মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৪ - বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান (প্রবন্ধ) রাজশেখর বসু
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানরাজশেখর বসু
(১) নীচের বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
১.১ 'বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান' প্রবন্ধটি কোন্ গ্রন্থের অন্তর্গত?
(ক) বিচিন্তা
(খ) লঘুগুরু
(গ) ভারতের খনিজ
(ঘ) গড্ডালিকা
উত্তরঃ (ক) বিচিন্তা
১.২ ইংরেজি না-জানা পাঠকেরা জানে না -
(ক) আধুনিক আবিষ্কার
(খ) আধুনিক পদার্থবিদ্যা
(গ) আধুনিক গণিতবিদ্যা
(ঘ) সুশৃঙ্খল আধুনিক বৈজ্ঞানিক তথ্য
উত্তরঃ (ঘ) সুশৃঙ্খল আধুনিক বৈজ্ঞানিক তথ্য
১.৩ বাংলা পারিভাষিক শব্দ নেই এমন একটি ইংরেজি শব্দ হল -
(ক) অক্সিজেন
(খ) পেন
(গ) চেয়ার
(ঘ) ইন্টারনেট
উত্তরঃ (ক) অক্সিজেন
১.৪ প্রাথমিক বিজ্ঞানের সঙ্গে কিঞ্চিৎ পরিচয় না - থাকলে, বোঝা কঠিন -
(ক) বৈজ্ঞানিক সন্দর্ভ
(খ) বৈজ্ঞানিক গল্প
(গ) সামাজিক প্রবন্ধ
(ঘ) ভৌগোলিক বিবরণী
উত্তরঃ (ক) বৈজ্ঞানিক সন্দর্ভ
১.৫ আক্ষরিক অনুবাদের দোষ থেকে মুক্ত না - হলে সুপ্রতিষ্ঠিত হবে না -
(ক) বৈজ্ঞানিক গবেষণা
(খ) বৈজ্ঞানিক আলোচনা
(গ) বৈজ্ঞানিক পরিভাষা
(ঘ) বৈজ্ঞানিক সাহিত্য
উত্তরঃ (ঘ) বৈজ্ঞানিক সাহিত্য
১.৬ "যেসব জন্তুর শিরদাঁড়া নেই" - কথাটি যে শব্দের বদলে লেখা যেতে পারে তা হল -
(ক) শিরহীন
(খ) অমেরুদণ্ডী
(গ) শিরারবিহীন
(ঘ) মেরুদণ্ডী
উত্তরঃ (খ) অমেরুদণ্ডী
১.৭ 'দেশের লজ্জা' শব্দবন্ধে 'দেশ' যেখানে 'দেশবাসীর' সেখানে প্রকাশিত অর্থটি হল -
(ক) আভিধানিক
(খ) লক্ষণা
(গ) ব্যঞ্জনা
(ঘ) গূঢ়ার্থ
উত্তরঃ (খ) লক্ষণা
১.৮ "হিমালয় যেন পৃথিবীর মানদণ্ড" - উক্তিটি কার?
(ক) ভবভূতির
(খ) রবীন্দ্রনাথের
(গ) কালিদাসের
(ঘ) জীবনানন্ডের
উত্তরঃ (গ) কালিদাসের
১.৯ "এই প্রবাদটি যে কত ঠিক তার প্রমাণ আমাদের প্রবাদটির কথা বলা হয়েছে?
(ক) অতি চালাকের গলায় দড়ি
(খ) শ্যাম রাখি না কূল রাখি
(গ) অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী
(ঘ) যে যায় লঙ্কায় সে হয় বারণ
উত্তরঃ (গ) অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী
(২) অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর (কমবেশি ২০ শব্দে)
২.১ "এই শ্রেণিতে পড়ে।"-কারা, কোন শ্রেণিতে পড়ে?
উত্তরঃ অল্পবয়স্ক ছেলেমেয়ে এবং অল্পশিক্ষিত বয়স্ক লোক যারা ইংরেজি জানে না বা অতি অল্প জানে তারা প্রাবন্ধিক উল্লেখিত প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।
২.২ "এর মানে বুঝতে বাধা হয়নি।"-কোন কথার মানে বুঝতে বাধা হয়নি?
উত্তরঃ সংস্কার না-থাকায় ব্রহ্মমোহন মল্লিকের বাংলা জ্যামিতিতে লেখা একটি বাক্য-এক নির্দিষ্ট সীমাবিশিষ্ট সরলরেখার ওপর এক সমবাহু ত্রিভুজ অঙ্কন করতে হবে-এর অর্থ বুঝতে কোনো বাধা হয়নি।
২.৩ "আমাদের সরকার ক্রমে রাজকার্যে দেশি পরিভাষা চালাচ্ছেন।"-তাতে অনেক মুশকিলে পড়েছেন কেন?
উত্তরঃ সরকার যেভাবে রাজকার্যে ক্রমশ দেশি পরিভাষা ব্যাবহার করছেন তাতে ইংরেজি জানা অনেক মুশকিল হয়ে পড়ছেন, কারণ তাঁদের সেগুলি নতুন করে শিকতে হচ্ছে।
২.৪ "তাঁরা বিধান দিয়েছেন,"-কারা,কী বিধান দিয়েছেন?
উত্তরঃ কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নিযুক্ত পরিভাষা সমিতি বিধান দিয়েছে-নবাগত রাসায়ানিক বস্তুর ইংরেজি নামই বাংলা বানানে চলবে।
২.৫ "এই দোষ থেকে মুক্ত না হলে,"-দোষটি কী?
উত্তরঃ বিজ্ঞান অলোচনার রচনাপদ্ধিতি আয়ত্ত করতে না-পারার কারণে লেখকদের ভাষা আড়ষ্ট ও ইংরেজির অনুবাদ আক্ষরিক হয়ে যাওয়া।
২.৬ লেখকের মতে, 'Sensitized Paper'-এর সঠিক বাংলা পরিভাষা কী হবে?
উত্তরঃ সুগ্রাহী কাগজ
২.৭ "স্থানবিশেষে পরিভাষিক শব্দ বাদ দেওয়া চলে,"-বক্তব্যের স্বপক্ষে একটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ 'আমেরুদন্ডি'-পারিভাষিক শব্দের বদলে লেখা যায়-যেসব জন্তুর শিরদাঁড় নেই।
২.৮ "আমাদের আলংকারিকগণ শব্দের ত্রিবিধ কথা বলেছেন"-কোন 'ত্রিবিধ কথার' প্রসঙ্গ লেখক স্মরণ করেছেন?
উত্তরঃ (ক) অভিধা, (খ) লক্ষণা, (গ) ব্যঞ্জনা
২.৯ "এই কথাটি সকল লেখকেরই মনে রাখা উচিত।"-কোন কথা সব লেখকের মনে রাখা উচিত?
উত্তরঃ বৈজ্ঞানিক প্রসঙ্গের ভাষা অত্যন্ত সরল ও স্পষ্ট হওয়া আবশ্যক।
২.১০ "সাধারণ পাঠকেরা পক্ষে অনিষ্টকর।"-মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ লেখকেরা অনেক সময় ভুল তথ্য পরিবেশন করেন, যার ফলে পাঠকেরা ভুলটিকেই ঠিক ভেবে নেন। প্রাবন্ধিকের মতে, এটি অত্যন্ত অনিষ্টকর।
(৩) ব্যাখ্যামূলক সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর (কমবেশি ১৫০ শব্দে)
প্রশ্নঃ 'এর মানে বুঝতে বাধা হয়নি' - কীসের মানে বুঝতে বাধা হয়নি? বাধা হওয়ার সম্ভাব্য কারণ কী হতে পারে?
উত্তরঃ প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু ছোটোবেলা থেকে বাংলায় লেখাপড়া করার কারণে ইংরেজির প্রভাবমুক্ত ছিলেন। লেখককে ছেলেবেলায় ব্রক্ষ্মমোহন মল্লিকের বাংলা জ্যামিতি পড়তে হয়েছিল। সেখানে নানান দুর্বোধ্য প্রতিজ্ঞাবাক্যের উল্লেখ ছিল, যেমন - 'এক নির্দিষ্ট সীমাবিশিষ্ট সরলরেখার ওপর এক সমবাহু ত্রিভুজ অঙ্কিত করিতে হইবে।' এই জাতীয় দুর্বোধ্য প্রতিজ্ঞাবাক্য লেখকের বুঝতে অসুবিধা হয়নি, কারণ তাঁর মধ্যে ভাষাগত বিরোধী সংস্কার ছিল না। বাধা হওয়ার সম্ভাব্য কারণ পাঠকের কাছে পাঠ্য বিষয়বস্তুর অর্থ বুঝতে তখনই অসুবিধা হয়, যদি পাঠ্য বিষয়ের ভাষা পাঠকের স্পষ্টভাবে বোধগম্য না–হয়।
যারা ছোটোবেলা থেকে ইংরেজি ভাষায় পঠনপাঠনে অভ্যস্ত, তাদের পক্ষে বাংলা ভাষায় রচিত বিজ্ঞান বিষয়ক সাহিত্যপাঠ একটু সমস্যাজনক হতে পারে। কারণ সেই সমস্ত পাঠকদের মস্তিষ্কের ভাষাগত বিরোধ তাদের অর্থ বোঝার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ভাষা একটি অভ্যাসের বিষয়বস্তু। এ বিষয়ে প্রাবন্ধিকের একটি উক্তি উদ্ধৃত করা যেতে পারে। উক্তিটি হল, 'যে লোক আজন্ম ইজার পরেছে তার পক্ষে হঠাৎ ধুতি পরা অভ্যাস করা একটু শক্ত।'
প্রশ্নঃ 'আর একটি দোষ প্রায় নজরে পড়ে' - কে, কোন্ দোষের কথা বলেছেন? এই দোষের ফলে কী ঘটে? দোষ খন্ডনের উপায় কী?
উত্তরঃ মননশীল সত্যসন্ধানী প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু বাংলা বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধে একটি বিশেষ দোষ দেখেছেন। আর এই দোষ অজ্ঞতাজনিত বা জ্ঞানের স্বল্পতাকে নির্দেশ করে। তিনি একটি পত্রিকায় দেখেন জনৈক বৈজ্ঞানিক প্রাবন্ধিক লিখছেন - 'অক্সিজেন বা হাইড্রোজেন স্বাস্থ্যকর বলে বৈজ্ঞানিক যুক্তি নেই। তারা জীবের বেঁচে থাকার পক্ষে অপরিহার্য অঙ্গমাত্র। তবে ওজোন গ্যাস স্বাস্থ্যকর'। অবিখ্যাত অল্পবিদ্যার অধিকারী জনৈক বিজ্ঞান প্রবন্ধ লেখকের এই প্রমাণহীন অযৌক্তিক অভিমতের প্রসঙ্গে উক্ত কথাটি বলা হয়েছে।
প্রাবন্ধিকের মতে, বাংলাদেশে সাধারণ শিক্ষিত পাঠকদের একটি বড়ো অংশই বিজ্ঞানের গূঢ় তত্ত্ব বিষয়ে অনভিজ্ঞ। সুতরাং, জনসাধারণের জন্য লেখক যখন বিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধ বা পপুলার সায়েন্স রচনা করেন, তখন সেই রচনার ভাষা স্বচ্ছ ও সুবোধ্য হওয়া জরুরি এবং তার পাশাপাশি তথ্যগত দিক দিয়ে কোনো বিভ্রম বা বিচ্যুতি থাকাও কাম্য নয়। উদ্দিষ্ট পাঠকশ্রেণি যেহেতু বিজ্ঞানের বিবিধ খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে সচেতন নন সেহেতু তিনি তথ্যগত ভুল বা খামতিও শনাক্ত করতে পারবেন না। ফলে এতে পাঠকসমাজের একটি বড়ো অংশের ক্ষতি হবে।
উদ্ধৃতিটির প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিক পত্রিকায় সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তিনি বলেছেন, সম্পাদকের উচিত অবিখ্যাত লেখকের বৈজ্ঞানিক রচনা প্রকাশের আগে অভিজ্ঞ লোককে দিয়ে যাচাই করে নেওয়া।
প্রশ্নঃ 'যে লোক আজন্ম ইজার পরেছে তার পক্ষে হঠাৎ ধুতি পরা অভ্যাস করা একটু শক্ত।' - 'ইজার' ও 'ধুতি' বলতে কী বোঝানো হয়েছে? অভ্যাস করা একটু শক্ত বলার কারণ কী?
উত্তরঃ লেখক রাজশেখর বসু তাঁর 'বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান' প্রবন্ধে 'ইজার' ও 'ধুতি' শব্দদুটি রূপকার্থে ব্যবহার করেছেন। 'ইজার' হল পাজামা বা প্যান্ট যা বিদেশি বিশেষ করে ইংরেজদের পোশাক। সেই অনুষঙ্গ ধরেই লেখক ইজারের রূপকে ইংরেজি ভাষাকে ইজার ও ধুতি বুঝিয়েছেন। একইভাবে বাঙালি পোশাক ধুতির অনুষঙ্গে বাংলা ভাষাকে বুঝিয়েছেন। যারা ছোটোবেলা থেকে ইংরেজি ভাষায় পঠনপাঠনে অভ্যস্ত তাদের বাংলায় বিজ্ঞান পাঠ যে কঠিন তা বোঝানোর জন্য উপমাটি ব্যবহার করা হয়েছে।
ভাষা যদি বোধগম্য না হয় তবে বিষয়বস্তুর অর্থ স্পষ্ট হয় না। ছোট্ট থেকে ইংরেজি ভাষায় পঠনপাঠনে অভ্যস্ত এমন মানুষদের পক্ষে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানভিত্তিক সাহিত্যপাঠ একটু সমস্যাজনক হতে পারে। কেননা এদের মস্তিষ্কের ভাষাগত বিরোধ পারিভাষিক অর্থ কারণ বোঝার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কারণ তাঁরা কোনো একটি বিষয়ে ইংরেজি পরিভাষার সঙ্গে পরিচিত, বাংলা ভাষায় সেসব বিষয়ের পরিভাষার সাঙ্গে অভ্যস্ত হতে তাঁদের একটা মানসিক বিরোধ উপস্থিত হয়। এই বিরোধকে কটাক্ষ করেই প্রাবন্ধিকের উপরোক্ত উক্তিটি।
প্রশ্নঃ 'তাঁদের উদ্যোগের এই ত্রুটি ছিল যে …' - কাদের, কোন উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে? উক্ত ত্রুটির বিষয়টি পরিস্ফুট করো।
উত্তরঃ বহু বছর আগে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন বিদ্যোৎসাহী পণ্ডিত লেখক বিভিন্ন বিষয়ের বাংলা পরিভাষা রচনা করেছিলেন। এঁদের উদ্যোগটি প্রশংসনীয় হওয়া সত্ত্বেও কাজটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু 'বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান' প্রবন্ধে সেই প্রসঙ্গে আলোচনাকালে এরূপ মন্তব্য করেছেন। জুটির বিষয় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের পণ্ডিতবর্গ নানা বিষয়ে পরিভাষা রচনা করলেও তার মধ্যে ত্রুটি ছিল। এর একটা বড়ো কারণ ছিল এই যে, তাঁরা একসঙ্গে কাজ না করে পৃথকভাবে কাজ করেছিলেন। ফলে সংকলিত পরিভাষার মধ্যে সমতা আসেনি, একই ইংরেজি সংজ্ঞার বিভিন্ন ধরনের প্রতিশব্দ রচিত হয়েছে। এই বিষয়টি পাঠকদের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, একই বিষয়ে একটিই সর্বসম্মত ও গ্রহণযোগ্য পরিভাষা নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি। এই পণ্ডিতবর্গ একত্রে কাজ করলে পরিভাষা রচনার কাজটি আরও সুসংহত ও সুচারু হতে পারত।
প্রশ্নঃ 'এ দেশে বিজ্ঞান শিক্ষার বিস্তার হলে এই অসুবিধা দূর হবে।' - কোন্ অসুবিধার কথা বলা হয়েছে আলোচনা করে বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু তাঁর 'বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান' নামক প্রবন্ধে স্বল্প পরিসরে পাশ্চাত্য দেশগুলির সঙ্গে ভারতবর্ষের বিজ্ঞানশিক্ষার তুলনামূলক আলোচনা করেছেন। তিনি দেখেছেন যে, পাশ্চাত্য দেশগুলির তুলনায় ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষের বিজ্ঞান বিষয়ক জ্ঞান সীমিত। বিজ্ঞান সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান না থাকলে কোনো উচ্চমানের বৈজ্ঞানিক রচনা বোঝা এক অর্থে অসম্ভব। পাশ্চাত্য দেশগুলিতে পপুলার সায়েন্স বা সাধারণের জন্য বিজ্ঞান রচনা সহজসাধ্য, কারণ তা বোঝার মতো প্রাথমিক জ্ঞান সাধারণ মানুষের আছে। কিন্তু ভারতবর্ষের পরিস্থিতি আলাদা। বয়স্কদের জন্য রচিত বিজ্ঞানভিত্তিক সাহিত্যও গোড়া থেকে না লিখলে বোধগম্য হয় না। তাই সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে যাঁরা বিজ্ঞান লেখেন, এই বিষয়টি তাঁদেরও মনে রাখা দরকার। পরবর্তীকালে ভারতবর্ষে বিজ্ঞানশিক্ষা বিস্তারলাভ করলে এই সমস্যা দূর হবে বলে প্রাবন্ধিক মতামত প্রকাশ করেছেন।
প্রশ্নঃ 'জনসাধারণের জন্য যাঁরা বাংলায় বিজ্ঞান লেখেন তাঁরা এ বিষয়ে অবহিত না হলে তাঁদের লেখা জনপ্রিয় হবে না।' - 'জনসাধারণ' বলতে লেখক কাদের বুঝিয়েছেন? প্রাবন্ধিক বাংলায় বিজ্ঞান লেখকদের কোন্ বিষয়ে অবহিত হতে বলেছেন? তাঁর এরূপ মন্তব্যের কারণ কী?
উত্তরঃ মননশীল প্রাবন্ধিক ও রসায়নবিদ রাজশেখর বসু তাঁর বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধের উল্লিখিত উক্তিতে জনসাধারণ বলতে এদেশের ইংরেজি না-জানা বা অতি অল্প ইংরেজি জানা বিজ্ঞান পাঠকদের বুঝিয়েছেন।
দেশের জনসাধারণের দিকে লক্ষ রেখে প্রাবন্ধিক বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান লেখকদের সাবধান করে বলেছেন - আমাদের দেশের জনসাধারণের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান সামান্য। ফলে প্রাথমিক বিজ্ঞানের সঙ্গে তাদের কিছুটা পরিচয় থাকা আবশ্যক। তাই তাদের জন্য বিজ্ঞান লিখতে গেলে লেখকদেরকে প্রাথমিক বিজ্ঞানের মতো গোড়া থেকেই লিখতে হবে। এমনকি বয়স্কদের জন্য লেখার ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতি অবলম্বন করা জরুরি।
জনসাধারণ যদি বিজ্ঞানের প্রাথমিক বিষয়টিই না জানেন, না বোঝেন তবে পাঠ্যবিষয়ে তাঁরা আগ্রহী হবেন না, আর আগ্রহী পাঠক ব্যতীত লেখকদের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়। বিজ্ঞানলেখক বিজ্ঞানের প্রসার আশা করেন। তাঁরা চান জনসাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ে সচেতন হয়ে উঠুক, তাঁরা বিষয়টি সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত হোক। পাশ্চাত্য দেশের তুলনায় এদেশের জনসাধারণের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান নগণ্য। পপুলার সায়েন্সও এঁরা সহজে বোঝেন না বলেই প্রাবন্ধিক এদেশের বাংলায় বিজ্ঞান লেখকদের জন্য প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছেন।
প্রশ্নঃ 'বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান' রচনায় প্রাবন্ধিক বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে যেসব অসুবিধার কথা বলেছেন তা আলোচনা করো।
উত্তরঃ বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার পথে সম্ভাব্য বাধা সম্পর্কে রাজশেখর বসু তাঁর 'বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান' প্রবন্ধে আলোচনা করেছেন।
নিচে বাধাগুলি আলোচনা করা হল -
(১) ইংরেজি জানেন এবং ইংরেজিতে বিজ্ঞান পাঠ করেছেন এমন পাঠকের বাংলায় বিজ্ঞানচর্চা বেশ কঠিন।
(২) বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও উপযুক্ত পারিভাষিক শব্দের অভাব এ পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
(৩) পাশ্চাত্য দেশগুলির তুলনায় আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের বিজ্ঞানবোধ খুবই কম। সামান্য বিজ্ঞানবোধ না থাকলে বিজ্ঞানভিত্তিক রচনা বোধগম্য হয় না। তাই বাংলায় বিজ্ঞান রচনার ক্ষেত্রে সমস্যা থেকে গেছে।
(৪) অনেক লেখকের ভাষা আড়ষ্টতা ও ইংরেজির আক্ষরিক অনুবাদ দোষে দুষ্ট হয়ে রচনা তার সাবলীলতা হারায়।
(৫) শেষ বাধাটি হল ভুল তথ্য পরিবেশন। অনেকে না জেনে কিংবা সামান্য জেনে বাংলায় বিজ্ঞান রচনায় ভুল তথ্য পরিবেশন করেন। প্রাবন্ধিকের মতে, আলোচিত বাধাগুলি অতিক্রম না করতে পারলে বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা ত্রুটিহীন হওয়া সম্ভব নয়।
প্রশ্নঃ 'এই ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়।' - কোন্ ধারণা? লেখক কীভাবে প্রমাণ করেছেন যে, এই ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়?
উত্তরঃ অনেকে মনে করেন যে, বাংলা ভাষায় বৈজ্ঞানিক সাহিত্য লেখার সময় পারিভাষিক শব্দ বাদ দিয়ে বক্তব্য প্রকাশ করলে রচনা সহজ ধারণা হয়। লেখকের মতে, এই ধারণা বিভ্রান্তিকর।
প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসু মনে করেন যে, কোথাও কোথাও পারিভাষিক শব্দ বাদ দিয়ে কাজ চললেও সর্বত্র তা সম্ভব নয়। যেমন - 'অমেরুদণ্ডী' বোঝাতে লেখা যেতে পারে যেসব জন্তুর শিরদাঁড়া নেই। কিন্তু 'আলোকতরঙ্গ'-এর পরিবর্তে আলোর লেখকের প্রমাণ ধারণা পুরোপুরি ঠিক কাপন বা নাচন লেখা কখনোই বিজ্ঞানসম্মত নয়। এক্ষেত্রে কোনো বিষয় সম্পর্কে ভুল ধারণার সৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে বারবার কোনো বিষয়ের বর্ণনা ভাষার গতি যেমন শ্লথ করে, তেমনই তাকে স্থূল করে তোলে। তাই পরিভাষার ব্যবহার ভাষাকে সংক্ষিপ্ত ও সুনির্দিষ্ট অর্থবিশিষ্ট করে। সাধারণ মানুষের বোঝার জন্য বৈজ্ঞানিক সাহিত্যে প্রথমবার ব্যবহৃত কিংবা কম ব্যবহৃত পরিভাষার অর্থ ও প্রয়োগ দিয়ে দেওয়া উচিত। লেখার পরবর্তী অংশে কেবল পরিভাষাটি দিলেই চলে। এভাবেই প্রাবন্ধিক বিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধে যথার্থ পরিভাষা ব্যবহারের পক্ষে সওয়াল করেছেন।
প্রশ্নঃ 'তাতে পাঠকের অসুবিধে হয়।' - কীসে পাঠকের অসুবিধা হয়? অসুবিধা দূর করার জন্য কী কী করা প্রয়োজন?
উত্তরঃ প্রাবন্ধিক রাজশেখর বসুর মতে, বাংলায় বৈজ্ঞানিক সাহিত্য রচনায় পরিভাষার ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। যথার্থ পরিভাষা ভাষাকে সর্বাঙ্গসুন্দর করে। পরিভাষা ছাড়া কোনো রচনায় বিষয়ের পাঠকের অসুবিধা বর্ণনায় বারবার একই কথা লিখে আলোচনা দীর্ঘায়িত করতে হয়। অবান্তর বর্ণনা পাঠকমনে অসুবিধা ও বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে।
অনেক লেখকের মতে, পারিভাষিক শব্দ কম ব্যবহার করে বা সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে রচনাকে সহজতর করা যায়। কিন্তু ব্যাপারটা তা নয়, পরিভাষা বর্জন কোনো কোনো ক্ষেত্রে সম্ভব হলেও সর্বত্র তা অনুচিত। কারণ 'অমেরুদণ্ডী' বোঝাতে 'যেসব জন্তুর শিরদাঁড়া নেই' লেখা গেলেও 'আলোকতরঙ্গ' বোঝাতে 'আলোর কাঁপন বা নাচন' লিখলে ব্যাপারটা কিছুমাত্র সহজ হয় না। তাই যথার্থ পরিভাষার ব্যবহারেই পাঠকের অসুবিধা দূর করা সম্ভব। পরিভাষা লেখার ভাষাকে যেমন সংক্ষিপ্ত করে, তেমনই অর্থকে সুনির্দিষ্ট করে। সুতরাং পরিভাষা সম্পূর্ণ বর্জনের পরিবর্তে, বৈজ্ঞানিক রচনাগুলিতে স্বল্প পরিচিত বা অপরিচিত পরিভাষার সঙ্গে তার ব্যাখ্যা ও ইংরেজি নাম দেওয়া চলতে পারে। পরবর্তীকালে বিষয়টি পরিচিত হয়ে যাওয়ার পর শুধু বাংলা পরিভাষাটি দিলেই কাজ চলবে।
Madhyamik Bengali Suggestion 2024
Madhyamik Bengali suggestion 2024 pdf. Madhyamik Bengali suggestion 2024 pdf download. Madhyamik Bengali question 2024. Madhyamik Bengali. Madhyamik Bengali meaning. Madhyamik Bengali syllabus 2024. Madhyamik Bengali syllabus 2024. Madhyamik Bengali syllabus. Madhyamik Bengali question 2024.
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান রাজশেখর বসু মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন প্রশ্ন ও উত্তর
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান বড় প্রশ্ন উত্তর. বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চায় বাধা কোথায়. বৈজ্ঞানিক বুদ্ধি রাজশেখর বসু প্রশ্ন উত্তর. পরিভাষার উদ্দেশ্য কি. বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর pdf. তাতে পাঠকের অসুবিধা হয়. হিমালয় যেন পৃথিবীর মানদন্ড উক্তিটি কার. রাজশেখর বসু প্রবন্ধ pdf.
Madhyamik Suggestion 2024 pdf Free download
মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf. উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024 PDF. বাংলা ব্যাকরণ সাজেশন. উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024. মাধ্যমিক বাংলা কারক. মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান সাজেশন 2024. পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্ন উত্তর ও শেষ মুহূর্তের সাজেশন ডাউনলোড. মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024 mcq. মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন 2024. মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্ন উত্তর 2024. 2024 এর মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্ন বাংলা.
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান গল্পের প্রশ্ন উত্তর pdf
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান বড় প্রশ্ন উত্তর. বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চায় বাধা কোথায়. বৈজ্ঞানিক বুদ্ধি রাজশেখর বসু প্রশ্ন উত্তর. বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর pdf. বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান বিষয়বস্তু. পরিভাষার উদ্দেশ্য কি. রাজশেখর বসু বৈজ্ঞানিক বৃদ্ধি প্রবন্ধে যেসব কুসংস্কারের কথা বলেছেন তা বিবৃত করো. তাতে পাঠকের অসুবিধা হয়.
মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf
Madhyamik suggestion 2024 pdf. Madhyamik suggestion 2024 pdf download. Madhyamik suggestion 2024 pdf free download. ক্লাস 10 বাংলা প্রশ্ন উত্তর 2024. ক্লাস টেনের বাংলা সাজেশন. মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক পরীক্ষার সাজেশন 2024 বাংলা. উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024 PDF. বাংলা ব্যাকরণ সাজেশন.
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান গল্পের প্রশ্ন উত্তর 2024
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর. বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রবন্ধ. বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চায় বাধা কোথায়. বাংলা ভাষার বিজ্ঞান. রাজশেখর বসু প্রশ্ন উত্তর. বৈজ্ঞানিক বুদ্ধি রাজশেখর বসু প্রশ্ন উত্তর. বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান রাজশেখর বসু. পরিভাষার উদ্দেশ্য কি.
WBBSE Madhyamik bengali suggestion 2024
WBBSE Madhyamik Bengali suggestion 2024 pdf download. Madhyamik Question Paper Bengali. WBBSE Madhyamik Bengali suggestion 2024 pdf download in Bengali. WBBSE Madhyamik Bengali suggestion 2024 download pdf. West Bengal Madhyamik Bengali Suggestion 2024 Download. WBBSE Madhyamik Bengali short question suggestion 2024. Madhyamik Bengali Suggestion 2024 download. WB Madhyamik 2024 Bengali suggestion and important questions. Madhyamik Suggestion 2024 pdf.
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান বড় প্রশ্ন উত্তর
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর pdf. বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান বিষয়বস্তু. বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চায় বাধা কোথায়. বৈজ্ঞানিক বুদ্ধি রাজশেখর বসু প্রশ্ন উত্তর. তাতে পাঠকের অসুবিধা হয়. হিমালয় যেন পৃথিবীর মানদন্ড উক্তিটি কার. পরিভাষার উদ্দেশ্য কি. চারটি বৈজ্ঞানিক পরিভাষা লেখ.
দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ভাষার বিজ্ঞান
উত্তরমুছুনParvin Bobi
উত্তরমুছুন