জীবনবিজ্ঞান
নবম শ্রেণি
পূর্ণমান - ৫০
১. প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে তার ক্রমিক সংখ্যাসহ বাক্যটি সম্পূর্ণ করে লেখো :
১.১ যে পর্বের প্রাণীদের মধ্যে কোলোব্লাস্ট কোশ দেখা যায় তা শনাক্ত করো -
(ক) নিমাটোডা
(খ) নিডারিয়া
(গ) টিনোফোরা
(ঘ) মোলাস্কা
উত্তরঃ (গ) টিনোফোরা
১.২ নীচের বক্তব্যগুলি পড়ো এবং সঠিক বক্তব্যটি চিহ্নিত করো -
(ক) কনড্রিক্থিস শ্রেণীর অন্তর্গত প্রাণীদের অন্তঃকঙ্কাল অস্থি দিয়ে তৈরি
(খ) টেরিডোফাইটার প্রধান উদ্ভিদদেহটি লিঙ্গধর
(গ) মোলাস্কা পর্বের অন্তর্গত প্রাণীদের দেহ খন্ডিত
(ঘ) ব্যক্তবীজীর প্রধান উদ্ভিদদেহটি রেণুধর
উত্তরঃ (ঘ) ব্যক্তবীজীর প্রধান উদ্ভিদদেহটি রেণুধর
১.৩ যে জোড়টি সঠিক নয় সেটি নির্বাচন করো -
(ক) প্যারেনকাইমা কলা - কোশান্তর রন্ধ্র উপস্থিত
(খ) আবরণী কলা - ভিত্তিপর্দা উপস্থিত
(গ) স্ক্লেরেনকাইমা কলা - জীবিত কোশ উপস্থিত
(ঘ) স্নায়ুকলা - স্নায়ুকোশ এবং নিউরোগ্লিয়া উপস্থিত
উত্তরঃ (গ) স্ক্লেরেনকাইমা কলা - জীবিত কোশ উপস্থিত
১.৪ যে জোড়টি সঠিক নয় সেটি নির্বাচন করো -
(ক) ফোটোফসফোরাইলেশন - ATP সংশ্লেষ
(খ) গ্লাইকোলাইসিস - পাইরুভেট সংশ্লেষ
(গ) ক্রেবস চক্র - সাইট্রিক অ্যাসিড সংশ্লেষ
(ঘ) অরনিথিন চক্র - অ্যামোনিয়া সংশ্লেষ
উত্তরঃ (ঘ) অরনিথিন চক্র - অ্যামোনিয়া সংশ্লেষ
১.৫ সঠিক বক্তব্যটি নিরুপণ করো -
(ক) লোহিত রক্তকণিকা ফ্যাগোসাইটোসিস পদ্ধতিতে রোগজীবাণু ধ্বংসে সাহায্য করে
(খ) বেসোফিল হিস্টামিন শোষণ করে অ্যালার্জি প্রতিরোধে সাহায্য করে
(গ) লিম্ফোসাইট অ্যান্টিবডি সংশ্লেষ করে রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে
(ঘ) ইওসিনোফিল হেপারিন নিঃসরণ করে রক্তবাহে রক্ততঞ্চন রোধে সাহায্য করে
উত্তরঃ (গ) লিম্ফোসাইট অ্যান্টিবডি সংশ্লেষ করে রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে
১.৬ প্রজাপতি রেচন অঙ্গটি চিহ্নিত করো -
(ক) নেফ্রিডিয়া
(খ) ম্যালপিজিয়ান নালিকা
(গ) ফ্লেমকোশ
(ঘ) বৃক্ক
উত্তরঃ (খ) ম্যালপিজিয়ান নালিকা
১.৭ বাষ্পমোচন সংক্রান্ত সঠিক বক্তব্যটি নিরূপণ করো -
(ক) বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতা হ্রাস পেলে বাষ্পমোচনের হার হ্রাস পায়
(খ) বায়ুপ্রবাহ বৃদ্ধি পেলে বাষ্পমোচনের হার বৃদ্ধি পায়
(গ) আলোর তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে বাষ্পমোচনের হার হ্রাস পায়
(ঘ) পরিবেশের তাপমাত্রা হ্রাস পেলে বাষ্পমোচনের হার বৃদ্ধি পায়
উত্তরঃ (খ) বায়ুপ্রবাহ বৃদ্ধি পেলে বাষ্পমোচনের হার বৃদ্ধি পায়
১.৮ নীচের যে জোড়টি সঠিক তা স্থির করো -
(ক) সালোকসংশ্লেষের আলোক-নির্ভর দশা - ক্লোরোপ্লাস্টের স্ট্রোমা
(খ) গ্লাইকোলাইসিস - কোশের মাইটোকন্ড্রিয়া
(গ) রসের উৎস্রোত - জাইলেম কলা
(ঘ) সালোকসংশ্লেষের আলোক - নিরপেক্ষ দশা - ক্লোরোপ্লাস্টের গ্রানা
উত্তরঃ (গ) রসের উৎস্রোত - জাইলেম কলা
১.৯ নীচের যে বিশেষ সংযোগী কলাকে 'রিজার্ভ পেসমেকার' বলা হয় সেটিকে শনাক্ত করো -
(ক) SA নোড
(খ) পারকিনজি তন্তু
(গ) হিজের বান্ডিল
(ঘ) AV নোড
উত্তরঃ (ঘ) AV নোড
২. নীচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থানগুলোতে উপযুক্ত শব্দ বসাও :
২.১ সূর্যালোকের __________ কণা শোষণ করে ক্লোরোফিল সক্রিয় হয়।
উত্তরঃ ফোটন
২.২ A গ্রুপের ব্যক্তির রক্তে ___________ অ্যাগ্লুটিনিন থাকে।
উত্তরঃ বিটা
২.৩ পেঁপে গাছের তরুক্ষীরে ___________ নামক উৎসেচক থাকে যা প্রোটিন পরিপাকে সাহায্য করে।
উত্তরঃ প্যাপাইন
৩. নীচের বাক্যগুলো সত্য অথবা মিথ্যা নিরূপণ করো :
৩.১ নান জৈব অণু মিশ্রিত সমুদ্রের গরম জলকে বিজ্ঞানী সিডনি ফক্স 'হট ডাইলিউট সুপ' নামে অভিহিত করেন।
উত্তরঃ মিথ্যা
৩.২ প্রোটিস্টা জাতীয় জীবদের কোশ প্রোক্যারিওটিক প্রকৃতির।
উত্তরঃ মিথ্যা
৩.৩ নাইট্রোজেনযুক্ত ক্ষার, পেন্টোজ শর্করা ও ফসফেট মূলক নিয়ে নিউক্লিওটাইড গঠিত।
উত্তরঃ সত্য
৪. A - স্তম্ভের দেওয়া শব্দের সঙ্গে B - স্তম্ভে দেওয়া সর্বাপেক্ষা উপযুক্ত শব্দটির সমতা বিধান করে উভয় স্তম্ভের ক্রমিক নং উল্লেখসহ সঠিক জোড়টি পুনরায় লেখো :
উত্তরঃ
৫. একটি শব্দে বা একটি বাক্যে উত্তর দাও :
৫.১ ভাজক কলার একটি কাজ উল্লেখ করো।
উত্তরঃ ভাজক কলার একটি কাজ হল - ভাজক কলার কোশগুলি ক্রমাগত মাইটোসিস পদ্ধতিতে বিভাজিত হয়ে কোশের সংখ্যা বৃদ্ধি করে ও উদ্ভিদ অঙ্গের বৃদ্ধি ঘটায়।
৫.২ বিসদৃশ শব্দটি বেছে লেখো : পেপসিন, লাইপেজ, ট্রিপসিন, ইরেপসিন
উত্তরঃ বিসদৃশ শব্দটি হল - লাইপেজ
৫.৩ নীচে সম্পর্কযুক্ত একটি শব্দ জোড় দেওয়া আছে। প্রথম জোড়টির সম্পর্ক বুঝে দ্বিতীয় জোড়টির শূণ্যস্থানে উপযুক্ত শব্দ বসাও :
নাইট্রোজেনযুক্ত রেচন পদার্থ : কুইনাইন : : নাইট্রোজেনবিহীন রেচন পদার্থ : __________।
উত্তরঃ নাইট্রোজেনযুক্ত রেচন পদার্থ : কুইনাইন : : নাইট্রোজেনবিহীন রেচন পদার্থ : রজন
৬. দুই-তিন বাক্যে উত্তর দাও :
৬.১ "এই পর্বের প্রাণীদের দেহ আংটির মতো ছোটো ছোটো খন্ডক নিয়ে গঠিত" - পর্বটির নাম ও একটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তরঃ 👉 পর্বটির নাম অ্যানিলিডা বা অঙ্গুরীমাল।
👉 অ্যানিলিডা পর্বের বৈশিষ্ট্য:
(i) এই পর্বের প্রাণীদের দেহ অসংখ্যা আংটির মত খন্ডক বা সোমাইট বা মেটামিয়ার নিয়ে গঠিত।
(ii) দেহের প্রতিটি খণ্ডকে একজোড়া করে গমন অঙ্গ বা সিটা ও রেচন অঙ্গ বা নেফ্রিডিয়া থাকে।
৬.২ এন্ডোপ্লাজমীয় জালিকার দুটি কাজ উল্লেখ করো।
উত্তরঃ (ক) ক্ষরণযোগ্য প্রোটিন, লিপিড ও স্টেরয়েড হরমোন ইত্যাদি সংশ্লেষ অংশগ্রহণ করে।
(খ) মেদকলায় লিপিড সংশ্লেষ হয়ে অমসৃণ এন্ডোপ্লাজমিয় জালিকায় জমা থাকে।
(গ) অমসৃণ এন্ডোপ্লাজমিক জালিকার পর্দায় রাইবোজোম mRNA -র সাহায্যে প্রোটিন সংশ্লেষণ করে।
৬.৩ উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পরজীবীয় ও মিথোজীবীর পুষ্টির দুটি পার্থক্য উল্লেখ করো।
উত্তরঃ
৬.৪ সৌরশক্তির আবদ্ধকরণ ও রূপান্তরে সালোকসংশ্লেষের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ পৃথিবীতে সকল শক্তির উৎসই হল সৌরশক্তি। সবুজ উদ্ভিদের ক্লোরোফিল সূর্যালোকের ফোটন কণা শোষণ করে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা ATP - তে রাসায়নিক শক্তি হিসেবে সাময়িকভাবে আবদ্ধ রাখে। একেই বলা হয়ে থাকে সৌরশক্তির আবদ্ধকরণ। পরবর্তীতে রাসায়নিক শক্তিতে রুপান্তরিত শক্তিতে রুপান্তরিত এই সৌরশক্তি উৎপন্ন গ্লুকোজের মধ্যে স্থৈতিক শক্তি হিসেবে সঞ্চিত হয়। একে বলে সৌরশক্তির স্থৈতিক শক্তিতে রূপান্তর।
উপরোক্ত দুই ধাপে সংঘটিত সমগ্র প্রক্রিয়াটিকেই সালোকসংশ্লেষ বলা হয় যেই প্রক্রিয়ায় সৌরশক্তির আবদ্ধকরণ ও তার রূপান্তর ঘটে।
৬.৫ মুখবিবরে কীভাবে শর্করাজাতীয় খাদ্যের পরিপাক হয় তা বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ শর্করা জাতীয় খাদ্য বিশেষত সেদ্ধ শ্বেতসার মুখবিবরে লালারসের টায়ালিনের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে মলটোজে পরিনত হয়। এই মলটোজের ওপর লালারসের উপস্থিত স্বল্প পরিমাণ মলটেজ কিয়া করে সামান্য গ্লুকোজ উৎপাদন করে।
৬.৬ কোশ থেকে কোশে পরিবহণে ব্যাপণের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ মাটি থেকে শোষিত কৈশিক জল ব্যাপন পদ্ধতি দ্বারা মূলের কোশগুলি দিয়ে জাইলেম বাহিকা অধিক পৌছোয়। মূল দ্বারা শোষিত এই জলই উদ্ভিদের পরিবহণ মাধ্যম।
বাষ্পমোচনের সময় পত্ররন্ধ্র পথে জল বাষ্পের আকারে ব্যাপিত হয়। এর ফলে পাতার ব্যাপন চাপের ঘাটতি ঘটে। এই ঘাটতি পূরনের জন্য মূল অবধি বিস্তৃত জল স্তম্ভে উর্ধ্বমুখীটান সৃষ্টি হয়। ফলে রথের উৎস্রোত সম্ভব হয়।
শ্বসন ও সালোকসংশ্লেষের জন্য প্রয়োজনীয় যথাক্রমে অক্সিজেন ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের কোশান্তর পরিবহণ সম্পূর্ণরূপে ব্যাপনের ওপর নির্ভরশীল।
৬.৭ একাইনোডার্মাটা পর্বের দুটি শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তরঃ একাইনোডার্মাটা পর্বের দুটি শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য হলো -
(ক) অখণ্ডায়িত দেহের বহির্ভাগ চুননির্মিত (Calcareous) কাঁটা (Spine) ও অসিকলে (Ossicle) আবৃত।
(খ) পূর্ণাঙ্গ প্রাণী অরীয় প্রতিসম (Radial symmetry) ও পঞ্চপার্শ্বীয় (Pentamerous) হলেও লার্ভা দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম।
৭. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর লেখো :
৭.১ মানবদেহে যকৃতের অবস্থান ও দুটি ভূমিকা উল্লেখ করো। নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে জাইলেম ও ফ্লোয়েমের পার্থক্য নিরূপণ করো :
- উপাদান
- কাজ
উত্তরঃ যকৃতের অবস্থান: যকৃত মানবদেহের বক্ষপিঞ্জরে মধ্যচ্ছদার নিচের অংশে অবস্থিত।
যকৃতের ভূমিকা:
(ক) যকৃত অব্যবহৃত অ্যামিনো এসিড থেকে অরনিথিন চক্র এর মাধ্যমে ইউরিয়া উৎপন্ন করে যার রক্ত দ্বারা বাহিত হয়ে পৌঁছায় ও মূত্রের মাধ্যমে রেচিত হয়।
(খ) বিভিন্ন স্নেহ জাতীয় পদার্থ যেমন কোলেস্টেরল, লেসিথিন ইত্যাদির অপসারণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
(গ) যকৃৎ লোহিত রক্ত কণিকায় হিমোগ্লোবিন কে বিশ্লিষ্ট করে পিত্তরঞ্জক বিলিরুবিন ও বিলিভারডিন উৎপন্ন করে যা মল ও মূত্র এর মাধ্যমে দেশের বাইরে বেরিয়ে যায়।
জাইলেম ও ফ্লোয়েমের পার্থক্যগুলি হলো -
৭.২ "উদ্ভিদের দেহে কোনো নির্দিষ্ট রেচন অঙ্গ থাকে না" - তাহলে উদ্ভিদ কীভাবে রেচন পদার্থ ত্যাগ করে বলে তোমার মনে হয়? রক্ততঞ্জন কীভাবে ঘটে ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ উদ্ভিদের দেহে নির্দিষ্ট কোনো রেচন অঙ্গ থাকে না। তাই উদ্ভিদেরা নিম্নলিখিত উপায় রেচন পদার্থ ত্যাগ করে -
পত্রমোচনঃ বিভিন্ন পর্ণমোচী উদ্ভিদ যেমন শিরীষ, আমরা,শিমুল, সজনে ইত্যাদির পাতা বছরের নির্দিষ্ট ঋতুতে ঝরে পড়ে। এই ঝরে পড়া পাতার মধ্যে দিয়েই পাতায় সঞ্চিত রেচন পদার্থ ত্যাগ করে। অন্যান্য চিরহরিৎ উদ্ভিদরা সারা বছর ধরে অল্পবিস্তর পত্র মোচন দ্বারা রেচন পদার্থ ত্যাগ করে।
বাকল মোচনঃ কিছু উদ্ভিদ যেমন পেয়ারা, অর্জুন প্রভৃতি গাছের ছাল বা বাকল মোচন এর মাধ্যমে তাদের ত্বকে সঞ্চিত রেচন পদার্থ ত্যাগ করে।
ফল মোচনঃ তেতুল, আপেল, লেবু ইত্যাদি ফলে সঞ্চিত টারটারিক , অ্যাসেটিক এর মত কিছু জৈব অ্যাসিড রেচন পদার্থ হিসেবে ত্যাগ করে তাদের ফল ঝরে পড়ার মাধ্যমে।
রক্ত তঞ্চন এর বিভিন্ন পর্যায়:
রক্ত তঞ্চন ঘটে থাকে মূলত তিনটি ধাপে হয় -
প্রথম ধাপঃ
আঘাতপ্রাপ্ত স্থান থেকে এবং ফেঁটে যাওয়া অনুচক্রিকা থেকে থ্রম্বোপ্লাস্টিন নিঃসৃত হয়। এই থ্রম্বোপ্লাস্টিন ক্যালসিয়াম আয়নের সঙ্গে মিলিত হয়ে প্রথ্রোমবিন (Prothrombin) নামক উৎসেচক গঠন করে।
থ্রম্বোপ্লাস্টিন + Ca+ → প্রথ্রোম্বিন
দ্বিতীয় ধাপঃ
প্রথ্রোম্বিনেজ (prothrombinase) উৎসচক হেপারিনের ক্রিয়া বিনষ্ট করে এবং প্রথ্রোমবিনকে থ্রম্বিনে পরিণত করে। প্রথ্রোম্বিনকে ফ্যাক্টর এক্স বলা হয়।
প্রথ্রোম্বিন → থ্রমবিন [প্রথ্রমবিনেজ এর দ্বারা ]
তৃতীয় ধাপঃ
থ্রোম্বিন ফাইব্রিনোজেন এর সঙ্গে মিলিত হয়ে ফাইব্রিন গঠন করে। ফাইব্রিন জালক রক্তকণিকা গুলো আটকে যায় এবং জেলির মত তঞ্চিত রক্ত বা ক্লট গঠন করে।
৭.৩ মানবদেহে মূত্র সৃষ্টিতে নেফ্রনের ভূমিকা আলোচনা করো। মানবদেহে লসিকার দুটি ভূমিকা উল্লেখ করো।
উত্তরঃ নেফ্রনের গ্লোমেরিউলাস পরাপরিস্রাবক রূপে কাজ করে। রেচন পদার্থযুক্ত রক্ত অন্তর্মুখী ধমনিকা দিয়ে গ্লোমেরুলাসে প্রবেশ করে। অন্তর্মুখী ধমনিকা অপেক্ষা গ্লোমেরুলাসের জালকের প্রাচীরের ব্যাস খুব কম হওয়ায় গ্লোমেরুলাসে রক্ত চাপ বেড়ে যায়। ফলে রক্তের জলীয় অনহশ পরিস্রুত হয়ে ব্যোওম্যানের ক্যাপসুলের গহ্বরে প্রবেশ করে। অপরিস্রুত তরল বহির্মুখী ধমনিকা দিয়ে দিয়ে রক্তে ফিরে যায়। গ্লোমেরুলার পরিস্রুত তরলে জল এবং জলে দ্রবীভূত পদার্থ যেমন - ইউরিয়া, ইউরিক অ্যাসিড, ক্রিয়েটিনিন, অ্যামাইনো অ্যাসিড, গ্লুকোজ সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন ইত্যাদি থাকে। কিন্তু প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে না। প্রতি মিনিটে বৃকের মাধ্যমে 125ml রক্তে পরিস্রুত হয়।
ব্যোওম্যনের ক্যাপসুল থেকে পরিস্রুত তরল পরাসংবর্ত নালিকায় প্রবেশ করে। এখানে পরিস্রুত তরলের নির্বাচিত অংশ পুনর্বিশেষিত হয়ে রক্তে প্রবেশ করে। উল্লেখ্য বিভিন্ন আয়নের পুনর্বিশোষণ সক্রিয় পদ্ধতিতে ঘটে।
বৃক্কীয় নালিকার যে সব পদার্থের পুনর্বিশোষণ সম্পন্ন হয় সেগুলি হল - গ্লুকোজ, অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন, হরমোন, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড, ফসফেট, বাইকার্বনেট এবং জল। পিটুইটারি থেকে ক্ষ্রিত ADH জলের পুনর্বিশোষণে প্রধান ভূমিকা নেয়, ADH হরমোনের অভাবে জলের পুনর্বিশোষণ হয় না, ফলে ঘন ঘন মূত্র ত্যাগ হতে থাকে। একে ডায়াবেটিস ইন্সিপিডাস বা শর্করাবিহীন বহুমূত্র রোগ বলে।
পুনর্বিশোষণের সময় থেকেই বৃক্কীয় নালিকায় গাত্র থেকে কয়েকটি পদার্থ ক্ষরিত হয়ে মূত্রে মিশে যায়। এইসব ক্ষরিত হয়ে মূত্রে মিশে যায়। এইসব ক্ষরিত পদার্থগুলি হল - ক্রিয়েটিনিন, হিপপিউরিক অ্যাসিড, অ্যামোনিয়া, ইউরিয়া, পটাশিয়াম, HCO₃ ই্যাতাদি। বৃক্কীয় নালিতে জল নিষ্ক্রিয় পদ্ধতিতে পুনঃশোষিত হয়। গ্লোমেরুলাসে পরিস্রুত হয়ে ক্ষরিত পদার্থসহ যে তরল বৃক্ক থেকে গবিণীতে প্রবেশ করে তাকেই মূত্র বলে।
👉 কাজ ঃ
(ক) শ্বাসবায়ু পরিবহণ করা। (খ) রক্তের অম্লত্ব ও ক্ষারত্বের সমতা রক্ষা করা। (গ) রক্তের সান্দ্রতা বজায় রাখা। (ঘ) রক্তের ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়নের সাম্যাবস্থা বজায় রাখা।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ