LightBlog
Madhyamik Bengali Rachana Suggestion / Bigjan o Kusamoskar / বিজ্ঞান ও কুসংস্কার
Type Here to Get Search Results !

Madhyamik Bengali Rachana Suggestion / Bigjan o Kusamoskar / বিজ্ঞান ও কুসংস্কার

বিজ্ঞান ও কুসংস্কার

Madhyamik Bengali Rachana Suggestion / Bigjan o Kusamoskar / বিজ্ঞান ও কুসংস্কার
Madhyamik Bengali Rachana Suggestion বিজ্ঞান ও কুসংস্কার


     বিজ্ঞান মানুষকে এগিয়ে নিয়ে চলে আর কুসংস্কার মানুষকে পেছনে টানে। প্রকৃতির নিয়মগুলিকে আবিষ্কার করে তাকে নিজেদের সিবিধার্থে প্রয়োগ করাই বিজ্ঞানের কাজ, যার মূল উপাদান হল যুক্তি। অন্যদিকে, কুসংস্কার হল এমন কিছু বিশ্বাস বা প্রথা, যা মূলত ভয় ও অজ্ঞানতার কারণে মানুষকে মেনে চলতে বাধ্য হয়। যার ফলে সে সত্যকে বুঝতে বা চিনতে পারে না। কিছু মানুষ এই দুর্বল সমাজ - মানসিকতাকে কাজে লাগিয়ে মানুষকে ঠকায়, শোষণ করে আবার প্রতারিতও করে। একমাত্র বিজ্ঞান ও যুক্তির প্রতি যথার্থ নির্ভরতাই কুসংস্কার থেকে মানুষকে মুক্ত করতে পারবে।

কুসংস্কারের উৎপত্তি :

     আদিম মানুষরা পাহাড়ে - জঙ্গলে বাস করত। তখন কিন্তু বিজ্ঞানের জন্ম হয়নি। মানুষ সেই সময় থেকেই অতিপ্রাকৃত সত্তায় বিশ্বাসী ছিল। যে-কোনো প্রাকৃতিক ক্রিয়াকাণ্ডের কারণ ও উৎস সম্পর্কে কোনো ধারণা না-থাকায়, এসবের মূলে যে অপদেবতারা ক্রিয়াশীল - এ বিশ্বাস সেকালের মানুষের মনে দৃঢ়বদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। রোগশোকের মূলেও অপশক্তি অর্থাৎ অপদেবতাদের কুদৃষ্টি, ভূতপ্রেত প্রভৃতি অশরীরী আত্মার কারসাজি রয়েছে বলে নিরক্ষর, বিজ্ঞান-চেতনাহীন মানুষ বিশ্বাস করত। এভাবেই কুসংস্কারের উদ্ভব ও তার প্রসার ঘটে।

বিজ্ঞানের জয়যাত্রা :

     আদিম মানুষ যেদিন আগুন জ্বালাতে শিখল সেদিনই পরোক্ষ, তাদের অজান্তেই জন্ম হল বিজ্ঞানের। ক্রমে ক্রমে ধাতুর ব্যবহার শিখল মানুষ। প্রয়োজনের তাগিদে নতুন নতুন ব্যাবহারিক বস্তু আবিষ্কার বা নির্মান করতে জানল। আধুনিক মানুষগবেষণাগারে পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু করল। প্রাকৃতিক ঘটনা, মেঘ-বৃষ্টি-রৌদ্রের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ব্যাখ্যা খুঁজে পেল। বিজ্ঞানের দৌলতে রোগ প্রতিরোধ করার উপায় আবিষ্কৃত হল। দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের অজস্র অবদান একে এক স্থান করে নিল।

কুসংস্কারের স্বরূপ : 

     কুসংস্কার মূলত ধর্মকে আশ্রয় করে পল্লবিত হয়েছে। যেমন - গঙ্গাসাগরে সন্তান বিসর্জন, বলিদান প্রথা, দেবতাদের স্বপ্নাদেশ, মানুষের মধ্যে দেবদেবীর ভর করা, বিশিষ্ট গাছকে বৃক্ষদেবতা জ্ঞানে পুজো করা, ভন্ড সাধুসন্ন্যাসীর প্রতি বিশ্বাস, গ্রহবৈগুণ্যের কারণে কবচ-তাবিজ বা কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস মানুষের চেতনাস্তরকে প্রভাবিত করে রেখেছে। আবার ধর্মীয় প্রভাবমুক্ত কু-সংস্কার; যেমন - জোড়া শালিক দেখা, যাত্রাকালে পিছু না-ডাকা, বিড়ালের রাস্তা দিয়ে আড়াআড়িভাবে চলে যাওয়া কিংবা একচক্ষু দর্শনে অমঙ্গল ইত্যাদিও মানুষের চেতনার রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে গিয়েছে।

ফলাফল :

     কুসংস্কারের ফলে ব্যক্তিজীবনে ও পারিবারিক জীবনে অনেক ক্ষতি স্বীকার করতে হয়। ফলে, ভন্ড সাধুসন্ন্যাসী, জ্যোতিষী, ওঝা, তান্ত্রিকদের দ্বারা মানুষ নিত্য প্রবঞ্চিত হয়ে চলেছে। রোগ নিরাময়ের জন্য তুকতাক, জলপড়া, পুজো-আচ্চা, ওঝা-বৈদ্য ইত্যাদিতে নির্ভর করার ফলে কখনো-কখনো রোগীর মৃত্যুও ঘটে যায়।

কুসংস্কার দূরীকরণের উপায় :

     কুসংস্কারের হাত থেকে রেহাই পেতে হলে সবার আগে প্রয়োজন শিক্ষার প্রসার ও বিজ্ঞান চেতনার বিস্তার। বিজ্ঞানই হল, কুসংস্কারের বিনাশকারী। যেখানে নিরক্ষরতা, সেখানেই ধর্মান্ধতা, অন্ধবিশ্বাস আর সেখানেই বিস্তার করে কুসংস্কারের রাজত্ব। নিরক্ষরতা দূরীকরণের পাশাপাশি বিজ্ঞানচেতনা বাড়াতে হবে। যুক্তি দিয়ে কুসংস্কারগুলির অসারতা মানুষকে বোঝাতে হবে। কুসংস্কার মানুষের জীবনে কিভাবে ক্ষতি করে চলেছে সে বিষয়ে ও সচেতন করতে হবে।

     কুসংস্কার দূরীকরণের কাজটি নিঃসন্দেহে কঠিন ও শ্রমসাপেক্ষ। তবু বিজ্ঞানচেতনাই হল, কুসংস্কার দূর করার প্রধান অস্ত্র। যুক্তিবাদী সংস্থাগুলিকে, বিজ্ঞান ক্লাবকে এবং ছাত্রসমাজকে এ কাজে এগিয়ে আসতে হবে। ক্রমাগত আঘাত হানতে হবে কুসংস্কারের ওপর - মানুষের ধর্মান্ধতা ও অন্ধবিশ্বাসের ওপর।

Download : বিজ্ঞান ও কুসংস্কার PDF

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

LightBlog

AdsG

close