মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক
বাংলা (প্রথম ভাষা)
নবম শ্রেণি
নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১. 'নব নব সৃষ্টি' প্রবন্ধে লেখক সংস্কৃত ভাষাকে আত্মনির্ভরশীল বলেছেন কেন? বর্তমান যুগে ইংরেজি ও বাংলা ভাষা আত্মনির্ভরশীল নয় কেন?
উত্তর : ভাষার আত্মনির্ভরশীলতা তার সম্বৃদ্ধ শব্দ ভান্ডার এর উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। লেখক মুজতবা আলী সংস্কৃত ভাষার এই সমৃদ্ধ শব্দভাণ্ডারকে লক্ষ্য করেছিলেন। কোন নতুন চিন্তা অনুভূতি বিষয়কে প্রকাশ করতে হলে সংস্কৃত ভাষাকে অন্য ভাষার শব্দভাণ্ডার থেকে শব্দ ধার করার প্রয়োজন হয় না। কারণ সে তার নিজের শব্দভাণ্ডার থেকেই প্রয়োজনীয় শব্দ বা ধাতুর পেয়ে যায়, তার মানে এই নয় যে বিদেশি শব্দ কখনোই গ্রহণ করেনি। সামান্য যেটুকু গ্রহণ করেছে তাতে সমস্কৃত ভাষার মানহানি হবার কোন সম্ভাবনা থাকেনা। তাই লেখক সংস্কৃত ভাষাকে আত্মনির্ভরশীল বলেছেন।
যে ভাষার শব্দভাণ্ডার যথেষ্ট সমৃদ্ধ এবং যে বাসাকে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে অন্য ভাষা থেকে শব্দ ধার করতে হয় না সেই ভাষাতেই আত্মনির্ভরশীল ভাষা বলে। লেখক লক্ষ্য করেছেন ইংরেজি ও বাংলা প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে অন্য ভাষা থেকে শব্দ নিয়েছে এবং এখনও নিয়ে চলেছে। মুঘল যুগে আরবীয় ফরাসি শব্দ থেকে বহু শব্দ আইন-আদালত খাজনার কিছু বিন্যাসের কারণে বাংলায় ঢুকেছে। পরবর্তীকালে প্রচুর ইংরেজি শব্দ ও ইংরেজির মাধ্যমে বিভিন্ন ভাষার বহু শব্দ বাংলায় ঢুকে পড়েছে বা এখনও ডুকছে। বাংলা শব্দভাণ্ডার অন্য ভাষা থেকে শব্দ গ্রহণ করে নিজেকে সমৃদ্ধ করেছে। ইংরেজির ক্ষেত্রে এমনটি ঘটেছে। তাই লেখক এর বর্তমান যুগের ইংরেজি ও বাংলা ভাষাকে আত্মনির্ভরশীল নয় বলেই মনে হয়েছে।
২. 'এরই মাঝে বাংলার প্রাণ।' - বাংলার প্রাণস্পন্দন কবি কীভাবে উপলব্ধি করেছেন?
উত্তর : উদ্ধৃত লাইনটি জীবনানন্দ দাশের আকাশে সাতটি তারা কবিতার থেকে নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ জীবনানন্দের কাছে শুধুমাত্র এক ভূখণ্ড নয় প্রাণময়ী মূর্তি। শব্দ গন্ধ বর্ণ স্পর্শ দিয়ে কবিতাকে অনুভব করেন। আলোচ্য কবিতাটিতে তিনি বাংলার সন্ধ্যাকালীন প্রকৃতির অপূর্ব বর্ণনা করেছেন। হিজল কাঁঠাল বট প্রকৃতির বৃক্ষ ধানগাছ কলমি শাক মুথা ঘাস পুকুর মাছ কিশোর-কিশোরী অর্থাৎ মানুষ এইসব নিয়েই বাংলার পরিপূর্ণ প্রকৃতি। এই প্রকৃতির মধ্যেই কবি বাংলার জীবন্ত সত্তা কে উপলব্ধি করেছেন।
৩. 'চিঠি' রচনা অবলম্বনে স্বামী বিবেকানন্দের স্বদেশভাবনার পরিচয় দাও।
উত্তর : মিস্ নোবেল ভারতে মানব সেবার কাজে নিজেকে উৎসর্গ করতে বদ্ধপরিকর, মিস স্টাডির চিঠিতে সেসব কথা জানতে পেরেই স্বামীজি এ দেশের সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত সম্পর্কে মিস নোবেল কে আগাম ধারণা দিতে এই কথাগুলি লিখেছিলেন। উনিশ শতকের শেষের দশকে বাংলা ছিল শ্বেতাঙ্গ ইংরেজদের কুশাসনে জর্জরিত। অজ্ঞতা অশিক্ষা দারিদ্র্য নারী জাতির প্রতি অসম্মান এর ভারতীয় সমাজ জীবন ছিল দুর্দশাগ্রস্ত। স্বামীজি সমস্ত রকমের সংকীর্ণতা ও দাসত্ব থেকে ভারতবাসীকে মুক্ত করার স্বপ্ন দেখেছেন। সেই স্বপ্নের বাস্তবায়নে সহায়ক হওয়ার সব গুণ আছে মিস নোবেল এর মধ্যে। চিঠিতে তিনি নোবেল কে বলেছেন "এ দেশে এলে তুমি নিজেকে অর্ধ-উলঙ্গ অসংখ্য নারীকে পরিবেষ্টিত দেখতে পাবে"। অস্পৃশ্যতা জাতিভেদ আর কুসংস্কার ভারতবাসীকে বিচ্ছিন্ন বিভাজিত করে রেখেছে। মিস নোবেল এর মাধ্যমেই তিনি ভারতীয় নারী সমাজকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে চেয়েছেন। জোর দিয়েছেন আত্মনির্ভরতার উপর। মিস নোবেল কেউ তিনি বারবার বলেছেন তার কর্ম পরিসরে তাকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে এবং "যে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে তার সবই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়"। এইভাবে আলোচ্য চিঠিতে স্বামীজি গভীর স্বদেশপ্রীতি ব্যক্ত হয়েছে।
৪. 'যা গিয়ে ওই উঠানে তোর দাঁড়া' - কবি কাদের, কেন এই পরামর্শ দিয়েছেন? কবিতার নামকরণের সঙ্গে উদ্ধৃতিটি কীভাবে সম্পর্কযুক্ত?
উত্তর : কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর আবহমান কবিতায় পাঠক কে ফিরে গিয়ে উঠানের লাউমাচাটির পাশে দাঁড়াতে বলেছেন। অর্থাৎ তিনি পাঠক কে তার শৈশবে ফিরে যেতে বলেছেন।
আবহমান কথাটির আবিধানিক অর্থ হলো যা চিরকালীন। যা চিরকাল চলে আসছে তাই হল আবহমান। আবহমান কবিতাটি তে কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তেমনই একটি সত্য কে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। কবি বলেছেন শৈশবের প্রতি প্রতিটি মানুষের একটি গভীর মমতা আর ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে। বড় হতে হতে মানুষ তার শৈশবের খেলা ঘর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। জীবন থেকে দূরে কর্মময় জগতে তার নির্বাচন ঘটে। তবু সেই ফেলে আসা অতীতে ছেলেবেলার নানা রঙের মুহূর্ত তাকে হাতছানি দিয়ে নিয়ে যায় তার শৈশবের বাসভূমিতে। সেখানকার মাটি বাতাস মানুষ আর স্মৃতি ভূমিকে আন্দোলিত করে। সেই সুখ স্বর্গ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার যন্ত্রণায় প্রতিদিনই সে বেদনার্ত হয়। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই এই বিচ্ছিন্নতার যন্ত্রণায় ভোগে, আবার প্রতিটি মানুষের বুকেই হারানো শৈশব এর প্রতি এক অমোঘ ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে। তাই সে শত ব্যস্ততার মধ্যেও শৈশবের দিনগুলি ফিরে আসতে চায়। এ এক শাশ্বত অনুভব। তাই কবি কবিতাটির নাম দিয়েছেন আবহমান। কারণ আবহমানকাল ধরে মানুষের বুকে এই আকুলতা জেগে থাকে। সেই হিসাবে এই লাইনটি সম্পূর্ণ কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা লুকিয়ে রয়েছেন।
৫. '... অগত্যা রাধারাণী কাঁদিতে কাঁদিতে ফিরিল।' - রাধারাণীর কান্নার কারন কী?
উত্তর : রাধারানী বুনো ফুলের মালা গেঁথে রথের মেলায় গিয়েছিলো তা বিক্রি করে মার পথ্য সংগ্রহ করতে। কিন্তু রথ অর্ধেক টানা হওয়ার পর এই প্রবল বৃষ্টিতে মেলা ভেঙে যায়। রাধারানী তবুও মেলা আবার জমবে এবং তার মালাও বিক্রি হবে এই আশায় বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে। কিন্তু রাত হওয়ার পরেও বৃষ্টি না থামায় তার আশা ভঙ্গ হয়। মালা বিক্রি না হওয়ায় রাধারানী অন্ধকারে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ির পথ ধরেছে।
Other Model Activity Task : Model Activity Task 2022
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ