মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ২০২৪ - আস্ত্রের বিরুদ্ধে গান (কবিতা) জয় গোস্বামী
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান
জয় গোস্বামী
(১) নিচের বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
১.১ অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান হল একটি -
(ক) ভক্তি মূলক কবিতা
(খ) স্বদেশী কবিতা
(গ) প্রেমের কবিতা
(ঘ) যুদ্ধ বিরোধী কবিতা
উত্তর : (ঘ) যুদ্ধ বিরোধী কবিতা
১.২ অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত -
(ক) ভুতুম ভগবান
(খ) ঘুমিয়েছো, ঝাউপাতা
(গ) পাতার পোশাক
(ঘ) পাগলী, তোমার সঙ্গে
উত্তর : (গ) পাতার পোশাক
১.৩ "আমি এখন হাজার হাতে পায়ে এগিয়ে আসি" - উদ্দীপ্ত লাইনটি নিচের কোন প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেছে -
(ক) সভ্যতার বিবর্তন
(খ) মানুষের সংবদ্ধ প্রতিরোধ
(গ) সভ্যতার বিনাশ
(ঘ) মানুষের নব প্রজন্ম
উত্তর : (খ) মানুষের সংবদ্ধ প্রতিরোধ
১.৪ কবি জয় গোস্বামী অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতায় গানকে তুলনা করেছেন -
(ক) যন্ত্রের সঙ্গে
(খ) পোশাকের সঙ্গে
(গ) অস্ত্রের সঙ্গে
(ঘ) বর্মের সঙ্গে
উত্তর : (ঘ) বর্মের সঙ্গে
১.৫ "মাথায় কত শকুন বা চিল" - মাথায় চিল বা শকুন ওড়ার অর্থ কি? -
(ক) সমাজে মোড়ক লেগেছে
(খ) আদর্শহীন সমাজ যেন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে
(গ) পাখিরা ভয় পেয়েছে
(ঘ) চিল শকুনিরা খাদ্যের সন্ধানে ঘুড়ছে
উত্তর : (খ) আদর্শ সমাজ যেন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে
১.৬ "গান-বাঁধবে সহস্র উপায়ে" - কে গান বাঁধবে?
(ক) গায়ক
(খ) টিয়া
(গ) কোকিল
(ঘ) গীতিকার
উত্তর : (গ) কোকিল
১.৭ "আদর গায়ে" কথাটির অর্থ হলো -
(ক) অনাবৃত শরীরে
(খ) অস্ত্র মোড়া শরীরে
(গ) গানের বর্ম পরিহিত শরীরে
(ঘ) মাথায় ময়ূর পালক গোজা শরীরে
উত্তর : (ক) অনাবৃত শরীরে
১.৮ ঋষি বালক এর মাথায় কি গোঁজা আছে -
(ক) পাতা
(খ) রঙিন কাপড়
(গ) ময়ূর পালক
(ঘ) পালক
উত্তর : (গ) ময়ূর পালক
১.৯ অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতায় শেষ লাইনে কবি কোথায় অস্ত্র রাখার কথা বলেছেন -
(ক) ঋষি বালক এর পায়ে
(খ) নদীর জলে
(গ) কথকের দুই পায়ে
(ঘ) গানের দুটি পায়ে
উত্তর : (ঘ) গানের দুটি পায়ে
১.১০ অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতাটির কবি হলেন -
(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(খ) জয় গোস্বামী
(গ) মধুসূদন দত্ত
(ঘ) কাজী নজরুল ইসলাম
উত্তর : (খ) জয় গোস্বামী
(২) নিচের অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
২.১ "আমি এখন হাজার হাতে পায়ে / এগিয়ে আসি," -হাজার হাতে পায়ে কথার অন্তর্নিহিত অর্থ টি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : মানুষ সংঘবদ্ধভাবে যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এগিয়ে আসছে।
২.২ "গানের বর্ম আজ পড়েছি গায়ে" - গানের বর্ম পরিধান করে কবি কোন কাজ করতে পারেন?
উত্তর : গানে শক্তি দিয়ে তিনি হিংসাকে পরাজিত করতে চেয়েছেন।
২.৩ "আঁকড়ে ধরে সে খরকুটো" - কবি খড়কুটো আঁকড়ে ধরে কি করেন?
উত্তর : অন্তিম অবলম্বন হিসেবে গ্রহণ করে তার রক্তাক্ত হৃদয়কে শুশ্রূষা দান করেন।
২.৪ "মাথায় কত শকুন বা চিল" - শকুন বা চিল কি?
উত্তর : সমাজ ও রাষ্ট্রের স্বার্থপর, অর্থলোভী অমানবিক মানুষ এবং তাদের হিংসাত্মক আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতা বা চিন্তাভাবনার প্রতীক।
২.৫ "গান বাধবে সহস্র উপায়" - কে সহস্র উপায়ে গান বাঁধবে?
উত্তর : প্রেম গানের প্রতীক ও ভালবাসার প্রতীক কোকিলটি সহস্র উপায় গান বাঁধবে।
২.৬ "আমার শুধু একটা কোকিল" - একটা কোকিল কি করবে বলে কবির বিশ্বাস?
উত্তর : কবির বিশ্বাস একটা কোকিল হাজারো উপায় গান বাঁধবে এবং সমস্ত কলুষতা ধুয়ে দেবে।
২.৭ "বর্ম খুলে দেখো আদর গায়ে" - বর্ম বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর : ক্ষমতার দম্ভ, অহংকার, মোহ প্রভৃতিকে; যা মানুষের মনকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকে।
২.৮ "গান দাঁড়ালো ঋষি বালক" - ঋষি বালক এর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : বাঁশির সুরের মূর্ছনায় জগৎবাসী কে অসুর দমন করে সুর প্রতিষ্ঠার আখিলায় শ্রীকৃষ্ণের মাথায় ময়ূরের পালক প্রসঙ্গেই এই উক্তিটি করা হয়েছে।
২.৯ "মাথায় গোজা ময়ূর পালক" - কার মাথায় ময়ূর পালক গজায় দেখা যায়?
উত্তর : শ্রীকৃষ্ণের মাথায়
২.১০ "অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান" কবিতায় অস্ত্রধারণ বিষয়ে কবি কি নির্দেশ দিয়েছেন?
উত্তর : যুদ্ধবাজ মানুষদের সুপথে ফিরে আসার অনুরোধ জানিয়ে তাদের অস্ত্রধারণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
(৩) নিচের ব্যাখ্যামূলক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
প্রশ্নঃ 'আমি এখন হাজার হাতে পায়ে' - কোন কবির কোন কবিতা থেকে নেওয়া? 'আমি' কে? 'হাজার হাতে পায়ে' বলতে তিনি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তরঃ কবি জয় গোস্বামী রচিত 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতা থেকে প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটি গৃহীত হয়েছে।
কবি একজন সাধারণ ও সামান্য মানুষ। অন্যদিকে অস্ত্রের ক্ষমতা প্রভূত। তাই অস্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হলে যে বিপুল মানসিক শক্তির প্রয়োজন, তার জন্য প্রয়োজন সংঘবদ্ধ বিরুদ্ধতার। আর তাই প্রতীকায়িত হয়েছে সহস্র মানুষের প্রতিভূ–স্বরূপ 'হাজার হাতে পায়ে' শব্দবন্ধের মাধ্যমে। এই দৃঢ় প্রত্যয় শুধু ব্যক্তি মানুষের নয়, সম্মিলিত মানবতার। এজন্য কবি হাজার হাতে পায়ে শুধু এগিয়েই আসেন না, উঠেও দাঁড়ান এবং হাত নাড়িয়ে তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বন্দুকের গুলিকে প্রতিহতও করেন। এ কারণেই তিনি বলেছেন 'এগিয়ে আসি, উঠে দাঁড়াই/হাত নাড়িয়ে বুলেট তাড়াই। অর্থাৎ অন্তরমনের অবজ্ঞাকে সম্বল করে চরম প্রতিকূলতাতেও লক্ষ্যে অবিচল থাকেন।
প্রশ্নঃ 'অস্ত্র ফ্যালো, অস্ত্র রাখো পায়ে' - অস্ত্র সরিয়ে রাখার প্রভাব উল্লেখ করো।
উত্তরঃ জয় গোস্বামীর লেখা 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতাটির উদ্ধৃত পঙক্তিতে কবি অস্ত্র সংবরণের কথা বলেছেন। কবি মনে করেন, মানুষে-মানুষে মেলবন্ধন রচনা করাই সকলের ধর্ম। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে কপিপয় মানুষ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করে চলে। কিন্তু শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার জন্যই তো সুন্দর পৃথিবীতে আসা। তাই মানুষের মনুষ্যত্ববোধের জাগরণ ঘটিয়ে একাত্মা হওয়া, ও প্রেমের গানে জগৎসংসারকে ভরিয়ে তোলাই সকলের সাধনা; আর এটিই অস্ত্র সরিয়ে রাখার প্রভাব বলে কবি মনে করেন।
প্রশ্নঃ 'গানের বর্ম আজ পরেছি গায়ে' - কার কোন্ রচনাংশ? কে 'গানের বর্ম' পরেছে? 'গানের বর্ম' বলার তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি কবি জয় গোস্বামী রচিত 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতার অংশ।
কবিতার কথক এই গানের বর্ম ধারণ করেছেন। কারণ অস্ত্র থেকে গানের কর্ম নির্গত গুলি বা বুলেটকে প্রতিরোধ করতে হলে গানই একমাত্র রক্ষাকবচ হয়ে ওঠে। 'গানের বর্ম' বলতে এখানে কবি মানবিকতা ও মঙ্গলময়তার সুরময় প্রকাশকেই বুঝিয়েছেন। কবি জানেন অস্ত্রের ক্ষমতা বিপুল, কিন্তু অস্ত্র হিংস্রতা ও দানববৃত্তি ছাড়া আর কিছুই নয়। আর অস্ত্র থেকে নির্গত তাৎপর্য বিশ্লেষণ দানবীয়তাকে প্রতিহত করতে, গানের মতো নরম ও পেলব হৃদয়বৃত্তির সুরমূর্ছনাই প্রয়োজন। তবেই গানের সাহায্যে, অস্ত্রের মতো পাশব শক্তিকে পরাহত করা যাবে। কেননা অস্ত্র যা পারে না, গান তা অনায়াসে করতে পারে। গান মানুষকে দানবত্ব পরিহার করে প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে শেখায়। উদ্ধৃতাংশে মানবাত্মার সেই জীবনজয়ী সুরের কথাই বলা হয়েছে।
প্রশ্নঃ 'বর্ম খুলে দ্যাখো আদুড় গায়ে' - কবি কেন একথা বলেছেন?
উত্তরঃ সৃষ্টিশীল মানুষ মাত্রই আশাবাদী। কবি-সাহিত্যিকরাও তার ব্যতিক্রম নন। যুদ্ধলাঞ্ছিত, অবক্ষয়িত সমাজের মধ্যে বাস করেও, তাঁরা আগামী দিনের সুস্থ পৃথিবীর স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু, যে সমস্ত মানুষ স্বার্থান্ধতা, লোভ, হিংসা এবং দান্তিকতার বর্ম ধারণ করে থাকে, তারা এই সুন্দর পৃথিবীর আস্বাদ থেকে বঞ্চিত হয়। তাই কবি তাদের এইসমস্ত বর্ম খুলে আদুড় গায়ে অর্থাৎ অনাবৃত, পবিত্র মনে খোলা আকাশের নীচে এসে দাঁড়াতে বলেছেন। আত্মকেন্দ্রিক সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতাকে সরিয়ে সকলকে শঙ্কাহীন মানসিকতায় উন্নীত হতে বলেছেন।
প্রশ্নঃ 'রক্ত মুছি শুধু গানের গায়ে' - রক্তপাত হওয়ার কারণ কী?
উত্তরঃ জয় গোস্বামীর 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতা থেকে উদ্ধৃতাংশটি গৃহীত হয়েছে। অস্ত্র মানুষের হিংসা, অসুয়া, বিদ্বেষ, যুদ্ধবৃত্তি ও ভীতি প্রদর্শনের সহায়ক। অস্ত্র মানুষের জীবন পর্যন্ত নাশ করে। তাই অস্ত্র কখনোই কোনো সভ্যতার প্রগতির সূচক হতে পারে না। মানবতাকে ধ্বংস করে পাশববৃত্তিকে রক্তপাত হওয়ার কারণ জয়যুক্ত করাই তার একমাত্র কাজ। যখনই কেউ অস্ত্রের বিরুদ্ধে লড়তে যায়, তখনই ঘটে রক্তপাত, তখনই ঘটে প্রাণহানি। দানববৃত্তির সহায়ক অস্ত্রের শক্তি তো পৈশাচিক হবেই। মানবতার পতন ঘটাতে পারলেই তাই অস্ত্রের জয়। কিন্তু কবির মতে মানুষকে অন্তর থেকে রূপান্তরিত করতে সক্ষম গানই শুধু এই দানবিক শক্তিকে পরাহত করতে পারে।
প্রশ্নঃ 'আমার শুধু একটা কোকিল/গান বাঁধবে সহস্র উপায়ে' – কোন্ প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য?
উত্তরঃ কবি জয় গোস্বামীর 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতা থেকে উক্ত অংশটি গৃহীত। মানবতার মূল মন্ত্র হিংসা কোরো না। কিন্তু যে কোনো অস্ত্র, মানুষের মধ্যে এই হিংসাবৃত্তির জন্মদাতা। কবি উদ্ধৃতাংশের প্রসঙ্গ তাই অস্ত্রের বিরুদ্ধ শক্তি হিসেবে গানকে বেছে নিলেন। গান মানুষের হৃদয়বৃত্তির বিশুদ্ধ প্রকাশ। মানুষের অন্তরের সুরময় মানবতা গানের ভাষায় প্রকাশিত হয়। কিন্তু কবি জানেন, গান দিয়ে অস্ত্রের বিরুদ্ধতা করা খুব সহজ নয়। কারণ শকুন বা চিলরূপী সুযোগসন্ধানী মানুষের হানাদারি দৃষ্টি চতুর্দিকে প্রহরারত, তাই কোকিলের মতো বসন্তদূতকে তিনি সঙ্গী করে নেন।
প্রশ্নঃ 'গান দাঁড়াল ঋষিবালক/মাথায় গোঁজা ময়ূরপালক' - প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বক্তব্যটির তাৎপর্য বুঝিয়ে লেখো।
উত্তরঃ কবির মনে হয়েছে, অন্তরকে গানের ঝরনাধারায় পরিশুদ্ধ করতে হবে। কবি জানেন, গান মানুষের অন্তরের চিরবালকটিকে প্রকাশ করবে; আর শৈশবের পবিত্রতায় মানুষ হয়ে উঠবে প্রকৃতিকোলের নিষ্পাপ রাখাল বালক, যার মাথায় বালক কৃয়ের মতোই ময়ূরপালক গোঁজা আছে। এভাবেই গান ক্লান্ত অবসন্ন মানবপ্রাণের আরাম ঘটাবে। গান মানুষকে নিয়ে যাবে নদীতে, দেশে গাঁয়ে। গানের তরঙ্গে মানুষের মনের 'অহং'–এ আবদ্ধ মানবসত্তা প্রাণময়তার মুক্ত জোয়ারে ভেসে যাবে। এই পথেই পৃথিবীর ক্রমমুক্তি ঘটবে সমস্ত ভেদাভেদহীন মানবিকতার অবয়বহীন সুরের মূর্ছনায়, উদবোধন ঘটবে মানবতার।
(৪) নীচের রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
প্রশ্নঃ কবি জয় গোস্বামীর 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতায়। যুদ্ধবিরোধী মনোভাবের যে প্রকাশ ঘটেছে, তা নিজের ভাষায় বিবৃত করো।
উত্তরঃ জয় গোস্বামী একজন সমাজমনস্ক, সংবেদনশীল কবি। তাই তাঁর প্রতিবাদ সামাজিক অসংগতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে। কবিতার আঙ্গিক ও ভাষায় তিনি অন্তত 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান-কবির যুদ্ধবিরোধী মনোভাবের প্রকাশ তেমন দৃষ্টান্তই তুলে ধরেন। তাঁর কাব্য ও কবিতার ছত্রে ছত্রে প্রতিবাদী মুখগুলোর সমোচ্চারিত স্বর যেন অনুরণিত হয়। তবে তাঁর প্রতিবাদ যতটা না উচ্চকিত, তার চেয়েও বেশি মানবিক বিবেচনা–বিশ্লেষণে তৎপর। আমাদের পাঠ্য 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতাটির মধ্য দিয়ে তাঁর যুদ্ধবিরোধী মনোভাবের এক আশ্চর্য প্রকাশ লক্ষ করা যায়। তবে এ প্রতিবাদ অস্ত্রের ঝনঝনানিতে নয়, বরং মানবিকতা, সৌহার্দ্য ও সুরপ্লাবী অন্তরের গানের সম্বলকে অবলম্বন করে। তাইতো কবি বলতে পেরেছেন, 'অস্ত্র ত্যাগ' করে তাকে চরণতলে নামিয়ে রেখে একাকিত্বের বাঁধন কেটে অসংখ্য মানুষের পদচারণায় এগিয়ে যাচ্ছি। শুধুমাত্র 'গানের বর্ম' অর্থাৎ আত্মশক্তি ও মানবিকতার বলে বলীয়ান হয়েই, হাত দিয়ে তিনি বুলেট তাড়াতে অর্থাৎ যুদ্ধের ভয়াবহতাকে থামিয়ে দিতে পারেন। কবি সীমিত শক্তি নিয়ে মানবিকতাকে খড়কুটোর মতো আঁকড়ে ধরেন। নিজের বিবেকের বিশ্বাসের ওপর ভর করে প্রতিহিংসার রক্ত গানের অর্থাৎ মানবিকতার গায়ে মুছে চিল–শকুনকে উপেক্ষা করে তিনি এগিয়ে চলেন। কবি জানেন কোকিল বসন্তের দূত। আর বসন্ত যৌবনের প্রতীক। সেই যৌবনের ধর্মই তো নিজের বিশ্বাসের ওপর অহংকার। সেই মানবিক বিশ্বাসেই তিনি শত রক্তক্ষয়ী প্রতিকূলতাতেও পথ হাঁটেন। মানববিনাশী যুদ্ধ আর নয়। তিনি চান অস্ত্র ত্যাগ করে, হিংসার আবরণ খুলে, ঋষিবালকের বেশে গানের তথা মানবিকতার আবির্ভাব ঘটুক। এভাবেই পথেপ্রান্তরে গানের তথা মানবিকতার পুনর্জাগরণ ঘটবে, যুদ্ধকামী শত্রুদল পরাজিত হবে ও তাদের অস্ত্র অবনত হবে।
প্রশ্নঃ 'তোমায় নিয়ে বেড়াবে গান/নদীতে, দেশগাঁয়ে' - কার, কোন্ রচনার অংশ? প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বক্তব্যটির তাৎপর্য বুঝিয়ে লেখো।
উত্তরঃ আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটি কবি জয় গোস্বামীর 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতার অংশ।
পাঠ্য কবিতায় কবি অস্ত্রের বিরুদ্ধে গানকেই প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মানবীয় ভাষা বলে মনে করেছেন। অস্ত্র মানুষের হিংসা, বিদ্বেষ, ক্ষমতা ও যুদ্ধবৃত্তির বাহক। তাই অস্ত্র কখনোই মানবসভ্যতার প্রগতির সূচক হতে পারে না। এমনকি অস্ত্র যেন সভ্যতার নিয়ামকও না হয়ে ওঠে। কারণ অস্ত্র শুধু মানুষের মনে ভয়কে জাগ্রত রাখে। মানুষের শুভবুদ্ধির মৃত্যু ঘটায়, দানববৃত্তিকে চরমতা দান করে। তাই কবি অস্ত্রের বিরুদ্ধে গানকে নিয়ে এসেছেন কবিতায় শুধু নয়, সমাজভাবনায় ও মানবসভ্যতার উন্নতিকল্পে। গান মানুষের হৃদয়বৃত্তির প্রকাশ, গান মানুষের যৌথতার ধারক। শুদ্ধ–শুচি ঋষিবালকের মতো নিষ্কলুষ, সৃজনশীল গানের জাগরণের মধ্য দিয়েই কলুষময় অস্ত্রের ঔদ্ধত্যের চিরতরে বিনাশ ঘটানো সম্ভব হবে। গানের হাত ধরেই এক সজীবতার সুরময় প্রকাশ মানবসভ্যতার নতুন পথের দিশা খুঁজতে খুঁজতে দেশ, গাঁয়ে ও নদীতে পাড়ি জমাবে। আসলে দেশ, গাঁ বা নদী কোনো নির্দিষ্ট জায়গা নয়, যেখানেই অস্ত্রে রাঙানো ক্ষমতার দত্ত, সেখানেই গানের স্নিগ্ধতা ও শান্তি নিয়ে হাজির হবে মানুষের হৃদয়ে ঘুমিয়ে থাকা বিবেক।
প্রশ্নঃ 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতায় কবি অস্ত্র ফেলতে বলেছেন কেন? অস্ত্র পায়ে রাখার মর্মার্থ কী?
উত্তরঃ বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে জয় গোস্বামীর 'অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান' কবিতাটি সময়ের এক আশ্চর্য দলিল। হিংস্রতায় পরিপূর্ণ এই পৃথিবীতে অস্ত্রের পিছনে দেদার অর্থ খরচ হচ্ছে, কিন্তু অন্যদিকে নিরন্ন ও কর্মহীন মানুষের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই অঙ্গ ফেলতে বলার কারণ চলেছে। সামাজিক বৈষম্য বাড়ছে ক্রমাগত। সমরাক্সে সজ্জিত দেশগুলি নিজেদের প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য একতা, সৌভ্রাতৃত্ব ও মানবিকতার মতো চিরস্তন মূল্যবোধগুলিকে ধ্বংস করতে উদ্যত। অস্ত্রের ব্যবহারে মানুষের মনুষ্যত্ব–বিরোধী মঙ্গল কামনায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার নেতিবাচক দিকের চরমতম প্রকাশ ঘটে। তাই তাকে বিসর্জন দেওয়াই উচিত। এজন্যেই বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ কবি অস্ত্র ত্যাগ করে মানবজাতির মঙ্গল কামনায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
অস্ত্র কোনোদিন সভ্যতার নিয়ামক হতে পারে না। সে মানুষের হিংস্রতা, প্রভুত্ব ও ভীতি প্রদর্শনের হাতিয়ার রূপে প্রতিপন্ন হয়। তাই কবির কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলা যায় যে অস্ত্র নয়, শস্ত্র নয়, রক্ত নয়, জয়ী হোক গান, জয়ী হোক সম্মিলিত মানব, জয়ী হোক মানবতা। আর এই মানবতার উন্মেষ ঘটাতে, শুভ বুদ্ধির উদয় ঘটাতে, কবি মনে করেন, সর্বপ্রথম অস্ত্রকে ত্যাগ করতে হবে। নিজের বিবেকবোধের চরণে উদ্ধৃত অস্ত্রকে সমর্পণ করতে হবে। এই অস্ত্র পায়ে রাখার অর্থ অস্ত্র ত্যাগ ও বিসর্জন। কবির মতে, এই ত্যাগের মধ্য দিয়েই মানুষ তার নেতিবাচক প্রবৃত্তিকে অবদমন করতে পারবে।
Madhyamik Bengali Suggestion 2024
Madhyamik Bengali suggestion 2024 pdf. Madhyamik Bengali suggestion 2024 pdf download. Madhyamik Bengali question 2024. Madhyamik Bengali. Madhyamik Bengali meaning. Madhyamik Bengali syllabus 2024. Madhyamik Bengali syllabus 2024. Madhyamik Bengali syllabus. Madhyamik Bengali question 2024.
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান জয় গোস্বামী মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন প্রশ্ন ও উত্তর
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর. অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতা আবৃত্তি. অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার ব্যাখ্যা. গান বাধবে সহজ উপায় কে গান বাঁধবে. জয় গোস্বামী কবিতার আলোচনা. মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন উত্তর 2024.
Madhyamik Suggestion 2024 pdf Free download
মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf. উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024 PDF. বাংলা ব্যাকরণ সাজেশন. উচ্চ মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024. মাধ্যমিক বাংলা কারক. মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান সাজেশন 2024. পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্ন উত্তর ও শেষ মুহূর্তের সাজেশন ডাউনলোড. মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য সমস্ত রকম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024 mcq. মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন 2024. মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্ন উত্তর 2024. 2024 এর মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্ন বাংলা.
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার প্রশ্ন উত্তর pdf
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর. অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতা আবৃত্তি. অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার ব্যাখ্যা. অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতা pdf. অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতা lyrics. গান বাধবে সহজ উপায় কে গান বাঁধবে. জয় গোস্বামী কবিতার আলোচনা. অদল বদল গল্পের প্রশ্ন উত্তর.
মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf
Madhyamik suggestion 2024 pdf. Madhyamik suggestion 2024 pdf download. Madhyamik suggestion 2024 pdf free download. ক্লাস 10 বাংলা প্রশ্ন উত্তর 2024. ক্লাস টেনের বাংলা সাজেশন. মাধ্যমিক সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক পরীক্ষার সাজেশন 2024 বাংলা. উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024. মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024 PDF. বাংলা ব্যাকরণ সাজেশন.
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার প্রশ্ন উত্তর 2024
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর. অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতা আবৃত্তি. অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতার বিষয়বস্তু. গান বাধবে সহজ উপায় কে গান বাঁধবে. জয় গোস্বামী কবিতার আলোচনা.
WBBSE Madhyamik bengali suggestion 2024
WBBSE Madhyamik Bengali suggestion 2024 pdf download. Madhyamik Question Paper Bengali. WBBSE Madhyamik Bengali suggestion 2024 pdf download in Bengali. WBBSE Madhyamik Bengali suggestion 2024 download pdf. West Bengal Madhyamik Bengali Suggestion 2024 Download. WBBSE Madhyamik Bengali short question suggestion 2024. Madhyamik Bengali Suggestion 2024 download. WB Madhyamik 2024 Bengali suggestion and important questions. Madhyamik Suggestion 2024 pdf.
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান বড় প্রশ্ন উত্তর
অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতা আবৃত্তি. অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান কবিতা pdf. গান বাধবে সহজ উপায় কে গান বাঁধবে. একাকারে কবিতার প্রশ্ন উত্তর. অসুখী একজন কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর. সিন্ধুতীরে কবিতার প্রশ্ন উত্তর. জয় গোস্বামী কবিতার আলোচনা.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ