মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক
বাংলা
নবম শ্রেণি
নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১. 'কলিঙ্গদেশে ঝড়বৃষ্টি' কাব্যাংশে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ছবি কীভাবে ধরা পড়েছে?
উত্তর : মুকুন্দরাম চক্রবর্তী রচিত চন্ডীমঙ্গল কাব্যের আখেটিক খন্ডের অন্তর্গত কলিঙ্গদেশে ঝড় বৃষ্টি কাব্যাংশে দেখা যায় কলিঙ্গে প্রবল প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে আসে। দেবী তাঁর কৃপাধন্য ব্যাধ কালকেতু নির্মিত গুজরাট নগর বসতি প্রতিষ্ঠার জন্য কলিঙ্গে প্রলয় ঘটান। ফলে সেখানকার প্রজারা গুজরাটে চলে আসেন।
কলিঙ্গের আকাশে ঘন মেঘের সমাবেশ ঘটে। দেবীরা আদেশে হঠাৎই ঈশান কোণে মেঘ জমা হয়। ঘনঘন বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা যায়। দূর দিগন্তে মেঘের গম্ভীর ধ্বনি সঙ্গে শুরু হয় মুষলধারায় বৃষ্টি। সমগ্র কলিঙ্গ মেঘের গম্ভীর আওয়াজে কেঁপে ওঠে। বিপদের আশঙ্কায় প্রজারা ঘর ছেড়ে দ্রুত পালাতে থাকে। ঝড়ের দাপটে শস্য ক্ষেত ও সবুজ গাছপালা নষ্ট হয়ে যায়। আটটি দিক হস্তী যেন বৃষ্টি ধারায় সব ভাসিয়ে নিয়ে যেতে চাই। প্রবল বর্ষণে পথঘাট জলমগ্ন হয়। ঘোর অন্ধকারে দিন-রাতের পার্থক্য মুছে যায়। জলমগ্ন রাস্তায় সাপ ভেসে বেড়াতে থাকে। বিপদ থেকে রক্ষা পেতে ভীত প্রজারা ঋষি জৈমিনিকে স্মরণ করতে থাকে। সাতদিন অবিরাম বর্ষণের ফলে প্লাবিত হয় কৃষিকাজ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় ঘরবাড়ি ও নষ্ট হয়ে যায়। ভাদ্র মাসের তালের মত বড় আকারের শীল ঘরের চাল ভেদ করে পড়তে থাকে। দেবীর আদেশের বীর হনুমান ঝড়ের তান্ডব চালিয়ে মোট অট্টালিকা ধ্বংস করে প্রজাদের আরো বিপদ গ্রস্থ করে তোলেন। সমস্ত নদনদী কলিঙ্গের দিকে ছুটে আসে দেবীর আদেশে। পর্বত তুল্য ঢেউয়ের আঘাতে বাড়িঘর মাটিতে পড়ে যায়। দেবী চণ্ডীর আদেশে সৃষ্ট এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় অসহায়, ভীত প্রজারা বিপদের আশঙ্কায় অবশেষে কলিঙ্গ ত্যাগ করে চলে যায়।
২. 'ধীবর-বৃত্তান্ত' নাট্যাংশে রাজশ্যালকের ভূমিকা নির্দেশ করো।
উত্তর : কালিদাসের লেখা ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যাংশ রাজশ্যালকের সক্রিয়তা ও উপস্থিতি যথেষ্ঠ লক্ষ্য করা যায়।
রাজশ্যালকও ধীবরের পেশা নিয়ে ঠাট্টা করেছিলেন। তবে নগর রক্ষার দায়িত্ব প্রাপ্ত রাজশ্যালককে তুলনায় কিছুটা দায়িত্ববোধ সম্পন্ন মনে হয়েছে। তিনি মহারাজের আদেশের জন্য অপেক্ষা করেছেন কিংবা ধীবরকে তার কথা বলার সুযোগ দিতে চেয়েছেন। রাজশ্যালকে রাজার আদেশ পালন করার জন্য ধীবরকে মুক্তি দিতে বলেছেন। শুধু তাই নয়, ধীবরের পাওয়া আংটিটি যে রাজাকে প্রিয়জনের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে তা বুঝতে পেরে তিনি তার প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখিয়েছেন। তিনি ধীবরকে তার একজন বিশিষ্ট প্রিয় বন্ধু বলেও গ্রহণ করেছেন।
৩. ইলিয়াসের জীবনে কীভাবে বিপর্যয় ঘনিয়ে এসেছিল?
উত্তর : দীর্ঘ ৩৫ বছর কঠোর পরিশ্রম করে ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তির অধিকারী হয়েছিল। তার দুশো ঘোড়া, দেড়শ গরু মোষ, বারোশো ভেড়া ছিল। ভাড়াটে মজুরেরা সেই সব পশুদের দেখাশোনা করে; দুধ দোই মাখন তৈরি করে। ইলিয়াসের প্রচুর প্রভাব তখন প্রতিপত্তিও অনেক। প্রতিবেশীরা তার সাফল্যে ঈর্ষান্বিত। বহুদূর থেকে অতিথিরা আসে। তাদের আপ্যায়ন এর কোন ত্রুটি করেনা ইলিয়াস। এমন একটি পরিস্থিতিতে ইলিয়াসের বড় ছেলে মারা গেলে, ছোট ছেলেটি কাজকর্ম না করে ঝগড়াটে বউ নিয়ে প্রবল অশান্তিতে থাকে। তারা বাবার আদেশ মানতো না। এমন একটি সময়ে ইলিয়াস তাদের বাড়ি থেকে বিতাড়িত করলো। তবে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করলো না। ইলিয়াস তাকে থাকবার জন্য একটা বাড়ি দিল কিছু গরু ঘোড়া ও ছিল। ছেলেকে সম্পত্তির ভাগ করে দেওয়ার কারণেই ইলিয়াসের বিষয় আশয়ে টান পড়েছিল।
ছোট ছেলেকে সম্পত্তি ভাগ করে দেওয়ার পর থেকেই ইলিয়াসের জীবনে বিপর্যয় শুরু হয়। ভেড়ার পালে মোড়ক লেগে যায়। দুর্ভিক্ষে খর পাওয়া যায় না। ফলে শীতকালে অনেক গরু-মোষ না খেয়ে মরে যায়। এরপর কিরবিজরা ইলিয়াসের খুব ভালো ঘোরার গুলিকে চুরি করে। এভাবে ক্রমশই নানাভাবে ইলিয়াসের অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। অবস্থার অবনতি সঙ্গে সঙ্গে ইলিয়াসের শরীরের জোর কমতে থাকে। এইভাবে 70 বছর বয়সেই ইলিয়াস বাধ্য হয় পশমের কোড ঘোড়ার জিন কম্বল তাবু এবং সবশেষে গৃহপালিত পশু গুলোকে বিক্রি করে দেয়। ইলিয়াসের বিতাড়িত পুত্র তখন দেশান্তরী হয়ে গেছে, মেয়েটিও মারা গেছে, বৃদ্ধ দম্পতিকে তখন সাহায্য করব কেউ নেই। তখন বৃদ্ধ ইলিয়াস ও তার স্ত্রী লোকের বাড়িতে ভাড়াটে মজুরের কাজ করে জীবন ধারন করতে থাকে। ক্রমে মোহাম্মদ শাহ নামে এক প্রতিবেশীর ইলিয়াসের দুরবস্থা দেখে আর তার পূর্বের অবস্থা ভেবে করুণা হয়। সে তাদের দুজনকে নিজের বাড়িতে স্বাধীন ভাবে বসবাস করতে বলে। ইলিয়াস ও তার স্ত্রী তারপর থেকে মহাম্মদ সর্কের নিজের প্রভু বলে মনে করে তার কাজ করে। ক্রমে তার সেভাবেই নিজেদের যাবতীয় শক্তি-সামর্থ্য কে নিযুক্ত করে এবং প্রকৃত সুখের সন্ধান পায়।
৪. 'দাম' গল্পে সুকুমার কোন্ উপলব্ধিতে পৌঁছেছে?
উত্তর : নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম গল্পের সুকুমার বরাবর অংকে দুর্বল ছিলেন। সুকুমার এর কাছে ইস্কুলের অঙ্কের মাস্টার মশাই ছিলেন মূর্তিমান বিভীষিকা। মেট্রিকুলেশন এরপর অংক ও মাস্টার মশাইয়ের হাত থেকে রেহাই পেলেন দীর্ঘদিন দুঃস্বপ্নের সেই ভয় সুকুমারকে তাড়া করে ফিরত। পরবর্তীকালে বাংলার অধ্যাপক লেখক সুকুমার একটি অনামী পত্রিকায় মাস্টার মশাই কে নিয়ে তার বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতার স্মৃতিকথা লিখেছিলেন। পত্রিকা কর্তৃপক্ষ তাকে 10 টাকা পারিশ্রমিক দিয়েছিলেন। সুকুমার এর ধারণা ছিল পত্রিকাটি কেউ পড়ে না। বহু বছর পর সেই ভুলটা ভেঙে ছিল যখন তিনি জেলে ছিলেন যে মাস্টারমশাই স্বয়ং লেখাটি পড়েছেন।
সুকুমার এর চরিত্রে সবথেকে বড় বৈশিষ্ট্য হলো তার আত্মবিশ্লেষণ। তিনি যে মাঝারি মাপের লেখক তার বক্তৃতা যে আবেগ সর্বস্ব অন্তঃসারশূন্য অত প্রশংসা সে তার প্রাপ্য নয় সবটাই তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন। বহু বছর পর তার জীবনের বিভীষিকা অঙ্কের মাস্টার মশায়ের সঙ্গে দেখা হতেই তাকে শ্রদ্ধা জানাতে কিন্তু সুকুমারের এতটুকু দেরী হয়নি। আসলে মাস্টারমশাইয়ের প্রতি তার শ্রদ্ধা নিশ্চিত ভয় ছিল কিন্ত ঘৃণা নয়। অঙ্কি মাস্টারমশাইয়ের পাণ্ডিত্য কে সুকুমার মর্যাদার সঙ্গে স্বীকার করেছেন। তিনি মাস্টার মশাই কে ভয় পেয়েছেন কিন্তু অশ্রদ্ধা করিনি।
আবেগ বৃদ্ধ মানুষটি সঙ্গে কথা বলতে বলতে সুকুমার যেন তাকে নতুন করে আবিষ্কার করেন। সুকুমারের কিশোরময় শুধু তার শাসনের ভিত্তিক এই উপলব্ধি করেছিল তার স্নেহের ফল্গুধারাকে অনুভব করতে পারিনি। পৌঢ়ত্বে পৌঁছে বৃদ্ধ মাস্টার মশাই তাকে নিয়ে গর্ব দেখে সুকুমারের সে সব ভুল ভেঙে যায়। তার সব সমালোচককে সরলমতি মাস্টারমশাই উদাহরণে গ্রহণ করেছেন। যে স্নেহ-মমতা ক্ষমার মহাসমুদ্র মাস্টারমশাইয়ের স্মৃতিকে তিনি 10 টাকায় বিক্রি করেছেন সেই মানুষটির অমূল্য স্নেহ তার মাথায় ঝরে পড়েছে - এইভাবে সুকুমার আত্মগ্লানিতে জর্জরিত হন।
৫. 'নোঙর' কবিতায় 'বাণিজ্যতরী' বাঁধা পড়ে থাকার তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
উত্তর : নোঙ্গর কবিতায় কবি অজিত দত্ত যে নৌকায় সাত সাগরের পারে পাড়ে দিতে চান, এখানে সেই নৌকার কথা বলা হয়েছে। এই নৌকা কি কবি পণ্য ভরা বাণিজ্যতরী বলে উল্লেখ করেছেন।
বাস্তবে মাঝি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ঘাটে নৌকা বেঁধে রাখে। আবার প্রয়োজনে তাকে নোঙর মুক্ত করে স্থানান্তরে পাড়ি দেয়। অর্থাত নৌকার চলাচল সাময়িক এবং প্রয়োজনভিত্তিক। কিন্তু কোভিদ জীবন নৌকা সংসারের তটে বাঁধা পড়েছে চিরকালের জন্য। ইচ্ছে করলেই তিনি নঙরের বন্ধ ছিন্ন করে তার কল্পনায় স্বপ্নলোকে ভেসে পড়তে পারেন না। তার সামাজিক পারিবারিক সত্তা রয়েছে। সেখানে ব্যক্তিগত ইচ্ছা অনিচ্ছা কে অবদমিত করে রাখতে হয় কবি কে। বাস্তবে জগতের অনেক দায়িত্বপূর্ণ কাজ, সংসার জীবনে সম্পর্কের প্রতি দায়বদ্ধতা ইত্যাদির নিবিড় বন্ধনে কবির জীবন নৌকা চিরকাল বাঁধা।
৬. 'স্বরভিক্তি' - র অপর নামটি কী?
উত্তরঃ 'স্বরভিক্তি' - র অপর নামটি হল বিপ্রকর্ষ।
৭. উপসর্গের ভূমিকা উল্লেখ করো।
উত্তরঃ উপসর্গের প্রধান ভূমিকাগুলি নীচের আলোচনা করা হল -
নতুন শব্দ তৈরি করা হল উপসর্গের প্রধান কাজ। আসলে উপসর্গের কোন নিজস্ব অর্থ নেই। উপসর্গগুলি অন্য শব্দের সাথে যুক্ত হয় এবং বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে। উপসর্গ সবসময়ই মূল শব্দ অথবা ধাতুর পূর্বে যুক্ত হয় এবং নতুন শব্দ গঠন করে।
৮. উদাহরণসহ 'অপিনিহিতি' বিষয়টি বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ শব্দের মধ্যে বা শেষে অবস্থিত 'উ' বা 'ই' ধ্বনিকে স্বস্থানের পূর্বে উচ্চারণের রীতিকে অপিনিহিতি বলে।
যেমন - আজি > আইজ
রাতি > রাইত
সাধু > সাউধ
Other Model Activity Task : Model Activity Task 2022
ধন্যবাদ জানাই আপনাকে
উত্তরমুছুনOsom
উত্তরমুছুনGood job
উত্তরমুছুন