প্রথম অধ্যায়
অতীত স্মরণ
পৌরাণিক কাহিনী (Myths) :
সৃষ্টির আদিমকালে অপরিণত বুদ্ধি মানুষ যে সমস্ত ধর্মীয় অলৌকিক কল্পকাহিনী রচনা ও প্রচার করে তাকে মিথস বা পৌরাণিক কাহিনী বলে।
কিংবদন্তি (Legends) :
ইতিহাস ও কল্পনার মিশ্রণে লৌকিকতা সাহিত্যের রূপ বিশিষ্ট লোককাহিনী হলো লিজেন্ড বা কিংবদন্তি।
লোককথা (Folktales) :
মানুষের জীবন ও কল্পনার সংমিশ্রণে যেসব গল্পকথা গড়ে উঠেছে তাই হল লোককথা। লোকসাহিত্যের এক বিশেষ অঙ্গ হল লোককথা। লোককথা মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত বিভিন্ন ধরনের গল্প।
স্মৃতিকথা ( Memories) :
স্মৃতিকথা হলো এক ধরনের অ-উপন্যাসধর্মী সাহিত্য যেখানে লেখক তার জীবনে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনার স্মৃতিচারণ করে থাকেন তাকে মেমোরিস বা স্মৃতিকথা বলে।
মৌখিক ঐতিহ্য (Oral Traditions) :
মৌখিক ঐতিহ্য হল এমন এক সংস্কৃতিগত ধারণা মা এক বংশধর থেকে অপর বংশধরে লোকমুখে প্রচারিত হতো। মৌখিক ঐতিহ্যের সংজ্ঞায় বলা যায় - অতীতের ঘটনা সম্পর্কে মানুষের কণ্ঠস্বর, স্মৃতিকথা, বিভিন্ন সম্প্রদায় ও অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ ও চর্চা করাকেই মৌখিক ঐতিহ্য বলে।
ঔপনিবেশিক ইতিহাস নির্মাণ :
উপনিবেশিক শাসনকালে ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থা ও ভারতবর্ষীয় জীবনযাত্রার বিভিন্ন দিক গুলি সম্পর্কে ধারণা লাভ করা ইংরেজদের কাছে জরুরী হয়ে উঠেছিল।
দেশীয় ইতিহাস চর্চা :
ব্রিটিশ ঐতিহাসিক জেমস মিল সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে ভারতীয় ইতিহাসে ভুল ব্যাখ্যা করেন। এরই প্রত্যুত্তরে ভারতের অতীত ঐতিহ্যকে সঠিকভাবে বিদেশের দরবারে তুলে ধরার জন্য ভারতীয়রা ভারতবর্ষের ইতিহাস রচনায় আগ্রহী হয়েছিলেন।
পেশাদারী শাখা হিসাবে ইতিহাসের গুরুত্ব :
ইতিহাস অতীতের ধারণা দানে, জ্ঞানের বিকাশে, ঘটনার ধারাবাহিকতা অনুধাবনে, অতীত ও বর্তমান সম্পর্ক স্থাপনে, সঠিক তথ্য নির্ণয়, আর্থ - সাংস্কৃতিক উন্নতির ধারণালাভে ও জাতীয়তাবাদের বিকাশে প্রভৃতি বিষয়ে সাহায্য করে।
আধুনিক ইতিহাস লিখন পদ্ধতি :
বর্তমানে আধুনিক ইতিহাস লিখন পদ্ধতি গুলি হল নিম্নরূপ -
(১) উৎস অনুসন্ধান করা
(২) উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করা
(৩) তথ্যের যাচাইকরণ করা
(৪) তথ্যসমূহের বিশ্লেষণ করা
(৫) ঘটনা ও বক্তব্য এর সম্পর্ক তৈরি করা
(৬) ধারাবাহিকতা যাচাই করা
(৭) কার্যকরণ ও ভৌগলিক অবস্থানের গুরুত্ব স্থাপন করা
(৮) তথ্য সংগ্রহ করা
জাদুঘর :
জাদুঘর হলো বিভিন্ন ঐতিহাসিক উপাদানের সংগ্রহশালা যেখানে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, বৈজ্ঞানিক, শিল্পকলা বিষয়ক প্রভৃতি ধরনের গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন সংরক্ষণ করে তা সাধারন মানুষের সামনে প্রদর্শন করা হয়।
উদ্দেশ্য : জাদুঘরের প্রধান উদ্দেশ্য হলো -
(১) প্রাচীন নিদর্শন সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা
(২) অতীত সমাজ-সভ্যতার ধারণা স্থাপন করা
(৩) জনসচেতনতা তৈরি করা
(৪) ঐতিহাসিক নিদর্শন নিয়ে গবেষণা করা
(৫) প্রতিকৃতি নির্মান করা
শ্রেণীবিভাগ : জাদুঘরের প্রধান বিভাগগুলি হল -
(১) সাধারণ জাদুঘর
(২) কলা জাদুঘর
(৩) ঐতিহাসিক জাদুঘর
(৪) বিজ্ঞান বিষয়ক জাদুঘর
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ