব্দের প্রয়োজন হলে তা নিজ শব্দভাণ্ডারের ধাতু বা শব্দ দ্বারাই তৈরি করার চেষ্টা করেছে। বিদেশি শব্দ ব্যবহার করলেও তা অতিসামান্য। তাই লেখক প্রাচীন ভাষাগুলিকে আত্মনির্ভরশীল ও স্বয়ংসম্পূর্ণ বলেছেন।

     ভাষার স্বয়ংসম্পূর্ণতা প্রসঙ্গেই লেখক বর্তমান যুগের ইংরেজি ও বাংলা ভাষার উল্লেখ করেছেন। আধুনিক কালের ভাষা ইংরেজি এবং বাংলা অন্যান্য ভাষা থেকে অতিরিক্ত শব্দ গ্রহণ করে নিজের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করার ও প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করে। পাঠান-মোগল যুগে এভাবেই বাংলা। ভাষায় প্রচুর আরবি ফারসি শব্দ আনলাভ করেছে।


প্রশ্নঃ "বিদেশি শব্দ নেওয়া ভালো না মন্দ সে প্রশ্ন অবান্তর" - কেন লেখক কথা বলেছেন আলোচনা করো।

উত্তরঃ বাংলা ভাষা কখনোই আত্মনির্ভরশীল নয়। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে আমরা ভিন্ন ভিন্ন ভাষা থেকে শব্দ নিয়েছি এবং সেই প্রক্রিয়া এখনও বজায় রয়েছে। পাঠান ও মোগল যুগে আইন-আদালত ইত্যাদি প্রসঙ্গে প্রচুর আরবি ও ফারসি শব্দ গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তী যুগে ইংরেজি ভাষা থেকেও এই শব্দ নেওয়া হয়েছে। তার পরিমাণ এতটাই বেশি যে, এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার অর্থ হয় না। লেখকের মতে, শিক্ষার মাধ্যমরূপে ইংরেজিকে বর্জন করে বাংলা। গ্রহণ করার পরে এই প্রবণতা আরও বাড়বে। ফলে বিদেশি শব্দের আমদানি করার ভাবনা যখন বন্ধ করা যাবে না, সেক্ষেত্রে তার ভালোমন্দ নিয়ে ভাবা নিতান্তই অর্থহীন।

(৪) নিচের রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ


প্রশ্নঃ বাংলায় যেসব বিদেশি ভাষার শব্দ ঢুকেছে তার মধ্যে কোন্ কোন্ ভাষাকে লেখক প্রধান বলেছেন? এই প্রসঙ্গে সংস্কৃত ও ইংরেজি নিয়ে লেখক কী বলেছেন?

অথবা, 

বাংলা ভাষায় আগন্তুক শব্দ কোনগুলি? প্রসঙ্গক্রমে সংস্কৃত ও ইংরেজি ভাষা নিয়ে লেখকের বক্তব্য স্পষ্ট করো।

উত্তরঃ সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর 'নব নব সৃষ্টি' রচনাংশে জানিয়েছেন যে বাংলায় যেসব বিদেশি শব্দ প্রবেশ করেছে সেগুলির মধ্যে আরবি, ফারসি ও ইংরেজি ভাষার শব্দই প্রধান।

      একসময়ে ভারতবর্ষ তথা বাংলাদেশে সংস্কৃত ভাষার ব্যাপক চর্চা ছিল। কারন সংস্কৃতই ছিল আদি ও মূল ভাষা। এখনও স্কুল কলেজে সংস্কৃতচর্চা হয়। সংস্কৃত থেকে উৎপন্ন হওয়ার ফলে বাংলা ভাষায় সংস্কৃত ভাষার প্রভাব থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। সংস্কৃত শব্দ এখনও সামান্য হলেও বাংলা ভাষায় প্রবেশ করছে। সংস্কৃত ভাষাকে বাংলার মাতৃসম ভাষাই বলা হয়, তাই সংস্কৃতচর্চা বন্ধ করে দিলে বাংলা ভাষা এক স্বয়ংসম্পূর্ণ ভাষা থেকে বিচ্ছিন্ন হবে। তাই লেখক এ প্রসঙ্গে বলেছেন, "আমরা অন্যতম প্রধান খাদ্য থেকে বঞ্চিত হবো"।

     আধুনিক শিক্ষার ধারায় দর্শনশাস্ত্র, নন্দনশা, পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা এবং বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষার বিকল্প নেই। উদাহরণ হিসেবে লেখক বলেছেন যে রেলের ইঞ্জিন কী করে চালাতে হয়, সে বিষয়ে বাংলায় কোনো বই নেই। ফলে এই বিষয়টা বুঝতে হলে বাঙালিকে ইংরেজি ভাষারই আশ্রয় নিতে হয়। সুতরাং "ইংরেজি চর্চা বন্ধ করার সময় এখনও আসেনি।"— এ কথা বলাই যায়।


প্রশ্নঃ "বিদেশি শব্দ নেওয়া ভালো না মন্দ সে প্রশ্ন অবান্তর।" - মন্তব্যটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটি সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত 'নব নব সৃষ্টি' রচনাংশ থেকে নেওয়া হয়েছে।

    ভাষা তার নিজ শব্দভাণ্ডারের ধাতু বা শব্দ দ্বারা নতুন শব্দ তৈরি করতে পারলেই ভাষার স্বয়ংসম্পূর্ণতা প্রমাণিত হয়। কিন্তু বিদেশি শব্দ গ্রহণ করলেও ভাষা অনেক সময় মধুর এবং তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে যদি সেই ভাষা বিষয়কেন্দ্রিক হয়। লেখক নিজেই বলেছেন, "রচনার ভাষা তার বিষয়বস্তুর উপর নির্ভর করে"। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলা ভাষায় সংস্কৃত, আরবি, ফারসি প্রভৃতি শব্দ অনায়াসে মিশেছে। ইংরেজি ভাষার বদলে বাংলা ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে চালু করার ফল হাতেনাতে পাওয়া গেছে। কারণ তারপরই বাংলায় প্রচুর পরিমাণে ইউরোপীয় শব্দ ঢুকেছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও আমরা বহু বিদেশি দ্রব্য ব্যবহার করে থাকি। একইরকমভাবে বিদেশি শব্দও প্রবেশ করবে ভাষায়। হিন্দি ভাষাকে আরবি-ফারসি শব্দ মুক্ত করার জন্য চেষ্টা শুরু করেছেন হিন্দি ভাষার সাহিত্যিকরা৷ তার ফলাফল ভালো না খারাপ হবে লেখক তা ভবিষ্যতের ওপর ছেড়ে দিলেও বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ আনায়াসেই আরবি-ফারসি ভাষা মিশিয়ে লিখেছেন, "আব্রু দিয়ে, ইজ্জৎ দিয়ে, ইমান দিয়ে, বুকের রক্ত দিয়ে"। আবার নজরুল ইসলামও 'ইনকিলাব', 'শহিদ' প্রভৃতি বিদেশি শব্দ বাংলায় ব্যবহার করেছেন। বিষয়ের গাম্ভীর্য, আভিজাত্য এবং চটুলতার ওপর ভাষার ব্যবহার নির্ভর করে। ফলে বিদেশি শব্দের ব্যবহারও ভাষাকে সমৃদ্ধ করে তোলে যদি তা বিষয়বস্তুর যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারে।


প্রশ্নঃ "ইংরেজি চর্চা বন্ধ করার সময় এখনও আসেনি।" - বক্তা কে? এরূপ উক্তির কারণ কী?

উত্তরঃ প্রশ্নউদ্ধৃত অংশটির বক্তা 'নব নব সৃষ্টি' প্রবন্ধের লেখক সৈমুদ মুজতবা আলী।

     বাংলা ভাষা আত্মনির্ভরশীল ভাষা নয়। আরবি ফারসির মতোই ইংরেজি থেকেও আমরা প্রচুর শব্দ নিয়েছি। ভাষাকে স্বাবলম্বী করে তোলার জন্য অন্য ভাষাকে ত্যাগ করার চেষ্টা একেবারে বিরল ঘটনা নয়! হিন্দিতে এটা হয়েছে। আবার বিখ্যাত লেখকদেরও দেখা গিয়েছে যে, তারা অন্য পথে হেঁটেছেন। বাংলা ভাষাতেই রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে প্রসাদ শাস্ত্রী এর উদাহরণ। লেখক দেখিয়েছেন যে বাংলা ভাষায় যে শব্দসমূহ এসেই তার মধ্যে আরবি, ফারসি এবং ইংরেজি প্রধান। এক্ষেত্রে ইংরেজি ভূমিকা কোনোভাবেই এড়ানো সম্ভব নয়। দর্শন, পদার্থ কিংবা রসায়নবিদ্যা ইত্যাদির জন্য প্রয়োজনীয় শব্দ বাংলায় যথেষ্ট নেই। রেল ইঞ্জিনের প্রযুক্তি বিষয়ে বাংলায় কোনো বই নেই। এখানে ইংরেজির উপর নির্ভর করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। এইসব কারণেই লেখকের মতো হয়েই আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য ইংরেজির চর্চা বন্ধ করার সময় এখনও আসেনি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

6 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

LightBlog

AdsG

close