মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক
বাংলা (প্রথম ভাষা)
দ্বাদশ শ্রেণী
নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর নিজের ভাষায় লেখ :
১. "আসল বাঁধাটা খোঁজ করা হয় না আর উচ্ছবের।" - উচ্ছব কে? সে কোন বাদার খোঁজ করতে চেয়েছিল? কেন তার পক্ষে সেই বাদার খোঁজ করা হয় উঠলো না?
উত্তর : উচ্ছব কোন অভিজাত চরিত্র নয়। বাদা অঞ্চলের এক অতি দরিদ্র মানুষ। তাই তার নাম উৎসব হওয়া সত্ত্বেও সে পরিচিত হয়েছে উচ্ছব নামে।
দক্ষিণ 24 পরগনা জেলায় মাতলা নদীর নিকটবর্তী বিস্তীর্ণ জলাভূমি বাদা নামে পরিচিত। এই এলাকা অত্যন্ত উর্বর প্রচুর ফসল ফলে এখানে। যদিও গল্পে মাতলা নদী এবং বাধার কথা আছে তবু আসল বাধা বলতে মহাশ্বেতা দেবী কোন প্রতিটি অঞ্চলকে বুঝিয়েছেন। যেখানে যারা ফসল ফলায় তারা সে ফসলে সামান্যতম অংশই ভোগ করতে পারে না।
উচ্ছব ভাতের আশায় শহরে কাজ করতে এসে সেই আসল বাদার আভাস পেয়েছে। সে বুঝেছে যার দখলে এই বাধা তার কাজ না করলেও এগারোটা পর্যন্ত ঘুমালেও চলে। তার ঘরে 5 রকমের চালে ভাত হয় নানান উপকরণ দিয়ে খাবার জন্য। যে ঘরে চিকিৎসকের শেষ কথা বলা সত্বেও ক্যান্সার আক্রান্ত মৃত্যু পথযাত্রী কে দু'দণ্ড বাঁচিয়ে রাখার জন্য আড়াই মন কার্ড দিয়ে হোম যজ্ঞ হয়। হোম যজ্ঞ সম্পন্ন হওয়ার আগে সে পরলোকে চলে গেলে সে বাড়ির রান্না করা ভাত ফেলে দেয়া হয় অশৌচের কারণে। সেই ভাত খেলে দেওয়ার নামে বিচিসহ নিয়ে গিয়ে আশা মিটিয়ে খেয়েছে উচ্ছব। ভরা পেটে ঘুমিয়ে গেছে সেই দেকছি ধরে। বাড়ির লোকের অভিযোগে পিতলের দেখছি চুরির অপরাধে উচ্ছবকে ধরে পুলিশ। তাই তার আর আসল বাদার খোঁজ করা হয়না।
২. 'ভোর' শব্দটি 'শিকার' কবিতায় কোন কোন ব্যঞ্জনায় উপস্থাপিত হয়েছে তা বিশ্লেষণ করো।
উত্তর : চিত্ররূপময় কবি জীবনানন্দ দাশের শিকার কবিতাটি কবির মহাপৃথিবী কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। কবিতাটি শুরু হয়েছে একটি ভোরের দৃশ্য কে পটভূমি করে। এই ভোরের রূপময় পরিচয় দিতে গিয়ে কবি জানাচ্ছেন যে এই ভোরবেলায় আকাশের রং ঘাসফড়িঙের শরীরের মত কোমল নীল। ঘাসফড়িং এর সঙ্গে ভোরের আকাশ কে তুলনা করায় প্রকৃতির মধ্যে প্রাণের একটি চাঞ্চল্য বা সংযোগ স্পষ্টভাবে অনুভব করা যায়। এই ভোরের বেলায় চারিদিকে পেয়ারা ও নোনার গাছ টিয়ার পালকের মতো সবুজ। এই উপমায় গাছের পাতা পাখির পালকের সঙ্গে উপকৃত হওয়ায় প্রকৃতি রাজ্যে এলো এক ধরনের প্রাণের স্পর্শ এবং গতিশীলতা। এটি তারা কখনও আকাশে জেগে রয়ে গেছে - যেন সে রাতের বিদায়ী অস্তিত্বকে নিজের মধ্যে ধারণ করে রেখেছে। ভোরের এই তারাকে কবি তুলনা করেছেন পাড়াগাঁর বাসরঘরে সবচেয়ে গোধূলি মোদির মেয়েটির সঙ্গে। অর্থাৎ তার উপস্থিতিতে কবি ধরে রাখতে চান গ্রাম বাংলার মেয়েদের মত লজ্জা ও কুন্ঠাকে। মেয়েটির আচরণের এই কোমলতা আর পেলবতার সঙ্গে বাসর ঘরে আর মন্দির শব্দের ব্যবহারে কবি মিশিয়ে দিতে চান এক ধরনের যৌন মাদকতা। এরপর কারাটির উপস্থিতিতে কে কবি তুলনা করেছেন মিশরের মানুষের সঙ্গে যে হাজার হাজার বছর আগে এক রাতে তার বুকের থেকে মুক্ত রেখেছিল কবির নীল মদের গেলাসে। নীল আকাশের ক্যানভাসে রাত জাগা তারা আর নীল নদের পাশে রাখা সাদা মুখটা যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় এই উপমার মাধ্যমে। একটু আগে গ্রাম্য মেয়ের সঙ্গে তুলনায় যে সহজতা ছিল তাও ভেঙে যায় এই ঐতিহাসিক আড়ম্বরে। মিশরের মানুষই আর হাজার হাজার বছর নিলে ছবিটি এভাবেই সর্ব জাগতিক ও সর্বকালীন বিস্তৃতি পায়।
৩. "বুদ্ধিটা কি করে এলো তা বলি।" - বুদ্ধিটা কি? কিভাবে তা বক্তার মাথায় এসেছিল?
উত্তর : শম্ভু মিত্র তার বিভাব নাটকে গ্রুপ থিয়েটারের নানা রকম সমস্যার কথা বলতে গিয়ে সেই সমস্যা মুক্তির পথ সন্ধান করেছেন। মনচোরা মঞ্চসজ্জার উপকরণসমূহ না থাকা সত্বেও কিভাবে নাটক মঞ্চস্থ করা যায় তার উপায় খুঁজে বের করা কেই বুদ্ধি শব্দটি দ্বারা নাট্যকার বোঝাতে চেয়েছেন।
নাট্যকারের একবার চোখে পরে কোন এক পুরনো নাটক রাজা রথারোহনম নাটয়াতি হোয়াটসঅ্যাপ রাজা রথারোহনম করার ভঙ্গি করলেন - এ কথা লেখা ছিল। অর্থাৎ রথ বা ঘোড়ার ছাড়াই অভিনয় সম্পন্ন করার একটি রিয়াজ বাংলা নাটকে আগে থেকেই ছিল। উড়ি দেশের যাত্রাতেও রাজার নির্দেশ - ঘোড়ায় করে দ্রুত খবর নিয়ে আসার জন্য দুধ দুপায়ের ফাঁকে লাঠি গরিয়ে আওয়াজ করতে করতে বেরিয়ে গেল। ঘোড়া থাকল না কিন্তু ভঙ্গিটা কে ব্যবহার করা হলো। মারাঠি তামাশা থে ও নাট্যকার দেখেছিলেন জমিদারের কাছে আবেদন ব্যর্থ হওয়ায় চাষী ভগবানের কাছে নালিশ জানাতে গেল। এখানে এসে মঞ্চ থেকে বেরিয়ে গেল না শুধু ভঙ্গিতে অবলম্বন করে গ্রাম অতিক্রম করল এবং মন্দিরের সামনে পৌঁছে নিজে দুঃখের কথা জানাতে লাগলো। অন্যদিকে জমিদার দর্শকদের সামনে সামান্য সাজ পাল্টে পুরুষ হয়ে গিয়ে শুরু করে দেয় তার ধর্মীয় তর্জন-গর্জন। এইভাবে দর্শকদের কল্পনা সাহায্যে নিয়ে নাট্য অভিনয় ঐতিহ্য সেখান থেকেই নিজেদের নাটক মঞ্চস্থ করার বুদ্ধি পেয়ে গেছিলে নাট্যকার শম্ভু মিত্র।
৩. অথবা, "নাট্যাভিনয় একটি পবিত্র শিল্প।" - এই পবিত্রতার নামাবলী টা কিভাবে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের সামনে ফাঁস হয়ে গিয়েছিল?
উত্তর : অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় এর অনুবাদ নাটক নানা রঙের দিন এ দেখা যায় বৃদ্ধ অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় 68 বছর বয়সে এসে তার অভিনয় জীবনের স্বর্ণযুগের কোনোভাবেই ভুলতে পারছেন না। বয়সের কারণে বর্তমানে দিলদারের মত গৌণ চরিত্র ছাড়া তাঁর অভিনয়ের সুযোগ মেলে না। কিন্তু তার মনে ঔরঙ্গজেব সুজা বক্তিয়ার ইত্যাদি চরিত্র করা তার অভিনয়ের উজ্জ্বল উপস্থিতি। এই সব চরিত্রের সংলাপ শূন্য প্রেক্ষাগৃহ মঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে প্রোমোটার কালিনাথ কে সামনে রাখতে দেখে বলে থাকেন তিনি। এর মাধ্যমেই যেন তিনি খুঁজে পান প্রতিবার পুরনো বিচ্ছুরণ। বয়স পরাজিত হয় সেই মুহূর্তে। প্রতিভা যার আছে বয়সে তার কি আসে যায়। নাট্য শিল্পকে ভালোবাসতে গিয়ে একদিন যে মানুষটার সংসার করা হয়নি ভালোবাসার মানুষ দূরে সরে গিয়েছে জীবনের শেষ পর্বে এসেও নিঃসঙ্গ সেই মানুষটি অভিনয় কে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চেয়েছেন। মঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে জীবনের শেষ যুদ্ধ যাত্রার আগে পিয়ারাবানুকে বলার সুযোগ সংলাপ উচ্চারণ করেছেন রজনীকান্ত। বিপরীতে দাঁড়িয়ে থাকা প্রোমোটার কালিনাথ তাকে দেখেছেন ঠিক পুরনো দিনের মতোই।
আর আবেগ বিরল রজনীকান্ত বয়সকে মেনে নিয়েই শিল্পকে চূড়ান্ত সত্য বলে ঘোষণা করেছেন - যার কাছে বার্ধক্য নেই একাকীত্ব নেই রোগ নেই, এমনকি মৃত্যুভয় কেউ যা সহ্য করতে পারে। এভাবেই শিল্পীর কাছে দায়বদ্ধ একজন অভিনেতা হিসেবে এখানে রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় কে প্রত্যক্ষ করা যায়।
৪. "কত সব খবর!
কতসব প্রশ্ন!" - 'পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন' কবিতায় কিভাবে সেই সব খবর আর প্রশ্ন উচ্চারিত হয়েছে?
উত্তর : সাত দরজাওয়ালা থিবস তৈরীর জন্য ইতিহাসে রাজাদের নামই লেখা আছে। কিন্তু যাদের কঠোর শ্রম এর নির্মাণ সম্ভব হলো তারা চির উপেক্ষিতই থেকে গেছে। বারবার ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েও ব্যাবিলনের পুননির্মাণ সম্ভব হয়েছে বারবার সে তো আসলে শ্রমজীবী মানুষের এই অবদান। অথচ ইতিহাস এদের আবেদনের কোন মূল্যই দেয় না। সমৃদ্ধ লিমাকে যারা তৈরি করেছে বা যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে তৈরি হয়েছিল চীনের প্রাচীরের মতো বিষয় সেইসব শ্রমিক এর সন্ধান কেউ রাখেনা। প্রথাগত ইতিহাস প্রকৃতপক্ষে এরকমই অজস্র বঞ্চনার কাহিনী। রুমকি গড়ে তুলেছিল কারা কিভাবে সিজার কাদের জয় করে পৃথিবীতে বিখ্যাত হয়েছেন - সেসব কথা ইতিহাসে লেখা থাকে না। বাইজেনটিয়াম সভ্যতার সমৃদ্ধির কথায় সবাই বলেছে কিন্তু প্রাসাদের বাইরে যে মানুষেরা থাকতো তাদের কথা কেউ বলেনি। উপকথার আটলান্টিক ক্রীতদাসদের ছাড়া সম্পূর্ণ ছিল না। আলেকজান্ডারের ভারত বিজয় সম্ভব হতো না তার সৈন্যরা না থাকলে। সিজারের একার পক্ষে গলদের পরাজিত করাও সম্ভব ছিল না। আরমাডা ডুবে যাওয়ার সময় স্পেনের রাজা শিল্পের সঙ্গে সাধারণ মানুষও কেঁদেছিল। রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ফ্রেডারিক এর দীর্ঘ যুদ্ধ জয় ও তার একার পক্ষে কখনোই সম্ভব হতো না। এভাবেই ইতিহাসের প্রতিটি ঘটনায় বিজয় উৎসবের আয়োজনে কিংবা মহামানবের প্রতিষ্ঠায় সমাজের সাধারণ মানুষের গুরত্ব কে কবি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন। প্রথাগত ইতিহাসের আড়ালে শ্রমজীবী মানুষের যে অবদান সভ্যতা কে সচল রাখে তারই ইঙ্গিত রয়েছে এই কবিতায়।
৫. "চোখের জলটা তাদের জন্য।" - কার চোখে জল? কাদের জন্য কেন তার চোখের জল এসেছে?
উত্তর : কোনকিছুর পরোয়া না করে জীবন মৃত্যু পায়ের ভৃত্য করে যারা ট্রেন থামিয়ে ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর দেশবাসীকে রুটি ও জল পৌঁছে দিয়েছিল তাদের জন্য আলোচ্য গল্পের লেখক তার চোখের জল কে উৎসর্গ করেছেন।
কোন কিছুর প্রাপ্তি আশঙ্কা না করে যারা জীবন মৃত্যু পায়ের ভৃত্য করে কাতর দেশবাসীকে রুটি জল পৌঁছে দিয়েছিল কিন্তু অজ্ঞতাবশত তাদের জন্যই চোখে জল আসে কথকের। তার প্রতিবাদী মন ছোট বোনের কথার প্রত্যুত্তরে বলে ওঠে - "ঝড়ের বেগে ছুটে আসার ট্রেন থামানোর গেল পাথরের চাঁই থামানো যায় না কেন? দ্বিতীয় ঘটনার আবেগ তপ্ত বিশ্বাসযোগ্যতা তাকে প্রথম ঘটনা সম্পর্কে সংবেদনশীল করে তুলেছে। তাই গল্পকথক সাশ্রুনয়ন হয়েছেন।
৬. "গারো পাহাড়ের নীচে" গদ্যাংশ অনুসরণে হাতিবেগার আইন এর বিবরণ দাও।
উত্তর : লেখক সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের আমার বাংলা গ্রন্থের গারো পাহাড়ের নীচে রচনায় আমরা হাতি বেগার আইন এর বিবরণ পায়। উনিশ শকের শেষদিকে গারো পাহাড়ে এই জমিদারি আইন চালু ছিল। গারো পাহাড়ের উপর মাথা বেঁধে সশস্ত্র জমিদার সেখানে সিপাই শান্ত্রিসহ বসে থাকতেন হাতি শিকারের উদ্দেশ্যে। যেখানে যাতে তার কোনো বিপদ না ঘটে সেই কারণে তিনি প্রচলন করেছিলেন হাতি বেগার আইনের। এই নিয়ম অনুসারে প্রতিটি গ্রামের ছেলেবুড়ো সহ প্রতিটি পুরুষ প্রজাকে সেখানে আসতে হতো আর যে জঙ্গলে হাতি আছে সেই জঙ্গলটা তাদের সার বেঁধে দাঁড়িয়ে ঘিরে ফেলতে হতো। এর জন্য জমিদারের তরফ থেকে প্রজাদের কোন কিছুই এমনকি খাবারও দেয়া হতো না। নিজেদের খাবার-দাবার ইত্যাদি প্রজাতির নিজেদেরকেই নিয়ে আসতে হতো। কিন্তু জমিদারের এতোটুকু অসুবিধা যাতে না হয় তার ঢালাও ব্যবস্থা থাকত। এইভাবে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় সাপের বা বাঘের কামড়ে তাদের অনেকেরই মৃত্যু হত।
জমিদারের হাতি শিকার এর শখ মিটানোর উদ্দেশ্যে তৈরি এই নৃশংস হাতি বেগার আইন গারো পাহাড়ের বেশিদিন সহ্য করেনি। তারা জৈনক গোরাচাঁদ মাস্টার এর নেতৃত্বে এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে। গারো পাহাড় সংলগ্ন প্রতিটি এলাকায় তাই ক্রমে ক্রমে মিটিং শুরু হয়। প্রতিটি কামারশালায় তৈরি হতে থাকে অস্ত্রশস্ত্র। কিন্তু এতসব প্রস্তুতি সত্ত্বেও সেই বিদ্রোহে জমিদারের সৈন্যদের কাছে বিদ্রোহী প্রজারা পরাজিত হয়। সেই বিদ্রোহের দমন করতে পারলেও হাতি বেগার আইন চালু রাখতে কিন্তু জমিদারেরা আর সাহস পেল না। গারো পাহাড়ে হাতি বেগার এভাবেই অবলুপ্ত হয়ে গেছে।
Other Model Activity Task : Model Activity Task 2022
banan prochondo vul achhe.direct dekhe dekhe lekhle 000 pabo.
উত্তরমুছুন