মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান
তৃতীয় অধ্যায়
বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ
বিভাগ 'ক'
১. প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে তার ক্রমিক সংখ্যাসহ বাক্যটি সম্পূর্ন করোঃ
(১.১) বংশগতির জনক হলেন -
(ক) ক্রিক
(খ) মেন্ডেল
(গ) পানেট
(ঘ) বেটসন
উত্তরঃ (খ) মেন্ডেল
(১.২) একটি সংকর দীর্ঘ (Tt) এবং একটি বিশুদ্ধ খর্ব (tt) মটর গাছের পরাগমিলনে উৎপন্ন গাছগুলি হবে -
(ক) সকলেই দীর্ঘ
(খ) সকলেই খর্ব
(গ) 50% দীর্ঘ, 50% খর্ব
(ঘ) 75% দীর্ঘ, 25% খর্ব
উত্তরঃ (গ) 50% দীর্ঘ, 50% খর্ব
(১.৩) দ্বিসংকর জনকের পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফিনোটাইপগত অনুপাত হল -
(ক) 9:2:2:1
(খ) 9:3:3:1
(গ) 4:2:2:1
(ঘ) 3:9:1:3
উত্তরঃ (খ) 9:3:3:1
(১.৪) দুটি সংকর লম্বা (Tt) মটর গাছের মধ্যে সংকরায়নের ফলে প্রথম অপত্য বংশে সংকর লম্বা মটর গাছ পাওয়া যাবে -
(ক) 50%
(খ) 75%
(গ) 100%
(ঘ) 125%
উত্তরঃ (ক) 50%
(১.৫) মটর গাছের নির্বাচিত বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে নীচের কোন্টি প্রকট? -
(ক) কান্ডের দৈর্ঘ্য খর্ব
(খ) ফুলের বর্ন হলুদ
(গ) বীজের আকার কুঞ্চিত
(ঘ) ফলের আকার স্ফীত
উত্তরঃ (ঘ) ফলের আকার স্ফীত
(১.৬) একজন হিমোফিলিক পুরুষ এবং বাহক মহিলার বিয়ে হলে তাদের সন্তানরা হবে -
(ক) সললেই হিমোফিলিক
(খ) 1/2 হমোফিলিক
(গ) 1/3 হিমোফিলিক
(ঘ) 1/4 হিমোফিলিক
উত্তরঃ (খ) 1/2 হিমোফিলিক
(১.৭) 'রয়্যাল ডিজিজ' নামে পরিচিত রোগটি হল -
(ক) রাতকানা
(খ) থ্যালোফিলিয়া
(গ) হিমোফিলিয়া
(ঘ) বর্ণান্ধতা
উত্তরঃ (গ) হিমোফিলিয়া
(১.৮) হিমোগ্লোবিন উৎপাদন ব্যাহত হয়ে মানবদেহে যে রোগ সৃষ্টি হয় তা হল -
(ক) হিমোফিলিয়া
(খ) ম্যালেরিয়া
(গ) থ্যালাসেমিয়া
(ঘ) লিউকিমিয়া
উত্তরঃ থ্যালাসেমিয়া
(১.৯) হিমোফিলিয়া পুত্রসন্তানের জিনোটাইপ হল -
(ক) h।।h
(খ) H।।^
(গ) H।।H
(ঘ) h।।^
উত্তরঃ (ঘ) h।।^
(১.১০) থ্যালাসেমিয়া বাহক পিতা এবং স্বাভাবিক মাতার দ্বিতীয় সন্তানের থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা হবে -
(ক) 100%
(খ) 75%
(গ) 25%
(ঘ) 0%
উত্তরঃ (ঘ) 0%
বিভাগ 'খ'
২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নির্দেশ অনুসারে লেখোঃ
** নীচের বাক্য গুলিতে উপযুক্ত শব্দ বসিয়ে শূন্যস্থানগুলি পূরন করোঃ
(২.১) একই জনের বিভিন্ন রূপগুলিকে ____________ বলে।
উত্তরঃ অ্যালিল
(২.২) ক্রোমোজোমের যে নির্দিষ্ট স্থানে জিন অবিস্থত তাকে __________ বলে।
উত্তরঃ লোকাস
(২.৩) ক্রোমোজোম বা জিনের সংখ্যা অথবা গঠনের স্থায়ী পরিবর্তনকে _________ বলে।
উত্তরঃ পরিব্যক্তি
(২.৪) মানুষের চোখের রং চিনবার জন্য দায়ী কোশ হল __________ কোশ।
উত্তরঃ কোন
(২.৫) মানুষের _________ নং ক্রোমোজোমে a গ্লোবিন জিন থাকে।
উত্তরঃ 16
(২.৬) __________ রোগে রক্তের O2 পরিবহন ক্ষমতা কমে যায়।
উত্তরঃ থ্যালাসেমিয়া
** নীচের বাক্যগুলি সিত্য অথবা মিথ্যা নিরূপন করোঃ
(২.১) মেন্ডেলের মটর গাছের পরীক্ষার জন্য সাত জোড়া বিপরীত বৈশিষ্ট্য শনাক্ত করা হয়।
উত্তরঃ সত্য
(২.২) জনন কোশে অটোজোমের সংখ্যা ২২ টি।
উত্তরঃ সত্য
(২.৩) মেন্ডেলের পরীক্ষায় TT বলতে বিশুদ্ধ লম্বা মটর গাছকে বোঝায়।
উত্তরঃ সত্য
(২.৪) অ্যানিমিয়া রোগাক্রান্ত ব্যক্তির দেহে অক্সিজেন পরিবহন বিঘ্নিত হয়।
উত্তরঃ সত্য
**একটি শব্দে বা একটি বাক্যে উত্তর দাওঃ
(২.১) পিতামাতার জিন অপত্য যদি সমপ্রকৃতির হয়, তাকে কী বলা হয়?
উত্তরঃ হোমোজাইগাস
(২.২) নীচের চারটি বিষের মধ্যে তিনটি একটি বিষের অন্তর্গত। সে বিষয়টি খুঁজে বার করে নাম লেখোঃ
বংশগতিবিদ্যা, একসংকর জনন, দ্বিসংকর জনন, সমসংকর জীব।
উত্তরঃ বংশগতিবিদ্যা
(২.৩) মানুষের দেহকোশে অটোজোমের সংখ্যা কত?
উত্তরঃ 44 টি
(২.৪)নীচে সম্পর্কযুক্ত শব্দ জোড় দেওয়া আছে। প্রথম জোড়টির সম্পর্ক দেখে দ্বিতীয় জোড়টির শূন্যস্থানে উপযুক্ত শব্দ বসাওঃ
ক্লাসিক হিমোফিলিয়াঃ হিমোফিলিয়া A::ক্রিস্টমাস রোগঃ ___________।
উত্তরঃ হিমোফিলিয়া B
(২.৫) ইংল্যান্ডের রানি ভিক্টোরিয়া সর্বপ্রথম যে রোগের প্রচ্ছন্ন জিনটি ধারন করেন, সেটির নাম উল্লেখ করো।
উত্তরঃ হিমোফিলিয়া B
** 'ক' স্তম্ভের সঙ্গে 'খ' স্তম্ভ থেকে মিলিয়ে লেখোঃ
'ক' স্তম্ভ 'খ' স্তম্ভ
(২.১০) অ্যালোজোম (ক) লম্বা মটর গাছ
(২.১১) প্রকট বৈশিষ্ট্য (খ) সেক্স ক্রোমোজোম
(২.১২) পৃথকীভবনের সূত্র (গ) বংশগতির একক
(২.১৩) স্বাধীন বিন্যাসের সূত্র (ঘ) একসংকর জননের ফল
(২.১৪) চেকার বোর্ড (ঙ) দ্বিসংকর জননের ফল
(চ) বিজ্ঞানী পানেট
উত্তরঃ (২.১০) অ্যালোজোম -> (খ) সেক্স ক্রোমোজোম (২.১১) প্রকট বৈশিষ্ট্য -> (ক) লম্বা মটর গাছ (২.১২) পৃথকীভবনের সূত্র -> (ঘ) একসংকর জননের ফল (২.১৩) স্বাধীন বিন্যাসের সূত্র -> (ঙ) দ্বিসংকর জননের ফল (২.১৪) চেকার বোর্ড -> (চ) বিজ্ঞানী পানেট।
'ক' স্তম্ভের সঙ্গে 'খ' স্তম্ভ থেকে মিলিয়ে লেখোঃ
'ক' স্তম্ভ 'খ' স্তম্ভ
(২.১০) মিউটেশন (ক) PTA এর অভাব
(২.১১) Y ক্রোমোজোম (খ) জিনের আকস্মিক পরিবর্তন
(২.১২) অ্যানিমিয়া (গ) হোলানড্রিক জিন
(২.১৩) হিমোফিলিয়া C (ঘ) থ্যালাসেমিয়া রোগ
(২.১৪) ডিউটেরানোপিয়া (ঙ) স্ত্রীদেহের সেক্স-ক্রোমোজোম
(চ) সবুজ বর্ন দেখার অক্ষমতা
উত্তরঃ (২.১০) মিউটেশন -> (খ) জিনের আকস্মিক পরিবর্তন (২.১১) Y ক্রোমোজোম -> (গ) হোলানড্রিক জিন (২.১২) অ্যানিমিয়া -> (ঘ) থ্যালাসেমিয়া রোগ (২.১৩) হিমোফিলিয়া C -> (ক) PTA এর অভাব (২.১৪) ডিউটেরানোপিয়া -> (চ) সবুজ বর্ন দেখার অক্ষমতা।
বিভাগ 'গ'
৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দুই-তিনটি বাক্যে লেখোঃ
প্রশ্নঃ মেন্ডেল তার পরীক্ষার জন্য মটর গাছ বেছে নেন কেন?
উত্তরঃ মটর গাছ সহজে কম স্থানে প্রতিপালন করা হয় ও মটর গাছ স্বপ্রজননক্ষম এবং বিশুদ্ধ। অল্প সময়ে প্রচুর অপত্য উৎপন্ন হয়। মটর গাছে সহজে সংকরায়ণ ঘটানো যায়।
প্রশ্নঃ মেন্ডেলবাদ কাকে বলে? তার সূত্র দুটি কী কী?
উত্তরঃ মেন্ডেলের আবিষ্কৃত মৌলিক সূত্র বা তত্ত্বগুলিকে এককথায় মেন্ডেলবাদ বলা হয়। মেন্ডেলের সূত্র দুটি হল - (১) পৃথকভবনের সূত্র, (২) স্বাধীন সঞ্চারণের সূত্র।
প্রশ্নঃ বিশুদ্ধ বা খাঁটি জীব কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ কোনো জীব বংশানুক্রমে একরকম বৈশিষ্ট্য বজায় রাখলে তাকে বিশুদ্ধ বা খাঁটি জীব বলে। মেন্ডেলের একসংকর পরীক্ষায় জনিতৃ জনুর লম্বা (TT) ও বেঁটে (tt) মটর গাছ হলো বিশুদ্ধ উদ্ভিদের উদাহরণ।
প্রশ্নঃ মেন্ডেলের সাফল্য লাভের দুটি কারন উল্লেখ করো।
উত্তরঃ মেন্ডেলের সাফল্য লাভের দুটি কারন হল -
(১) মেন্ডেলের সংকরায়ন পরীক্ষাকালে একজোড়া বা দুজোড়া বিপরীতধর্মী চারিত্রিক বৈশিষ্ট নিয়ে পরীক্ষা করিয়েছিলেন তাই পরীক্ষা সফল হয়েছিল।
(২) মেন্ডেল প্রতিটি পরীক্ষালব্ধ ফলাফল অন্ততপক্ষে তিনটি বংশানুক্রম পর্যন্ত লিপিবদ্ধ করিয়েছিলেন ফলে সূত্র নির্ধারন করা সহজ হয়েছিল।
প্রশ্নঃ সংকর জীব এবং সংকরায়ণ কাকে বলে?
উত্তরঃ দু’টি বিশুদ্ধ বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যযুক্ত জীবের পরনিষেকের ফলে উৎপন্ন জীবটিকে সংকর জীব বলে। সংকর জীব সৃষ্টির পদ্ধতিকে সংকরায়ণ বলে। যেমন— খাঁটি লম্বা (TT) এবং খাঁটি বেঁটে (tt) দু’টি জীবের পরনিষেকের ফলে উৎপন্ন জীবটি হলো সংকর জীব (Tt)।
প্রশ্নঃ প্রলক্ষণ বা বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তরঃ যে সব লক্ষণ দেখে জীবকে শনাক্ত করা যায় তাদের বৈশিষ্ট্য বা প্রলক্ষণ বলে।
প্রশ্নঃ প্রকট ও প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য কাকে বলে?
উত্তরঃ দু’টি বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যযুক্ত জীবের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটালে যে বৈশিষ্ট্যটি F, জনুতে বা প্রথম অপত্য বংশে প্রকাশ পায় তাকে প্রকট বৈশিষ্ট্য বলে। অন্যদিকে, যে বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশ পায় না বা সুপ্ত অবস্থায় থাকে তাকে প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য বলে।
প্রশ্নঃ অসম্পূর্ণ প্রকটতা কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ বিপরীত বৈশিষ্ট্যযুক্ত দু’টি জীবের সংকরায়ণে প্রকট জিনটি সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ না পাওয়ায় জীবের প্রকট ও প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যের মধ্যবর্তী একটি বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়। এই ঘটনাকে অসম্পূর্ণ প্রকটতা বলে।
প্রশ্নঃ প্রকরণ কাকে বলে? এর কারণ কী?
উত্তরঃ যৌন জননের সময় জিনের পরিবর্তনে বা পরিবেশের প্রভাবে একই প্রজাতির জীবের মধ্যে যে পার্থক্য দেখা যায় তাকে প্রকরণ বলে। জিনগত পরিবর্তন প্রকরণের কারণ।
প্রশ্নঃ অ্যালিল কাকে বলে?
উত্তরঃ সমসংস্থ ক্রোমোজোমের কোনো একটি বিন্দুতে উপস্থিত বিপরীতধর্মী জিন জোড়াকে অ্যালিল বা অ্যালিলোমর্ফ বলে।
প্রশ্নঃ হিমোফিলিয়া কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বংশগত রোগের ফলস্বরূপ মানবদেহে আঘাতপ্রাপ্ত থান (ক্ষত,কাটা স্থান) থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না, অর্থাৎ রক্ত তঞ্চিত হয় না তাকে হিমোফিলিয়া বলে।
প্রশ্নঃ রাজকীয় হিমোফিলিয়া কাকে বলে?
উত্তরঃ হিমোফিলিয়া A মহারানি ভিক্টোরিয়ার পরিবারে প্রথম দেখা যায়। তাই এই রোগকে রাজকীয় হিমোফিলিয়া বলে।
প্রশ্নঃ হিমোফিলিয়া রোগের কারণ উল্লেখ করো।
উত্তরঃ হিমোফিলিয়া X-ক্রোমোজোমে অবস্থিত প্রচ্ছন্ন জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এই রোগে দেহের আঘাতপ্রাপ্ত স্থান থেকে রক্ত ক্ষরণ হতে থাকে অর্থাৎ রক্ততঞ্চন ব্যাহত হয়।
হিমোফিলিয়া A : রস্তুতনে সাহায্যকারী উপাদান VIII, অর্থাৎ অ্যান্টিহিমোফিলিক ফ্যাক্টর – এর অভাবে হয়।
হিমোফিলিয়া B : রক্ততঞ্চনে সাহায্যকারী উপাদান IX অর্থাৎ ক্রিসমাস ফ্যাক্টর – এর অভাবে হয়।
প্রশ্নঃ মেন্ডেলের একসংকর জনন পরীক্ষার ফিনোটাইপ ও জিনোটাইপ অনুপাত কত?
উত্তরঃ ফিনোটাইপ অনুপাত, লম্বা ও বেঁটে = 3 : 1 জিনোটাইপ অনুপাত, বিশুদ্ধ লম্বা সংকর লম্বা বিশুদ্ধ বেঁটে = 1 : 2 : 1
প্রশ্নঃ পিতা–মাতার বৈশিষ্ট্য অপত্যে সঞ্চারিত হয় কেন?
উত্তরঃ যৌন জননের সময় পিতা এবং মাতার দেহে উৎপন্ন গ্যামেট মিলিত হয়ে জাইগোট গঠন করে এবং জাইগোট থেকে বিভাজনের মাধ্যমে নতুন অপত্য জীব সৃষ্টি হয়। পিতা ও মাতার জনন থেকে অপত্য উৎপন্ন হওয়ায় অপত্যে পিতা ও মাতার মতো বৈশিষ্ট্য হয়।
প্রশ্নঃ থ্যালাসেমিয়ার কারন কী?
উত্তরঃ জিনগত ত্রুটির জন্য যখন হিমোগ্লোবিন পলিপেপটাইড শৃঙ্খল উৎপন্ন হয় না তার ফলে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায়, তখন থ্যালাসেমিয়া রোগ হয়।
প্রশ্নঃ বর্ণান্ধতা কী? এই রোগের লক্ষণ কী?
উত্তরঃ মানুষের X ক্রোমোজোমের একটি জিনের পরিবর্তনের জন্য চোখের রেটিনায় কোন কোশে অপসিন প্রোটিনের ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে মানুষ লাল, সবুজ বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে নীল বর্ণও চিনতে পারে না। একে বর্ণান্ধতা বলে।
লক্ষণঃ লাল, সবুজ বা নীল বর্ণ দেখতে না পাওয়া।
বিভাগ 'ঘ'
৪. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
প্রশ্নঃ মেন্ডেলবাদ বা মেন্ডেলিজম কী? মেন্ডেলের বংশগতির সূত্র দু’টি বিবৃত করো।
উত্তরঃ মেন্ডেল আবিষ্কৃত বংশগতির মৌলিক নিয়মাবলি এবং সূ ত্রগুলিকে একত্রে মেন্ডেলিজম বা মেন্ডেলবাদ বলে।
মেন্ডেলের বংশগতির সূত্রগুলি হলো - পৃথকীভবন সূত্র যা একসংকর জনন পরীক্ষার উপর নির্ভর করে রচিত এবং স্বাধীন বিন্যাসের সূত্র যা দ্বিসংকর জনন পরীক্ষার ফলাফলের উপর নির্ভর করে রচিত।
পৃথকীভবন সূত্রঃ কোনো জীবের একজোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য এক জনু থেকে অপর জনুতে সঞ্চারিত হওয়ার সময় একত্রিত হলেও বৈশিষ্ট্যগুলি মিশ্রিত হয় না, পরবর্তীকালে গ্যামেট গঠন করার সময় পৃথক হয়ে যায়।
স্বাধীন বিন্যাসের সূত্রঃ কোনো জীবের দুই বা ততোধিক যুগ্ম বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য জনিতৃ জনু থেকে অপত্য জনুতে সঞ্চারিত হওয়ার সময় একত্রিত হলে শুধুমাত্র গ্যামেট গঠনকালে এরা পরস্পর থেকে পৃথক হয় তা–ই নয়, উপরতু প্রত্যেকটি বৈশিষ্ট্য স্বাধীনভাবে যেকোনো বিপরীত বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সম্ভাব্য সকল প্রকার সমন্বয়ে সঞ্চারিত হয়।
প্রশ্নঃ মেন্ডেলের সফলতার কারণ কী? মেন্ডেল তাঁর পরীক্ষার জন্য মটর গাছ কেন বেছে নেন?
উত্তরঃ মেন্ডেল দক্ষ প্রজননবিদ ছিলেন। তাই যত্ন সহকারে সংকরায়ণ পরীক্ষাগুলি করেছিলেন। ও মেন্ডেল নির্বাচিত সব বৈশিষ্ট্য সহজে শনাক্তকরণ করা যায়। তাঁর নির্বাচিত মটর গাছ বিশুদ্ধ ও স্বপ্রজননক্ষম ছিল।
মটর গাছ নির্বাচনের কারণঃ মটর গাছ সহজে কম স্থানে প্রতিপালন করা হয়। মটর গাছ স্বপ্রজননক্ষম এবং বিশুদ্ধ। অল্প সময়ে প্রচুর অপত্য উৎপন্ন হয়। মটর গাছে সহজে সংকরায়ণ ঘটানো যায়।
প্রশ্নঃ মেন্ডেলের একসংকর পরীক্ষাটি চেকারবোর্ডের সাহায্যে ব্যাখ্যা করো। মেন্ডেলের সফলতার কারণ কী?
উত্তরঃ একজোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন একই প্রজাতির দু’টি জীবের মধ্যে সংকরায়ণকে একসংকর বা মনোহাইব্রিড ক্রস বলে।
মেন্ডেল একসংকর জনন পরীক্ষার জন্য খাঁটি লম্বা (TT) এবং খাঁটি বেঁটে (tt) মটর গাছ নিয়েছিলেন। এদের কৃত্রিমভাবে ইতর পরাগযোগ ঘটানোর ফলে উৎপন্ন বীজ থেকে যে গাছগুলি (F) হয় সেগুলি সবই লম্বা বৈশিষ্ট্যযুক্ত যাদের জিনোটাইপ হলো (Tt)।
F জনুর গাছগুলির মধ্যে স্বপরাগযোগ ঘটানো হলে, F-তে যে গাছগুলি উৎপন্ন হয় তার মধ্যে তিনভাগ লম্বা এবং একভাগ বেঁটে বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। কিন্তু এদের জিনোটাইপ একভাগ খাঁটি লম্বা (TT), দুইভাগ সংকর লম্বা (Tt) এবং একভাগ বেঁটে (tt) মটর গাছ দেখা যায়।
প্রশ্নঃ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত কোনো শিশুর দেহে কী কী লক্ষণ প্রকাশিত হয়? সেই ক্ষেত্রে জেনেটিক কাউন্সেলিং-এর সময় কী পরামর্শ দেওয়া হয়?
উত্তরঃ লক্ষণ - (১) হিমোগ্লোবিন উৎপাদন কমে যাওয়া।
(২) রক্তাল্পতা রোগ দেখা দেয়।
(৩) লোহিত রক্ত কণিকার আকার ছোটো হওয়া।
(৪) দেহে লোহা জমে যাওয়া ইত্যাদি।
জেনেটিক কাউন্সেলিং–এর পরামর্শঃ (১) দুই পরিবারেই রক্ত পরীক্ষা করা উচিত।
(২) সন্তান না নেওয়া যদি পূর্বেই বিয়ে হয়ে যায়।
(৩) দুই পরিবারে রক্ত পরীক্ষায় থ্যালাসেমিয়া আছে জানতে পারলে বিবাহ বন্ধন না করা।
Biswajit adak
উত্তরমুছুনছে
উত্তরমুছুনলোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ