পরিবেশ ও ভূগোল
ষষ্ঠ শ্রেণি
পূর্ণমান - ৫০
১. বিকল্পগুলি থেকে ঠিক উত্তরটি নির্বাচন করে লেখো :
১.১ ঠিক জোড়াটি নির্বাচন করো।
ক) গ্রহ - নিজস্ব আলো আছে
খ) গ্রহাণু - গ্রহের তুলনায় আয়তনে বড়।
গ) উপগ্রহ - নক্ষত্রের আলোয় আলোকিত
ঘ) উল্কা - লেজবিশিষ্ট উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক
উত্তরঃ গ) উপগ্রহ - নক্ষত্রের আলোয় আলোকিত
১.২ নিরক্ষরেখার সমান্তরালে উত্তর গোলার্ধে বিস্তৃত কাল্পনিক রেখা হলো -
ক) মকরক্রান্তি রেখা
খ) কর্কটক্রান্তি রেখা
গ) মূলমধ্য রেখা
ঘ) কুমেরুবৃত্ত রেখা
উত্তরঃ খ) কর্কটক্রান্তি রেখা
১.৩ নীচের যে রাজ্যটির ওপর দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা বিস্তৃত সেটি হলো -
ক) অরুণাচল প্রদেশ
খ) মহারাষ্ট্র
গ) হিমাচল প্রদেশ
ঘ) পশ্চিমবঙ্গ
উত্তরঃ ঘ) পশ্চিমবঙ্গ
১.৪ সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে জীবকুলকে রক্ষাকারী ওজোন স্তর আছে -
ক) ট্রপোস্ফিয়ারে
খ) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারর
গ) আয়নোস্ফিয়ারে
ঘ) এক্সোস্ফিয়ারে
উত্তরঃ খ) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারর
১.৫ আন্টার্কটিকার একটি স্বাভাবিক উদ্ভিদ হলো -
ক) পাইন
খ) শাল
গ) মস
ঘ) সেগুন
উত্তরঃ গ) মস
১.৬ ভারতের মরু অঞ্চলের মাটির অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো -
ক) মাটির জলধারন ক্ষমতা বেশি
খ) মাটিতে লোহার পরিমাণ বেশি
গ) মাটির জলধারণ ক্ষমতা কম
ঘ) মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ বেশি
উত্তরঃ গ) মাটির জলধারণ ক্ষমতা কম
১.৭ উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের মাঝে অবস্থিত মহাসাগরটি হলো-
ক) প্রশান্ত মহাসাগর
খ) আটলান্টিক মহাসাগর
গ) ভারত মহাসাগর
ঘ) সুমেরু মহাসাগর
উত্তরঃ খ) আটলান্টিক মহাসাগর
১.৮ পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুর প্রকৃতি –
ক) উষু-আর্দ্র
খ) শীতল আর্দ্র
গ) শীতল-শুদ্ধ
ঘ) উষ্ণ-শুদ্ধ
উত্তরঃ ক) উষু-আর্দ্র
১.৯ ভারতের একটি পশ্চিমবাহিনী নদী হলো -
ক) কাবেরী
খ) গোদাবরী
গ) নর্মদা
ঘ) মহানদী
উত্তরঃ গ) নর্মদা
২. শূন্যস্থান পূরণ করো :
২.১ সমুদ্রের কাছাকাছি অঞ্চলের জলবায়ু ___________ প্রকৃতির হয়।
উত্তরঃ সমভাবাপন্ন
২.২ নির্দিষ্ট ঋতুতে যে গাছের পাতা ঝরে পড়ে তাকে __________ উদ্ভিদ বলে।
উত্তরঃ পর্ণমোচী
২.৩ সাধারনত শীতকাল শীতল অঞ্চল থেকে যে পাখিরা আমাদের দেশে উড়ে আসে তারা __________ পাখি নামে পরিচিত।
উত্তরঃ পরিযায়ী
৩. বাক্যটি সত্য হলে 'ঠিক' এবং অসত্য হলে 'ভুল' লেখো :
৩.১ গোলাকার পৃথিবী দ্রুত গতিতে আবর্তন করায় এটি মাঝ বরাবর স্ফীত।
উত্তরঃ ঠিক
৩.২ 0 ডিগ্রী ও ১৮0 ডিগ্রী দ্রাঘিমারেখা প্রকৃতপক্ষে একটিই রেখা।
উত্তরঃ ভূল
৩.৩ সূর্যের দৈনিক আপাত গতির মূল কারণ পৃথিবীর আবর্তন।
উত্তরঃ ঠিক
৪. স্তম্ভ মেলাও :
উত্তরঃ
৫. সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :
৫.১ তারার রঙের সঙ্গে উষ্ণতার সম্পর্ক লেখো।
উত্তরঃ তারার রঙের সঙ্গে উষ্ণতার সম্পর্ক অতপ্রোত ভাবে জড়িত -
যে তারার উষ্ণতা সবচেয়ে বেশি তার রং হয় সাদা এবং এই তারাগুলি আয়তনে অনেক বড়ো হয়।
যে তারার উষ্ণতা মাঝারি হয় সেই তারাগুলির রং হয় নীল, আর এইগুলি অত্যন্ত উষ্ণ এবং খুবই উজ্জ্বল হয়।
যে তারার উষ্ণতা সবচেয়ে কম তার রং হয় লালচে এবং এই তারার সংখ্যা মহাকাশে সবচেয়ে বেশি।
৫.২ দিগন্তরেখা কাকে বলে?
উত্তরঃ সমুদ্র কিংবা বিশাল প্রান্তরের ধারে দাঁড়িয়ে দূরে তাকালে মনে হয় যে , জলরাশি বা ভূমি এবং আকাশ যেন একটি বৃত্তরেখায় মিশে গিয়েছে৷ এই কাল্পনিক রেখা কে দিগন্ত রেখা বা Horizon বলে ৷
৫.৩ বারিমন্ডল কীভাবে সৃষ্টি হয়েছে?
উত্তরঃ পৃথিবীর সৃষ্টির বহু কোটি বছর পর পৃথিবীর বাইরের অংশটা বেশ ঠান্ডা হয়ে আসে। তখন আকাশের রাশি রাশি জলীয় বাষ্প ঠান্ডা হয়ে অবিশ্রান্ত বৃষ্টির মতো পৃথিবীতে নেমে আসে। হাজার হাজার বছর ধরে এই প্রবল বৃষ্টির জলের পৃথিবীর নিচের অংশ ভরাট হয়ে সাগর, মহাসাগর তৈরি হয়। পৃথিবীর এই বিশাল ভান্ডার কে বারিমন্ডল বলে। এইভাবে পৃথিবীতে বারিমন্ডলের সৃষ্টি হয়।
৫.৪ বিকিরণ পদ্ধতিতে কীভাবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয় ?
উত্তরঃ সূর্যরশ্মির 200 কোটি ভাগের 1 ভাগ মাত্র পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়। বায়ুমণ্ডল সরাসরি সূর্যরশ্মি দ্বারা উত্তপ্ত হয় না। ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরন পদ্ধতিতে সূর্যরশ্মি মহাশূন্যে ফিরে যাওয়ার সময় বিভিন্ন গ্যাস, জলীয়বাষ্প ও ধূলিকণা দ্বারা শোষিত হয়। তারাই বায়ুমন্ডলকে উত্তপ্ত করে তোলে।
৬. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
৬.১ পৃথিবীর কাল্পনিক অক্ষ মেরুরেখা ও নিরক্ষরেখার সঙ্গে কত ডিগ্রি কোণে হেলে অবস্থান করছে তা এঁকে দেখাও।
উত্তরঃ
৬.২ পলিমাটির তিনটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তরঃ (ক) এই ধরণের মাটি মাত্র তিন শতাংশ জমি দখল করে।
(খ) তবে তাকে সবচেয়ে উর্বর হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
(গ) পলিযুক্ত মৃত্তিকাগুলি মূলত খনিজগুলি সমৃদ্ধ নদীর স্ল্যাজ হয়। সুতরাং, এই জাতীয় জমি কৃষিতে মূল্যবান হয়।
৬.৩ বিশ্ব উষ্ণায়নের কারনে পৃথিবীর শীতলতম মহাদেশ কীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে?
উত্তরঃ বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে পৃথিবীর শীতলতম মহাদেশ এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে—
(ক) বিশ্ব উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে বরফ গলে যাচ্ছে, আয়তন কমছে মহাদেশটির।
(খ) এই মহাদেশে থাকা প্রাণীগুলি যেমন- পেঙ্গুইন, তুষার ভালুক,সিল এদের জীবন বিপন্ন হচ্ছে।
(গ) বরফ ও প্রাণী হ্রাস পাওয়ায় শীতল মহাদেশটির প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
৭. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
৭.১ হিমালয়ের উত্তর থেকে দক্ষিণে বিস্তৃত তিনটি সমান্তরাল পর্বতশ্রেণির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
উত্তরঃ হিমালয়ের উত্তর থেকে দক্ষিণে বিস্তৃত তিনটি সমান্তরাল পর্বতশ্রেণি হল -
(ক) হিমাদ্রি হিমালয়ঃ টেথিস হিমালয়ের দক্ষিণে হিমাচল হিমাদ্রি হিমালয়ের অবস্থান। এর উচ্চতা সবচেয়ে বেশি। হিমালয়ের বিখ্যাত পর্বত শৃঙ্গগুলি, যেমন - মাউন্ট এভারেস্ট, কাঞ্চঞ্জঙ্ঘা, নাঙ্গা প্রভৃতি পর্বত এখানেই অবস্থিত। তাছাড়া এই শৃঙ্গগুলি সারাবছরই বরফে ঢাকা থাকে।
(খ) শিবালিক হিমালয়ঃ হিমালয়ের দক্ষিণতম পর্বত শ্রেণি হল শিবালিক হিমালয়। এখানে জম্মু, ডাফলা, মিরি প্রভৃতি পাহাড় দেখতে পাওয়া যায়। শিবালিক ও হিমালয়ের মাঝের উপত্যকাগুলিকে "দুন" বলা হয়। যেমন - দেরাদুন।
(গ) হিমাচল হিমালয়ঃ হিমাদ্রি হিমালয়ের দক্ষিণে হিমাচল হিমালয় অবস্থান করেছে। এখানকার উল্লেখযোগ্য পর্বতশৃঙ্গগুলি হল - কেদারনাথ, বদ্রীনাথ, ত্রিশূল প্রভৃতি। এখানে অনেক অঞ্চলে বিভিন্ন উপত্যকা দেখা যায়, যেমন - কুলু কাংড়া প্রভৃতি।
৭.২ বায়ুচাপ ও বায়ুপ্রবাহ কোনো অঞ্চলের আবহাওয়াকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করে রা ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ
বায়ুচাপ: বায়ু পৃথিবীর ওপর চাপ দেয়। সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুর চাপ সবথেকে বেশি। যত উপরে ওঠা যায় বায়ুর চাপ তত কমতে থাকে। বায়ুচাপ কমে গিয়ে নিম্নচাপ হলে ঝড় বৃষ্টি অশান্ত আবহাওয়া তৈরি হয়। আবার, বায়ুচাপ বেড়ে গিয়ে উচ্চচাপ হলে পরিষ্কার আকাশ শান্ত আবহাওয়া দেখা যায়।
বায়ুপ্রবাহ: বাই হুক সব জায়গায় সব সময় রাখার জন্য উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়। হঠাৎ কোন জায়গায় বাতাসের চাপ খুব কমে গেলে, বাতাস ভীষণ গতিতে আশেপাশের উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ছুটে আসে। তখন ঝড় ওঠে। বাতাসের গতি বেশি হলে গাছপালা ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে, অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
৭.৩ অরণ্য সংরক্ষণ করা কেন প্রয়োজন বলে তুমি মনে করো?
উত্তর- অরণ্য সংরক্ষণ : বনভূমিকে বিজ্ঞান ভিত্তিক রক্ষণাবেক্ষণ এবং অপচয় বন্ধ কবে বিজ্ঞান ভিত্তিক সর্বাধিক ব্যবহারকে অরণ্য সংরক্ষণ বলে। পরিবেশগত ভারসাম্যের নিরিখে কোনো দেশের মোট আয়তনের প্রায় ১/৩ অংশ অরণ্যাবৃত হওয়া প্রয়োজন। ভারতে বনভূমির পরিমাণ মোট ভৌগোলিক আয়তনের মাত্র ২০.৫৫%। এই কারণেই বনভূমি সংরক্ষণ একান্ত প্রয়োজন। বনভূমি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তাগুলো হল :
১. প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা: গাছ দূষিত কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2) গ্রহণ করে এবং অক্সিজেন (02) পরিত্যাগ করে। এর ফলে বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন গ্যাসের মধ্যে সমতা বজায় থাকে। এই সমতা পরিবেশ দূষণ মুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
২. মৃত্তিকার ক্ষয়রোধ : উদ্ভিদের শিকড় মাটিকে আঁকড়ে ধবে রাখে। বনভূমি ধ্বংস হলে মৃত্তিকা বা ভূমিক্ষয় বাড়বে। ফলে একদিকে যেমন বন্যার পরিমাণ বাড়বে, কৃষিকাজের ক্ষতি হবে তেমনি পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিধস বেড়ে যাবে।
৩. বনজ সম্পদের জোগানের নিয়মিতকরণ: বন থেকে প্রাপ্ত কাঠ, জানলা, দরজা, আসবাবপত্র, রেলের স্লিপার, জাহাজ নির্মাণ শিল্প, কাগজ শিল্প, নিউজপ্রিন্ট শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামালের প্রযোজনীয়তা মেটায়। এ ছাড়া মধু, মোম, কুইনাইন, এবং বিভিন্ন ঔষধপত্র তৈরী করার জন্য বিভিন্ন গাছের প্রয়োজন হয়। বনভূমি সংরক্ষণ ব্যতীত এগুলি পাওয়া সম্ভব নয়।
৪. জীবজগতের ভারসাম্য রক্ষা: বনভূমি ধ্বংসের কারণে উদ্ভিদের ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকা প্রাণীকুলের ধবংস হয় ফলে পরিবেশের খাদ্যশৃঙ্খল বিনষ্ট হয় ও পরিবেশে বাস্তুতন্ত্রের বিঘ্ন ঘটে। বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য অরণ্য সংরক্ষণ প্রয়োজন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ