পরিবেশ ও ভূগোল
অষ্টম শ্রেণি
পূর্ণমান - ৫০
১. বিকল্পগুলি থেকে ঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখো :
১.১ ঠিক জোড়াটি নির্বাচন করো -
ক) অন্তঃকেন্দ্রমন্ডল - পদার্থের তরল অবস্থা
খ) বহিঃকেন্দ্রমন্ডল - পদার্থের ঘনত্ব সর্বাধিক
গ) অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার - পরিচলন ঘনত্ব সৃষ্টি
ঘ) ভূত্বক - লোহা ও নিকেলের আধিক্য
উত্তরঃ গ) অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার - পরিচলন ঘনত্ব সৃষ্টি
১.২ রকি ও আন্দিজ পর্বতমালা সৃষ্টি হয়েছে -
ক) মহাসাগরীয় - মহাসাগরীয় অপসারী পাতসীমানা বরাবর
খ) মহাসাগরীয় - মহাসাগরীয় অভিসারী পাতসীমান বরাবর
গ) মহাদেশীয় - মহাদেশীয় অভিসারী পাতসীমানা বরাবর
ঘ) মহাদেশীয় - মহাসাগরীয় অভিসারী পাতসীমানা বরাবর
উত্তরঃ ঘ) মহাদেশীয় - মহাসাগরীয় অভিসারী পাতসীমানা বরাবর
১.৩ উত্তর ভারতের স্থালভাগের সীমানা রয়েছে -
ক) পাকিস্থান ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে
খ) নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে
গ) বাংলাদেশ ও ভুটানের সঙ্গে
ঘ) মায়ানমার ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে
উত্তরঃ খ) নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে
১.৪ কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে নিরক্ষীয় বলয়ের দিকে প্রবাহিত নিয়ত বায়ু হলো -
ক) দক্ষিণ - পূর্ব আয়নবায়ু
খ) উত্তর - পূর্ব আয়নবায়ু
গ) দক্ষিণ - পশ্চিম পশ্চিমাবায়ু
ঘ) উত্তর - পশ্চিম পশ্চিমাবায়ু
উত্তরঃ খ) উত্তর - পূর্ব আয়নবায়ু
১.৫ ঠিক জোড়াটি নির্বাচন করো -
ক) বজ্রপাতসহ প্রবল বৃষ্টি - সিরাস মেঘ
খ) জলীয় বাষ্পের জলকণায় পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়া - বাষ্পীভবন
গ) বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল - পর্বতের প্রতিবাত ঢাল
ঘ) ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে সর্বনিম্ন বায়ুচাপ - ঘূর্ণবাতের চোখ
উত্তরঃ ঘ) ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে সর্বনিম্ন বায়ুচাপ - ঘূর্ণবাতের চোখ
১.৬ পৃথিবীর বৃহত্তম মিষ্টি জলের হ্রদ হলো -
ক) হুরণ
খ) ইরি
গ) সুপিরিয়র
ঘ) মিশিগান
উত্তরঃ গ) সুপিরিয়র
১.৭ ঠিক জোড়াটি নির্বাচন করো -
ক) নিরক্ষীয় অঞ্চল - সূর্যের তির্যক রশ্মি
খ) নিরক্ষীয় অঞ্চল - বায়ুর উচ্চচাপ
গ) মেরু অঞ্চল - বায়ুর উচ্চচাপ
ঘ) মেরু অঞ্চল - সূর্যের লম্ব রশ্মি
উত্তরঃ গ) মেরু অঞ্চল - বায়ুর উচ্চচাপ
১.৮ উত্তর আমেরিকার আলাস্কা যে জলবায়ুর অন্তর্ভুক্ত তা হলো -
ক) ক্রান্তীয় জলবায়ু
খ) লরেন্সীয় জলবায়ু
গ) ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু
ঘ) তুন্দ্রা জলবায়ু
উত্তরঃ ঘ) তুন্দ্রা জলবায়ু
১.৯ দক্ষিণ আমেরিকার লাপ্লাটা নদী আববাহিকায় অবস্থিত বিস্তীর্ণ তৃণভূমি হলো -
ক) গ্রানচাকো
খ) পম্পাস
গ) ল্যানোস
ঘ) সেলভা
উত্তরঃ খ) পম্পাস
২. শূন্যস্থান পূরণ করো :
২.১ উত্তর - পশ্চিম ভারতে প্রবাহিত একটি স্থানীয় বায়ু হলো __________।
উত্তরঃ লু
২.২ কোনো একটি নির্দিষ্ট সময়ে সমপরিমাণ বৃষ্টিপাতযুক্ত মানচিত্রে __________ রেখার সাহায্যে যুক্ত করা হয়।
উত্তরঃ সমবর্ষণ
২.৩ দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ পর্বতের পশ্চিমে অবস্থিত পৃথিবীর অন্যতম শুষ্ক অঞ্চল __________ মরুভূমি।
উত্তরঃ আটকামা
৩. বাক্যটি সত্য হলে 'ঠিক' এবং অসত্য হলে 'ভুল' লেখো :
৩.১ রাত্রিবেলা স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে সমুদ্রবায়ু প্রবাহিত হয়।
উত্তরঃ ভুল
৩.২ আপেক্ষিক আর্দ্রতার সাথে উষ্ণতার সম্পর্ক ব্যস্তানুপাতিক।
উত্তরঃ ঠিক
৩.৩ জুলাই-অগাস্ট মাসে আর্জেন্টিনায় গ্রীষ্মকাল বিরাজ করে।
উত্তরঃ ভুল
৪. একটি বা দুটি শব্দে উত্তর দাও :
৪.১ রিখটার স্কেলের সাহায্যে কী পরিমাপ করা হয়?
উত্তরঃ ভূমিকম্প
৪.২ গ্রানাইট শিলা গঠনকারী একটি খনিজের নাম লেখো।
উত্তরঃ খনিজ তেল
৪.৩ ভারতের কোন্ প্রতিবেশী দেশ মশলা উৎপাদনে বিখ্যাত?
উত্তরঃ শ্রীলঙ্কা
৫. সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :
৫.১ ভূ-অভ্যন্তরে কোন্ স্তরে কীভাবে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের সৃষ্টি হয়েছে?
উত্তরঃ বিজ্ঞানীরা কেন্দ্রমন্ডলকে দুটি অংশে বিভক্ত করেছেন, যথা - অন্তঃকেন্দ্রমন্ডল ও বহিকেন্দ্রমন্ডল। এই স্তর ২৯০০ কিমি - ৫১০০ কিমি গভীর। এর চাপ, তাপ ও ঘনত্ব অন্তঃকেন্দ্রমন্ডলের তুলনায় কম। এই স্তর অর্ধকঠিন অবস্থায় পৃথিবীর অক্ষের চারিদিকে আবর্তন করে চলেছে। এই বহিঃকেন্দ্রমন্ডল স্তরে সান্দ্র অবস্থায় থাকা লোহা ও নিকেল প্রচন্ড গতিতে ঘুরতে ঘুরতে বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরি করছে। যেখানে থেকেই সৃষ্টি হয়েছে পৃথিবীর চৌমকত্ব।
৫.২ পাকিস্তানে জলসেচের সাহায্যে কীভাবে কৃষিকাজ করা হয়?
উত্তরঃ পাকিস্তানের কৃষিকাজ মূলত জলসেচের উপর নির্ভরশীল। পাকিস্তানের জলসেচ প্রধানত খালের মাধ্যমে হয়ে থাকে। সিন্ধু ও তার উপনদীগুলোতে বাঁধ দিয়ে জলাধার তৈরি করা হয়েছে। জলাধারগুলো থেকে একাধিক সেচ খাল কাটা হয়েছে। পশ্চিমের শুষ্ক অঞ্চল গুলোতে মাটির নিচে সুরঙ্গ কেটে ক্যারেজ প্রথার মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রে জল নিয়ে যাওয়া হয়।
৫.৩ উত্তর আমেরিকার প্রেইরি সমভূমি দুদ্ধশিল্পে উন্নত কেন?
উত্তরঃ প্রেইরি সমভূমি অঞ্চলে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়েই রয়েছে প্রেইরি তৃণভূমি। বরফ যখন গলে যায় তখন এই তৃণভূমির বিস্তীর্ণ তৃণক্ষেত্রে হে, ক্লোভার, আলফা প্রভৃতি তৃণ অর্থাৎ ঘাস ও ভুট্টা জন্মায়। তাই এই তৃণভূমি পশুচারণ ক্ষেত্রে হিসাবে বিখ্যাত। একদিকে পশুপালনের এরূপ সুন্দর অনুকূল পরিবেশ অন্যদিকে পশু জাত দ্রব্য যেমন দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য এখানে উন্নত মানের হিমাগার গড়ে উঠেছে। তাই প্রেইরি সমভূমি অঞ্চল দুগ্ধশিল্পে উন্নত।
৬. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
৬.১ অভিসারী পাতসীমানাকে কেন বিনাশকারী পাতসীমানা বলা হয় তা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো।
৬.২ 'আমাজন অববাহিকার ক্রান্তীয় বৃষ্টিঅরণ্য দুর্গম প্রকৃতির' - ভৌগোলিক কারণ ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ আমাজন আববাহিকার ক্রান্তীয় বৃষ্টি অরন্য নিরক্ষরেখার উভয় পাশে অবস্থিত হওয়ায় এখানে সারাবছর প্রচুর উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাত হয়। ফলে এখানে অত্যন্ত ঘন চিরহরিৎ গাছের বনভূমির সৃষ্টি হয়েছে। গাছগুলোর পাতা বড়ো ও শক্ত হওয়ায় গাছগুলি ঘন সন্নিবিষ্ট হওয়ায় অরণ্যের তলদেশে সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারে না। সূর্যের আলো পৌঁছাতে না পারায় অরণ্যের তলদেশ স্যাঁতস্যাতে প্রকৃতির। এছাড়া এই অরণ্যের পরিবেশে গার্ণ, ছত্রাক, শৈবাল ও বিভিন্ন ধরনের আগাছার সাথে সাথে বিষাক্ত কীটপতঙ্গ ও জীবজন্তু দেখা যায়। এই সব প্রতিকূল পরিবেশেই আমাজন অববাহিকার ক্রান্তীয় বৃষ্টি অরব্যকে দুর্গম করে তুলেছে।
৬.৩ পম্পাস অঞ্চলকে দক্ষিণ আমেরিকার শস্য ভান্ডার বলা হয় কেন?
উত্তরঃ পম্পাস অঞ্চল হল দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম কৃষি সমৃদ্ধ অঞ্চল। প্রধানত সমতল ভূপ্রকৃতি, নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু, বৃহদায়তন কৃষিজমি, উর্বর পলি মৃত্তিকা ও বায়ুবাহিত লোয়েস মৃত্তিকা, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে জলসেচ, সুলভ ও দক্ষ কৃষকের যোগান, কৃষিজাত দ্রব্যের চাহিদা ইত্যাদি অনুকূল প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থাকে কাজে লাগিয়ে দক্ষিণ আমেরিকার পম্পাস অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে গম, বার্লি, আখ, তামাক, তুলো, তিসি, সোয়াবিন, নানা রকম শাক সবজি ও ফল ইত্যাদি উৎপাদন হয়। বিভিন্ন ধরনের ফসল বা শস্য প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন হয় বলে পম্পাস অঞ্চলকে দক্ষিণ আমেরিকার শস্য ভান্ডার বলা হয়।
৭. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
৭.১ উদাহরনসহ উৎপত্তি অনুসারে আগ্নেয়শিলার শ্রেণিবিভাগ করো।
উত্তরঃ উৎপত্তি অনুসারে আগ্নেয় শিলাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। (১) নিঃসারী আগ্নেয় শিলা ও (২) উদ্বেধী আগ্নেয় শিলা। উদ্বেধী আগ্নেয় শিলাকে আবার দুইভাগে ভাগ করা হয়। যথা - উপপাতালিক শিলা ও পাতালিক শিলা।
৭.২ 'বায়ুচাপ বলয়গুলির অবস্থান পরিবর্তন দুই গোলার্ধের ৩০ ডিগ্রী থেকে ৪০ ডিগ্রী অক্ষরেখার মাঝের স্থানগুলির জলবায়ুর উপর বিশেষ প্রভাব ফেলে' - উপযুক্ত উদাহরনযুক্ত বিষয়টি ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ বায়ুচাপ বলয় গুলির নিয়মিত অবস্থা পরিবর্তন ঘটে। এই অবস্থান পরিবর্তন, দুই গোলার্ধের ৩০°থেকে ৪০°অক্ষরেখার মাঝের স্থানগুলির জলবায়ুর উপর বিশেষভাবে প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। এই অঞ্চল গুলোতে গ্রীষ্ম কালে আয়ন বায়ু এবং শীতকালে পশ্চিমা বায়ুর দ্বারা প্রভাবিত হয়। যেমন (১) সূর্যের উত্তরায়ন এর সময় কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয় টি উত্তর দিকে সরে যায়। ফলে গ্রীষ্ম কালে স্থল ভাগ থেকে আগত উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ুর প্রভাবে ভূমধ্যসাগরীয় সংলগ্ন দেশগুলোতে বৃষ্টিপাত হয় না বললেই চলে।
(২) আবার সূর্যের দক্ষিণায়ন এর সময় কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয় টি দক্ষিণ দিকে সরে যাওয়ায় ভূমধ্যসাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলে দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত হয়। এরই ফলে শীতকালে এই অংশে জলভাগের উপর দিয়ে বয়ে আসা দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে বেশি পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়।
৭.৩ চিত্রসহ শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত সৃষ্টির প্রক্রিয়াটি বর্ণনা করো।
উত্তরঃ সমুদ্রের দিক থেকে আসা জলীয়বাষ্পযুক্ত আর্দ্র বায়ুর প্রবাহ পথে আড়াআড়ি ভাবে কোনো পর্বত বা উচ্চভূমি অবস্থান করলে ঐ বায়ু পর্বত বা উচ্চভূমিতে বাধা পেয়ে ঐ পর্বত বা উচ্চভূমির ঢাল বেয়ে ওপরের দিকে উঠে যায়। ঊর্ধ্বগামী এই বায়ু ক্রমশ প্রসারিত হয় ও ঠান্ডা হয়। আরও ওপরে উঠলে এই বায়ু সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে এবং ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়। এই বৃষ্টি হলো শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত। পর্বতের যে ঢাল বরাবর বায়ু ওপরের দিকে ওঠে ও বৃষ্টিপাত ঘটায় সেই ঢাল হলো প্রতিবাদ ঢাল। আর এর বিপরীতে যে ঢাল বরাবর বায়ু নীচের দিকে নামে, সেই ঢাল হলো অনুবাত ঢাল।
প্রতিবাত ঢালে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটানোর পর বায়ু যখন পর্বতের অনুবাদ ঢালে পৌঁছায় তখন সেই বায়ুতে জলীয়বাষ্পের পরিমান যথেষ্ট কমে যায়। এছাড়া বায়ু যত নীচের দিকে ঢালের উষ্ণতর স্থানে নামতে শুরু করে বায়ুর উষ্ণতা তত বাড়তে থাকে। ফলে বায়ুর জলীয়বাষ্প ধারণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বায়ু অসম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। এই কারণে অনুবাত ঢালে প্রতিবাত ঢাল অপেক্ষা বৃষ্টিপাত খুবই কম হয়। তাই পর্বতের অনুবাত ঢাল বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল নামে পরিচিত।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ