মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক
নবম শ্রেণি
ইতিহাস
পূর্ণমান ঃ ২০
১। সত্য বা মিথ্যা নির্ণয় করো ঃ
Download Model Activity Task 2022 Apps
(ক) নেপালিয়ন ফ্রান্সে 'কনসুলেট' শাসনের অবসান ঘটান।
উত্তরঃ মিথ্যা
(খ) নেপোলিয়নের আইন সংহিতায় ২২৮৭ টি বিধি বা ধারা ছিল।
উত্তরঃ সত্য
(গ) জার্মানিতে সিসঅ্যালপাইন প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা হয়।
উত্তরঃ মিথ্যা
(ঘ) ইতালির ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলিকে নিয়ে নেপোলিয়ন 'রাইন রাষ্ট্রসংঘ' গঠন করেন।
উত্তরঃ মিথ্যা
২। স্তম্ভ মেলাও ঃ
উত্তরঃ
Download Model Activity Task 2022 Apps
৩। দুই-তিনটি বাক্যে উত্তর দাও ঃ
(ক) লিপজিগের যুদ্ধ কেন 'জাতিসমূহের যুদ্ধ' নামে পরিচিত?
উত্তরঃ নেপোলিয়নের ক্ষমতাকে বিধ্বস্ত করতে ইংল্যান্ড, রাশিয়া, অস্ট্রিয়া, প্রাশিয়া ও সুইডেন 'চতুর্থ শক্তিজোট' গড়ে তোলে। ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে 'চতুর্থ শক্তিজোট' একত্রে নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে লিপজিগেরে যুদ্ধ অংশগ্রহণ করে। ফ্রান্স চতুর্দিক থেকে আক্রান্ত হয়। একটানা যুদ্ধে নেপোলিয়নের সাম্রাজ্য ছারখার হয়ে যায়। এই লিপজিগএর যুদ্ধে ইউরোপের তেরোটি জাতি একত্রে নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল বলে এই যুদ্ধ 'জাতিসমূহের যুদ্ধ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে।
(খ) শতদিবসের রাজত্ব বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ 1817 খ্রিস্টাব্দে লাইপজিগের যুদ্ধে নেপোলিয়ন মিত্রশক্তির নিকট চূড়ান্তভাবে পরাজিত হন। 1814 খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে মিত্রশক্তির সঙ্গে তিনি ফন্টেন ব্ল্যু স্বাক্ষরে বাধ্য হন এবং ভূমধ্যসাগরের এলবা দ্বীপে নির্বাসন কাটিয়ে তিনি ফ্রান্সে ফিরে আসেন এবং রাজা অষ্টাদশ লুই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। নেপোলিয়ন 1815 খ্রিস্টাব্দে মার্চ মাস থেকে ওই বছরের জুন মাসে ওয়াটারলুর যুদ্ধে পরাজিত ও সেন্ট হেলেনা দ্বীপে নির্বাসিত হয় মধ্যবর্তীকালে প্রায় 100 দিন শাসন করেছিলেন। এই সময় কালকে ফ্রান্সের ইতিহাসে শত দিবসের রাজত্ব বলা হয়ে থাকে।
৪। সাত-আটটি বাক্যে উত্তর দাও ঃ
(ক) মহাদেশীয় ব্যবস্থা নেপোলিয়নের পতনের জন্য কতখানি দায়ী?
উত্তরঃ যুদ্ধে অপরাজেয় ইংল্যান্ডকে অর্থনৈতিকভাবে পর্যুদস্ত করার জন্য নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ইউরোপের বন্দরগুলিতে ইংল্যান্ডের পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করে দেন। এইভাবে ইউরোপ মহাদেশের বন্দরগুলিতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ জারি করা হয় তা মহাদেশীয় অবরোধ ব্যবস্থা নামে পরিচিত।
(১) তীব্র অর্থনৈতিক সংকট ঃ ইংল্যান্ডকে জব্দ করতে গিয়ে নেপোলিয়ন নিজের দেশ ফ্রান্সে তীব্র অর্থনৈতিক হাহাকার সৃষ্টি করে। ইংল্যান্ডজাত দ্রব্য ছিল সস্তা, তাই এই দ্রব্য আসা বন্ধ হলে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি ঘটে। ফ্রান্সের মানুষ নেপোলিয়নের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে ওঠে। নিজ দেশে তিনি জনপ্রিয়তা হারান।
(২) স্পেনীয় ক্ষতি ঃ নেপোলিয়ন বিশ্বাস করেছিলেন তার প্রধান শত্রু ইংল্যান্ডকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে তার বন্ধুদেশগুলি তাকে সমর্থন করবে। কিন্তু তা হয়নি। পর্তুগাল মহাদেশীয় ব্যবস্থা মানতে অস্বীকার করে। নেপোলিয়ন জোরপূর্বক এই ব্যবস্থা চাপিয়ে দিলে স্পেন ও পর্তুগালের সাথে ফ্রান্সের যুদ্ধ বেঁধে যায়। এতে নেপোলিয়ন পরাজিত হয় এবং তার বহু শক্তি ক্ষয় হয়।
(৩) রাশিয়া আক্রমণ ঃ রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার নিজেদের স্বার্থে মহাদেশীয় প্রথা মানতে অস্বীকার করে। নেপোলিয়ন রুষ্ট হয় এবং রাশিয়া আক্রমণ করে। এই ভুল সিদ্ধান্তে নেপোলিয়নের পতন অনিবার্য হয়। রাশিয়ার কাছে নেপোলিয়নের 'গ্র্যান্ড আর্মি' ধ্বংস হয়ে যায়।
(৪) নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঃ এই ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে গিয়ে নেপোলিয়ন ইউরোপের উপকূল অঞ্চলের প্রায় ২০০০ মাইল এলাকা জয়ের চেষ্টা করেন। এতে একদিকে যেমন তার সৈন্য বাহিনীর ওপর চাপ পড়ে তেমনি দেশে দেশে তার বিরুদ্ধ বিদ্রোহ শুরু হয়। রোম এবং হল্যান্ডের শাসকদের সিংহাসনচ্যুত করলে ক্যাথলিক সম্প্রদায় তার প্রতি ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে।
(খ) ফরাসি বিপ্লবের আদর্শগুলির সঙ্গে নেপোলিয়নের সাম্রাজ্যিক কার্যকলাপের সম্পর্ক আলোচনা করো।
উত্তরঃ ফরাসি শাসক নেপোলিয়ান শুধু সমরকুশলী যোদ্ধা হিসেবে নয়, সুদক্ষ সংস্কারক হিসেবেও কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন সংস্কারের মাধ্যমে তার সাম্রাজ্যের পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করেছিলেন।
নেপোলিয়নের সংস্কারঃ -
নেপোলিয়নের প্রধান সংস্কার গুলি হল -
(এক) শাসনতান্ত্রিক সংস্কার: নেপোলিয়ান ফ্রান্সে আইনের শাসন প্রবর্তন করেন এবং জনগণের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা দেন। সমগ্র দেশকে 83 টি ডিপার্টমেন্ট বা প্রদেশে বিভক্ত করে সেখানে প্রিফেক্ট নামে শাসক নিয়োগ করেন। তিনি প্রদেশ গুলিতে বিভিন্ন জেলায় বিভক্ত করে সেখানে সাব-প্রিফেক্ট নামে শাসক নিয়োগ করেন।
(দুই) শিক্ষা সংস্কার: নেপোলিয়ন বেশ কিছু মাধ্যমিক ফলিত, বিজ্ঞান, কারিগরি, আইন, শিক্ষক, শিক্ষণ, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তাছাড়াও ‘ইউনিভার্সিটি অফ ফ্রান্স’ প্রতিষ্ঠা করেন।
(তিন) অর্থনৈতিক সংস্কার: দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কট দূর করার উদ্দেশ্যে নেপোলিয়ন বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন। তিনি সরকারি ব্যয় হ্রাস ও অডিট প্রথা চালু করেন, তাছাড়া সবাইকে আয়কর প্রদানে বাধ্য করেন। আর ব্যবসা-বাণিজ্যে উন্নতির জন্য ‘ব্যাংক অফ ফ্রান্স’ প্রতিষ্ঠা করেন।
(চার) ধর্মীয় সংস্কার: নেপোলিয়ন সপ্তম পায়াসের সঙ্গে কনকর্ডাটা বা ধর্ম মীমাংসা চুক্তি স্বাক্ষর করে পোপের সঙ্গে বিরোধ মিটিয়ে নেন। এই চুক্তি অনুসারে - (১) পোপ ফরাসি গির্জা ও সম্পত্তির জাতীয়করণ মেনে নেন। (২) তাছাড়াও স্থির হয় যে সরকার যাজকদের নিয়োগ করবে এবং পোপ তাদের স্বীকৃতি দেবে।
(পাঁচ) আইন বিষয়ক সংস্কার: নেপোলিয়ন বিভিন্ন প্রদেশের প্রচলিত বিভিন্ন ধরনের আইন গুলোর মধ্যে সামঞ্জস্য আনতে 1804 খ্রিস্টাব্দে 2287 টি বিধি সম্বলিত ‘কোড নেপোলিয়ন’ নামে একটি আইন প্রবর্তন করেন। এর প্রধান দিক গুলি ছিল - (১) সামন্ততন্ত্র বিলুপ্তি (২) ব্যক্তি স্বাধীনতা ও সম্পত্তির অধিকারের স্বীকৃতি, (৩) আইনের দৃষ্টিতে সাম্য, (৪) ধর্মীয় সহনশীলতা, (৫) সরকারি চাকরিতে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ।
নেপোলিয়নের সংস্কার কার্যাবলীর দ্বারা বিপ্লব বিধ্বস্ত ফ্রান্সে শান্তি ও সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনেন। ঐতিহাসিক ডেভিড টমসন বলেছেন যে, নেপোলিয়নের শাসন শুধু প্রজাহিতৈষী ছিল না, তা -''বর্তমান কালের একনায়কতন্ত্রের তুলনায় অনেক বেশি মানবিক ছিল।''
অন্যান্য মডেল অ্যাক্টিভিটি পেতে ঃ এইখানে ক্লিক করুন
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ