আমারসত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
নিচের বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন গুলোর উত্তর দাও :
প্রশ্ন : আমরা কাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছি?
(ক) কুমির
(খ) সাপ
(গ) বাঘ
(ঘ) সিংহ
উত্তর : (গ) বাঘ
প্রশ্ন : আমরা কবিতাটি কার লেখা?
(ক) সুধীন্দ্রনাথ দত্ত
(খ) সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
(গ) অজিত দত্ত
(ঘ) মধুসূদন দত্ত
উত্তর : (খ) সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
প্রশ্ন : দশানন জয়ী কে?
(ক) সুগ্রীব
(খ) ইন্দ্রজিৎ
(গ) রামচন্দ্র
(ঘ) লক্ষণ
উত্তর : (গ) রামচন্দ্র
প্রশ্ন : বঙ্গভূমির দেহ কি দিয়ে ভূষিত?
(ক) অতসী টগর
(খ) অপরাজিতা শিউলি
(গ) পদ্ম অতসী
(ঘ) অতসী অপরাজিতা
উত্তর : (ঘ) অতসী অপরাজিতা
প্রশ্ন : লংকা কে জয় করেছিলেন?
(ক) বিজয় সিংহ
(খ) সংগ্রাম সিংহ
(গ) শক্ত সিংহ
(ঘ) প্রতাপ সিংহ
উত্তর : (ক) বিজয় সিংহ
প্রশ্ন : তিব্বতি জ্ঞানের প্রদীপ কে জ্বেলে ছিলেন?
(ক) দীপঙ্কর
(খ) জয়দেব
(গ) কপিল
(ঘ) বিজয়
উত্তর : (ক) দীপঙ্কর
প্রশ্ন : নিচে কাকে সাংখ্যকার বলা হয়?
(ক) জয়দেব
(খ) অতীশ
(গ) কপিল
(ঘ) বিজয়
উত্তর : (গ) কপিল
প্রশ্ন : পক্ষধর কে?
(ক) একটি পাখির নাম
(খ) ন্যায় শাস্ত্রের পন্ডিত
(গ) সাংখ্য দর্শনের পন্ডিত
(ঘ) বৌদ্ধ সাধক
উত্তর : (খ) ন্যায় শাস্ত্রের পন্ডিত
প্রশ্ন : কান্ত কমল পদ্ম কে রচনা করেছিলেন?
(ক) দীপঙ্কর
(খ) কপিল
(গ) জয়দেব
(ঘ) বিজয়
উত্তর : (গ) জয়দেব
প্রশ্ন : বরভূধর কি?
(ক) বৌদ্ধ মন্দির
(খ) বৌদ্ধস্তূপ
(গ) হিন্দুদের মন্দির
(ঘ) জৈন মন্দির
উত্তর : (গ) হিন্দুদের মন্দির
প্রশ্ন : "একহাতে মোরা মগেরে রুখেছি" - মগ কাদের বলা হত?
(ক) বৈদেশিক শত্রুদের
(খ) পূর্ববঙ্গীয় সম্প্রদায়কে
(গ) জলদস্যুদের
(ঘ) দক্ষিণবঙ্গের উপজাতিদের
উত্তর : (গ) জলদস্যুদের
প্রশ্ন : পঞ্চবটি কার সাধন ক্ষেত্র?
(ক) শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের
(খ) বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামীর
(গ) ত্রৈলোক্যনাথের
(ঘ) দয়ানন্দ সরস্বতীর
উত্তর : (ক) শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের
প্রশ্ন : "বাঙালি সাধক জড়ের পেয়েছে সারা" - এখানে বাঙালি সাধক কে?
(ক) জগদীশচন্দ্র বসু
(খ) প্রফুল্ল চন্দ্র রায়
(গ) সত্যেন্দ্রনাথ বসু
(ঘ) মেঘনাথ সাহা
উত্তর : (ক) জগদীশচন্দ্র বসু
প্রশ্ন : "মন্বন্তরে মরিনি আমরা" - মন্বন্তর কবে হয়েছিল?
(ক) ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে
(খ) ১৭৫৯ খ্রিস্টাব্দে
(গ) ১৭৬৩ খ্রিস্টাব্দে
(ঘ) ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে
উত্তর : (ক) ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে
প্রশ্ন : "নিমাই ধরেছে কায়া" - নিমাই এর আরেক নাম কি?
(ক) গদাধর
(খ) তুকারাম
(গ) চৈতন্যদেব
(ঘ) বিলে
উত্তর : (গ) চৈতন্যদেব
নিচের অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দাও :
প্রশ্ন : অতসী অপরাজিতায় কার দেহ ভূষিত?
উত্তর : বঙ্গভূমির দেহ
প্রশ্ন : আমরা কবিতাটি কার লেখা?
উত্তর : কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা।
প্রশ্ন : নাগের সঙ্গে বাঙালি সম্পর্ক কিসের?
উত্তর : খেলাধুলার সম্পর্ক
প্রশ্ন : আমরা কিভাবে বেচে আছি?
উত্তর : বাঘের সঙ্গে যুদ্ধ করে।
প্রশ্ন : লংকা কে জয় করেছিলেন?
উত্তর : বিজয় সিংহ লঙ্কা জয় করেছিলেন।
প্রশ্ন : দিল্লি নাথকে কে প্রতিহত করেছিলেন?
উত্তর : চাঁদ প্রতাপ দিল্লিনাথকে প্রতিহত করেছিলেন।
প্রশ্ন : পক্ষধর কে ছিলেন?
উত্তর : মিথিলার অধিবাসী পক্ষধর মিশ্র ন্যায় শাস্ত্রের একজন বিখ্যাত পন্ডিত ছিলেন।
প্রশ্ন : কপিল মুনি কে ছিলেন?
উত্তর : সাংখ্য দর্শনের একজন বিখ্যাত পন্ডিত।
প্রশ্ন : কম্বোজ কোথায় অবস্থিত?
উত্তর : দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইন্দোচীনে যার বর্তমান নাম কম্বোডিয়া এবং এর প্রাচীন নাম কম্বোজ।
প্রশ্ন : পক্ষশাতন কথাটির অর্থ কি?
উত্তর : ডানা কেটে ফেলা।
প্রশ্ন : নিমাই কার নাম?
উত্তর : শ্রীচৈতন্যদেবের ডাকনাম ছিল নিমাই।
প্রশ্ন : জয়দেব কে ছিলেন?
উত্তর : সেন বংশের রাজা লক্ষণ সেনের সভাকবি ছিলেন কবি জয়দেব, যিনি সংস্কৃতে 'গীতগোবিন্দম্' কাব্যটি রচনা করেন।
প্রশ্ন : পঞ্চ বটির তলায় কে বসে সাধনা করেছিলেন?
উত্তর : শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব পঞ্চ বটির তলায় বসে সাধনা করেছিলেন।
প্রশ্ন : "আমাদের এই নবীন সাধনা সব সাধনার বাড়া।" - কোন সাধনাকে নবীন সাধনা বলা হয়েছে?
উত্তর : বিজ্ঞান সাধনাকে এখানে নবীন সদনা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন : জড়ের সারা কে পেয়েছিলেন?
উত্তর : আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু তার আবিষ্কৃত যন্ত্র কেস্কোগ্রাফ যন্ত্রের সাহায্যে জড়ের পেয়েছিলেন।
(৩) নিচের ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
প্রশ্নঃ "মুক্তবেণীর গঙ্গা যেথায় মুক্তি বিতরে রঙ্গে" - পঙক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা 'আমরা' কবিতায় 'মুক্তবেণী' শব্দটির অর্থ হল বাধাহীন জলপ্রবাহ। গঙ্গা নদী গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হয়ে বঙ্গোপসাগরে মেশা পর্যন্ত বহু নদী তার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। কিন্তু তার নিজস্ব জলধারা অন্য কোনো নদীতে হারিয়ে যায়নি। তাই সে 'মুক্তবেণী'। হিন্দুদের বিশ্বাস গঙ্গাজল মানুষকে পাপ থেকে মুক্তি দেয়। তাই কবি বলেছেন যুক্তধারা গঙ্গা আমাদের পাপমোচন করে এই বাংলায় আনন্দের সাথে মুক্তি বিতরণ করে।
প্রশ্নঃ "আমাদের এই নবীন সাধনা শব-সাধনার বাড়া।" - পক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা 'আমরা' কবিতা থেকে উদ্ধৃতিটি নেওয়া হয়েছে।
সদ্যোমৃত পুরুষের শবের ওপর ঘোড়ায় চড়ার ভঙ্গিতে বসে তান্ত্রিক সাধনাকেই শবসাধনা বলে। তান্ত্রিক সাধন পদ্ধতি ভারতবর্ষে বহু প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে। জগদীশচন্দ্র বসু বা প্রফুল্লচন্দ্র রায় যে ধরনের বিজ্ঞানসাধনা বা চর্চার সূত্রপাত করেন তা মানবজীবনের পক্ষে কল্যাণকর হলেও দীর্ঘ জ্ঞানতপস্যার ফসল।
প্রশ্নঃ "আমরা বাঙালি বাস করি সেই তীর্থে—বরদ" - এই পঙক্তিটির মাধ্যমে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তরঃ উদ্ধৃতি পঙক্তিটি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা 'আমরা' কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।
বঙ্গভূমির বর্ণনা করতে গিয়ে কবি উক্ত কথাটি বলেছেন। আমাদের এই বাংলায় রয়েছে অজস্র তীর্থক্ষেত্র। মানুষ বিশ্বাস করে তীর্থদর্শন করলে পুণ্য অর্জন করা যায়, ঈশ্বরের আশীর্বাদ লাভ করা যায়। বাঙালি জাতির সৌভাগ্য যে তারা এমন একটি দেশে বাস করে যে দেশের মাটি তাদের শত তীর্থের পুণ্য আর বর দান করে।
প্রশ্নঃ "তপের প্রভাবে বাঙালি সাধক জড়ের পেয়েছে সাড়া" – পঙক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ উদ্ধৃত পঙক্তিটি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা 'আমরা' কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।
যে-কোনো বিষয় নিয়ে কঠোর সাধনাকেই তপস্যা বলা যায় আর যিনি তপস্যা করেন তিনি হলেন সাধক। বাঙালি বিজ্ঞানসাধক আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কঠোর সাধনার ফলে আবিষ্কার করেন যে গাছেরও প্রাণ আছে। এর আগে পর্যন্ত মানুষ গাছকে জড়পদার্থ ভাবত। জগদীশচন্দ্র সেই জড়ের মধ্যে প্রাণের স্পন্দন আবিষ্কার করেন। তাই কবি বলেছেন যে তপস্যার ফলে বাঙালি সাধক জড়ের সাড়া পেয়েছেন।
প্রশ্নঃ "বাঘের সঙ্গে যুদ্ধ করিয়া আমরা বাঁচিয়া আছি" - কবি কেন এ কথা বলেছেন?
উত্তরঃ কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা 'আমরা' কবিতা থেকে উদ্ধৃত পঙক্তিটি নেওয়া হয়েছে।
বাংলার দক্ষিণের সুন্দরবন প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার সারা পৃথিবীতে বিখ্যাত। কিন্তু এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের জীবিকা নির্বাহের কারণে কাঠ, মধু, মাছ ইত্যাদি সংগ্রহের জন্য জঙ্গলে যেতে হয়। আর সেই কারণে প্রতিনিয়তই তাদের এই হিংস্র প্রাণীটির আক্রমণের মুখে পড়তে হয়।তাই কবি বলেছেন যে বাঙালি বাঘের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছে।
প্রশ্নঃ "জ্বালিল জ্ঞানের দীপ তিব্বতে বাঙালি দীপঙ্কর।" - পঙক্তিটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ উদ্ধৃত পঙক্তিটি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা 'আমরা' কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।
এখানে বিখ্যাত বাঙালি বৌদ্ধ পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানের কথা বলা হয়েছে। শীলভদ্রের শিষ্য অতীশ দীপঙ্কর পাল যুগে বিক্রমশীলা মহাবিহারের অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। পাল যুগেই তিনি হিমালয়ের বরফে ঢাকা অতি দুর্গম পথ অতিক্রম করে তিব্বতে যান মহাযান বৌদ্ধধর্মের প্রচারের উদ্দেশ্যে। সেখানে ধর্ম প্রচারের পাশাপাশি তিনি শিক্ষাদান এবং গ্রন্থরচনার কাজও করেন|অতীশ দীপঙ্করের কীর্তি বাঙালি জাতির পক্ষে অত্যন্ত গৌরবের।
প্রশ্নঃ "ঘরের ছেলে চক্ষে দেখেছি বিশ্বভূপের ছায়া" - একথা বলতে কবিকৗ বুঝিয়েছেন?
উত্তরঃ উদ্ধৃতিটি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা 'আমরা' কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। পঙক্তিটির অর্থ হল বাঙালি তার ঘরের ছেলের মধ্যেই বিশ্বসম্রাটকে প্রত্যক্ষ করেছে। নিঃসন্দেহে কবি এখানে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যকেই বুঝিয়েছেন। শুধু জমি এবং ক্ষমতার অধিকারী হলেই রাজা হওয়া যায় না। শ্রীচৈতন্যদেব ধনী-দরিদ্র ভেদাভেদ না করে, উচ্চ-নীচ ভেদ না করে সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে ভালোবাসা বিতরণ করে মানুষের হৃদয়ের রাজা হয়ে উঠেছিলেন। তার এই ভালোবাসার আদর্শ সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছিল। তাই কবি উক্ত মন্তব্যটি করেছেন।
প্রশ্নঃ "থপতি মোদের স্থাপনা করেছে বরভূধরের ভিত্তি" - পঙক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ উদ্ধৃত পঙক্তিটি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা 'আমরা' কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।
খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে জাভা দ্বীপে (বর্তমান ইন্দোনেশিয়া) শৈলেন্দ্র রাজবংশের রাজত্বকালে গড়ে ওঠা সুবিশাল বৌদ্ধস্তুপ হল বরভূধর। প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে বাংলার বাণিজ্যিক যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়। ওই অঞ্চলের স্থাপত্যে পাল-সেন যুগের। প্রভাবের কথাও জানা যায়। এই সূত্রের ওপর ভিত্তি করেই সম্ভবত কবি বরভূধর স্থূপকে বাঙালির তৈরি বলেছেন।
(৪) নিচের রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
প্রশ্নঃ 'আমরা' কবিতায় কবি বাঙালির কৃতিত্বকে যেভাবে বর্ণনা করেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তরঃ সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের 'আমরা' কবিতাটিতে কবি বাঙালির গৌরবগাথা রচনা করেছেন।
জলে-জঙ্গলে পূর্ণ বাংলায় বাঙালি জাতি সাপ ও বাঘের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকে। রাঢ় বাংলার সিংহপুরের রাজপুত্র বাঙালি বিজয়সিংহ লঙ্কা জয় করেন এবং তার নামানুসারেই লঙ্কার নামকরণ সিংহল করা হয়। বারোভূঁইয়ার অন্যতম চাদ রায়, প্রতাপাদিত্যকে পরাজিত করতে দিল্লির মোগল সম্রাটকে রীতিমতো লড়াই করতে হয়েছিল। বাঙালি পন্ডিত অতীশ দীপঙ্কর তিব্বতে গিয়ে বৌদ্ধধর্মের প্রচার ও শিক্ষাবিস্তার করেন। নবদ্বীপের রঘুনাথ শিরোমণি মিথিলার বিখ্যাত পণ্ডিত পক্ষধর মিশ্রকে তর্কযুদ্ধে পরাজিত করে বাংলার গৌরব বৃদ্ধি করেন। বাঙালি কবি জয়দেবের লেখা কাব্য গীতগোবিন্দ সংস্কৃত সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। স্থাপত্য-ভাস্কর্য-শিল্পকলাতেও বাঙালি জাতি কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছে। পাল যুগের বিখ্যাত দুই ভাস্কর ছিলেন বিপাল ও ধীমান। মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব, শ্রীরামকৃয়দেব আধ্যাত্মিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বাঙালিকে অপূর্ব মহিমা দান করেছেন। স্বামী বিবেকানন্দের বাণী মুগ্ধ করেছে বিশ্ববাসীকে। বাঙালি বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু গাছের মধ্যে প্রাণের স্পন্দন আবিষ্কার করেছেন। ড. প্রফুল্লচন্দ্র রায় রসায়নশাস্ত্রে অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। বাঙালির কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ তার কবিতায় মানুষের মহামিলনের কথা বলেছেন। সবশেষে কবি আশা প্রকাশ করেছেন যে বাঙালি একদিন তার প্রতিভা ও কর্মপ্রচেষ্টায় বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা লাভ করবে।
প্রশ্নঃ "আমরা" কবিতাতে কবি বঙ্গভূমির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের যে বর্ণনা করছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তরঃ 'আমরা' কবিতায় কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের কাছে বঙ্গভূমি ভৗগোলিক সীমায় আবদ্ধ একটি ভূখণ্ড মাত্র নয়, এই দেশ তার কাছে মাতৃরূপে ধরা দিয়েছে।
মুক্তধারা গঙ্গা নদী বাংলার ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে বয়ে গিয়ে সমুদ্রে মিশেছে। কবির মতে গৃঙ্গ এদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে গিয়ে আনন্দে উচ্ছল। হয়েছে এবং তার পবিত্র জলের স্পর্শে এখানকার মানুষকে সমস্ত পাপ থেকে মুক্তিদান করেছে।
কবির কল্পনায় বাংলামায়ের বাম হাতে আছে ধনসম্পদের দেবী লক্ষ্মীর পদ্মফুল আর তার ডানদিকে মধুলোভী অসংখ্য মধুকরের আনাগোনা। বাংলার উত্তরে থাকা বরফে ঢাকা হিমালয় পর্বতমালা সূর্যের কিরণে সোনার মুকুটের মতো ঝলমল করে। সেই মুকুট থেকে ঠিকরে পড়া আলোয় বিশ্বচরাচর আলোকিত হয়। বাংলার দিগন্ত বিস্তৃত সোনালি ধানখেতকে কবি বাংলামায়ের কোলভরা সোনার ধান বলেছেন। মায়ের দেহ অতসী- অপরাজিতা ফুলে শোভিত। বাংলার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর যেন তটভূমিতে আছড়ে পড়া তেউয়ের মাধ্যমে বাংলা-মাকে তার প্রণাম জানায়, ঢেউয়ের কলতানে রচিত হয় মায়ের বন্দনাগীতি। এভাবেই কবি সারা পৃথিবীর মানুষের 'বাঞ্ছিত ভূমি' বাংলার রূপ বর্ণনা করেছেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ