পরিবেশ ও ইতিহাস
অষ্টম শ্রেণি
পূর্ণমান - ৫০
১. 'ক' স্তম্ভের সাথে 'খ' স্তম্ভ মেলাও :
উত্তর :
২. সঠিক তথ্য দিয়ে নীচের ছকটি পূরণ করো :
উত্তরঃ
৩. সত্য বা মিথ্যা নির্ণয় করো :
৩.১ ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে লর্ড নর্থব্রুক জারি করেন নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন।
উত্তরঃ সত্য
৩.২ ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর বাংলা বিভাজনের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হয়।
উত্তরঃ সত্য
৩.৩ পাঞ্জাবে লাল লাজপত রাই-এর নেতৃত্বে শিবাজি উৎসব চলু হয়।
উত্তরঃ মিথ্যা
৩.৪ সাঁওতালরা ঔপনিবেশিক শাসকের শোষনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল।
উত্তরঃ সত্য
৪. সঠিক শব্দ বেছে নিয়ে শূণ্যস্থান পূরণ করো :
৪.১ ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে __________ কে বাংলার নাজিম পদ দেওয়া হয়। (মুর্শিদকুলি খান/সাদাৎ খান/আলিবর্দি খান)।
উত্তরঃ মুর্শিদকুলি খান
৪.২ ১৭২২ খ্রিস্টাব্দে __________ এর নেতৃত্বে অযোধ্যা এবং স্বশাসিত আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে গড়ে ওঠে (নিজাম-উল-মুলক/সাদাৎ খান/সফদর জং)।
উত্তরঃ সাদাৎ খান
৪.৩ ১৭২৪ খ্রিস্টাব্দে হায়দ্রাবাদ রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন __________ (ফররুখশিয়র/নিজাম-উল-মুলক/সাদাৎ খান)।
উত্তরঃ নিজাম-উল-মুলক
৪.৪ ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে দেশীয় মুদ্রণ আইন জারি করেন __________ (লর্ড লিটন/লর্ড রিপন/লর্ড বেন্টিঙ্ক/ লর্ড ক্যানিং)।
উত্তরঃ লর্ড রিপন
৫. চার-পাঁচটি বাক্যে উত্তর দাও :
৫.১ কে, কি উদ্দেশ্যে সিভিল সার্ভিস চালু করেন?
উত্তরঃ ভারতে সিভিল সার্ভিস চালু করেন লর্ড কর্ণওয়ালিশ। সিভিল সার্ভিস চালু করার পিছনে লর্ড কর্ণওয়ালিশের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল প্রশাসনিক কাজের মানকে উন্নত ও দ্রুতগামী করা। উল্লেখ্য রাজস্ব বিভাগের কর্মচারীদের দক্ষ করার জন্য ও সাধারণ কর্মচারীদের দুর্নীতি বন্ধ করাই ছিল উদ্দেশ্য।
৫.২ ব্যপটিস্ট মিশন শিক্ষার প্রসারে কেমন ভূমিকা পালন করেছিল?
উত্তরঃ ব্যাপটিস্ট মিশনারি ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে উইলিয়াম কেরি, মার্শম্যান ও উইলিয়ম ওয়ার্ডের মিলিত প্রচেষ্টায় শ্রীরামপুরে প্রতিষ্ঠা হয়। শিক্ষার প্রসারে ব্যাপটিস্ট মিশনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই মিশনের প্রচেষ্টাতেই ১২৬টি বিদ্যালয় ও প্রায় দশ হাজার ভারতীয় ছাত্র পাশ্চাত্য শিক্ষার সুযোগ পায়।
৫.৩ পন্ডিতা রমাবাঈ কেন স্মরণীয়?
উত্তরঃ উনিশ শতকের ভারতে নারী শিক্ষায় বিশেষ উদ্যোগী হয়েছিলেন পন্ডিতা রামাবাঈ। প্রাচীন ভারতীয় শাস্ত্রে ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে পন্ডিতা রামবাঈ সমস্ত সামাজিক বাধা উপেক্ষা করে এক শুদ্রকে বিয়ে করেন। পরে বিধবা অবস্থায় নিজের মেয়েকে নিয়ে ইংল্যান্ডে গিয়ে তিনি ডাক্তারি পরেন। বিধবাদের জন্য তিনি একটি আসনও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
৫.৪ ইয়ং বেঙ্গল দলের দুটি সীমাবদ্ধতার উল্লেখ করো।
উত্তরঃ হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওর ছাত্রদের বলা হতো ইয়ংবেঙ্গল গোষ্ঠী বা দল। এই কি এ বেঙ্গল দলের দুটি সীমাবদ্ধতা হল-
(১) পর ব্রিটিশ শাসন ও ইংরেজি শিক্ষার প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন ছিল।
(২) এই দলের অনেক সদস্য পরবর্তীকালে নিজেদের পুরনো মতামত ও অবস্থান থেকে সরে গিয়েছিলেন।
৫.৫ ইলবার্ট বিলকে নিয়ে কেন বিতর্কের সূচনা হয়েছিল?
উত্তরঃ মৃত্যু বা পরিবহন সংক্রান্ত যেকোনো বিচারই একমাত্র উচ্চ আদালতে হতো কিন্তু ইলবার্ট বিল চালু হওয়ার পরই এটা পরিবর্তন হয়ে যায়। কারন,সিভিল সার্ভিসে যে সব অভিজ্ঞ ও প্রবীণ ব্যাক্তিরা ছিলেন তারা এবার উচ্চ আদালত ছাড়াও নিজের মতো রায় দিতে পারতেন মৃত্যু বা পরিবহন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে। ভারতীয় বিচারকদের ইংরেজদের সমান মর্যাদা দেওয়ার ফলে ইলবার্ট বিল তুমুল বিতর্কের কারন হয়ে দাড়ায়।
৬. আট-দশটি বাক্যে উত্তর দাও :
৬.১ জমি জরিপ ও রাজস্ব নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক প্রশাসন কী কী পদক্ষেপ নিয়েছিল?
উত্তরঃ বক্সারের যুদ্ধের পর নায়েব নাজিম, আমিলদার ও সুপারভাইজার এসব গঠনের মাধ্যমেই কোম্পানি ভূমিরাজস্বের ভার দখল করতে থাকে। ঔপনিবেশিক শাসনের জমি জরিপ ও রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে পদক্ষেপগুলো হলো - পাঁচাওসালা, একসালা, দশসালা ও চিরস্থায়ে বন্দোবস্ত এবং রায়তওয়ারি ও মহলওয়ারি বন্ধবস্ত ইত্যাদি।
পাঁচসালা বন্ধোবস্তঃ ভ্রাম্যমান কমিটির সুপারিশে ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে পাঁচ বছরের জন্য জমিদারদের জমি বন্টন করেন, সেটাই পাঁচসালা বন্ধোবস্ত নামে পরিচিত।
একসালা বন্ধোবস্তঃ পাঁচসালা বন্ধোবস্তের অসুবিধাগুলো দূর করতে আমিনি কমিশনের 'রিপোর্টের ভিত্তিতে ওয়ারেন হেস্টিংস এক সালা বন্দোবস্ত চালু করেন।
দশসালা বন্ধোবস্তঃ ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে লর্ড কর্নওয়ালিস বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার জমিদারের দশ বছরের জন্য জমি দেন, এরই নাম দশ সালা বন্ধোবস্ত।
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তঃ জামিদাররা দশ সালা বন্ধোবস্ত অনুসারে ঠিক সময় মতো রাজস্ব জমা দেয় তাই রাজস্ব বোর্ডের পরামর্শে লর্ড কর্ণওয়ালিস ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের ২২ মার্চ বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার জমিদারদের চিরদিনের জন্য নির্দিষ্ট রাজস্বের বিনিময়ে জমি বন্টন করেন, এটাই চিরস্থায়ী বন্ধোবস্ত নামে পরিচিত।
৬.২ 'সম্পদের বহির্গমন' বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ সম্পদের বহির্গমন ভারতে ব্রিটিশ শাসনের একটি লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য। উপনিবেশ হিসেবে ভারতের সম্পর্কে ব্রিটেনে নানাভাবে স্থানান্তরিত করা হতো। এর ফলে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হতো না বরং অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়তো দরিদ্র্য দুর্ভিক্ষ। এইভাবে দেশের সম্পদ বিদেশ চালান হওয়াকেই 'সম্পদের বহির্গমন' বলে উল্লেখ করা হয়।
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল ভারতের অর্থ ও সম্পদ ব্রিটেনে স্থানান্তরিত ভারতের অর্থনীতিকে ব্রিটিনের স্বার্থে ব্যবহার করা। ১৮৪০ খ্রিষ্টাব্দে এক ব্রিটিশ অধিকারীকে বক্তব্য থেকে জানা যায়, ভারত থেকে বছরে ২-৩ কটি স্টাইলিং মূল্যের সম্পদ ব্রিটেনে যেত। আর তার বিনিময় ভারত সামান্য দামের কিছু যুদ্ধ সরঞ্জাম ছাড়া কিছুই পেত না। বাস্তবে ভারতের সম্পদ বহির্গমনের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ শাসন স্পঞ্জের মতো কাজ করতো। ভারত থেকে সম্পদ শুষে ব্রিটেনে পাঠিয়ে দিত। হিসাবে দেখা গেছে উনিশ বিশ শতকে ব্রিটেনের জাতীয় আয়ের২ শতাংশ ছিল ভারত থেকে নির্গত সম্পদ।
৬.৩ বিশ শতকের প্রথম দিকে বাংলায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন গুপ্ত সমিতির পরিচয় দাও।
উত্তরঃ বিশ শতকের প্রথম দিকে বাংলায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন গুপ্ত সমিতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো -
অনুশীলন দল : অনুশীলন দল শহরের প্রান্তভাগে ব্যায়ামের আখড়ার আড়ালে থেকে কাজকর্ম চালাত। অন্যান্য সমস্ত গুপ্ত সমিতির মতো অনুশীলন দলের উদ্দেশ্য ছিল সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে, ভারত থেকে ব্রিটিশ শাসনের উচ্ছেদ।
অনুশীলন দল রাজনৈতিক ডাকাতি, বোমা তৈরি, অস্ত্র প্রশিক্ষণ, ব্রিটিশ রাজকর্মচারী ও তাদের বিচারে বিশ্বাসঘাতক তকমা-পাওয়া ভারতীয়দের হত্যার কাজে নিযুক্ত ছিল। বাংলার গ্রামাঞ্চলেও অনুশীলন দলের যথেষ্ট প্রভাব ছিল। সারা বাংলা ও ভারতের অন্যান্য স্থানেও এর শাখা প্রসারিত হয়েছিল।
যুগান্তর দল:
অনুশীলন দল এর সহযোগী ছিল যুগান্তর দল যুগান্তর দল গুপ্ত বিপ্লববাদী সংস্থা। চরম পন্থার মাধ্যমে ইংরেজদের থেকে, দেশের স্বাধীনতা অর্জন করাই ছিল এই সংগঠনের প্রধান লক্ষ্য। অনুশীলন সমিতির সাথে মতভেদের কারণে 'যুগান্তর' এর জন্ম। এর নেতৃত্বে ছিলেন অরবিন্দ ঘোষ বারীন্দ্রকুমার ঘোষ, উল্লাসকর দত্ত প্রমুখ।
অনুশীলন সমিতি ছিল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অনুশীলন তত্ত্বের আদর্শে, গঠিত বাংলার একটি সশস্ত্র ব্রিটিশ-বিরোধী সংগঠন। মূলত,ঢাকা ও কলকাতা শহরকে কেন্দ্র করে এই দলটি বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে সংগঠিত হয়েছিল।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ