মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক
বাংলা (প্রথম ভাষা)
নবম শ্রেণি
নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১. 'চারি মেঘে জল দেয় অষ্ট গজরাজ।' - অষ্ট গজরাজের পরিচয় দাও।
উত্তর : অষ্ট গজরাজ অর্থাৎ আটটি হাতি। পৌরাণিক মতে অষ্টগজরাজ আকাশের আর দিকে দাঁড়িয়ে পৃথিবী কে ধরে রেখেছে। এরা হলো ঐরাবত, পুণ্ডরীক, বামন, কুমুদ, অঞ্জন, পুষ্প দন্ত, সার্বভৌম এবং সুপ্রতীক। এই আটটি দিক রক্ষক হাতি সম্বর্ত, আবর্ত, পুষ্কর এবং দ্রোনো নামক চার প্রকার প্রবাল বর্ষণকারী মেঘের সাহায্যে কলিঙ্গদেশে বারি বর্ষণ করেছে। ফলে সে দেশ বন্যায় ভেসে গিয়ে জলমগ্ন হয়ে পড়ে এবং প্রজারাও আতঙ্কিত হয়ে কলিঙ্গদেশে ছেড়ে পালাতে শুরু করে।
২. 'ধীবর-বৃত্তান্ত' নাট্যাংশে দুই রক্ষীর কথাবার্তায় সমাজের কোন্ ছবি ফুটে উঠেছে?
উত্তর : কালিদাসের লেখা ধীবর-বৃত্তান্ত নাট্যাংশ রক্ষীদের সক্রিয়তাও উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। প্রাথমিকভাবে ধীবরের কাছে আংটিটি পেয়ে তারা তাকে চোর বলে মনে করেছিলেন। পিছনে হাত বাঁধা অবস্থায় যেভাবে ধীবর কে নিয়ে আসা হয় তাতে বোঝা যায় তারা তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে কতখানি আগ্রহী। দি বরকে নিয়ে নিষ্ঠুর কৌতুকের পরিচয় রেখেছেন তারা। রক্ষীরা দিবসকে বাটপার গাঁটকাটা ইত্যাদি বলে সম্বোধন করেছেন। তারা ধীবর কে শাস্তি দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছেন। রাজার আসার আগেই রক্ষীদের "হয় তোকে শকুনি দিয়ে খাওয়ানো হবে, না হয় কুকুর দিয়ে খাওয়ানো হবে" এই জাতীয় মন্তব্য অবিবেচনা ও অমানবিকতার উদাহরণ থেকে থাকে।
৩. 'এটা খুবই জ্ঞানের কথা' - কার, কোন্ কথাকে 'জ্ঞানের কথা' বলা হয়েছে?
উত্তর : উক্তিটির বক্তা জৈনক মোল্লা। তিনি অতিথিদের সাথে এসেছিলেন।
সর্বহারা ইলিয়াসের অতীত জীবনের সমৃদ্ধি ও প্রতিপত্তির কথা দেশ-বিদেশের বহু মানুষই জানতেন। ইলিয়াসের অতিথি আপ্যায়নের কোথাও তারা জানতেন। কিন্তু বৃদ্ধ ইলিয়াস তার তিলতিল করে গড়ে তোলা বিষয়-সম্পত্তি হারিয়ে যে সুখী একথা তারা জানতেন না। ইলিয়াস ও তার স্ত্রী অতিথিদের জানিয়েছিল প্রভূত ঐশ্বর্য্যের অধিকারী হলেও তাদের জীবনের সুখ ছিল না শান্তি ছিল না। তখন অতিথি এলে তাদের আপ্যায়ন কিভাবে হবে ! হুজুরেরা কম খেতে বেশি টাকা নিল কিনা, এসবই চিন্তায় মগ্ন থাকতে তারা। অন্যান্য দুশ্চিন্তাও ছিল তাদের। ঘোড়ার বাচ্চা গরুর বাছুর নেকড়ে নিও গেলো কিনা, ভেড়ার ছানা তাদের শরীরের চাপে মরে গেল কিনা এমন ও দুশ্চিন্তাও ছিল। নিজেদের মধ্যে নানা মত বিরোধ ছিল। কাজেই সুখী জীবনের অর্থ কি তারা বুঝতেই পারিনি কখনো।
বর্তমানে মহম্মদ শার বাড়িতে মজুরের কাজ করে সর্বহারা ইলিয়াস ও তার স্ত্রী প্রকৃত সুখের সন্ধান পেয়েছে। এখন আর তাদের কোনো পিছু টান নেই, অশান্তি নেই দুশ্চিন্তা নেই। এখন তাদের একমাত্র কাজ প্রভুর সেবা করা। বাড়ি এলে তারা খাবার ও কুমিস পায়। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করার সময় তাদের আছে। তাই সম্পত্তি হারিয়ে মানুষ অবুঝ হয়ে কাঁদে। কিন্তু ঈশ্বর প্রকৃত সত্যটি তাদের কাছে উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। সুখ সম্পদে নেই সুখ আছে ঈশ্বর চিন্তায়। মোল্লা এই কথাটিকেই জ্ঞানের কথা বলেছেন।
৪. 'আমার ছাত্র আমাকে অমর করে দিয়েছে।' - বক্তা কে? কীভাবে তিনি অমরত্ব লাভ করেছেন?
উত্তর : নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাম ছোটগল্পে উক্তিটির বক্তা হলেন কথক সুকুমারের স্কুলের অঙ্কের মাস্টার মশাই।
কর্মজীবনে মাস্টারমশাই ছিলেন তার ছাত্রদের কাছে মূর্তিমান বিভীষিকা। অঙ্কিতার পাণ্ডিত্য ছিল প্রশ্নাতীত। যেকোন জটিল অংক একবার মাত্র দেখেই সমাধান করে ফেলতে পারতেন। ছাত্ররা অংক না পারলে তিনি ভয়ানক রেখে তাদের প্রহার করতেন। এজন্য ছাত্ররা তাকে যমের মত ভয় পেত এবং তার ও অংকের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার দিন গুনতে।
তাঁরই এক অংকের দুর্বল ছাত্র সুকুমার পরবর্তীকালে লেখক হয়ে একটি বাল্যস্মৃতি মাস্টারমশাই সম্পর্কে এই কথাগুলি লেখেন। সঙ্গে মাস্টারমশাইয়ের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন যে এইভাবে জোর করে ভয় দেখিয়ে মেরে ছাত্র দের কোন বিষয় শেখানো যায় না। সে দিক থেকে বিচার করলে মাস্টারমশাইয়ের শিক্ষা পদ্ধতিতে ভুল ছিল।
ঘটনা ক্রমে মাস্টারমশায় সুকুমারের এই লিখাটি পড়ে ছিলেন। খুব আশ্চর্যজনক ভাবে অতি রাগী মানুষটি এতটুকু না রেগে ছাত্র দের যাবতীয় সমালোচনাকে ও তার মনে সন্তানের অধিকার বলে গ্রহণ করেছিলেন। এত বছর পরে একজন ছাত্র তার কথা মনে করে পত্রিকায় গল্প লিখেছে এটাই সরলমতি মানুষটির কাছে প্রবল আনন্দ ও গর্বের বিষয় হয়ে উঠেছিল। ছাপার অক্ষরে নিজের নামটি দেখেই তার মনে হয়েছিল যে ছাত্র তাকে অমর করে দিয়েছে। ছাত্রটি সত্যিই তাকে আঘাত করতে পারে এটা তার কল্পনাতেও ছিল না। আসলে মাস্টারমশাই মানুষটি ছিলেন অত্যন্ত ছাত্রদরদি এবং স্নেহশীল। ছাত্রদের জোর করে অংক শেখানোর পেছনেও তার এই ছাত্র দের মঙ্গল কামনা এবং স্নেহের ফল্গুধারাই কাজ করতো।
৫. 'নোঙর' কবিতায় নোঙর কীসের প্রতীক তা বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : প্রতীক কে ইংরেজিতে বলে সিম্বল। চিহ্ন যখন মনের ভাব প্রকাশ করে তখন তাকে বলে প্রতীক। তবে চিহ্নের মাধ্যমে ভাবের ব্যঞ্জনা ব্যক্ত করতে হবে। যে কোন চিহ্নই প্রতিক হয়না। পথিক মাত্রই চিহ্ন হলেও চিহ্নমাত্র প্রতীক নয়। যে কবিতায় প্রতীকের ব্যবহার বেশি তাকে প্রতীকী কবিতা বলা হয়।
কবি অজিত দত্ত নোঙর কবিতায় সুচারুভাবে নানা প্রতীকের ব্যবহার করেছেন। এইসব প্রতীকে কবির হৃদয়ের অনুভূতির ব্যঞ্জনা ধরা পড়েছে। নোঙরকে তিনি বন্ধন এর প্রতীক রূপে আর পরিচিত বাস্তব জগত কে নদীর তটের প্রতীকরূপে গ্রহণ করেছেন। বাস্তব প্রয়োজনের জগতের বাইরে জগতকে তিনি দূর সিন্ধু পার বা সপ্তসিন্ধু পার বলে অভিহিত করেছেন।
সেই সুদূর কল্পলোকে পাড়ি দিতে চেয়েও কোভিদ জীবন নৌকা নোঙরে বাঁধা পড়েছে। নৌকার প্রতীক এর সঙ্গে অনিবার্যভাবে এসে গেছে দাঁড়,কাছি, নোঙর, নদী, জোয়ার ভাটা, মাস্তুল, পাল ইত্যাদি প্রসঙ্গে। এগুলো সবই কবির সামগ্রিক ভাবনার রূপায়নে সহায়ক হয়েছে। জোয়ারের ঢেউগুলি কোভিদ জীবনের স্বপ্ন আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক আর নৌকায় মাথা ঠুকে অর্থাৎ কোভিদ মনের দুয়ারে মাথা ঠুকে ব্যর্থ হয়ে তারা সমুদ্রের দিকে ছুটে যায়। সেই দূর সমুদ্র পাড়ি দিতে চেয়ে ছিলেন কবিও। কাছি যেন বাস্তব জীবনের নানা সম্পর্কের সূত্র। জোয়ার ভাটা হলো জীবনের উত্থান-পতন আশা-নিরাশার প্রতীক। নোঙর যেমন স্থিতি বা বন্ধন তেমনি স্রোত হল গতির প্রতীক। বাণিজ্য পরণ্য এগুলি হল লাভ-ক্ষতি ময় জীবন জীবিকা ও সৃষ্টি সম্পদের প্রতি। এভাবেই এক একটি প্রতীকের ইটাগাছা হয়েছে আলোচ্য কাব্য প্রসাদের ব্যঞ্জনা। তাই সব দিক বিচার করে নোঙর একটি আদর্শ প্রতীকী কবিতা বলা হয়।
৬. কন্যা > কইন্যা > কনে - এ ক্ষেত্রে ধ্বনি পরিবর্তনের কোন্ রীতি অনুসৃত হয়েছে?
উত্তরঃ কন্যা > কইন্যা > কনে - এ ক্ষেত্রে ধ্বনি পরিবর্তনের অভিশ্রুতি রীতি অনুসৃত হয়েছে।
৭. কৃদন্ত ও তদ্ধিতান্ত শব্দের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ ধাতুর সাথে কৃৎপ্রত্যয় যোগে যে শব্দ গঠিত হয়, তাকে কৃদন্ত শব্দ বলে। যেমন -
রাখ + আল = রাখাল
ঘুম + অন্ত = ঘুমন্ত
মৌলিক শব্দের সাথে তদ্ধিত প্রত্যয় যোগে যে শব্দ গঠিত হয়, তাকে তদ্ধিতান্ত শব্দ বলে। যেমন -
দুষ্ট + আমি = দুষ্টামি
ঢাকা + আই = ঢাকাই
৮. মৌলিক স্বরধ্বনির সংখ্যা কয়টি?
উত্তরঃ মৌলিক স্বরধ্বনির সংখ্যা ৭টি।
Other Model Activity Task : Model Activity Task 2022
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ