মাধ্যমিক
দশম শ্রেণি
মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক - ৩
১। টীকা লেখ :
(ক) হিন্দু মেলা
উত্তর : রাজনারায়ণ বসু ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় ঐক্য সহায়ক সমিতি প্রতিষ্ঠা করে জাতীয় ভাষা শিক্ষা, জাতীয় ভাবধারার প্রসার ও সংস্কৃত শিক্ষার আদর্শ প্রচার করেন। তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এবং সহযোগিতা পেয়ে নবগোপাল মিত্র ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে চৈত্র সংক্রান্তির দিন হিন্দু মেলার প্রতিষ্ঠা করেন।
হিন্দুমেলা প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য গুলি ছিল -
প্রথমত, সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে হিন্দু ধর্মের অতীত গৌরব গাঁথা ছড়িয়ে দেওয়া।
দ্বিতীয়ত, দেশীয় ভাষা চর্চা এবং জাতীয় প্রতীক গুলোকে মর্যাদা দেওয়া।
(খ) বসু বিজ্ঞান মন্দির
উত্তর : স্যার জগদীশচন্দ্র বসু ছিলেন একজন খ্যাতনামা ভারতীয় বিশিষ্ট বিজ্ঞানী। তিনি বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মৌলিক গবেষণার উদ্দেশ্যে ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় বসু বিজ্ঞান মন্দির বা বোস ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন।
বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োফিজিক্স, পরিবেশ বিজ্ঞান প্রকৃতি বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা বিশ্বমানের গবেষণা ব্যবস্থা করা।
(গ) তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার
উত্তর : ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ১৭; ডিসেম্বর তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার গঠিত হয়। সর্বাধিনায়ক হন বিপ্লবী সতীশচন্দ্র সামন্ত। এই সরকারের বিভিন্ন বাহিনী গঠিত হয়। এই জাতীয় সরকার সে সময় পৃথক শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল। আইন-শৃঙ্খলা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিচার, কৃষি, প্রচার সরকারি বিভাগে পৃথক পৃথক সচিব নিয়োগ করা হয়েছিল। আর এর সবার উপরে ছিলেন সর্বাধিনায়ক বিপ্লবী সতীশচন্দ্র সামন্ত। অর্থ সচিব ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অজয় কুমার মুখোপাধ্যায় এবং সমর ও রাষ্ট্রে সচিব ছিলেন সুনীলকুমার ধাড়া। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দের ৩০ শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী ছিল তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের অস্তিত্ব। ১৯৪৩ সালের জুন মাসে গ্রেফতার বরণের আগে পর্যন্ত সতীশচন্দ্র এই সরকার পরিচালনা করেছিলেন।
২। ভারতমাতা চিত্র কিভাবে পরাধীন ভারতে জাতীয়তাবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছিল?
উত্তর : ভারতে নব্যবঙ্গীয় চিত্রকলার জনক অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক স্বদেশী আন্দোলন কালে অবস্থিত ভারতমাতা চিত্রটি বিভিন্ন কারণে তাৎপর্যপূর্ণ, যেমন -
প্রথমত, এই চিত্রের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদকে মাতৃত্বের ধারণার সঙ্গে যুক্ত করা হয়, কারণ গেরুয়া বসন পরিহিত চারহাত যুক্ত ভারতমাতা ছিল মানবীয় ও দেবী শক্তির বহিঃপ্রকাশ।
দ্বিতীয়ত, এই চিত্রটিতে ভারতমাতার চার হাতে রয়েছে ভারতীয় ঐতিহ্যের চার উপাদান, যথা - ডান হাত দুটিতে রয়েছে যথাক্রমে বেদ ও ধানশীষ যা ভারতীয় জাতীয়তাবাদ সঞ্চরে বিশেষ ভূমিকা সঞ্চার করেছিল।
তৃতীয়ত, পরবর্তীকালে জাতীয় আন্দোলন পরিচালনা কালে অস্ত্রবিহীন ভারতমাতার ছবিকে আন্দোলনকারীরা হাতে ধরে রেখে আন্দোলনের অভিমুখ সূচিত করত।
৩। ছাপাখানার বিস্তার ও শিক্ষার প্রসারের সম্পর্ক সমানুপাতিক - উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে বিশ শতকের প্রথমভাগে বাংলার শিক্ষা বিস্তার প্রসঙ্গে উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : আঠারো শতকের শেষের দিক থেকে উনিশ শতকে শিক্ষা বিস্তারে সঙ্গে ছাপাখানার ছাপা বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। এই সম্পর্ক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে -
শিক্ষার বিস্তার :
ছাপাখানা চালু হওয়ার পর বাংলা ভাষায় প্রচুর বইপত্র ছাপা শুরু হলে শিক্ষার্থীর নিজের মাতৃভাষায় শিক্ষার সুযোগ পাওয়ায় বাংলাদেশে শিক্ষার বিস্তার ঘটে।
শিশু শিক্ষার প্রসার :
ছাপাখানা শিশু শিক্ষার অগ্রগতিতে সাহায্য করেছিল। মদনমোহন তর্কালঙ্কার রচিত "শিশুশিক্ষা" ও ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত "বর্ণপরিচয়" এবং রামসুন্দর বসাক রচিত "বাল্যশিক্ষা" প্রভৃতি গ্রন্থের কালজয়ী ভূমিকার কথা বলা যায়।
গন শিক্ষার বিস্তার :
ছাপাখানার ফলে স্কুল-কলেজ শিক্ষার প্রসারের পাশাপাশি গন শিক্ষারও বিস্তার ঘটে। কৃত্তিবাসী "রামায়ণ" কাশীদাসী "মহাভারত" "বাংলার ইতিহাস" পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ও ইতিহাস গ্রন্থের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে জ্ঞান ও শিক্ষার বিস্তার ঘটে।
সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা উদ্যোগে গতি :
ছাপাখানার ফলে দেশীয় ভাষায় শিক্ষাদানে সরকারি ও বেসরকারি উৎসাহদান বৃদ্ধি পায়। এপ্রসঙ্গে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ শ্রীরামপুর ব্যাপ্টিস্ট মিশন এবং ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটির উদ্যোগে বাংলা স্কুল পাঠ্যপুস্তক রচনা ও পরিবেশনার কথা বলা যায়।
৪। একটি ভারতের মানচিত্রে প্রদত্ত স্থান গুলি চিহ্নিত করো -
- মিরাট
- এলাহাবাদ
- ব্যারাকপুর
- দিল্লি
- ঝাঁসির
- শ্রীরামপুর
- বোলপুর
উত্তর :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ