সাহিত্যের ইতিহাস(গল্পসাহিত্য)
পঞ্চতন্ত্র
প্রশ্নঃ- "পঞ্চতন্ত্র" গল্পগ্রন্থ সম্পর্কে টীকা লেখ।/সংস্কৃত
সাহিত্যে পঞ্চতন্ত্রের স্থান নির্নয় করে বিষ্ণু শর্মার অবদান আলোচনা কর।
উত্তরঃ-
*কথামুখ:-
পৃথিবীর গল্পসাহিত্যের ইতিহাসে সংস্কৃত ভাষায় রচিত প্রাচীন মহত্বমন্ডিত
নীতিকথামূলক গ্রন্থ হল ছাত্রসমাজে কীর্তিলব্ধ পণ্ডিত বিষ্ণু শর্মা রচিত
"পঞ্চতন্ত্র"।পশুপাখি অবলম্বনে রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে এটিই এখনও জগজনের
কাছে সমানভাবে সমাদৃত।গ্রন্থটি এতই জনপ্রিয় যে পৃথিবীর 60 টিরও বেশী ভাষায় অন্তত 200 এরও বেশী সংস্করণে প্রচলিত আছে।এককথায় সংস্কৃত গল্পসাহিত্যের ইতিহাসে এই
গ্রন্থটির স্থান অনন্য।
*প্রেরণা:-
দাক্ষিণাত্যের মহীলারোপ্যরাজ অমরশক্তির তিন মূর্খ পূত্র বসু শক্তি,উগ্র শক্তি ও অনেক শক্তির বিদ্যাশিক্ষার জন্য পন্ডিতপ্রবর
বিষ্ণু শর্মা গ্রন্থটি রচনা করেন।
*রচনাকাল:-
অধ্যাপক কিথ্ মনে করেন যে মূল গ্রন্থটি সম্ভবতঃ খ্রীঃ 2য় শতকের দিকে রচিত।আবার অনেকে এর রচনাকাল খ্রীঃ 1ম শতাব্দী বলেও মত পোষণ করেন।
*গ্রন্থপরিচয়:-
মূল গল্পের মধ্যে প্রাসঙ্গিক ছোটছোট গল্পের সন্নিবেশে গ্রন্থটি রচিত।মোট গল্প
সংখ্যা 63।সমগ্র গল্পগ্রন্থটি পাঁচটি ভাগে বা তন্ত্রে
বিভক্ত,তাই একে পঞ্চতন্ত্র বলে-
"সকলার্থশাস্ত্রসারং জগাতি সমালোক্য বিষ্ণুশর্মেদম্।
তন্ত্রৈঃ পঞ্চভিরেতচ্চকার সুমনোহরং শাস্ত্রম্।।"
♠মিত্রভেদ:- "মিত্রভেদ" কথার অর্থ হল বন্ধুবিচ্ছেদ।এখানে মোট 22 টি গল্প বর্তমান।মূল চরিত্রগুলি হল- দমনক ও করটক নামে
শৃগাল,পিঞ্জোলক নামে সিংহ ও সঞ্জীবক নামে এক ষাঁড়।
♠মিত্রপ্রাপ্তি:- "মিত্রপ্রাপ্তি" কথার অর্থ হল বন্ধুলাভ।এই তন্ত্রের
মোট গল্প সংখ্যা 6।মূল চরিত্রগুলি হল- লঘুপতনক নামে কাক ও হিরণ্যক
নামে এক মুষিক।এছাড়াও এখানে আছে বণিক সাগরদত্ত,অতিলোভী
শৃগাল প্রভৃতি গল্প আছে।
♠কাকোলূকীয়:- "কাকোলূকীয়" কথার অর্থ হল কাক ও পেঁচা।কাকেদের রাজা ও
পেঁচাদের রাজার মধ্যে শত্রুতার কথাই এখানে বর্ণিত।এই তন্ত্রের অপর নাম
"সন্ধি-বিগ্রহ"।এতে মোট 4 টি গল্প
আছে।
♠লব্ধপ্রণাশ:- "লব্ধপ্রণাশ" কথার অর্থ হল পেয়েও হারানো।মোট গল্প 16 টি।এখানে দুষ্টুবুদ্ধিসম্পন্ন কুমির করালমুখ ও সরল বানর
রক্তমুখের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।
♠অপরিক্ষীতকারক:- এই তন্ত্রের সামগ্রিক অর্থ হল পরীক্ষা না করে কোনকিছু করতে
প্রবৃত্ত হওয়া।মোট গল্প 15 টি।বিখ্যাত
গল্পগুলি হল- চার মূর্খ পণ্ডিতের গল্প,ব্রাহ্মণ-নকুলকথা,দুমুখো পাখির গল্প ইত্যাদি।
*কথান্তে:-
"পঞ্চতন্ত্র" নীতিগ্রন্থের ভাষা ও প্রকাশভঙ্গী সরল,মার্জিত ও হৃদয়গ্রাহী।এখানে সুদীর্ঘ বর্নন,ভাবপ্রবণতা,সমাসবদ্ধপদ
প্রয়োগ পূর্বক পাণ্ডিত্য প্রকাশের চেষ্টার লেশমাত্র নেই।গল্পগুলি সুবোধ্য,সুখপাঠ্য,চিত্তাকর্ষক ও
লেখকের উদ্ভাবনী শক্তিতে চির উজ্জ্বল।
এখানে মানুষের পাশাপাশি দৈত্য,দানব,দেবতা,পশুপক্ষীদের নিয়ে
বিভিন্ন চরিত্র সৃষ্টির মাধ্যমে গল্পকার যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।এমনকি বাইবেলের পর পঞ্চতন্ত্রই হল পৃথিবীতে বহুল প্রচারিত গ্রন্থ।
"হিতোপদেশ" গ্রন্থটির রচয়িতা দিয়ে দে।
বাট
"হিতোপদেশ" গ্রন্থের রচয়িতা পণ্ডিত নারায়ণ শর্মা তাঁর উপর পঞ্চতন্ত্রের পভাব সম্পর্কে বলেন-
"পঞ্চতন্ত্রাত্তথ্যান্যস্নাদ্ গ্রন্থাদাকৃষ্য লিখ্যতে।"
Class 11 Sanskrit Full Suggestion 2022 | See More… |
Class All Suggestion 2022 PDF | See More… |
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ