উচ্চ মাধ্যমিক
একাদশ শ্রেণি
দর্শন
দ্বাদশ অধ্যায়
ন্যায় দর্শন
তৃতীয় পর্ব
ন্যায় দার্শনিকদের মতে অনুমান দুই প্রকার। যথা - স্বার্থনুমান এবং পরার্থানুমান। নিজে বোঝার জন্য যে অনুমান করা হয় তাকে বলে স্বার্থনুমান। আর যখন অপরের জন্য অনুমান করা হয় তখন তাকে বলে পরার্থানুমান। স্বার্থ নোমানের ক্ষেত্রে অনুমান টিকে যথাযথভাবে ব্যপ্ত করার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু পরার্থানুমানের ক্ষেত্রে অনুমানকে যথাযথভাবে ব্যক্ত করার প্রয়োজন আছে। যথাযথভাবে ব্যক্ত করার অর্থ হল অনুমানে বা ন্যায় শাস্ত্রসম্মত রূপটি প্রকাশ করা। ভারতীয় ন্যায় পাঁচটি অবয়ব বিশিষ্ট। যথা - প্রতিজ্ঞা, হেতু, উদাহরণ, উপনয় এবং নিগমন। নিচে একটি দৃষ্টান্তের সাহায্যে বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করা হলো -
- পর্বত বহ্নিমান - প্রতিজ্ঞা
- পর্বত ধূমমান - হেতু
- যেখানেই ধুম সেখানেই বহ্নি, যেমন রান্নাঘর - উদাহরণ
- পর্বত ধূমমান - উপনয়
- অতএব, পর্বত বহ্নিমান - নিগমন
উপরের প্রথম বচনটি হলো প্রতিজ্ঞা বা প্রতিপাদ্য। এই বিষয়টিকে প্রমাণ করতে হবে। দ্বিতীয় বচনটি হলো হেতু। হেতুই প্রতিজ্ঞার কারণ নির্দেশ করে। তৃতীয় বচনে সাধ্য এবং হেতুর মাধ্যমে ব্যাপ্তি বা নিয়ত অভ্যবিচারী সম্বন্ধ সেটিকে প্রকাশ করে এবং পরিচিত দৃষ্টান্তের দ্বারা এই ব্যক্তি সম্বন্ধকে সমর্থন করা হয়। চতুর্থ বচনটি হলো উপনয়। উপনয় হল সামান্য বচন থেকে বিশেষ ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা। পঞ্চম বা সর্বশেষ বচন টি হল নিগমন। পূর্ববর্তী বচনগুলোর ভিত্তিতে বা বচন গুলির দ্বারা সমর্থিত হয়ে যে সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় সেটি হল নিগমন। এই অবয়ব সমূহের সমষ্টিকে ন্যায় নামে অভিহিত করা হয়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ