উচ্চ মাধ্যমিক
একাদশ শ্রেণী
দর্শন
ত্রয়োদশ অধ্যায়
সমসাময়িক ভারতীয় দর্শন
দ্বিতীয় পর্ব
স্বামী বিবেকানন্দ ছাড়া ভারতবর্ষের আর যেসব মনীষীকে উপনিষদ তথা বেদান্তের আধুনিক ব্যাখ্যাকার রূপে উল্লেখ করা হয় তার মধ্যে সবার প্রথমে উল্লেখ করা হয় বিশ্বকবি ও দার্শনিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম। রবীন্দ্রনাথের দর্শনে যে বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে ফুটে উঠে তা হলো মানবতাবাদ।
মানবতাবাদ :
রবীন্দ্রনাথের মতে মানুষের ধর্মের মূল ভিত্তি হল মানবতাবাদ। এই মানবতাবাদ কে তিনি মানবধর্ম রূপে উল্লেখ করেছেন। মানবতাবাদ এর পূর্ণ অর্থ হলো - যা মানুষের জীবনের পরিপূর্ণ বিকাশকে সূচিত করে তাই হল মানবতাবাদ।
আধুনিক ধর্ম হিসাবে মানবতাবাদ :
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ মনে করেন যে একমাত্র মানবতায় আধুনিককালের ধর্ম হিসাবে গণ্য হওয়া উচিত। মানবতাবাদ যে মানুষের প্রকৃত ধর্ম রূপে গণ্য হতে পারে তা রবীন্দ্রনাথই সর্বপ্রথম যুক্তিসহকারে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপিত করেন।
মানবতাবাদের উদ্দেশ্য :
মানবতাবাদের প্রধান উদ্দেশ্য গুলি নিচে আলোচনা করা হলো -
প্রথমত, মানবতাবাদ মানুষের প্রকৃত সত্যকে প্রকাশ করে।
দ্বিতীয়ত, মানবতাই মানুষের অহংবোধ ধ্বংস করে। মানুষকে বিশ্ব ভাবে উদ্দীপ্ত করে।
তৃতীয়ত, ঐক্য মঞ্চের একমাত্র দিশারী হল মানবতাবাদ।
চতুর্থত, মানবতাবাদি হলো মানুষের আদর্শ ধর্ম।
মানুষের চরিত্র গঠনে মানবতাবাদের প্রভাব :
মানুষের চরিত্র গঠনে মানবতাবাদের যে প্রভাব গুলি পরিলক্ষিত হয় তা নিম্নরূপ -
প্রথমত, আধ্যাত্মিক উত্তোলনের পথ হল মানবতাবাদ। মানবতাই হলো মানুষের আধ্যাত্মিক উত্তোলন ঘটায়।
দ্বিতীয়ত, মানুষের সসীম সত্তাকে অতিক্রম করে অসীমতায় উন্মোচন ঘটনোয় মানবতাবাদ।
তৃতীয়ত, মানবতাবাদ মানুষের সৃজনশীল ক্ষমতাকে আহ্বান জানায়।
চতুর্থত, মানবতাবাদের উদ্ভূত অসীম চেতনাবোধ কোন বহির্জগতের নির্দেশ নয়, এগুলো মানুষের অন্তরের বিবেকের নির্দেশ।
পঞ্চমত, মানবতাবাদের মাধ্যমেই মানুষের আত্মোপলব্ধি ঘটে - যা এক অনাবিল আনন্দের অনুভুতিকে সূচিত করে।
খুব ভালো হয়েছ
উত্তরমুছুন