Madhyamik ABTA Test Paper 2024 History Page 50 Solved
Type Here to Get Search Results !

Madhyamik ABTA Test Paper 2024 History Page 50 Solved

 Madhyamik ABTA Test Paper 2024 History Page 50 Solved

Madhyamik ABTA Test Paper 2023 - 2024 Solved History Page 50
Madhyamik ABTA Test Paper 2023 - 2024 Solved History Page 50


Madhyamik ABTA Test Paper 2023-2024 Page 50 Solved 1

Madhyamik ABTA Test Paper 2023-2024 Page 51 Solved 1

Madhyamik ABTA Test Paper 2023-2024 Page 52 Solved 1

বিভাগ - গ

৩। দুটি অথবা তিনটি বাক্যে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও : (যে কোনো এগারোটি) :

৩.১ অ্যানাল স্কুল কী?

উত্তরঃ ১৯৬০-৭০-এর দশক থেকে ইউরোপে নিচুতলা থেকে সামগ্রিক ইতিহাস (TOTAL HISTORY)  বা নতুন সামাজিক ইতিহাস অনুসন্ধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এই উদ্যোগে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন ফ্রান্সের কয়েকজন ঐতিহাসিক। এদের মধ্যে মার্ক ব্লখ, লুসিয়েন ফেবর, ফার্নান্দ ব্রদেল, লাঁদুরি প্রমুখের নাম বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এঁদের দ্বারা পরিচালিত ঐতিহাসিক গোষ্ঠী 'অ্যানাল স্কুল' নাম পরিচিত।

৩.২ আধুনিক ইতিহাস চর্চায় পরিবেশের ইতিহাসের গুরুত্ব কোথায়?

উত্তরঃ আধুনিক ইতিহাস চর্চায় পরিবেশের ইতিহাস একটি বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে। পরিবেশ রক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ১৯৬০ -এর দশকে এক আন্দোলন শুরু হয়েছিল। 

এরপর থেকেই পরিবেশের ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব বাড়তে থাকে। ১৯৭০ -এর দশক থেকে ভারতবর্ষে পরিবেশের ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব বাড়তে থাকে। নিন্মে আধুনিক ইতিহাস চর্চায় পরিবেশের ইতিহাসের গুরুত্ব আলোচনা করা হল -

অতীত থেকে শিক্ষা লাভ : যেহেতু ইতিহাস আমাদের অতীতের কথা বলে সেহেতু পরিবেশের ইতিহাস হল অতীতের দৃষ্টান্ত। অতীত থেকে আমাদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য পরিবেশের ইতিহাস চর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জীবজগতের ওপর মানুষের যথেচ্ছাচার কি ধরণের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে, তা আমরা পরিবেশের মাধ্যমে জানতে পারি। যেমন - লুপ্ত ডোডো পাখি, লুপ্ত মিশরীয় নীলপদ্ম। 

সচেতনতা বৃদ্ধি : পরিবেশের ইতিহাসচর্চা আমাদের চেতনা বৃদ্ধি করে। ঔপনিবেশিক শাসনকালে ভারতে সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজরা ভারতের বনজ সম্পদকে নানা ভাবে ধ্বংস করেছে। এরফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নানা উপজাতির মানুষেরা। এরফলে ফলে বনজ সম্পদ রক্ষার উদ্দেশ্যে ইংরেজবিরোধী বহু আন্দোলন গড়ে উঠেছে। পরবর্তীকালে ভারতে একইরকম ভাবে চিপকো আন্দোলন, নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন প্রভৃতি পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনগুলি থেকে মানুষের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতার পরিচয় পাওয়া যায়।

৩.৩ গ্রামবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকাকে কেন ব্যতিক্রমী পত্রিকা বলা হয়?

উত্তরঃ ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে হরিনাথ মজুমদার এই পত্রিকাটি প্রথম সম্পাদনা করেছিলেন। এই পত্রিকাটিকে বাংলার গ্রামীণ সংবাদপত্রের জনক বলা হয়। এই পত্রিকাটি ভিন্ন গোত্রের বা ব্যতিক্রমী ছিল। কারণ - সব পত্রিকাগুলিই কলকাতা বা অন্যান্য শহরের থেকে প্রকাশিত হতো। আর এইসব পত্রিকাগুলিতে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণীর মানুষের খবর থাকতো। শহরের মানুষেরাই এইসব পত্রিকা কিনত। কিন্তু এক্ষেত্রে গ্রামবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকা ছিল ভিন্ন প্রকৃতির।

গ্রামের মানুষের কথা প্রচার : এই পত্রিকায় গ্রাম্য সাধারণ কৃষক পরিবারের কথা প্রকাশ করা হত। এর থেকে সমকালীন সময়ের গ্রামের মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার কথা জানা যায়।

শোষণ ও অত্যাচার : গ্রামের মানুষদের উপর জমিদার, মহাজন ও নীলকর সাহেবদের শোষণ ও অত্যাচারের কথা গ্রামবার্তা প্রকাশিকা গুরুত্ব সহকারে প্রচার করত।

নারীদের অবস্থার উন্নতি : নারীদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ও তাদের উন্নতির জন্য গ্রামবার্তা প্রকাশিকা সবসময় সচেষ্ট ছিল।

৩.৪ লালন ফকির স্মরণীয় কেন?

উত্তরঃ তিনি একাধারে একজন আধ্যাত্মিক ফকির সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক। তিনি অসংখ্য গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। লালনকে বাউল গানের অগ্রদূতদের অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং তার গান উনিশ শতকে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

৩.৫ নিজ আবাদি চাষ ও বে-এলাকা চাষ বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ এলাকা চাষ’ ও ‘বে – এলাকা চাষ’ শব্দ দুটি উনিশ শতকে নীলচাষের পদ্ধতি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হত –

প্রথমত, নীলকররা যখন জমিদারদের কাছ থেকে জমি ক্রয় করে বা ভাড়া নিয়ে সেই জমিতে ভাড়াটিয়া চাষিদের দিয়ে নীলচাষ করতো তখন তা ‘এলাকা চাষ’ নামে পরিচিত ।

দ্বিতীয়ত, ‘এলাকা – চাষ’ পদ্ধতিতে নীলচাষ লাভজনক না হওয়ায় নীলকররা চাষিকে অগ্রিম টাকা (‘দাদন’) দিয়ে চাষির জমিতে চাষির খরচে নীলচাষ করাতো যা ‘বে – এলাকা চাষ’ বা ‘রায়তি চাষ’ নামে পরিচিত।

৩.৬ মুন্ডারা খ্রিস্টান মিশনারিদের ওপর ক্ষুদ্ধ হয়েছিল কেন?

উত্তরঃ খ্রিস্টান মিশনারিরা ছলে-বলে-কৌশলে, লােভ দেখিয়ে ধর্মভীরু মুন্ডাদের খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত করতে থাকলে মুন্ডা সমাজ বিদেশিদের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুব্দ হয়।।

৩.৭ 'হিন্দুমেলা' প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?

উত্তরঃ উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে নব্যহিন্দুবাদ এবং বাংলা তথা ভারতে সাধারণ মানুষের মধ্যে জাতীয় চেতনার জাগরণ ঘটানো এবং জাতীয় গৌরব বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ শাসনকালে গঠিত সংগঠনগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল 'হিন্দুমেলা' । রাজনারায়ণ বসুর সহযোগিতায় নবগোপাল মিত্র ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে চৈত্র সংক্রান্তির দিন 'হিন্দুমেলা' প্রতিষ্ঠা করেন । তাই এটি 'চৈত্রমেলা' নামেও পরিচিত ছিল । এর প্রথম সম্পাদক হন জ্ঞানেন্দ্রনাথ ঠাকুর । 'হিন্দুমেলা' প্রতিষ্ঠার পিছনে উদ্যোক্তাদের বেশ কিছু আদর্শ ও উদ্দেশ্য ছিল যা হল—

(i) সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে হিন্দুধর্মের অতীত গৌরবগাথা ছড়িয়ে দেওয়া।

(ii) দেশীয় ভাষাচর্চা করা ও জাতীয় প্রতীকগুলিকে মর্যাদা দেওয়া।

(iii) প্রাচীন হিন্দুধর্মের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার আদর্শে সবাইকে অনুপ্রাণিত করা।

(iv) গোপনে হিন্দু যুবকদের মধ্যে বৈপ্লবিক ভাবধারা জাগিয়ে তোলা।

(v) হিন্দু জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং আত্মনির্ভর ভারতবর্ষ প্রতিষ্ঠা করা।

৩.৮ ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে ইউরোপীয়ানরা কেন বিক্ষোভ দেখিয়েছিল?

উত্তরঃ ইলবার্টের প্রস্তাব প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপীয়রা ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে তুমুল আন্দোলন শুরু করে, কারণ: এই খসড়া আইনটি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হলে ভারতীয় বিচারকরাও ইউরোপীয়দের বিচার করতে পারতেন এবং সেক্ষেত্রে তাদের মর্যাদা ইউরোপীয় বিচারকদের সমতুল্য হত । তারা এই অভিমত প্রকাশ করেন যে, ইউরোপীয়দের বিচার করার যোগ্যতা ও উপযুক্ত ক্ষমতা ভারতীয়দের নেই। বিলটি প্রত্যাহারের জন্য তারা ‘ডিফেন্স অ্যাসোসিয়েশন’ নামে এক সংস্থা গঠন করে আন্দোলন চালায়। সমকালীন ‘স্পেকটেটর’ও ‘টাইমস’ পত্রিকাও এই বিলের সমালোচনা করে।

৩.৯ শ্রীনিকেতন কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

উত্তরঃ শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার মূলে ছিল পল্লী জীবনের উন্নয়ন ঘটানো। কারণ তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে, দেশের সার্বিক উন্নয়ন ঘটাতে গেলে গ্রামীণ মানুষ্য জীবনের মানোন্নয়ন ঘটানো সর্বাগ্রে প্রয়োজন। তিনি যে সমস্ত উদ্দেশ্য সামনে রেখে শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠা করেন, সেগুলি হল-

(১) পল্লীজীবনের উন্নয়ন সাধন

রবীন্দ্রনাথের শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার একটি অন্যতম উদ্দেশ্যই ছিল পল্লীজীবনের উন্নয়ন ঘটানো। গ্রামীণ মানুষের জীবনের সমস্যা গুলির সমাধানের মধ্য দিয়ে গ্রাম বাংলার মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন ঘটানোই ছিল শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য।

(২) স্বনির্ভরশীল করে তোলা

হাতে কলমে বাস্তব জীবনোপযোগী শিক্ষা প্রদান করার মধ্য দিয়ে গ্রাম বাংলার শিক্ষার্থীদের স্বনির্ভরশীল করে তোলাও শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য।

(৩) ব্যবহারিক শিক্ষা প্রদান

গ্রাম্য জীবনের উপযোগী ব্যবহারিক শিক্ষা প্রদান করাও ছিল শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার একটি উদ্দেশ্য। এই জনক শ্রীনিকেতনে শিক্ষার্থীদের কৃষি, পশুপালন, তাঁতের কাজ, মৌমাছি প্রতিপালন ইত্যাদি বিষয়ে ব্যবহারিক শিক্ষা প্রদান করা হত।

(৪) গ্রামীণ উন্নয়নমূলক স্বাস্থ্যরক্ষা কর্মসূচি

গ্রামীণ মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতা বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য রক্ষা কর্মসূচির আয়োজন করাও ছিল শ্রীনিকেতনের একটি অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য, যা গ্রামীণ মানুষের কল্যাণের স্বার্থে কাজ করবে।

৩.১০ শ্রীরামপুর ত্রয়ী কারা?

উত্তরঃ উইলিয়াম ওয়ার্ড এবং জোশুয়া মার্শম্যানের সাথে, উইলিয়াম কেরি ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে কলকাতার কাছে শ্রীরামপুর শহরে অবস্থিত তিনজন ব্যাপ্টিস্ট মিশনারি "শ্রেরামপুর ত্রয়ী" নিয়ে গঠিত। তিনজন ব্রিটিশ ছিলেন, কিন্তু তারা ড্যানিশ উপনিবেশ শ্রীরামপুরে বসবাস করতেন, কারণ সেই সময়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তার প্রভাবাধীন অঞ্চলে ব্রিটিশ মিশনারি কাজ নিষিদ্ধ করেছিল।

৩.১১ মাদারি পাসি কে ছিলেন?

উত্তরঃ এক আন্দোলন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একটি শাখা ছিল , অসহযোগ আন্দোলন (এনসিএম) এর সাথে যুক্ত । কিন্তু কংগ্রেস যখন দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলনে ব্যস্ত ছিল, তখন চলমান এক আন্দোলনকে কিছুটা অবহেলা করেছিল। এই সময়েই মাদারী পাসি একা আন্দোলনের সাথে জড়িত কিষানদের মধ্যে একজন ক্যারিশম্যাটিক তৃণমূল নেতা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তিনি সকল ধর্ম ও বর্ণের কিষাণ ও ক্ষুদ্র জমিদারদের ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। তিনি আন্দোলনকে সহিংস পথে ঠেলে দেন।

৩.১২ বাংলার কৃষক সমাজ বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে সামিল হয়নি কেন?

উত্তরঃ কৃষকদের সক্রিয়ভাবে অংশ না নেওয়ার কারণ:- ঐতিহাসিকগণ এই আন্দোলনে কৃষকদের সক্রিয় ও স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ না করার কতকগুলি কারণ তুলে ধরেছেন এগুলি নিম্নরূপ

১)কৃষিভিত্তিক কর্মসূচির অভাব:- ঐতিহাসিক সুমিত সরকার বলেন, সুনির্দিষ্ট কৃষিভিত্তিক কর্মসূচির অভাবজনিত কারণে এই আন্দোলনে কৃষকদের যুক্ত করা যায়নি। প্রকৃতপক্ষে এই আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ কৃষকদের দুরবস্থার প্রতিকার, খাজনা বৃদ্ধি প্রতিরোধ, জমিদারদের অত্যাচার বন্ধের কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করেননি।

২)জমিদারদের ক্ষোভের আশঙ্কাঃ- কৃষকদের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল হলে এবং তাদের খাজনা বন্ধের দাবি মেনে নিলে দেশপ্রেমিক জমিদারশ্রেণি ক্ষুব্ধ হবেন। এই আশঙ্কায় কংগ্রেসি নেতৃবৃন্দ এই আন্দোলনে কৃষকদের সামিল করার উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। বরং জমিদার ঘেঁষা নীতিতেই আস্থা রেখে তাদের সন্তুষ্ট রাখতে প্রয়াসী হন।

৩)মধ্যবিত্তশ্রেণিরনেতৃত্বঃ- বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাঁরা উদীয়মান মধ্যবিত্তশ্রেণির প্রতিনিধি তাঁদের সঙ্গে গ্রামের কৃষকদের কোনো যোগ ছিল না। গণআন্দোলনে কৃষকদের যে কোনো ভূমিকা থাকতে পারে তা তারা উপলব্ধি করেননি। তাই ঐতিহাসিক ড. বিপানচন্দ্র বলেন, বঙ্গভঙ্গ বাংলার কৃষকদের স্পর্শ করেনি।

৪)মুসলিম লিগের প্রভাবঃ-1906 খ্রিস্টাব্দে নবাব সলিমউল্লাহের উদ্যোগে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় মুসলিম লিগ’। বড়োলাট লর্ড কার্জনের প্ররোচনায় তিনি বঙ্গভঙ্গ মেনে নেন। ফলে নদিয়া, কুমিল্লা, মুরশিদাবাদ প্রভৃতি স্থানের মুসলমান কৃষকরা হিন্দু মহাজন ও জমিদারদের আক্রমণ করে। ফলে এই পর্বে ওই অঞ্চলগুলিতে কৃষক আন্দোলন সাম্প্রদায়িক রূপ নেয়।

৩.১৩ অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি কেন স্থাপিত হয়?

উত্তরঃ ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ৪র্থ নভেম্বর ছাত্রনেতা শচীন্দ্রপ্রসাদ বসুর নেতৃত্বে 'অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি' গঠিত হয় ।অ্যান্টি সার্কুলার সোসাইটি যে কারনে প্রতিষ্ঠিত হয়ঃ

(১) বিদেশি শিক্ষাকে বয়কট করে স্বদেশি শিক্ষায় আগ্রহ বৃদ্ধি করা।

(২) ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ করে জাতীয় আন্দোলন গড়ে তোলা।

(৩) শাস্তি প্রাপ্ত ছাত্রদের আলাদা শিক্ষালাভের ব্যবস্থা করা।

(৪)ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ করে স্বদেশি পণ্য বিক্রয় ও স্বদেশি আন্দোলনে উৎসাহ দেওয়া।

৩.১৪ জাতীয় শিক্ষা পরিষদ কীভাবে গঠিত হয়?

উত্তরঃ গঠন: 

সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে এবং সম্পাদক রাসবিহারী ঘোষ সহ ৯১ জন সদস্য দিয়ে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হয় (১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে)।

প্রেক্ষাপট:

 সরকারের লিয়ন সার্কুলার, পেটলার সার্কুলার, কার্লাইল সার্কুলার প্রভৃতি দমনমূলক আইন জারির ফলে আন্দোলনে ছাত্ররা স্কুল কলেজ থেকে বহিস্কৃত হয়। এই স্কুল বহিস্কৃত ছাত্রদের বিকল্প শিক্ষাদানের জন্য জাতীয় শিক্ষা পরিষদ প্রেক্ষাপট রচিত হয়।

উদ্দেশ্য: 

(১)সরকারি স্কুল বহিস্কৃত ছাত্র দের বিকল্প শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা।

(২) মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার ঘটানো।

(৩) জাতির আদর্শ অনুসারে তিনি সাহিত্য, বিজ্ঞান ও কারিগরি বিষয়ে শিক্ষাদান।

(৪) শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশ সেবার মনোভাব গড়ে তোলা।

৩.১৫ নেহেরু-লিয়াকৎ চুক্তি বা দিল্লি চুক্তি কী?

উত্তরঃ ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নেহরু- লিয়াকত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এটি 'দিল্লি চুক্তি' নামেও পরিচিত। নেহরু-লিয়াক‍ চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্দেশ্য ছিল ভারত এবং পাকিস্তানের সংখ্যালঘু উদ্‌বাস্তুদের স্বার্থরক্ষা করা।

৩.১৬ উদ্বাস্তু কাদের বলা হয়?

উত্তরঃ শরণার্থী হল এমন একজন যিনি নিপীড়ন, যুদ্ধ বা সহিংসতার কারণে তার বা তার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন । একজন শরণার্থীর জাতি, ধর্ম, জাতীয়তা, রাজনৈতিক মতামত বা একটি নির্দিষ্ট সামাজিক গোষ্ঠীর সদস্যতার কারণে নিপীড়নের একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ভয় রয়েছে।

বিভাগ - ঘ

সাত বা আটটি বাক্যে যে কোনো ছয়টি প্রশ্নের উত্তর দাও : (প্রতিটি উপবিভাগ থেকে অন্তত একটি করে প্রশ্নের উত্তর দাও) :

৪.১ আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার উপাদান হিসেবে সরকারি নথিপত্রগুলি কীভাবে সহায়তা করে?

উত্তরঃ আধুনিক ভারতের ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো সরকারি নথিপত্র। এই সরকারি নথিপত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সরকারি প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন পদাধিকারী যেমন পুলিশ গোয়েন্দা বা সরকারি আধিকারিকদের রিপোর্ট, প্রতিবেদন, বিবরণ ও চিঠিপত্র ইত্যাদি।

সরকারি নথিপত্রের গুরুত্ব :

১) সরকারি প্রতিবেদন : সরকারের আধিকারি, গুরুত্বপূর্ণ কর্মচারী, পুলিশ বা গোয়েন্দা, প্রভৃতিরা বিভিন্ন ঘটনার প্রতিবেদন পাঠাতো সরকারের কাছে। এই প্রতিবেদনগুলি থেকে ওই সময়ের বিভিন্ন আন্দোলন বা গুপ্তবিপ্লবী কার্যকলাপ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা যায়।

২) বিশেষ কমিশনের প্রতিবেদন: সরকার বিশেষ বিশেষ সমস্যার জন্য কমিশন গঠন করতো এবং সেই কমিশন সরকারকে রিপোর্ট জমা দিত। এই রিপোর্টেগুলো থেকেও বিভিন্ন ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায়। যেমন, সাইমন কমিশনের প্রতিবেদন থেকে সমকালীন শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক উপাদান সংগ্রহ করা যায়। তাই এই প্রতিবেদনগুলিও খুব গুরুত্বপূর্ণ।

৩) চিঠিপত্রের আদান-প্রদান : সরকারি ব্যবস্থায় চিঠিপত্র আদান-প্রদান করা একটি স্বাভাবিক ঘটনা। বিশেষ করে প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় শাসনকর্তাদের চিঠিপত্রের ব্যাপক আদান-প্রদান ঘটত। যেমন, বাঙালিদের রাজনৈতিক ঐক্য ভাঙার জন্য লর্ড কার্জন যে চক্রান্ত করেছিলেন তা সরকারি চিঠিপত্র থেকে জানা যায়।

৪) সরকারি কর্মীর বিবরণ : ব্রিটিশ সরকারের কর্মচারীরা অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা নিজের চোখে দেখেছেন এবং তাদের অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ করে গেছেন। এক্ষেত্রে ফরেস্টের বিবরণ থেকে সিপাহী বিদ্রোহ এবং লর্ড কার্জনের স্বরাষ্ট্রসচিব হার্বাট রিজলের ব্যক্তিগত দিনলিপি থেকে ব্রিটিশ আমলের শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা যায়।

মূল্যায়ন : তবে সরকারি নথিপত্র থেকে ইতিহাস রচনা করতে গেলেও ও গবেষকদের সর্তকতা অবলম্বন করতে হয়। কারণ পুলিশ গোয়েন্দা ও সরকারি আধিকারিকদের রিপোর্ট অনেক ক্ষেত্রে ভুল ও বিকৃত থাকে। তবে এইসব তথ্যকে অন্য তথ্যের সঙ্গে যাচাই করে ইতিহাস রচনা করলে প্রকৃত ইতিহাস রচনা করা সম্ভব।

৪.২ বাংলায় নারীমুক্তি আন্দোলনে বামাবোধিনী পত্রিকায় গুরুত্ব আলোচনা করো।

উত্তরঃ উনিশ শতকে বাংলার বিভিন্ন আন্দোলন ও প্রতিবাদের ভাষা যে সকল মাধ্যম কে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে ছিল তাদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হলো পত্রিকা। যে সকল পত্র পত্রিকা বাংলার নারী সমাাজ কে আলো দান করেছিলো তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বামা বোধনী পত্রিকাটি। পত্রিকার নাম থেকেই এই পত্রিকার উদ্দেশ্য বোঝা যায়, বামা অর্থাৎ নারীদের বন্ধন মুক্ত করায় ছিলো এই পত্রিকার বিশেষ উদ্দেশ্য। এই পত্রিকা নারীদের মুক্তি আন্দোলনে যে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিল তার কয়েক্ টি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো – 

বামাবোধনি পত্রিকার গুরুত্ব

শিক্ষা -  নারীদের শিখার ব্যাপারে এই পত্রিকাটি বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলো। সমাজে নারীদের শিক্ষা কে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হতনা। এই বিষয়টির মুলে প্রথম আঘাত করে বামাবোধনী পত্রিকাটি।

সামাজিক অবদান -  সেই সময়ের বিশিষ্ট ব্যাক্তি বর্গ বুঝতে পারে নারীদের মুক্তি ছাড়া সমাজের উন্নতি কখনোই সম্ভব নই। সেই কারণে এই পত্রিকায় তারা বিভিন্ন লেখা লেখি শুরুকরে নারীদের মুক্তি ঘটিয়ে সামাজিক অবদান ফিরিয়ে দেন।

মর্যাদা দান -  সমাজের পুরুষদের মতই নারীরা যে মানুষ এই বিষয় প্রথম এই পত্রিকার মাধ্যমে সমাজে তুলে ধরা হয়। সুতরাং বলাযায় যে এই পত্রিকার হাত ধরে নারীরা সমাজের বুকে নিজের মর্যাদা ফিরে পেলো।

সামাজিক সংস্কার -  নারীরা প্রায়ই সমাজের নানান কু সংস্কারের বলী হতো। ১৮৬৩ সালে এই পত্রিকা প্রকাশের মধ্য দিয়ে সমাজে নারীদের সংস্কার ফিরিয়ে দেওয়া হলো। নারীদের উপর থেকে ধীরে ধীরে সামাজিক কু সংস্কার লোপ পেতে থাকলো।

      পরিশেষে এই কথা বলা যায় যে উনিশ শতকের বাংলায় নারীদের উপর থেকে নানান কষাঘাত এই পত্রিকার মাধ্যমে লোপ পেতে থাকে। নারীরা ফিরে পায় নিজেদের সম্মান। এক কথায় বামা বোধনি পত্রিকা নারীসমাজের নবজাগরণের মাইলফলক।

৪.৩ ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন উপজাতি বিদ্রোহের জন্য কতখানি দায়ী ছিল?

উত্তরঃ প্রাকৃতিক পরিবেশের সুশোভিত একটি অঙ্গ হল অরণ্য, যা যেকোন দেশে শাস নামে পরিচিত। কিন্তু উপনিবেশিক শাসনকালে ভারতীয় অরন্যের ওপর সরকার অরণ্য আইন পাশ করলে একদিকে যেমন অরন্যের ওপর ভারতীয়দের অধিকার খর্ব হয়, অপরদিকে অরণ্য আশ্রয়ী আদিবাসীদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ে।

উদ্দেশ্য: 

ভারতে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠার পর থেকে নতুন নতুন শহর নির্মাণ, জাহাজ তৈরি, রেলপথ প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি প্রয়োজনে ভারতের অরণ্য সম্পদের উপর একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার অরণ্য আইন প্রবর্তন করেন।

অরণ্য আইন: 

১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে অরণ্য সনদ দ্বারা ভারতীয় অরন্যের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি করে। অরণ্য আইন পাস করে দেশের অরণ্য সম্পদের উপর ভারতের অধিকার খর্ব করেছিল এবং অরণ্য সংরক্ষণের আওতায় নিয়ে এসেছিল। দ্বিতীয় অরণ্য আইন পাশ করে সরকার অরন্যের ওপর তাদের অধিকার আরো সুপ্রতিষ্ঠা করেছিল।

প্রভাব / প্রতিক্রিয়া: 

সরকারের প্রবর্তিত এই অরণ্য আইনের বিরুদ্ধে আদিবাসী, সাঁওতাল, মুন্ডা ,কোল,ভিল চরম বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। কারণ, অরণ্য ছিল তাদের কাছে জীবিকানির্বাহ বসবাসের স্থান। এছাড়া অরণ্য ছিল অবাধ বিচরণের জায়গা। স্বভাবতই অরণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন তাদের জীবন-জীবিকার ওপর চরম আঘাত করেছিল।

মূল্যায়ন: সুতরাং, অরণ্য আইন ছিল ব্রিটিশ স্বার্থ চরিতার্থ করার একটি দিক। এই আইন অরণ্যচারী আদিবাসীদের অধিকার খর্ব করার ফলে সরকারের বিরুদ্ধে তারা বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনে ফেটে পড়েছিল।

৪.৪ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মনোভাব কেমন ছিল?

উত্তরঃ ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহকে শিক্ষিত বাঙালি সমাজ সাধারণভাবে সমর্থন করেননি ।

ইংরেজদের উপর বিশ্বাস : তখনকার পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত বাঙালি সমাজ ইংরেজদের প্রতি অধিক আগ্রহ পোষণ করত । তারা ভাবে এই সময় ভারতের ওপর থেকে ইংরেজ শক্তি চলে গেলে ভারতকে সঠিকভাবে চালানো যাবে না । তখনকার বাঙালি শিক্ষিত সমাজ ব্রিটিশ শাসনকে ভারতের পক্ষে কল্যাণকর বলে মনে করত ।

বিদ্রোহের অযৌক্তিকতা : ১৮৫৭ সালে বিদ্রোহকে সমকালীন বাঙালি সমাজ অপ্রয়োজনীয় মনে করেছিল । বিদ্রোহে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটলে ভারতে আবার মুসলিম শাসনের দিন আসতে পারে, এই আশঙ্কা মূলত হিন্দু বাঙালিদের ছিল ।

অন্যান্য বাঙালিদের অভিমত : বিভিন্ন বাঙালি যেমন হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, রাজনারায়ণ বসু ও অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ বিদ্রোহের উদ্দেশ্যের প্রতি তাদের অনাস্থা প্রকাশ করেন । তখনকার যুগে বাঙালি মধ্যবিত্তের এক বিরাট অংশ ইংরেজদের অধীনে চাকরি করত, তাই তারা ইংরেজদের বিরুদ্ধে যেতে চায়নি ।

1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে যখন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে তখন শিক্ষিত বাঙালি সমাজের সমর্থনের অভাবে বাংলায় তা খুব একটা শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারেনি।

৪.৫ বাংলায় মুদ্রণ শল্পের বিকাশে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের অবদান আলোচনা করো।

উত্তরঃ বাংলা তথা ভারতের একজন প্রকাশক,মুদ্রণ-শিল্পবিদ, পুস্তক ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকতার পথ প্রদর্শক রূপে বাঙালি গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের ভূমিকা বিশেষ স্মরণীয়।

কর্মজীবন : শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশনারি প্রেসের একজন কম্পোজিটার রূপে তিনি তার কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীকালে তিনি শ্রীরামপুর মিশন প্রেস ছেড়ে কলকাতায় চলে আসেন এবং ‘ফরিস অ্যান্ড কোম্পানি প্রেসে’ যোগদান করেন, এখানে থাকাকালীন তিনি বইয়ের ব্যাবসাও শুরু করেন।

বাঙ্গাল গেজেটি প্রেস স্থাপন : 1818 খ্রিস্টাব্দে হরচন্দ্র রায়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তিনি কলকাতার চোরবাগান স্ট্রিটে ‘বাঙ্গালা গেজেট' নামে একটি প্রেস স্থাপন করেন। সম্পূর্ণ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে এই প্রেসটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

প্রকাশিত গ্রন্থ : এই প্রেস থেকে নিজের লেখা বিভিন্ন গ্রন্থ যেমন বাংলা গ্রামার, ইংরেজি গ্রামার ছাড়াও ‘‘গঙ্গাভক্তিতরঙ্গিনী,‘লক্ষ্মীচরিত’, ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি' চাণক্য শ্লোক প্রভৃতি প্রকাশিত হয়।

এই প্রেস থেকেই তৎকালীন সাড়াজাগানো প্রথম বাংলা সচিত্র গ্রন্থ ভারতচন্দ্রের ‘অন্নদামঙ্গাল’ কাব্য প্রকাশিত হয়।

সংবাদপত্র- সাময়িক পত্র প্রকাশনা : প্রথম বাঙালি সাংবাদিক হিসেবে বিশেষ দক্ষতার পরিচয় দেন। তার উদ্যোগে ‘বাঙ্গাল গেজেটি প্রেস থেকে 1818 খ্রিস্টাব্দে 16 মে প্রথম প্রকাশিত হয় ‘বাঙ্গালা গেজেটি’ নামক পত্রিকা। দেশীয় উদ্যোগে তিনিই সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্র প্রকাশনার পথপ্রদর্শক ছিলেন। রামমোহন রায়ের সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে বিভিন্ন লেখা এখানে প্রকাশিত হয়।

পুস্তক বিক্রেতা : পুস্তক বিক্রেতা রূপেও তিনি বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দান করেন। তিনিই ছিলেন প্রথম বাঙালি পুস্তক বিক্রেতা। সেই সময় শিক্ষার বিস্তার ও ছাপাখানার প্রসার ঘটলে তার দেখাদেখি অন্যান্য বাঙালিও পুস্তক ব্যাবসার কাজে লিপ্ত হয়।

উপসংহার: শেষ জীবনে তিনি কলকাতা ছেড়ে জন্মস্থানে ফিরে গেলেও সেখান থেকেই মুদ্রণ, প্রকাশনা ইত্যাদির কাজ চালিয়ে যান। তার হাত ধরেই মুদ্রণ, প্রকাশনা, পুস্তক ব্যাবসা, সংবাদ প্রকাশনা ইত্যাদির বিশেষ রূপ অগ্রগতি ঘটে। সমসাময়িক পত্রিকা 'সমাচার দর্পণ’ ইত্যাদিতে তার সম্বন্ধে উচ্ছ্বসিত প্রশংসাও করা হয়।

৪.৬ বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে শ্রমিক শ্রেণির ভূমিকা কি ছিল?

উত্তরঃ বঙ্গভঙ্গ-বিরােধী বা স্বদেশি আন্দোলন (১৯০৫-১৯১১ খ্রি.) ছিল ভারতে পেশাদারি শ্রমিক আন্দোলনের সময়পর্ব।

নেতৃবৃন্দ : বিশ শতকের গােড়া থেকেই লালা লাজপত রায়, বিপিনচন্দ্র পাল প্রমুখ জাতীয়তাবাদী নেতা শ্রমিকদের সমর্থনে এগিয়ে আসেন। স্বদেশি যুগে শ্রমিক সংগঠন গড়ে তােলার জন্য—কুসুম রায় চৌধুরী, অপূর্ব কুমার ঘােষ, অশ্বিনী কুমার ব্যানার্জি, প্রেমতােষ বসু আত্মনিয়ােগ করেন।

শ্রমিক আন্দোলন : স্বদেশি আন্দোলনকে উপলক্ষ করে জাতীয়তাবাদী নেতাদের নেতৃত্বে সংগঠিত শ্রমিক আন্দোলন ও ধর্মঘট শুরু হয় এবং জাতীয়তাবাদী নেতারা শ্রমিকদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক দাবির প্রতি সমর্থন জানায়। 

১) বাংলা : বঙ্গভঙ্গের দিন (১৬ অক্টোবর, ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দ) হাওড়ার বার্ন কোম্পানির ১২ হাজার শ্রমিক বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে ধর্মঘট শুরু করে। এ ছাড়া কলকাতায় প্রিন্টার্স অ্যান্ড কম্পােপ্রিন্টার্স লিগ গঠিত হয়, ইস্ট ইন্ডিয়া রেলপথের কর্মীরা চিত্তরঞ্জন দাশের নেতৃত্বে আন্দোলনে শামিল হয়, বাংলায় পাটকলগুলিতেও ধর্মঘট চলে। 

২) তামিলনাড়ু : তামিলনাড়ুর তুতিকোরিনে বাড়তি মজুরির দাবিতে চিদাম্বরম পিল্লাই-এর নেতৃত্বে ধর্মঘট চলাকালীন চিদাম্বরম পিল্লাই গ্রেপ্তার হলে শ্রমিকরা দাঙ্গা বাধায়। 

৩) বােম্বাই : বােম্বাইয়ে কংগ্রেস নেতা বালগঙ্গাধর তিলকের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বস্ত্রকলগুলিতে ধর্মঘট শুরু হয়, পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের খণ্ডযুদ্ধ হয়। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে বােম্বাই-এ ৮ হাজার শ্রমিক ধর্মঘটে শামিল হয়। 

৪) অন্যান্য স্থানে : কানপুর, আমেদাবাদ, জামালপুরে রেলওয়ে ওয়ার্কশপে ধর্মঘটের দ্বারা শ্রমিকরা আন্দোলনকে সমর্থন জানায়।

উপসংহার : ঐতিহাসিক বিপান চন্দ্রের মতে, শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসে স্বদেশি আন্দোলন ছিল একটি দিকচিহ্ন।

Madhyamik abta test paper 2023 2024 history

     Madhyamik abta test paper 2023 2024 history pdf download. Madhyamik abta test paper 2023 2024 history pdf. Madhyamik abta test paper 2023 2024 history class 12. Madhyamik abta test paper 2023 2024 history class 10. Abta test paper 2024 class 10 history page 53. Abta test paper 2024 class 10 history page 93. Abta test paper 2024 class 10 history page 118. Abta test paper 2024 class 10 history page 145. Madhyamik abta test paper 2023 2024 history class 10 science. Madhyamik abta test paper 2023 2024 history class 10 pdf. Madhyamik abta test paper 2023 2024 history class 10 maths. Abta test paper 2024 class 10 history page 166. Abta test paper 2024 class 10 history page 190. Abta test paper 2024 class 10 history page 220. Abta test paper 2024 class 10 history page 248. Abta test paper 2023 2024 class 10.


Madhyamik ABTA Test Paper 2023-2024 All Subjects Solved

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

LightBlog

AdsG

close