নবম শ্রেণী
দ্বিতীয় পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য
বাংলা সাজেশন
ভাব সম্প্রসারণ, গল্প রচনা এবং সারাংশ
পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নবম শ্রেণীর দ্বিতীয় পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভাব সম্প্রসারণ, গল্প রচনা এবং সারাংশ এখানে দেওয়া আছে। আশাকরি নবম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য নিচে দেওয়া ভাব সম্প্রসারণ, গল্প রচনা এবং সারাংশ অনুশীলন করলেই হবে।
ভাব সম্প্রসারণ করো :
অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে
তব ঘৃণা তারে যেন তৃণ সম দহে।
তব ঘৃণা তারে যেন তৃণ সম দহে।
যারা শুধু মরে কিন্তু নাহি দেয় প্রাণ,
কেহ কভু তাহাদের করেনি সম্মান।
জীবে প্রেম করে যেইজ জন
সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।
সে লড়াই ঈশ্বরের বিরুদ্ধে লড়াই
যে যুদ্ধে ভাইকে মারে ভাই।
দন্ডিতের সাথে,
দন্ডদাতা কাঁদে যবে সমান আঘাতে
সর্বশ্রেষ্ঠ সে বিচার।
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে
তবে একলা চলো রে।
ধর্মের বেশে মোহ যারে এসে ধরে
অন্ধ সে জন মারে আর শুধু মরে।
সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।
স্বার্থমগ্ন যে জন
বিমুখ বৃহৎ জগৎ হতে,
সে কখনো শেখেনি বাঁচিতে।
পরের কাছে হইবো বড়ো
একথা গিয়ে ভুলে
বৃহৎ যেন হইতে পারি
নিজের প্রাণমূলে।
দৈন্য যদি আসে আসুক লজ্জা কিবা তাহে?
মাথা উঁচু রাখিস।
সুখের সাথী মুখের পানে যদি নাহি চাহে
ধৈর্য ধরে থাকিস।
পুষ্প আপনার জন্য ফুটে না, পরের জন্য
তোমার হৃদয় কুসুমকে প্রস্ফুটিত করিও।
উপযুক্ত শিরোনামসহ গল্প রচনা করো :
শহরের টিকাদার এসে গ্রামের গাছপালা বন জঙ্গল কেটে নিয়ে যায় - গরম বাড়ে, বৃষ্টি হয় না - গ্রামের মাস্টারমশাই জেনারেল নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে এই দুরবস্থা - গ্রামের বিদ্যালয়ের ছাত্ররা ঠিক করল তারা গাছ বাচাঁবে - ঠিকাদারের লোক এসে এবার দেখল বিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রতিটি গাছের সঙ্গে নিজেদের জড়িয়ে রেখেছে - ঠিকাদারের লোক ফিরে গেল।
নদী পথে নৌকায় আলাপ দুই যাত্রীর - তাদের সম্প্রদায় ভিন্ন - উভয়ের মনে অবিশ্বাস - পথে বিপর্যয় - নৌকাডুবি - তাদের উদ্ধারকারী ভিন্ন সম্প্রদায়ের - অবশেষে ভুল ভাঙলো।
দেশের বাড়িতে মা অসুস্থ - রবি স্টেশনে পৌঁছাতেই গাড়ি ছাড়ছে প্রায় - টিকিট কাটা হলো না - গন্তব্যস্থলে নেমে নিজে থেকে স্টেশন মাস্টারের কাছে গেল - জরিমানাসহ পুরো ভাড়া দিল - লোকেরা শুনে আহম্মক বলল - মা বললেন, ছেলে যেন এরকম আহম্মক থাকে।
বাড়িতে চুরি হয় - গৃহকর্তা ভৃত্যদের একটি করে লাঠি দেয় - বলে প্রকৃত চোরের লাঠি একহাত বৃদ্ধি পাবে - ভয়ার্ত চোর একহাত লাঠি কেটে ফেলে - চোর ধরা পড়ে।
একটি শিশুর দাবিদার হয়ে এল দুই মহিলা - বিচারক শিশুটিকে দ্বিখণ্ডিত করে ভাগ করার বিধান দিতেই প্রকৃত মায়ের কান্না - বিচারকের সত্য উপলব্ধি।
কোন একজন শ্রমবিমুখ যুবক - অপরিচিত বিদ্যাসাগরকে কুলি মনে করেন - তাকে দিয়ে মোট বহন করেন - পরে তার পরিচয় জেনে লজ্জা এবং অনুশোচনা - শেষে শিক্ষালাভ।
একটি গ্রামের স্কুল - ছাত্ররা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিল পরীক্ষার হলে পাহারা দেবে না - পরীক্ষায় কেউ লিখল, কেউ সাদা খাতা জমা দিল - কেউ অসৎ উপায় নিল না - শিক্ষকরা খুব খুশি ও গর্বিত হলেন - সবথেকে গর্ভবোধ করলো ছাত্ররা।
এক প্রভু শিকারে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন - প্রভুর কুকুর ঘেউ ঘেউ করে প্রভুর ঘুম ভাঙালো - প্রভু রেগে গিয়ে কুকুরটিকে গুলি করে মারলেন - পরে দেখলেন একটি বিষধর সাপ গাছের ডালে ঝুলছে - প্রভু কুকুরের জন্য কাঁদতে লাগলেন।
নিম্নলিখিত অনুচ্ছেদটির সারাংশ লেখ :
বাল্যকাল হইতেই আমাদের শিক্ষার সহিত আনন্দ নাই। কেবল যাহা নিজের আবশ্যক তাহা কণ্ঠস্থ করিতেছি। কেমন করিয়া কোনমতে কাজ চলা মাত্র। কিন্তু মনের বিকাশ লাভ হয় না। ওয়াহা খাইলে পেট ভরে না - আহার করিলে পেট ভরে। কিন্তু আহারাদির রীতিমত হজম করিবার জন্য হাওয়া খাওয়া আবশ্যক। আনন্দের সহিত পড়িতে পড়িতে পরিবার শক্তি অলক্ষিতভাবে বৃদ্ধি পাইতে থাকে। গ্রহণ শক্তি, ধারণ শক্তি, চিন্তাশক্তি বেশ সহজ এবং স্বাভাবিক নিয়মে বল লাভ করে।
বিদ্যা ও চরিত্র এক নহে। বিদ্যা থাকিলেই যে মানুষ সচ্চরিত্র হইবে তেমন কোন কথা নেই। বিদ্যা আছে অথচ চরিত্র নাই এমন লোককে দুর্জন বলিয়া মনে করিতে হইবে এবং তাহার সঙ্গ ত্যাগ করিতে হইবে। অনেক বিষধর সাপের মাথায় মনি থাকে। চরিত্রহীন বিদ্বানেরা এইরূপ সর্পের ন্যায়। মনি থাকলেও আমরা যেমন সর্পকে বর্জন করি। সেইরূপ বিদ্যা থাকলেও দুশ্চরিত্র ব্যক্তিগণ সর্বদা বর্জনীয়। সর্প অতি ভয়ঙ্কর কারণ তাহার বিষ আছে। সেইরূপ দুশ্চরিত্র বিজ্ঞানীরাও আমাদের ভীতির পাত্র। তাহাদের দুর্নীতির স্পর্শে আমাদের চরিত্র কলুষিত হয়।
আসক্তির মত নিষ্ঠুর শক্তি কিছুই নেই; সে নিজেকে জানে, সে কাউকে দয়া করে না, সে কারো জন্য কিছুমাত্র পথ ছাড়তে চায়না। এই আসক্তিই হচ্ছে জীবনের ধর্ম; সমস্ত কেই সে নেবে বলে সকলের সঙ্গেই সে কেবল লড়াই করছে। ত্যা
বড়ো সুন্দর, বড়ো কোমল। সে দ্বার খুলে দেয়। সঞ্জয় কে সে কেবল এক জায়গায় স্তূপাকার রূপ উদ্ধত হয়ে উঠতে দেয় না। সে ছড়িয়ে দেয়, বিলিয়ে দেয়।
নিন্দা না থাকিলে পৃথিবীতে জীবনের গৌরব কি থাকিত? একটা ভালো কিছু লিখলাম, তাহার নিন্দুক কেহ নাই - ভাল গ্রন্থের পক্ষে এমন মর্মান্তিক অনাদর কি হইতে পারে! জীবনকে ধর্মচর্চায় উৎসর্গ করিলাম। যদি কোন লোক তাহার মধ্যে বদ অভিপ্রায় না দেখিল তবে সাধুতা যে নিতান্তই সহজ হইয়া পরিলো।
মহত্ত্বকে পদে পদে নিন্দার কাটা মাড়াইয়া চলিতে হয়। ইহাতে যে হার মানে বীরের সদ্গতি সে লাভ করিতে পারে না। দোষীক সংশোধন করিবার জন্য নিন্দার গুরুত্ব আছে, মহত্ত্বকে গৌরব দেওয়া তাহার একটা মস্ত কাজ।
একদিন মানুষ ছিল বুনো, ঘোড়াও ছিল বনের জন্তু। মানুষ ছুটতে পারত না - ঘোড়া বাতাসের মতো ছুটতে। কি সুন্দর তার ভঙ্গি, কি অবাধ তার স্বাধীনতা। ঘোড়ার সর্বাঙ্গে যে একটি ছোটবার আনন্দ দ্রুত তালে নৃত্য করত সেইটের প্রতি মানুষের মনে মনে ভারী লোভ হলো। একদিন সে ফাঁস লাগিয়ে বোনের ঘোড়াকে ধরল। কিশোর ধরে তার পিঠের উপর চড়ে বসে নিজের দেহের সঙ্গে ঘোড়ার চার পা জড়িয়ে নিলে। এই চারটি পাকে সম্পূর্ণ নিজের বশ করতে তার অনেক দিন লেগেছে। সে অনেক পড়েছে, অনেক মরেছে কিন্তু কিছুতেই দমেনি। ঘোড়ার গতিবেগকে সে ডাকাতি করে নেবে এই তার পণ। তারই জিত হল। মন্দ গামী মানুষ দ্রুত গমনকে বেঁধে ফেলে আপনার কাজে খটাতে লাগলো।
আমি যে সাহিত্যিক সেটা প্রাত্যাহিক সাংসারিক জীবনে উল্লেখযোগ্য মনে করি না, কেউ কথাটা পড়লে লজ্জিত বোধ করি। আমার সে পরিচয় অল্প কয়েকটি বন্ধুর কাছে। আমার লেখা ভালো হতে পারে কি মন্দ হতে পারে কিন্তু সাহিত্য আমি ভালোবাসি সে কথা জোর করেই বলবো। রচনার শক্তির অভাব থাকতে পারে, ইচ্ছা কি উৎসাহের অভাব নেই। ব্যক্তিগত জীবনে আমার এই সাহিত্য বৃত্তি খুব অল্প কয়েকটি লোকের কাছে প্রকাশিত, কারণ এটা নিশ্চিত জেনেছি যে বৃহৎ জগতের কাছে এর কোন মূল্য নেই। কিন্তু শান্তিনিকেতনে দেখলুম আমি যে সাহিত্যিক তার কিছু না কিছু মূল্য সকলেই নিঃসংশয়য়ে স্বীকার করে নিয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
0 মন্তব্যসমূহ