আবহমাননীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
প্রশ্নঃ আবহমান কবিতাটি কার লেখা?
(ক) শঙ্খ ঘোষ
(খ) জয় গোস্বামী
(গ) নিরেন চক্রবর্তী
(ঘ) নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
উত্তর: (ঘ) নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
প্রশ্নঃ ছোট ফুল কোন সময়ের বাতাসে দোলে?
(ক) দুপুরবেলা
(খ) সকালবেলা
(গ) বিকেলবেলা
(ঘ) সন্ধ্যাবেলা
উত্তর: (ঘ) সন্ধ্যাবেলা
প্রশ্নঃ 'আবহমান' কবিতায় কবি কার পাশে গিয়ে দাঁড়াতে বলেছেন?
(ক) পুঁইমাচার
(খ) লাউমাচার
(গ) পুঁইশাক মাচার
(ঘ) কুমড়ো মাচার
উত্তর: (খ) লাউমাচার
প্রশ্নঃ কি বাসি হয় না?
(ক) আনন্দ
(খ) সুখ
(গ) দুঃখ
(ঘ) যন্ত্রণা
উত্তর: (গ) দুঃখ
প্রশ্নঃ কোন গাছটি 'বুড়িয়ে ওঠে কিন্তু মুড়য় না'?
(ক) নটে
(খ) পাট
(গ) বট
(ঘ) শটি
উত্তর:(ক) নটে
প্রশ্নঃ লাউমাচাটি কোথায় আছে?
(ক) বেড়ার পাশে
(খ) রাস্তার পাশে
(গ) ঘরের কোণে
(ঘ) উঠোনে
উত্তর: (গ) ঘরের কোণে
প্রশ্নঃ সারাটা দিন আপন মনে কিসের গন্ধ মাখে?
(ক) ঘাসের
(খ) ফুলের
(গ) মাটির
(ঘ) পাতার
উত্তর: (ক) ঘাসের
প্রশ্নঃ "নেভেনা তার যন্ত্রণা যে,___হয় না বাসি"-
(ক) সুখ
(খ) হাসি
(গ) কান্না
(ঘ) দুঃখ
উত্তর: (ঘ) দুঃখ
প্রশ্নঃ বাগান থেকে কোন ফুলের হাসি হারায় না?
(ক) জবা
(খ) চাঁপা
(গ) কেয়া
(ঘ) কুন্দ
উত্তর: (ঘ) কুন্দ
প্রশ্নঃ 'সান্ধ্য' শব্দের অর্থ কি?
(ক) সন্ধ্যাকালীন
(খ) সায়াহু
(গ) অপরাহু
(ঘ) প্রাক সন্ধ্যা
উত্তর: (ক) সন্ধ্যাকালীন
প্রশ্নঃ 'আবহমান' কবিতায় লাইমাচাটি ছিল -
(ক) প্রতিবেশীর বাড়িতে
(খ) উঠোনে
(গ) বারান্দায়
(ঘ) পুকুর পাড়ে
উত্তর: (ঘ) পুকুর পাড়ে
প্রশ্নঃ "কে এখানে ঘর বেধেছে..."-এই ঘর বাঁধা হয়েছে -
(ক) ঝগড়া করে
(খ) গোপন ভালোবাসায়
(গ) গভীর অনুরাগে
(ঘ) তীব্র অসন্তোষে
উত্তর: (গ) গভীর অনুরাগে
প্রশ্নঃ কে এখানে ঘর বেঁধেছে ____ অনুরাগে।
(ক) নিবিড়
(খ) দারুন
(গ) গাঢ়
(ঘ) গভীর
উত্তর: (ক) নিবিড়
প্রশ্নঃ কার দুরন্ত পিপাসা ফুরোয় না?
(ক) দস্যি ছেলেটার
(খ) দুষ্টু ছেলেটার
(গ) জেদি ছেলেটার
(ঘ) একগুঁয়ে ছেলেটার
উত্তর: (ঘ) একগুঁয়ে ছেলেটার
প্রশ্নঃ 'আবহমান' কবিতায় জানা হারানোর কথা বলা হয়েছে, তা হল -
(ক) কুন্দ ফুলের হাসি
(খ) রোদের হাসি
(গ) চাঁদের হাসি
(ঘ) আলোর হাসি
উত্তর: (ক) কুন্দ ফুলের হাসি
অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর ধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাও ঃ
প্রশ্নঃ 'আবহমান কবিতাটি কার লেখা?
উত্তর: নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর লেখা
প্রশ্নঃ 'নেবে না তার যন্ত্রণা'-কিসের যন্ত্রণা?
উত্তর: শৈশব থেকে বিচ্যুত হবার যন্ত্রণাকে এখানে বলা হয়েছে।
প্রশ্নঃ কবি কোথায় দাঁড়াতে বলেছে?
উত্তর: কবি উঠোনে লাউমাচাটির পাশে দাঁড়াতে বলেছেন।
প্রশ্নঃ 'ছোট একটা ফুল দুলছে'-কিসের ফুল দুলছে?
উত্তর: বর্তমানে দাঁড়িয়ে কবির মনে শৈশব জীবনের নানা ঘটনা মনে পড়ছে। এই স্মৃতির ফুল দুলছে।
প্রশ্নঃ 'কিন্তু মড়য় না' - মড়য় না বলতে কবি কি বলতে চেয়েছেন?
উত্তর: মানুষের বয়স বাড়ে। অতি সুদূর অতীতে চলে যায়। যদিও মানুষের স্মৃতি ভূমি নষ্ট হয়ে যায় কিন্তু স্মৃতি জেগে থাকে চিরকাল। মড়য় না বলতে এ কথাই বলতে চেয়েছেন কবি ।
প্রশ্নঃ 'কে এখানে এসেছিল অনেক বছর আগে?'-কোনখানে আসার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: একদিন যেখানে শৈশবের দিনগুলি কেটেছে সেখানকার কথা বলা হয়েছে?
প্রশ্নঃ 'যা ফিরে ওই উঠনে তোর দাঁড়া'-কবি উঠোনে গিয়ে দাঁড়াতে বলেছেন কেন?
উত্তর: কবি অতীত হয়ে যাওয়া শৈশব জীবনের কথা মনে করিয়ে দেবার জন্যই উঠোনে গিয়ে দাঁড়াতে বলেছেন।
প্রশ্নঃ 'ফুরায় না তার কিছুই ফুরায় না'-কি ফুরায় না?
উত্তর: শৈশব জীবন এর প্রতি আসক্তি, ভালোবাসা, এই মাটির প্রতি টান-এই সবকিছুই ফুরায় না।
প্রশ্নঃ 'কে এখানে হারিয়ে গিয়েও আবার ফিরে আসে।' - হারিয়ে যাওয়ার কারন কি?
উত্তর: শৈশব পেরিয়ে যৌবনে পৌঁছালে মানুষ বৃহত্তর কর্মজীবনে জড়িয়ে পড়ে। তাই সে তার অতীত জীবন থেকে হারিয়ে যায় না।
প্রশ্নঃ 'ফুল দুলছে, ফুল, সন্ধ্যার বাতাসে'-সন্ধ্যার বাতাসে বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: জীবনের পড়ন্ত বেলায় পৌঁছে কবিতার শৈশব জীবনের কথা ভাবছেন বলে সন্ধ্যার বাতাস কথাটি ব্যবহার করেছেন।
প্রশ্নঃ 'নটে গাছটি বুড়িয়ে ওঠে' - নটে গাছ বলতে কার বা কিসের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: নটে গাছ বলতে মানুষের জীবনের কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্নঃ 'বুড়িয়ে ওঠে'বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: বুড়িয়ে ওঠে বলতে কবি বয়স বেড়ে যাওয়ার কথা বুঝিয়েছ।
প্রশ্নঃ 'তেমনি করে সূর্য ওঠে' বলতে কি বুঝিয়েছেন কবি?
উত্তর: তেমনি করেই বলতে কবি তারা শৈশবে দেখা সূর্যোদয়ের কথা বুঝিয়েছন।
প্রশ্নঃ সন্ধ্যার বাতাসে কি দুলছে?
উত্তর: ফুল দুলছে ।
প্রশ্নঃ আবহমান কথাটির অর্থ কি?
উত্তর: নিরবিচ্ছিন্ন।
(৩) নিচের ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
প্রশ্নঃ 'কে এই খানে ঘর বেঁধেছে—'মার বেঁধেছে' কথাটির তাপ কী?
উত্তরঃ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর 'আবহমান’ কবিতা থেকে উদ্ধৃতিটি নেওয়া হয়েছে। মানুষের জীবনধারণের প্রাথমিক তিনটি চাহিদা হল অন্ন-বস্ত্র- বাসস্থান। আশ্রয়ের প্রয়োজনে মানুষ ঘরবাড়ি তৈরি করে। কিন্তু ঘর বাধা কথাটি ব্যাপকতর অর্থে ব্যবহৃত হয়। এর অর্থ শুধু ইট-কাঠ-পাথর দিয়ে বাসস্থান তৈরি করা নয়। এর ভিত তৈরি হয় স্নেহ-মমতামাখা সম্পর্কের উয়তা দিয়ে এবং আপন করে নেওয়ার চেষ্টা থেকেই। বাংলায় আসা মানুষজনও সেভাবেই এদেশকে ভালোবেসে এখানে ঘর বেঁধেছে।
প্রশ্নঃ "সারাটা দিন আপন মনে ঘাসের গন্ধ মাখে" - কে, কেন ঘাসের গন্ধ মাখে?
উত্তরঃ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর 'আবহমান' কবিতায় যে মানুষ শহরজীবনে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তার সমৃদ্ধি আর স্বচ্ছলতার আড়ালে থাকে গ্রামজীবনে ফিরে আসার প্রবল ইচ্ছা। মনের মধ্যে ফিরে আসার এই আকুলতাকেই কবি বলেছেন 'একগুঁয়েটার দুরন্ত পিপাসা'। এই পিপাসাতেই সে সারাদিন প্রকৃতি আর গ্রামের সান্নিধ্য পাওয়ার আশাকে বাঁচিয়ে রাখে! "আপন মনে ঘাসের গন্ধ মাখে" - এই কথাটির মধ্য দিয়ে মানুষের প্রকৃতির প্রতি সেই আকর্ষণকেই বোঝানো হয়েছে।
প্রশ্নঃ "নটেগাছটা বুড়িয়ে ওঠে, কিন্তু মুড়য় না!" - পঙক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
অথবা,
নটেগাছটা বুড়িয়ে উঠেও মুড়োয় না কেন?
উত্তরঃ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তার 'আবহমান' কবিতায় দেখিয়েছেন যে, একসময় মানুষ নিবিড় ভালোবাসায় ঘর বেঁধেছিল গ্রামবাংলায়। পরবর্তীকালে গ্রামসভ্যতার সমৃদ্ধি নষ্ট হয়ে যায় নাগরিক সভ্যতার আগ্রাসনে। কিন্তু প্রকৃতি সেখানে নিজের হাতে একইভাবে সাজিয়ে রাখে, জীবন বয়ে চলে স্বচ্ছন্দ সহজ গতিতে। আর শহরের ক্লান্ত মানুষেরা শান্তির খোঁজে বারবার ফিরে আসে গ্রামবাংলার বুকে। নটে গাছটা বুড়িয়ে ওঠে; কিন্তু 'মুড়য় না' অর্থাৎ তার গ্রহণযোগ্যতা শেষ হয় না।
প্রশ্নঃ "কে এইখানে হারিয়ে গিয়েও আবার ফিরে আসে" - পঙক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর 'আবহমান' কবিতায় যে মানুষ একদিন গভীর অনুরাগ দিয়ে গ্রামসভ্যতা গড়ে তুলেছিল সেই মানুষই নগরসভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য আর সমৃদ্ধির টানে গ্রাম ছেড়ে শহরে গিয়ে বাসা বেঁধেছিল। কিন্তু শহরজীবন ঐশ্বর্য আর সমৃদ্ধি দিলেও মানুষকে শান্তি দিতে পারেনি। তাই গ্রাম থেকে হারিয়ে যাওয়া মানুষ আবার শান্তির খোঁজে গ্রামেই ফিরে আসে।
(৪) নিচের রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
প্রশ্নঃ "এই মাটিকে এই হাওয়াকে আবার ভালোবাসে।" - এই মাটি হাওয়াকে আবার ভালোবাসার কারণ কী?
উত্তরঃ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর 'আবহমান' কবিতাটি নিজের শিকড়ের খোঁজে মানুষের অনিঃশেষ পথ চলার কাহিনি। সভ্যতার শুরুতে অরণ্যবাসী মানুষ বল কেটে বসতি গড়েছিল, তৈরি করেছিল তার গ্রামসভ্যতা! ঘর বেঁধেহিন নিবিড় অনুরাগে। সেই মানুষই ধীরে ধীরে নাগরিক হয়েছে। প্রকৃতি এবং গ্রামজীবনের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ ঘটেছে। কিন্তু শহরজীবনের ব্যস্ততা এবং কৃত্রিমতায় ক্লান্ত মানুষ নিজের মনের মধ্যে ধরে রাখতে চেয়েছে ঘাসের গন্ধ, তারায় ভরা আকাশে সে নিজের স্বপ্ন এঁকে রেখেছে। বাগান থেকে কুন্দফুলের হাসিকে মানুষ কখনও হারিয়ে যেতে দেয়নি। প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে সঞ্চারিত হয়েছে সেই দুরন্ত জীবনপিপাসা চাকচিক্য, আড়ম্বরের কৃত্রিমতায় নয়, মানুষ সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য জীবনকে তার সহজভাবে রূপরস-গন্ধ-স্পর্শ-সহ উপলব্ধি করতে চেয়েছে। তাই প্রকৃতির কাছে, তার ফেলে আসা গ্রামজীবনের কাছে ফিরে যাওয়ার তাগিদ উপলব্দি করেছে সে। সেখানে লাউমাচায় সন্ধ্যার বাতাসে ছোট্টো একটা ফুল আজও দোল খায়। সেই মাটিকে আর হাওয়াকে ভালোবেসে ফিরে যাওয়াটা যেন জীবনকে সুন্দরভাবে উপলব্ধি করার ও বেঁচে থাকার জন্য অবশ্য প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ