হিমালয় দর্শনবেগম রোকেয়া
বহু বিকল্পীয় প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
প্রশ্নঃ 'হিমালয় দর্শন'-রচনাটি কার লেখা?
(ক) তসলিমা নাসরিন
(খ) বেগম রোকেয়া
(গ) সেলিনা হোসেন
(ঘ) নীলিমা ইব্রাহিম
উত্তর: (খ) বেগম রোকেয়া
প্রশ্নঃ যথাসময়ে যাত্রা কোরিয়া___ স্টেশনে আসিয়া পঁহুছিলাম।
(ক) জলপাইগুড়ি
(খ) ধুপগুড়ি
(গ) ময়নাগুড়ি
(ঘ) শিলিগুড়ি
উত্তর: (ঘ) শিলিগুড়ি
প্রশ্নঃ হিমালয় রেল রোড কোথা থেকে আরম্ভ হয়েছে?
(ক) লাটাগুড়ি
(খ) পেলিং
(গ) শিলিগুড়ি
(ঘ) জলপাইগুড়ি
উত্তর: (গ) শিলিগুড়ি
প্রশ্নঃ ক্রমে আমরা সমুদ্র হইতে____ হাজার ফিট উচ্চে উঠিয়াছি।
(ক) এক
(খ) তিন
(গ) ছয়
(ঘ) দুই
উত্তর: (খ) তিন
প্রশ্নঃ নিম্ন উপত্যকায় নির্মল শ্বেত কুজ্ঝটিকা দেখে সাহসা কি বলে মনে হচ্ছিল?
(ক) আকাশ
(খ) জলাশয়
(গ) সমুদ্র
(ঘ) নদী
উত্তর: (ঘ) নদী
প্রশ্নঃ কারসিয়ং স্টেশন এর উচ্চতা কত?
(ক) ৪৭৬৪ ফুট
(খ) ৪৮৬৪ফুট
(গ) ৪৯৬৪ ফুট
(গ) ৪৫৬৪ ফুট
উত্তর: (খ) ৪৮৬৪ ফুট
প্রশ্নঃ ট্রাঙ্ক কয়টা কোন ঠিকানায় বুক করা হয়েছিল?
(ক) দার্জিলিং
(খ) নিউ জলপাইগুড়ি
(গ) আলিপুরদুয়ার
(ঘ) কালিম্পং
উত্তর: (ক) দার্জিলিং
প্রশ্নঃ লেখিকা গৃহ সুখ অনুভব করতে পারেন নি কেন?
(ক) জিনিসপত্রের অভাবে
(খ) আবহাওয়া ভালো ছিল না
(গ) জামা কাপড়ের অভাব ছিল বলে
(ঘ) থাকবার ভালো ব্যবস্থা ছিলনা
উত্তর: (ক) জিনিসপত্রের অভাবে
প্রশ্নঃ কারসিয়ং যাওয়ার পর কত দিন বৃষ্টি হয়েছিল?
(ক) একদিন
(খ) পাঁচ দিন
(গ) দুইদিন
(ঘ) তিনদিন
উত্তর: (ক) একদিন
প্রশ্নঃ লেখিকা কারসিয়ং এ কোথাকার জল ব্যবহার করতেন?
(ক) পুষ্পরাণীর জল
(খ) নদীর জল
(গ) কূপের জল
(ঘ) নির্ঝরের জল
উত্তর: (ঘ) নির্ঝরের জল
প্রশ্নঃ লেখিকা পানীয় জল কিভাবে ব্যবহার করতেন?
(ক) গরম করে ছেঁকে খেতেন
(খ) ফিল্টারে ছাঁকিয়ে খেতেন
(গ) ফুঁটিয়ে খেতেন
(ঘ) কোন কিছুই করতেন না
উত্তর: (খ) ফিল্টের ছাঁকিয়ে খেতেন
প্রশ্নঃ 'একবার 'মহিলা'য় ঢেঁকি শাকের কথা পাঠ করিয়াছি'- 'মহিলা' বলতে লেখিকা কি বুঝিয়েছেন?
(ক) পত্রিকার নাম
(খ) উপন্যাসের নাম
(গ) প্রবন্ধের নাম
(ঘ) কাব্যগ্রন্থের নাম
উত্তর: (ক) পত্রিকার নাম
প্রশ্নঃ 'নির্ভয়ে বেড়াইতে পারি' - নির্ভয় বেড়াতে যাওয়ার কারন কি?
(ক) অরণ্য ঘন নয়
(খ) বাঘ ভাল্লুক নেই
(গ) সাপ নেই
(ঘ) বাঘ নেই
উত্তর: (ঘ) বাঘ নেই
প্রশ্নঃ এদেশের স্ত্রীলোকেরা কিসে ভয় পাইনা?
(ক) সাপে
(খ) জোঁকে
(গ) ভালুকে
(ঘ) বাঘে
উত্তর: (খ) জোঁকে
প্রশ্নঃ ভুটিয়ানিদের পেশা কি?
(ক) রাস্তা প্রস্তুত করা
(খ) পাথর বহন করা
(গ) চাষ করা
(ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর: (খ) পাথর বহন করা
প্রশ্নঃ 'এখন সে সাধও পূর্ণ হইল'-পর্ন সাধের কথা বলা হয়েছে?
(ক) সমুদ্র দেখার সাধ
(খ) পাহাড় দেখার সাধ
(গ) নির্ঝর দেখার সাধ
(ঘ) অরণ্য দেখার সাধ
উত্তর: (খ) পাহাড় দেখার সাধ
অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর ধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
প্রশ্নঃ 'হিমালয় দর্শন' কার লেখা?
উত্তর:বেগম রোকেয়া
প্রশ্নঃ হিমালয় রেল রোড কোথায় শুরু হয়েছিল?
উত্তর: শিলিগুড়ি
প্রশ্নঃ বেগম রোকেয়া কোন কোন রেলগাড়ির কথা বলেছেন?
উত্তর: বেগম রোকেয়া তিন রকম রেলগাড়ির কথা বলেছেন। এগুলি হল ইস্ট ইন্ডিয়ান গাড়ি, ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলগাড়ি এবং হিমালয়ান রেলগাড়ি।
প্রশ্নঃ সবচেয়ে ছোট রেল গাড়ির নাম কি?
উত্তর: হিমালয়ান রেলগাড়ি।
প্রশ্নঃ রেলগাড়ি গুলি দেখতে কেমন?
উত্তর: রেলগাড়ি গুলি দেখতে ছোট খেলনা গাড়ি মতো। গাড়ি গুলি খুব নিচু। ইচ্ছা করলেই লোক চলন্ত গাড়িতে ওঠা নামা করতে পারে।
প্রশ্নঃ 'সহসা নদী বলিয়া ভ্রম জন্মে'-কি দেখে নদী বলে ভ্রম জন্মেছিল?
উত্তর: শিলিগুড়ি থেকে কারসিয়ং যাত্রাপথে নিম্ন উপত্যকায় নির্মল শ্বেতকুজ্ঝটিকা দেখে সহসা নদী বলে বেগম রোকেয়ার ভ্রম হয়েছিল।
প্রশ্নঃ লেখিকা বেগম রকেয়া ধরণীর সীমান্ত বলে কাকে মনে করেছেন?
উত্তর: কার সিয়ং যাত্রাপথে লেখিকা পথের দুইপাশে হরিদ্বর্ণ চায়ের বাগান দেখেছেন।সেই চায়ের বাগান এর মাঝখান দিয়ে চলে গেছে মানুষের পায়ে হাঁটা সরু রাস্তা। একেই ধরণীর সীমান্ত বলে লেখিকার মনে হয়েছে।
প্রশ্নঃ বসুমতির ঘন কেশপাশ-বসুমতি কে? কাকে ঘন কেশপাশ বলা হয়েছে?
উত্তর: বসুমতি হল পৃথিবী। নিবিড় শ্যামল বনকে তার ঘন কেশপাশ বলে লেখিকার মনে হয়েছে।
প্রশ্নঃ 'আমাদের মনোরথ পূর্ণ হইল' -কোন মনোরথের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: বেগম রকেয়া কার সিয়ং যাওয়ার পথে ট্রেনে চার হাজার ফিট উপরে যখন উঠেছে তখন সেখানে গরমের জ্বালা ছিল না। এখানে গরমের এই জুলুমের কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্নঃ কারসিয়ং স্টেশনের উচ্চতা কত?
উত্তর: ৪৮৬৪ ফিট।
প্রশ্নঃ 'গৃহ সুখ অনুভব করিতে পারিনাই'-কেন পারেননি?
উত্তর: বেগম রোকেয়ার জিনিসপত্র ভুল করে দার্জিলিং এর ঠিকানায় বুক করায় জিনিসপত্রের অভাবে বাসায় গিয়েও গৃহ সুখ অনুভব করতে পারেননি।
প্রশ্নঃ বেগম রোকিয়া জল কিভাবে ব্যবহার করতেন?
উত্তর: পানীয় জল ফিল্টারে ছেঁকে ব্যবহার করতেন।
প্রশ্নঃ পার্বত্য অঞ্চলের জল দেখতে কেমন?
উত্তর: পার্বত্য অঞ্চলের জল দেখতে খুব পরিষ্কার এবং স্বচ্ছ।
প্রশ্নঃ জল কোথায় পাওয়া যেত?
উত্তর: সেই সময়ে কোথাও কূপ, পুষ্করিণী বা নদী ছিল না, তাই শুধুমাত্র ঝর্ণা থেকে জল পাওয়া যেত।
প্রশ্নঃ এখানকার বায়ু কেমন?
উত্তর: এখানকার বায়ু পরিষ্কার ও হালকা।
প্রশ্নঃ লেখিকা ঢেঁকি শাকের কথা কোথায় পাঠ করেছিলেন?
উত্তর: মহিলা পত্রিকায় পাঠ করেছিলেন।
প্রশ্নঃ ঢেঁকি শাক সম্পর্কে লেখিকার ধারণা কি ছিল?
উত্তর: লেখিকা ঢেঁকি শাক কে ক্ষুদ্র গুল্মু বলেই জানতেন।
প্রশ্নঃ লেখিকা ঢেঁকিতুর সম্পর্কে ভূ-তত্ত্ব গ্রন্থে কী পাঠ করেছিলেন।
উত্তর: লেখিকা ভূ-তত্ত্ব গ্রন্থ পাঠ করে জেনেছিলেন কারবনিফেরাস যুগের বড়ো বড়ো ঢেঁকিতুর ছিল।
প্রশ্নঃ লেখিকা কোথায় ঢেঁকিতুর দেখেছিলেন? তার উচ্চতা কত ছিল?
উত্তর: লেখিকা কারসিয়ং-এ ঢেঁকিতুর দেখেছিলেন। সেগুলির উচ্চতা ছিল ২০-২৫ ফিট।
প্রশ্নঃ 'নির্ভয়ে বেড়াতে পারি'-নির্ভয় বেড়াইতে পারার কারণ কি?
উত্তর: লেখিকাযে অরণ্যে বেড়াইতে বেড়িয়ে ছিলেন সেই অরণ্যে বাঘ ছিল না। তাই তিনি নির্ভয় বেড়াইতে পেরেছিলেন।
প্রশ্নঃ লেখিকার ভুটিয়া চাকরানীর নাম কি?
উত্তর: ভালু
প্রশ্নঃ স্ত্রীলোকেরা কিসে ভয় পাইনা?
উত্তর: জোঁক দেখে ভয় পায় না।
প্রশ্নঃ ভুটিয়ানিরা কতটুকু কাপড় কিভাবে পরে?
উত্তর: ভুটিয়ানিরা 7 গজ কাপড় ঘাঘরার মতন পরে ।
প্রশ্নঃ ভুটিয়ানিরা গায়ে ও মাথায় কি পড়ে?
উত্তর:ভুটিয়ানিরা গায়ে জ্যাকেট পরে ও বিলিতি শাল দিয়ে মাথা ঢেকে রাখে।
প্রশ্নঃ 'মহিলা' পত্রিকার সম্পাদক রামণীদের 'অবলা' বলেছেন কেন?
উত্তর: রিমণীজাতি দুর্বল বলে মহিলা পত্রিকার সম্পাদক তাদের অবলা বলেছেন।
প্রশ্নঃ সবলেরা কি করে?
উত্তর: পথে পাথর বিছিয়ে রাস্তা প্রস্তুত করে।
প্রশ্নঃ 'পাহাড়নি' কারা?
উত্তর: ভুটিয়ানিরা নিজেদের পাহাড়নি পরিচয় দিয়ে থাকেন।
প্রশ্নঃ 'ইহারা ক্রমশ সদগুণরাজি হারাইতেছে'।'ইহারা' কেন সদগুনরাজি হারাচ্ছে?
উত্তর: নিচেকা আদমি অর্থাৎ তথাকথিত ভদ্র লোকের সংস্পর্শে থেকে এরা ক্রমশই সদগুনরাজি হরাচ্ছিলো।
প্রশ্নঃ 'এখন সে সাধও পূর্ণ হইল'-কোন সাধের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: লেখিকার পাহাড় দেখবার সাধ ছিল। এখানে এই সাধের কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্নঃ মন প্রাণ স্বতঃই সমস্বরে বলিয়া উঠে 'ঈশ্বরই প্রশংসার যোগ্য'-কখন মন প্রাণ একথা বলে ওঠে?
উত্তর: প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দর্শনকালে মন-প্রাণ একথা বলে ওঠে।
(৩) নিচের ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
প্রশ্নঃ এদেশের স্ত্রীলকেরা জোঁক দেখিল ভয় পায় না। এদেশের স্ত্রীলোকেরা জোঁক দেখিলে ভয় পায় না কেন?
উত্তরঃ এদেশের স্ত্রীলোকদের লেখিকা বলেছেন ভুটিয়ানি। তারা অত্যন্ত সাহসী হয়। তারা বিশ্বাস করে জোঁক রক্ত চুষে খায় বটে তবে রক্তাশোষণ শেষ হলে তারা নিজেরাই চলে যায়। তাই জোঁক দেখলে তারা ভয় পায় না।
ভুটিয়ানিরা সাত গজ লম্বা কাপড় ঘাঘরার মতো করে পরে। কোমরে জড়ানো থাকে একখন্ড কাপড়। গায়ে জ্যাকেট পরে। মাথা বিলিতি শাল দিয়ে ঢেকে রাখে।
প্রশ্নঃ "কেবল আশ্রয় পাইলে সুখে গৃহে থাকা হয় না" - বক্তার এরকম মনোভাবের কারণ কী?
উত্তরঃ বেগম রোকেয়া শিলিগুড়িতে নেমে ট্রেনপথে কারসিয়ং-এর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। সন্ধ্যার আগেই কারসিয়াং-এর নিকটবর্তী বাসায় পৌঁছেও গেছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ পথ অতিক্রমের পর বাসায় পৌঁছেও গৃহসুখ পেলেন না। আসলে জিনিসপত্র বোঝাই ট্রাঙ্ক ভুল করে দার্জিলিং-এর ঠিকানায় বুক করা হয়েছিল। দার্জিলিং ঘুরে সে-সব ট্রাঙ্ক ফিরে আসতে সময় লেগেছিল অনেক। ফলে পরের দিন জিনিসপত্র ব্যবহার করতে পেরেছিলেন। জিনিসপত্রের অভাবেই তিনি বুঝেছিলেন শুধুমাত্র আশ্রয় থাকলেই হয় না, ব্যবহারের উপযোগী জিনিসপত্র না থাকলে কোনো আশ্রয়কেই গৃহ বলে ভাবা যায় না। আশ্রয়ের সঙ্গে আসবাব সরঞ্জামও চাই।
প্রশ্নঃ কারসিয়ং-এর আবহাওয়া কেমন ছিল?
উত্তরঃ ৪৮৬৪ ফুট উপরে কারসিয়ং শহর। শৈলশহর হলেও তখন লেখিকার শীত অনুভব হয়নি। যদিও গরমের জ্বালা তখন আর ছিল না। শীতও ছিল না, গরমও পড়েনি। অনেকটা বসন্তকালের মতো আবহাওয়া। শীতের বৃষ্টিও তখন শুরু হয়নি। লেখিকা জানিয়েছেন। কারসিয়ং-এ পৌঁছাবার পর মাত্র একদিন বৃষ্টি হয়েছিল। সেখানকার বায়ু পরিষ্কার ও হালকা। এই বায়ু স্বাস্থ্যকরও বটে।
প্রশ্নঃ "উদরান্নের জন্য পুরুষদের প্রত্যাশী নহে, সমভাবে উপার্জন করে।" - কাদের কথা বলা হয়েছে? তারা কীভাবে উপার্জন করে?
উত্তরঃ এখানে ভুটিয়ানিদের কথা বলা হয়েছে।
লেখিকা বেগম রোকেয়া জানিয়েছেন ভুটিয়ানিরা অত্যন্ত পরিশ্রমী। তারা অনায়াসেই এক মণ বোঝা নিয়ে এবড়োখেবড়ো পার্বত্যপথ অতিক্রম করে উপরে উঠে যেতে পারে। অধিকাংশ ভুটিয়ানিই পাথর বহন করে। এই পরিশ্রমের কাজ পুরুষেরা কিন্তু করে না। স্ত্রীলোকেরা পাথর বয়ে নিয়ে যায়, আর পুরুষেরা পাথর বিছিয়ে রাস্তা প্রস্তুত করে। অর্থাৎ উদরান্নের জন্য ভুটিয়ানিরা পুরুষের মুখাপেক্ষী নয়, বরং তাদের সমান পরিশ্রম করেই জীবিকা নির্বাহ করে।
প্রশ্নঃ শিলিগুড়ি স্টেশন থেকে যে ট্রেনে কারসিয়ং যাত্রা করেছিলেন বেগম রোকেয়া সেই ট্রেনগুলি কেমন ছিল?
উত্তরঃ শিলিগুড়ি স্টেশনে নেমে ট্রেনপথে কারসিয়ং যাচ্ছিলেন। হিমালয় রেল রোড শিলিগুড়ি থেকেই আরম্ভ হয়েছে। এই রোডে তিন রকম রেলগাড়ি যাতায়াত করে। এগুলি হল ইস্ট ইন্ডিয়ান গাড়ি, ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলগাড়ি, এবং হিমালয়ান রেলগাড়ি। হিমালয়ান রেলগাড়ি সবথেকে ছোটো। ছোটো ছোটো গাড়িগুলো দেখতে অনেকটা খেলনা গাড়ির মতো সুন্দর। অনেকটা নীচুও। ফলে চলাচলের সময় ইচ্ছা করলেই ট্রেনযাত্রীরা ওই গাড়িতে ওঠানামা করতে পারে। গাড়িগুলো পাহাড়ের ঢাল বেয়ে 'কটাটটা' শব্দ করতে করতে উপরে উঠে যায়।
প্রশ্নঃ "সাধ তো মিটে নাই" - কোন্ সাধ কেন মেটেনি?
উত্তরঃ বেগম রোকেয়ার সাধ ছিল পাহাড় দেখবেন। একবার কারসিয়ং-এ এসে সে ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। তবু লেখিকার মনে হয়েছে সাধ মেটেনি। আসলে পাহাড়ের সৌন্দর্য, ঝরনার অনিন্দ্যসুন্দর রূপ তাঁকে মুগ্ধ করেছে। যতই দেখেছেন ততই তাঁর দেখার ইচ্ছা শতগুণে বেড়ে গেছে। বারবারই মনে হয়েছে যদি দুটি চোখের বদলে আরও অনেকগুলি চোখ তাঁর থাকত তবে সে বাধ মিটত। অর্থাৎ যতই দেখেছেন ততই লেখিকার মনে অতৃপ্তি বেড়ে গেছে। তাই তিনি বলেছেন 'সাধ মিটে নাই'।
(৪) নিচের রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
প্রশ্নঃ "আবশ্যকীয় আসবাব সরঞ্জামও চাই" - কোন্ প্রসঙ্গে লেখিকা এই কথা বলেছেন? আবশ্যকীয় সরঞ্জাম চাই কেন?
উত্তরঃ বেগম রোকেয়া হিমালয় দর্শনের জন্য শিলিগুড়ি থেকে হিমালয় রেল রোডের হিমালয়ান রেলগাড়িতে চড়ে কারসিয়ং পৌঁছেছিলেন। কারসিয়ং রেলস্টেশন থেকে তাঁর বাসা বা গন্তব্যস্থল কাছেই। সন্ধ্যার আগেই সেখানে পৌঁছে গেছিলেন। যাত্রাপথে নানা পাহাড়, তাদের সুউচ্চ চূড়া, জলপ্রপাত, ঝরনা, অরণ্যানী লেখিকাকে মুগ্ধ করেছে। এই মুদ্ধতায় তাঁর পথের শ্রান্তি মন থেকে মুছে গেছিল। কিন্তু গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর পর অভিজ্ঞতা ভালো হয়নি। গিয়ে দেখলেন তাঁদের জামাকাপড়, জিনিসপত্র-সহ ট্রাঙ্কগুলি ভুল করে দার্জিলিং-এর ঠিকানায় বুক করায় সেগুলি সেখানেই চলে গিয়েছে। ফলে দীর্ঘপথ অতিক্রম করে বাসায় পৌঁছেও আবশ্যকীয় জিনিসপত্রের অভাবে গৃহের আরাম পেলেন না। এই প্রসঙ্গেই এ কথাগুলি লেখিকা বলেছেন।
বাসা বা গৃহ মানে তো শুধু মাথার উপর আচ্ছাদন নয়, বাসা মানে যেখানে মানুষ সাচ্ছন্দ্যে থাকার আরও কিছু উপকরণ পায়। পোশাক-পরিচ্ছদ, শয্যা রচনা করবার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সমস্তরমক জিনিকপত্র না থাকলে বাসাকে বাসা বলে মনে করা যায় না। বাসায় মানুষ থাকে সুখে বা আরামে থাকবে বলে, বাসায় ফিরে মানুষের শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তিও দূর হয়ে যায়। কিন্তু প্রয়োজনীয় আসবাব সরঞ্জাম না থাকলে বাসায় থাকার সে সুখটুকুও পাওয়া যায় না। তাই লেখিকা বাসায় আবশ্যকীয় সরঞ্জাম থাকার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
প্রশ্নঃ "এসব কথা শুনে উচ্চারণের প্রয়োজন হয় না।" - কোন্ 'কথা'র কথা বলা হয়েছে? তা মুখে উচ্চারণের প্রয়োজন হয় না কেন?
উত্তরঃ প্রাকৃতিক দৃশ্য দর্শনে মনে যে মুগ্ধতার ভাব জন্ম নেয় - এখানে তার কথা বলা হয়েছে।
এই প্রথম হিমালয়ে পৌঁছে পাহাড় দর্শন করলেন বেগম রোকেয়া। পাহাড়ের বিভিন্ন চূড়া, সেই চূড়া থেকে নেমে আসা নানা ঝরনা, তার দুগ্ধফেননিভ জলের স্রোত দেখতে দেখতে আত্মহারা হয়ে গেছেন লেখিকা। কেবলই ভেবেছেন এই দুটি মাত্র চোখে এই সৌন্দর্য কীভাবে দেখবেন তিনি। ঈশ্বর কেন তাঁকে আরও বেশি চোখ, কান দিয়ে পাঠালেন না এই পৃথিবীতে। ধীরে ধীরে লেখিকা অনুভব করলেন মানুষের কাছে হিমালয়ের এই পাদদেশ কত বৃহৎ, কত বিস্তৃত কিন্তু যিনি হিমালয় সৃষ্টি করেছেন, সেই মহাশিল্পীর কাছে হিমালয়ও কত ক্ষুদ্র। আর তখনই লেখিকার অনুভূতি-জগতে বিশেষ একটি বোধের জন্ম হল। তিনি অনুভব করলেন টিয়াপাখির মতো কতকগুলি শব্দ উচ্চারণ করলেই উপাসনা হয় না। সেটা একটা যান্ত্রিক পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে হৃদয়ের ছোঁয়া থাকে না বলেই এইভাবে উপাসনায় ঈশ্বরকে অনুভব করা যায় না। তাতে প্রাণের ছোঁয়া, হৃদয়ের আবেগ থাকে না। মন, প্রাণ, মস্তিষ্কের সবটুকু দিয়ে উপাসনা করলেই হৃদয়ের তৃপ্তি হয়। এ উপাসনার জন্য কোনো দেবগৃহে যাবার প্রয়োজন নেই। ঈশ্বরের সৃষ্টি এই প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলিকে, তার সৌন্দর্যকে আস্বাদন করতে পারলেই ঈশ্বরসাধনা সম্পন্ন হয়। তখন ঈশ্বর-মাহাত্ম্যকে আলাদা করে উচ্চৈঃস্বরে ঘোষণা করার কোনো প্রয়োজন হয় না। প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলি দর্শনে যে মুগ্ধতার আবেশ হৃদয়ে জন্ম হয় তার মধ্য দিয়েই ঈশ্বরকে পাওয়া সম্ভব হয়।
PARAPATA
উত্তরমুছুন