ভাষাবৈচিত্র্য ও বাংলা ভাষা
বাংলা ভাষা সাহিত্যের ইতিহাস
(১) নিচের বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
১.১ অপিনিহিতিজাত শব্দ ব্যবহৃত হয় যে আঞ্চলিক উপভাষায়, তা হল - বঙ্গালি
১.২ পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ববঙ্গে যে আঞ্চলিক উপভাষা প্রচলিত, তা হল - বঙ্গালি
১.৩ যে আঞ্চলিক উপভাষায় নেতিবাচক অব্যয় সমাপিকা ক্রিয়াপদের আগে বসে, তা হল - ঝাড়খন্ডি
১.৪ কলকাতায় যে আঞ্চলিক উপভাষা প্রচলিত, তা হল - রাঢ়ি
১.৫ হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান ও নদীয়া জেলায় যে আঞ্চলিক উপভষা প্রচলিত, তা হল - রাঢ়ি
১.৬ বাংলা দেশের অধিকাংশ জায়গায় প্রচলিত আছে - বঙ্গালি উপভাষা
১.৭ কামরূপী উপভাষা প্রচলিত আছে - উত্তর-পূর্ববঙ্গে
১.৮ মান্য কথ্যভাষা বলতে বোঝায় - সর্বজনগ্রাহ্য উপভাষা
১.৯ ঝাড়খন্ডি উপভাষায় - আনুনাসিকতার প্রাচুর্য লক্ষ করা যায়
১.১০ সামাজিক উপভাষা নির্ভর করে - জীবিকা, শিক্ষা এবং অর্থের উপরে
(২) নিচের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
২.১ রাঢ়ি উপভাষা কোন্ কোন্ অঞ্চলে প্রচলিত?
উত্তরঃ রাঢ়ি উপভাষা বীরভূম, বর্ধমান, বাঁকুড়ার পূর্বাংশ, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ ও নদীয়া জেলায় প্রচলিত।
২.২ বরেন্দ্রী উপভাষা কোন্ কোন্ অঞ্চলে প্রচলিত?
উত্তরঃ বরেন্দ্রী উপভাষা মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর - পশ্চিমবঙ্গের এই তিন জেলা এবং পূর্বতন পূর্ববঙ্গের রাজশাহি, বগুড়া, রঙ্গপুর এবং পাবনা জেলায় প্রচলিত।
২.৩ Dialect Continuum বা উপভাষা-শৃঙ্খল কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো একটি ভাষার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিভিন্ন আঞ্চলিক উপভাষার মধ্যে পারস্পরিক সাদৃশ্য এবং বোধগম্যতা না থাকলেও সে-ভাষার মান্য রূপটি সেইসব উপভাষাভাষী সকল মানুষের কাছে বোধগম্য বলে এই সূত্রের সমস্ত উপভাষা শৃঙ্খলিত। একেই বলে উপভাষা-শৃঙ্খল।
২.৪ বরেন্দ্রী উপভাষার একটি ভাষাতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তরঃ রাঢ়ি উপভাষার সঙ্গে বরেন্দ্রী উপভাষার সঙ্গে বরেন্দ্রী উপভাষা স্বরধ্বনির অনেকটাই তফাত আছে। তবে কোথাও কোথাও অ্যা-ধ্বনির ব্যবহার একই রকম হয়। যেমন - দ্যান, অ্যাক, অ্যাখন।
২.৫ রাঢ়ি উপভাষার একটি ভাষাতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তরঃ শব্দের শুরুতে শ্বাসাঘাত থাকলে শব্দের মধ্যে বা শেষে অবস্থিত মহাপ্রাণ ধ্বনি অল্পপ্রাণ ধ্বনিতে পরিণত হয়। যেমন - মধু>মদু
২.৬ কামরূপী উপভাষার একটি ভাষাতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তরঃ সঘোষ মহাপ্রাণ ধ্বনি শুধু পদের প্রথমে অপরিবর্তিত থাকে, কিন্তু পদের মাঝে বা শেষে থাকলে তা অল্পপ্রাণ ধ্বনিতে পরিণত হয়। যেমন - ঘা, ঘাট, ধান, ভাত প্রভৃতিতে মহাপ্রাণতা বজায় আছে, কিন্তু বিভূতি > বিবুতি প্রভৃতিতে নেই।
২.৭ সমাজ ভাষা কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো জনগোষ্ঠীর ব্যবহৃত নির্দিষ্ট একটি ভাষা সামাজিক স্তরভেদে যেসব বিভিন্ন রূপে বিভক্ত হয়ে যায়, তাকে বলা হয় সমাজ ভাষা।
২.৮ সাধু ভাষা কথাটি প্রথম কে ব্যবহার করেছিলেন?
উত্তরঃ সাধু ভাষা কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন রাজা রামমোহন রায়।
See More : Full Class 11 Bengali Suggestion 2023
(৩) নিচের রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
৩.১ বাংলা সাধুভাষা ও চলিত ভাষার একটি সংক্ষিপ্ত তুলনামূলক আলোচনা করো।
উত্তরঃ বাংলা কথ্যভাষার যেমন পাঁচটি উপভাষা রয়েছে তেমনি লেখ্য বাংলার দুটি ভাগ আছে - পদ্য আর গদ্য। পড়বার সময় যখন ছন্দ মেনে পড়া হয়, তখন হয় পদ্য। আর যে লেখা পড়ার সময় ছন্দ মেনে পড়া হয়না তাকে বলে গদ্য। বাংলা গদ্যের ভাষা আবার দুরকম। যথা- সাধু আর চলিত। সাধু আর চলিত ভাষার পার্থক্যটি এইরকম -
(১) সাধুভাষায় তৎসম অর্থাৎ সংস্কৃত শব্দ বেশি ব্যবহার করা হয়। চলিত ভাষায় তদ্ভব শব্দের সংখ্যাই বেশি। তাছাড়া চলিত ভাষায় বিদেশী শব্দের প্রয়োগ আনেক বেশি।
(২) সাধুভাষায় সর্বনামের পুর্নরূপ ব্যবহার করা হয়। যেমন - তাহার, যাহার ইত্যাদি। কিন্তু চলিত ভাষায় সর্বনামের সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করা হয়। যেমন - তার, যার ইত্যাদি।
(৩) সাধুভাষায় ক্রিয়াপদের পুর্ণরূপ ব্যবহার করা হয় কিন্তু চলিতে সংক্ষিপ্ত রূপ দেখা যায়। যেমন - খাইতেছেন, খাচ্ছেন।
(৪) সাধুভাষায় বাক্যের পদবিন্যাস কর্তা-কর্ম-ক্রিয়া। কিন্তু চলিত ভাষায় এই নিয়ম সবসময় মানা হয়না। যেমন - বইটা দাও তো আমাকে তুমি।
(৫) সাধুভাষায় সমাসবদ্ধ পদের সংখ্যা বেশি কিন্তু চলিত ভাষায় অনেক কম।
See More : Full Class 11 Bengali Suggestion 2023
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ