LightBlog
মাধ্যমিক ইতিহাস শেষ মুহুর্তের সাজেশন 2024 PDF না দেখলে চরম মিস
Type Here to Get Search Results !

মাধ্যমিক ইতিহাস শেষ মুহুর্তের সাজেশন 2024 PDF না দেখলে চরম মিস

Madhyamik History Suggestion 2024


Madhyamik history suggestion 2024 pdf download. মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024 pdf. মাধ্যমিক ইতিহাস বড় প্রশ্ন উত্তর 2024. মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন 2024 mcq. wbbse class 10 history suggestion 2024. মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন 2024. মাধ্যমিক history suggestion. মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর pdf.

madhyamik history suggestion 2024
madhyamik history suggestion 2024


বিভাগ - গ

৩. দু’টি অথবা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও (যে কোনো ১১টি): ২×১১=২২

(১) আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চা গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উত্তর:- স্থানীয় বা আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চার দ্বারা স্থানীয় অঞ্চলের সমাজ, অর্থনীতি, শিল্পকলা প্রভৃতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। জাতীয় ইতিহাসচর্চার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপাদান পাওয়া যায়। আঞ্চলিক ইতিহাসের মাধ্যমেই জাতীয় ইতিহাস পূর্ণাঙ্গ রূপ নিতে পারে।

(২) সামরিক ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব কী?

উত্তর : সামরিক ইতিহাসচর্চার প্রধান গুরুত্ব হল, এর দ্বারা — [1] সময়ের সঙ্গে যুদ্ধের বিবর্তন সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করা যায়। [2] যুদ্ধে কোনো শক্তির জয় বা পরাজয়ের ব্যাখ্যা খুঁজে পাওয়া যায় ইত্যাদি।

(৩) পরিবেশের ইতিহাসের গুরুত্ব কী?

উত্তর : পরিবেশের ইতিহাসের গুরুত্বগুলি হল— 

প্রথমত, মানবসভ্যতার অগ্রগতিতে পরিবেশের ভূমিকা চিহ্নিত করে পরিবেশ সচেতনতা ও পরিবেশ রক্ষার ব্যবস্থা করা। 

দ্বিতীয়ত, পরিবেশ সংকট ও তার প্রকৃতি, পরিবেশ বিপর্যয় ও তার ভয়াবহতা, বাসস্থানের সুস্বাস্থ্য, অরণ্য ও অরণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও তার প্রয়ােগের ব্যবস্থা করা।

(৪) সামাজিক ইতিহাস কী?

উত্তর : ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে ইউরোপ ও আমেরিকায় ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে প্রচলিত রাজনৈতিক, সামরিক, সাংবিধানিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাসের পরিবর্তে সমাজের অবহেলিত দিকগুলিসহ সমগ্র সমাজের ইতিহাস রচনার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয় যা নতুন সামাজিক ইতিহাস নামে পরিচিত। এই ইতিহাস সংশোধনবাদী ইতিহাস নামেও পরিচিত।

প্রথমত, এই ইতিহাসের বিভিন্ন দিকগুলি হল—সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন, জাতি-বর্ণ ও জাতিবিদ্বেষ, হিংসা ও সম্প্রীতি।

দ্বিতীয়ত, এই ইতিহাসচর্চায় যুক্ত গবেষকরা হলেন ইউজিন জেনোভিস, হারবার্ট গুটম্যান, রণজিৎ গুহ, জ্ঞানেন্দ্র পাণ্ডে, শাহিদ আমিন, সুমিত সরকার, গৌতম ভদ্র, দীপেশ চক্রবর্তী।

(৫) আত্মজীবনী এবং স্মৃতিকথা বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ 

আত্মজীবনী : যখন কেউ অকপটে নিজের জীবন কথা নিজেই লেখেন তখন তাকে আত্মজীবনী বলা হয়। যেমন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের লেখা আত্মজীবনী টি হল "প্রভাবতী সম্ভাষণ"।

স্মৃতিকথা : জীবনের নানা ঘটনা যা স্মৃতিপটে লেগে থাকে এবং পরে যদি কেউ নিজের সেই স্মৃতিগুলো কে সংগঠিত করেন তবে তাকে স্মৃতি কথা বলা হয়। যেমন - বিপিনচন্দ্র পালের লেখা "সত্তর বৎসর" একটা আদর্শ স্মৃতিকথার উদাহরণ।

(৬) ইতিহাসের উপাদানরূপে সংবাদপত্রের গুরুত্ব কী?

উত্তরঃ ইতিহাসের বেসরকারি উপাদান হিসেবে সংবাদপত্র ও সাময়িক পত্রের গুরুত্ব অস্বীকার করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে থেকে বাংলা ভাষায় সংবাদপত্রের প্রচলন শুরু হয়েছিল। নিচে ইতিহাসের উপাদান রূপে সংবাদপত্রের কয়েকটি গুরুত্ব আলোচনা করা হলো -

প্রথমত, উনিশ শতকে এদেশের সমাজ ও ধর্মের ক্ষেত্রে যে সমস্ত কুসংস্কার ছিল তার বিরুদ্ধে সমাজ সংস্কারক ও ধর্ম সংস্কার রা কিভাবে সোচ্চার হয়েছিলেন তা জানা যায়।

দ্বিতীয়ত, ব্রিটিশ শাসনকালে প্রকাশিত সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনাবলী, যেমন ব্রিটিশদের শাসন নীতি, ভারতীয়দের মনোভাব প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায়। এবং এগুলি থেকে বর্তমান সময়ের আধুনিক ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাস রচনার সময় যথেষ্ট সহায়তা করে।

(৭) স্মৃতিকথা অথবা আত্মজীবনীকে কীভাবে আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার উপাদানরূপে ব্যবহার করা হয়?

উত্তরঃ আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা গুরুত্বঃ-

প্রথমত, সাধারণ মানুষের কথা, লেখক এর পারিপার্শিক পরিবেশ, কোন কোন ঘটনার বিবরণী প্রভৃতি ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে তথ্যের জোগান দেয়।

দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির বিভিন্ন ধর্মী ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।

(৮) সংবাদপত্র এবং সাময়িকপত্রের মধ্যে পার্থক্য কী?

উত্তর:- (ক) সাধারণত সংবাদপত্র প্রতিদিন প্রকাশিত হয়। কিন্তু সাময়িকপত্র একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রকাশিত হয়।

(খ) সংবাদপত্রের মুদ্রণে রোজকার খবরাখবর গুরুত্ব পায়। সাময়িকপত্রে রোজকার খবরের পরিবর্তে সমকালীন বাছাই করা বিষয় গুরুত্ব পায়।

(গ) সংবাদপত্রের পৃষ্ঠা আকারে বড়ো হয় এবং সেগুলো বাঁধানো থাকে না। অন্যদিকে, সাময়িকপত্রের পৃষ্ঠাগুলো অপেক্ষাকৃত ছোটো হয় এবং সাধারণত তা বইয়ের মতো বাঁধাই করা হয়।

(৯) স্কুল বুক সোসাইটি কেন প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তরঃ প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ডেভিড হেয়ার ১৮১৭ সালে ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি প্ৰতিষ্ঠা করেন।

এর উদ্দেশ্য ছিল --- বিদ্যালয়ের ছাত্রদের উপযোগী ইংরেজি ও ভারতীয় ভাষায় উপযুক্ত পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, প্রকাশ ও স্বল্প মূল্যে বা বিনামূল্যে বিতরণ করা।

(১০) এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে খ্রিষ্টান মিশনারীদের প্রধান উদ্দেশ্য কী ছিল?

উত্তরঃ মিশরনারিদের অবদান : এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে খ্রিস্টান মিশনারিদের উদ্যোগগুলি ছিল নিম্নরূপ - 

(i) ব্যাপটিস্ট মিশন : ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুরে মার্শম্যান, উইলিয়াম কেরি ও উইলিয়াম ওয়াড 'ব্যাপ্টিস্ট মিশন' প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। খ্রিস্টধর্ম প্রচারের জন্য তারা শ্রীরামপুরে ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং ২৬ টি আঞ্চলিক ভাষায় বাইবেল রচনা করেছিলেন। তারা দিগদর্শন ও সমাচার দর্পণ পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন। ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুর বিদ্যালয় এবং শ্রীরামপুর কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

(ii) লন্ডন মিশনারি সোসাইটি : খ্রিস্টান মিশনারিরা কলকাতা ও বাংলার বিভিন্ন জেলায় বহু বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যার মধ্যে চুঁচুড়া, কালনা, বর্ধমান, বহরমপুর, মালদা প্রভৃতি স্থানে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয় গুলি ছিল উল্লেখযোগ্য।

(১১) মেকলে মিনিট কী?

উত্তরঃ থমাস ব্যারিটন মেকলে ছিলেন গভর্ণর জেনারেল লর্ড উইলিয়ম বেন্টিঙের আইনসচিব ও জেনারেল কমিটি অফ পাবলিক ইন্সট্রাকশন বা জনশিক্ষা কমিটির সভাপতি। মেকলে ব্যাক্তিগত ভাবে ছিলেন পাশ্চাত্য শিক্ষার সমর্থক। তিনি ১৮৩৫ খ্রীষ্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি গভর্ণর জেনারেল লর্ড উইলিয়ম বেন্টিঙের কাছে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের পক্ষে যে মিনিট বা প্রস্তাব পেশ করেন, তাকে মেকলে মিনিট বা মেকলে প্রস্তাব বলা হয়।

(১২) বাংলার নারীশিক্ষা বিস্তারে রাজা রাধাকান্ত দেবের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ রাজা রাধাকান্ত দেবের শিক্ষা অন্বেষণ এবং সমাজের নীচ পর্যন্ত পৌঁছানো এবং সমস্ত হিন্দুদের শিক্ষার প্রসারের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ ছিল।

পরে তিনি 1818 সালে কলকাতার স্কুলে সেক্রেটারি হন এবং তিনি সমস্ত ইতিহাসে স্ত্রী শিক্ষা নামক প্যামপ্লেট প্রকাশ করতে শুরু করেন, তিনি সতী প্রথাকে রক্ষা করার আগে অনেক লোকের বিরুদ্ধাচরণ ছিল এবং সতী প্রথার বিরুদ্ধে অনেকেই তাকে অপছন্দ করতেন।

সতীদাহ প্রথা মূলত আগে ব্যবহার করা হত যখন একজন স্বামী মারা যান তার স্ত্রী তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় জীবিতভাবে যোগ দিতেন।

(১৩) মধুসূদন গুপ্ত কে ছিলেন?

উত্তর:- মধুসূদন গুপ্ত ছিলেন কলকাতা মেডিকেল কলেজের একজন ছাত্র। এদেশে তিনিই প্রথম শব বা মৃতদেহ ব্যবচ্ছেদ করে এক যুগান্তকারী ঘটনা ঘটান। তিনি ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে ডাক্তারি পাস করেন এবং পরে মেডিকেল কলেজের চাকরিতে যোগ দেন।

(১৪) নববিধান কি?

উত্তরঃ কেশবচন্দ্র সেন ব্রাহ্মসমাজে কিছু নতুন বিধান বা নীতি প্রবর্তন করেন। এই নতুন বিধান বা নীতিগুলি নববিধান নামে পরিচিত।

(১৫) ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ বিভক্ত হল কেন?

উত্তরঃ ১৮৬৬ সালে কেশবচন্দ্র সেন ও তাঁর অনুগামীরা ব্রাহ্মসমাজ থেকে বহিস্কৃত হলে তাঁরা গড়ে তোলেন 'ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ'।

     কিন্তু কয়েকটি বিষয়কে কেন্দ্র করে কেশবচন্দ্রের সঙ্গে এই সংগঠনের তরুণ সদস্যদের মতবিরোধ শুরু হয়। ১৮৭৮ সালে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ-এর নিয়ম ভেঙে কেশবচন্দ্র সেন নিজের ১৪ বছরের নাবালিকা কন্যাকে কোচবিহারের মহারাজের সঙ্গে বিবাহ দিলে এই মতপার্থক্য চরম আকার নেয়।

     মূলত, এই কারণকে সামনে রেখেই ১৮৭৮ সালে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ এর কয়েকজন তরুণ এই সংগঠন ত্যাগ করেন এবং 'সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ' নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন।

(১৬) সমাজসংস্কারে নব্যবঙ্গদের ভূমিকা কী ছিল?

উত্তরঃ ১) নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী জাতিভেদ  প্রথা, অস্পৃশ্যতা, নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের তীব্র সমালোচনা করে।

২) তারা হিন্দুসমাজের রক্ষণশীলতাকে আক্রমণ করার জন্য প্রকাশ্যে ব্রাত্মণের পৈতা ছিড়ে  দিতেন, এমনকি  নিষিদ্ধ  মাংসও  খেতেন।

(১৭) চুয়াড় বিদ্রোহের (১৭৯৮-১৯) গুরুত্ব কী ছিল?

উত্তরঃ চুয়াড় বিদ্রোহের গুরুত্ব -

আঠারশ সালের জানুয়ারি মাসে গভর্নর জেনারেল লর্ড ওয়েলেসলি অনেক চেষ্টায় এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও এর গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এই বিদ্রোহের ফলে,

১) চুয়ার দের এই বিদ্রোহ ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল যা পরবর্তীকালে ভারতের শিক্ষিত শিক্ষিত সম্প্রদায়কে অনুপ্রাণিত করেছিল প্রায় 100 বছর পরে।

২) জমিদার ও কৃষকরা ঐক্যবদ্ধভাবে এই বিদ্রোহের শামিল হয়েছিল যা সচরাচর লক্ষ্য করা যায় না।

(১৮) দুদু মিঞা স্মরণীয় কেন?

উত্তরঃ উনিশ শতকের প্রথমদিকে বর্তমান বাংলাদেশের ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা প্রভৃতি অঞ্চলে হাজী শরীয়তুল্লাহর নেতৃত্বে যে ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা ফরাজি আন্দোলন নামে পরিচিত।

     তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র মোহাম্মদ মহসিন অরফে দুদুমিঞা  এই আন্দোলনকে একটি সুসংহত রূপদান করেন এবং অচিরেই তা কৃষক আন্দোলনে রূপ নেয়।

    তাঁর নেতৃত্বে ধর্মীয় সংস্কারের লক্ষ্য থেকে সরে এসে ফরাজি আন্দোলন শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে পরিচালিত হয়েছিল। দুদুমিয়ার এই আন্দোলন পরবর্তীকালে বাংলা থেকে ব্রিটিশদের বিতারণে প্রেরণা যুগিয়েছিল।

(১৯) ফরাজি আন্দোলন কি ধর্মীয় পুনর্জাগরণের আন্দোলন?

উত্তরঃ ফরাজী শব্দের অর্থ হলো ইসলাম নির্ধারিত বাধ্যতামূলক কর্তব্য।

     মূলত একেশ্বরবাদ সামাজিক সাম্য সহ কোরআনের নির্দেশ যথাযথভাবে পালন করার জন্য ১৮২০ সালে মৌলভী হাজী শরীয়ত উল্লাহ যে সংস্কার আন্দোলন গড়ে তোলেন তা ফরাজি আন্দোলন নামে পরিচিত।

     সুতরাং এই আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্যই ছিল ইসলামের শুদ্ধিকরণ করে ধর্মীয় পুনর্জাগরণ ঘটানো।

তবে শরীয়তউল্লাহ মৃত্যুর পর তার পুত্র মোহাম্মদ মুসিন বা দুধু মিয়া এই আন্দোলনকে অত্যাচারী জমিদার ও নীলকরদের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী কৃষক আন্দোলনের পরিণত করেন।

     ফলে এই আন্দোলন ক্রমশ ব্রিটিশবিরোধী কৃষক আন্দোলনে রূপান্তরিত হয় বলে অধ্যাপক নরহরি কবিরাজ এবং ডঃ অভিজিৎ দত্ত মনে করেন।

(২০) সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হল কেন?

উত্তর:- সমসী ফকির বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার প্রধান কারণগুলি হল-

(ক) এই বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অনেকেই বাংলার বাইরে থেকে এসেছিলেন। তাই বাংলায় তাদের জনভিত্তি ছিল দুর্বল।

(খ) এই বিদ্রোহ শুরু থেকেই ক্ষুদ্র অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল।

(গ) সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে এই বিদ্রোহ জনপ্রিয় হতে পারে নি।

(২১) লর্ড হার্ডিঞ্জ-এর ‘শিক্ষাবিষয়ক নির্দেশনামা’ গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উত্তরঃ ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্য নিয়ে ১৮৪২ সালে 'কাউন্সিল অফ এডুকেশন' গঠিত হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে বড়লাট হার্ডিঞ্জ ১৮৪৪ সালে ঘোষণা করেন যে, সরকারি চাকরিতে ইংরেজি ভাষা জানা ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

লর্ড হার্ডিঞ্জের এই ঘোষণাকে সামনে রেখে 'বোর্ড অফ কন্ট্রোল'-এর সভাপতি স্যার চার্লস উড ১৮৫৪ সালে শিক্ষা বিষয়ক একটি নির্দেশনামা ( উডের ডেসপ্যাচ) প্রচার করেন, যার ভিত্তিতে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা শুরু হয়।

বস্তুত হার্ডিঞ্জের ঘোষণা ভারতীয়দের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষা গ্রহণের বিষয়ে উৎসাহ বাড়িয়ে দেয়। এবং এই পটভূমিতে উডের ডেসপ্যাচ অনুসারে ১৮৫৭ সালে কলকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।

(২২) নীল বিদ্রোহে খ্রিস্টান মিশনারিদের ভূমিকা কীরূপ ছিল?

উত্তর:- বাংলায় সংঘটিত নীল বিদ্রোহে ইউরোপ থেকে ভারতে আগত খ্রিস্টান মিশনারিদের বিশেষ ভূমিকা ছিল। (১) এই বিদ্রোহের সময় তারা নীলচাষিদের প্রতি সমর্থন ও সহানুভূতি জানায়। (২) তারা নীলকর সাহেবদের অত্যাচার ও শোষণের চিত্র স্থানীয় সংবাদপত্রগুলিতে তুলে ধরে। (৩) তারা উপলব্ধি করে যে, নীলচাষিদের দুর্দশা দূর করার জন্য তাদের মধ্যে উন্নত ‘খ্রিস্টান শিক্ষা’ ও গণশিক্ষার প্রসার ঘটানো প্রয়োজন। এখানে উল্লেখ্য, মিশনারি জেমস লঙ নীলকরদের তীব্র সমালোচক ছিলেন।

(২৩) ‘বাংলার নবজাগরণ’ বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটে। এর প্ৰভাবে ভারতে বিশেষ করে বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষা সংস্কৃতির ব্যাপক অগ্রগতি শুরু হয়। ঊনবিংশ শতকে শুরু হয়ে বিংশ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত এই অগ্রগতি অব্যাহত থাকে। বাংলার এই অগ্রগতির ধারাকে 'বাংলার নবজাগরণ' নামে পরিচিত।

(২৪) নীলকররা নীলচাষিদের ওপর কীভাবে অত্যাচার করত তা সংক্ষেপে আলোচনা করো।

উত্তরঃ নীলকররা যেভাবে নীলচাষিদের ওপর অত্যাচার করত তা হল –

প্রথমত, চাষিরা নীলচাষ করতে না চাইলে নীলকরদের লাঠিয়াল, পাইক, বরকন্দাজবাহিনী তাদের ধরে এনে কুঠিতে আটকে রেখে মারধোর করত।

দ্বিতীয়ত, চাষিদের ধান, তামাকের জমি নষ্ট করে দেওয়া হত, তাদের গোরুবাছুর কেড়ে নিয়ে কুঠিতে রেখে দিত । নীলচাষ না করলে চাষিদের চাবুক দিয়ে মারা হত।

তৃতীয়ত, নীলচাষে অনিচ্ছুক কৃষকদের পরিবারের নারীদের অসম্মান করা হত।

(২৫) নীল বিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকা কীরূপ ছিল?

উত্তরঃ ১৮৫৯-৬০ সালে বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নীল চাষীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ও সংঘবদ্ধভাবে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ করেছিল বাংলার ইতিহাসে নীল বিদ্রোহ নামে পরিচিত।

এই বিদ্রোহকে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের একাংশ সমর্থন করে নীল চাষীদের পক্ষে দাঁড়ায়। এদের মধ্যে হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার সম্পাদক হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

১) তিনি তার পত্রিকার মাধ্যমে নীলকরদের অত্যাচারের কাহিনী প্রকাশ করে নীল বিদ্রোহীদের পক্ষে জনমত গঠন করেন।

২) তার নীলা নিরলস প্রচেষ্টা ও ক্ষুরধার লেখনীর গনি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের ইংরেজদের সম্পর্কে মোহভঙ্গ ঘটে এবং তারা কৃষকদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে ওঠে।

(২৬) ‘ল্যান্ডহোল্ডার্স সোসাইটি’ কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত?

উত্তরঃ ভারতের প্রথম উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক সংগঠনের নাম হল 'জমিদার সভা' বা 'ল্যান্ড হোল্ডার সোসাইটি'।

উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য :

১৮৩৮ সালে দ্বারকানাথ ঠাকুরের উদ্যোগে এবং রাজা রাধাকান্ত দেবের সভাপতিত্বে  প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল: ১) বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার জমিদারদের স্বার্থ রক্ষা করা, ২) ব্রিটিশ আমলাতন্ত্রকে জমিদারদের স্বপক্ষে আনা, ৩) ভারতের সর্বোচ্চ চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রসার ঘটানো, ৪) পুলিশ বিচার ও রাজস্ব বিভাগের সংস্কার সাধন করা।

গুরুত্ব বা তাৎপর্য :

জমিদার সভার আবেদনের ভিত্তিতে সরকার ১০ বিঘা পর্যন্ত ব্রহ্মোত্তর জমির খাজনা করে। এই সংগঠন দীর্ঘস্থায়ী না হলেও ভারতে আধুনিক প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি নতুন ধারার সূচনা করে। ডক্টর রাজেন্দ্রলাল মিত্র তাই জমিদার সভা কে ভারতের স্বাধীনতার অগ্রদূত বলে অভিহিত করেছেন।

(২৭) উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধকে ‘সভাসমিতির যুগ’ বলা হয় কেন?

উত্তরঃ উনিশ শতকের মাঝামাঝি সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয় জাতীয়তাবাদ জেগে ওঠে। জাতীয়তাবাদের বিকাশের শুরুতে ভারতীয়রা উপলব্ধি করে যে, অত্যাচারী ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতবর্ষের স্বার্থরক্ষার জন্য রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার।

    এই প্রেক্ষাপটে উনিশ শতকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কতকগুলি রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠে। এইভাবে উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধ জুড়ে বেশ কিছু রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠায় ডক্টর অনিল শীল এই শতককে 'সভা সমিতির যুগ' বলে অভিহিত করেছেন।

(২৯) উনিশ শতকে জাতীয়তাবাদের উন্মেষে ‘ভারতমাতা’ চিত্রটির কিরুপ ভূমিকা ছিল?

উত্তর:- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর আঁকা ‘ভারতমাতা’র চার হাতে বেদ, ধানের শিষ, জপের মালা, ও শ্বেতবস্ত্র দেখিয়েছেন। এগুলির দ্বারা তিনি ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী স্বদেশি আন্দোলনের যুগে ভারতীয়দের মধ্যে স্বদেশিয়ানা ও জাতীয়তাবাদী অনুভূতি জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন।

(৩০) উনিশ শতকে জাতীয়তাবাদের উন্মেষে ‘আনন্দ মঠ’ উপন্যাসটির কীরুপ অবদান ছিল?

উত্তরঃ আনন্দমঠ উপন্যাসের পটভূমি হল অষ্টাদশ শতকের সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ ও ছিয়াত্তরের মন্বন্তর।

১) এই উপন্যাসের সন্ন্যাসী ও ফকির সম্প্রদায়ের ত্যাগ, বৈরাগ্য এবং দেশকে স্বাধীন করার জন্য সবকিছু উৎসর্গ করার আদর্শ প্রচার করেন। এই আদর্শের প্রচার পরবর্তীকালে বিপ্লবীদের মধ্যে সংগ্রামী মনোভাবের জন্ম দেয়।

২) অন্যদিকে ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের মর্মস্পর্শী বর্ণনা আছে এই উপন্যাসে। এই বর্ননা এবং পরাধীন মাতৃভূমিকে মুক্ত করার জন্য সন্তানদের প্রবল প্রচেষ্টা যুব সমাজকে উদ্বেলিত করে তোলে।

(৩১) ব্যঙ্গচিত্র কেন আঁকা হয়?

উত্তরঃ ব্যঙ্গচিত্ত হলো চিত্রকলার একটি বিশেষ অঙ্গ। প্রচলিত সমাজ, রাজনৈতিক , অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন ত্রুটি বিচ্যুতিকে প্রকাশ করার জন্য ব্যঙ্গচিত্র আঁকা হয়। উদাহরণ – কালীপ্রসন্ন সিংহের হুতোম প্যাঁচা।

(৩২) চার্লস উইলকিনস কে ছিলেন?

উত্তর:- প্রাচ্যবাদী পণ্ডিত চার্লস উইলকিনস পঞ্চানন কর্মকারের সাহায্যে বাংলা মুদ্রাক্ষর খোদাই এবং অক্ষর ঢালাইয়ের কাজ করেন। তার তৈরি বাংলা মুদ্রাক্ষরের সাহায্যেই হ্যালহেড তার বাংলা গ্রামার বইটিতে উদাহরণরূপে বাংলা মুদ্রণের ব্যবস্থা করেন। তাই তিনি বাংলার গুটেনবার্গ’ নামে পরিচিত।

(৩৩) শিক্ষিত বাঙালি সমাজের একটি অংশ কেন মহাবিদ্রোহের (১৮৫৭) বিরোধিতা করেছিল।

উত্তরঃ ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহকে শিক্ষিত বাঙালি সমাজ সাধারণভাবে সমর্থন করেননি।

ইংরেজদের উপর বিশ্বাস : তখনকার পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত বাঙালি সমাজ ইংরেজদের প্রতি অধিক আগ্রহ পোষণ করত । তারা ভাবে এই সময় ভারতের ওপর থেকে ইংরেজ শক্তি চলে গেলে ভারতকে সঠিকভাবে চালানো যাবে না । তখনকার বাঙালি শিক্ষিত সমাজ ব্রিটিশ শাসনকে ভারতের পক্ষে কল্যাণকর বলে মনে করত ।

বিদ্রোহের অযৌক্তিকতা : ১৮৫৭ সালে বিদ্রোহকে সমকালীন বাঙালি সমাজ অপ্রয়োজনীয় মনে করেছিল । বিদ্রোহে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটলে ভারতে আবার মুসলিম শাসনের দিন আসতে পারে, এই আশঙ্কা মূলত হিন্দু বাঙালিদের ছিল ।

(৩৪) বাংলার ছাপাখানার বিকাশে পঞ্চানন কর্মকারের ভূমিকা কী ছিল?

উত্তরঃ পঞ্চানন কর্মকার হচ্ছেন বাংলা ভাষায় ছাপাখানার হরফ নির্মাণের অন্যতম রূপকার। চার্লস উইলকিন্স-এর তৈরি বাংলা অক্ষরের টাইপ বা নকশাকে আরো মার্জিত রূপ দিয়ে তিনি আরও মার্জিত একটি নতুন হরফ নির্মাণ করেছিলেন।

পঞ্চানন কর্মকারের এই হরফে ছাপা হয় হ্যালহেড রচিত একটি পূর্ণাঙ্গ বাংলা বই, যার নাম 'এ গ্রামার অফ দা বেঙ্গলি ল্যাঙ্গুয়েজ'। প্রকৃত অর্থে, পঞ্চানন কর্মকারের তৈরি হরফেই প্রথম শুরু হয় বাংলা ভাষায় পূর্ণাঙ্গ বই ছাপার কাজ। এইভাবে বাংলাদেশে ছাপাখানার বিকাশে পঞ্চানন কর্মকার বা পঞ্চানন মল্লিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

(৩৫) বাংলার সাংস্কৃতিক জীবনে ছাপাখানার বিকাশের প্রভাব কতটা?

উত্তরঃ ১) শিক্ষিত বাঙ্গালীদের একটি অংশ বিদ্রোহ কে সমর্থন করেনি

২) ব্রিটিশ শাসনের উপর তাদের বিশ্বাস স্থাপন

৩) খ্যাতনামা বাঙ্গালীদের বিদ্রোহ বিরোধী অভিমত ও নিন্দা

৪) ইংরেজি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ইংরেজদের প্রতি প্রশ্নাতীত আনুগত্য

(৩৬) উনিশ শতকে বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স এর ভূমিকা কী ছিল?

উত্তরঃ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স প্রতিষ্ঠার ফলে– (১) ভারত তথা বাংলা বিজ্ঞান গবেষণার জন্য একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান লাভ করে। (২) এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই আধুনিক বিজ্ঞান জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। (৩) গবেষক স্যার সি ভি রামন এবং কে এস কৃষান ছিলেন এই প্রতিষ্ঠানের সম্পদ।

(৩৭) বাংলা লাইনোটাইপ প্রবর্তনের গুরুত্ব কী?

উত্তর:- লাইনোটাইপ আদতে একটি কম্পোজিং মেশিন। এর সাহায্যে হাতের বদলে মেশিনে অত্যন্ত দ্রুত ও সুচারুরূপে চলমান ধাতব হরফ স্থাপন করা যেত। বাংলায় ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ সুরেশচন্দ্র মজুমদার, রাজশেখর বসু প্রমুখের উদ্যোগে এই প্রযুক্তিতে সংবাদপত্র ছাপা শুরু হয়।

(৩৯) বাংলার মুদ্রণের ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনার গুরুত্ব কী?

উত্তরঃ বাংলার মুদ্রণ শিল্পের ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনার গুরুত্ব বিশেষ উল্লেখযোগ্য। উনিশ শতকের কলকাতায় মূলত দর্জিপাড়া, শ্যামবাজার, জোড়াসাঁকো, শিয়ালদহ ইত্যাদি জায়গায় জনরুচি (Public Test) অনুযায়ী যেসব প্রকাশনা চলত তা ‘বটতলার প্রকাশনা’ নামে পরিচিত।

(৪০) ঔপনিবেশিক শিক্ষা ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ ছিল কেন?

উত্তরঃ ভারতের ঔপনিবেশিক শিক্ষা বিস্তারের ফলে নব যুগের সূচনা ঘটলেও এই শিক্ষা ব্যবস্থা ত্রুটিমুক্ত ছিল না। ফলে ভারতীয়দের সার্বিক বিকাশ ব্যর্থ হয়। 

কেরানি তৈরীর শিক্ষা :

এই শিক্ষা ব্যবস্থায় ইংরেজদের প্রশাসনিক কাজ করার উপযুক্ত কর্মচারী তৈরি করার আগ্রহ যতটা ছিল, সাহিত্য বা ভাষা শিক্ষার সাহায্যে শিক্ষার্থীদের একটি নান্দনিক মন গড়ে তোলার আগ্রহ সেখানে মোটেই ছিল না।

মাতৃভাষায় অবহেলা :

এই শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজি হওয়ায় সাধারণ মানুষের কাছে শিক্ষার দারুন মুক্ত হয়নি। সেইসঙ্গে ভারতীয় ভাষাগুলির বিকাশের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়।

(৪১) ‘বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?

উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথের উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষা ও জীবন যাপন যেন অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত থাকে। এই কারণেই  তপবন এর আদর্শে বিশ্বাসী হয়েও তিনি পাশ্চাত্যের জড় সভ্যতাকে অশ্রদ্ধা্র চোখে দেখেননি।রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাচিন্তা বিশেষ কোন দেশ বা কালের গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ নয়।তার শিক্ষাদর্শে প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের চিন্তাধারার সমন্বয় দেখা যায়। তিনি বলেছেন যে, পূর্ব ও পশ্চিমের চিত্ত যদি বিচ্ছিন্ন হয় তাহলে উভয়েই ব্যর্থ হবে।বাস্তবে ঘটেছেও তাই।এই মিলনের অভাবে পূর্বদেশ দৈন্য  পিড়িত ও নির্জীব এবং পশ্চিম অশান্তি দ্বারা ক্ষুব্দ এবং নিরানন্দ। এই কারণেই তিনি 1921 খ্রিস্টাব্দে 23শে ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠা করেছেন বিশ্বভারতী।

(৪২) কৃষক আন্দোলনে বাবা রামচন্দ্রের কীরূপ ভূমিকা ছিল?

উত্তর:- অসহযোগ আন্দোলনের সময় কৃষক আন্দোলনে বাবা রামচন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি যুক্তপ্রদেশে গঠিত কিষান সভার নেতৃত্বে কৃষকদের নিয়ে শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলেন। তাঁর নেতৃত্বে কিষান সভার আন্দোলন কংগ্রেসের অসহযোগ আন্দোলনের সাথে মিশে গিয়ে জোরালো হয়ে ওঠে।

(৪৩) ‘একা’ আন্দোলন শুরু হয় কেন?

উত্তরঃ একা আন্দোলন শুরু হওয়ার পিছনে অনেক কারণ বিদ্যমান ছিল। যথা - 

১. নির্ধারিত খাজনার চেয়ে ৫০% বেশি খাজনা নির্ধারণ। 

২. বাটাই ও উৎপন্ন শস্যের বদলে নগদ অর্থে করপ্রদান। 

৩. খাজনা আদায়কারী ঠিকাদারদের অত্যাচার ও শোষণ। 

(৪৪) নবগোপাল মিত্র কে ছিলেন?

উত্তরঃ হিন্দু মেলার প্রতিষ্ঠাতা করেন নবগোপাল মিত্র। হিন্দু মেলা ১৮৬৭ সালে ব্রিটিশ ভারতের কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি হিন্দু সম্প্রদায়ের মনে স্বাদেশিকতার ভাব জাগরণ এবং জাতীয় চেতনার প্রসারের উদ্দেশ্যে আয়োজিত হয়েছিল। এই মেলা জাতীয় মেলা এবং স্বদেশী মেলা নামেও পরিচিতি লাভ করে।

(৪৫) মোপলা বিদ্রোহের (১৯২১) কারণ কী?

উত্তরঃ মোপলা বিদ্রোহ, যা মালাবার বিদ্রোহ নামেও পরিচিত, একটি উল্লেখযোগ্য ব্রিটিশ বিরোধী এবং জমিদার বিরোধী বিদ্রোহ ছিল যেটি 1921 সালে ভারতের কেরালার মালাবার অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছিল। এটি ছিল মালাবার অঞ্চলে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন এবং জমিদার নিপীড়নের প্রতিক্রিয়া। যদিও এটি তার তাৎক্ষণিক লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়, এটি এই অঞ্চলের সামাজিক ও রাজনৈতিক গতিশীলতার উপর স্থায়ী প্রভাব ফেলে এবং ভারতের স্বাধীনতার জন্য বৃহত্তর সংগ্রামে অবদান রাখে।

(৪৬) নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

উত্তরঃ ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে রাশিয়ার বলশেভিক বিপ্লবের সাফল্য এবং ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা International Labour Organisation (ILO) প্রতিষ্ঠা ভারতীয় শ্রমিকদের ও শ্রমিক সংগঠন স্থাপনে উৎসাহিত করে। এছাড়া জাতীয় কংগ্রেসের অমৃতসর অধিবেশন (১৯২০ খ্রিঃ), নাগপুর অধিবেশন (১৯২০ খ্রিঃ) ও গয়া অধিবেশনে শ্রমিকদের সংগঠিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। সাম্রাজ্যবাদী প্রাধান্যের বিরুদ্ধে শ্রমিকশ্রেনির স্বার্থরক্ষার্থে উদ্দেশ্যে নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করা হয়।

(৪৭) কী উদ্দেশ্যে কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দল প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তরঃ কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দলের উদ্ভবের প্রেক্ষাপটে দেখা যায় যে, (১) রুশ বিপ্লবের প্রভাব ও সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারার প্রাধান্য, (২) অসহযোগ আন্দোলনের সীমাবদ্ধতা, (৩) শ্রমিক-কৃষক ও সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুদর্শায় কংগ্রেস নেতৃত্বের উদাসীনতা, (৪) কমিউনিস্ট কার্যকলাপের প্রভাব, (৫) সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী জওহরলাল নেহরু ও সুভাষচন্দ্র বসুর প্রভাব, (৬) আইন অমান্য আন্দোলনের ব্যর্থতা প্রভৃতি কারণে কংগ্রেসের ভিতরে একটি বামপন্থী গোষ্ঠীর আত্মপ্রকাশ ঘটে।

(৪৮) ‘ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি’ কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

উত্তরঃ ওয়ার্কস অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি (WPP) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯২৬ সালের ১৭ আগস্ট। এটি ছিল ভারতের প্রথম কমিউনিস্ট পার্টি। এই পার্টিটি প্রতিষ্ঠা করেন ভারতের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম নেতা, মৌলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী।

     ওয়ার্কস অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ ছিল। প্রথমত, ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা তখন খুবই খারাপ ছিল। দেশটি তখন ব্রিটিশ শাসনাধীন ছিল এবং ব্রিটিশরা ভারতের অর্থনীতিকে শোষণ করছিল। ফলে ভারতের শ্রমিক ও কৃষক শ্রেণী খুবই দুর্দশাগ্রস্ত ছিল। দ্বিতীয়ত, ভারতে তখন জাতীয়তাবাদী আন্দোলন চলছিল। এই আন্দোলনটি মূলত ভারতীয় মধ্যবিত্ত শ্রেণীর নেতৃত্বে ছিল। কিন্তু শ্রমিক ও কৃষক শ্রেণী এই আন্দোলনে তাদের প্রয়োজনীয় দাবি-দাওয়া তুলে ধরতে পারছিল না।

(৪৯) মাদারি পাশি কে ছিলেন?

উত্তর:- অসহযোগ আন্দোলনকালে যুক্ত প্রদেশের বিশিষ্ট কৃষক নেতা ছিলেন মাদারি পাশি। তিনি যুক্তপ্রদেশের হরদই, বারাবাকি, সীতাপুর, বারাইচ প্রভৃতি জেলার কৃষকদের সংঘবদ্ধ করে অতিরিক্ত কর আদায়ের ক্ষেত্রে অত্যাচার, বেগারশ্রম প্রভৃতির বিরুদ্ধে ‘একা বা একতা’ আন্দোলন শুরু করেন।

(৫০) উনিশ শতকের বাংলায় জাতীয়তাবাদের বিকাশে বঙ্কিমচন্দ্রের কীরূপ ভূমিকা ছিল?

উত্তরঃ ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে বঙ্কিমচন্দ্রের 'আনন্দমঠ ‘উপন্যাস প্রকাশিত হয়। এখানে তিনি ইংরেজ বিরোধী সন্ন্যাসী বিদ্রোহের ঘটনাকে উপলক্ষ্য করে স্বদেশ চেতনার জাগরণ ঘটান।

 'দেবী চৌধুরাণী' উপন্যাসেও তিনি ইংরেজের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের জাত্যভিমানকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেন। তাঁর অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে 'সীতারাম', ' রাজসিংহ', 'দুর্গেশনন্দিনী' প্রভৃতি স্বদেশপ্রেমের চেতনায় সমৃদ্ধ ছিল।

(৫১) বারদৌলি সত্যাগ্রহ আন্দোলন কেন শুরু হয়?

উত্তরঃ ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দে গুজরাটের সুরাট জেলার বারদৌলি তালুকে অহিংস পথে সত্যাগ্রহ আদর্শের উপর ভিত্তি করে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের সুযোগ্য নেতৃত্ব খাজনা বা রাজস্ব বন্ধ সংক্রান্ত যে আন্দোলন শুরু সংঘটিত হয় তা বারদৌলি সত্যাগ্রহ নামে পরিচিত। 

     বারদৌলি তালুকে মোট ১৩৭ টি গ্রাম ছিল। জনসংখ্যা ছিল ৮৭০০০ জন। এখানকার অধিবাসী কুনবিরা ছিল জমির মালিক। আর কালিপরাজ যারা বংশপরম্পরায় খেতমজুর ছিল, তারা স্থানীয় জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ। এই সময়ে তুলোর দাম কমে গিয়েছিল । তবু বোম্বাই সরকার ১৯২৭ সালে প্রথমে ৩০ শতাংশ পরে ২২ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধি করলে পরিস্থিতি কৃষকদের কাছে দুর্বিসহ হয়ে ওঠে। দৈনন্দিন জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে, এইরূপ পরিস্থিতে শুরু হয় বারদৌলি সত্যাগ্রহ।

(৫২) মাতঙ্গিনী হাজরা স্মরণীয় কেন?

উত্তর:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় একজন গান্ধিবাদী নেত্রী ছিলেন মাতঙ্গিনী হাজরা। ৭৩ বছরের মাতঙ্গিনী হাজরা তমলুক থানা অভিযানে নেতৃত্ব দিয়ে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ‘গান্ধিবুড়ি’ নামে পরিচিত।

(৫৩) জাতীয় শিক্ষা পরিষদ কেন প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তরঃ ১. জাতীয় আদর্শের ভিত্তিতে ভাষা, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও কারিগরী শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয় ।

২. শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশসেবার মনোভাব গড়ে তোলা।

৩. নৈতিক শিক্ষার প্রসার ঘটানো।

৪. মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার ঘটানো।

(৫৪) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই অক্টোবর বাংলার নারী সমাজ কেন অরন্ধন পালন করে?

উত্তরঃ ১৬ই অক্টোবর ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের সরকারিভাবে বঙ্গভঙ্গ কার্যকর করার দিনে প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে বাঙালি মহিলারা 'অরন্ধন ব্রত' পালন করেন। মহিলারা রাখি বন্ধন এর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক ঐক্যকে মজবুত করা এবং বিদেশি দ্রব্য বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

(৫৫) রশিদ আলি দিবস কেন পালিত হয়েছিল?

উত্তরঃ রশিদ আলী দিবস কেন পালিত হয় – আজাদ হিন্দ বাহিনীর ক্যাপটেন রশিদ আলির ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হলে তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ১১ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় ব্যাপক ছাত্র ধর্মঘট এবং ১২ তারিখ সাধারণ ধর্মঘট ঘটে, যা 'রশিদ আলি দিবস' নামে পরিচিত।

(৫৬) অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি কেন প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তরঃ ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ৪র্থ নভেম্বর ছাত্রনেতা শচীন্দ্রপ্রসাদ বসুর নেতৃত্বে 'অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি' গঠিত হয়।

(১) বিদেশি শিক্ষাকে বয়কট করে স্বদেশি শিক্ষায় আগ্রহ বৃদ্ধি করা।

(২) ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ করে জাতীয় আন্দোলন গড়ে তোলা।

(৩) শাস্তি প্রাপ্ত ছাত্রদের আলাদা শিক্ষালাভের ব্যবস্থা করা।

(৫৭) দলিত কাদের বলা হয়?

উত্তর:- হিন্দু বর্ণব্যবস্থায় জন্ম ও পেশাগত পরিচিতির বিচারে যে সব মানুষ সমাজের নিম্নস্তরে অবস্থান করে এবং বিভিন্ন সময়ে উচ্চবর্ণের দ্বারা সামাজিক বঞ্ছনার শিকার হয়, তারা সাধারণভাবে দলিত নামে পরিচিত।

(৫৮) “বিদ্যাসাগর সাট” বলতে কী বোঝা?

উত্তরঃ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা মুদ্রণে অক্ষর বিন্যাসের দূরীকরণে বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে ছেদ, যতি চিহ্নের ব্যবহার সহ বাংলা বর্ণ বিন্যাস ও সাজানোর পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। তাঁর নামানুসারে এর নাম হয় "বিদ্যাসাগর সাট"।

(৫৯) ননীবালা দেবী স্মরণীয় কেন?

উত্তরঃ ননীবালা দেবী স্মরণীয় কারণ –

(i) বলগভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনকালে তিনি বিপ্লবীদের আশ্রয় দান ও গোপনে অস্ত্র সরবরাহ করতেন। এজন্য

(ii) জেলে থাকাকালীন অকথ্য অত্যাচার সত্ত্বেও তিনি বিপ্লবীদের কোনো গোপন তথ্য প্রকাশ করেননি।

(৬১) দার কমিশন (১৯৪৮) কেন গঠিত হয়েছিল?

উত্তর:- ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতা লাভের পর ভারতীয় অঙ্গরাজ্য এবং ভারতে যোগ দেওয়া বিভিন্ন দেশীয় রাজ্যগুলির সীমানা জাতি না ভাষার ভিত্তিতে নির্ধারিত হওয়া উচিত তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। এই প্রশ্নের মীমাংসার উদ্দেশ্যে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে দার কমিশন গঠিত হয়।

(৬২) বাংলা ছাপাখানার বিকাশে লাইনোটাইপ প্রবর্তনের গুরুত্ব কী?

উত্তরঃ ১৭৭৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় প্রথম মুদ্রণযন্ত্র বা ছাপাখানার প্রতিষ্ঠা করেন জেমস অগাস্টাস হিকি। বাংলায় ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার পর বাংলা অক্ষরের ক্রমোন্নতি ঘটে। পঞ্চানন কর্মকারের বাংলা হরফের পর সুরেশচন্দ্র মজুমদার লাইনোটাইপ নামে আরও উন্নত হরফ তৈরি করেন। 

(৬৩) কী পরিস্থিতিতে কাশ্মীরের রাজা হরি সিং ভারত ভুক্তির দলিলে স্বাক্ষর করেন?

উত্তরঃ রাজা হরি সিং সপরিবারে শ্রীনগর ত্যাগ করেন এবং ভারত সরকারের কাছে সহায়তা চাইলেন। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের ভারতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া ছাড়া মাউন্টব্যাটেন ও জওহরলাল নেহেরু রাজাকে কোন ধরনের সাহায্য করতে অস্বীকৃতি জানান। বাধ্য হয়ে ১৯৪৭ সালের ২৬ অক্টোবর হরি সিং কাশ্মীরের ভারতভুক্তির চুক্তিতে সই করেন।

(৬৪) দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তি দলিল বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ দেশীয় রাজ্যগুলিকে ভারত ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল তৈরি করেছিলেন Instrument of accession বা ভারত ভুক্তির দলিল। দেশীয় রাজ্যগুলিকে ভাতা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার বিনিময় ভারতভুক্তি দলিলে স্বাক্ষর করানো হলে ভারত শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত হয়।

(৬৫) ১৯৫০ সালে কেন নেহরু-লিয়াকৎ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল?

উত্তরঃ ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নেহরু- লিয়াকত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এটি 'দিল্লি চুক্তি' নামেও পরিচিত। নেহরু-লিয়াক‍ চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্দেশ্য ছিল ভারত এবং পাকিস্তানের সংখ্যালঘু উদ্‌বাস্তুদের স্বার্থরক্ষা করা।

(৬৬) পত্তি শ্রীরামুলু কে ছিলেন?

উত্তর:- পত্তি শ্রীরামুলু ছিলেন দক্ষিণ ভারতের একজন গান্ধিবাদী নেতা। মাদ্রাজ প্রদেশের তেলুগু ভাষাভাষী অঞ্চল নিয়ে পৃথক রাজ্য গঠনের দাবিতে তিনি ৫৮দিন অনশন করে ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।

(৬৮) রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন (১৯৫৩) কেন গঠিত হয়েছিল?

উত্তরঃ 22শে ডিসেম্বর, 1953 সালে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের সীমানা পুনর্গঠনের পরামর্শ দেওয়ার জন্য রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন (SRC) প্রতিষ্ঠা করে। কমিশন প্রায় দুই বছরের গবেষণার পর 1955 সালে ভারতের রাষ্ট্রীয় সীমানা 14টি রাজ্য এবং ছয়টি অঞ্চলে পুনর্গঠিত করার পরামর্শ দেয়।


বিভাগ - ঘ

৪ । সাত - আটটি বাক্যে উত্তর দাও :

  1. (১) “উডের নির্দেশনামা’ (১৮৫৪) কে এদেশের শিক্ষা বিস্তারের ‘মহাসনদ’ বলা হয় কেন?
  2. (২) উনিশ শতকে নারীশিক্ষা বিস্তারে ড্রিঙ্কওয়াটার বেথুন কী ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন? 
  3. (৩) ‘হুতোম প্যাঁচার নকশা’ গ্রন্থে উনিশ শতকের বাংলার কীরূপ সমাজচিত্র পাওয়া যায়?
  4. (৪) শ্রীরামকৃষ্ণের ‘সর্বধর্ম সমন্বয়’ – এর আদর্শ ব্যাখ্যা কর।
  5. (৫) ‘নীলদর্পণ’ নাটক থেকে উনিশ শতকের বাংলার সমাজের কীরূপ প্রতিফলন পাওয়া যায়?
  6. (৬) এদেশের চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রে কলকাতা মেডিকেল কলেজের কীরূপ ভূমিকা ছিল?
  7. (৭) উনিশ শতকে বাংলায় নারীশিক্ষা বিস্তারে রাজা রাধাকান্তদেব কীরূপ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন?
  8. (৮) কী উদ্দেশ্যে ঔপনিবেশিক সরকার অরণ্য আইন প্রণয়ন করেন।
  9. (৯) লর্ড মেকলে-কে কী এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রবর্তক বলা যায় ?
  10. (১০) হিন্দুমেলা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?
  11. (১১) মহাবিদ্রোহের (১৮৫৭) প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মনোভাব কীরূপ ছিল?
  12. (১২) ১৮৫৭-এর মহাবিদ্রোহকে কি সামন্ত শ্রেণির বিদ্রোহ বলা যায়?
  13. (১৩) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভাকে প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বলা হয় কেন?
  14. (১৪) ভারত সভার প্রতিষ্ঠা ও বিকাশে সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জির ভূমিকা বিশ্লেষণ কর।
  15. (১৫) বাংলায় মুদ্রণশিল্পের বিকাশে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের কীরূপ অবদান ছিল?
  16. (১৬) বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের সময়ে শ্রমিক শ্রেণির ভূমিকা কীরূপ ছিল?
  17. (১৭) ছাপা বইয়ের সঙ্গে শিক্ষাবিস্তারের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।
  18. (১৮) ‘গোরা’ উপন্যাসটিতে রবীন্দ্রনাথের যে জাতীয়তাবাদী ভাবধারার পরিচয় পাওয়া যায় তা বিশ্লেষণ কর।
  19. (১৯) বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার বিকাশে ড. মহেন্দ্রলাল সরকারের কীরূপ অবদান ছিল?
  20. (২০) শ্রীরামপুর মিশন প্রেস কীভাবে একটি অগ্রণী মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হল?
  21. (২১) বাংলায় নমঃশূদ্র আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
  22. (২২) সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো : দেশ বিভাগ (১৯৪৭) জনিত উদ্‌বাস্তু সমস্যা।
  23. (২৩) জুনাগড় রাজ্যটি কীভাবে ভারতভুক্ত হয়?
  24. (২৪) হায়দ্রাবাদ রাজ্যটি কীভাবে ভারতভূক্ত হয়েছিল?
  25. (২৫) ভারত সরকার কীভাবে দেশীয় রাজ্যগুলিকে ভারতীয় ইউনিয়নে সংযুক্ত করার প্রশ্নটি সমাধান করেছিল?


বিভাগ - ঙ

৫। পনেরো বা ষোলোটি বাক্যে উত্তর লেখো :

  1. (১) সমাজ সংস্কারে নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী ও ডিরোজিওর ভূমিকা লেখো।
  2. (২) রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাচিন্তার উদ্দেশ্য কী? কীভাবে তিনি এর রূপদান করেন?
  3. (৩)মহাবিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করো।
  4. (৪) জগদীশচন্দ্র বসু ও প্রফুল্লচন্দ্র রায় বিজ্ঞান গবেষণায় কী ভূমিকা নিয়েছিল?
  5. (৫) স্বদেশি আন্দোলনে নারীরা কীভাবে ভূমিকা নিয়েছিল?
  6. (৬) তেভাগা আন্দোলনের কারণ ও পরিণতি আলোচনা করো।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

LightBlog

AdsG

close