LightBlog
WBBSE Class 6 History Suggestion - ষষ্ঠ শ্রেণী - ইতিহাস - প্রথম অধ্যায় - ইতিহাসের ধারণা
Type Here to Get Search Results !

WBBSE Class 6 History Suggestion - ষষ্ঠ শ্রেণী - ইতিহাস - প্রথম অধ্যায় - ইতিহাসের ধারণা

 ষষ্ঠ শ্রেণি

ইতিহাস সাজেশন

প্রথম অধ্যায়

ইতিহাসের ধারণা


সূচনা :

     ইতিহাস হলো একটি বিষয় যার অর্থ পুরনো দিনের কথা। অর্থাৎ যে বই পড়লে আমরা পুরনো দিনের ইতিহাস এর কথা জানতে পারি তাই ইতিহাস। ইতিহাস মানে কেবলমাত্র কিছু সাল তারিখের হিসাব নয়। ইতিহাস হল অনেক অজানা মজার কথার বিষয় যা পড়লে আমরা আনন্দ পেতে পারি।

১.১ কবে, কেন, কিভাবে, কোথায়? :
     স্কুলে পাথর আর ধাতুর আলোচনা প্রসঙ্গে শিক্ষিকা শিলনোড়া, হামানদিস্তা, মিকচার মেশিনের ছবি আঁকার কথা বললেন, ইতিহাস চলে ধারাবাহিকভাবে এক এক পর্যায়ে একটি ধারা আছে। প্রথমে মানুষ পাথরের ব্যবহার শেখে পাথর দিয়ে অস্ত্রশস্ত্র নিজস্ব প্রয়োজনীয় জিনিস বানাতে থাকেন। এরপর সভ্যতার ক্রমশ উন্নত হতে থাকে, মানুষ পাথর দিয়ে হামানদিস্তা, পাথরের জিনিসপত্র শিলনোড়া প্রভৃতি তৈরি হয়। এখন প্রশ্ন হল কোথায়, কিভাবে? পৃথিবীর সর্বোচ্চ মানুষ একইভাবে উন্নত হয়নি, তাই ইতিহাসের গল্প তৈরি হয় কোথায়, কেন এবং কিভাবে? পৃথিবীর পর্যায়ক্রমে উন্নত হয়েছে - পাথর - শিলনোড়া - হামানদিস্তা - মিকচার।

অনেক অনেক দিন আগের কথা :
     গল্পের বই তে থাকা পুরনো দিনের সবকথা কিন্তু ইতিহাস নয়। ইতিহাসের পাতায় মনগড়া বা কল্পনার কোনো স্থান নেই। তাই ইতিহাসের কথা গল্পের মতো হলেও সত্যি।

নদীমাতৃক সভ্যতা :
     সেই কবে থেকেই মানুষ নদীর ধারে থাকতে শুরু করেছিল। নদীকে ঘিরে তাদের রোজকার বেশিরভাগ কাজ চলত। পুরনো দিনের অনেক সভ্যতা নদীর ওপর নির্ভর করেই তৈরি হয়েছিল। সেইসব সভ্যতার কাছে নদী ছিল মায়ের মত। তাই সেগুলিকে নদীমাতৃক সভ্যতা বলা হয়। মাতৃক মানে মায়ের মত। সেখানকার লোকজনের কাজকর্মে নদীর গুরুত্ব ছিল সব থেকে বেশি।

১.২ ইতিহাসের কথা, মানুষের কথা :
     গল্পের বইতে বলা হয় তাকে অনেক দিন আগের কথা। কিন্তু সাল-তারিখ কিছুই নির্দেশ করে বলা থাকে না। কিন্তু ইতিহাস বলতে গেলে, লিখতে গেলে, জানতে গেলে নির্দিষ্ট তারিখ সাল লাগে। তাই ইতিহাস বইতে সময়ের হিসাব থাকবেই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ইতিহাসের শুধু মানুষের কথা থাকে কেন, এর উত্তরে বলা যায় পশুদের মা-বাবা জাতি-গোষ্ঠীর পরিচয় লাগেনা। কিন্তু মানুষের আকাঙ্ক্ষা ইচ্ছা অপরিসীম। তাই মানুষকে পুরনো দিনের কথা জানতে হয়। পুরনো দিনের কথাই হচ্ছে প্রকৃত ইতিহাস। তাই ইতিহাসে মানুষের কোথায় থাকে। ইতিহাসের আর একটি উপাদান হচ্ছে পরিবেশ। মানুষকে পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিয়ে চলতে হয়। পরিবেশ ঠিক করে মানুষের জীবনযাত্রা। তাই ইতিহাস হল মানব জাতির বিবর্তনের ইতিকথা।

১.৩ ইতিহাস আর ভূগোল :
     ইতিহাস বুঝতে হলে ভুগলের জ্ঞান থাকা দরকার। এক এক অঞ্চলের ইতিহাস ও পরিবেশ এক এক রকম। মানুষের বেশিভাগ কাজকর্ম তার পরিবেশ ও ভূগোল অনুযায়ী পরিচালিত হয়। কেন এবং কোথায় এই দুটি বিষয় জানার জন্য পরিবেশ ও ভূগোল এর জ্ঞান ও আবশ্যক।

ভারতীয় উপমহাদেশের ভূগোল - ইতিহাস :
     ভারতীয় উপমহাদেশের মানচিত্র বদলেছে বরাবর। একসময় বিরাট অঞ্চল নিয়ে গড়ে উঠেছিল ভারতীয় উপমহাদেশ। উপমহাদেশ শব্দের অর্থ হলো একটা মহাদেশের মতোই বড় অঞ্চল। যেখানে থাকবে নানা বৈচিত্র্য। পরিবেশ, ভূগোল সর্বত্র বৈচিত্র থাকবে। উপমহাদেশে থাকবে নানা পরিবেশ, মানুষ পাহাড়-পর্বত-সমুদ্র-মরুভূমি সবকিছু। মানুষের পোশাক, খাবার, ঘরবাড়ি হবে নানা রকম। এইরকম বিশাল পরিবেশ মিলেমিশে বিরাট এলাকা হয়েছিল ভারতীয় উপমহাদেশ। যার উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল, সিন্ধু গঙ্গা নদী বিরাট সমভূমি অঞ্চল, বিন্দু পার্বত্য সবকিছু নিয়ে গড়ে উঠেছে উপমহাদেশের ভূগোল। ভারতীয় উপমহাদেশ কেই বলা হয় ভারতবর্ষ। ভারতের পুরনো জনগোষ্ঠী যেখানে থাকত সেই অঞ্চলকে বলা হয় ভারতবর্ষ। ভারত শব্দের অর্থ ভারতের বংশধর। অবশ্য সব সময় সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশ বোঝাত না।

১.৪ পুরনো দিনের হিসেব-নিকেশ :
     কাজের সুবিধার জন্য পুরোনো সময়কে নানা ভাবে ভাগ করা হয় যাকে যুগ বলে। এমনভাবে তুষার যুগ, ধাতুর যুগ, তামার যুগ, লোহার যুগ ইত্যাদি আমরা বলে থাকি।

আর্যাবর্ত ও দাক্ষিণাত্য :
     ভারতবর্ষের উত্তর ও দক্ষিণ অংশকে ভাগ করেছে বিন্ধ্য পর্বত। সাধারণভাবে আর্যরা উত্তর অংশে বাস করত বলে এই অঞ্চলকে আর্যাবর্ত বলা হত। আর্যবর্ত সীমানা নানা সময়ে বদলেছে। একসময় আর্যাবর্ত বলতে চাই পুরো উত্তর ভারত কেই বোঝানো হতো। বিন্ধ্য পর্বতের দক্ষিণ দিকে আর্যদের বিশেষ কোনো প্রভাব ছিল না। এই দক্ষিণভাগকেই বলা হতো দাক্ষিণাত্য। বিন্ধ পর্বত থেকে কন্যাকুমারিকা ছিল দাক্ষিণাত্য অঞ্চল। দ্রাবিড় জাতির বাস ছিল দাক্ষিণাত্যে। কাবেরী নদীর দক্ষিণ অংশকে তাই দ্রাবিড় দেশও বলা হত। দাক্ষিণাত্য অঞ্চলে ভাষাগুলিকে দ্রাবিড় ভাষা বলা হত।

প্রাক ইতিহাস, প্রায় ইতিহাস, ইতিহাস :
     যে সময় মানুষ লিখতে-পড়তে জানতো না সেইসময়ের ইতিহাস অনুমান করে নিতে হয় বলে সেই সময়কে প্রাক ঐতিহাসিক যুগ বলে। আবার যে সময়ের লেখা পাওয়া গেলেও পড়া যায় না সেই সময়ে কে প্রায় ঐতিহাসিক যুগ বলে। আর যে সময়ের লেখা পাওয়া যায় ও পড়া যায় সেই সময়কে ঐতিহাসিক যুগ বলা হয়।

সাল, তারিখের নানারকম :
     একটা সময় ছিল যখন আনুমানিক শব্দটি ব্যবহার উঠে গেল। শুরু হল সাল, তারিখের ব্যবহার, বছর বা অব্দের ব্যবহার। বড় বড় রাজাদের শাসন কালকে অব্দ হিসাবে ধরা হতো। চালু হলো কনিষ্কাব্দ, গুপ্তাব্দ এবং হর্ষাব্দ প্রভৃতি। কনিষ্কদের আরেক নাম হল শকাব্দ। প্রথম চন্দ্রগুপ্ত ৩১৯ থেকে ৩২০ সালে গুপ্তাব্দ গণনা শুরু করেছিলেন। হর্ষবর্ধন ৬০৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে হর্ষাব্দ গণনা চালু করেন।

খ্রিস্টপূর্বাব্দ ও খ্রিস্টাব্দ :
     যিশুখ্রিস্টের জন্ম কে ধরে যে অব্দ গোনা হয় তাকে খ্রিস্টাব্দ বলে। যীশুর জন্মের আগের সময়কালকে বলা হয় খ্রিস্টপূর্বাব্দ। খ্রিস্টপূর্বাব্দ বড় থেকে ছোট দিকে গোনা হয়, অর্থাৎ ৫, ৪, ৩, ২, ১ ইত্যাদি। খ্রিস্টাব্দ গুনা হয় ছোট থেকে বড় দিকে অর্থাৎ ১, ২, ৩, ৪, ৫ ইত্যাদি। হাজার বছর কে একসঙ্গে বলা হয় সহস্রাব্দ। একশ বছরকে শতাব্দ, শতাব্দী বা শতক এবং দশ বছরকে দশক বলা হয়।

১.৫ বলা, আঁকা, লেখা :
     মানুষের মুখের ভাষা এসেছে অনেক পরে, প্রথমদিকে তারা কথা বলতে পারতো না। তারা হাত-পা নেড়ে অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে পরস্পর পরস্পরের মনের ভাব বুঝাতো। এরপর ছবি আঁকতে শিখল, ছবি এঁকে এঁকে অপরকে মনের ভাব প্রকাশ করতে শিখলো। ছবি আঁকতো দেয়ালের গায়ে, গুহার দেয়ালে, ধাতুর পাতে। এই ভাবেই ছবি থেকে সৃষ্টি হয় বর্ণের। এইভাবে ধীরে ধীরে মানুষ কথা বলতে এবং ছবি আঁকতে শিখেছিল। এইসব লিখতে প্রায় হাজার হাজার বছর কেটে গিয়েছিল। পুরনো দিনের সেই ছবিগুলির কিছু কিছু আজও আছে।

মাটির উপরে ইতিহাস, মাটির নিচে ইতিহাস :
     মাটির নিচে পাওয়া মুদ্রা, গয়না, অস্ত্রশস্ত্র, মূর্তি ইত্যাদি থেকে পুরনো ইতিহাসের কথা জানতে পারা যায়। আর মাটির উপরে পাওয়া জিনিস থেকে আমরা অনেক কিছু জানতে পারি। পুরনো দিনের সামগ্রিককে একত্রিত করে ইতিহাস রচনায় পুরাতাত্ত্বিক বা ঐতিহাসিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেন।

জাদুঘর :
     জাদুঘর এই কথাটা তোমাদের অনেকেরই জানা। তবে এই ঘরে কিন্তু জাদু দেখানো হয় না। মাটির নিচে থেকে পাওয়া পুরনো দিনের নানা প্রত্নবস্তু যত্ন করে রাখা থাকে। আর থাকে মাটির উপরে পাওয়া নানা জিনিস পত্র। আরো থাকে হারিয়ে যাওয়া বিশাল জন্তুর হার, থাকে রাজা-রাণীদের পোশাক - অস্ত্রশস্ত্র। নানারকম মূর্তি, ছবি ও বইপত্র। ইংরেজিতে জাদুঘর কে বলা হয় মিউজিয়াম (Museum)। কলকাতা শহরে একটা বিরাট জাদুঘর আছে।

১.৬ টুকরোগুলো জুড়তে জুড়তে :
     ঐতিহাসিক প্রত্নতত্ত্ববিদরা ইতিহাসের হারিয়ে যাওয়া সূত্র গুলো খুজে বের করে তা জুড়ে কি তথ্য পাওয়া গেল তা আমাদের জানায়, এই ভাবেই মহাদেশের হাজার হাজার বছরের ইতিহাস জানা সম্ভব হয়েছে। তাই বলা হয় পুরনো ইতিহাস বই যে বিরাট জিগ-স-পাজল।

প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের উপাদান :
     ইতিহাস রচনার জন্য বেশ কিছু উপাদানের আমরা সহায়তা লাভ করি। প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান হল ইতিহাস রচনায় প্রথম উপাদান। লেখমালা ইতিহাস রচনায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে। পাথরের গায়ে বা দেয়ালে খোদাই-করা শিলালিপি বা প্রশস্তি গুলি ইতিহাস রচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিল্পবস্তু ইতিহাস রচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। স্থাপত্য ভাস্কর্য ও চিত্রকলা আমাদের ইতিহাস রচনায় অনেক উপাদান যোগায়। লিখিত সাহিত্যিক উপাদান সমূহ ইতিহাস রচনায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশী ও বিদেশী সাহিত্যিক ও পর্যটকদের বিবরণ আমাদের ইতিহাস রচনায় এক অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করে। ধর্মনিরপেক্ষ বিষয়ে লেখা জীবনী মূলক সাহিত্য এবং নাটক অভিধান ইতিহাস রচনায় প্রয়োজনীয়। গ্রিক, রোমান, চিনা দূত ও পর্যটকদের বিবরণ ইতিহাস রচনায় সহায়তা করে। তবে ভাষার অসুবিধা এবং পক্ষপাতিত্বের কারণে এগুলি সম্পূর্ণভাবে নির্ভরযোগ্য উপাদান বলে বিবেচিত হয় না।

অনুশীলনী 

প্রশ্ন : নদীমাতৃক সভ্যতা বলতে কি বোঝো?

প্রশ্ন : ভারতীয় উপমহাদেশ কাকে বলে?

প্রশ্ন : ভারত কথাটির অর্থ কি?

প্রশ্ন : আর্যাবর্ত বলতে কী বোঝো?

প্রশ্ন : দাক্ষিণাত্য অঞ্চল কত দূর বিস্তৃত ছিল?

প্রশ্ন : প্রাক ইতিহাস কাকে বলে?

প্রশ্ন : প্রায় ইতিহাস বলতে কী বোঝো?

প্রশ্ন : ইতিহাস বলতে কী বোঝো?

প্রশ্ন : খ্রিস্টাব্দ কাকে বলে?

প্রশ্ন : গুপ্তাব্দ বলতে কী বোঝো?

প্রশ্ন : কনিষ্কাব্দ কি?

প্রশ্ন : খ্রিষ্টপূর্বাব্দ বলতে কী বোঝো?

প্রশ্ন : জাদুঘর বলতে কী বোঝো?

প্রশ্ন : জিগ-স-পাজল কি?

প্রশ্ন : লেখমালা বলতে কী বোঝো?

প্রশ্ন : শিলা লেখ কি?

প্রশ্ন : হর্ষচরিত এর লেখক কে?

প্রশ্ন : ইতিহাসের উপাদান হিসেবে লেখমালা ও প্রশস্তির গুরুত্ব লেখ।

প্রশ্ন : প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় বিভিন্ন ধর্মনিরপেক্ষ সাহিত্যের গুরুত্ব উল্লেখ করো।

প্রশ্ন : ভারতবর্ষের ইতিহাস রচনার উপাদান হিসেবে বিদেশি সাহিত্য গুলি পুরোপুরি গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কি কি অসুবিধা আছে তা উল্লেখ করো।

সম্পূর্ণ সাজেশনটি পেতে ঃ এইখানে ক্লিক করুন
Tags

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

LightBlog

AdsG

close