মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন ২০২৪ – তৃতীয় অধ্যায় – প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ
তৃতীয় অধ্যায়প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা
১) সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করা:-
১.১ ভারতে প্রথম অরণ্য আইন পাশ হয় -
(ক) 1878 খ্রিস্টাব্দে
(খ) 1859 খ্রিস্টাব্দে
(গ) 1860 খিস্টাব্দে
(ঘ) 1865 খ্রিস্টাব্দে
উত্তর : (ঘ) 1865 খ্রিস্টাব্দে
১.২ বাংলার নানা সাহেব বলা হতো -
(ক) রাম রতন রায়কে
(খ) তিতুমিরকে
(গ) বিরসা মুন্ডাকে
(ঘ) দুধু মিয়াকে
উত্তর: (ক) রাম রতন রায়কে
১.৩ 1878 খ্রিস্টাব্দে অরণ্য আইনে অরণ্যকে ভাগ করা হয় -
(ক) পাঁচটি স্তর
(খ) তিনটি স্তর
(গ) নয়টি স্তর
(ঘ) দুটি স্তর
উত্তর : (খ) তিনটি স্তর
১.৪ ফরাজী আন্দোলনের প্রবর্তক হলেন -
(ক) হাজী শরীয়ত উল্লাহ
(খ) তিতুমীর
(গ) দুদু মিয়া
(ঘ) সৈয়দ আহম্মদ
উত্তর: (ক) হাজী শরীয়ত উল্লাহ
১.৫ ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন কালে বাংলার প্রথম আদিবাসী বিদ্রোহ ছিল -
(ক) কোল বিদ্রোহ
(খ) ভিল বিদ্রোহ
(গ) রংপুর বিদ্রোহ
(ঘ) চুয়াড় বিদ্রোহ
উত্তর : (ঘ) চুয়াড় বিদ্রোহ
১.৬ 'ফরাজী' কথার অর্থ হল -
(ক) ঈশ্বর নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কর্তব্য
(খ) নবজাগরণ
(গ) বিরাট তোলপাড়
(ঘ) বিদ্রোহ
উত্তর: (ক) ঈশ্বর নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কর্তব্য
১.৭ সুই মুন্ডা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন -
(ক) চুয়াড় বিদ্রোহ
(খ) কোল বিদ্রোহ
(গ) সাঁওতাল বিদ্রোহ
(ঘ) মুন্ডা বিদ্রোহ
উত্তর : (খ) কোল বিদ্রোহ
১.৮ বাংলায় ওয়াহাবী অন্দোলনের নেতা ছিলেন -
(ক) সৈয়দ আহম্মদ
(খ) তিতুমীর
(গ) হাজী শরিয়ত উল্লাহ
(ঘ) আব্দুল ওয়াহাব
উত্তর: (খ) তিতুমীর
১.৯ কোল বিদ্রোহ কোথায় প্রথম শুরু হয়েছিল -
(ক) মেদিনীপুরে
(খ) ঝাড়গ্রামে
(গ) ছোটোনাগপুরে
(ঘ) রাঁচিতে
উত্তর : (গ) ছোটনাগপুরে
১.১০ নীল বিদ্রোহ শুরু হয় -
(ক) ১৮৫৭ সালে
(খ) ১৮৫৯ সালে
(গ) ১৮৬০ সালে
(ঘ) ১৮৬৪ সালে
উত্তর: (খ) ১৮৫৯ সালে
১.১১ 'দামিন-ই-কোহ' কথাটির অর্থ হলো -
(ক) নদী উপত্যকা
(খ) সমভূমি
(গ) পাহাড়ের প্রান্তদেশ
(ঘ) উপকূলবর্তী অঞ্চল
উত্তর : (গ) পাহাড়ের প্রান্তদেশ
১.১২ 'দার উল হরব' কথার অর্থ হল -
(ক) ইসলামের দেশ
(খ) শান্তির দেশ
(গ) শত্রুর দেশ
(ঘ) মহাজন এলাকা
উত্তর: (গ) শত্রুর দেশ
১.১৩ 'খুৎকাঠি প্রথা'র অর্থ হলো -
(ক) ব্যক্তিগত মালিকানা
(খ) যৌথ মালিকানা
(গ) ভাগচাষী মালিকানা
(ঘ) জমিদারি মালিকানা
উত্তর : (খ) যৌথ মালিকানা
১.১৪ বারাসাত বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন -
(ক) দুদু মিয়া
(খ) দিগম্বর বিশ্বাস
(গ) বিরসা মুন্ডা
(ঘ) তিতুমীর
উত্তর: (ঘ) তিতুমীর
১.১৫ সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহের একজন নেতা ছিলেন -
(ক) ভবানী পাঠক
(খ) কালীচরণ
(গ) বিষ্ণুচরন বিশ্বাস
(ঘ) বিরসা মুন্ডা
উত্তর : (ক) ভবানী পাঠক
১.১৬ 'ওয়াহাবী' শব্দের অর্থ -
(ক) নবজাগরণ
(খ) নির্দেশ
(গ) ধর্ম সংস্কার
(ঘ) সংগ্রাম
উত্তর : (ক) নবজাগরণ
১.১৭ বারাসাত বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন -
(ক) দুদুমিয়া
(খ) দিগম্বর বিশ্বাস
(গ) মীর নিসার আলী
(ঘ) বিরসা মুন্ডা
উত্তর : (গ) মীর নিসার আলী
১.১৮ বাঁশের কেল্লায় কামান আক্রমণের নির্দেশ কে দিয়েছিলেন ? -
(ক) লর্ড কর্নওয়ালিস
(খ) লর্ড ডালহৌসি
(গ) লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক
(ঘ) লর্ড ময়রা
উত্তর : (গ) লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক
১.১৯ 'দিকু' কথার অর্থ -
(ক) পাওনাদার
(খ) আপনজন
(গ) বহিরাগত
(ঘ) শত্রু
উত্তর: (গ) বহিরাগত
১.২০ 'দাদন' কথার অর্থ -
(ক) অগ্রিম নেওয়া
(খ) ঋণ পরিশোধ করা
(গ) বন্ড দেওয়া
(ঘ) ধার নেওয়া
উত্তর : (ক) অগ্রিম নেওয়া
১.২১ রম্পা উপজাতীয় বিদ্রোহ সংঘটিত হয় -
(ক) মালাবার অঞ্চলে
(খ) কঙ্কন উপকূল
(গ) উড়িষ্যায়
(ঘ) গোদাবরী উপত্যকায়
উত্তর : (ঘ) গোদাবরী উপত্যকায়
২) অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
(প্রতিটি উপ বিভাগ অন্তত একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে)
উপ বিভাগ: ২.১
** একটি বাক্যে উত্তর দাও:
২.১.১ উলগুলান বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : উলগুলান বলতে ভীষণ বিশৃঙ্খলা বা বিদ্রোহকে বোঝায়।
২.১.২ খুৎকাঠি প্রথা কি?
উত্তর: মুন্ডা দের যৌথ মালিকানাকে
২.১.৩ পাইক কাদের বলা হয়?
উত্তর : ইংরেজ শাসনের আগে জমিদারের অধীনস্থ লেঠেল বাহিনীকে পাইক বলা হত।
২.১.৪ প্রথম চুয়াড় বিদ্রোহের নেতৃত্ব কে দিয়েছিলেন?
উত্তর : দুর্জন সিং
২.১.৫ বিরসা মুন্ডা কিভাবে মারা যান?
উত্তর: ১৯০০, সালে কলেরা রোগে
২.১.৬ কোল বিদ্রোহের নেতৃত্ব কারা কারা ছিলেন?
উত্তর : সুই মুন্ডা, সিংরাই মানকি, বুদ্ধ ভগত, জোয়া ভগত, খাঁদু পাতর প্রমুখ ছিলেন কোল বিদ্রোহের উচ্চতম নেতা।
২.১.৭ কবে সাঁওতাল বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল?
উত্তর : সাঁওতাল বিদ্রোহ সূচনা হয়েছিল 1855 খ্রিষ্টাব্দের জুন মাস থেকে।
২.১.৮ সাঁওতাল বিদ্রোহ কোথায় কোথায় ছড়িয়ে পড়েছিল?
উত্তর : ভগলপুর, সিংভূম, মুঙ্গের, হাজারিবাগ, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদে সাঁওতাল বিদ্রোহ বিশাল আকার ধারণ করেছিল।
২.১.৯ কবে ও কার নেতৃত্বে মুন্ডা বিদ্রোহ শুরু হয়?
উত্তর : 1899 খ্রিস্টাব্দে বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে মুন্ডা বিদ্রোহ শুরু হয়।
২.১.১০ ডিং খরচা কি?
উত্তর: রংপুর বিদ্রোহের সময় বিদ্রোহীরা বিদ্রোহের ব্যয় নির্বাহের জন্য চাঁদা ধার্য করা কে।
২.১.১১ রংপুর বিদ্রোহের (1783) দুজন নেতার নাম লেখ।
উত্তর : নুরুলউদ্দিন, কেনা সরকার
২.১.১২ কবে এবং কার নেতৃত্বে ভিল বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল?
উত্তর : 1819 খ্রিস্টাব্দে শিউরামের নেতৃত্বে প্রথম ভিল বিদ্রোহ সংঘটিত হয়।
২.১.১৩ সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহের দুজন নেতার নাম লেখ।
উত্তর : ভবানী পাঠক ও মজনু শাহ
২.১.১৪ তিতুমীরের প্রকৃত নাম কি?
উত্তর : তিতুমীরের প্রকৃত নাম হল মীর নিসার আলী।
২.১.১৫ দুদুমিয়ার অন্য নাম কি ছিল?
উত্তর : বুরু মিয়ার অন্য নাম ছিল মহম্মদ মহসীন
২.১.১৬ পাগলাপন্থী বিদ্রোহ কবে শুরু হয়েছিল?
উত্তর : 1825 খ্রিস্টাব্দে শুরু হয়েছিল।
২.১.১৭ ভারতের প্রথম নীলকর কে ছিলেন?
উত্তর : ফরাসি বণিক লুই বোনার্ড
২.১.১৮ তিন কাঠিয়া প্রথা কোথায় প্রবর্তিত হয়েছিল?
উত্তর : বিহারের চম্পারনে তিন কাঠিয়া প্রথা প্রবর্তিত হয়েছিল।
২.১.১৯ নীল বিদ্রোহ কোন কোন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে?
উত্তর: নদিয়া, যশো্র, খুলন্ মুর্শিদাবাদ
২.১.২০ নীল বিদ্রোহের প্রথম শহীদ কে ছিলেন?
উত্তর : বিশ্বনাথ সর্দার বা বিশে ডাকাত
উপবিভাগ ২.২
** ঠিক বা ভূল নির্ণয় কর:-
২.২.১ মেদিনীপুরের লক্ষীবাঈ নামে পরিচিত ছিলেন রানী শিরোমণি।
উত্তর : ঠিক
২.২.২ বিপ্লবের একটি উদাহরণ হল ফরাজী বিপ্লব।
উত্তর : ঠিক
২.২.৩ সাঁওতাল বিদ্রোহ ছিল একটি আদিবাসী বিদ্রোহ।
উত্তর : ঠিক
২.২.৪ নীলকর সাহেবরা সাঁওতাল কৃষকদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের নীলচাষ করতে বাধ্য করতো।
উত্তর: ঠিক
২.২.৫ আনন্দমঠ উপন্যাসে সন্ন্যাসী বিদ্রোহের উল্লেখ আছে।
উত্তর : ঠিক
২.২.৬ ভিল বিদ্রোহ পরিচালিত হয়েছিল ব্রিটিশ কোম্পানির বিরুদ্।
উত্তর: ঠিক
২.২.৭ বাংলার ওয়াহাবি আন্দোলন বারাসাত বিদ্রোহ নামে পরিচিত।
উত্তর : ঠিক
২.২.৮ তরিকা-ই-মহম্মদিয়া ছিল একটি মুসলিম পুনরুজ্জীবনবাদী আন্দোলন।
উত্তর : ঠিক
২.২.৯ ফরাজী শব্দের অর্থ হল ইসলাম নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কর্তব্য।
উত্তর : ঠিক
২.২.১০ হাজী শরীয়ত উল্লাহের মতে ইংরেজ অধিকৃত ভারতবর্ষ ছিল দার-উল-হারব্।
উত্তর : ঠিক
উপবিভাগ :২.৩
** ক স্তম্ভ সঙ্গে খ স্তম্ভ মেলাও:-
ক স্তম্ভ খ স্তম্ভ
২.৩.১ হুল (ক) নবজাগরণ
২.৩.২ দিকু (খ) বহিরাগত
২.৩.৩ খুৎকাঠি (গ) বিদ্রোহ
২.৩.৪ ওয়াহাবি (ঘ) জমির যৌথ মালিকানা
উত্তর : ২.৩.১ হুল – (গ) বিদ্রোহ
২.৩.২ দিকু –(খ) বহিরাগত
২.৩.৩ খুৎকাঠি – (ঘ) জমির যৌথ মালিকানা
২.৩.৪ ওয়াহাবি – (ক) নবজাগরণ
ক স্তম্ভ খ স্তম্ভ
২.৩.১ তিতুমীর (ক) পাগলাপন্থী বিদ্রোহ
২.৩.২ করম শাহ (খ) ভিল বিদ্রোহ
২.৩.৩ শিউরাম (গ) নীল বিদ্রোহ
২.৩.৪ বিষ্ণুচরন বিশ্বাস (ঘ) ওয়াহাবি আন্দোলন
উত্তর : ২.৩.১ তিতুমীর – (ঘ) ওয়াহাবি আন্দোলন
২.৩.২ করম শাহ – (ক) পাগলাপন্থী বিদ্রোহ
২.৩.৩ শিউরাম – (খ) ভিল বিদ্রোহ
২.৩.৪ বিষ্ণুচরন বিশ্বাস – (গ) নীল বিদ্রোহ
ক স্তম্ভ খ স্তম্ভ
২.৩.১ বিশ্বনাথ সর্দার (ক) ওয়াহাবি আন্দোলনের নেতা
২.৩.২ দুদুমিয়া (খ) ফরাজি আন্দোলনের নেতা
২.৩.৩ দুর্জন সিং (গ) চুয়াড় বিদ্রোহের নেতা
২.৩.৪ সৈয়দ আহমদ (ঘ) নীল বিদ্রোহের নেতা
উত্তর : ২.৩.১ বিশ্বনাথ সর্দার – (ঘ) নীল বিদ্রোহের নেতা
২.৩.২ দুদুমিয়া – (খ) ফরাজি আন্দোলনের নেতা
২.৩.৩ দুর্জন সিং – (গ) চুয়াড় বিদ্রোহের নেতা
২.৩.৪ সৈয়দ আহমদ – (ক) ওয়াহাবি আন্দোলনের নেতা
ক স্তম্ভ খ স্তম্ভ
২.৩.১) তিতুমীর (ক) নীল বিদ্রোহ
২.৩.২) হাজী শরীয়ত উল্লাহ (খ) পাগলপন্থি আন্দোলন
২.৩.৩) টিপু শাহ (গ) ফরাজি আন্দোলন
২.৩.৪) দিগম্বর ও বিষ্ণুচরণ বিশ্বাস (ঘ) বারাসাত বিদ্রোহ
উত্তর: ২.৩.১) তিতুমীর - (ঘ) বারাসাত বিদ্রোহ
২.৩.২) হাজী শরীয়ত উল্লাহ - (গ) ফরাজি আন্দোলন
২.৩.৩) টিপু শাহ (খ) পাগলপন্থী আন্দোলন
২.৩.৪) দিগম্বর ও বিষ্ণুচরন বিশ্বাস - (ক) নীল বিদ্রোহ
উপবিভাগ: ২.৫
** নিম্ন লিখিত বিবৃতি গুলির সঙ্গে সঠিক ব্যাখ্যাটা নির্বাচন করে:
২.৫.১ বিবৃতি : 1878 সালে ব্রিটিশ অরণ্য আইনকে জেরবার করা হয়।
ব্যাখ্যা ১ : ব্রিটিশ সরকারের দমননীতি অঙ্গ হিসেবে অরন্যের ওপর উপজাতিদের অধিকার খর্ব করতে চেয়েছিল।
ব্যাখ্যা ২ : ব্রিটিশরা অরণ্যভূমিকে কৃষি জমিতে রূপান্তরিত করতে চেয়েছিল।
ব্যাখ্যা ৩ : সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থে ব্রিটিশরা বনজ সম্পদ গুলিকে ব্যবহার করতে চেয়েছিল।
উত্তর : ব্যাখ্যা ৩ : সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থে ব্রিটিশরা বনজ সম্পদ গুলিকে ব্যবহার করতে চেয়েছিল।
২.৫.২ বিবৃতি : চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষকরা।
ব্যাখ্যা ১ : বাংলার কৃষিজমির বেশিরভাগই ছিল চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অধীনে।
ব্যাখ্যা ২ : বাংলার জমিদাররা ছিল অত্যাচারী।
ব্যাখ্যা ৩ : চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পর থেকেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছিল নিয়মিত।
উত্তর : ব্যাখ্যা ১ : বাংলার কৃষি জমির বেশিরভাগই ছিল চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অধীনে।
২.৫.৩ বিবৃতি: বিপ্লব হলো একটি প্রতিবাদের পন্থা।
ব্যাখ্যা ১: বিপ্লব হলো সামরিক অভ্যুত্থানের একটি ধারা।
ব্যাখ্যা ২: বিপ্লব সাধারণতঃ দীর্ঘমেয়াদি হয়।
ব্যাখ্যা ৩: বিপ্লবের মাধ্যমে প্রচলিত ব্যবস্থার দ্রুত ও আমূল পরিবর্তন ঘটে।
উত্তর: ব্যাখ্যা ৩: মাধ্যমে প্রচলিত ব্যবস্থার দ্রুত ও আমূল পরিবর্তন ঘটে।
২.৫.৪ বিবৃতি : 1855 খ্রিষ্টাব্দে সাঁওতালরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।
ব্যাখ্যা ১ : ইংরেজরা সাঁওতালদের উপর অত্যাচার চালাত।
ব্যাখ্যা ২ : ইংরেজরা সাঁওতালদের জোর করে যুদ্ধে নিয়ে যেত।
ব্যাখ্যা ৩ : জমিদার মহাজন, ব্যবসায়ী ও ইংরেজরা সাঁওতালদের উপর শোষণ ও অত্যাচার চালাত।
উত্তর : ব্যাখ্যা ১ : ইংরেজিটা সাঁওতালদের উপর অত্যাচার চালাত।
২.৫.৫ বিবৃতি: সাঁওতাল বিদ্রোহ শেষ পর্যন্ত থেমে যায়।
ব্যাখ্যা ১: ব্রিটিশ সেনা নির্মম দমননীতির দ্বারা বহু বিদ্রোহী কে হত্যা করে।
ব্যাখ্যা ২: বিদ্রোহীদের মধ্যে অনৈক্য চরম আকার ধারণ করে।
ব্যাখ্যা ৩: বিদ্রোহে সুযোগ্য নেতা কেউ ছিলনা।
উত্তর: ব্যাখ্যা ১: ব্রিটিশ সেনা নির্মম দমননীতির দ্বারা বহু বিদ্রোহীকে হত্যা করে।
২.৫.৬ বিবৃতি : ওয়াহাবি আন্দোলন ছিল একটি ধর্ম সংস্কার আন্দোলন।
ব্যাখ্যা ১ : এটি ছিল একটি হিন্দু বিরোধী আন্দোলন।
ব্যাখ্যা ২ : তিতুমীর ও তার অনুগামীরা অন্য ধর্মাবলম্বীদের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করতে প্রয়াসী হয়েছিলেন।
ব্যাখ্যা ৩ : ইসলাম ধর্মের কুসংস্কার দূর করে, শরীয়তের উপর নির্ভর করে ইসলাম ধর্ম সংস্কার ছিল এই আন্দোলনের লক্ষ্য।
উত্তর : ব্যাখ্যা ৩ : ইসলাম ধর্মের কুসংস্কার দূর করে শরীয়তের উপর নির্ভর করে ইসলাম ধর্ম সংস্কার ছিল এই আন্দোলনের লক্ষণ।
২.৫.৭ বিবৃতি: সাঁওতাল বিদ্রোহ শেষ পর্যন্ত থেমে যায়।
ব্যাখ্যা ১: ব্রিটিশ সেনা নির্মম দমননীতির দ্বারা বহু বিদ্রোহী কে হত্যা করে।
ব্যাখ্যা ২: বিদ্রোহীদের মধ্যে অনৈক্য চরম আকার ধারণ করে।
ব্যাখ্যা ৩: বিদ্রোহে সুযোগ্য নেতা কেউ ছিলনা।
উত্তর: ব্যাখ্যা ১: ব্রিটিশ সেনা নির্মম দমননীতির দ্বারা বহু বিদ্রোহীকে হত্যা করে।
২.৫.৮ বিবৃতি : তিতুমীরের বারাসাত বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়ে গিয়েছিল।
ব্যাখ্যা ১ : তিতুমীরের সমস্ত পদের অধিকারী ছিল কৃষক পরিবারের অন্তর্গত।
ব্যাখ্যা ২ : কামানের আঘাতে বাঁশেরকেল্লা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়, তিতুমীরের মৃত্যু ও গোলাম মাসুমের ফাঁসি হয়।
ব্যাখ্যা ৩ : তিতুমীরের অযোগ্যতা, ক্রোধ, কৃষকদের সঙ্গে সম্পর্কহীন লক্ষ্য করা যায়।
উত্তর : ব্যাখ্যা ২ : কামানের আঘাতে বাঁশেরকেল্লা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়, তিতুমীরের মৃত্যু ও গোলাম মাসুমের ফাঁসি হয়।
২.৫.৯ বিবৃতি: নীলকর সাহেবরা বে -এলাকা চাষে বেশি উৎসাহী ছিল।
ব্যাখ্যা ১: বে -এলাকা চাষে নীলকরদের নিজের জমির প্রয়োজন হতো না।
ব্যাখ্যা ২: বে-এলাকা চাষে কৃষকদের সুবিধা হত।
ব্যাখ্যা ৩: বে-এলাকা চাষে শান্তি বজায় থাকত।
উত্তর: ব্যাখ্যা ১: বে-এলাকা চাষে নীলকরদের নিজের জমির প্রয়োজন হতো না।
২.৫.১০ বিবৃতি : নীল বিদ্রোহ অন্যান্য কৃষক বিদ্রোহ থেকে আলাদা।
ব্যাখ্যা ১ : নীলকর বিরোধী এই বিদ্রোহের ছোট ছোট জমিদাররাও কৃষকদের পক্ষে অংশ নিয়েছিল।
ব্যাখ্যা ২ : এই বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারীরা বিদ্রোহীদের পাশে দাঁড়িয়েছিল।
ব্যাখ্যা ৩ : উপরে বর্ণিত সবকটি তথ্যই ঠিক।
উত্তর : ব্যাখ্যা ৩ : উপরে বর্ণিত সবকটি তথ্যই ঠিক।
বিভাগ 'গ'
৩) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:-
প্রশ্নঃ বিপ্লব বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ বিপ্লব শব্দের অর্থ আমূল পরিবর্তন। মানুষ যখন আর্থ–সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্যস্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিরোধ করে তখন তাকে বিপ্লব বলে।
প্রশ্নঃ ঔপনিবেশিক অরণ্য আইনের উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তরঃ ঔপনিবেশিক অরণ্য আইনের উদ্দেশ্য ছিল -
(১) ১৮০৬ খ্রিঃ পর ভারতে ইংরেজি কোম্পানি নৌবাহিনীতে জাহাজ নির্মাণের জন্য ওক কাঠের প্রয়োজনীয় থেকে ভারতীয় বনজ সম্পদের দিকে কোম্পানির নজর পড়ে।
(২) অরন্যে বসবাসকারী অধিবাসকারী অধিবাসীরা যাতে যথেচ্ছভাবে বৃক্ষচ্ছেদন করতে না পারে সেদিকেও লক্ষ রাখা দরকার হয়ে পড়ে।
প্রশ্নঃ সাঁওতাল বিদ্রোহের দু’টি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তরঃ (১) এই বিদ্রোহের একটি ঔপনিবেশিকতা বিরোধী চরিত্র ছিল।
(২) সাঁওতাল ছাড়াও কর্মকার, চর্মকার, তেলি, ডোম, মুসলিম প্রভৃতি শ্রেণির মানুষ যোগ দেওয়ায় এই বিদ্রোহ গণবিদ্রোহে পরিণত হয়।
প্রশ্নঃ চুয়াড় বিদ্রোহের গুরুত্ব কী?
উত্তরঃ চুয়াড় বিদ্রোহের গুরুত্বগুলি হলো -
(১) চুয়াড় বিদ্রোহের মাধ্যমে চুয়াড়রা জমিদারদের নিপীড়নের হাত থেকে মুক্তির চেয়ে ব্রিটিশ শাসনের অবসান বেশি জরুরি বলে মনে করেছিল।
(২) চুয়াড় ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে জমিদার, তার অনুচরবর্গ এবং কৃষকদের বিদ্রোহ হলেও এর প্রাণশক্তি ছিল নিপীড়ত কৃষক।
প্রশ্নঃ কোল বিদ্রোহের দু’টি গুরুত্ব লেখো।
উত্তরঃ (১) কোল বিদ্রোহ হতে অন্যান্য উপজাতিদের বিদ্রোহী হতে উৎসাহিত করেছিল।
(২) কোম্পানি বাধ্য হয়ে দক্ষিণ–পশ্চিম সীমান্তে এজেন্সি আইন গঠন করেছিল।
প্রশ্নঃ মুন্ডা বিদ্রোহের দু’টি গুরুত্ব লেখো।
উত্তরঃ (১) এই বিদ্রোহের পর উপজাতি এলাকায় ভূমি বন্দোবস্তের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
(২) এই বিদ্রোহ দ্বারা বেগার শ্রম প্রথা নিষিদ্ধ হয়।
প্রশ্নঃ কবে, কোথায়, কার নেতৃত্বে নীলবিদ্রোহ শুরু হয়?
উত্তরঃ 1859 খ্রিস্টাব্দে বিষ্ণুচরণ বিশ্বাস ও দিগম্বর বিশ্বাসের নেতৃত্বে কৃয়নগরের চৌগাছা গ্রামে এই বিদ্রোহ শুরু হয়।
প্রশ্নঃ খুঁৎকাঠি প্রথা কী?
উত্তরঃ খুঁৎকাঠি কথার অর্থ ছিল জমির যৌথ মালিকানা প্রথা অনুযায়ী মুন্ডারা দীর্ঘদিন ধরে গোষ্ঠীবদ্ধভাবে জমির যৌথ মালিনাকা ভোগ করত। কিন্তু ভারতে ব্রিটিশ শাসনের আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে আদিবাসীদের পুরোনো ভূমি ব্যবস্থার অবসান ঘটে এবং সেখানে জমি-জরিপ ও ব্যক্তিগত মালিকানার আবির্ভাব হয়।
প্রশ্নঃ কোল বিদ্রোহের দুটি কারণ কী?
উত্তরঃ (১) তাদের নগদ করদানে বাধ্য করা হয়েছিল।
(২) তাদের স্থায়ী বিচার পদ্ধতিতে আঘাত করা হয়েছিল।
প্রশ্নঃ দামিন–ই-কোহ ও হুল শব্দের অর্থ কী?
উত্তরঃ দামিন-ই-কোহ – এর অর্থ পাহাড়ের প্রাস্তদেশ এবং হুল শব্দের অর্থ বিদ্রোহ।
প্রশ্নঃ সন্ন্যাসী বিদ্রোহের কোন্ পরিস্থিতিতে শুরু হয়?
উত্তরঃ সন্ন্যাসী বিদ্রোহের যে যে পরিস্থিতিতে শুরু হয় তা নিচে আলোচনা করা হল -
(১) ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক অত্যাধিক রাজস্ব বৃদ্ধির ঘটনা কৃষিকাজ ও রেশম ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সন্ন্যাসী ও ফকিরদের ক্ষুদ্ধ তুলেছিল।
(২) ১৭৭৬ খ্রিঃ ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের সময়ে সরকারের ঔদাসীন্যের ঘটনাও সন্ন্যাসী-ফকিরদের বিদ্রোহের দিকে ঠেলে দেয়।
প্রশ্নঃ ওয়াহাবি শব্দের অর্থ কী? ভারত ও বাংলায় কাদের নেতৃত্বে প্রথম ওয়াহাবি আন্দোলনের সূচনা হয়?
উত্তরঃ নবজাগরণ। সৈয়দ আহমেদ এবং মহম্মদ মহসিন বা তিতুমির।
প্রশ্নঃ পাবনা বিদ্রোহ কেন হয়েছিল?
উত্তরঃ পাবনা বিদ্রোহের কারণগুলি গুলি হল -
(১) ১৮৫৯ খ্রিঃ প্রজাস্বত্ব আইন অনুযায়ী জমিদাররা তিনটি কারণ দেখিয়ে ভূমি রাজস্ব বৃদ্ধি করে এবং সরকারি রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি পাবনার কৃষকের কাছ থেকে বিভিন্ন রকমের অবৈধ খাজনা আদায় করা শুরু করে।
(২) ১৮৭০ খ্রিঃ পর পাবনার কৃষকরা আইনসম্মত উপায়ে এই শোষণ ও অত্যাচারের প্রতিকার করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
প্রশ্নঃ ভারতে দ্বিতীয় অরণ্য আইন কবে পাশ হয়? উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তরঃ 1878 খ্রিস্টাব্দে। এর উদ্দেশ্য ছিল আদিবাসীদের কাছ থেকে অরণ্য কেড়ে নেওয়া।
প্রশ্নঃ তিতুমিরকে কেন মনে রাখা হয়?
উত্তরঃ তিতুমিরকে মনে রাখা হয় যে যে কারণগুলির জন্য তা হলো -
(১) বাংলায় ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রধান নেতা ছিলো তিতুমির।
(২) সে অত্যাচারী জমিদার, নীলকর ও ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে এক গ্রামীণ কৃষকদের প্রতিবাদী আন্দোলক।
প্রশ্নঃ 'আনন্দমঠ' উপন্যাস কীভাবে জাতীয়তাবাদী ভাবধারাকে উদ্বুদ্ধ করেছিল?
উত্তরঃ 'আনন্দমঠ' – এ উল্লিখিত 'বন্দেমাতরম' মন্ত্র দেশবাসীকে মুক্তি আন্দোলনে উদ্বুৰ করেছিল। এখানে সত্যানন্দের মাধ্যমে আসুরিক ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের মধ্যে ধর্ম আন্দোলন জাগানোর ডাক দেওয়া হয়েছিল। এভাবেই এই উপন্যাস জাতীয়তাবাদী ভাবধারাকে উদ্বুদ্ধ করেছিল।
প্রশ্নঃ বারাসাত বিদ্রোহ কী?
উত্তরঃ বাংলায় ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রাণপুরুষ তিতুমির ওরফে মির নিসার আলি বারাসাত মহকুমায় জমিদার, নীলকর ও ইংরেজ বিরোধী যে বিদ্রোহের সূচনা করেন তা বারাসাত বিদ্রোহ নামে পরিচিত।
প্রশ্নঃ দুদু মিঞা স্মরণীয় কেন?
উত্তরঃ দুদু মিঞা যে যে কারণে স্মরণীয় তা হল -
(১) দুদু মিঞা ছিলেন বাংলার ফরাসি আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। শরিয়ত উল্লাহর পুত্র এবং দক্ষ সংগঠক ও ফরাসি আন্দোলনের অন্যতম নেতা।
(২) তিনি বৈপ্লবিক ঘোষণা করেছিলেন - 'জমি আল্লাহর দান এবং সেখানে জমিদারের করধার্যের অধিকার নেই।
বিভাগ 'ঘ'
৪) ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
প্রশ্নঃ তিতুমিরের বারাসত বিদ্রোহের প্রকৃতি আলোচনা করো।
উত্তরঃ বাংলায় তিতুমিরের বারাসত বিদ্রোহের বিভিন্ন প্রকৃতিগুলি আলোচনা করো -
(১) বারাসাত বিদ্রোহ ছিল সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় ভাবধারার সমান্তরাল আন্দোলন। বারাসাত বিদ্রোহকে এইসব ঐতিহাসিক হিন্দু বিরোধী ও সাম্প্রদায়িক আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
(২) ওয়াহাবিরা বিদেশি শাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় আন্দোলনে লিপ্ত হয়েছিল। কারণ তিতুমিরের সঙ্গে ইংরেজদের বিরোধ দেখা দেয়, যেহেতু সে নিজেকে বাদশাহ বলে ঘোষণা করে।
(৩) তিতুমিরের বারাসাত বিদ্রোহ ছিল বিশেষত কোম্পানির শাসনের পরিবর্তে মুসলিম শাসনের পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টামাত্র।
(৪) বারাসাত বিদ্রোহের শহরের বিত্তবান অপেক্ষা নিম্নবিত্ত মুসলমানরা বেশি অংশগ্রহন করেছিল সেজন্য একে অবহেলিত মানুষেরা সংগ্রাম বলা যেতে পারে।
প্রশ্নঃ সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ লেখো।
অথবা,
১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে সাঁওতালরা বিদ্রোহ করেছিল কেন?
উত্তরঃ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রসূত জমিদার ও কোম্পানির শোষণ ও অত্যাচারে জমিহারা সাঁওতাল উপজাতির মানুষেরা বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, ধলভূম, ভাগলপুর অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে। কিন্তু এর পরেও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসনে তারা নির্মমভাবে শোষিত, নিষ্পেষিত ও সর্বস্বান্ত হতে থাকে। এর বিরুদ্ধে আদিবাসীরা ১৮৫৫-৫৬ খ্রিস্টাব্দে সাঁওতাল বিদ্রোহ সংগঠিত করেছিল। এর কারণগুলি হলো -
বিদ্রোহের কারণ
জমিদারের অত্যাচারঃ সাঁওতাল বিদ্রোহের প্রধান কারণ বলা যায় জমিদারের অত্যাচারকে। এই জমিদারেরা সাঁওতালদের উপর চড়া হারে কর ধার্য করত। তা না দিতে পারলে তাদের জমি থেকে উৎখাত করত।
রাজস্ব আরোপঃ এই উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষেরা বন–জঙ্গলের জমিকে চাষযোগ্য করে তুললেও তার উপর কোম্পানি ও সরকার নিযুক্ত জমিদাররা রাজস্ব চাপাত যা ছিল এই বিদ্রোহের অপর একটি কারণ।
মহাজনি প্রকোপঃ জমিদারদের খাজনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই সাঁওতালরা চড়া হারে মহাজনের কাছ থেকে টাকা নিতে বাধ্য হতো। এই ঋণের দায়ে তাদের জমি, ফসল, গোরু–বাছুর, ঘর–বাড়ি, এমনকী মা–বোনেদের ইজ্জত পর্যন্ত হারাতে হতো। এটি ছিল বিদ্রোহের একটি কারণ।
কোম্পানির কর্মচারীদের অত্যাচারঃ কোম্পানির কর্মচারীরা সাঁওতালদের বেগার খাটাত। নানারকম উপঢৌকন দিতে বাধ্য করত ও হয়রানি করত। এই ক্রমাগত উৎপীড়ন তাদের বিদ্রোহী করে তোলে।
উপরের আলোচনায় স্পষ্ট, সাঁওতাল বিদ্রোহ বাংলার কৃষক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ বিস্ফোরণ। এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও পরে স্বাধীনতা আন্দোলনের জমি তৈরির ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব অসামান্য।
প্রশ্নঃ ফরাজি আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণগুলি আলোচনা করো।
উত্তরঃ ফরাজি আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণগুলি নিচে আলোচনা করা হল -
(১) দুদু মিঞার মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র নোয়া মিঞা জমিদার ও ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামের পথ থেকে ধর্মীয় সংগ্রামে মনোনিবেশ করে। ফলে এই আন্দোলনের জনপ্রিয়তা নষ্ট হয় এবং নিছক ধর্মীয় বৃত্তের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়ে।
(২) শরিয়ত উল্লাহ ও দুদু মিঞার মৃত্যুর পর ফরাজি আন্দোলনের নেতৃত্ব প্রদান করার মতো যোগ্য নেতৃত্বের অভাব ফরাজি আন্দোলনের ব্যর্থতার প্রধান কারণ।
(৩) সংকীর্ণ ধর্মবোধ দ্বারা এই আন্দোলন পরিচালিত হওয়ার উদারপন্থী মুসলমান সমাজ এই আন্দোলন থেকে দূরে সরে থাকে, ফলে সংহতির অভাব পরিলক্ষিত হয়।
(৪) ফরাজিদের মধ্যে ব্রিটিশ - বিরোধিতার প্রবণতার হ্রাস পায় বরং তাদের মধ্যে ব্রিটিশদের প্রতি আনুগত্য বৃদ্ধি পেলে এই আন্দোলনের জনপ্রিয়তা কমে যায়।
প্রশ্নঃ পাবনা বিদ্রোহের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে বেআইনি খাজনা ও খাজনাবৃদ্ধির কারণে সংঘটিত পাবনা বিদ্রোহ শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হলেও তাৎপর্যহীন ছিল না, কারণ -
(১) পাবনা বিদ্রোহ ছিল জমিদার বিরোধী কিন্তু তা ইংরেজ বিরোধী ছিল না। তাই এই বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ শাসনের অবসান নয়, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের মাধ্যমে প্রজাস্বার্থ রক্ষার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
(২) পাবনার অধিকাংশ কৃষক মুসলিম এবং জমিদার হিন্দু হলেও এই আন্দোলনে সাম্প্রদায়িক সংঘাত ঘটেনি বা সংঘাতের বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি।
(৩) পাবনা বিদ্রোহের অন্যতম দাবি ছিল ১৮৫৯ খ্রিঃ প্রজাস্বত্ব আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত প্রজাস্বত্ব অক্ষুন্ন রাখা। তাই প্রজাস্বত্ব রক্ষার জন্য ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন পাস করা হয়।
(৪) পাবনার কৃষক বিদ্রোহের মাধ্যমে বাংলার কৃষকেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠার প্রেরণা লাভ করে এবং রায়ত সভা গঠনের মাধ্যমে কৃষক সংগঠন গড়ে ওঠে।
প্রশ্নঃ সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহের চরিত্র বিশ্লেষণ করো।
অথবা,
সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহের প্রকৃতি আলোচনা করো।
উত্তরঃ ১৭৬৩-১৮০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ব্যতিব্যস্ত করে রেখেছিল পূর্ববঙ্গের সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহীরা। যদিও এই বিদ্রোহের প্রকৃতি নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে, যেমন — উইলিয়াম হান্টার, গ্রিকস প্রমুখ ইংরেজ ঐতিহাসিক সন্ন্যাসী ও ফকিরদের দস্যু বা ডাকাত বলে অভিহিত করেছেন।
কৃষক বিদ্রোহঃ সন্ন্যাসী ও ফকির সম্প্রদায় ধর্মচর্চার সাথে যুক্ত থাকলেও কৃষিকাজই ছিল তাদের প্রধান জীবিকা। তাই উইলিয়াম হান্টার, এডওয়ার্ড ও গ্যারাট এই বিদ্রোহকে কৃষক বিদ্রোহ বলেছেন।
স্বাধীনতা সংগ্রামঃ কিছু ঐতিহাসিকের মতে, কোম্পানি বিরোধী এই বিদ্রোহ ছিল ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন। লেস্টার হ্যাচিনসন মনে করেন যে বিদ্রোহীদের প্রধান লক্ষ্য ছিল বিদেশিদের হাত থেকে নিজ দেশ ও ধর্মকে রক্ষা করা।
দুর্বল বিদ্রোহঃ কিছু ঐতিহাসিক এই বিদ্রোহকে দুর্বল কৃষক বিদ্রোহ বলেছেন। কারণ সন্ন্যাসী ও ফকিরদের সাথে সমাজের বৃহত্তর অংশের সাধারণ মানুষ এই বিদ্রোহে সামিল হয়নি।
প্রশ্নঃ পাগলপন্থী বিদ্রোহের বিবরণ দাও।
অথবা,
পাগলপন্থী বিদ্রোহের কারণ, প্রসার ও গুরুত্ব সংক্ষেপে লেখো।
উত্তরঃ উনিশ শতকের একটি উল্লেখযোগ্য কৃষক আন্দোলন ছিল ১৮২৪ সালের পাগলপন্থী বিদ্রোহ।
বিদ্রোহের কারণঃ ব্রিটিশ সরকার ইঙ্গ–ব্রহ্ম যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি ও ব্যয় নির্বাহের জন্য ময়মনসিংহের কৃষকদের খাজনার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। জমিদাররাও বেশি পরিমাণে খাজনা আদায়ের জন্য কৃষকদের শোষণ চালায়। এছাড়াও ব্রিটিশ শাসনে ময়মনসিংহের বৃহত্তর এলাকার গ্রামীণ পরিকাঠামো ভেঙে পড়ে।
বিদ্রোহের প্রসারঃ শেরপুর পরগনার হাজং, মুসলিম, রাজবংশী ও অন্য জাতিগোষ্ঠী ফকির করম শাহের নেতৃত্বে প্রথম বিদ্রোহ ঘোষণা করে। পরে করম শাহের পুত্র টিপু শাহের নেতৃত্বে এটি সশস্ত্র ও শক্তিশালী বিদ্রোহের রূপ নেয়। পাঁচ হাজার অনুগামী সহ টিপু শেরপুরের জমিদারকে আক্রমণ, থানায় আগুন, শহর জুড়ে লুঠপাট ও ময়মনসিংহের জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে ঘেরাও করেন।
বিদ্রোহীদের ঘোষণাঃ পাগলপন্থীরা ঘোষণা করে -
(১) ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে কোনোরূপ সম্পর্ক রাখবে না
(২) সামরিক রাস্তা তৈরির কাজ বা একাজে কোনোরূপ সহায়তা করবে না
(৩) জমিদারদের আধিপত্য মানবে না।
গুরুত্বঃ ব্রিটিশ সরকারের দমনপীড়নের মুখে পাগলপন্থীরা পেরে উঠেনি। তবুও এই বিদ্রোহের গুরুত্ব ছিল -
(১) ভবিষ্যতে বড়ো বিদ্রোহের পথ প্রশস্ত হয়
(২) কৃষকদের ক্ষোভ, আশা–আকাঙ্ক্ষা–অসন্তোষের প্রকাশ ঘটায় প্রশাসন সচেতন হয়।
প্রশ্নঃ ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন কেন প্রনয়ন করা হয়?
উত্তরঃ ভারতবর্ষে কোম্পানির শাসনকালে কৃষিজমির প্রসার, প্রচুর বনজ সম্পদ সংগ্রহ এবং রাজস্বখাতে আয় বৃদ্ধি—এই সকল কারণে অরণ্যে বসবাসকারী মানুষের সাথে শুরু হয় কোম্পানির ক্ষোভ–বিক্ষোভ। এর অবসানের জন্য প্রয়োজন ছিল ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন। এই আইন প্রণয়ন হয়েছিল ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে।
অরণ্য আইন প্রণয়নের কারণঃ ভারতে ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন প্রণয়নের কারণ ছিল - নৌবাহিনী তথা নৌশিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় প্রচুর কাঠের জোগান; কাগজশিল্পের জন্য প্রচুর কাঠ এবং ভারতে রেলপথ সম্প্রসারণের জন্য প্রচুর পরিমাণে কাঠের প্রয়োজন। তাই বনজ সম্পদের ওপর ব্রিটিশ সরকারের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রয়োজন ছিল অরণ্য আইনের।
লর্ড ডালহৌসির উদ্যোগঃ ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতের গভর্নর জেনারেল লর্ড ডালহৌসি 'ভারতীয় বনজ সম্পদের সনদ' নামে একটি আইন পাশ করে ভারতীয় অরণ্যের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ জারি করেন।
প্রথম ভারতীয় অরণ্য আইনঃ বনবিভাগের ইন্সপেক্টর জেনারেল ডায়াট্রিক ব্রান্ডিসের রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ভারতীয় অরণ্য আইন পাশ করে।
আইনের বিভিন্ন দিকঃ ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দের অরণ্য আইন বাস্তবায়নের জন্য ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে ঘোষিত হয় দ্বিতীয় অরণ্য আইন। এই আইনের দু’টি দিক ছিল -
(ক) এর দ্বারা বনজ সম্পদের ওপর পূর্ণ সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়।
(খ) এর দ্বারা আদিবাসীরা বন থেকে শুধু জ্বালানি সংগ্রহ ও বনে পশুচারণের অধিকার পায়।
ঔপনিবেশিক শাসনকালে ভারতে অরণ্য আইন পাশ করে অরণ্য অঞ্চলগুলিতে ঔপনিবেশিক কর্তৃত্বকে আরও দৃঢ় করে তোলা হয়। তবে পরবর্তীতে এই অরণ্য আইনকে কেন্দ্র করেই উপজাতি ও জনজাতিরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।
বিভাগ 'ঙ'
৫) রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
প্রশ্নঃ নীলবিদ্রোহের কারণ ও বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।
উত্তরঃ বাংলায় ১৯ শতকে সংঘটিত কৃষক বিদ্রোহের অন্যতম ছিল ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দের নীলবিদ্রোহ। এই বিদ্রোহে বাংলার সাধারণ কৃষকশ্রেণি স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছিল। এই বিদ্রোহের প্রধান কারণগুলি ছিল এইরকম -
নীলচাষের পদ্ধতিঃ নীলকর সাহেবরা নিজেদের খাস জমিতে সস্তায় শ্রমিক এনে নীলচাষ করত যা এলাকা চাষ নামে পরিচিত। আবার কৃষকের নিজস্ব জমিতে অগ্রিম অর্থ ঋণ দিয়ে কৃষককে নীলচাষ করতে বাধ্য করত। এই দুই প্রকার পদ্ধতিতেই সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো কৃষক সম্প্রদায়, যা নীলবিদ্রোহের প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিল বলে মনে করা হয়।
দাদন প্রথাঃ নীলকর সাহেবরা কৃষকদের বিঘাপ্রতি ২ টাকা দাদন দিত যা কৃষকরা শোধ করলেও নীলকর সাহেবের খাতায় কৃষকদের ঋণ থেকেই যেত। এই ভয়ানক তুলেছিল। শোষিত প্ৰথা কৃষক সম্প্রদায়কে নীলকর সাহেবদের প্রতি দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুদ্ধ করে।
জমির মাপে কারচুপিঃ নীলকর সাহেবরা দাদনপ্রথা অনুযায়ী জমির মাপেও ব্যাপক কারচুপি চালাত। ফলে চাষিকে নীলচাষে নিজের প্রচুর জমি ব্যবহার করতে হতো।
নীলচাষে বাধ্য করাঃ ঋণগ্রস্ত কৃষকদের বর্বর ও নির্মম প্রকৃতির নীলকর সাহেবরা জোর করে ধান ও অন্যান্য শস্যের চাষ বন্ধ করে নীলচাষে বাধ্য করত। এর ফলে চাষিদের খাওয়ার জন্য ধান উৎপাদনও বন্ধ হয়ে যায়, যা নীলবিদ্রোহের অন্যতম কারণ। ফরিদপুরের ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেট নীল কমিশনে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বলেছিলেন - "ইংল্যান্ডে নীলের যে সকল বাক্স পৌঁছায় তা বাংলার চাষির রক্তে রঞ্জিত।"
ইংরেজ শাসকদের অবিচারঃ অত্যাচারিত কৃষকরা সামান্য বিচারের আশায় আদালতের দারস্থ হয়েও ন্যায়বিচার পেতেন না। কারণ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অন্যান্য শেতাঙ্গরা বিচারের ক্ষেত্রে স্বজাতীয় নীলকর সাহেবদের দিকেই পক্ষপাতিত্ব করতেন।
নীলবিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য
সাম্প্রদায়িক ঐক্য ও সম্প্রীতিঃ এই বিদ্রোহে কোনো একটি বিশেষ ধর্ম সম্প্রদায় নয়, হিন্দু–মুসলিম নির্বিশেষে সমস্ত কৃষক নীলকরদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে সামিল হয়।
জমিদারদের অংশগ্রহণঃ বাংলার কিছু জমিদার এই বিদ্রোহে কৃষকদের সাথে যোগদান করে নীলচাষের বিরোধিতা করেছিল। এদের মধ্যে রানাঘাটের শ্রীগোপাল পাল চৌধুরী, চণ্ডীপুরের শ্রীহরি রায়, নড়াইলের রামরতন রায় উল্লেখযোগ্য।
সংবাদপত্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ভূমিকাঃ কৃষকদের উপর নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে যে সংবাদপত্রগুলি সোচ্চার হয়েছিল সেগুলির মধ্যে হিন্দু প্যাট্রিয়ট, গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা, বামাবোধিনী পত্রিকা, সমাচার দর্পণ উল্লেখযোগ্য। এই সংবাদপত্রগুলির মাধ্যমে বাংলার শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি নীলচাষিদের দুর্দশা সম্বন্ধে অবহিত হয়ে নীলবিদ্রোহকে সমর্থন করে।
প্রশ্নঃ ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতে সংঘটিত বিভিন্ন কৃষক ও আদিবাসী বিদ্রোহের কারণ কী ছিল?
উত্তরঃ ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ভারতের আদিবাসী সম্প্রদায় ব্রিটিশ শোষণের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ আরম্ভ করে। যা পরবর্তীকালে সিপাহি বিদ্রোহের পথ প্রশস্থ করেছিল। এই বিদ্রোহগুলির প্রধান কারণগুলি হলো -
খাজনা বৃদ্ধিঃ ব্রিটিশ শাসনকালে উচ্চহারে ভূমিরাজস্ব ধার্য হয়েছিল। এই উচ্চহারে ভূমিরাজস্বের বোঝা আদিবাসী কৃষকদের উপর চাপিয়ে দিলে তারা নিঃস্ব হয়ে যায়।
ঔপনিবেশিক আইন ও বিচার ব্যবস্থাঃ ভারতের এইসব প্রাচীন উপজাতি সমাজ নিজেদের আইন ও বিচার ব্যবস্থা দ্বারা চালিত হতো। কিন্তু ব্রিটিশ শাসনে তাদের আইনগুলিকে বাতিল করে তাদের উপর ব্রিটিশদের আইন চাপিয়ে দেওয়া হয়। এতে তারা ক্ষুদ্ধ হয়েছিল।
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তঃ এইসময় চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের ফলে জমির মালিকানা কৃষকদের পরিবর্তে নতুন জমিদার শ্রেণির হাতে চলে যায়।
জমিদারদের অত্যাচারঃ উচ্চহারে কর আদায়ের জন্য জমিদার ও জমিদারের কর্মচারীরা আদিবাসীদের উপর প্রভূত পরিমাণে অত্যাচার চালাত। তাদের জমি থেকে উৎখাত করে দিত।
অনাহারঃ দারিদ্র্য ও অনাহার ছিল এদের নিত্যসঙ্গী। তার উপর ব্রিটিশ সরকার খাদ্যশস্যের পরিবর্তে জোরপূর্বক নীল, পাট, তুলো প্রভৃতি চাষ করাতে শুরু করে। ফলে আদিবাসীদের অবস্থা আরো সঙ্গীন হয়।
মহাজনি প্রথাঃ গ্রামে বহিরাগত মহাজনরা নানা অছিলায় আদিবাসীদের ঋণজালে জড়িয়ে ফেলে। একবার ঋণ নিলে সারা জীবন তার থেকে নিস্তার পাওয়া যেত না।
শিল্প ধ্বংসঃ ব্রিটেনের শিল্পবিপ্লবের উৎপাদিত পণ্য ভারতের বাজারে বিক্রি করার জন্য ব্রিটিশ সরকার ভারতের কুটির শিল্পকে ধ্বংস করে দেয়। তার ফলে শিল্পের কারিগররা বেকার হয়ে পড়ে।
প্রশ্নঃ মুন্ডা বিদ্রোহের কারণগুলি আলোচনা করো।
উত্তরঃ বীরসা মুন্ডার নেতৃত্বে রাঁচিসহ ছোটোনাগপুর অঞ্চলে মুন্ডা উপজাতির মানুষদের পুঞ্জীভূত বিক্ষোভ ও অসন্তোষের স্বাভাবিক অভিব্যক্তি ছিল মুন্ডা বিদ্রোহ। নিচে মুন্ডা বিদ্রোহের কারনগুলি আলোচনা করা হল -
(১) নিরীহ মুন্ডাদের দিয়ে সরকারি কর্মচারী, জমিদার, মহাজনরা দিনের পর দিন বিনা মজুরিতে বেঠবেগারি প্রথার কাজ করতে বাধ্য করলে অবশেষে মুন্ডারা বিদ্রোহের পা বাড়ায়।
(২) ইংরেজ শাসন প্রবর্তিত হলে বাইরের থেকে লোভী মানুষেরা এসে নিরীহ কৃষিজীবী মুন্ডাদের জমি জায়গা কুক্ষিগত করে নিতে থাকে এবং মুন্ডাদের বিতাড়িত করে সেই জমিগুলি দখল করে নিতে মুন্ডারা ক্ষুদ্ধ হয়।
(৩) ধর্মপ্রচারক হিসেবে জীবন শুরু করলেও বীরসা মুন্ডার সংস্কারমূলক বিবিধ ব্যবস্থা, হীনম্মন্যতাকে দূর করে মুন্ডাদের মাথা উঁচু করে বাঁচার শিক্ষা ছিল মুন্ডা বিদ্রোহের অন্যতম কারণ।
(৪) ব্রিটিশ শাসন প্রবর্তিত হওয়ার পর মুন্ডাদের খুঁৎকাঠি প্রথা বা জমির যৌথ মালিকানার অবসান ঘটিয়ে জমিতে ব্যক্তিগত মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হলে মুন্ডারা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।
(৫) মজাজন, জমিদার, জায়গিরদার, ঠিকাদার, চা ব্যবসায়ীদের মিথ্যা প্রলোভন ও শোষণ এবং খ্রিস্টান মিশনারিদের ধর্মপ্রচার এই বিদ্রোহের ইন্ধন জোগায়।
(৬) ব্রিটিশ শাসন প্রবর্তিত হওয়ার পর মুন্ডাদের চিরাচরিত ঐতিহ্যবাহী মুন্ডারি আইন, বিচার ও সামাজিক ব্যবস্থা ভেঙে দিয়ে নতুন ধরনের আইন প্রবর্তন করলে মুন্ডারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
Madhyamik history suggestion
মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024 PDF. মাধ্যমিক সাজেশন 2024 বাংলা. 2024 সালের মাধ্যমিক সাজেশন. Class 12 History Suggestion 2024 PDF. মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান সাজেশন 2024. উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024.
দশম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর
দশম শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর. মাধ্যমিক ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় 2 নম্বরের প্রশ্ন. অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর. উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর. প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ. মাধ্যমিক ইতিহাস বড় প্রশ্ন উত্তর 2023. দশম শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় 2 নম্বরের প্রশ্ন উত্তর. দশম শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর.
Madhyamik Suggestion 2024
মাধ্যমিক সাজেশন 2024 ইতিহাস pdf. মাধ্যমিক জীববিজ্ঞান সাজেশন 2024 chapter 4. মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024. 2024 সালের মাধ্যমিক সাজেশন. মাধ্যমিক ইতিহাস বড় প্রশ্ন উত্তর 2024. মাধ্যমিক ইতিহাস mcq. দশম শ্রেণির ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর. মাধ্যমিক প্রশ্ন উত্তর. দশম শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর. দশম শ্রেণির ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর. মাধ্যমিক ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় 2 নম্বরের প্রশ্ন. মাধ্যমিক প্রশ্ন উত্তর 2024.
Madhyamik History Suggestion 2024 PDF Download
মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024. Madhyamik History Suggestion 2024. Madhyamik history suggestion. মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024. Madhyamik History Notes PDF. Madhyamik History. Question and answer PDF 2024. Madhyamik history short question and answer. মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf.
ইতিহাস class 10 chapter 3
দশম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় mcq. মাধ্যমিক ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় 2 নম্বরের প্রশ্ন. দশম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় বড় প্রশ্ন. দশম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় 2 নম্বরের প্রশ্ন উত্তর. ক্লাস 10 ইতিহাস অধ্যায় 4 প্রশ্ন এবং উত্তর. প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ. দশম শ্রেণির ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায়.
WB Madhyamik History Suggestion 2024 Download PDF
মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024. Madhyamik History Suggestion 2024. Madhyamik history suggestion. Madhyamik History Notes PDF. মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024. Madhyamik History Question and answer PDF 2024. Madhyamik history short question and answer. History suggestion 2024 madhyamik.
প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ তৃতীয় অধ্যায় মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন ২০২৪
দশম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় বড় প্রশ্ন. দশম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় 2 নম্বরের প্রশ্ন উত্তর. মাধ্যমিক ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় 2 নম্বরের প্রশ্ন. অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর. দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়. উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর. ক্লাস 10 ইতিহাস অধ্যায় 4 প্রশ্ন এবং উত্তর. মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর pdf.
West Bengal Madhyamik History Suggestion 2024 Download PDF
মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024. Madhyamik History Suggestion 2024. Madhyamik history suggestion. মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024. Madhyamik History Notes PDF. Madhyamik History Question and answer PDF 2024. Madhyamik history short question and answer. History suggestion 2024 madhyamik.
West Bengal Madhyamik History Suggestion 2024 Download
West Bengal Madhyamik Histoty Suggestion 2024 Download prepared as per new syllabus. West Bengal Board of Secondary Education madhyamik 2024 History Important questions and Notes download. মাধ্যমিক ২০২৪ ইতিহাস পরীক্ষার সাজেশন. Last Minutes final History Suggestion for Madhyamik 2024 Exam with sure Common in Examination. WBBSE Madhyamik History Suggestion download. Download Madhyamik History Suggestion pdf. Important question for WBBSE New syllabus Madhyamik History Exam 2024.
Last Minutes final History Suggestion for Madhyamik 2024
West Bengal Madhyamik History Suggestion 2024 Download. WBBSE Madhyamik History short question suggestion 2024. মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন. Madhyamik History Suggestion 2024 download. পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্ন উত্তর ও শেষ মুহূর্তের সাজেশন ডাউনলোড. Madhyamik Question Paper History. WB Madhyamik 2024 History suggestion and important questions. Madhyamik Suggestion 2024 pdf.
Chuar kara
উত্তরমুছুন