দ্বিতীয় অধ্যায়
ঊনবিংশ ও বিংশ শতকে উপনিবেশিকতাবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের প্রসার
ঔপনিবেশিকতাবাদ (colonialism) :
কোন দেশ অন্য দেশের ভূখণ্ড বা অঞ্চলকে নিজের অধীনস্থ করে নেওয়াকে উপনিবেশিকতাবাদ বলে।
সাম্রাজ্যবাদ (imperialism) :
বৃহৎ রাষ্ট্র দ্বারা অপেক্ষাকৃত দুর্বল বা ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের উপর উপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠা করাকে এক কথায় সাম্রাজ্যবাদ বলে।
নতুন বিশ্ব (new world) :
নতুন বিশ্ব শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন আমেরিগো ভেসপুচি। লোরেঞ্জো দ্য মেডিচিকে একটা চিঠিতে লেখা কলম্বাসের নতুন আবিষ্কৃত দেশটির উদ্দেশ্যে নতুন বিশ্ব বা new world কথাটি উল্লেখ করেন।
মার্কেনটাইল বাদ :
প্রখ্যাত ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ এডাম স্মিথ ১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত তার wealth of nations নামক গ্রন্থে সর্বপ্রথম মার্কেন্টাইলবাদ বা Mercantilism কথাটি ব্যবহার করেন। এক কথায় বলা চলে 16 থেকে 18 শতকে ইউরোপে এক বাণিজ্য ব্যবস্থা শুরু হয় যেখানে সরকার দেশের সমস্ত বাণিজ্যিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করতেন।
শিল্প ও পুঁজিবাদী মূলধন :
আঠারো শতকে ইউরোপে শিল্প বিপ্লব সংঘটিত হলে একশ্রেণীর বণিকদের হাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদ জমা হয়। এই মূলধন শিল্প ও বাণিজ্যের নতুন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে আরও বাড়তি লাভ করতে সচেষ্ট হয়। শিল্প, কৃষি, নির্মাণ ও পরিবহন প্রভৃতি ক্ষেত্রে মুনাফা অর্জন করার লক্ষ্য নিয়ে যে পুঁজি বিনিয়োগ করা হয় তা সাধারণভাবে শিল্প মূলধন নামে পরিচিত।
নয়া উপনিবেশবাদ :
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ এরপর সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশগুলিতে সাম্রাজ্যবাদী ঔপনিবেশিক শক্তি গুলি অর্থ ও সামরিক সাহায্য দানের মাধ্যমে যেসব দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক গুলিতে নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে যে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয় তা নয়া উপনিবেশবাদ নামে পরিচিত।
সাম্রাজ্যবাদ ও ঔপনিবেশিকতাবাদ সম্পর্কে লেনিন :
সাম্রাজ্যবাদ ও ঔপনিবেশিকতাবাদ সম্পর্কে লেনিনের ব্যাখ্যার প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয় গুলি হল -
(১) পুঁজির উদ্ভব
(২) বাজার দখল ও কাঁচামাল সংগ্রহ
(৩) পুঁজি বিনিয়োগ
(৪) প্রতিযোগিতা
(৫) অনুগত অভিজাত ও শ্রমিক শ্রেণীর প্রতিষ্ঠা
হবসন - লেনিন থিসিস সমালোচনা :
বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে হবসন লেনিন থিসিস এর মূল্যায়ন করা যায়। সেগুলি হল নিম্নরূপ -
(১) উপনিবেশের বাইরে বিনিয়োগ
(২) ফরাসি উপনিবেশের ব্যাপক বৃদ্ধি
(৩) শিল্প বিপ্লবের পুর্বে উপনিবেশ
(৪) শ্রমিকদের জীবন যাত্রার মান
(৫) মৌলিকত্বের অভাব
জাতিগত প্রশ্নের প্রভাব :
উপনিবেশগুলোতে জাতিগত ব্যবধানের সদর্থক ও নঞর্থক ও উভয় ধরনের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। যথা -
সদর্থক প্রভাব : উপনিবেশিক সাম্রাজ্যের জাতিগত প্রশ্নের সদর্থক প্রভাব গুলি নিম্নরূপ -
(১) জ্ঞানের প্রসার
(২) গণতান্ত্রিক আদর্শের প্রচার
(৩) পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সান্নিধ্য
(৪) নবজাগরণ
নঞর্কথ প্রভাব : উপনিবেশিক সাম্রাজ্যের জাতিগত প্রশ্নের নঞর্থক প্রভাব গুলি নিম্নরূপ -
(১) অমানবিকতা
(২) শ্রমিক রপ্তানি
(৩) জাতিগত শোষণ
(৪) বৈষম্য
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ