মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক
বাংলা (প্রথম ভাষা)
দশম শ্রেণি
পর্ব ৫
১. কম-বেশি ২০টি শব্দের মধ্যে উত্তর লেখো :
১.১ 'গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা।" - হরিদা কোন্ গল্প শুনেছেন?
উত্তরঃ গল্প শুনে হরিদা গম্ভীর হয়ে অনেকক্ষণ চুপ করে থাকেন। গল্পকথক ও বন্ধুরা কে, কী বলছে না-বলছে, সেদিকে তাঁর খেয়াল ছিল না।
১.২ 'বিদায় এবে দেহ, বিধমুখী।' - উদ্ধৃতাংশে 'বিধমুখী' কে?
উত্তরঃ আলোচ্য উদ্ধৃতির উৎস কবি মধুসূদন রচিত 'মেঘনাদবধ কাব্য' এর অন্তর্গত 'অভিষেক' কাব্যাংশ। স্বর্ণলঙ্কার যুবরাজ, মহাবীর মেঘনাদ পত্নী প্রমীলাকে 'বিধমুখী' বলে সম্বোধন করেছেন।
১.৩ 'মাভৈ: মাভৈ:' - এমন উচ্চারণের কারণ কী?
উত্তরঃ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম 'প্রয়োল্লাস' কবিতায় "প্রলয়োল্লাস" কবিতায় মাভৈঃ মাভৈঃ বলে অভয়বাণী দিয়েছেন। তিনি বলেছেন প্রলয় আসছে দেখে ভয় পেলে চলবে না। কারণ, প্রলয়ের এই ধ্বংসাত্মক রূপের আড়ালেই আছে নবসৃষ্টির বীজ। এই জগৎজোড়া প্রলয় এলেই জরায় মৃতবৎ মানুষদের লুকানো প্রাণের বিনাশ হবে এবং মহানিশার শেষে নতুন সূর্য উঠবে, যা ভারতের ভাগ্যাকাশে মুক্তির প্রতীক রূপে দেখা দেবে।
১.৪ '... দুজন বন্ধু নোক আসার কথা ছিল,' - বন্ধুদের কোথা থেকে আসার কথা ছিল?
উত্তরঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পথের দাবী গল্পে উল্লেখিত অংশে উদ্ধৃত লাইনটি আমরা দেখতে পাই। বন্ধুদের এনাঞ্জাং থেকে আসার কথা ছিল।
২. প্রসঙ্গ নির্দেশসহ কম-বেশি ৬০টি শব্দের মধ্যে উত্তর লেখো :
২.১ 'অ্যাঁ,? ওটা কি একটা বহুরূপী?'
- প্রশ্নটি কাদের মনে জেগেছে? তাদের মনে এমন প্রশ্ন জেগেছে কেন?
উত্তরঃ প্রশ্নে উল্লেখিত প্রশ্নটি বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা বাসের মধ্যে যাত্রীদের মনে জেগেছে।
একদিন চকের বাস স্ট্যান্ডের কাছে দেখা গেল এক বদ্ধ পাগল ঘুরছে - তার মুখ থেকে লালা ঝরে পড়ছে, চোখদুটি কটকটে লালা। পাগলটি একটি থান ইট হাতে তুলে বাসের ওপরে বসা যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছে। পাগলটিকে দেখে বাসের ড্রাইভার কাশীনাথ ধমক দিয়ে সরে যেতে বলে। এটি শুনে যাত্রীরা বুঝতে পারে, লোকটি বহুরূপী। এসময় সবাই প্রশ্নের উদ্ধৃত কথাটি বলে তার নিখুঁত বহুরূপী সাজের ও অভিনয়ের প্রশংসা করে।
২.২ 'নাদিলা কর্বূরদল হেরি বীরবরে মহাগর্বে।' - 'কর্বূরদল' শব্দের অর্থ কী? উদ্ধৃতাংশে 'বীরবর' কোথায় উপনীত হলে এমনটি ঘটেছে?
উত্তরঃ কর্বূরদল - এর পরিচয় লঙ্কার রাক্ষসবাহিনীর কথা বলা হয়েছে।
পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে লঙ্কেশ্বর রাবণ যুদ্ধের সাজে সেজেছেন। তার সৈন্যবাহিনীও যুদ্ধের উন্মাদনায় মেতে উঠেছে। সেই সময় সহোদর বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ শুনে ইন্দ্রজিৎ সেখানে আসেন। ইন্দ্রজিৎকে দেখে সৈন্যরা উল্লসিত হয়। কারণ ইন্দ্রজিতের রণকৌশল এবং বীরত্ব সম্প্রর্কে তারা অবহিত। স্বয়ং দেবরাজ ইন্দ্রকে তিনি পরাজিত করেছেন। লঙ্কার শ্রেষ্ঠতম যোদ্ধা তিনি। তাই তাকে পেয়ে বসবাহিনী ভরসা পেয়েছে এবং উৎসাহ ও গর্ববোধ করেছে।
২.৩ 'তোরা সব জয়ধ্বনি কর।' - কার জয়ধ্বনি করতে কবির এই আহ্বান? কেন তার 'জয়ধ্বনি' করতে হবে?
উত্তরঃ প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিটি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা "অগ্নিবীনা" কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত 'প্রলয়োল্লাস' কবিতা থেকে গৃহীত।
আলোচ্য উক্তিটিতে কবি সাধারণ দেশবাসীকে জয়ধ্বনি করতে বলেছেন। তিনি কল্পনা করেছেন, কালবৈশাখীরূপী তরুণের দল সমাজ থেকে অন্যায়, অবচার ও বৈষম্য দূর করতে অচিরেই আবির্ভূত হবে। সমস্ত পাপাচার সমাজ থেকে মুছে যাবে, ধুয়ে যাবে যাবতীয় অসুন্দর। তাই 'নূতনের কেতন' ওড়ানো 'কালবোশেখির ঝড়' আসন্ন দেখে তাকে যথাযথভাবে বরণ করে নেওয়ার জন্য সকলকে জয়ধ্বনি করতে বলেছেন।
২.৪ 'কিন্তু ইহা যে কতোবড়ো ভ্রম...' - কোন্ ভ্রমের কথা এক্ষেত্রে বলা হয়েছে?
উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশটি প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত "পথের দাবী" গল্প থেকে গৃহীত হয়েছে।
ভামো যাওয়ার সময় অপূর্ব ট্রেনের ফাস্ট ক্লাস প্যাসেঞ্জারের টিকিট কিনেছিল। ট্রেনের মধ্যে রাত্রের খাওয়া শেষ করে সে পরিতৃপ্ত মনে ঘুমাতে ঘুমাতে গিয়েছিল। অপূর্বর মনে ভরসা ছিল - সে ফাস্ট ক্লাস প্যাসেঞ্জার তাই রাত্রে তার শান্তির ঘুমে হয়তো কোনভাবেই ব্যাঘাত পড়বে না। কিন্তু সেই রাতেই পুলিশের লোক তিনবার ঘুমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছিল। ঘুম ভাঙিয়ে পুলিশের লোক তার নাম ধাম ঠিকানা বারবার জানতে চেয়েছিল। সেই রাত্রে ট্রেনের মধ্যে তার শান্তির ঘুম হয়নি। অর্থাৎ অপূর্ব ট্রেনের মধ্যে যে সুন্দর, শান্তির ঘুমের আশা করেছিল সেটাই ছিল অত্যন্ত ভ্রম বা ভুল।
৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
৩.১ 'বড়ো' চমৎকার আজকে এই সন্ধ্যার চেহারা।' - 'বহুরূপী' গল্প অনুসরণে উক্ত সন্ধ্যার দৃশ্য বর্ণনা করো।
উত্তরঃউদ্ধৃতাংশটি সুবোধ ঘোষের 'বহুরূপী' গল্প থেকে গৃহীত। উদ্দিষ্ট প্রসঙ্গে একটি বিশেষ দিনের সন্ধ্যার কথা বলা হয়েছে। হরিদা যেদিন সন্ধেবেলা বিরাগীর ছদ্মবেশে জগদীশবাবুর বাড়ি গিয়েছিলেন সেদিন চতুর্দিক চাঁদের আলোয় ভরে উঠেছিল এবং চারপাশে এক স্নিগ্ধ ও শান্ত ঔজ্জ্বল্য সকলকে মোহিত করেছিল। ফুরফুর করে বাতাস বইছিল, যে বাতাসে জগদীশবাবুর বাড়ির বাগানের সব গাছের পাতাও ঝিরিঝিরি শব্দে ব্যাঙ্গময় হয়ে উঠছিল। অর্থাৎ, সন্ধ্যার এক মনোহর ও কমনীয় ছবি গল্পের আলোচ্য প্রসঙ্গে ফুটে উঠেছে।
৩.২ 'ছিঁড়িলা কুসুমদাম রোষে মহাবলী' - 'মহাবলী' কে? তিনি রুষ্ট কেন?
উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশটি মাইকেল মধুসূধন দত্ত রচিত "অভিষেক" নামে কাব্যাংশ থেকে গৃহীত হয়েছে।
এখানে 'মহাবলী' হলেন ত্রিভুবনজয়ী বীরশ্রেষ্ঠ মেঘনাদ তথা রাবণ পুত্র ইন্দ্রজিৎ।
মেঘনাদ যখন প্রমোদকাননে বিলাসকলায় মগ্ন তখন দাইমা প্রভাসার ছদ্মবেশ ধরে দেবীলক্ষ্মী তার সম্মুখে হাজির হয়। দেবী লক্ষ্মী ইন্দ্রজিৎকে জানায় - বীর চূড়ামণি বীরবাহু রামচন্দ্রের হাতে নিহত, রামের সৈন্যরা লঙ্কাপুরী ঘিরে ফেলেছে আর পিতা রাবণ যুদ্ধে যেতে প্রস্তুত হচ্ছেন। যে রামচন্দ্রকে গত সন্ধ্যায় হত্যা করে এসেছে তার দ্বারা ভাইয়ের মৃত্যু, দেবীর মুখে এই অদ্ভুত বার্তা শুনে ইন্দ্রজিৎ চমকে ওঠে। শত্রুসৈন্য লঙ্কা ঘিরে ফেলেছে, সে বীরশ্রেষ্ঠ হয়ে নারীদের সাথে বিলাসকলায় রত, এটা ভেবেই ইন্দ্রজিতের মনে ধিক্কার বোধ জন্মায়। সে নিজের এই কাপুরুষোচিত আচরণের জন্য অত্যন্ত রুষ্ট, ক্রোধান্বিত হয়ে ওঠে। অত্যন্ত ক্রোধে ইন্দ্রজিৎ তার অঙ্গের সমস্ত সাজসজ্জা ছুড়ে ফেলে দেয়।
৩.৩ 'প্রলয় বয়েও আসছে হেসে - মধুর হেসে।' - কে আসছেন? তার হাসির কারণ বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ 'বিদ্রোহী কবি' কাজী নজরুল ইসলাম 'প্রলয়োল্লাস' নামক কবিতায় মহাকালের প্রলয় বয়ে নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তার মধুর হাসির প্রসঙ্গটি এনেছেন। কারণ, এই প্রলয়রূপী নবীন আসছে জীবনহারা অসুন্দরকে ছেদন করে সুন্দরের প্রতিষ্ঠা করতে। তার মধুর হাসি তাই নতুন সৃজনের আকাঙ্ক্ষা ও আনন্দের প্রকাশ।
কবিতার প্রথমেই কবি ঘোষণা করেন - "ওই নূতনের কেতন ওড়ে কালবোশেখির ঝড়।" এখানে 'নূতন' অর্থে নবীন প্রাণ, নতুন দিন - মুক্তি লাভের আশ্বাস। এর জন্য পুরোনো জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসা শাসন তথা শোষণের ইমারত ধ্বংস করা প্রয়োজন। তাই কালবৈশাখীর মতো ভয়ংকরের আগমন একান্ত জরুরি। এই ভয়ংকর প্রলয়-নেশার নৃত্যে পাগল হয়ে সিন্ধুপারের সিংহদ্বার ভেঙে দিয়ে, মহাকাল চন্ডরূপে, বজ্রের শিখার মশাল জ্বেলে এগিয়ে আসছে এই পৃথিবীর জরাজীর্ণতাকে প্রাচীনত্বকে ধ্বংস করার জন্য।
এই ভয়ংকর প্রলয়ের জন্য কবির এতটুকু দুঃখ নেই। কারণ, এই প্রলয় নতুন দিনের বার্তাবাহী। তাই কবি ভয়ংকর কালবৈশাখীর আগমন কামনা করে, তার বীভৎসতা কল্পনা করে কবিতায় বর্ণনা করেছেন। প্রলয়ের রূপে বীভৎসতা থাকলেও মুখে লেগে থাকে মধুর হাসি। কারণ, এই প্রলয়ংকরী কালবৈশাখী চিরসুন্দরকে গড়তে জানে। ঘরে ঘরে প্রলয়কে স্বাগত জানানোর জন্য সমস্ত বধূদের তাই কবি প্রদীপ তুলে ধরা নির্দেশ দিতে চান। এই প্রদীপ মঙ্গলের প্রতীক, শুভ কল্যাণকামনার প্রতীক। এইভাবে কবির উল্লাসটি সমগ্র কবিতা জুড়ে ব্যক্ত হয়েছে।
৩.৪ 'বাবুজি, এসব কথা বলার দুঃখ আছে।' - বক্তা কে? কোন্ কথার পরিপ্রেক্ষিতে সে একথা বলেছ?
উত্তরঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত 'পথের দাবী' পাঠ্যাংশে উদ্ধৃত মন্তব্যটির বক্তা অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর।
'পোলিটিকাল সাসপেক্ট' সব্যসাচী মল্লিককে গ্রেফতার করতে গিয়ে ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্রকে নিয়ে মহা হুঁশিয়ার পুলিশের দলকে নির্বোধ ও আহাম্মক হতে দেখার কথা যখন অপূর্ব বর্ণনা করছিল তখন রামদাস জানতে চায় "তারা কি আপনাদের বাংলাদেশের পুলিশ?" উত্তরে অপূর্ব সায় দিয়ে বলে, তার লজ্জা হয় এই ভেবে যে, পুলিশের বড়োকর্তা তার আত্মীয় এবং পিতৃবন্ধু। তার বাবাই একদিন এঁর চাকরি করে দিয়েছিলেন।
মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ার রামদাস মুখ ফসকে বলে ফেলে একদিন এর জন্যই হয়তো অপূর্বকে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। এই কথা বলে সে নিজের অপ্রতিভ হয়ে চুপ করে যায়। অপূর্ব তার অর্থ বুঝতে পেরে বলে, পুলিশ কর্তা তার শুভাকাঙ্ক্ষী বা আত্মীয় হলেও তিনি দেশের চাইতে আপন নন, বরং যাঁকে গেফতার করার জন্য তারা উদ্গ্রীব, সেই স্বাধীনতা সংগ্রামীকে সে অনেক বেশি আপনজন বলে মনে করে। এ কথার প্রসঙ্গে রামদাস আলোচ্য উক্তিটি করেছিল।
ইংরেজ সরকার রাজবিদ্রোহীদের প্রতি কঠোর মনোভাব পোষণ করত। সেই কারণেই বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিককে ধরার জন্য সুদূর বাংলা মুলুক থেকে বর্মায় তারা পুলিশের বিশেষ দল পাঠিয়েছিল। এ ছাড়া ট্রেনযাত্রার সময় রাতভর পুলিশের নজরদারি ইত্যাদির মধ্যদিয়ে বোঝা যায়, ইংরেজ সরকার রাজ বিদ্রোহীদের দমন করতে কতটা তৎপর ছিল। বিপ্লবীদের গ্রেফতারের পর নানা ধরনের অত্যাচার ও দমননীতি প্রয়োগ করা হয় - এ কথা সেদিন সমস্ত ভারতীয়ের মতো রামদাসও জানত। তাই অপূর্বর মুখে দেশভক্তির সোচ্চার ঘোষণায় সে তাকে বন্ধু হিসেবে সতর্ক করে দিতে চেয়েছিল।
৪. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
৪.১ 'এজন্য চরিত্র চাই, গোঁইয়ার রোখ্ চাই'। - ক্ষিতীশ সিংহ কীভাবে কোনির 'চরিত্র' এবং 'গোয়ার রোখ্' তৈরিতে সচেষ্ট হয়েছিলেন?
উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটি প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক মতি নন্দী রচিত 'কোণি' উপন্যাস থেকে গৃহীত হয়েছে।
একজন সাধারণ নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে হয়ে কোণির ভারত সেরা সাঁতারু হয়ে ওঠার পিছনে প্রধান কান্ডারী ছিলেন শিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ। চরিত্র নির্মাণ থেকে শুরু করে মনোবল নির্মাণ পর্যন্ত কোনির জীবনের সর্বস্তরে ক্ষিতীশ সিঙ্ঘের আবদান ছিল অবিস্মরনীয়।
গঙ্গার ঘাটে কোনিকে দেখামাত্রই কোচ ক্ষিতীশ সিঙ্ঘের চোখে এক নতুন প্রতিভা ধরা পড়েছিল। তারপর আলাপ হতেই ক্ষিতীশ বুঝেছিল এরমধ্যে প্রতিভা রয়েছে কিন্তু অভাবের তাড়নায় নেই শৃঙ্খলা বোধ। তাই ক্ষিতীশ - "আকাশ থেকে আগুন ঝরলেও কোনির চলা যাতে না থামে" তার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল কোনির চরিত্রে শৃঙ্খলা আনতে -
প্রথমেই কঠোর অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছিলেন কোনির জন্য। সকাল সাড়ে ছটা থেকে আটটা পর্যন্ত একটা ছকে বেঁধেছিলেন কোনির সাঁতার শেখার সময়কে।
ডিম, কলা, রুটি প্রভৃতি খাবারের লোভ দেখিয়ে কোনিকে ঘন্টার পর ঘন্টা অমানুষিক পরিশ্রম করিয়েছিলেন। ক্ষিতীশ জানতেন খাবারের লোভ দেখিয়ে। পরিশ্রম করানো এবং তা না দেওয়া অন্যায়। কিন্তু সময় আর যন্ত্রণা এই দুটোর মূল্য শেখানোর জন্য এই ব্যবস্থা তিনি করেছিলেন।
ক্ষিতীশ পিতৃস্নেহ, পিতৃশাসন দুই প্রদান করেছিলেন কোনিকে। পরিশ্রমে ক্লান্ত কোনি ঘুমিয়ে গেলে তিনি পিতার মতোই স্নেহে দিতেন। আবার সাঁতার শেখার সময় অমনোযোগিতার লক্ষ করলে তিনি কঠোর শাসন করতেন।
অভিভাবকের মতই ক্ষিতীশ কোনির থাকা - খাওয়া, কাজের ব্যবস্থা করেছিলেন। যাতে সে দুবেলা খেতে পারে। স্বপ্নকে আরো সুষ্ঠু করতে পারে।
ক্ষিতীশ লক্ষ্য করেছিলেন কোনির প্রতিভা আছে, স্বপ্ন আছে কিন্তু নেই জেদ। তাই বিভিন্ন উপায়ে ক্ষিতীশ কোণির মনে আগুন জ্বেলে ছিলেন যাতে যে - কোনো বাধা অতিক্রম করে কোনো কিছুকে পাওয়ার তীব্র জেদ তৈরি হয়।
ক্ষিতীশ দারিদ্রতার কাছে পদে-পদে হেরে যাওয়ার আক্রোশ কোণিকে বুকের মধ্যে পুষে রাখার কথা বারবার শুনিয়েছিলেন।
ক্ষিতীশ বারবার কোনির সামনে অন্যান্য সাঁতারুর তুলনা রেখেছিলেন। যাতে অপরকে হারানোর একটা জেদ তৈরি হয় কোনির মনে।
কণির জীবনে পাওয়া অপমানগুলিকে ক্ষিতীশ বারবার তাকে মনেপরিয়ে দিয়েছিলেন। হিয়া, আমিয়ার অপমানকে সামনে রেখে কোনিকে শিখিয়েছিলেন সমস্ত বঞ্চনা - যন্ত্রণাকে হারিয়ে দেওয়ার মন্ত্র।
কোনির জীবনে প্রত্যেকটা বঞ্চনা প্রতিবন্ধকতাকে ক্ষিতীশ এক-একটা প্রতিশোধের মতো সামনে তুলে ধরেছিলেন। যাতে তার মনে প্রতিশোধের একটা আগুণ তৈরি হয়।
এভাবেই ক্ষিতীশ সিঙ্ঘের দেখানো পথেই কোনির আগোছালো প্রতিভা সুষ্ঠু চারিত্রিক দৃঢ়তার সাথে অসম্ভব এক জেদের মধ্য দিয়ে সর্বসেরা হয়ে উঠেছিল।
৪.২ 'ক্ষিদ্দা, এবার আমরা কী খাব?' - উদ্ধৃতিটির আলোকে কোনির যন্ত্রণাবিদ্ধ জীবনযাত্রার পরিচয় দাও?
উত্তরঃ গঙ্গার ঘাট থেকে মাদ্রাসায় জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় ভিকট্রি স্ট্যান্ড পর্যন্ত কোনির যে যাত্রা ক্ষিদ্দাই কোনির প্রথম ও প্রধান নির্দেশক ও অনুপ্রেরণা। অনুশীলনেরস্ট ব্যবস্থা ক্ষিতীশ সিঙ্ঘ কোনিকে সাঁতারে চ্যাম্পিয়ন করারনোর জন্য। কঠোর অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছিলেন। এই অনুশীলনে সাঁতারের বিভিন্ন কৌশল ক্ষিতীশ কোনিকে শিখিয়েছিলেন। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ছটা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত কোনির প্র্যাকটিস চলত। ছকে বাঁধা জীবন; ক্ষিতীশ কোনির জীবনযাত্রাকে একটা ছকে বেঁধে দিয়েছিলেন। কোনি কখন কী কী খাবে সেই ব্যাপারেও ক্ষিতীশ নিয়ম জারি করেছিলেন। ক্ষিতীশ কোনিকে প্রতদিন দুটো ডিম, দুটো কলা এবং দুটো টোস্ট খাওয়ার কথা ক্ষিতীশ বলেন। এগুলি কোনিকে খেতে দেওয়ার বদলে আরও এক ঘন্টা কোনির জলে থাকতে হবে বলে ক্ষিতীশ জানান। অমানুষিক পরিশ্রম লোভ দেখিয়ে অমানুষিক পরিশ্রম করিয়ে নেওয়া অন্যায় জেনেও যন্ত্রনা আর সময় দুটোকেই হারানোর জন্য ক্ষিতেশ এমনটা করেছিলেন। কোনি টিফিনের বদলে টাকা চাইলে ক্ষিতীশ আর কোনির মধ্যে বোঝাপড়া হয়। ক্ষিতীশ কোনিকে নানা উদাহরণ দিয়ে তাকে উজ্জীবিত করেন। সফলতা অর্জন ক্ষিতীশই দেয়ালে ৭০ লিখে টাঙিয়ে কোনির লক্ষ্যমাত্র ঠিক করে দেন। তার তত্ত্বাবধানে দিনের পর দিন কোনির এই কঠোর অনুশীলনই তাকে সাফল্যের শীর্ষে নিয়ে যায়।
অন্যান্য অ্যাক্টিভিটি টাস্ক পেতে ঃ এইখানে ক্লিক করুন
Other Model Activity Task : Model Activity Task 2022
Tags Line
---------------------------------
model activity task class 10 bengali part 5
class 10 model activity task bengali part 5
bengali class 10 model activity task part 5
part 5 model activity task class 10 bengali
model activity task class 10 bengali part 5 answer
model activity task class 10 bengali part 5 answer pdf
model activity task class 10 bengali part 5 answers
model activity task class 10 bengali part 5 answers pdf
মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক class 10 বাংলা পাট 5
মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক বাংলা দশম শ্রেণি part 5
মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক 2021 Class 10
মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক 2021 class 10 বাংলা পাট 5
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ