West Bengal Class 9 History Suggestion 2023 | নবম শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন ২০২৩ | প্রথম অধ্যায় | ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক
Type Here to Get Search Results !

West Bengal Class 9 History Suggestion 2023 | নবম শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন ২০২৩ | প্রথম অধ্যায় | ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক

প্রথম অধ্যায়

ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক

West Bengal Class 9 History Suggestion 2023 | নবম শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন ২০২৩ | প্রথম অধ্যায় | ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক
West Bengal Class 9 History Suggestion 2023 | নবম শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন ২০২৩ | প্রথম অধ্যায় | ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক

১। বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-

(১.১) ফ্রান্সকে ‘ভ্রান্ত অর্থনীতির জাদুকর’ বলেছেন – 

(ক) এডমন্ড বার্ক 

(খ) অ্যাডাম স্মিথ 

(গ) কুইসনে 

(ঘ) দিদেরো

উত্তরঃ- (খ) অ্যাডাম স্মিথ

(১.২) ফ্রান্সে ডাইরেক্টরি শাসনের সূচনা হয় – 

(ক) ১৭৯২ সালে 

(খ) ১৭৯৩ সালে 

(গ) ১৭৯৪ সালে 

(ঘ) ১৭৯৫ সালে

উত্তরঃ-  (ঘ) ১৭৯৫ সালে

(১.৩) টেইলি ছিল – 

(ক) লবন কর 

(খ) সামন্ত কর 

(গ) ভূমি কর 

(ঘ) অতিরিক্ত প্রত্যক্ষ কর

উত্তরঃ- (গ) ভূমি কর

(১.৪) ডাঃ গিলোটিনের মৃত্যু হয় – 

(ক) গুলিতে 

(খ) গিলোটিনে 

(গ) ফাঁসিতে 

(ঘ) আত্মহত্যা করে

উত্তরঃ- (খ) গিলোটিনে

(১.৫) ‘লেতর ফিলজফিক’ গ্রন্থের লেখক – 

(ক) ভলতেয়ার 

(খ) রুশো 

(গ) মন্তেস্কু 

(ঘ) ডেনিস দিদেরো

উত্তরঃ- (ক) ভলতেয়ার

(১.৬) রোপসপিয়ার ছিলেন – 

(ক) সমাজতন্ত্রী 

(খ) জিরন্ডিস্ট নেতা 

(গ) বোনাপার্টিস্ট নেতা 

(ঘ) জ্যাকোবিন নেতা 

উত্তরঃ- (ঘ) জ্যাকোবিন নেতা

(১.৭) ‘আমিই রাষ্ট্র’ একথা বলেছিলেন – 

(ক) নেপোলিয়ন 

(খ) চতুর্দশ লুই 

(গ) পঞ্চদশ লুই 

(ঘ) ষোড়শ লুই

উত্তরঃ- (খ) চতুর্দশ লুই

(১.৮) ফ্রান্স ছিলো ‘রাজনৈতিক কারাগার’ বলেছেন – 

(ক) রুশো 

(খ) মন্তেস্কু 

(গ) ভলতেয়ার 

(ঘ) দিদেরো

উত্তরঃ- (গ) ভলতেয়ার

(১.৯) ‘রাষ্ট্রকে বাঁচাতে হলে রাজাকে মরতে হবে’ একথা বলেছেন – 

(ক) রোবসপিয়ার 

(খ) হিবার্ট 

(গ) দাঁতোর 

(ঘ) সেন্ট জাস্ট

উত্তরঃ- (ক) রোবসপিয়ার

(১.১০) ভারতের যে শাসক জ্যাকোবিন দলের সদস্য হন তিনি হলেন – 

(ক) হায়দার আলী 

(খ) টিপু সুলতান 

(গ) বালাজী বিশ্বনাথ 

(ঘ) প্রথম বাজীরাও

উত্তরঃ- (খ) টিপু সুলতান

২। অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-

(১) কত খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লব হয়েছিল? 

উত্তরঃ- ১৭৮৯ খ্রীঃ

(২) টাইথ কি? 

উত্তরঃ- চার্চকে যে কর দেওয়া হত তাকে টাইথ বলা হত।

(৩) ‘পার্সিয়ান লেটারস্‌’ গ্রন্থটির রচয়িতা কে? 

উত্তরঃ- মন্তেস্কু

(৪) কত খ্রিস্টাব্দে রাজা ষোড়শ লুইকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছিল? 

উত্তরঃ- ১৭৯৩ খ্রীঃ ২১ জানুয়ারী

(৫) কত সালে নতুন ফরাসি সংবিধান প্রনয়ন করা হয়েছিল? 

উত্তরঃ- ১৭৯১ খ্রীঃ ৩০ সেপ্টেম্বর

(৬) বিপ্লব পূর্ববর্তী ফরাসি অর্থনীতিকে অ্যাডাম স্মিথ কি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন? 

উত্তরঃ- ভ্রান্ত অর্থনীতির জাদুঘর

(৭) বিপ্লব পূর্ববর্তী ফরাসি সমাজ কটি স্টেটে বিভক্ত ছিল? 

উত্তরঃ- তিনটি

(৮) রুশো কর্তৃক রচিত একটি গ্রন্থের নাম লেখ। 

উত্তরঃ- সোসাল কনট্রাক

(৯) কত খ্রিস্টাব্দে রাজা ষোড়শ লুই স্টেট জেনারেল অধিবেশনের আহ্বান করেন? 

উত্তরঃ- ১৭৮৯ 

(১০) কত সালে ফ্রান্সে জ্যাকোবিন শাসনের সূচনা হয়েছিল? 

উত্তরঃ- ১৭৯৩ খ্রীঃ ২ রা জুন

(১১) ‘স্পিরিট অফ লজ’ গ্রন্থটি রচয়িতা কে? 

উত্তরঃ- মন্তেস্কু

(১২) বাস্তিল দুর্গের পতন কত সালে ঘটেছিল? 

উত্তরঃ- ১৭৮৯ খ্রীঃ ১৪ জুলাই

(১৩) একটি বৈপ্লবিক নারী সংগঠনের নাম উল্লেখ কর। 

উত্তরঃ- সোসাইটি অফ রেভুলনারিপাবলিক উইমেন

(১৪) সন্ত্রাসের পতন কবে ঘটেছিল? 

উত্তরঃ- ১৭৯৩ খ্রীঃ ১৭ জুলাই

(১৫) ‘আমি যা ইচ্ছা করি তাই আইন’ - এটি কার উক্তি? 

উত্তরঃ- ষোড়শ লুই

(১৬) জ্যাকোবিন দলের তিন জন নেতার নাম লেখ। 

উত্তরঃ- রোবসপিয়ার, হিবার্ট ও দাঁতো

(১৭) অ্যাডাম স্মিথ এর লেখা একটি গ্রন্থের নাম লেখ। 

উত্তরঃ- দ্য ওয়েলথ অফ নেশনস

(১৮) ষোড়শ লুই কোন বংশের রাজা ছিলেন? 

উত্তরঃ- বুরবোঁ

(১৯) কোন ঘটনাকে ফরাসি বিপ্লবের সূচনা বলে ধরা হয়? 

উত্তরঃ- ১৭৮৯ খ্রীঃ বাস্তিল দূর্গের পতন

(২০) তুর্গো কে ছিলেন? 

উত্তরঃ- ষোড়শ লুইয়ের অর্থমন্ত্রী

(২১) কোন্‌ শব্দ থেকে বুর্জোয়া শব্দের উৎপত্তি হয়েছে? 

উত্তরঃ- ফরাসি শব্দ 'বার্জেইস' থেকে।

(২২) কবে টেনিস কোর্টের শপথ গৃহীত হয়? 

উত্তরঃ- ১৭৮৯ খ্রীঃ ২০ জুন

(২৩) সাঁকুলেৎ শব্দের আক্ষরিক অর্থ কি? 

উত্তরঃ- প্যারিসের নিম্নশ্রেনীর বিপ্লবী জনগন

(২৪) ভলতেয়ারের প্রকৃত নাম কি? 

উত্তরঃ- ফ্রাঙ্কোইস ম্যারি আরুয়েৎ

(২৫) রুশোর লেখা দুটি গ্রন্থের নাম লেখ। 

উত্তরঃ- অসাম্যের সূত্রপাত ও সামাজিক চুক্তি

(২৬) বাস্তিল কি? 

উত্তরঃ- ফ্রান্সের বিশালাকার একটি দুর্গ

(২৭) ফ্রান্সের স্বাধীনতা দিবস কবে পালিত হয়? 

উত্তরঃ- ১৪ ই জুলাই

(২৮) ফরাসি বিপ্লবের আদর্শ নীতি কি ছিল? 

উত্তরঃ- সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা

(২৯) ফরাসি বিপ্লবের দুই নেত্রীর নাম লেখ। 

উত্তরঃ- মাদাম রোঁলা ও মারি আঁতোয়ানেত

(৩০) লাল সন্ত্রাস এর নেতা কে ছিলেন? 

উত্তরঃ- রোবসপিয়ার

৩। দুটি বা তিনটি বাক্যে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-

(৩.১) টেনিস কোর্টের শপথ বলতে কি বোঝ?

উত্তরঃ- ফরাসি জাতীয় সভার তৃতীয় সম্প্রদায়ের সদস্যরা 1979 খ্রিস্টাব্দের 20 জুন আইন সভায় প্রবেশ করতে গিয়ে দেখেন যে সভা কক্ষ বন্ধ রয়েছে। এরপর ক্ষুব্ধ সদস্যরা মিরাবোর ও আবে সিয়েসের নেতৃত্বে নিকটবর্তী টেনিস খেলার মাঠে জড়ো হয়ে শপথ গ্রহণ করেন যে, ফ্রান্সের জন্য একটি নতুন সংবিধান রচনা না করা পর্যন্ত তারা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাবেন। এই ঘটনা টেনিস কোর্টের শপথ নামে পরিচিত।

(৩.২) অঁসিয়া রেজিম কি?

উত্তরঃ- 1789 খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে যে মহান ফরাসি বিপ্লব হয়েছিল তার পূর্ববর্তী কালে তথা সমগ্র ইউরোপের অধিকাংশ দেশে যে রাজনৈতিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য মূলক ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল তা অঁসিয়া রেজিম নামে পরিচিত ছিল।

(৩.৩) ফিজিওক্র্যাট কাদের বলা হত?

উত্তরঃ- বিপ্লবের আগে ফ্রান্সের মার্কেনটাইল মতবাদ এর বিরোধী এবং এডাম স্মিথের অনুগামী একশ্রেণীর অর্থনীতিবিদদের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এই অর্থনীতিবিদগণ শিল্প বাণিজ্য সংরক্ষন নীতি ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের বিরোধিতা করেন এবং অবাধ বাণিজ্য ও বেসরকারি শিল্প স্থাপনের দাবি জানান। এরাই ফিজিওক্র্যাট নামে পরিচিত।

(৩.৪) করভি কি?

উত্তরঃ- সামন্ততান্ত্রিক আইন অনুসারে সামন্ত প্রভু অনেক প্রকার ভেট পাবার অধিকারী ছিলেন। সামন্ততান্ত্রিক রীতি অনুসারে তার দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি কৃষকদের নিকট থেকে সামাজিক সম্মান লাভের পাশাপাশি কতকগুলি বিশেষ সুবিধা ভোগ করতেন। কৃষকরা ম‍্যানরের প্রভুকে বহুভাবে তাদের কায়িক শ্রম এবং আর্থিক কর দিতে বাধ্য ছিল। আর এই আর্থিক করে মধ্যে বাধ্যতামূলক শ্রম দানকেই করভি বলা হত।

(৩.৫) প্যারি কমিউন বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ- বাস্তিল দুর্গের পতনের পর বিপ্লবী জনতা প্যারিস শহরের পৌর শাসন পরিচালনার উদ্দেশ্যে একটি কমিটি গঠন করে। এটি প্যারি কমিউন নামে পরিচিত।

(৩.৬) ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব’ বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ- ফ্রান্সের জ্যাকোবিন দল 1793 খ্রিস্টাব্দের জুন মাস থেকে 1794 খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাস পর্যন্ত - এই 13 মাস ধরে একটি কেন্দ্রীভূত স্বৈরশাসন ব্যবস্থা কায়েম করে। তারা ভীতিপ্রদর্শন সন্ত্রাস ও হত্যাকাণ্ড চালিয়ে দেশ এবং বিপ্লবকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছিল। এ কারণে যে জ্যাকোবিনদের উক্ত 13 মাসের শাসনকাল ফ্রান্সের ইতিহাসে ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব’ নামে পরিচিত।

(৩.৭) ‘সেপ্টেম্বর হত্যাকান্ড’ বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ- ফ্রান্সে রাজতন্ত্রের সমর্থক বহু মানুষ কারাগারে বন্দি ছিল। ফ্রান্সের রাজতন্ত্র বিরোধী উত্তেজিত জনতা কারা কক্ষে ঢুকে রাজভক্ত সন্দেহে হাজার হাজার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে। আর এই ঘটনাটি 1792 খ্রিস্টাব্দে 2 থেকে 5 সেপ্টেম্বরের মধ্যে হয়েছিল। তাই এই ঘটনাটি সেপ্টেম্বর হত্যাকান্ড নামে পরিচিত ছিল।

(৩.৮) গ্রেট ফেয়ার বা মহা আতংক কি?

উত্তরঃ- বাস্তিল দুর্গের পতনের পর ফ্রান্সের শহরাঞ্চলে বিপ্লবের ব্যাপক প্রসার ঘটে। এই সময় গ্রামাঞ্চলে গুজব রটে যায় যে, অভিজাতদের ভাড়াটে গুন্ডা ও সেনাবাহিনী গ্রামের কৃষকদের শায়েস্তা করতে এগিয়ে আসছে। এই গুজবের ফলে গ্রামাঞ্চলে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে যা মহা আতঙ্ক বা মহাভয় নামে পরিচিত ছিল।

৪। রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ-

(৪.১) বাস্তিল দুর্গের পতনের কারণ ও গুরুত্ব আলোচনা কর।

উত্তরঃ- ফরাসি রাজা ষোড়শ লুই বুর্জোয়াদের প্রবল চাপের কাছে নতি স্বীকার করে তিন সম্প্রদায়ের একত্রে অধিবেশন ও মাথাপিছু ভোটের দাবি মেনে নেন। এই ঘটনা সাধারণ মানুষের মনে আলোড়ন সৃষ্টি করে। কিন্তু প্রবল চাপে পড়ে ষোড়শ লুই বুর্জোয়াদের দাবি মেনে নিলেও তিনি মন থেকে এই ঘটনা মানতে পারেননি। তিনি প্যারিস ও ভার্সাই শহরে প্রায় ত্রিশ হাজার সেনা মোতায়েন করেন। এরপর ষোড়শ লুই জনপ্রিয় অর্থমন্ত্রী নেকারকে পথচ‍্যুত করলে প্যারিসের উন্মত্ত জনতা হিংসার পথ বেছে নেন। রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি হয়, জনতা অস্ত্রের দোকান ও গির্জাগুলোতে লুন্ঠন করে। 

     তাছাড়াও ঠিক এই সময়েই খাদ্যের দাবিতে হাজার হাজার মানুষ গ্রাম থেকে এসে প্যারিসের উত্তেজিত সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলিত হলে পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। সশস্ত্র জনতা সরকারি দপ্তর গুলিতে আক্রমণ চালিয়ে বহু নথিপত্র পুড়িয়ে দেয়, অস্ত্রাগার লুন্ঠন করে। এরপর সাত থেকে আট হাজার সাধারণ জনতা 1789 খ্রিস্টাব্দের 14 ই জুলাই কুখ্যাত বাস্তিল দুর্গের রক্ষীদের হত্যা করে দখল করে এবং বন্দীদের মুক্তি করা যায়।

    বাস্তিল দুর্গ ছিল স্বৈরশাসনের প্রতীক। বিনা বিচারে বহু নিরপরাধ মানুষকে এখানে বন্দি করে রাখা হতো। বাস্তিলের পতনে রাজতন্ত্র, অভিজাততন্ত্রের উপর তীব্র আঘাত নেমে আসে। প্যারিসের শাসন ক্ষমতা বুর্জোয়াদের হাতে চলে যায়। প্যারি কমিউন গঠন করে তারা প্যারিসে শাসন চালাতে থাকেন। ঐতিহাসিক গুডউইনের মতে - 

“বাস্তিলের পতনের ঘটনা সমগ্র বিশ্বে স্বাধীনতার উন্মেষ কাল হিসেবে চিহ্নিত”।

(৪.২) ফরাসি বিপ্লবের পিছনে দার্শনিকদের অবদান ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ- ফরাসি বিপ্লব পৃথিবীর ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। যেকোনো বিপ্লবের মতো ফরাসি বিপ্লবের পিছনে সামাজিক,রাজনৈতিক,অথনৈতিক কার দায়ী ছিল। পাশাপাশি দার্শনিকরা ফরাসি বিপ্লবের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল। তাই বিপ্লবে তাদের অবদান কম নয়। যেসমস্ত দার্শনিক ফরাসি বিপ্লবে অবদান রেখেছিলেন তাদের ভূমিকা নিন্মাবলি –

   মন্তেস্কু : পেশায় আইনজীবি ফরাসি দার্শনিক মন্তেস্কু ছিলেন বিপ্লব বিমুখ এবং নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের সমর্থক৷ ১৭৪৮ খিঃ তিনি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ “The Spirit of Laws”–এ রাজার ঈশ্বরদত্ত ক্ষমতাধর বিরোধিতা করে, ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির সমর্থন করেন। তার অন্য গ্রন্থটি হল ‘দি পার্সিয়ান লেটার্স’ – এ ফ্রান্সের প্রচলিত সমাজ, অভিজাততন্ত্র ও রাজতন্ত্রের কঠোর সমালোচনা করেন৷

   ভলতেয়ার : কবি, নাট্যকার, সাহিত্যিক, দার্শনিক ভলতেয়ার ইউরোপীয় সাহিত্য জগতের মধ্যমণি৷ সমকালিন ফ্রান্সের গির্জার দুর্নীতি, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অনাচার, বৈষম্যকে সর্বসমক্ষে তুলে ধরে এক জাগরণ সৃষ্টি করেন। তিনি ছিলেন প্রজাহিতৈষী রাজতন্ত্রের সমর্থক৷ তার রচিত দুটি বিখ্যাত গ্রন্থ হল – ‘কাঁদিদ’, ‘লেতর ফিলোজফিক’।

   রুশো : ফরাসি দার্শনিকদের মধ্যে সর্বপেক্ষা জনপ্রিয় রুশো৷ তাকে ফরাসি বিপ্লবের জনক বলা হয়৷ সামাজিক চুক্তি’ নামক গ্রন্থে তিনি বলেন “Man is born free, but everywhere he is in chains.” এছাড়া ‘অসাম্যের সূত্রপাত’ নামক গ্রন্থে তিনি প্রচলিত সামাজিক কুসংস্কার ও বৈষম্য,অত্যাচারের মূলে কুঠারাঘাত করেছেন৷ রাজার দ্বৈত অধিকারকে তিনি অস্বীকার করেছেন।

(৪.৩) ফ্রান্সে নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকারের ঘোষণা সম্বন্ধে লেখো।

উত্তরঃ- ফরাসি সংবিধান সভা মূল সংবিধান রচনা আগে ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণা নামে একটি দলিল প্রকাশ করে।

ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণাঃ

 (এক) ঘোষণাপত্রের ভিত্তিঃ- ফরাসি সংবিধান সভা প্রকাশিত ‘ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণাপত্র’ রচনার ক্ষেত্রে ‘আমেরিকার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’ এবং ইংল্যান্ডের ‘ম্যাগনা কার্টা’ ও ‘বিল অফ্‌ রাইট্‌স’, লক, রুশো, মন্তেস্কু প্রমুখ দার্শনিকের মতাদর্শ প্রভৃতির বিশেষ প্রভাব লক্ষ করা যায়।

(দুই) মানুষের অধিকার ঘোষণাঃ- ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণাপত্রে বলা হয় যে – (১) মানুষ জন্মগতভাবে মুক্ত ও স্বাধীন (২) মানুষের জন্মগত অধিকার গুলি পবিত্র ও অলঙ্ঘনীয় (৩) আইনের চোখে সব মানুষ সমান (৪) রাষ্ট্রের প্রকৃত সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হলো জনগণ (৫) যোগ্যতা অনুসারে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পাওয়ার অধিকারী (৬) বাক্‌স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার মানুষের সর্বজনীন অধিকার।

(তিন) সীমাবদ্ধতাঃ- ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণাপত্রের কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। যেমন – (১) ঘোষণাপত্রে সামাজিক সাম্যের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি (২) এতে মানুষের অর্থনৈতিক অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি (৩) এতে শিক্ষার অধিকার সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি (৪) মানুষের সংঘটিত আন্দোলন করার অধিকার সম্পর্কেও ঘোষণাপত্রটি নীরব থেকেছে (৫) নাগরিকের অধিকারের কথা বলা হলেও তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে ঘোষণাপত্রে কিছুই বলা হয়নি। 

(চার) গুরুত্বঃ- কিছু সীমাবদ্ধতা সত্বেও ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকারের ঘোষণাপত্রের গুরুত্বকে মোটেই অস্বীকার করা যায় না। ঐতিহাসিক ওলার বলেছেন যে, এই ঘোষণার মাধ্যমে – “বিশেষ অধিকার ও অসাম্যের বিরুদ্ধে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে”। তিনি এই  ঐতিহাসিক ঘোষণাপত্রকে ‘পুরাতনতন্ত্রের মৃত্যুর পরোয়ানা’ বলে অভিহিত করেছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

10 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

LightBlog

Below Post Ad

LightBlog

AdsG

close